× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

স্বাস্থ্য
Vaccine From crisis to capacity in balance diplomacy
google_news print-icon

টিকা: ‘ভারসাম্যের কূটনীতিতে’ সংকট থেকে সক্ষমতায়

টিকা-ভারসাম্যের-কূটনীতিতে-সংকট-থেকে-সক্ষমতায়
আগস্ট থেকে সপ্তাহে এক কোটি নাগরিককে টিকা দেয়ার কথা ভাবছে সরকার। এর মধ্য দিয়ে ২০২২ সালের প্রথমার্ধে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিয়ে স্বাভাবিক চলাচলে সক্ষম করতে চায় বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্ট ও কূটনীতিক মহলের দাবি, সরকারের ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নির্দেশনার কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় দেশে টিকা আসা নিয়ে যে শঙ্কা ছিল, তা কেটে গেছে। প্রভাবশালী দেশগুলো থেকে নিয়মিতই আসছে টিকার চালান। কেটে গেছে টিকা পাওয়া নিয়ে ভাবনা।

আগস্ট থেকে সপ্তাহে এক কোটি নাগরিককে টিকা দেয়ার কথা ভাবছে সরকার। এর মধ্য দিয়ে ২০২২ সালের প্রথমার্ধে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিয়ে স্বাভাবিক চলাচলে সক্ষম করতে চায় বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্ট ও কূটনীতিক মহলের দাবি, সরকারের ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নির্দেশনার কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে টিকা কেনার চুক্তি হওয়ার পর বিশ্বে আমরা খুবই ভালো অবস্থানে ছিলাম। কিন্তু তাই বলে আমরা বসে থাকিনি। অন্যদের সঙ্গেও টিকা নিয়ে কথা বলা শুরু করি। টিকা কিনতে আমরা আগে থেকেই টাকা রেখে দিই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জনগণের জন্য টিকা নিশ্চিতই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য।

‘কিন্তু সমস্যা ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) অনুমোদনহীন টিকার ব্যবহার বা আমদানি নিয়ে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কেবল ডব্লিউএইচও অনুমোদিত টিকাই আমরা আমদানি করব। একই সঙ্গে আমরা এখনও মনে করি, কেবল আমদানি করা টিকায় জনগণকে বাঁচানো যাবে না। এ জন্য নিজেদের টিকা উৎপাদন শুরু করব। এরই মধ্যে চীন ও রাশিয়া বাংলাদেশে টিকা উৎপাদন, বোটলিং, ফিনিশিং ও লেভেলিং শুরু করতে বাংলাদেশি কোম্পানির সঙ্গে কাজ শুরু করেছে।’

টিকা: ‘ভারসাম্যের কূটনীতিতে’ সংকট থেকে সক্ষমতায়
২৭ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তার মাধ্যমে টিকাদান শুরু হয়। ছবি: নিউজবাংলা

তিনি বলেন, “ডিসেম্বরে আমরা গণটিকা শুরু করি। এরপর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশ সফরে আসেন তাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে। তখন টিকার বিষয়টি আমরা জারি রাখি। এর আগে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল সামিট অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নরেন্দ্র মোদি ‘নেইবার ফার্স্ট’ বলে কথা দেন। এরপর মার্চে মোদির বাংলাদেশ সফরেও টিকার সরবরাহ নিয়ে তিনি বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেন। আবার যখন ভারত টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখনও আমরা টিকা পেতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখি।”

বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে টিকা নিয়ে বাংলাদেশের তৎপরতা প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ‘জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফেব্রুয়ারিতে বাইডেন প্রশাসনের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাই। তখনও ভারত থেকে সিরামের টিকা পেতে তেমন কোনো সংকট দেখা যায়নি।

‘প্রতি মাসে তারা আমাদের ৫০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ ছিল। তবু আমি যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে টিকার বিষয়ে আলাপ করি। সেবার এ নিয়ে আমার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, সিনেটের ফরেন রিলেশনস কমিটির চেয়ারম্যান বব মেনেন্দেজসহ আরও কয়েকজন সিনেটরের বৈঠক হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমি সব বৈঠকেই করোনা মহামারির ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে টিকার বিষয়ে সহায়তা চাই। এরপর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা জন কেরি।

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাইডেনের আমন্ত্রণপত্র তুলে দিতে আসেন তিনি। আমার সঙ্গে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বৈঠক হয়। তখন টিকা নিয়ে ভারত সমস্যায় পড়তে শুরু করেছে। আমি সে সময় টিকার বিষয়ে তার (কেরি) সহায়তা চাই।’

টিকা নিয়ে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘৬ মে টিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের সঙ্গে আমার জরুরি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে আমি জরুরি ভিত্তিতে দুই কোটি ডোজ টিকা চাই। এর মধ্যে দেশের চলমান টিকা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্তত ৪০ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা চাওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যখন তাদের হাতে থাকা ৬০ মিলিয়ন (৬ কোটি) ডোজ টিকা বিভিন্ন দেশকে দিতে রাজি হলো, তখন বাংলাদেশের সংক্রমণ ও মৃত্যুহার কম ছিল। এ কারণে তাদের তালিকায় তখন বাংলাদেশের নাম ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার ছিল ভারত, ব্রাজিল ও নেপাল। কারণ দেশগুলোতে কোভিড ভয়াবহতায় রোমহর্ষক পরিবেশ তৈরি হয়েছিল।

‘এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মিলার আমাকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভারতীয় কমিউনিটি খুবই শক্তিশালী। তারা বাইডেনের নির্বাচনে প্রচুর খরচ করেছেন। তারা চায় আগে যুক্তরাষ্ট্র ভারতে টিকা পাঠাক। তাদের কারণেই বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশে মৃত্যুহার কম থাকায় টিকা দিতে পারছে না। তিনি তখন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি কমিউনিটিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন।’

টিকা: ‘ভারসাম্যের কূটনীতিতে’ সংকট থেকে সক্ষমতায়

যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা প্রবাসী ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ সাদেক, ডা. মাসুদুল হাসান, মাহমুদ উস শামস চৌধুরী ও ডা. চৌধুরী হাফিজ আহসান। ফাইল ছবি

প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্তরিকতার প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এরপরই আমি আমাদের কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ করি। আমরা টিকা পেতে মরিয়া ছিলাম। বিশ্বের সব জায়গায় টিকা পেতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।

‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা পেতে আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনদের অবদান অস্বীকার করার নয়। তারা স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন। হোয়াইট হাউসে সেই স্বাক্ষর জমা দিয়েছেন, সর্বোচ্চ লবিং চালিয়েছেন। তারা সরকারের পক্ষে বড় প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করেছেন।’

তিন কোটির চুক্তি করে ভারতের সরবরাহ ৭০ লাখ

কূটনীতি বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক গভীর। দুই দেশের নিবিড় বন্ধুত্বের সময়ে এসে চুক্তির মাধ্যমে আগাম টাকা দিয়ে টিকার সরবরাহে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যায়।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. তৌহিদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংকটে এসে সবাই স্বার্থপর হয়ে যায়। তারপরও দুই দেশের সম্পর্কে যে ঘনিষ্ঠতা আমরা দাবি করি, সেদিক থেকে দেখলে এ ধরনের পরিস্থিতি না হলেই ভালো হতো।

‘প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজের বদলে ২৫ লাখ ডোজ দিয়ে যদি বলা হতো বাকিটা দ্রুত দিয়ে দিচ্ছি, তাহলেও ভরসা পাওয়া যেত। কিন্তু একেবারেই বন্ধ রাখাটা ঠিক হলো না।’

টিকা: ‘ভারসাম্যের কূটনীতিতে’ সংকট থেকে সক্ষমতায়
বিমান থেকে নামানো হচ্ছে ভারতের দেয়া উপহারের টিকা। ছবি: নিউজবাংলা

করোনার টিকা দেয়া নিয়ে বাংলাদেশ চমক সৃষ্টি করেছিল শুরুতেই। ৫ নভেম্বর ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড আমদানির ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে বাংলাদেশ।

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট চুক্তিতে সই করে।

চুক্তির আওতায় প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে তিন কোটি ডোজ টিকা বাংলাদেশকে দেয়ার কথা ছিল সিরামের।

জানুয়ারিতে প্রথম টিকার চালান আসে বাংলাদেশে। ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় গণটিকাদান। তখন মাত্র ৩২টি দেশ টিকা দেয়া শুরু করেছিল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একধিক কর্মকর্তার ভাষ্য, এটি ছিল বাংলাদেশের টিকা কূটনীতির প্রথম বিজয়। ‘প্রতিবেশী আগে’-ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই স্লোগানকে কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ।

এর আগে বাংলাদেশের সঙ্গে নানা ইস্যুতে কিছুটা সম্পর্কের শিথিলতা তৈরি হলেও টিকাকে কূটনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিল ভারত। কেবল বাংলাদেশই নয়; নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ভুটানকেও টিকা দেয় ভারত।

দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বী চীন বাংলাদেশকে টিকা সরবরাহের কূটনীতিতে এ ক্ষেত্রে ভারতের পেছনে পড়ে যায়। তাদের দুই কোম্পানি সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাকের টিকা তখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পায়নি।

অন্যদিকে রাশিয়া উৎপাদনস্বল্পতার কথা বলে বাংলাদেশকে টিকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য নিজেদের চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অন্যদিকে উন্নত দেশগুলো বৈশ্বিক টিকার ৯০ ভাগের বেশি নিজেদের কবজায় নেয়ার প্রতিযোগিতা শুরু করে।

এ সুযোগটা নিয়েছিল ভারত। তখন তারা বাংলাদেশকে অন্য দেশ থেকে টিকা আমদানি না করার শর্ত দিয়ে ডোজ সরবরাহের চুক্তি করে।

টিকা: ‘ভারসাম্যের কূটনীতিতে’ সংকট থেকে সক্ষমতায়
২৫ জানুয়ারি ভারত থেকে কেনা সিরামের টিকার প্রথম চালান দেশে আসে। ছবি: নিউজবাংলা

কিন্তু ভারত তাদের সেই অবস্থান এক মাসের মধ্যেই হারাতে শুরু করে। টিকার কাঁচামাল রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া নিষেধাজ্ঞা, সিরামের উৎপাদন প্ল্যান্টে আগুন ও ভারতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছানোয় দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে সরকার টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

এ নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচি হুমকিতে পড়ে এবং একসময় বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে প্রথম ডোজ টিকা নিয়ে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় থাকেন।

দেশের কিছু কূটনীতিক একে ভারতের এক ধরনের ‘অপ্রতিবেশীসুলভ’ আচরণ বলে মনে করেন। বিশেষ করে দ্বিতীয় ডোজের জন্য ১৫ লাখ কোভিশিল্ড সরবরাহ না করাকে ‘অমানবিক’ বলে মনে করেন তারা।

তবে বাংলাদেশ বিকল্প খোঁজার চেষ্টা করেছে। এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টিকা আবিষ্কারের (উদ্ভাবন) আগেই আমরা টিকা পেতে মরিয়া ছিলাম। এরই অংশ হিসেবে যখন টিকা কেবল বিভিন্ন দেশের গবেষণাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষাধীন, সে সময়ই আমরা কোভ্যাক্সকে টাকা পরিশোধ করে রাখি।

‘একই সঙ্গে যখনই যে দেশের টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে, তখনই ওই টিকা পেতে যোগাযোগ রেখেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীই প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে করোনার টিকাকে বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে তা প্রাপ্তিতে সবার ন্যায্যতা নিশ্চিতের দাবি জানান।’

টিকা: ‘ভারসাম্যের কূটনীতিতে’ সংকট থেকে সক্ষমতায়
সংরক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া মডার্নার টিকা। ছবি: নিউজবাংলা

মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের টিকা সরবরাহের প্রতিবন্ধকতা ভালোভাবেই আমলে নিয়েছে। তারপরও কূটনৈতিক চ্যানেলে দেশটির কাছে টিকার দাবি অব্যাহত ছিল। একই সঙ্গে পৃথিবীর প্রতিটি কোনায় টিকার জন্য যোগাযোগ চালিয়েছি। আমরা চীন, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ প্রায় ৩০টির মতো দেশের কাছে টিকা চাই। এমনকি যেসব দেশের কাছে ১০ হাজার ডোজ টিকা ছিল, তাদের কাছেও গেছে বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথমে সবাই কথা দিয়েছে। টিকা দেয়নি।’

‘এটাকে কূটনৈতিক টুলস হিসেবে ব্যবহার করেছে। আমরা হাল ছাড়িনি। আমরা লেগে ছিলাম। এখনও লেগে আছি। দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন। এটা বাস্তবায়নে কাজ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলো। আমরা টিকা উৎপাদন, সরবরাহ ও মজুতকারীদের সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লাইন করিয়ে দিয়েছি। বাকি সব করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পারচেজ, দর, উৎপাদন নিয়ে তারা কাজ করেছে।’

সংকট কাটিয়ে আশার আলো

কেবল জুলাই ও আগস্টেই সরকারের হাতে তিন কোটি টিকা পৌঁছানোর কথা, যা ২০২২ সালের প্রথমার্ধে গিয়ে দাঁড়াবে ২১ কোটিরও বেশি। ফলে একসময় বন্ধ হয়ে যাওয়া টিকা কর্মসূচি পূর্ণ্যোদমে সচল থাকায় কোনো বাধা থাকবে না।

এখন সারা দেশে ২৫ বছর বয়সী সবাইকে টিকা নিবন্ধনের আওতায় আনা হলেও কিছুদিনের মধ্যেই বয়সসীমা নেমে আসবে ১৮তে।

টিকা: ‘ভারসাম্যের কূটনীতিতে’ সংকট থেকে সক্ষমতায়
১২ মে চীনের উপহারের টিকা পৌঁছে ঢাকায়। ফাইল ছবি

প্রথমে জেলা, উপজেলা পর্যায় থেকে এখন ইউনিয়ন ও গ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে টিকা। বয়স্ক ও শারীরিক অক্ষমদের জন্য বাড়িতে গিয়ে টিকা দেয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, কেবল ২৯ জুলাই ২ লাখ ৫০ হাজার ৯২৮ জনকে প্রথম ডোজ ও ৭ হাজার ৫৭ জেনকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মডার্না ও সিনোফার্মের টিকা দেয়া হচ্ছে।

টিকা: ‘ভারসাম্যের কূটনীতিতে’ সংকট থেকে সক্ষমতায়
জাপান থেকে শনিবার এসেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার আরও প্রায় আট লাখ ডোজ। ছবি: নিউজবাংলা

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে সরকারের হাতে এক কোটির ওপরে করোনার টিকা রয়েছে। আগস্টের মধ্যেই আরও দুই কোটি টিকা এসে পৌঁছাবে। এভাবে চীন থেকে তিন কোটি, রাশিয়া থেকে সাত কোটি, জনসন অ্যান্ড জনসনের সাত কোটি, অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটিসহ আগামী বছরের শুরুর মধ্যেই সরকারের হাতে প্রায় ২১ কোটি টিকা চলে আসবে। এর মাধ্যমে দেশের অন্তত ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিতে সক্ষম হবে সরকার।’

তিনি জানান, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বিঘ্ন রাখতে এবং অধিকাংশ নাগরিককে টিকার আওতায় আনতে ১৮ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের টিকা দেয়া শুরু হবে।

দেশে বিদ্যমান সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) কার্যকর করা হবে করোনা টিকার ক্ষেত্রেও।

গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্য অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রগুলোকেও কাজে লাগানো হবে। স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মীরাও টিকাদান কার্যক্রমে অংশ নেবেন।

আরও পড়ুন:
অন্তঃসত্ত্বাদের টিকায় অগ্রাধিকার চেয়ে রিট
টিকাদানে পিছিয়ে বাংলাদেশ
সপ্তাহে কোটি টিকা দেয়ার পরিকল্পনা
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু রোববার
অ্যাস্ট্রাজেনেকার আরও ৮ লাখ টিকা ঢাকায়

মন্তব্য

আরও পড়ুন

স্বাস্থ্য
Three people died of heat stroke in three districts

হিট স্ট্রোকে তিন জেলায় তিনজনের মৃত্যু

হিট স্ট্রোকে তিন জেলায় তিনজনের মৃত্যু ফাইল ছবি
শনিবার থেকে টানা তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারির পর নতুন করে সোমবার (২২ এপ্রিল) আবারও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এই আবহাওয়া চলতি মাসজুড়ে অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

কদিন ধরেই দাবদাহে পুড়ছে দেশ। দিনভর তীব্র তাপপ্রবাহ। অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এ অবস্থায় জামালপুর, নাটোর ও কুমিল্লায় হিট স্ট্রোকে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

জামালপুরে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

জামালপুরের ইসলামপুরে চলমান তীব্র তাপদাহে হিট স্ট্রোক করে গোলাম রাব্বানী নামের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে ওই ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়।

৪৮ বছর বয়সী রব্বানী উপজেলার চিনাডুলি ইউনিয়নের পশ্চিম গিলাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা। তিনি গুঠাইল বাজারে কাঁচামালের ব্যবসা করতেন।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, কয়েক দিনের চলমান তীব্র তাপদাহের কারণে এদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাড়িতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন গোলাম রাব্বানী। পরে তাকে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএএম আবু তাহের বলেন, ‘গোলাম রাব্বানীকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত গরমে হিট স্ট্রোকেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে আমার ধারণা।’

বড়াইগ্রামে কৃষকের মৃত্যু

নাটোরের বড়াইগ্রামে কৃষিখেতে কাজ করার সময় হিট স্ট্রোক করে রকুল হোসেন নামের এক কৃষকের মুত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের সাতইল বিলে এই ঘটনা ঘটে।

৩০ বছর বয়সী রকুল উপজেলার গাড়ফা উত্তরপাড়া গ্রামের হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চান্দাই ইউপি চেয়ারম্যান শাহানাজ পারভীন বলেন, ‘সকাল থেকে জমিতে কাজ করছিল কৃষক রকুল হোসেন। এক পর্যায়ে তীব্র দাবদাহ সহ্য করতে না পেরে তিনি পাশের জলাশয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু সেখানে পোঁছানোর আগেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি দেখতে পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।’

বুড়িচংয়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু

তীব্র গরমে কাজ করতে গিয়ে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে হিট স্ট্রোক করে মজিবুর রহমান নামের এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বুড়িচং উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী মো. রুহুল আমিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

৪৫ বছর বয়সী মজিবুর রহমান উপজেলার জগতপুর গ্রামের আলফাজ উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, এদিন সকাল নয়টার দিকে রুহুল আমিনের বাড়িতে কাজ করতে যান মজিবুর। কিছুক্ষণ পর ভবনের বেইজ কাটার সময় হিটস্ট্রোক করেন তিনি। স্থানীয়রা তাকে সঙ্গে সঙ্গে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বুড়িচং থানার এসআই মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মরদেহের গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ফলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি স্ট্রোক করে মারা গিয়েছেন। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।’

গত ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ সারা দেশে এখনও অব্যাহত রয়েছে। শনিবার থেকে টানা তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারির পর নতুন করে সোমবার (২২ এপ্রিল) আবারও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এসময় বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল, কলেজ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও। আদালতেও আইনজীবীদের কালো পোশাক পরা শিথিল করা হয়েছে।

এই আবহাওয়া চলতি মাসজুড়ে অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ঈশ্বরদীতে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন অর্থাৎ সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শনিবার মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোরে। সেদিন চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রাও ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুসারে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
173 Bangladeshis are returning from Myanmar prisons

মিয়ানমারের কারাগার থেকে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি

মিয়ানমারের কারাগার থেকে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি ছবি: সংগৃহীত
এসব বাংলাদেশিকে বহনকারী জাহাজটি বুধবার দেশের সমুদ্রসীমায় পৌঁছবে। তাদের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজার, ৩০ জন বান্দরবান, সাতজন রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার একজন করে বাসিন্দা রয়েছেন।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিতোয়ে কারাগার থেকে ১৭৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরছেন। মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে।

একই দিন সকালে এসব বাংলাদেশি নাগরিককে নিয়ে মিয়ানমারের নৌ-জাহাজ চিন ডুইন সিতোয়ে বন্দর ত্যাগ করেছে। জাহাজটি রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হওয়া মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে কক্সবাজারে আসছে।

বুধবার জাহাজটি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় পৌঁছবে এবং পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশের নাগরিকদের হস্তান্তর করা হবে।

দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশি ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজার, ৩০ জন বান্দরবান, সাতজন রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার একজন করে বাসিন্দা রয়েছেন।

ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাস মিয়ানমারের জাহাজটির বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তুলে ধরে। সর্বোচ্চসংখ্যক যাচাই করে বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্রুত ও সহজে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনায় দূতাবাস মিয়ানমারের বিভিন্ন কারাগারে অবস্থানরত ১৪৪ জন ‘যাচাই করা বাংলাদেশি নাগরিক, যাদের কারাভোগের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে বা ক্ষমা পেয়েছেন’ তাদেরকে সিতোয়ে কারাগারে আনার উদ্যোগ নেয়।

পাশাপাশি আরও ২৯ জন যাচাই করা বাংলাদেশি নাগরিক, যারা এখনও কারাভোগ করছেন কিংবা বিচারাধীন, একইসঙ্গে তাদেরও মুক্তি দেয়ার বিষয়টি মিয়ানমারের কাছে তুলে ধরা হয়। এর ভিত্তিতে সাজা মওকুফ করে তাদেরকেও দেশে পাঠানো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, সবশেষ গত বছরের ৩ অক্টোবর দুই দেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মিয়ানমারে কারাভোগ শেষ করা ২৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন:
মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে আহত বাংলাদেশি দুই জেলে
রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা: জবাবদিহির পরিবেশ সৃষ্টিতে জোর জি-৭ দেশগুলোর
বাংলাদেশে আশ্রয়ের জন্য ঢুকল বিজিপির আরও ১৩ সদস্য
বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে মোট ২৬১ বিজিপি সদস্য
গোপনে ঢুকছে রোহিঙ্গারা, সীমান্তে অপেক্ষায় আরও

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Two engineers of Paubo arrested with bribe money

‘ঘুষের’ টাকাসহ পাউবোর দুই প্রকৌশলী আটক

‘ঘুষের’ টাকাসহ পাউবোর দুই প্রকৌশলী আটক কোলাজ: নিউজবাংলা
বন্ধ কক্ষে সরকারি অফিসে ঠিকাদারের সঙ্গে কীসের অর্থ লেনদেন হচ্ছে, তা জানতে চান সাংবাদিকরা, কিন্তু প্রশ্নের সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন উপস্থিত প্রকৌশলী ও ঠিকাদাররা। বিষয়টি সন্দেজনক মনে হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন সাংবাদিকরা।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো) বিপুল পরিমাণ টাকাসহ দুই উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া পুলিশ আসার খবর পেয়ে আগেই পালিয়ে যান ঠিকাদার রাজীব ও কনকসহ কয়েকজন। এ সময় ওই দুই কর্মকর্তার কাছ থেকে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে পাবনা পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে তাদের আটক করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যায় তাদের পাবনা সদর থানা পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়।

আটককৃতরা হলেন- দাপুনিয়া ইউনিয়নের টিকশাইল গ্রামের বাসিন্দা পাবনা পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদ রানা এবং কুমিল্লার মেঘনা থানার শিবনগরের বাসিন্দা ও পাবনা পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মোশাররফ হোসেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকালে ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পাবনা পাউবোতে অনুসন্ধানে যান কয়েকজন সাংবাদিক। সেখানে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাসুদ রানার কক্ষে গেলে ওই কক্ষ ভেতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। কয়েকবার ধাক্কা দেয়ার পর মাসুদ রানা দরজা খোলেন। কক্ষে ঠিকাদার ও স্থানীয় কমিশনার আরিফুজ্জামান রাজিব ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোশাররফসহ কয়েকজনকে দেখা যায়। এ সময় টেবিলে বিপুল অর্থও দেখতে পান সাংবাদিকরা। এরপরই আরেক ঠিকাদার কনক হাজির হন।

সরকারি অফিসে ঠিকাদারের সঙ্গে বন্ধ কক্ষে কীসের অর্থ লেনদেন হচ্ছে, তা জানতে চান সাংবাদিকরা, কিন্তু প্রশ্নের সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন তারা। বিষয়টি সন্দেজনক মনে হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন ওই সাংবাদিকরা। পুলিশ এসে পৌঁছানোর আগেই দুই ঠিকাদার পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে দুই প্রকৌশলীকে আটক করে এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) খবর দেয়।

তাদের সেখানেই দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য সংগ্রহ করে দুদক ও পুলিশ। পরে সন্ধ্যার দিকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

তানভীর আহমেদ দীপ নামের পাবনা পাউবোর এক ঠিকাদার বলেন, ‘আটক দুইজন হয়ত ষড়যন্ত্রের শিকার হতে পারে। কারণ তারা মাত্র কয়েকমাস এখানে এসেছেন। এত দ্রুত এসব টাকা লেনদেন করবে, এটা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। কোনো ঠিকাদার তাদের কাছ থেকে সুবিধামতো কাজ (প্রকল্প) না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে হয়ত ফাঁসিয়েছে।’

আনিছুর রহমান মারুফ নামের আরেক ঠিকাদার বলেন, ‘প্রত্যেক অফিসের কাজে কর্মকর্তাদের বিশেষ কমিশন দিতে হয়। কাজের শুরু থেকে ধাপে ধাপে এসব টাকা দিতে হয়। না দেয়া হলে বিল আটকে দেয়া হয়।’

পাবনা পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি দেখছে। কোথাকার টাকা, কীভাবে লেনদেন হলো- সেসব বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

পাবনা সদর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, ‘পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ ফোন করে জানান যে সেখানে ঘুষের টাকা লেনদেন হচ্ছে। খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকাসহ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সত্যতা পেলে দুই প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে দুদককে অবহিত করা হয়েছে। তারা বিষয়টি অনুসন্ধান করবে।’

এ বিষয়ে দুদক, পাবনা শাখার কর্মকর্তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Emir of Qatar leaves Dhaka

কাতারের আমিরের ঢাকা ত্যাগ

কাতারের আমিরের ঢাকা ত্যাগ কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি দু’দিনব্যাপী বাংলাদেশ সফর শেষে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা ত্যাগ করেন। ছবি: পিআইডি
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি রাষ্ট্রপতির মো. সাহাবুদ্দিনের আমন্ত্রণে ২২-২৩ এপ্রিল দু’দিনব্যাপী বাংলাদেশ সফর করেন। তিনি সরকারি ও বেসরকারি সেক্টরের সদস্যদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশে তার দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে মঙ্গলবা বিকেলে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাতার আমিরের সফর দু’দেশের মধ্যে অসাধারণ সদিচ্ছা ও বোঝাপড়া তৈরি করেছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ের এ সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও সুসংহত এবং পরবর্তী স্তরে উন্নীত করতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।

কাতারের আমির বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে ২২-২৩ এপ্রিল দু’দিনব্যাপী বাংলাদেশ সফর করেন। তিনি সরকারি ও বেসরকারি সেক্টরের সদস্যদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন আমির-ই দেওয়ান প্রধান, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী, কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, কাতার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান, কাতার ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির (কিউআইএ) এশিয়া ও আফ্রিকা ইনভেস্টমেন্টের প্রধান, এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের পরিচালক।

সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এবং কাতারি আমিরের নেতৃত্বে কাতারি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ফলপ্রসূ দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেন।

দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সময় উভয় পক্ষই দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রশংসা করে এবং বর্ধিত পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা, দু’দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ এবং রাষ্ট্রীয়, ব্যবসা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সকল স্তরে সফর বিনিময়ের মাধ্যমে সম্পর্ককে আরও বাড়ানো ও এগিয়ে নেয়ার পন্থা ও উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় যেসব বিষয় উঠে এসেছে- সেগুলো ছিল বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, জনশক্তি, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা ইত্যাদি।

উভয়পক্ষ গাজা যুদ্ধ এবং মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনসহ পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতেও মতবিনিময় করেছে। উভয় নেতা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ও সহিংসতা বৃদ্ধির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ফিলিস্তিনের সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য বিশ্ব নেতাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী তার উদ্বোধনী বক্তব্যে একটি উন্নত জ্ঞানভিত্তিক বহু-সাংস্কৃতিক সমাজ হিসাবে কাতারের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ও রূপান্তর এবং আমিরের নেতৃত্বে মধ্যস্থতা ও বহুপক্ষীয় কূটনীতিতে কাতারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবদ্দশায় বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া কয়েকটি উপসাগরীয় দেশের অন্যতম হওয়ার জন্য কাতারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কাতারের আমির প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশকে একটি উদীয়মান বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে প্রশংসা করেন এবং কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে বিনিয়োগ প্রসার ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য উভয় পক্ষকে ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশে সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ব্যবসা অনুসন্ধানে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে আরও কর্মী, পেশাদার, নার্স, টেকনিশিয়ান, কেয়ারগিভার ইত্যাদি নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য কাতারের আমিরকে অনুরোধ করেন। আমির এতে ইতিবাচকভাবে সাড়া দেন।

মতবিনিময়কালে কাতারের আমির ইইজেড ও কক্সবাজারের পর্যটন স্পটগুলোতে বিনিয়োগের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। তিনি কাতারের ফ্রি ইকোনমিক জোন সম্পর্কেও বৈঠকে অবহিত করেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দল পাঠানোর অনুরোধ জানান।

দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শেষে প্রতিনিধি দলের নেতারা বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে মোট ১০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করেন।

উভয় নেতা কাতারের আমিরের নামে ইসিবি সার্কেল থেকে কালশী পয়েন্ট পর্যন্ত একটি বিশেষ এভিনিউ এবং রাজধানীর মিরপুরে একটি পার্কের নামকরণ ও উদ্বোধন প্রত্যক্ষ করেন।

আমির ও তার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তারা দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন।

পরে আমির বঙ্গভবনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর তার সম্মানে রাষ্ট্রপতির দেয়া আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন।

মধ্যাহ্নভোজে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কাতারের আমির
কাতারের আমিরকে ঢাকায় লালগালিচা অভ্যর্থনা
কাতারের আমির আসছেন সোমবার, সই হবে ৬ চুক্তি ও ৫ এমওইউ
কাতারের আমিরের বাংলাদেশ সফরে গুরুত্ব পাবে যেসব বিষয়

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Chhatra League leader Mokhlesh was killed by his friend Mizan

ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছকে গলা কেটে হত্যা করেন ‘বন্ধু’ মিজান

ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছকে গলা কেটে হত্যা করেন ‘বন্ধু’ মিজান নিখোঁজের ২৫ দিন পর মোখলেছের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কোলাজ: নিউজবাংলা
পারিবারিক দ্বন্দ্বে বন্ধু হয়েছে শত্রু। আর সেই বন্ধুত্বকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেই মোখলেছকে গলা কেটে হত্যা করেন মিজান শেখ। ঘটনার ২৫ দিন পর নরসুন্দা নদী থেকে মোখলেছ ভূঁইয়ার মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

‘মোখলেছ ও মিজান ঘনিষ্ঠ বন্ধু। শৈশব ও কৈশোরের বেড়ে ওঠা সব একসঙ্গে, একই গ্রামে। সম্প্রতি গ্রামের একটি রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব বাধে তাদের দুই পরিবারে। ওই ঘটনার পর তাদের মধ্যে মারামারি হয়েছে একাধিকবার। চারটি মামলাও চলছে তাদের মধ্যে। তারপরও তাদের বন্ধুত্ব ছিল অটুট; নিয়মিত মেলামেশা ছিল তাদের। মারামারিতে মিজান আহত হলে গোপনে তাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন মোখলেছ।

‘সবশেষ ২৯ মার্চ রাতে তারা পাগলা মসজিদে একসঙ্গে তারাবি পড়েন। এক পর্যায়ে সেই সম্পর্কই কাল হয়ে দাঁড়ালো মোখলেছের জীবনে। ওইদিন রাতেই তাকে গলা কেটে হত্যা করে বন্ধু মিজান।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন মোখলেছের বড় ভাই মিজান ভূঁইয়া।

হত্যাকাণ্ডের শিকার ২৮ বছর বয়সী মোখলেছ ভূঁইয়া কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রামের মৃত হোসেনের ছেলে। তিনি কেওয়ারজোড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সম্প্রতি শহরের গুরুদয়াল সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি।

অভিযুক্ত ২৮ বছর বয়সী মিজান শেখও একই গ্রামের বাসিন্দা।

ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছকে গলা কেটে হত্যা করেন ‘বন্ধু’ মিজান

গত ২৯ মার্চ রাতে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে তারাবির নামাজের পর নিখোঁজ হন ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছ। পরিবারের সদস্যরা তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করে সাড়া না পেয়ে যোগাযোগ করেন নানাজনের সঙ্গে। তারপরও খোঁজ না পেয়ে পরদিন সকালে বাড়ি থেকে স্বজনরা ছুটে আসেন শহরের হারুয়া এলাকায় তাদের ভাড়া বাসায়। সেটি তালাবদ্ধ দেখে কক্ষের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখেন, মোখলেছের মোবাইলটি রয়েছে বালিশের নিচেই। এরপরই মনে সন্দেহ জাগে তাদের।

৩১ মার্চ রাতে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মোখলেছের বড় ভাই মিজান ভূঁইয়া। থানায় জিডি হলে হারুয়া এলাকার বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। ফুটেজে ২৯ মার্চ রাত পৌনে ১০টার দিকে মোখলেছকে গুরুদয়াল সরকারি কলেজের দিকে হেঁটে যেতে দেখা যায়। সে সময় মোখলেছের সঙ্গে যে কয়েকজনকে দেখা যায়, তাদের মধ্যে মিজান শেখও ছিলেন।

ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছকে গলা কেটে হত্যা করেন ‘বন্ধু’ মিজান

সিসিটিভি ফুটেজের বর্ণনা দিয়ে নিখোঁজের বড় ভাই মিজান ভূঁইয়া বলেন, ‘সে যে বাসায় থাকত তার কাছাকাছি একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ফুটেজে দেখা গেছে, ২৯ মার্চ রাত ৯টা ৪৪ মিনিটে মোখলেছ হেঁটে বাসায় ফিরছে। কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে পেছন থেকে মিজানও হেঁটে আসছে। অথচ মিজান হারুয়া এলাকায় থাকে না।’

তিনি জানান, আদরের ছেলের সন্ধান না পেয়ে ১৩ এপ্রিল হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন তাদের বাবা মকবুল হোসেন।

এ ঘটনায় ১৬ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় মিজান ও অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে অপহরণের মামলা করেন মিজান ভূঁইয়া। মামলার পর ২০ এপ্রিল সিলেটের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে মিজানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদিকে নিখোঁজ হওয়ার দিনের সিসিটিভি ফুটেজে মিজানকে দেখা যাওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার পরিবারের তিনজনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন— মিজানের বাবা শেফুল শেখ এবং দুই ভাই মারজান শেখ ও রায়হান শেখ। শনিবার তাদের আটক করা হয়।

ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছকে গলা কেটে হত্যা করেন ‘বন্ধু’ মিজান

আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ। মোখলেছকে গলা কেটে হত্যার পর তার শরীরে সিমেন্টের ব্লক বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য দেন মিজান শেখ। এ তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার থেকে নরসুন্দা নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ওয়াচ টাওয়ারের সামনে থেকে ভাসমান অবস্থায় তার মাথাবিহীন অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ‘যে ছোরা দিয়ে মোখলেছকে গলা কেটে হত্যা করা করা হয়, সেটিও উদ্ধার করা হয়েছে। ছোরাটি ২৩০ টাকা দিয়ে যার কাছ থেকে কেনা হয়েছিল, তিনিও স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।’

যাদের সঙ্গে নিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে তাদের বিষয়েও মিজান তথ্য দিয়েছেন উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, ‘এসব পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

মরদেহ বিকৃত হয়ে যাওয়ায় অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Awami League alone against MP Ekram in Noakhali

নোয়াখালীতে এমপি একরামের বিরুদ্ধে একাট্টা আওয়ামী লীগ

নোয়াখালীতে এমপি একরামের বিরুদ্ধে একাট্টা আওয়ামী লীগ নোয়াখালী প্রেসক্লাবে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খায়রুল আনাম সেলিম। ছবি: নিউজবাংলা
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খায়রুল আনাম সেলিম বলেন, ‘এমপি একরামুল করিম চৌধুরী উপজেলা নির্বাচনে পরিকল্পিতভাবে তার ছেলেকে আমার বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছেন। টাকা, পেশিশক্তি, সন্ত্রাসী বাহিনী, অবৈধ অস্ত্র ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ছেলেকে জয়ী করতে উঠেপড়ে লেগেছেন তিনি। এমন কর্মকাণ্ডের জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। যেকোনো মূল্যে তাকে প্রতিহত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার নোয়াখালী প্রেসক্লাবে জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এ সময় দলীয় প্রধানের আদেশ অমান্য করে নিজের ছেলেকে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করায় একরামুল করিম চৌধুরীর সংসদ সদস্যপদ স্থগিতের দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী খায়রুল আনাম সেলিম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শিহাব উদ্দিন শাহিন, সাধারণ সম্পাদক মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল, সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাহার উদ্দিন খেলন ও সাধারণ সম্পাদক হানিফ চৌধুরী।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর বাড়ি কবিরহাট উপজেলায়। তিনি নিজ ছেলের জাতীয় পরিচয়পত্র স্থানান্তর করে সুবর্ণচরে নিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রবীণ নেতা খায়রুল আনম সেলিমের বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছেন।

‘প্রতীক পাওয়ার আগে থেকে ভোটের মাঠে নেমে এমপি একরাম আওয়ামী লীগের নেতাদের হুমকি দিচ্ছেন, বিষোদ্‌গার করছেন। ভোট না দিলে উন্নয়ন করবেন না বলে সাধারণ মানুষকে শাসাচ্ছেন।’

‘জেলা সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী পৌর মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেলকে অফিস থেকে বের হতে দেবেন না বলেও হুমকি দিচ্ছেন, যা রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। একজন আইনপ্রণেতা হয়ে তিনি আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।’

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এইচ এম খায়রুল আনাম সেলিম বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় একরাম চৌধুরী নোয়াখালী পৌরসভার মেয়রের কক্ষে আমাকে নেতা-কর্মীদের সামনে চরমভাবে অপমান করেন। একপর্যায়ে তেড়ে আসেন এবং আমাকে দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এমপি একরাম তার ছেলে সাবাব চৌধুরীকে পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছেন। অঢেল টাকা, পেশিশক্তি, সন্ত্রাসী বাহিনী, অবৈধ অস্ত্র এবং ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ছেলেকে জয়ী করতে উঠেপড়ে লেগেছেন তিনি।

‘এমপি একরামের এমন কর্মকাণ্ডের জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
This senior joint secretary general of BNP said that the United States report has objectively highlighted the deterioration of the human rights situation in Bangladesh including the arrest of opposition party leaders and the obstruction of their peaceful assembly

সরকারের অন্যায়-নৃশংসতা ফাঁস করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন: রিজভী

সরকারের অন্যায়-নৃশংসতা ফাঁস করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন: রিজভী বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেপ্তার ও তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধাসহ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির বিষয়টি বস্তুনিষ্ঠভাবে তুলে ধরা হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন-২০২৩ বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের ‘অবিচার ও নৃশংসতা’ ফাঁস করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেপ্তার ও তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধাসহ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির বিষয়টি বস্তুনিষ্ঠভাবে তুলে ধরা হয়েছে।’

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘প্রতিবেদনে গুম, গুপ্তহত্যা ও নির্যাতনসহ বাংলাদেশে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করার নাগরিক অধিকার হরণ করা হয়েছে বলেও তাতে উল্লেখ করা হয়েছে।’

অবিচার ও নিষ্ঠুরতার দৃশ্যমান ঘটনাগুলোর মাধ্যমে প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির আসল রূপ তুলে ধরা হয়েছে বলে দাবি করেন রিজভী।

রিজভী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্যুরো অফ ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লেবারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রবার্ট এস গিলক্রিস্ট মানবাধিকার প্রতিবেদনটি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে বর্ণনা করেছেন।

‘গিলক্রিস্ট সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, কারসাজির মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘১/১১-এর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা দেয়া হয়েছে আর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছিল মাত্র চারটি মামলা।

‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তড়িঘড়ি করে নিজের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা প্রত্যাহার করিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনেকবার এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। এবার তা যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্টেই উঠে এসেছে। মানুষ বিশ্বাস করত সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার খালেদা জিয়া। এবার গণতান্ত্রিক বিশ্ব তাদের বস্তুনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তা তুলে ধরেছে।’

সোমবার ২০২৩ সালের মানবাধিকার প্রতিবেদন (এইচআরআর) প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। একে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের একটি ‘বাস্তব ও বস্তুনিষ্ঠ’ রেকর্ড হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।

১৯৮টি দেশ ও অঞ্চল নিয়ে ২০২৩ সালের মানবাধিকার প্রতিবেদনটি (এইচআরআর) তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অংশে বলা হয়, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতন, নির্বিচারে আটক, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অনেক খবর পাওয়া গেছে।’

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ব্যক্তি বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত করতে ও শাস্তি দিতে বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ নেয়নি।’

রিজভী বলেন, ‘বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে সরকারের নিপীড়ন, নৃশংসতা, গুম, খুনসহ নানা অপকর্মের কথা বলে আসছে।

‘এখন আর লুকানোর কিছু নেই। শেখ হাসিনার সরকারের অবিচার, রক্তপাত ও নানা অপকর্মের ঘটনা ধীরে ধীরে গণতান্ত্রিক বিশ্বে বেরিয়ে আসছে। গোটা বিশ্ব এর নিন্দা করছে।’

আরও পড়ুন:
সরকার দেশকে প্রতিবেশী দেশের অধীনতার দিকে ঠেলে দিয়েছে: রিজভী
আ. লীগ ও সহযোগী সংগঠন উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছে: রিজভী
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইন্ডিয়া আউট প্রচার চালাচ্ছে জনগণ: রিজভী
সরকার জনগণের কাছে সিন্ডিকেট হিসেবে পরিচিত: রিজভী
যার সেক্রেটারি নির্বাচিত হওয়ার কথা তাকে ভরা হয়েছে জেলে: রিজভী

মন্তব্য

p
উপরে