বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় দেশে টিকা আসা নিয়ে যে শঙ্কা ছিল, তা কেটে গেছে। প্রভাবশালী দেশগুলো থেকে নিয়মিতই আসছে টিকার চালান। কেটে গেছে টিকা পাওয়া নিয়ে ভাবনা।
আগস্ট থেকে সপ্তাহে এক কোটি নাগরিককে টিকা দেয়ার কথা ভাবছে সরকার। এর মধ্য দিয়ে ২০২২ সালের প্রথমার্ধে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিয়ে স্বাভাবিক চলাচলে সক্ষম করতে চায় বাংলাদেশ।
সংশ্লিষ্ট ও কূটনীতিক মহলের দাবি, সরকারের ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নির্দেশনার কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে টিকা কেনার চুক্তি হওয়ার পর বিশ্বে আমরা খুবই ভালো অবস্থানে ছিলাম। কিন্তু তাই বলে আমরা বসে থাকিনি। অন্যদের সঙ্গেও টিকা নিয়ে কথা বলা শুরু করি। টিকা কিনতে আমরা আগে থেকেই টাকা রেখে দিই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জনগণের জন্য টিকা নিশ্চিতই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য।
‘কিন্তু সমস্যা ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) অনুমোদনহীন টিকার ব্যবহার বা আমদানি নিয়ে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কেবল ডব্লিউএইচও অনুমোদিত টিকাই আমরা আমদানি করব। একই সঙ্গে আমরা এখনও মনে করি, কেবল আমদানি করা টিকায় জনগণকে বাঁচানো যাবে না। এ জন্য নিজেদের টিকা উৎপাদন শুরু করব। এরই মধ্যে চীন ও রাশিয়া বাংলাদেশে টিকা উৎপাদন, বোটলিং, ফিনিশিং ও লেভেলিং শুরু করতে বাংলাদেশি কোম্পানির সঙ্গে কাজ শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, “ডিসেম্বরে আমরা গণটিকা শুরু করি। এরপর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশ সফরে আসেন তাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে। তখন টিকার বিষয়টি আমরা জারি রাখি। এর আগে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল সামিট অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নরেন্দ্র মোদি ‘নেইবার ফার্স্ট’ বলে কথা দেন। এরপর মার্চে মোদির বাংলাদেশ সফরেও টিকার সরবরাহ নিয়ে তিনি বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেন। আবার যখন ভারত টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখনও আমরা টিকা পেতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখি।”
বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে টিকা নিয়ে বাংলাদেশের তৎপরতা প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ‘জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফেব্রুয়ারিতে বাইডেন প্রশাসনের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাই। তখনও ভারত থেকে সিরামের টিকা পেতে তেমন কোনো সংকট দেখা যায়নি।
‘প্রতি মাসে তারা আমাদের ৫০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ ছিল। তবু আমি যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে টিকার বিষয়ে আলাপ করি। সেবার এ নিয়ে আমার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, সিনেটের ফরেন রিলেশনস কমিটির চেয়ারম্যান বব মেনেন্দেজসহ আরও কয়েকজন সিনেটরের বৈঠক হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি সব বৈঠকেই করোনা মহামারির ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে টিকার বিষয়ে সহায়তা চাই। এরপর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা জন কেরি।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাইডেনের আমন্ত্রণপত্র তুলে দিতে আসেন তিনি। আমার সঙ্গে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বৈঠক হয়। তখন টিকা নিয়ে ভারত সমস্যায় পড়তে শুরু করেছে। আমি সে সময় টিকার বিষয়ে তার (কেরি) সহায়তা চাই।’
টিকা নিয়ে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘৬ মে টিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের সঙ্গে আমার জরুরি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে আমি জরুরি ভিত্তিতে দুই কোটি ডোজ টিকা চাই। এর মধ্যে দেশের চলমান টিকা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্তত ৪০ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা চাওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যখন তাদের হাতে থাকা ৬০ মিলিয়ন (৬ কোটি) ডোজ টিকা বিভিন্ন দেশকে দিতে রাজি হলো, তখন বাংলাদেশের সংক্রমণ ও মৃত্যুহার কম ছিল। এ কারণে তাদের তালিকায় তখন বাংলাদেশের নাম ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার ছিল ভারত, ব্রাজিল ও নেপাল। কারণ দেশগুলোতে কোভিড ভয়াবহতায় রোমহর্ষক পরিবেশ তৈরি হয়েছিল।
‘এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মিলার আমাকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভারতীয় কমিউনিটি খুবই শক্তিশালী। তারা বাইডেনের নির্বাচনে প্রচুর খরচ করেছেন। তারা চায় আগে যুক্তরাষ্ট্র ভারতে টিকা পাঠাক। তাদের কারণেই বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশে মৃত্যুহার কম থাকায় টিকা দিতে পারছে না। তিনি তখন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি কমিউনিটিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন।’
যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা প্রবাসী ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ সাদেক, ডা. মাসুদুল হাসান, মাহমুদ উস শামস চৌধুরী ও ডা. চৌধুরী হাফিজ আহসান। ফাইল ছবি
প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্তরিকতার প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এরপরই আমি আমাদের কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ করি। আমরা টিকা পেতে মরিয়া ছিলাম। বিশ্বের সব জায়গায় টিকা পেতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।
‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা পেতে আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনদের অবদান অস্বীকার করার নয়। তারা স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন। হোয়াইট হাউসে সেই স্বাক্ষর জমা দিয়েছেন, সর্বোচ্চ লবিং চালিয়েছেন। তারা সরকারের পক্ষে বড় প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করেছেন।’
তিন কোটির চুক্তি করে ভারতের সরবরাহ ৭০ লাখ
কূটনীতি বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক গভীর। দুই দেশের নিবিড় বন্ধুত্বের সময়ে এসে চুক্তির মাধ্যমে আগাম টাকা দিয়ে টিকার সরবরাহে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যায়।
এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. তৌহিদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংকটে এসে সবাই স্বার্থপর হয়ে যায়। তারপরও দুই দেশের সম্পর্কে যে ঘনিষ্ঠতা আমরা দাবি করি, সেদিক থেকে দেখলে এ ধরনের পরিস্থিতি না হলেই ভালো হতো।
‘প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজের বদলে ২৫ লাখ ডোজ দিয়ে যদি বলা হতো বাকিটা দ্রুত দিয়ে দিচ্ছি, তাহলেও ভরসা পাওয়া যেত। কিন্তু একেবারেই বন্ধ রাখাটা ঠিক হলো না।’
করোনার টিকা দেয়া নিয়ে বাংলাদেশ চমক সৃষ্টি করেছিল শুরুতেই। ৫ নভেম্বর ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড আমদানির ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে বাংলাদেশ।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট চুক্তিতে সই করে।
চুক্তির আওতায় প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে তিন কোটি ডোজ টিকা বাংলাদেশকে দেয়ার কথা ছিল সিরামের।
জানুয়ারিতে প্রথম টিকার চালান আসে বাংলাদেশে। ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় গণটিকাদান। তখন মাত্র ৩২টি দেশ টিকা দেয়া শুরু করেছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একধিক কর্মকর্তার ভাষ্য, এটি ছিল বাংলাদেশের টিকা কূটনীতির প্রথম বিজয়। ‘প্রতিবেশী আগে’-ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই স্লোগানকে কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ।
এর আগে বাংলাদেশের সঙ্গে নানা ইস্যুতে কিছুটা সম্পর্কের শিথিলতা তৈরি হলেও টিকাকে কূটনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিল ভারত। কেবল বাংলাদেশই নয়; নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ভুটানকেও টিকা দেয় ভারত।
দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বী চীন বাংলাদেশকে টিকা সরবরাহের কূটনীতিতে এ ক্ষেত্রে ভারতের পেছনে পড়ে যায়। তাদের দুই কোম্পানি সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাকের টিকা তখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পায়নি।
অন্যদিকে রাশিয়া উৎপাদনস্বল্পতার কথা বলে বাংলাদেশকে টিকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য নিজেদের চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অন্যদিকে উন্নত দেশগুলো বৈশ্বিক টিকার ৯০ ভাগের বেশি নিজেদের কবজায় নেয়ার প্রতিযোগিতা শুরু করে।
এ সুযোগটা নিয়েছিল ভারত। তখন তারা বাংলাদেশকে অন্য দেশ থেকে টিকা আমদানি না করার শর্ত দিয়ে ডোজ সরবরাহের চুক্তি করে।
কিন্তু ভারত তাদের সেই অবস্থান এক মাসের মধ্যেই হারাতে শুরু করে। টিকার কাঁচামাল রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া নিষেধাজ্ঞা, সিরামের উৎপাদন প্ল্যান্টে আগুন ও ভারতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছানোয় দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে সরকার টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়।
এ নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচি হুমকিতে পড়ে এবং একসময় বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে প্রথম ডোজ টিকা নিয়ে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় থাকেন।
দেশের কিছু কূটনীতিক একে ভারতের এক ধরনের ‘অপ্রতিবেশীসুলভ’ আচরণ বলে মনে করেন। বিশেষ করে দ্বিতীয় ডোজের জন্য ১৫ লাখ কোভিশিল্ড সরবরাহ না করাকে ‘অমানবিক’ বলে মনে করেন তারা।
তবে বাংলাদেশ বিকল্প খোঁজার চেষ্টা করেছে। এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টিকা আবিষ্কারের (উদ্ভাবন) আগেই আমরা টিকা পেতে মরিয়া ছিলাম। এরই অংশ হিসেবে যখন টিকা কেবল বিভিন্ন দেশের গবেষণাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষাধীন, সে সময়ই আমরা কোভ্যাক্সকে টাকা পরিশোধ করে রাখি।
‘একই সঙ্গে যখনই যে দেশের টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে, তখনই ওই টিকা পেতে যোগাযোগ রেখেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীই প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে করোনার টিকাকে বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে তা প্রাপ্তিতে সবার ন্যায্যতা নিশ্চিতের দাবি জানান।’
মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের টিকা সরবরাহের প্রতিবন্ধকতা ভালোভাবেই আমলে নিয়েছে। তারপরও কূটনৈতিক চ্যানেলে দেশটির কাছে টিকার দাবি অব্যাহত ছিল। একই সঙ্গে পৃথিবীর প্রতিটি কোনায় টিকার জন্য যোগাযোগ চালিয়েছি। আমরা চীন, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ প্রায় ৩০টির মতো দেশের কাছে টিকা চাই। এমনকি যেসব দেশের কাছে ১০ হাজার ডোজ টিকা ছিল, তাদের কাছেও গেছে বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথমে সবাই কথা দিয়েছে। টিকা দেয়নি।’
‘এটাকে কূটনৈতিক টুলস হিসেবে ব্যবহার করেছে। আমরা হাল ছাড়িনি। আমরা লেগে ছিলাম। এখনও লেগে আছি। দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন। এটা বাস্তবায়নে কাজ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলো। আমরা টিকা উৎপাদন, সরবরাহ ও মজুতকারীদের সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লাইন করিয়ে দিয়েছি। বাকি সব করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পারচেজ, দর, উৎপাদন নিয়ে তারা কাজ করেছে।’
সংকট কাটিয়ে আশার আলো
কেবল জুলাই ও আগস্টেই সরকারের হাতে তিন কোটি টিকা পৌঁছানোর কথা, যা ২০২২ সালের প্রথমার্ধে গিয়ে দাঁড়াবে ২১ কোটিরও বেশি। ফলে একসময় বন্ধ হয়ে যাওয়া টিকা কর্মসূচি পূর্ণ্যোদমে সচল থাকায় কোনো বাধা থাকবে না।
এখন সারা দেশে ২৫ বছর বয়সী সবাইকে টিকা নিবন্ধনের আওতায় আনা হলেও কিছুদিনের মধ্যেই বয়সসীমা নেমে আসবে ১৮তে।
প্রথমে জেলা, উপজেলা পর্যায় থেকে এখন ইউনিয়ন ও গ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে টিকা। বয়স্ক ও শারীরিক অক্ষমদের জন্য বাড়িতে গিয়ে টিকা দেয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, কেবল ২৯ জুলাই ২ লাখ ৫০ হাজার ৯২৮ জনকে প্রথম ডোজ ও ৭ হাজার ৫৭ জেনকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মডার্না ও সিনোফার্মের টিকা দেয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে সরকারের হাতে এক কোটির ওপরে করোনার টিকা রয়েছে। আগস্টের মধ্যেই আরও দুই কোটি টিকা এসে পৌঁছাবে। এভাবে চীন থেকে তিন কোটি, রাশিয়া থেকে সাত কোটি, জনসন অ্যান্ড জনসনের সাত কোটি, অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটিসহ আগামী বছরের শুরুর মধ্যেই সরকারের হাতে প্রায় ২১ কোটি টিকা চলে আসবে। এর মাধ্যমে দেশের অন্তত ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিতে সক্ষম হবে সরকার।’
তিনি জানান, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বিঘ্ন রাখতে এবং অধিকাংশ নাগরিককে টিকার আওতায় আনতে ১৮ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের টিকা দেয়া শুরু হবে।
দেশে বিদ্যমান সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) কার্যকর করা হবে করোনা টিকার ক্ষেত্রেও।
গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্য অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রগুলোকেও কাজে লাগানো হবে। স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মীরাও টিকাদান কার্যক্রমে অংশ নেবেন।
আরও পড়ুন:
আগামী জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি, সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অভিযান পরিচালনা এবং সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠকে বসেছে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
রোববার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়েছে।
বৈঠকে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা হলেন ফারুক-ই-আজমসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই বৈঠকের আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে–
১. দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতিকারীদের কর্মকাণ্ড রোধে ব্যবস্থা নেওয়া।
২. জুলাই হত্যাকাণ্ডের শহীদদের মামলার রেকর্ড, তদন্ত ও অগ্রগতি বিষয়ক আলোচনা এবং দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উসকানিমূলক সাইবার প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
৩. নারী ও শিশুনির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
৪. মাদকের অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্পর্কিত আলোচনা।
৫. শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিন পরবর্তী সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রতিরোধ, নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণ এবং নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনগুলোর অপতৎপরতা রোধে ব্যবস্থা নেওয়া।
৬. গারমেন্টস বা শিল্পকারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ নিশ্চিত করা।
৭. গারমেন্টস কারখানা, ওষুধ শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির তৎপরতা বিষয়ে আলোচনা।
৮. অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালানোর বিষয়ে আলোচনা।
৯. সীমান্ত ও পার্বত্যাঞ্চলের পরিস্থিতি বিষয়ক আলোচনা।
১০. রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ক আলোচনা।
১১. মা ইলিশ সংরক্ষণ বিষয়ে আলোচনা।
চট্টগ্রাম বোয়ালখালীতে মগ ভর্তি পানি পান করছে এক বিষধর খৈয়া গোখরো সাপ— এমন বিরল দৃশ্য দেখা গেছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার কালায়ারহাট বাদামতল এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
‘স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ’-এর সদস্য অয়ন মল্লিক জানান, স্থানীয় এক ওঝা সাপটি দিয়ে মানুষকে প্রতারণা করছিল। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে সাপটি উদ্ধার করেন।
অয়ন বলেন, “সাপটি অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। পরে আমি মগ ভর্তি পানি দিলে সেটি ধীরে ধীরে পান করতে থাকে।”
তিনি আরও জানান, ওঝা সাপটির বিষদাঁত ভেঙে ফেলে এবং ভেনম গ্ল্যান্ড (বিষ থলি) কেটে দিয়েছে। বর্তমানে সাপটি পর্যবেক্ষণে আছে। সুস্থ হলে সেটি বনে অবমুক্ত করা হবে।
উল্লেখ্য ,খৈয়া গোখরো সাপ সাধারণত চট্টগ্রাম অঞ্চলে খুব একটা দেখা যায় না।
মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে কক্সবাজারের টেকনাফে ছেনুয়ারা বেগম (৩৫) নামে এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার কিছু আগে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন লম্বাবিল গ্রামের বাঘঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ছেনুয়ারা বেগম স্থানীয় বাসিন্দা আক্তার হোসেনের স্ত্রী। পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ছেনুয়ারার স্বামী আক্তার হোসেন বলেন, “বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ আমার স্ত্রীর পায়ে গুলি লাগে। এখন সে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন। তিনি বলেন, “মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে নারী আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
এ ঘটনার সময় স্থানীয় একটি দোকানের ছাউনিতেও গুলি বিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের ওপারে মংডু জেলার ঢেকুবনিয়া এলাকায় নিয়মিত গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।
স্থানীয় শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, “সম্প্রতি ওপারে সংঘর্ষ বেড়েছে। আমরা সীমান্তের লোকজন আতঙ্কে আছি। প্রশাসন ও বিজিবির আরও কঠোর নজরদারি দরকার।”
বিজিবির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তের ওপারে সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটছে এবং এ ঘটনায় বাংলাদেশের এক নারী আহত হয়েছেন। সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সার্বক্ষণিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শুভ (১৭) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. ইবনে মিজান।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে করে তিনজন ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনের দিকে ককটেল ছুড়ে মারলে সেটি সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরিত হয়। ঘটনা ঘিরে আতঙ্ক সৃষ্টি হলেও দ্রুত টহল দিচ্ছে পুলিশের উপস্থিতি।
পালানোর সময় পুলিশের টহল দল ধাওয়া করে শুভ নামে এক যুবককে হাতেনাতে আটক করে। আটককৃত যুবকের কাছ থেকে আরও বেশ কয়েকজনের নাম জানা গেছে। পুলিশ তাদের ধরার জন্য অভিযান চালাচ্ছে।
উপপুলিশ কমিশনার মো. ইবনে মিজান জানান, “নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় কিছু দুষ্কৃতিকারী বোমা সদৃশ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, জনমনে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা বিষয়টি কঠোরভাবে দেখছি এবং পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট দুষ্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে।”
তিনি আরও বলেন, আটককৃত যুবকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্য সংশ্লিষ্টদেরও দ্রুত শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এ ধরনের ঘটনা নির্বাচনের আগে জনমনে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তবে পুলিশ আশ্বস্ত করেছে, রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ নিরাপদে তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম চালাতে পারবে।
ঢাকা শহরের বাতাসের মান আজ মারাত্মক অবনতিতে রয়েছে। আন্তর্জাতিক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স অনুযায়ী রাজধানীর বায়ুদূষণ আজ বিশ্বের শহরের মধ্যে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে।
আজকের স্কোর ১৬৩, যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। বিশেষ করে মিরপুরের দক্ষিণ পল্লবী ও ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় বাতাসের মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ঢাকার বায়ুদূষণের মূল কারণ হল পিএম ২.৫, অর্থাৎ বাতাসে অতিক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার উপস্থিতি। আজ সকালে এই কণার পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানের চেয়ে প্রায় ১৪ গুণ বেশি রেকর্ড করা হয়েছে।
এছাড়া কল্যাণপুর (১৮৩), বেচারাম দেউড়ি (১৬৭), গুলশানের গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (১৬৩), তেজগাঁওয়ের শান্তা ফোরাম (১৬২), মাদানি সরণি বেজ এজওয়াটার (১৬০) ও গোড়ান (১৫৭) এলাকায় বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।
বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় পাকিস্তানের লাহোর শীর্ষে রয়েছে, যেখানে বাতাসের মান ‘দুর্যোগপূর্ণ’। ভারতের দিল্লি দ্বিতীয় স্থানে, যেখানে বায়ু ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’।
আইকিউএয়ারের মান অনুযায়ী, শূন্য থেকে ৫০ স্কোর হলে বাতাসের মান ভালো, ৫১–১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয়। সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১–১৫০ স্কোর, ১৫১–২০০ স্কোর অস্বাস্থ্যকর, ২০১–৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর, এবং ৩০১-এর বেশি হলে পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে গণ্য করা হয়।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে নিজের স্ত্রীকে বন্ধুদের কাছে দিয়ে দেয় এক ইটভাটা শ্রমিক। এরপর তিন দিন ধরে পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার ওই নারী থানায় অভিযোগ দেয়। এতে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে স্বামীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানী এলাকার ইসলামিয়া ব্রিকস ফিল্ডের শ্রমিকদের থাকার ঘরে।
আটক ব্যক্তিরা হলো ভুক্তভোগীর স্বামী নোয়াখালী জেলার সুধারাম (সদর) থানার রামহরিতালুক গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রাজু আহমেদ (২৬), একই এলাকার মৃত সিরাজ মাঝির ছেলে বেলাল হোসেন (৩৫), আবুল কাশেমের ছেলে মো. হৃদয় (২৫), চাঁন মিয়া মাঝির ছেলে মহিন উদ্দিন (২৬) ও মুন্সীতালুক গ্রামের শাহ আলমের ছেলে আবুল কালাম (৪৫)।
থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাজুর সঙ্গে তার স্ত্রীর বিয়ে হয় ২০২৩ সালে। রাজু মাদকাসক্ত হওয়ায় বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য জীবনে অশান্তি বিরাজ করছিল। একপর্যায়ে স্ত্রী বাবার বাড়ি নোয়াখালীর মান্দারতলী গ্রামে ফিরে যান। চলতি মাসের শুরুতে সালিশ বৈঠকের পর রাজু আবারও স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসে।
গত ১৫ অক্টোবর রাজু কুমিল্লা শহরে থাকার কথা বলে স্ত্রীকে নিয়ে আসে চৌদ্দগ্রামের কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানীর ইসলামিয়া ব্রিকস ফিল্ডে। সেখানে গিয়ে সে স্ত্রীকে শ্রমিক বেলাল হোসেনের একটি ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ১৬ অক্টোবর রাতে বেলাল হোসেন রাজুর উপস্থিতিতে তাকে প্রথমবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর ১৮ অক্টোবর রাতে রাজুর দুই বন্ধু হৃদয় ও মহিন উদ্দিন একইভাবে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ২০ অক্টোবর রাতে হৃদয় আবার ধর্ষণের চেষ্টা করলে ভুক্তভোগী চিৎকার দিলে সে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর রাজু স্ত্রীকে হুমকি দেয়, বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে। ভয়ে ভুক্তভোগী মুখ না খুললেও একই ইটভাটায় কাজ করা এক সহকর্মী বিষয়টি তার পিতাকে জানায়। খবর পেয়ে পিতা ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করেন।
পরে শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী নারী চৌদ্দগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে রাজু ও তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে।
চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। শনিবার বিকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।”
পাবনার সদরে মালবাহী ট্রাকের চাপায় বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী তিনজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সদরের গয়েশপুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায় ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- পাবনা কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তাসমিয়া আক্তার, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবু তোহা ও ভ্যানচালক আকরাম হোসেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি ভ্যান পুষ্পপাড়া নামক স্থান থেকে জালালপুরের দিকে আসছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে বাঁশবোঝায় একটি ট্রাক আসছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আরেকটি গাড়িকে বাঁচাতে ব্রেক করতেই ট্রাকটি ভ্যানের ওপরে উল্টে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থী ও ভ্যান চালক নিহত হোন। এঘটনায় আহত সদর উপজেলার মধুপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সাদ হোসেনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মাধপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভ্যানের ড্রাইভারসহ তিনজন নিহত ও দুজন চায়ের দোকানে থাকা ব্যক্তি আহত হয়েছে। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা পক্রিয়াধীন।
মন্তব্য