রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ঢাকার বাইরের রোগীর চাপ বাড়ছেই। এদের মধ্যে বেশিরভাগ রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঢাকার বাইরে থেকে আসা রোগীদের ৪০ শতাংশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই মারা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন।
ঢাকার বাইরে থেকে যে করোনা রোগীরা আসছেন বেশির ভাগেরই তীব্র শ্বাসকষ্টসহ ও নানা উপসর্গ রয়েছে। অধিকাংশ রোগীর অবস্থা জটিল হওয়ায় প্রয়োজন হচ্ছে আইসিইউ, যে কারণে বেড়েছে আইসিইউর চাহিদা। এদিকে ঈদের পর চাপ বেড়েছে করোনা নমুনা পরীক্ষার। অনেকের নমুনা পরীক্ষার পর ফল পেতে ৭ থেকে ৮ দিন সময় লাগছে।
সোমবার সকালে রাজধানীর বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের পর করোনা রোগীর চাপ বেড়েছে। ঢাকার বাইরে অধিকাংশ রোগী জটিল অবস্থায় ঢাকায় আসছেন। এদের চিকিৎসা দিয়েও বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ডিএনসিসির হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বেসরকারি চাকরিজীবী ওমর ফারুক ভূঁইয়া শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ায় তার বোন সাবিনাকে চার দিন ধরে শমরিতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রাখেন। তবে বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউর খরচ বহন করতে না পেরে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে আসেন।
ফারুক ভূঁইয়া বলেন, ‘দিনে এক লাখ টাকার বেশি খরচ হচ্ছিল। চার দিনে সাড়ে চার লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। এমন খরচ আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের দীর্ঘদিন বহন করা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে সরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করে এখানে নিয়ে আসছি।’
ওই হাসপাতালটিতে প্রতিবেদকের অবস্থানের এক ঘণ্টার মধ্যে ২০ থেকে ২৫টি এমন জটিল করোনা রোগী আসেন।
ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে বর্তমানে ৫৩১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল ভর্তি হন ১৩৮ জন। এদের মধ্যে ৬০ জন রোগীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
এমন পরিস্থিতি রাজধানীর অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি হাসপতালগুলোতে।
সোমবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও ঢাকার বাইরে থেকে আসা রোগীর চাপ দেখা গেছে। বাবার তীব্র শ্বাসকষ্টের উপসর্গ থাকায় তাকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন কলেজ শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাবার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ার পর স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করাই। তবে গত চার দিনে অবস্থার উন্নতি না হওয়ার কারণে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসি। চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন আইসিইউতে নিতে হবে। তবে এখানে আইসিইউ খালি নেই।’
ঢাকা মেডিক্যাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে করোনা সেবার জন্য ৭০৬ শয্যার মধ্যে বর্তমানে ৮টি শয্যা খালি রয়েছে। এই হাসপাতালে ২৪টি আইসিইউ আছে। বর্তমানে এর একটিও খালি নেই।
ঈদের পরে ঢাকার বাইরের রোগীর চাপ বেড়েছে জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকার বাইরে থেকে যেসব রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন এর ৪০ শতাংশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছেন।’
দ্রুত মৃত্যুর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘আসলে ঢাকার বাইরে থেকে যেসব রোগী আসছেন তাদের অধিকাংশ জটিল অবস্থায় আসছেন। এদের অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্সে করে অনেক দূর থেকে ঢাকায় আসছেন। দীর্ঘ যাত্রায় রোগীর অবস্থা আরও জটিল হয়ে উঠছে। পরে সর্বোচ্চ সেবা দিয়েও রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।’
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এখানে যেসব রোগী আসছেন তাদের ওপরে পর্যালোচনা করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।’
তিনি বলেন, ‘এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাইরের হাসপাতালগুলোতে ইতিমধ্যে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেবার মান বৃদ্ধিতে হাসপাতালের ক্যাপাসিটি উন্নতির কাজ চলছে। এরই মধ্যে কিছু কাজও এগিয়েছে।
‘গ্রামের হাসপাতালগুলোতে ওই সাপোর্টটা দিতে পারলে রোগী মৃত্যুর হার কিছুটা হলেও কমে আসবে। ঢাকার বাইরে থেকে রোগী আসলেও এত জটিল অবস্থায় আসতে হবে না। এই সময়টা আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে।’
ঢাকায় সরকারি আইসিইউ খালি মাত্র ৪৮টি
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশে লকডাউন চলমান থাকলেও ঈদের পর করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর দিকে দেশে আইসিইউ নিয়ে যেমন হাহাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তেমন পরিস্থিতির দিকে আবার যাচ্ছে দেশ। ঈদের পর রোগী শনাক্তের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আইসিইউয়ের চাহিদা বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকায় সরকারি আইসিইউ খালি রয়েছে মাত্র ৪৮টি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, রাজধানীর করোনা সেবার জন্য ১৬টি হাসপাতালে ডেডিকেটেড করেছে সরকার। এর মধ্যে তিন হাসপাতালে কোনো ধরনের আইসিইউ সুবিধা নেই। অর্থাৎ, ১৩টি হাসপাতালে বর্তমানে ৩৯৩টি আইসিইউ রয়েছে। এর মধ্যে ৪৮টি আইসিইউ খালি রয়েছে। এ ছাড়া দেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ১ হাজার ৩২৩টি। বর্তমানে ২৩৮টি খালি রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, করোনা ডেডিকেটেড কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের ২৬ বেড, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ১০ বেড, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২০, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১০ বেড আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ বেডের সব বেডে রোগী ভর্তি। এসব হাসপাতালের একটিতেও সিট খালি নেই।
কেবল ঢাকা শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ১টি, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ৫টি, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ২টি, ১২০ শয্যার টিবি হাসপাতালে ১২টি, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ৫টি, সবচেয়ে বেশি ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালে ২৩টি, সব মিলিয়ে ৪৮টি আইসিইউ এখনও খালি রয়েছে।
আরও পড়ুন:সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নুরুল হুদাকে আটকের সময় যেভাবে মব জাস্টিজ করা হয়েছে তা কাম্য নয় বলে জানিয়েয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনায় বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গতকাল সোমবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মৌচাকে হর্টিকালচার সেন্টার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গত রোববার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তারের যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা সঠিক নয়; তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। গ্রেপ্তার হয়েছেন নুরুল হুদা।’
‘তবে তাকে গ্রেপ্তারের সময় যেভাবে মব জাস্টিজ করা হয়েছে তা কাম্য নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটেছে। এ ঘটনার তদন্ত হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কৃষি জমি দখল রোধে কৃষি জমি সুরক্ষা আইন করা হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বিদেশি ফলের পাশাপাশি দেশীয় ফলের উৎপাদন বাড়াতে হবে, যেন এসব ফল হারিয়ে না যায়।’
পরিদর্শনের সময় গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী যাবের সাদেক, কালিয়াকৈর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ, হর্টিকালচার সেন্টারের এনামুল হকসহ পুলিশ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপদেষ্টা হর্টিকালচার সেন্টারের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নানা দিক নির্দেশনা দেন।
অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা জয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির জন্য নির্বাচিত নেত্রকোনার চারজন শিক্ষার্থীকে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৮০ হাজার টাকা শিক্ষা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। গত রোববার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা শেষে তাদের হাতে এই অর্থ তোলে দেন জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস।
এই চারজন মেধাবী শিক্ষার্থীরা হলেন ইংরেজি বিভাগে মো. সাজ্জাদ আলী, অর্থনীতি বিভাগে মানব তালুকদার, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে রেশমা আক্তার এবং বাংলা বিভাগে বন্যা রানী সরকার।
জানা যায়, এই চারজন মেধাবী শিক্ষার্থী নিজেদের প্রচেষ্টা ও প্রতিভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মনোনীত হন। তবে তাদের প্রত্যেকেই আর্থিক সংকটে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়লে খবর পেয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন।
বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে এলে জেলা পরিষদের মাধ্যমে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা হয়, যাতে তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন।
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, ‘চারজন শিক্ষার্থী ভর্তি সহায়তার জন্য আবেদন করেছিলেন। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কলেজের মাধ্যমে যাচাই করে দেখা যায়, তারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হয়।’
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, “এই মেধাবী শিক্ষার্থীরা নিঃসন্দেহে আমাদের জেলার সম্পদ। ভবিষ্যতে যেন কেউ আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যেই জেলা প্রশাসনের সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন, যাতে মেধার বিকাশে অর্থ কখনো বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।” এছাড়াও স্থানীয়ভাবে এই পদক্ষেপকে শিক্ষাবান্ধব প্রশাসনের একটি মানবিক দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পরিবার ও অভিভাবকরাও এ সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রাম প্রতিদিন তৈরি করছে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে রয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্য। নগরজুড়ে উৎপন্ন এই প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের অভাবে সরাসরি নদী, খাল ও নালায় গিয়ে মিশছে। যা পরিবেশের জন্য এক ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), জার্মান সরকার এবং বাউস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ গবেষণায় দেখা যায়, চট্টগ্রাম শহরে প্রতিদিন প্রায় ২৫০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়। এর মধ্যে ১৪০ টন সরাসরি খাল ও নালার মাধ্যমে গিয়ে পড়ে কর্ণফুলী নদীতে। নদীতে জমা হওয়া এই প্লাস্টিক বর্জ্যে তৈরি হচ্ছে পলিথিন ও প্লাস্টিকের আস্তর। এর ফলে নদীর স্বাভাবিক গভীরতা দিন দিন কমে যাচ্ছে, ব্যাহত হচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে জাহাজ ও নৌযান চলাচল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে নদীর গভীরতা বাড়াতে সম্প্রতি প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করতে হয়েছে। এই ব্যয় অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্যান্য প্লাস্টিকের পাশাপাশি ওয়ান টাইম প্লাস্টিক সবচেয়ে বেশি পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, প্লাস্টিক মূলত তৈরি হয় পেট্রোলিয়াম থেকে। সুতরাং পরিবেশের ওপর এর একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব থেকে যায়। এছাড়া প্লাস্টিক পলিথিনের মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় যেগুলোর প্রায় প্রতিটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক। বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৪৮০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন হয়। ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পরিবেশের উপর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
চুয়েটের পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যদি শহরের বর্জ্য ঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে পারতাম তাহলে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ড্রেজিংয়ে খরচ হতো না। একইসঙ্গে পরিবেশ রক্ষায় আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।’ এক গবেষণায় দেখা যায়, কর্ণফুলী নদীতে প্রতিদিন গড়ে ৭৮৫ টন বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য গিয়ে পড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া ওয়ান টাইম প্লাস্টিক, যা পরিবেশের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। গবেষকরা জানান, বন্দরে যেসব জাহাজ আসে সেগুলোও কম-বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি করে। এসব বর্জ্য যথাযথভাবে নিষ্কাশন না হলে তা শুধু নদী নয়, সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য এবং সামুদ্রিক পরিবেশেও মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
এসসিআইপি প্লাস্টিক প্রজেক্টের পরিচালক ড. ফারজানা রহমান জুথি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে করতে হবে। আর এটি করতে না পারলে নদী ও সমুদ্র উভয়ের পরিবেশই বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।’
জানা গেছে, বাংলাদেশ প্লাস্টিক দূষণের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে একটি। নদীতে প্লাস্টিক দূষণ রোধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা। কারণ, এটি শুধু পরিবেশ নয়, জনস্বাস্থ্যের ওপরও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলছে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের এক সমীক্ষায় কর্ণফুলী নদীর ৭৯টি স্থানে দূষণের চিত্র ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ৭৭টি স্থানে দূষণকে ভয়াবহ বলা হয়েছে। শিল্প-কারখানা, গৃহস্থালি, রাসায়নিক, কঠিন ও তরল বর্জ্য, পয়োঃবর্জ্য ও পলিথিন সরাসরি নদীতে ফেলার কারণে নদীর জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, চট্টগ্রাম শহরের ২৩টি স্থানে এবং ১৯টি খালের মাধ্যমে গৃহস্থালি ও শিল্প বর্জ্য কর্ণফুলীতে যাচ্ছে। শুধু নগরী নয়, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী ও কর্ণফুলী উপজেলা থেকেও নদীতে ব্যাপক দূষণ হচ্ছে।
বিশেষভাবে কর্ণফুলী উপজেলায় অবস্থিত দেশের শীর্ষস্থানীয় সিমেন্ট, চিনি, তেল পরিশোধন, ফিশিং কমপ্লেক্স ও অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান নদীতে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা তেলের দোকান, খোলা টয়লেট, ডায়িং মিল, সার কারখানাসহ নানা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য ড্রেন ও খালের মাধ্যমে গিয়ে মিশছে কর্ণফুলীতে। কৃষি কাজে ব্যবহৃত কীটনাশক ও রাসায়নিক সারও খালের মাধ্যমে নদীতে পৌঁছে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।ঢাকায় আয়োজিত এক সেমিনারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. এম. ফিরোজ আহমেদ জানান, দেশে বছরে প্রায় ৯, ৭৭,০০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ওয়ান টাইম প্লাস্টিক সবচেয়ে ক্ষতিকর। তিনি বলেন, ‘প্লাস্টিক মূলত পেট্রোলিয়াম থেকে তৈরি হয়। এটি পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। এসব প্লাস্টিকের মান উন্নয়নের জন্য ব্যবহৃত কেমিক্যালগুলোও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।’ তিনি আরও বলেন, বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৪৮০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদিত হচ্ছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।
গড়াইয়ের পানি প্রবাহের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৪ জেলার মানুষের ভালোমন্দ। তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রিত হয় গড়াইয়ের ওপর। একটু বলে রাখা দরকার, ১৯৫৪ সালে কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলে সেচ সুবিধা ও বন্যা থেকে ফসল ও জনপদ রক্ষার জন্য গঙ্গা কপোতাক্ষ পরিকল্পনা (জিকে) সেচ প্রকল্প নামে কার্যক্রম চালু হয়। জাতিসংঘের সহযোগিতায় চালু হওয়া সে প্রকল্পের আওতায় ফসল উৎপাদন বেড়ে যায় প্রায় তিনগুণ। এ প্রকল্পের মূল উৎস ছিল গড়াই। গড়াই নাব্য সংকটে থাকায় উৎসমুখের কাছে ভেড়ামারাতে পাম্প হাউস স্থাপন করে এ প্রকল্প টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল, তাও রক্ষা হয়নি। গড়াই শুকিয়ে যাওয়ার ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশের ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
আর নানা কারণে কুষ্টিয়া শহরের গড়াই নদীর তীরবর্তী দুই পাড় দখলের কবলে পড়ছে। অবৈধ স্থাপনা ও বাধের দুইপাড় দখলের কারণে ধীরে ধীরে গ্রাস করছে গড়াই নদীর শহর রক্ষা বাঁধ। স্বেচ্চাচারিভাবে নদী তীরে দোকান পাঠ, খামার, প্রতিষ্ঠান, এমনকি ঘর বাড়িও নির্মাণ করা হচ্ছে। নদীর কিছু কিছু জায়গায় ইতোমধ্যেই দখলদাররা বালু মহাল তৈরি করে পুরো চর দখল করে নিয়েছে। এমনকি নদীর তীরে মোটা বালি চিকন বালির বিশাল বিশাল বড় বড় গাদি করে ট্রলি ও ডাম ট্রাক এর মাধ্যমে এসব বালি বিক্রয় করছে। যা নদী রক্ষা বাঁধ ও তীর হুমকির মধ্যে পড়েছে। এছাড়াও নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ক্ষমতাসীনদের ছত্র ছায়ায় বিভিন্ন মানুষকে টাকার বিনিময়ে জায়গা বিক্রয় করে তাদেরকে বসবাস করার অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি এই দখলদাররা এলাকার উচ্চ পদের লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে যার ফলে এদের কিছুই হচ্ছে না।
সরজমিনে দেখা যায়, অবৈধ দখলদারদের হাতে বেদখল হয়ে যাচ্ছে কুষ্টিয়া গড়াই নদীর চর ও তীরবর্তী অঞ্চল গুলো। কিছু অসাধু চক্র ক্ষমতার বড়াই দেখিয়ে একের পর এক দখল করে নিচ্ছে গড়াই নদীর পাড়। কুষ্টিয়া থানাপাড়া থেকে শশ্নান ঘাট পর্যন্ত ক্ষমতা দেখিয়ে নদী তীরে দোকান পাঠ, খামার এমনকি ঘর বাড়ি ও নির্মাণ করেছে ওইসব ভূমিদস্যুরা। কোথাও কোথাও পাকা দোতলা পর্যন্ত বাড়ি করা হয়েছে। শুধু তাই নয় কুষ্টিয়া হরিপুর ব্রিজের দুই পাশে দোকানপাট করেছে । এমনকি ব্রিজের পিলার দখল করে দোকান তৈরি করা হয়েছে। এতে হুমকিতে রয়েছে নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ। এছাড়াও এইসব দখলবাজদের জন্য সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে কুষ্টিয়া গড়াই নদীর তীর। নষ্ট হচ্ছে নদীর পরিবেশ ও প্রকৃতি। নদী দখল হওয়া এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে কুষ্টিয়া শহরসংলগ্ন জুগিয়ার নদী তীরবর্তী অঞ্চল, মঙ্গলবাড়িয়া বাঁধ সংলগ্ন, রেইনউক বাঁধ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা, হরিপুর সংযোগ ব্রিজ এলাকা, হরিপুরের বিভিন্ন নদীর তীরসংলগ্ন এলাকা, বড়বাজার ঘোড়ার ঘাট এলাকা, শ্বশ্নান ঘাট, সৈয়দ মাসউদ রুমী সেতুসংলগ্ন এলাকা, কয়া বাজার ও কুমারখালী শহররক্ষা বাঁধ। খোকসা উপজেলাতেও চলছে নদী দখলের মহোৎসব। স্থানীয়দের অভিযোগ এই দখলদারিকে কেন্দ্র করে নদী তীরে বেশ কয়েকবার রক্তা রক্তির ঘটনাও ঘটেছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা যায়, এসব অবৈধ স্থাপনা নিয়ে কাজ করছে তারা। অতি দ্রুতই এগুলো ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশিদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
সাতক্ষীরায় গরমের তীব্রতায় নাভিশ্বাস উঠেছে খেটে খাওয়া মানুষের। আষাঢ়ের শুরু থেকে গরমের তীব্রতা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় দুপুরের আগেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে রাস্তা। অসহনীয় কষ্ট বেড়েছে শ্রমজীবী মানুষের। ভিড় বেড়েছে ডাব, শরবত আর আখের রসের দোকানে। গরমের তীব্রতা কাটাতে শহরের পৌরদিঘীতে দীর্ঘক্ষণ ধরে গোসল করছেন অনেকেই।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার সাতক্ষীরার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আদ্রতা শতকরা ৫৪ ভাগ। অপরদিকে শনিবার সাতক্ষীরায় এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজমান ছিল। ওইদিন তাপমাত্রা ছিল ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাতক্ষীরায় গরমের তীব্রতায় নাকাল হয়ে পড়েছে মানুষ। গরমে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি কষ্ট পাচ্ছে। মাঝে মধ্যে বৃষ্টির দেখা দিলেও ভ্যাপসা গরম আরো অসহনীয় লাগছে জনসাধারণের ।
ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভ্যান চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। রাস্তায় বের হলে মুখ পুড়ে যাচ্ছে গরমে। এছাড়া বাইরে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে ভাড়াও সেভাবে পাচ্ছিনা।’
শহীদ রাজ্জাক পার্কের শরবত বিক্রেতা ইনতাজ আলী জানান, অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় শরবত বিক্রি বেড়েছে। আগে যেখানে ৪০ থেকে ৫০ গ্লাস শরবত বিক্রি করতাম, এখন সেখানে ১০০ ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক কামরুন্নাহার বলেন, ‘সাতক্ষীরায় কখনো মৃদু আবার কখনো মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ধারা জুন মাসের পুরোটা সময় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার মা ও ফুফার নামে নামকরণ করা বরিশাল বিভাগের পাঁচটি কলেজের নতুন নামকরণ করা হয়েছে।
বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকী জানান, সম্প্রতি নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপণ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ।
নাম পরিবর্তন করা পাঁচ কলেজ হচ্ছে; বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকায় স্থাপিত শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি কলেজের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘কাউনিয়া সরকারি কলেজ’। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনা মহাবিদ্যালয়ের’ নাম পরিবর্তন করে ‘আলিমাবাদ সরকারি মহাবিদ্যালয়’, আগৈলঝাড়ার শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি ডিগ্রি কলেজের নামের পরিবর্তে ‘আগৈলঝাড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ’, নাজিরপুর উপজেলার ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়ের নতুন নাম হয়েছে ‘নাজিরপুর সরকারি মহিলা কলেজ’। ভোলার সরকারি ‘শেখ ফজিলাতুন্নেছা’ মহিলা কলেজের পরিবর্তে ‘ভোলা সরকারি মহিলা কলেজ’ নামকরণ করা হয়েছে।
শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা চেয়েছিলো। তালিকা পাঠানোর পর মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তন করেছে। বিষয়টি নোটিশ আকারে স্ব স্ব কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে নতুন নামের সাইনবোর্ড স্থাপন করেছেন।
কেরানীগঞ্জে গভীর রাতে বিস্ফোরণের ঘটনায় একটি পাঁচ তলা ভবনের নিচতলার দেয়াল ধসে পড়েছে এবং শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন। গত রোববার গভীর রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার শুভাড্যা খেজুরবাগ মন্দির এলাকার পাকিজা নামক ভবনের নিচতলায় এ বিস্ফোরণ ঘটে।
কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানার এসআই তুষার জানান, আহতরা হলেন আল সামির (৮), তার বাবা ফারুক হোসেন (৪০) এবং মা শিউলি (৩০)। বিস্ফোরণের পর তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন।
আহত ফারুক হোসেন জানান, ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি আমার স্ত্রীর হাত ও শিশুপুত্র সামিরের শরীর আগুনে পুড়ে গেছে। আমারও মুখের বাম পাশে ঝলসে যায়। তিনি আরও জানান, মাসখানেক ধরেই রুমের ফ্লোর অতিরিক্ত গরম হচ্ছিল। বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানানো হলেও তখন তা মেরামত করা হয়নি। ভবনের মালিক সহিদ বলেন, ভবনের ফ্লোর গরম হওয়ার বিষয়টি জানার পর আমি দ্রুত দেশে ফিরে আসি। বিস্ফোরণের সময় পাশের রুমেই ছিলাম। বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি ভবনের নিচ তলার দেয়াল ভেঙে গেছে। ভবনটি রাজউকের অনুমোদন না থাকলেও তিনি ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি নিয়ে নির্মাণ করেছেন বলে দাবি করেন। ভবনটিতে মোট ১০টি পরিবার বসবাস করছে।
পরিদর্শন শেষে পোস্তগোলা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু মুহাম্মদ সাজেদুল কবির জোয়ার্দার জানান, ভবনটি অনিয়মিত ও অপরিকল্পিভাবে ডোবা ভরাট করে তৈরি হওয়ার কারণে ধসে পড়তে পারে। অথবা গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকেও বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে। তিনি আরও জানান, ভবনটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে এবং এ বিষয়ে মালিকপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে বলেও তিনি জানান।
মন্তব্য