১০ দিনের মধ্যে আসছে অক্সফোর্ডের ২৯ লাখ টিকা। আর এ মাসের শেষে মডার্নার ৩০ লাখ ডোজ টিকা আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সোমবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে আরও কিছু টিকা আমরা পাব। একটি চিঠিতে আমাদের এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেটা হলো মডার্নার ৩০ লাখ ডোজ আর অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২৯ লাখ ডোজ টিকা আসবে।
এ দিকে মঙ্গলবার থেকে রাজধানীর ৪১ কেন্দ্রে মডার্নার টিকা দেয়া শুরু হবে। প্রবাসীরা অগ্রাধিকার পেলেও এসব কেন্দ্রে টিকা পাবেন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।
একই সঙ্গে ৪টি মেডিক্যাল কলেজসহ ৭ কেন্দ্রে প্রয়োগ করা হবে ফাইজারের টিকা। তবে ঢাকার কোনো কেন্দ্রে সিনোফার্মের টিকা দেয়া হবে না।
সারা দেশে চলছে গণটিকা কর্মসূচি। অক্সফোর্ডের পর দেয়া হচ্ছে ফাইজার, মডার্না ও সিনোফার্মের করোনা টিকা। এর মধ্যে সলিমুল্লাহ, সোহরাওয়ার্দী, মুগদা ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এবং শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও কুর্মিটোলায় চলছে ফাইজারের টিকাদান কর্মসূচি।
এসব কেন্দ্রে প্রবাসী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও টিকা দেয়া হচ্ছে।
প্রায় ৫ বছর ধরে কাজ করছেন হোটেলে। আবার পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছেন। হাজারো খাবার হোটেলের ভিড়ে চোখ থেমে যায় ছোট্ট একটি হোটেলে, যেটিতে কাজ করছেন ১৮ বছরের কলেজপড়ুয়া এক মেধাবী ছাত্রী। নাম তার নাসরিন আক্তার। তার নামেই হোটেলটির নামকরণ করা হয়েছে ‘নাসরিন হোটেল’। প্রায় ১২ বছর আগে হোটেলটি চালু করেন তার বাবা মোকাব্বর মণ্ডল। বাবার সঙ্গে খুবই ছোট পরিসরে এই হোটেল চালাচ্ছেন মেধাবী এ কলেজ শিক্ষার্থী।
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বৈরাগীহাট মোড়ে গেলেই দেখতে পাওয়া যায় নাসরিন হোটেল। এই হোটেল চালিয়েই সংসার ও পড়াশোনার খরচ চালান নাসরিন। নাসরিন এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছিলেন এ+। তিনি বর্তমানে উপজেলার কালাই সরকারি মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার স্বপ্ন উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করে মেডিকেলে পড়াশোনা করা। নাসরিনের মতো মেধাবী শিক্ষার্থীরা পরিবার ও দেশের জন্য সম্পদ।
সরেজমিনে দেখা যায়, শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও এই মেধাবী শিক্ষার্থী বাবার সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন খাবার হোটেলের কাজ। বর্তমানে চাকচিক্যতার ভিড়ে নিজের হোটেলটি টিকিয়ে রাখতে রীতিমতো ঘাম ঝড়াচ্ছেন তিনি। এলাকার বিভিন্ন মানুষের কটু কথা শুনেও দমে যাননি এই সংগ্রামী কলেজ শিক্ষার্থী। নিজেই তৈরি করছেন পুঁড়ি, পিঁয়াজু, সিংগারা, সামুচা, মোগলাই, চানাচুর। রান্না করেন ভাত, মাছ, মাংসসহ হরেক রকমের তরকারি। আবার নিজেই করছেন খাবার পরিবেশন।
স্বল্প মূল্যে সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করায় বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাস্টমাররা ছুটে আসে তার হোটেলে। খাবার খেতে আসা কাস্টমরা বলছেন এই হোটেলের খাবার দামে কম মানে ভালো ও সুস্বাদু।
হোটেল এ খাবার খেতে আসা ট্রাকচালক হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ি বগুড়া। আমি এই এলাকায় আসি কারণ গাড়ি চালাই। আমি এখানে আসছি গাড়ি লোড করতে। এই হোটেলের খাবারের মান ভালো।
হোটেলে খাবার খাচ্ছিলেন মোখলেছুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমার বাসা দিনাজপুর। আমি এই দিকে হরেক মালের ব্যবসা করি। বাড়ির মতো রান্নার স্বাদ পাওয়ায় এ হোটেলে খাওয়া দাওয়া করি। সকালে খিচুড়ি খেয়েছি, দুপুরে ডিম ভাজি, ডাল, ভর্তা দিয়ে ভাত খেলাম। পাশের মুদি দোকানি জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমার পাশেই নাসরিন হোটেল। তাদের হোটেলে আর্থিক সমস্যার কারণে তারা কোন কারিগর বা মেসিয়ার রাখতে পারেনা। এ কারণে মেয়ে হয়েও সে তার বাবার হোটেলের যাবতীয় কাজে সাহায্য করে থাকনে। পাশাপাশি আবার সে পড়াশোনাও করে। সে একজন ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট। এসএসসিতে এ+ পেয়েছিল।
কলেজ শিক্ষার্থী নাসরিন আক্তার বলেন, আমরা গরিব মানুষ। আমাদের হোটেলটি খুব ছোট। টাকার অভাবে হোটেলে কারিগর রাখা হয়না। কারিগর রাখতে হলে তাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হয়। যেটা আমার বাবা দিতে পারবে না। তাই আমি নিজেই এ কাজগুলো করি। আমি স্কুলে পড়াশোনার সময় তখনকার কারিগরের কাছে কাজগুলো শিখেছি। কালাই সরকারি মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছি। আমি ভোর ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত কাজ করে কলেজে যাই। এরপর কলেজ ছুটি দিলে ৩টার দিকে বাড়িতে আসি। তারপর বিকাল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত হোটেলে মা-বাবার কাজে সাহায্য করি। দিনে ৩-৪ হাজার টাকা বেচাকেনা হয়।
নাসরিন আক্তারের বাবা মোকাব্বর মণ্ডল বলেন, আমার মেয়ে কালাই সরকারি মহিলা কলেজ পড়াশোনা করছে। সকালে কাজ শেষ করে কলেজে যায় আবার কলেজ থেকে ফিরে এসে বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করে। আমার মেয়েই আমাকে সব কাজে সহযোগিতা করে। মেয়ে হয়েও আমাকে একজন ছেলের মতোই কাজে সহযোগিতা করে এতে আমি গর্বিত।
কালাই সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নাজিম উদ্দিন বলেন, সে ব্যবসা করে লেখাপড়া চালায় এবং কস্টের মধ্যে দিয়ে লেখাপড়া করেই এসএসসি পাস করে এখানে ভর্তি হয়েছে। শুনে আমি খুব অবাক বিস্ময়ে তাকালাম, এই মেয়েটা তো খুব মেধাবী। এই মেয়েটাকে সহযোগিতা করা হলে কাঙ্খিত লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে বলে বিশ্বাস করি।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান বলেন, বৈরাগীর মোড়ে নাসরিন হোটেলে নাসরিন আক্তার পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার সাথে বাবার হোটেলে কাজ করছে এটা একটা চমৎকার উদ্যোগ। তবে, এ কাজটি করতে গিয়ে তার পড়াশোনার যেন ক্ষতি না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। তাকে যতটুকু আর্থিক সহযোগিতা করা যায় উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনে সেটা আমরা করব।
কুড়িগ্রামে দুর্যোগ মোকাবেলায় লাইট হাউজের কার্যক্রমে সুফল পাচ্ছে দুর্যোগ প্রবণ এলাকার জনগোষ্ঠী। দুর্যোগ মোকাবেলায় লাইট হাউজ একটি স্বেচ্ছাসেবী ও উন্নয়নমূলক বেসরকারী সংস্থা ১৯৯২ সালে অনুমোদন পায়। এরপর লাইট হাউজ একটি স্বেচ্ছাসেবী ও উন্নয়নমূলক বেসরকারি সংস্থাটি দেশের গ্রামীণ-শহরে দরিদ্র, প্রান্তিক ও উচ্চ ঝুঁকির জনগোষ্ঠী, হিজড়া, আদিবাসী, কৃষকসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠানটি জেলার পাঁচটি উপজেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরমধ্যে কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট, উলিপুর, চিলমারী এবং রাজিবপুর। এসব উপজেলার মধ্যে দুর্যোগ প্রবণ ৩৫টি ইউনিয়নে স্থানীয় পর্যায়ে ৭০জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দেয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তা নদী ঘেঁষা রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বীর তৈয়ব খাঁ গ্রামে পিছিয়ে পড়া দরিদ্র প্রায় ৩০ জন কিশোরী-মহিলাকে নিয়ে আগাম দুর্যোগ পূর্বাভাস ও দুর্যোগকালীন স্বাস্থ্য ও সহিংসতা বিষয়ে উঠা বৈঠক করছে।
স্বেচ্ছাসেবক কমলা খাতুন, স্বেচ্ছাসেবক প্রীতিলতা রায়, স্বেচ্ছাসেবক জিহাদ হাসানসহ অনেক পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী লাইট হাউজের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন।
স্বেচ্ছাসেবক শাহিন আলম, জিহাদ হাসান জানান, অনেকের ধারণা আমাদের এসব উঠান বৈঠকের কারণে হয়তো কোন পারিশ্রমিক পেয়ে থাকি। কিন্তু এখানে কোন ধরনের পারিশ্রমিক পাইনা আমরা স্বেচ্ছাসেবকরা। মানুষের জন্য কাজ করার অনেক প্লাটফরম থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম ব্যতিক্রম মনে হওয়ায় এখানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছি। দুর্যোগকালীন সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য, দুর্যোগের প্রস্তুতি এবং সহিংসতা নিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে স্থানীয়দের সচেতনা তৈরিতে কাজ করছি আমরা স্বেচ্ছাসেবকরা।
এছাড়াও দুর্যোগ প্রবণ এলাকার দারিদ্রপীরিত এবং ঝুঁকিপ্রবণ এলাকায় নারী, কিশোরী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে দুর্যোগকালীন সময়ে জেন্ডার সহিংসতা হ্রাসে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান চালানোর জন্য ৯০জন স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
প্রকল্পের সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রকল্পের শুরু থেকেই স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। কুড়িগ্রাম জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নে প্রায় এক শতাধিকেরও বেশি উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকল্প শেষ হলেও স্বেচ্ছাসেবকগণ তাদের সচেতনতামূলক উঠান বৈঠক চালিয়ে যাবেন। এভাবে করে প্রায় ২০ হাজারের ও বেশি দুর্যোগ প্রবণ এলাকার দারিদ্র্যপীড়িত ও ঝুঁকিপ্রবণ এলাকায় নারী, কিশোরী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সচেতন করে গড়ে তোলা সম্ভব। এর ফলে মানুষ বিভিন্ন দুর্যোগ থেকে নিজে এবং নিজেদের পরিবার সহ জানমাল এবং তাদের সম্পদ গুলোকে রক্ষা করতে পারবে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘ঠাকুরগাঁও মডেল’ অনুসরণ করে বরিশাল জেলাকে সম্পূর্ণরূপে শিশুশ্রম মুক্ত করা হবে। শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কাজে নিয়োজিত না রাখার পাশাপাশি তাদের নিয়মিত স্কুলে পাঠানোর উপর জোর দেন তিনি।
শুক্রবার বরিশালের শিল্পকলা একাডেমিতে ‘শিশু শ্রম নিরসনে তারুন্যের ভুমিকা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম সচিব এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সরকার ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইএলও কনভেনশন ১৮২ অনুস্বাক্ষর করেছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ৪৩ ধরনের কাজের তালিকা প্রকাশ করেছে। কোনো শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকবে না। তারা বইখাতা নিয়ে স্কুলে যাবে।”
শ্রম সচিব আইএলও'র অর্থায়নে ইএসডিও কর্তৃক বাস্তবায়িত ঠাকুরগাঁও জেলার ‘চাইল্ড লেবার মনিটরিং সিস্টেম (সিএলএমএস)’ মডেলকে একটি অনুকরণীয় উদাহরণ আখ্যায়িত করেন। তিনি জানান, জাতীয় পর্যায়ে এই মডেল অনুসরণ করে বরিশাল জেলাসহ অন্যান্য জেলাতেও শিশুশ্রম নিরসনের কার্যক্রমকে গতিশীল করা হবে।
শ্রম সচিব তরুণ সমাজ ও এনজিওগুলোর প্রতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “শিশুশ্রম নিরসনে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। তরুণরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সমাজকে শিশুশ্রম মুক্ত করতে পারে। এখানে উপস্থিত সকলে যদি ১ জন শিশুরও দায়িত্ব নেন, তাহলেও বরিশাল জেলা অনেকাংশে শিশুশ্রম মুক্ত হবে।”
তিনি আরও জানান, শিশুশ্রম নিরসনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সাথে সমন্বয় করে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন দুস্থ শ্রমিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫৭ জন শ্রমিক ও তার পরিবারকে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন হতে ২৫ লক্ষ টাকার অর্থ সহায়তার চেক প্রদান করা হয়।
বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন এবং বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো: রায়হান কাওসার। এছাড়াও বরিশাল জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, সুধীজন, এনজিও কর্মী ও তরুণরা উপস্থিত ছিলেন।
আজ বিকেলে খাগড়াছড়ি জেলার কমলছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্রাবাস নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব সুপ্রদীপ চাকমা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করছে। বিশেষ করে পাহাড়ি কন্যারা তাদের দক্ষতা ও প্রতিভা দিয়ে দেশ-বিদেশে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। উপদেষ্টা আরও বলেন, দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলোর রাস্তাঘাটের উন্নয়নের ফলে এখন মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছে এবং উৎপাদিত পণ্য সহজে পরিবহণ করা সম্ভব হচ্ছে।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা কমলছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সংলগ্ন জীর্ণশীর্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি দ্রুত মেরামত ও পুনঃনির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে ছাত্রাবাস নির্মাণের পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়নের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
অনুষ্ঠান শেষে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য বৌদ্ধ মিশন (পিবিএম) কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানে পার্বত্য বৌদ্ধ মিশন পালি কলেজ প্রাঙ্গণ, ম্যাপল হাউস গার্লস হোস্টেল এবং অনাথালয় ভবন ঘুরে দেখেন। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। উপদেষ্টা এসব প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করার লক্ষ্যে অনাথালয় পরিচালনা কমিটি গঠনসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্যবৃন্দ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, সকল কাজের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি পার্বত্য অঞ্চলে আধুনিক ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থা চালু এবং স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে ইংলিশ ভার্সনে রূপান্তরের পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, উপদেষ্টার একান্ত সচিব (উপসচিব) খন্দকার মুশফিকুর রহমান, জেলা পরিষদের সদস্য এডভোকেট মঞ্জিলা, সদস্য কংজপ্রু মারমা, সদস্য প্রফেসর আবদুল লতিফ, সদস্য অনিময় চাকমা, সদস্য শহীদুল ইসলাম সুমন, সদস্য প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা, সদস্য বঙ্গমিত্র চাকমা এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান বাবুলের সাজা বাতিল ও নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান যুবদল নেতা বেনজির আহমেদ তাবরিজ এর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে জনতা ব্যাংকের মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেসময় ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের আরেক সাবেক সভাপতি ও ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো.সেলিম মিয়া সেলিম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কাউয়ুম মিয়া, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান বকু, যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল ইসলাম লিটন, বিএনপি নেতা শাহিন হক, জরিুলহক ঝন্টু, তামজিদ মোল্যা, বাচ্চু মোল্যা, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন সাদ্দাম সহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বক্তারা স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে দায়ের করা মিথ্যা মামলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম খাঁন বাবুলকে কারাগারে পাঠানোর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে শহীদুল ইসলাম বাবুলকে মুক্তি দেওয়া না হলে বৃহত্তর ফরিদপুরে গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নে চুরির আপবাদে মাহিন (১৪) নামে সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া এক স্কুল শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার ভোর ৫ টার দিকে ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের চেঙ্গুয়া ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
মানিক ও রাহাত নামে দুই কিশোরকে বেড়ধক পেটানো হলে, তারা গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও মাহিন ঘটনাস্থলে প্রাণ হারায়।
নিহত মাহিন স্থানীয় কাঞ্চন নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র এবং একই এলাকার সাগর আলী তালুকদার বাড়ির জনৈক লোকমানের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার ভোরে মাহিনসহ তিন কিশোর চেঙ্গার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। সেসময় কয়েকজন কিশোর দৌড়ে এসে তাদের ধাওয়া করে। প্রাণ ভয়ে তিনজন পাশ্ববর্তী একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে আশ্রয় নেয়। হামলাকারীরা ছাদে উঠে জোরপূর্বক তাদের নিচে নামিয়ে এনে ব্রিজের উপর বেধড়ক মারধর করে সটকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে মাহিনের মৃত্যু ঘটে। গুরুতর আহত দুজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহতদের পরিবারের অভিযোগ, মানিক ও রাহাত আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। চোর সন্দেহে তাদের উপর এমন নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক বিচার দাবি করছি। ফটিকছড়ি থানার ওসি নুর আহমদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্দেহজনকভাবে নোমান ও আজাদ নামে দুইজনকে আটক করেছে। কেন, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে পুলিশের পৃথক দুটি মাদকবিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণ গাঁজা ও ইয়াবাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে উপজেলার সলিমগঞ্জ ও মিরপুর এলাকায় এ অভিযান দুটি পরিচালিত হয়।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নবীনগর থানার এএসআই শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল সলিমগঞ্জ বাজার সংলগ্ন মেঘনা নদী-সংলগ্ন খাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক পুরুষ ও চার নারীকে আটক করে। সেসময় তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে ১২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। আটককৃতরা হলেন মো. আরিফুল ইসলাম (৪২) ও তার স্ত্রী বিলকিস বেগম (৩৭), বাড়ি: গৌরীপুর, ময়মনসিংহ নাজমা (২৬), বাড়ি: পঞ্চগড় মাইমুনা (২২), বাড়ি: আশুলিয়া, ঢাকাআমেনা (২৭), বাড়ি: বগুড়া । একই রাতে নবীনগর থানার এসআই শাহ আলমের নেতৃত্বে আরেকটি দল মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার মোল্লা (৪৮) কে আটক করে। তার দেহ তল্লাশি করে ২৬০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং মাদক বিক্রির নগদ ৩,৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে নবীনগর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘দুটি পৃথক অভিযানে মোট ১২ কেজি গাঁজা, ২৬০ পিস ইয়াবা ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে।’
গ্রেপ্তারকৃতদের গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
মন্তব্য