চলতি বছরের জুলাই ও আগস্টের মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী প্রায় ২ কোটি টিকা বাংলাদেশে আসছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে ওই মন্ত্রণালয়।
বিভিন্ন দেশ থেকে এ টিকা আসবে বলে কমিটিকে অবহিত করা হয়েছে।
এসব টিকা এলে গণটিকাদান চালু থাকবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সংসদ ভবনে রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে টিকা কূটনীতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন কমিটির সদস্য হাবিবে মিল্লাত। সেখানেই টিকা প্রাপ্তির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা সংগ্রহ অব্যাহত রেখেছে সরকার। মাঝখানে ভারত থেকে টিকা রপ্তানি বন্ধ হলেও এখন সরকারের টিকা কূটনীতিতে আশার আলো দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিতে লাগবে ৪ বছর
বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুলাইয়ে প্রথমে চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের ২০ লাখ ডোজ টিকা আসবে। এরপর টিকা বিতরণের বৈশ্বিক কর্মসূচি কোভ্যাক্সের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫ লাখ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ১০ লাখ আর জাপান থেকে আসবে ২৫ লাখ। চলতি মাসের শেষ দিকে আরও ৫ লাখ টিকা আসবে চীনের সিনোফার্ম থেকে। এসব টিকা আসা মোটামুটি নিশ্চিত। অর্থাৎ জুলাই মাসে আসছে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ ডোজ টিকা।
এ ছাড়া আগস্টে ৬২ লাখ ডোজ টিকা আসবে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে। সেটাও বিভিন্ন জায়গা থেকে আসবে। আর ৫০ লাখ ডোজ আসবে চীন থেকে। সেটাও কোভ্যাক্সের মাধ্যমে।
অর্থাৎ আগস্টে আসবে ১ কোটি ১২ লাখ টিকা। জুলাই-আগস্ট মাসে প্রায় ২ কোটি টিকা আসছে।
দেশে প্রথম পর্যায়ে গণটিকাদান শুরু হয়েছিল ৭ ফেব্রুয়ারি। শুরুতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া হয়। দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত না করেই ৫৮ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে ওই টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়। এর মধ্যে ৪৩ লাখ ৯৫ হাজার ২১৮ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া সম্ভব হয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা সংকটের কারণ দেখিয়ে গত ৫ মে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও চীনের সিনোফার্ম উদ্ভাবিত টিকা বিবিআইবিপি-করভির ডোজ হাতে আসার পর সরকার তিন শ্রেণির জন্য নিবন্ধন অ্যাপ চালু করে।
এখন ২২ ক্যটাগরির মানুষ নিবন্ধন সুযোগ পাচ্ছে। তবে সিরামের টিকা সরকারের হাতে না থাকার কারণে এখনো ১৫ লাখ ২৪ হাজারের বেশি মানুষ দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, আগামী মাসে এ টিকার সংকটও সমাধান হবে।
বৈঠকে টিকা কূটনীতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা, করোনাকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও সেবাদান নিয়ে পর্যালোচনা, বাংলাদেশে অবস্থিত ব্রুনাই দূতাবাসের জমি প্রাপ্তি নিয়ে আলোচনা এবং মরক্কো ও দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতদের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।
ভবিষ্যৎ বৈঠকের কার্যপত্র সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো বৈঠকের আগেই ই-মেইলের মাধ্যমে কমিটির সদস্যদের কাছে পাঠানোর জন্য কমিটি থেকে মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেয়া হয়।
বৈঠকে মরক্কো ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে। মরক্কো প্রদত্ত শিক্ষাবিষয়ক বৃত্তিতে যেন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা সুযোগ গ্রহণ করতে পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে কমিটি থেকে সুপারিশ করা হয়।
ব্রুনাই দূতাবাসের অনুকূলে জমি বরাদ্দের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে অবহিত করার ব্যাপারে কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে। সমুদ্রপথে অবৈধভাবে বিদেশ গমন রোধকল্পে স্বরাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে।
ইথিওপিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফেরত আনার পাশাপাশি লেবানন ও ইতালির মিলানে অবস্থিত শ্রমিকদের স্বার্থসুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বৈঠকে মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, মো. আব্দুল মজিদ খান, হাবিবে মিল্লাত এবং নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) অংশ নেন।
এ ছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, মরক্কো ও দক্ষিণ কোরিয়ায় নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তা এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পর্যটক ও স্থানীয়দের জন্য ট্রেনের টিকিট পাওয়া যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় সিট সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় সপ্তাহ ১০ দিন আগেই সব টিকিট বুকিং হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছেন ঘুরতে আসা পর্যটকসহ স্থানীয় যাত্রীরা।
গত শুক্রবার ঢাকা থেকে পরিবারের লোকজন নিয়ে শ্রীমঙ্গল ঘুরতে আসেন পর্যটক আরোফিন আহমেদ। বাসে যাতায়াত করা তার জন্য অস্বস্তিকর হওয়ায় তিনি ট্রেনে ফিরতে চাইলেও গত রোববার বা সোমবারের কোনো টিকিট পাননি। শেষমেষ ভোগান্তি নিয়ে তাকে বাসে করেই ঢাকায় ফিরতে হয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক হুমায়রা সুলতানা বলেন, ‘অনেক চেষ্টার পরেও ট্রেনের কোনো টিকিট পাইনি। ছোট্ট শিশু সন্তান নিয়ে দীর্ঘসময় ধরে যাত্রা করতে হয়েছে। এটি খুবই কষ্টদায়ক। দীর্ঘদিন ধরে আমরা রেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই।’
১৯১২ সালে চালু হওয়া শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন মৌলভীবাজার জেলার তিনটি উপজেলার যাত্রী ব্যবহার করে থাকেন। পাশাপাশি দেশের অন্যতম পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গল হওয়ায় এ স্টেশনের গুরুত্ব অনেক। প্রতিদিনই হাজার হাজার পর্যটক এখানে ভ্রমণে আসেন; কিন্তু টিকিট সংকট তাদের জন্য সবচেয়ে বড় ভোগান্তি।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ঢাকাগামী শ্রীমঙ্গল থেকে বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা কালনী এক্সপ্রেসে ৮১টি, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসে ৭০টি, পারাবত এক্সপ্রেসে ১০৫টি, উপবন এক্সপ্রেসে ৬৫টি, পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে ৪৭টি এবং উদয়ন এক্সপ্রেসে ৩০টি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী লিটন অধিকারী বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহেই ঢাকায় যেতে হয়। শ্রীমঙ্গল স্টেশন থেকে টিকিট বরাদ্দ কম থাকায় সিলেট থেকে ঢাকা পর্যন্ত বেশি ভাড়া দিয়ে সেখান থেকে টিকিট সংগ্রহ করি।’
রাধানগর পর্যটন কল্যান পরিষদের যুগ্ম সভাপতি তাপস দাশ বলেন, ‘বর্তমানে শ্রীমঙ্গলে প্রায় ১০০টি হোটেল-রিসোর্ট রয়েছে। দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিদিন অনেক পর্যটক আসলেও ট্রেনের টিকিটের সংখ্যা এত কম যে সেগুলো ১০ দিন আগেই বুকিং হয়ে যায়। ফলে পর্যটন খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
শ্রীমঙ্গলের পর্যটন শিল্প ও স্থানীয় জনগণের ভ্রমণ সুবিধা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত ট্রেন চালু ও সিট সংখ্যা বাড়ানোর দাবি করেন স্থানীয়রা।
পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মা বলেন, ‘দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন ফিরতি টিকিট নিয়ে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য কোনো কোটা নেই। রাত ২টার পর ঢাকা যাওয়ার ট্রেন ধরতে স্টেশনে পর্যটকদের অপেক্ষা করতে হয়, অথচ স্টেশনের টয়লেট ব্যবস্থাও নাজুক এবং ভিআইপি রুম তালাবদ্ধ থাকে। তিনি পর্যটকদের সুবিধার্থে নতুন ট্রেন চালুর পাশাপাশি সময়সূচি আপডেটের দাবি জানান।
শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশনের মাস্টার সাখাওয়াত হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘শুক্র ও শনিবারে হাজারও পর্যটক আসেন। কিন্তু যাত্রী সংখ্যার তুলনায় বরাদ্দ টিকিট অপ্রতুল। আমাদের কিছু করার নেই। অনলাইনে আগেই টিকিট কেটে নেয় যাত্রীরা। কালোবাজারির সুযোগ নেই, কারণ জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া টিকিট কাটা যায় না। তবে আমরা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সিট সংখ্যা বাড়ানোর জন্য চিঠি দিয়েছি।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, ‘এই উপজেলার পর্যটন খাতের উন্নয়নের জন্য বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের সার্বিক সমস্যা সমাধান, ট্রেন ও টিকিট সংকট নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাজ করছে।’
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় নির্মিত ৭টি রেলস্টেশনের মধ্যে ৩টির সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব রেলস্টেশন বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের সাধারণ যাত্রীদের। এছাড়া গরিবের ট্রেন খ্যাত ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস মেইল (৭৫-আপ, ৭৬-ডাউন) ট্রেনটিও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে ময়মনসিংহ-ভূঞাপুর লাইনে চলাচল করা সকল যাত্রীদের প্রতিনিয়ত সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চারদিক জনশূন্য, ভূতুরে পরিবেশ। স্টেশনের সব কক্ষই তালাবদ্ধ। নেই বিদ্যুতের কোনো ব্যবস্থা। প্রতিটি রেলস্টেশনে একজন স্টেশন মাস্টার ও সহকারী মাস্টার এবং চারজন করে পয়েন্টম্যান থাকার কথা থাকলেও এসব স্টেশনে কেউ নেই। ফলে যাত্রীদের সহায়তা করা ও টিকিট কাটার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সরিষাবাড়ী উপজেলায় আন্তঃনগর যমুনা, অগ্নীবিনা ও জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে। এছাড়া ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস, ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস (বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ), চট্টগ্রাম মেইল ৩৭ আপসহ ৩টি লোকাল ট্রেনসহ মোট ৬টি ট্রেন চলাচল করে। বন্ধ এসব রেলস্টেশনগুলোতে ২টি লোকাল ট্রেন সামান্য সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি করলেও অন্য ট্রেনগুলো যাত্রা বিরতি করে না।
এ উপজেলায় রয়েছে ৭টি রেলস্টেশন। তার মধ্যে ১৮৯৯ সালের ব্রিটিশ শাসনামলে চালু হওয়া বাউসী, বয়ড়া ও নবনির্মিত শহীদ নগর বারইপটল স্টেশনে জনবল সংকটের কারণে সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে বন্ধ থাকা এসব স্টেশনে চলে ধান মাড়াই, খড় শোকানো ও চুরি, জুয়া, মাদকসেবনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। স্টেশন বন্ধ থাকায় পড়ে থাকা মূল্যবান সরঞ্জাম নষ্ট হচ্ছে। এসব রেলস্টেশন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এদিকে ময়মনসিংহ, জামালপুর, টাঙ্গাইল রেলপথে চলাচলকারী ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ২০১২ সালের ৬ জুলাই উদ্বোধন করা হয়। ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা জামালপুর, টাঙ্গাইলে চলাচলকারী ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস মেইল ট্রেনটি ইঞ্জিন সংকটের অজুহাতে ২০২৪ সালের ২৮ মে থেকে বন্ধ রয়েছে। ফলে এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার যাত্রী। ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস ময়মনসিংহ থেকে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে জামালপুর এবং টাঙ্গাইলের হেমনগর, ভূঞাপুর ও ইব্রাহিমাবাদ (পূর্বের নাম বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব) রেলওয়ে স্টেশনে চলাচল করত। এসব রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের ট্রেনের ভাড়ার থেকে ২-৩ গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে বাধ্য হয়ে অন্য যানবাহনে করে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।
ট্রেনের নিয়মিত যাত্রী মঞ্জুরুল ইসলাম, রিপন মণ্ডলসহ একাধিক যাত্রী বলেন, ‘ট্রেন মূলত নিম্ন আয়ের মানুষদের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম। ট্রেনে অন্য যানবাহনের থেকে কম ভাড়ায় যাতায়াত করা যায়। নিরাপদ ভ্রমণ হিসেবে ট্রেনে আমরা কম টাকায় যাতায়াত করি। আমাদের যাতায়াতের কষ্টের বিষয়টির গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে এই ট্রেনটি চালুর দাবি জানাচ্ছি।’
বন্ধ থাকা নবনির্মিত শহীদ নগর বারইপটল স্টেশন এলাকার সুমন মিয়া, শাওন আহমেদ বলেন, ‘স্টেশনটি নির্মাণের পর স্টেশন মাস্টারসহ রেলের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকত। বেশ মুখরিত ছিল এই স্টেশনটি। তবে স্টেশনটি উদ্বোধনের কয়েকদিন পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত রেল ভবন, কোয়ার্টার ও স্টেশনের মূল্যবান যন্ত্রপাতি, সরকারি আসবাবপত্র পরে পরে নষ্ট হচ্ছে।’
বন্ধ থাকা বয়ড়া স্টেশনের ব্যবসায়ী সুলতান মিয়া বলেন, ‘ব্রিটিশ আমল থেকে এই বয়ড়া রেলস্টেশন ছিল। এক সময় জনপ্রিয় ও জনসমাগম ছিল প্রচুর এই বয়ড়া স্টেশনে। তখন সকল ট্রেন যাত্রাবিরতি করত। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই স্টেশন বন্ধ থাকায় তালাবদ্ধ অবস্থায় পরে আছে। আগের মতো লোকও আসে না ব্যবসাও নেই।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে (ঢাকা) অতি. মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. নাজমুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, জনবল সংকটের কারণেই অনেক স্টেশন বন্ধ আছে। যমুনা সেতুর পূর্ব ইব্রাহীমাবাদ রেলস্টেশনের নির্মাণ কাজের জন্য ময়মনসিংহ থেকে চলাচলকারী ধলেশ্বরী মেইল ট্রেনটি বন্ধ রাখা হয়েছে। বর্তমানে ইব্রাহীমাবাদ রেলস্টেশনের নির্মাণকাজ অনেকটাই শেষ হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো বন্ধ থাকা ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস ট্রেনটি পুনরায় চালু করা হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশি হামলার’ প্রতিবাদে ও শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ২০ শতাংশ, চিকিৎসা ভাতা ১,৫০০ টাকা এবং কর্মচারী ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে যশোরের শার্শা উপজেলার এমপিওভুক্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
শার্শা উপজেলার ৩৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩৬টি মাদ্রাসায় ক্লাস বর্জন করে গত সোমবার থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘লাগাতার কর্মবিরতি চলছে। তারি ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন। বেনাপোলে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ধান্যখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাহেব আলী বলেন, আমাদের দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অবহেলিত। আমাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় । আমাদের যা বেতন দেওয়া হয় তা আমরা সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারছি না। আমাদের সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ২০ শতাংশ, চিকিৎসা ভাতা ১,৫০০ টাকা এবং কর্মচারী ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে।
তবিবর রহমান সরদার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আয়ুব হোসেন বলেন, মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতার দাবিতে ‘কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।
বেনাপোল মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক আমিনূল ইসলাম বলেন, ‘কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের মাদ্রাসায় কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। উপজেলার সকল এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ক্লাস বন্ধ রয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) উপজেলার সব এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ শাহাজান কবীর জানান, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শার্শা উপজেলা ও বেনাপোলের সকল এমপিও ভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারীরা আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের আসন্ন বৈঠক প্রতিহত করতে আগামী ১৯ অক্টোবর রাঙামাটিতে দিনব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাঙামাটি শহরের এক রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন সংগঠনের জেলা সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম তাজ। এ সময় তিনি জানান, ভূমি কমিশনের বিতর্কিত বৈঠক প্রতিহত ও ছাত্র–জনতার পক্ষ থেকে উত্থাপিত ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ, ঘেরাও ও হরতাল কর্মসূচি পালিত হবে।
তাজুল ইসলাম তাজ বলেন, ‘বিতর্কিত ভূমি কমিশনের বৈঠক প্রতিহত করতে আমরা ঐক্যবদ্ধ। ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন না করে কমিশনের কার্যক্রম শুরু করার চেষ্টা করা হলে রাঙামাটির শান্তিপ্রিয় জনতা কঠোর আন্দোলনে নামবে। দল-মত নির্বিশেষে সকল নাগরিককে এই আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
পিসিসিপি জানায়, রোববার সকাল থেকে রাঙামাটি শহরের প্রতিটি মোড়ে অবস্থান নিয়ে ছাত্র-জনতা বৈঠক স্থান ঘেরাও করা হবে।
পিসিসিপি ঘোষিত ৮ দফা দাবি: ১. পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনে জনসংখ্যা অনুপাতে সকল জাতিগোষ্ঠীর সমান প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
২. ভূমি বিরোধ নিস্পত্তির কার্যক্রম শুরু করার আগে ভূমির বর্তমান অবস্থা নিরূপণে সম্পূর্ণ ভূমি জরিপ সম্পন্ন করতে হবে।
৩. দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ভূমি কমিশন সংশোধনী আইন ২০১৬ বাতিল করতে হবে।
৪. পার্বত্য চট্টগ্রামে দেশের প্রচলিত ভূমি আইন অনুযায়ী ভূমি ব্যবস্থাপনা চালু করতে হবে এবং জেলা প্রশাসককে ভূমি বিরোধ নিস্পত্তির ক্ষমতা দিতে হবে।
৫. কমিশনের সিদ্ধান্তে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকারি খাসজমিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. কমিশনের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা ২০০১ সালের আইন অনুযায়ী বলবৎ রাখতে হবে।
৭. তথাকথিত রীতি, প্রথা ও পদ্ধতির পরিবর্তে বিদ্যমান ভূমি আইন অনুসারে কমিশনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
৮. জেলা প্রশাসক কর্তৃক বন্দোবস্তিকৃত বা কবুলিয়তপ্রাপ্ত মালিকানা থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—
পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ মোশাররফ হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব পরিষদের সভাপতি মো. নূর হোসেন, পিসিএনপির রাঙামাটি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতারা।
নওগাঁর পোরশা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় প্রতি রাতে ঘটছে একের পর এক ডাকাতি। ঘনঘন এসব ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটছে সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী ও পথচারীদের। স্থানীয়দের অভিযোগ, ডাকাতি দমনে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগের অভাবেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ডাকাতরা গাছ ফেলে যানবাহনের পথরোধ করে যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব লুট করছে। একই সঙ্গে বাজার ও মোড়ের দোকানপাটের তালা ভেঙে মূল্যবান মালামাল লুটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে ব্যবসায়ীরাও তাদের টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন। গত
বুধবার গভীর রাতে উপজেলার সারাইগাছী-আড্ডা আঞ্চলিক মহাসড়কের মোশানতলা মোড় থেকে বন্ধুপাড়া মোড় পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তিনটি স্থানে ডাকাতরা গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করে। ওই সময় একাধিক যানবাহনের যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান মালামাল লুট করা হয়। একই রাতে বেজোড়া মোড় এলাকায় তিন নাইট গার্ডকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অন্তত ১৮টি দোকানের মালামাল লুটে নেয় ডাকাত দল। এর আগে গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে সারাইগাছী-আড্ডা সড়কের মোশানতলা মোড়ে একই কায়দায় আরেকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী চলে এই তাণ্ডব। গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করে উভয় দিকের যানবাহনের যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার ও মালামাল ছিনিয়ে নেয় তারা। ডাকাতদের হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হন। বর্তমানে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, মোশানতলা মোড়ে প্রায়ই ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও থানা পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। ঘটনার সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে সারাইগাছী বাজারে অবস্থান করলেও কোনো তৎপরতা দেখা যায় না। ডাকাতি শেষ হওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
বেজোড়া মোড়ের ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির, রাজিবুল হাসান এবং মুদি ব্যবসায়ী জাকারিয়া জানান- আমাদের এলাকায় মাঝেমধ্যেই ডাকাতি হয়। গত বুধবার রাতে অন্তত ১৮টি দোকান লুট হয়েছে। এতে অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে গেছে ডাকাতরা।
ঘাটনগর ইউনিয়নের তাঁতিপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার সময় আমার পথরোধ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করা হয়। টাকা দিতে দেরি করায় আমাকে মারধর করে ৪২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার এবং পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মিন্টু রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ওসি মিন্টু রহমান বলেন, সম্প্রতি কয়েকটি এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঘটনাগুলো গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। দোষীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, ডাকাতি রোধে বিশেষ টহল ও চেকপোস্ট কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী সাক্ষ্য দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের দায়ের করা তিনটি পৃথক মামলায় তারা এ সাক্ষ্য দেন।
মামলাগুলোতে আরও অভিযুক্ত আছেন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলমের আদালতে পৃথক তিন মামলায় তারা সাক্ষ্য দেন। আবার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আদালত ৩০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
এর মধ্যে শেখ রেহেনা ও শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনজন। তারা হলেন-ডিএসসিসি’র অফিস সহকারী রেসমা, রেভিনিউ সুপারভাইজার দেওয়ান মো. সাঈদ ও উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক তৈয়ব রহিম।
আজমিনা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনজন। তারা হলেন- ডিএসিসি’র হিসাব সহকারী ফারুক সরদার, উপ-কর কর্মকর্তা মাইনুল ইসলাম চিশতী ও উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক আসাদুজ্জামান।
অন্যদিকে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায়ও তিনজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হলেন- ডিএসিসি’র হিসাব সহকারী ফারুক সরদার, উপ-কর কর্মকর্তা মেহেদী হাসান ও উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক আসাদুজ্জামান।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহম্মেদ সালাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ, রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়।
মামলাটির তদন্ত শেষে ১০ মার্চ আরও দুই আসামিসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আফনান জান্নাত কেয়া।
এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন-জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তে পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া দুই আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
একইভাবে আজমিনা সিদ্দিকও ১০ প্লট বরাদ্দ নেন। তার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। মামলায় টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ আরও দুই আসামিসহ মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন আফনান জান্নাত কেয়া।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক কামরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
একই অভিযোগে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন এস এম রাশেদুল হাসান।
রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, শেখ হাসিনা ও টিউলিপ ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সহকারী পরিচালক ফারিয়া সুলতানা, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, পরিচালক শেখ শহিদুল ইসলাম, তদন্তপ্রাপ্তিতে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) একটি কারখানায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। কারখানাটিতে হাসপাতালে ব্যবহার করার বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করা হয়। বহুতল ভবনটিতে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন বলে জানা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা যায়। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম গণমাধ্যমকে বলেন, সাত তলা ভবনের ৫, ৬ ও ৭ তলায় আগুন লেগেছে। এ পর্যন্ত ১৬টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
আগুনে এখন পর্যন্ত হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য