করোনার লাগামহীন সংক্রমণ রুখতে দেশের জেলা, উপজেলা হাসপাতালগুলোতে আজ সোমবার থেকে চীনের উৎপাদিত সিনোফার্মের টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে।
গত ১৯ জুন থেকে সারা দেশের মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে আবার গণটিকাদান শুরু হয়। সেটাই আবার বড় পরিসরে শুরু হলো।
এর পাশাপাশি আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ১২টি সিটি করপোরেশন এলাকায় মডার্নার টিকা দেয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘টিকার আওতা বাড়িয়ে ৩৫ বছর পর্যন্ত করা হয়েছে। সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে এখন ৩৫ বছর ও এর বেশি বয়সীরা টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারছেন। নিবন্ধনের পর এসএমএস দেয়া হবে। এসএমএস পেলে নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিতে হবে।’
রোববারই টিকা সেন্টারে সিনোফার্মের টিকা পাঠানো হয়। এবার জেলাগুলোতে টিকার বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।
দেশে প্রথম পর্যায়ে গণটিকাদান শুরু হয়েছিল ৭ ফেব্রুয়ারি। শুরুতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া হয়। দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত না করেই ৫৮ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে ওই টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়। এর মধ্যে ৪৩ লাখ ৯৫ হাজার ২১৮ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া সম্ভব হয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা সংকটের কারণ দেখিয়ে গত ৫ মে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও চীনের সিনোফার্ম উদ্ভাবিত টিকা বিবিআইবিপি-করভির ডোজ হাতে আসার পর সরকার তিন শ্রেণির জন্য নিবন্ধন অ্যাপ চালু করে।
এখন ২২ ক্যাটাগরির মানুষ নিবন্ধন সুযোগ পাচ্ছে। তবে সিরামের টিকা সরকারের হাতে না থাকার কারণে এখনও ১৫ লাখ ২৪ হাজারের বেশি মানুষ দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, আগামী মাসে এ টিকার সংকটও সমাধান হবে।
মডার্নার টিকা মাইনাস ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে হয়। এ কারণে এ টিকা দেয়া হবে শুধু সিটি করপোরেশন এলাকায়। সিটি করপোরেশন এলাকার আওতায় থাকা সাধারণ মানুষ এই টিকার আওতায় আসবে। আর সিনোফার্মের টিকা রাখা যায় ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তাই জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সিনোফার্মের টিকা দেয়া হবে।
এবার যাদের অগ্রাধিকার
করোনা প্রতিরোধী টিকা প্রদানে এবার যাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে তারা হলেন, করোনা মোকাবিলায় সামনের সারির যোদ্ধা, নির্বাচিত প্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কর্মকর্তা, সব ধর্মের প্রতিনিধি, মৃতদেহ সংস্কারকাজে নিয়োজিত কর্মী, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, নিষ্কাশন ও ফায়ার সার্ভিসের প্রথম সারির কর্মকর্তা, রেলওয়ে স্টেশন, বিমানবন্দর, নৌবন্দর, স্থলবন্দরের কর্মচারীরা এ টিকা পাবেন।
এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর সদস্য, জেলা-উপজেলায় জরুরি কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মচারী, ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারী, জাতীয় দলের খেলোয়াড়, চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাত্র-ছাত্রী, গণমাধ্যমকর্মী, স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, অনুমোদিত সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাষ্ট্র পরিচালনায় নিয়োজিত অপরিহার্য কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই টিকা পাবেন।
যে প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সুরক্ষা অ্যাপে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। ফোন ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, নাম, জন্মতারিখের পাশাপাশি কোনো শারীরিক জটিলতা আছে কি না, পেশা কী তা-ও জানাতে হবে।
স্মার্টফোনে ইন্টারনেট সংযুক্ত করে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে। অ্যাপে তথ্য দিলে টিকার আপডেট সম্পর্কে গ্রহীতাদের এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ টিকা বিতরণ করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
এ পর্যন্ত টিকা পেতে নিবন্ধন করেছেন ৮৭ লাখ ৮৩ হাজার ৭১২ জন। এর মধ্যে দুই ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেয়েছে ৪২ লাখ ৯০ হাজার ৯৬৪ জন। আর শুধু প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৫৮ লাখ ২০ হাজার ১৫ জন।
সিনোফার্মের টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৭১ হাজার ৮ জন। দুই ডোজ পেয়েছেন ২ হাজার ২৩৭ জন। এ ছাড়া ফাইজারের টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১ হাজার ৮৬৬ জন।
আরও পড়ুন:রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বিতীয় ধাপের বৈঠক আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রবিবার (১ জুন) এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এমন তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বৈঠকটি বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সোমবার (২ জুন) বিকেল সাড়ে ৪টায় থেকে অনুষ্ঠিত হবে। সংস্কার আলোচনা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের দ্বিতীয় দফার রাজনৈতিক আলোচনা শুরু করেছে।
‘প্রধান উপদেষ্টা কাল আলোচনার উদ্বোধন করবেন এবং আলোচনা পরবর্তী সময়েও চলবে,’ যোগ করেন তিনি। ঈদুল আজহার আগে ও পরে আরও কয়েক দফা বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে কয়েক দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসেন ড. ইউনূস। গেল ২৪ মে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের বৈঠক হয়। পরের দিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আরও দুটি বৈঠক করেন তিনি।
শনিবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আলোচনার জন্য বিএনপিকে আবারও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। আগামী ২ জুন দ্বিতীয় দফার এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সালাহউদ্দিন বলেন, সরকার একের পর এক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার আনুষ্ঠানিকতা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তাতে বাস্তব কোনো অগ্রগতি নেই। আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। জনগণের আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন, কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়।
জনতা ব্যাংক পিএলসি’র ফরিদপুর বিভাগীয় শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন ৩০ মে’২৫ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান এবং উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আশরাফুল আলম। ফরিদপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের ইনচার্জ মোঃ সহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে ফরিদপুর বিভাগের এরিয়া প্রধানগণ ও অন্যান্য নির্বাহীবৃন্দ এবং শাখা ব্যবস্থাপকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
অতিবৃষ্টির কারণে সিটি নগরের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে একটি বিশেষ জরুরি কন্ট্রোল রুম।
এদিকে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে দ্রুত বাড়ছে সুরমা কুশিয়ারাসহ সিলেটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। এতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঢলে ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে সীমান্তবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চলের সড়ক ও জনপদ।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে গত কয়েক দিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটে। নিম্নচাপ সরে গেলেও তার প্রভাবে বৃষ্টি এখনো অব্যাহত আছে। গত শুক্রবার সকাল থেকে গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
এদিকে ভারী বৃষ্টিতে শুক্রবার রাত থেকেই সিলেট নগরের অনেক এলাকার বাড়িঘরে পানি ঢুকতে শুরু করে। তলিয়ে যায় সড়ক। শনিবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অর্ধশতাধিক এলাকা জলমগ্ন ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভারী বৃষ্টিতে নগরীর জিন্দাবাজার, ক্বিন ব্রিজ এলাকা, আম্বরখানা, বন্দরবাজার, টিলাগড়, উপশহর, লালদীঘির পাড়, উপশহর, তেররতন, মাছিমপুর, তালতলা, শিবগঞ্জ, ছড়ারপাড়সহ বিভিন্ন জায়গায় হাঁটুপানি জমে যায়। অনেক বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
সিসিক সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টির পানি দ্রুত অপসারণ ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য সিলেট সিটি করপোরেশন ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি (কক্ষ নং-২০৫) কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। সিসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবরকে জরুরি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করে চালু করা এই কন্ট্রোল রুমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান ও প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ একলিম আবদীন।
গতকাল সিসিকের এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করে পরিস্থিতি সরাসরি পরিদর্শন করবেন এবং তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৫টার মধ্যে সব ওয়ার্ড থেকে জলাবদ্ধতা নিরসন ও পানি নিষ্কাশনের অগ্রগতির প্রতিবেদন সিসিকের আইসিটি শাখার ই-মেইলে ([email protected]) পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নগরের চৌহাট্টা এলাকার বাসিন্দা রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী জাকির আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটু ভারী বৃষ্টি হলেই নগর পানিতে তলিয়ে যায়। বাসার ভেতর পানি ঢুকে অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়। বছরের পর বছর ধরে এমন অবস্থা চলে আসছে।
সিসিকের কন্ট্রোল রুম চালুকে আইওয়াশ দাবি করে তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের নামে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সিসিক কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এতে কাজের চেয়ে লুটপাটই বেশি হয়েছে। তাদের লুটপাট আর অপরিকল্পিত কাজের কারণেই আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বন্যার শঙ্কা: এদিকে সিলেটের পাশাপাশি উজানে ভারতের আসাম এবং মেঘালয়েও হচ্ছে ভারী বৃষ্টিপাত। এর পানিও নেমে আসছে। এ অবস্থায় সিলেটের নিম্নাঞ্চলের কিছু কিছু অংশ ডুবে গেছে। ফুঁসছে সুরমা-কুশিয়ারাও। তবে এই দুই নদীর পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।
গত কয়েক দিন ধরেই সিলেট অঞ্চলে বন্যার পূর্বাভাস দিয়ে যাচ্ছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে মোট ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আসাম ও মেঘালয়ের বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে আসে সুরমা কুশিয়ারা এবং সারি, সারিগোয়াইন, লোভাছাড়ার মতো পাহাড়ি নদী হয়ে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, জেলার প্রধান দুই নদী সুরমা, কুশিয়ারাসহ সব কটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। সারি-গোয়াইন ও ধলাই নদের পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চলে দ্রুত পানি বাড়ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলেও পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলং ও বিছনাকান্দি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব স্থানে পর্যটকদের ভ্রমণ করতে না যাওয়াটাই ভালো বলে স্থানীয় লোকজন পরামর্শ দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পানি বৃদ্ধি পেলেও কারও পানিবন্দি অবস্থায় থাকার খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে; পাশাপাশি জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনা খাবারের মজুত রাখা হয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী জানান, উপজেলার গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়কের নিচু অংশের অংশবিশেষ প্লাবিত হয়েছে। তবে বৃষ্টি কমে গেলেই পানি নেমে যাবে। এখনো উপজেলার কোনো এলাকা প্লাবিত না হলেও তারা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় কিছু কিছু এলাকায় পানি বাড়ছে।
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার বলেন, গতকালের চেয়ে আজ পানি কিছুটা কমেছে। নিম্নাঞ্চলে পানি থাকলেও কোনো গ্রাম বা এলাকা প্লাবিত হয়নি। উপজেলায় ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো কারও আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি।
চট্টগ্রামের উপকূলীয় উপজেলা বাঁশখালী। বঙ্গোপসাগরের গা ঘেঁষে বিস্তৃত এই জনপদের একমাত্র ঢাল হিসেবে কাজ করে বেড়িবাঁধ। কিন্তু বছরের পর বছর দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও নিম্নমানের নির্মাণকাজে সেই ঢাল আজ প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে। লক্ষাধিক মানুষ এখন প্রকৃতির করুণার ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছে, কারণ যেকোনো সময় একটুখানি জলোচ্ছ্বাসেই ভেসে যেতে পারে তাদের ঘরবাড়ি, চাষের জমি আর স্বপ্ন।
চলমান বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়া ও প্রচণ্ড ঢেউয়ের ফলে বেড়িবাঁধ ভাঙা অংশ দিয়ে বানের জলের মতো হু-হু করে পানি প্রবেশ করছে। শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায় বেড়িবাঁধ উপচে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। বিপরীতে এসব দেখে অসহায় অবস্থায় উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে উপকূলবাসীর।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২০১৫ সালে বাঁশখালীতে ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২৫১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। পরবর্তী সময় ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হলেও, মাত্র দেড় বছরের ব্যবধানে কদমরসুল, খানখানাবাদ, প্রেমাশিয়া, সাধনপুরসহ একাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সমস্যা শুধু কাজের মানে নয়, প্রকল্প নকশাতেও। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পানিসম্পদ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সামিউন বাসির বলেন, ‘এ ধরনের ব্যর্থতার পেছনে দুটি বড় কারণ- নিম্নমানের নির্মাণ ও নকশাগত ত্রুটি।’
তিনি আরও বলেন, যদি সঠিক নকশা অনুসরণ করে টেকসই উপকরণ ব্যবহৃত হতো, তাহলে এই পরিণতি আসার কথা ছিল না।
১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আজও বাঁশখালীবাসীর মনে তাজা। সেদিন শুধু বাঁশখালীতেই প্রাণ হারিয়েছিল ৩৫ হাজার মানুষ। সেই স্মৃতিতে প্রতিবছর এপ্রিল মাস এলেই নতুন আতঙ্কে ভোগেন উপকূলবাসী। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়, কারণ চলমান ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে আবারও বেড়িবাঁধ উপচে সাগরের পানি গ্রামে ঢুকে পড়ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজে সরাসরি যুক্ত ছিলেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও সাবেক জনপ্রতিনিধিরা। একাধিক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রয়েছে অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ। এমনকি অনেকে বলছেন, প্রকল্পের অর্ধেক টাকাও ব্যয়ে যায়নি, বাকিটা গেছে ভাগ-বাঁটোয়ারায়।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘যে এমপি ছিলেন, তিনিও ভাগ পেতেন, ইউপি চেয়ারম্যানরা মাল সরবরাহ করতেন, সব মিলিয়ে বাঁধের এই অবস্থা।’ এই বাঁধের নির্মাণে কাজ পেয়েছে পূর্বে বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান ‘হাসান ব্রাদার্স’-এর মতো সংস্থাও, বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় অধিবাসী ও মেরিনার ক্যাপ্টেন মনজুরুল হক টেকসই আধুনিক বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে বলেন, জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলবাসী যখন অসহায়, তখন বহিরাগত গোষ্ঠী উৎসবের মতো করে বঙ্গোপসাগরের সম্পদ লুটছে। এদের কোনো স্থানীয় দায়বদ্ধতা নেই, অথচ তারাই এখন প্রধান সুবিধাভোগী। জেলেদের অভিযোগ, প্রভাবশালীরা নিষিদ্ধ জাল ও আধুনিক ট্রলার দিয়ে মাছের ডিম ও ছোট মাছ পর্যন্ত ধরে ফেলছে, ফলে মাছের বংশবৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে এবং স্থানীয় জেলেদের মাছ ধরা কঠিন হয়ে পড়ছে। এসব কার্যকলাপ সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রেও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি ডেকে আনছে।
ঠিকাদার ব্যবসায় জড়িত একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার বলেন, দুর্নীতি শুধু রাজনৈতিক নেতাদের হাতে হয়, ঠিকাদারদের হাতে হয় তেমন নয়, এই কাজে যে সরকারি দপ্তরও জড়িত আছে, পার্সেন্টেস ছাড়া যে ফাইল নড়াচড়া হয় না এই খবর কয়জনে রাখে। টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার জন্য পছন্দের লোকজনদের গোপন তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার খবর কেউ বলে না। ধাপে ধাপে পার্সেন্টেসের খেলা বন্ধ করা গেলে কাজের কাজ কিছু হবে।
এই প্রেক্ষাপটে ২০২৪ সালের মে মাসে নতুন করে বাঁশখালী বেড়িবাঁধ উন্নয়নে ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছিল একনেক সভায়। সচেতন মহলের দাবি বড় বাজেট মানেই টেকসই কাজ নয়। যদি তদারকি না থাকে, দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে রক্ষা না করা যায়, তাহলে ৬০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পও অদূর ভবিষ্যতে আরেকটি দুর্নীতির দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।
স্থানীয়দের দাবি সেনাবাহিনী বা নৌবাহিনীর অধীনে নির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে তদারকি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। তৃতীয় পক্ষ দিয়ে নির্মাণসামগ্রী, ব্যয় ও অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে হবে। স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; গণমাধ্যম ও নাগরিক সংগঠনের মাধ্যমে প্রকল্প মনিটরিং বাড়াতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী উপ-প্রকৌশলী তানজির সাইফ বলেন, ইতোমধ্যে মোট পাঁচ প্যাকেজে পাঁচটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিধিমোতাবেক চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। বাঁশখালীর অভ্যন্তরীণ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী বিদায় সাগরপথে মালামাল আনা হবে তার জন্য জেটি নির্মাণ করতে হবে। বেড়িবাঁধের বেহালদশার কথা বলা হলে তিনি বলেন কিছু হবে না। গত বছর কিছু হয়েছিল? এর মধ্যে আমাদের কাজ শুরু হবে।
বাঁশখালীর বেড়িবাঁধ আজ শুধু একটি প্রকৌশলগত কাঠামো নয়, এটি লক্ষাধিক মানুষের বাঁচা-মরার প্রশ্ন। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কেবল একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন নয়, এটি রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং জনগণের প্রতি কর্তব্য পালনের একটি পরীক্ষা।
ক্যাপশন:
১. সাগরের পানি বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয় বিরান হওয়ার পথে।
বিগত ১৫ বছরের দুর্নীতি ও চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশের আর্থিক খাত ‘অত্যন্ত খারাপ’ অবস্থায় আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।
গতকাল শনিবার রাজধানীতে ‘বাজেট ভাবনা ২০২৫-২৬’ শিরোনামে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের আর্থিক খাতের দুটি সমস্যা- ব্যাংকের পরিচালনা কমিটি, তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, রাজনৈতিক সহায়তায় একটি লুটপাট চালিয়েছে গত ১৫ বছর- এটি নিঃসন্দেহে আমরা বলতে পারি। আর দ্বিতীয়টি হলো, আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একদম আইসিইউতে আছে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ।
যদি বিনিয়োগ আইসিইউতে থাকে, তাহলে যে বিনিয়োগকারী, সে তো বিনিয়োগ ফেরত নিতে পারছে না।’
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘একটি হলো ব্যাংকের নিজস্ব অনিয়ম, নিজস্ব দুর্নীতি; আরেকটি হলো সাধারণ নিয়মে অর্থনীতির সমস্যা। সে সমস্যার কারণে যে ঋণ নিয়েছে, সে এখন ঋণটি পরিশোধ করতে পারছে না। এই সবগুলোর সমন্বয়ে আসলেই; কিন্তু বাংলাদেশের আর্থিক খাত অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছে। যে যাই বলুক।’
সব জায়গায় এখনো বৈষম্য বিদ্যমান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো ক্ষেত্রে বৈষম্য নেই? আয়ের বৈষম্য, সামাজিক বৈষম্য, সম্পদের বৈষম্য, রাজনৈতিক বৈষম্য- সবই বাংলাদেশে দিন দিন বেশি হচ্ছে। সরকারের কার্যক্রম বাংলাদেশে প্রতিনিয়তই প্রতিটি ক্ষেত্রে একটি বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। আমাদের এগুলো শনাক্ত করতে হবে।’
ভালো বাজেটের প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, ‘ভালো বাজেট বলতে আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য চাই, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি চাই, স্থানীয় শিল্পের উৎপাদন বৃদ্ধি চাই, উৎপাদন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে চাই।’
ভারতে করোনাভাইরাসে বিভিন্ন রাজ্যে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৭ জন। আক্রান্তের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় ৩ হাজার লোক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কেরালায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এর পরই রয়েছে মহারাষ্ট্র ও দিল্লি। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত চার দিনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে।
গতকাল শনিবার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৬ মে পর্যন্ত ভারতে মোট ১ হাজার ১০ জন আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড করা হলেও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সরকারি তথ্য অনুযায়ী ৩০ মে পর্যন্ত মোট এই সংখ্যা ২ হাজার ৭১০ জনে দাঁড়িয়েছে।
তথ্য অনুসারে কেরালায় ১ হাজার ১৪৭ জন, মহারাষ্ট্রে ৪২৪, দিল্লিতে ২৯৪ এবং গুজরাটে ২২৩ জনের আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। তামিলনাড়ুতে এখন পর্যন্ত মোট ১৪৮ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যেখানে কর্ণাটক এবং পশ্চিমবঙ্গে যথাক্রমে ১৪৮ এবং ১১৬।
এ ছাড়া রাজস্থানে ৫১ জন, উত্তর প্রদেশে ৪২ জন, পুদুচেরিতে ২৫ জনসহ হরিয়ানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গোয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। ওড়িশা, পাঞ্জাব ও জম্মু কাশ্মীরেও করোনায় আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।
আন্দামান ও নিকোবর, সিকিম, হিমাচল প্রদেশে এখনো আক্রান্তের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভারতজুড়ে কমপক্ষে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মহারাষ্ট্রে (১) এবং দিল্লিতে (১) মারা যাওয়া দুজনের কোভিড-১৯-এর পাশাপাশি অন্যান্য গুরুতর অসুস্থতাও ছিল। তবে অন্যরা সংক্রমণের কারণে মারা গেছেন কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাঞ্জাবের একজন ছাড়া যারা মারা গেছেন তারা সবাই প্রবীণ নাগরিক। তবে কর্মকর্তারা বলেছেন, করোনাভাইরাসের ঘটনাগুলো হালকা প্রকৃতির এবং এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
এই সপ্তাহের শুরুতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) এর মহাপরিচালক ডা. রাজীব বাহল এ বিষয়ে সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯-এর এই নতুন রূপটি নিয়ে জনসাধারণের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের কেবল সতর্ক থাকতে হবে। সরকার এবং সব সংস্থা কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ করছে। আমার মতে, প্রাথমিক সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। আমরা এখনই বর্ধিত সতর্কতার কথা বলছি না। তবে যদি কেউ ক্যানসার রোগী হন বা তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সমস্যা থাকে, তাহলে আমরা সাধারণত তাদের কোনো সংক্রমণ এড়াতে পরামর্শ দিই। সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।’
পাটের হারানো গৌরবের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে পাটের পুনরুজ্জীবন এবং এর ব্যবহার বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘যখন আপনি পাট নিয়ে কথা বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি আবেগের বিষয়। এই দেশটি একটি অনন্য দেশ, যে দেশ বহু বছর ধরে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক তন্তু উৎপাদন করে আসছে।’
আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) অফিসে অনুষ্ঠিত চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘পাটকে এখনো শুধু বস্তা তৈরির তন্তু হিসেবে বিবেচনা করা হয়, অথচ এটি এমন একটি প্রাকৃতিক তন্তু, যাকে আমরা পরিবেশ ও পৃথিবী রক্ষার কাজে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছি।’
অধ্যাপক ইউনূস তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ‘আমরা একসাথে পাটকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সঠিক জায়গা দেওয়ার জন্য এক দারুণ সূচনা করতে পারি।’
বাংলাদেশ জামদানি এবং অন্যান্য বহু কাপড়ের আবাসভূমি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পাটের বহুমুখী ব্যবহার সম্ভব।’
এ উপলক্ষে তিনি ঢাকাই মসলিনের হারানো গৌরবের কথাও স্মরণ করেন, যেটি এক সময়ে ছিল পৃথিবী খ্যাত ও মূল্যবান।
সম্মেলনে চীনের ১শ’টি কোম্পানির প্রায় ২৫০ বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করেছেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য