করোনার বিস্তার ঠেকাতে গত এপ্রিলে যখন লকডাউন দেয়া হয়, সে সময় পরিস্থিতির দৃশ্যমান অগ্রগতি ছিল দুই সপ্তাহে। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন।
শাটডাউন নামে পরিচিতি পাওয়া বিধিনিষেধে এবার অন্যান্য বারের তুলনায় মানুষের চলাচল সীমিত। কিন্তু ভাইরাস ছড়াচ্ছে ব্যাপকভাবে। শনাক্তের সংখ্যা, শতকরা হার প্রতিদিন যেমন বেড়েই চলেছে, তেমনি বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা।
করোনার ইতালীয় ধরনের পর যুক্তরাজ্য ও সাউথ আফ্রিকান ধরনের তুলনায় ভীতি জাগানিয়া ভারতীয় ধরন বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট যেমন ছড়াচ্ছে বেশি, তেমনি মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষের মধ্যে অনীহা স্পষ্ট।
আর করোনার প্রথম ঢেউ বা দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রথম দিকে বড় শহর এলাকায় রোগীর সংখ্যা বেশি হলেও এবার আক্রান্ত হচ্ছে মফস্বল বা গ্রামের মানুষ।
পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত খোদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘লকডাউন বা বিধিনিষেধ অমান্য করার কারণে রোগীর সংখ্যা যদি অস্বাভাবিক বেড়ে যায়, তাহলে আমরা আবারও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যাব।’
গত বছর দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর দেশের হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার অপ্রতুলতা, শয্যা, বিশেষ করে অক্সিজেন সরবরাহে অবকাঠামোর ঘাটতি আর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউর অভাবের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এই এক বছরে শয্যা বা আইসিইউ যত বাড়ানো হয়েছে, তার বেশির ভাগ প্রধান শহরগুলোতে। মফস্বলে শয্যা পাঠালেও বিশেষজ্ঞের অভাব বা টেকনিশিয়ান না থাকায় আইসিইউ ইউনিটগুলো চালু করা যায়নি। সেই সঙ্গে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়নি।
এরই মধ্যে সাতক্ষীরা, বগুড়া, কুষ্টিয়ায় পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যুর খবর এসেছে গণমাধ্যমে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অক্সিজেনের চাহিদা মেটানোর মতো সক্ষমতা এখনও আছে। তবে সরবরাহ নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে।
শয্যা আর আইসিইউর মতোই অক্সিজেনের সরবরাহও বড় শহরকেন্দ্রিক। মফস্বলের হাসপাতালে সেন্টাল অক্সিজেনব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়নি। আর গ্রামের হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকার সমস্যারও যেন কোনো সমাধান নেই।
এই পরিস্থিতিতে তোপের মুখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টাতে তার মন্ত্রণালয়ের দৃশ্যমান তৎপরতা নেই।
আর যে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে, সেটিও সেভাবে কার্যকর হচ্ছে না বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেলিন চৌধুরী। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে গেলে লকডাউন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। অর্ধেক লকডাউন অর্ধেক খোলা রেখে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। সবকিছু খোলা রেখে লকডাউন দেয়া মানে লকডাউনের সঙ্গে প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নেই।’
বিজ্ঞানসম্মতভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন হয়নি দাবি করে তিনি মানুষের মধ্যে উদাসীনতার বিষয়টি তুলে ধরেও আক্ষেপ করেন। সেই সঙ্গে সরকারের পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেই বলেও মনে করেন তিনি।
এই চিকিৎসক বলেন, ‘মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর ও মাস্ক পরানোর জন্য প্রশাসনের কর্মসূচি দেখেছি। তবে বিনা মূল্যে মাস্ক দেয়ার কোনো কর্মসূচি দেখিনি। একই সঙ্গে জনগণ কেন মাস্ক পরে না, সে কারণ খোঁজার চেষ্টাও করি না। আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণে প্রচুর কথা বলেছি। তবে অনেক কম কাজ করেছি। গত দেড় বছর জেলা শহরে আইসিইউ তৈরি করতে পারলাম না। অথচ জেলা শহরগুলো এখন করোনা রোগী বেশি বেড়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতিরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, এটা আমাদের মানতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘রোগীর সংখ্যা যদি আমরা না কমাতে পারি, যতই প্রস্তুত থাকুন না কেন, ১৬ কোটি মানুষের দেশে আমরা কত বিছানা দেব? বিছানা দিয়েও সামাল দেয়া যাবে না। আপনারা দেখছেন, কঠোর লকডাউনের মধ্যে মানুষ কীভাবে বের হচ্ছে। লোকজন স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। এমন হতে থাকলে পরিস্থিতি খারাপ হবে।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলার হাসপাতালগুলোতে আমরা শয্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রাখার চেষ্টা করছি।’
শাটডাউনের ছয় দিনে রোগী, মৃত্যু বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে
গত ১ জুলাই থেকে শাটডাউন শুরুর পরদিন ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৪৩ জন। এরপর তা বেড়ে ১৫৩ জন হয় গত ৪ জুলাই। ৫ জুলাই জানানো হয় ১৬৪ জনের মৃত্যুর তথ্য।
পরদিন মৃত্যু ছিল ১৬৩ জনের। আর বুধবার এক লাফে মৃত্যু ছাড়িয়ে যায় দুই শর ঘর। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২০১ জনের।
মৃত্যুর পাশাপাশি বাড়ছে শনাক্ত আর পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের শতকরা হার।
১ জুলাই ৮ হাজার ৩০১ জন শনাক্তের কথা জানায় সরকার। আগের সেই ২৪ ঘণ্টায় যতজন পরীক্ষা করেছিলেন, তাদের মধ্যে শনাক্তের হার ২৫.৯০ শতাংশ।
৪ জুলাই সরকার জানায় ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে মোট ৮ হাজার ৬৬১ জন। আর নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২৮.৯৯ শতাংশ।
পরের দিন শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৯৬৪ জন। আর শনাক্তের হার আরেকটু বেড়ে হয় ২৯.৩০ শতাংশ।
৬ জুলাই শনাক্তের সংখ্যা প্রথমবারের মতো ছাড়ায় ১০ হাজার। সেদিন আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৫২৫ জন শনাক্ত হয়। শতকরা হার ছিল ৩১.৪৬ শতাংশ।
আর ২০১ জনের মৃত্যুর দিন শনাক্ত হয় ১১ হাজার ১৬২ জন। শনাক্তের হার দাঁড়ায় ৩১.৩২ শতাংশ।
করোনা প্রথম শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। উদ্বেগ থাকলেও প্রথম কয় মাসে ভাইরাসটি সেভাবে ছড়ায়নি।
তবে মে মাস থেকে ব্যাপকভাবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তখন আক্রান্তের হটস্পট ছিল ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামের মতো জনবহুল শহরগুলো।
গত শীতে দ্বিতীয় ঢেউ আসার উদ্বেগ থাকলেও সংক্রমণ, মৃত্যু- দুটোই কমে আসে। একপর্যায়ে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে নেমে আসে, যেটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবেচনায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ধরা যায়।
তবে গত মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে শনাক্তের হার আবার বাড়তে থাকে। দ্বিতীয় ঢেউ নিশ্চিত হওয়ার পর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ভারতে করোনার নতুন ধরনের কথা জানা যায়।
সেই ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্তদের দ্রুত অসুস্থ করে দেয়, তাদের অক্সিজেন লাগে বেশি। আর ছড়ায় দ্রুত, তাই মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি।
বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয় ২৪ এপ্রিল। কিন্তু অবৈধ পথে যোগাযোগ, বৈধ পথে দেশে এসে সীমান্তে বিধিনিষেধ না মেনে লুকিয়ে বাড়ি ফেরার প্রবণতার কারণে ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকানো যায়নি।
প্রথমে ভারতীয় ধরন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট রাজশাহী অঞ্চলে ব্যাপক মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পরে তা ছড়ায় খুলনা বিভাগে। সেই সঙ্গে ঢাকা বিভাগের বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চল আর টাঙ্গাইল এলাকাতেও সংক্রমণ ঘটে ভাইরাসটির।
পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় গত ২২ জুন থেকে ঢাকাকে ঘিরে রাখা সাত জেলায় যান চলাচল বন্ধ করে রাজধানীকে বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এতেও কাজ না হওয়ায় ১ জুলাই থেকে শুরু হয় শাটডাউন। সরকার জনগণের চলাচল রোধে এবার যে কঠোর, তার প্রমাণ মেলে সেনাবাহিনী মোতায়েনেই।
অকারণে বাড়ির বাইরে আসায় প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণ জরিমানা আদায় করা হচ্ছে; কেবল ঢাকায় আটক করা হচ্ছে কয়েকশ মানুষকে। শাটডাউন প্রথমে সাত দিনের জন্য দেয়া হলেও পরে তা বাড়ানো হয়েছে আরও সাত দিন।
আরও পড়ুন:ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় দেশে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও এক হাজার ৩৩ জন ডেঙ্গু রোগী।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৯৬ জন। তাদের মধ্যে ৯৮ জন পুরুষ ও ৯৮ জন নারী। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৮২২ জন।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী। এই সময়ে ৯৩৯ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই মৃত্যুর পাশাপাশি ডেঙ্গ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৮১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মঙ্গলবার দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়কালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৮১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৯৩ জন। তাদের মধ্যে ৯৬ জন পুরুষ ও ৯৭ জন নারী। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৭৮৯ জন।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও দুজন নারী। এই সময়ে ৯৭১ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
দাবি আদায়ে ফের আন্দোলনে নেমেছেন নার্স ও মিডওয়াইফারি শিক্ষার্থীসহ চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরাসহ চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মুমুর্ষু রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
এক দফা দাবিতে মঙ্গলবার চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা। লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামীকাল বুধবার তারা এক ঘণ্টা বাড়িয়ে পাঁচ ঘণ্টা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
নার্স ও মিডওয়াইফারি শিক্ষার্থীসহ চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আগামীকাল বুধবার পাঁচ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করবেন।
তবে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী এ সময় জরুরি বিভাগ, ইমারজেন্সি ওটি, ডায়ালাইসিস, আইসিইউ, সিসিইউ, পিআইসিইউ এবং এইচডিইউ এই কর্মবিরতি কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদের আহ্বায়ক ডা. মো. শরিফুল ইসলাম মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এক দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। আমাদের দাবি হলো- নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল থেকে সব ক্যাডার প্রত্যাহার করে অধিদপ্তরে মহাপরিচালক, পরিচালক, কাউন্সিলে প্রেসিডেন্ট ও রেজিস্ট্রার পদে যোগ্য ও অভিজ্ঞ নার্সদের পদায়ন করতে হবে।’
শরিফুল ইসলাম বলেন, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে নার্স ও মিডওয়াইফ শিক্ষার্থীরা রোগীর সেবা অক্ষুণ্ন রেখে পরিষদ ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে আসছি। ইতোমধ্যে আমরা আমাদের দাবির বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি।
‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্যে ছিল পতাকা মিছিল, সংবাদ সম্মেলন, প্রতীকী কর্মবিরতি, লাল ব্যাজ ধারণ ও তিন ঘণ্টার কর্মবিরতি। ওইদিনের কর্মবিরতি চলাকালে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার আশ্বাসে আমরা পরবর্তী কর্মবিরতি প্রত্যাহার করি।
‘উপদেষ্টা বলেছিলেন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবেন। এর ধারাবাহিকতায় নার্সেস কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার পদে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সাময়িকভাবে একজন অবসরপ্রাপ্ত নার্সকে পদায়ন করে, যা আমাদের এক দফা দাবির একটি অংশ মাত্র।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (উপ-সচিব, প্রশাসন) মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনকে অধিদপ্তর থেকে প্রত্যাহার করে মহাপরিচালক পদে এখনও যোগ্য ও অভিজ্ঞ নার্স পদায়ন করা হয়নি। তাই আমরা আজ এক দফা দাবি পূরণে সংস্কার পরিষদ ঘোষিত কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছি।’
আরও পড়ুন:ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই মৃত্যুর পাশাপাশি ডেঙ্গ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ২২৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে রোববার দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়কালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ২২৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
চলতি বছরে এ নিয়ে ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৮৬ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৫৯০ জন।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া চারজনের মধ্যে দুজন ঢাকার। এছাড়া একজন রাজশাহী ও একজন খুলনা বিভাগের।
এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুহীন একটি দিন পার করার পরদিনই এই রোগে মারা গেলেন আরও পাঁচজন। সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এই মৃত্যুর পাশাপাশি হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৯২৭ ডেঙ্গু রোগী।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৯২৭ জন রোগী।
মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও দুইজন নারী। এই সময়ে ৭১৬ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
সবশেষ মৃত্যু নিয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৮২ জনের। তাদের মধ্যে ৮৯ জন পুরুষ ও ৯৩ জন নারী।
এ ছাড়া একই সময়কালে দেশে ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ২৬৫ জন।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় এই মৃত্যুর পাশাপাশ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ১৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে বুধবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৭৬, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫০, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১৬, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২২৫, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৬৬ ও খুলনা বিভাগে ৯২ জন রয়েছেন।
এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ৩৩, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৪, রংপুর বিভাগে ৩১ ও সিলেট বিভাগে ৪ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে বুধবার পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৩৩ হাজার ৯৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৭৪ জনের।
প্রসঙ্গত, গত ২০২৩ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান এক হাজার ৭০৫ জন।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১ হাজার ১৪৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মঙ্গলবার বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যুর পাশাপাশি এই সময়কালে হাসপাতালে ১ হাজার ১৪৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট ১৬৬ জনের মৃত্যু হলো। আর সারা দেশে মোট ৩২ হাজার ৮২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৮ হাজার ১১৩ জন ঢাকার বাইরে। বাকিরা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তিন হাজার ৪৯৫ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন, যাদের মধ্যে এক হাজার ৭৩৬ জন ঢাকার বাইরের।
মন্তব্য