দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ ধরা পড়েছে ১১ হাজার ৫২৫ জনের শরীরে, যা এক দিনের হিসাবে সর্বোচ্চ। এই সময়ে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৬৩ জনের।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দেশে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯ লাখ ৬৬ হাজার ৪০৬ জনের দেহে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৩৯২ জনের।
২৪ ঘণ্টায় দেশের ৬০৫টি ল্যাবে ৩৬ হাজার ৩৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। মোট শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ২২ শতাংশ।
গত এক দিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৪৩৩ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ জন। সুস্থতার হার ৮৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৯৮ জন, নারী ৬৫ জন। তাদের মধ্যে বিশোর্ধ্ব ৫, ত্রিশোর্ধ্ব ১১, চল্লিশোর্ধ্ব ২৭, পঞ্চাশোর্ধ্ব ২৯ ও ষাটোর্ধ্ব ৯১ জন।
বিভাগ অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। এরপরই রয়েছে ঢাকা বিভাগ, ৪৫ জন। এ ছাড়া রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগে ২৪ জন করে, বরিশালে ৬ জন, সিলেটে ২ জন, রংপুরে ১১ ও ময়মনসিংহে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছরের ৮ মার্চ। ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তথ্য প্রকাশ করা হয়। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের কথা ঘোষণা করে।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত বছরের ৪ জানুয়ারি থেকেই দেশের বিমানবন্দরসহ সব স্থল ও নৌবন্দরে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং শুরু করে। ওই বছরের ৪ মার্চ সমন্বিত করোনা কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা নগরীর অন্তত ১৫টি পয়েন্টে প্রতিদিন বেচাকেনা হচ্ছে হাজার হাজার কেজি তরমুজ। ফলে মৌসুমের বাইরে তরমুজের স্বাদ মেলালেও কিছুটা ভোগান্তি বাড়ছে ফুটপাতে যাতায়াতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব তরমুজ এসেছে রাজশাহীর কানসাট এলাকা থেকে। মাচা পদ্ধতিতে অসময়ে বাম্পার ফলন হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে এবং বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। রাজশাহী থেকে কেজি প্রতি ৩০–৪০ টাকায় পাইকারি দরে বিক্রি হলেও কুমিল্লা শহরে তা ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে বেশি দামে।
প্রতিদিন প্রায় ৪০–৫০ জন খুচরা ব্যবসায়ী এসব তরমুজ বিক্রি করছেন। অপরদিকে নগরবাসীকে পড়তে হচ্ছে কিছুটা ভোগান্তিতে। রাস্তাজুড়ে বেনগাড়ি দখল করায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ফলে সাধারণ মানুষের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিচ্ছে।
তরমুজের উপকারিতা নিয়ে কৃষিবিদ হোসেন মিয়া বলেন, “তরমুজে ভিটামিন এ, সি, বি-৫, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। শরীর ঠান্ডা রাখা, হজমে সহায়তা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তরমুজ কার্যকর।”
তবে নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, এলোমেলোভাবে এসব বেনগাড়ি রাস্তায় বসানোর ফলে শহরের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
পরিবেশবিদ নাসির উদ্দীন বলেন, “ছোট শহরে এমন দখলদারিত্ব অচলাবস্থা তৈরি করছে। সিটি কর্পোরেশনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের পথ তৈরি করা।”
অন্যদিকে মৌসুম ছাড়া তরমুজের স্বাদ পেয়ে আনন্দিত কিছু ক্রেতা, তবে তারই পাশাপাশি যানজট ও হয়ে উঠেছে নতুন দুশ্চিন্তা।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল কর্তৃক নিয়মবহির্ভূতভাবে ঝিনাইদহ জেলা কমান্ড অনুমোদনের বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলার মুক্তিযোদ্ধারা। শনিবার ঝিনাইদহ আইনজীবী সমিতির ভবনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ঝিনাইদহ শহীদ জিয়াউর রহমান ল কলেজের অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা এস এম মশিয়ুর রহমান। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল আলীম, গোলাম মোস্তফা লোটন, রেজাউল ইসলাম, ইসরাইল হোসেন, সিদ্দিকুর রহমান ও লিয়াকত আলীসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা উপিস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, দেশের সরকার পরিবর্তন হলেও ‘দেশকে স্বাধীন করার জন্য জীবন বাজি রাখা মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।
অভিযোগ করা হয়, গত ৫ জুলাই কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভায় স্পষ্ট সিদ্ধান্ত হয়, জেলা কমান্ড গঠন করতে হবে উচ্চতর ট্রেনিংপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে। যেখানে একাধিক কমিটি থাকবে, সেখানে সমঝোতা অথবা কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠনের কথা বলা হয়।
এছাড়া বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কিংবা অবৈধ সুবিধাভোগীদের বাদ দেওয়ার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করে ঝিনাইদহ জেলা কমান্ড গঠিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
অভিযোগে দাবি করা হয়, অনুমোদিত কমিটির ১নং আহ্বায়ক, ২নং যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব এই তিনজনের কেউই উচ্চতর ট্রেনিংপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা নন। বরং তারা বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং অবৈধ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন।
এছাড়া জেলার পক্ষ থেকে চারটি কমিটি জমা দেওয়া হলেও প্রস্তাবিত তিন কমিটির কাউকে না জানিয়ে গোপনে একটি প্যানেল থেকে কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ঘোষিত কমিটির আহ্বায়কের ছেলে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের নিয়ন্ত্রিত মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব। উপরন্তু ঘোষিত কমিটির ১১ সদস্যের মধ্যে ছয়জনই পদত্যাগ করেছেন, ফলে গঠিত ওই কমিটির কোনো বৈধতাই নেই।
দারিদ্র্যবিমোচন ও মানব উন্নয়নের লক্ষ্যে জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্র পবা প্রকল্পের অধীনে দ্বিতীয় জাকাত তহবিল হস্তান্তর করা হয়েছে। নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম)। শনিবার পবার ভেড়াপাড়ায় নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির মসজিদে এই জাকাত তহবিল হস্তান্তর করা হয়।
সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেট (সিজেডএম) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭১টি জীবিকা উন্নয়ন প্রকল্প-জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্র পবা, রাজশাহী প্রকল্পের অধীনে দ্বিতীয় দফায় ৩৯৮টি মুস্তাহিক পরিবারের মাঝে মোট ৪৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকার জাকাত তহবিল হস্তান্তর উপলক্ষে এক অনাড়ম্বর তহবিল হস্তান্তর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন মো. মিজানুর রহমান, সিজেডএমের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এরিয়া ম্যানেজার। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জীবিকা পবা প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. আব্দুল ওয়াদুদ।
পরে প্রকল্পের চারজন সদস্য তাদের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি ব্যক্ত করেন। সদস্যদের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি শোনার পর জীবিকা পবা প্রকল্পের সামগ্রিক কার্যক্রম নিয়ে বক্তব্য রাখেন সিজেডএমের জীবিকা বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক জনাব এনামুল হক।
এ সময় সিজেডএমের জীবিকা প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন সিজেডএমের সম্মানিত হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, কর্নেল (অব.) জাকারিয়া হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ মো. আমিনুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজর চেয়ারম্যান জাহান বকস মণ্ডল। তিনি বলেন, আপনাদের জন্য আমরা কাজ করছি। শুধু জাকাত দিয়েই আমরা সহযোগিতা করি না। এর পাশাপাশি মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার ছাত্র, চিকিৎসা, দরিদ্র পরিবারের ছেলে-মেয়েদের বিবাহের ব্যবস্থাসহ নারীদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলার জন্য কর্মসংস্থান তৈরিতে কাজ করছি আমরা।
সংস্কারের অভাবে উত্তর চট্টগ্রামের ৭নং রাউজান ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ মোহছেন আলী সড়কের বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু পানিতে ডুবে যায় রাস্তা। পানি দিনের পর দিন জমে থাকায় তিনটি ইউনিয়নের হাজারও মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ছে। রাউজান-নোয়াপাড়া সড়ক সেকশন ২-এর উত্তর গুজরা আদ্যপীট মন্দিরের উত্তর প্রাচীরঘেঁষে পূর্বদিকে মোহছেন আলী জামে মসজিদ ও ফোরকানিয়া মাদ্রাসা পর্যন্ত বিস্তৃত ব্যস্ততম এ সড়কটি রাউজান সদর ইউনিয়নের মঙ্গলখালী গ্রামের সঙ্গে সংযুক্ত। এটি পূর্বগুজরা, কদলপুর ও রাউজান সদর ইউনিয়নের মানুষের জন্য বিকল্প ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাপড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে এ সড়ক দিয়ে। বিকল্প এ সড়ক ব্যবহার করে স্থানীয়রা রাউজান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রমজান আলী হাট, উত্তর গুজরা উচ্চবিদ্যালয়, আর্য্যমৈত্রীয় হাইস্কুল, আদ্যপীঠ মন্দিরসহ নানা স্থানে যাতায়াত করে। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় মাসের মধ্যে রাস্তা আবার নষ্ট হয়ে যায়। এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
উত্তর গুজরা গ্রামের বাসিন্দা মোস্তফা কামাল ও বেলাল হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টি আর বন্যার পানিতে পুরোনো ইট-সলিং ওঠে গিয়ে অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। প্রায়ই ট্যাক্সি-মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা ঘটে। শিশুদের স্কুলে পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে। রোগীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এলাকাবাসীর দাবি, সড়কটি কার্পেটিং করে সংস্কার করা হলে দুর্ভোগ লাঘব হবে। তারা উপজেলা কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।’
রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, ‘রাউজানে সে সমস্ত সড়ক অনুন্নত ও চলাচলের জনদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সেগুলোর তালিকা আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেছি, বরাদ্দ অনুমোদন হলে শীঘ্রই উন্নয়নের কাজ শুরু হবে।’
বড়াল ব্রিজ স্টেশনে যাত্রাবিরতি শেষে ট্রেন থেকে যাত্রীদের ওঠানামা শেষ হয়নি। নির্ধারিত যাত্রাবিরতির পূর্বেই ট্রেনপরিচালকের পতাকার সংকেতে ট্রেনটি তার গন্তব্যের অভিমুখে যাত্রা আরম্ভ করে।
এ সময় ট্রেন থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে সুফিয়া বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূ ট্রেনের নিচে পড়ে গিয়ে হাত কেটে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ঘটনার বিলম্বে সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ঈশ্বরদী-ঢাকা রেলপথে পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌর সদরে অবস্থিত বড়াল ব্রিজ রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় যাত্রী সাধারণ চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
হাত বিচ্ছিন্ন হওয়া ট্রেনযাত্রী সুফিয়া বেগম পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর উপজেলার বেরহলিয়া গ্রামের সেনা সদস্য মাসুদ রানার স্ত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ট্রেনযাত্রীদের অভিযোগ, প্রায় ৪০ মিনিট বিলম্বে ঢাকা-রাজশাহীগামী ৭৬৯নং আপ আন্তঃনগর ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন বড়াল ব্রিজ স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়। ট্রেনটি স্টেশনে ৩-৪ মিনিট যাত্রাবিরতি দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ঘটনার দিন ট্রেনটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত যাত্রাবিরতি না দিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা আরম্ভ করেছিল।এ কারণে ট্রেন থেকে যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে নামতে চেষ্টা করে।এ সময় চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে সুফিয়া বেগম ট্রেনের নিচে পড়ে যায়।
তবে সৌভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও তার হাত কাটা পড়ে ট্রেনের চাকায়। ঘটনার পরপরই স্টেশনের যাত্রীসাধারণ দ্রুত ওই নারীকে উদ্ধার করে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা তাকে অন্যত্র চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করেন।
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার আল মামুনকে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে তিনি ঊর্ধ্বতন দপ্তরে বিষয়টি অবহিত করেন।
ট্রেনটি নির্ধারিত যাত্রাবিরতির পূর্বেই গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে স্টেশন মাস্টার আল মামুন বলেন, বড়াল ব্রিজ স্টেশনে সিগন্যাল নেই।
এখানে ট্রেন পরিচালক ও ট্টেনচালক নিজ দায়িত্বে যাত্রা বিরতির পর গন্তব্যের দিকে যাত্রা করে থাকে। ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার পরে নামতে গিয়ে ওই যাত্রীর হাত কাটা পরেছে বলে তিনি স্বীকার করেছেন।
শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। একসময় গ্রামবাংলার খালে, বিলে-ঝিলে, পুকুরের পানিতে, নিচু জমিতে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মাত শাপলা-শালুক ও ড্যাপ নামের ফুল। নিজেদের সৌন্দর্য মেলে ধরে ফুটে থাকত এ ফুল। কালের বিবর্তনে আর উপযুক্ত পরিচর্যার অভাবে যশোরের কেশবপুরে আজ নিজের অস্তিত্ব হারাতে বসেছে জাতীয় ফুল শাপলা। স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, ফসলি জমিতে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার, অপরিকল্পিতভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ, খাল দখল ও সংস্কারের অভাবে বর্ষাকালে ওই অঞ্চলে এখন আর তেমন পানি হয় না বলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে জাতীয় ফুল শাপলা। ফুলটি পুরোপুরি বিলুপ্ত হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের।
জানা গেছে, শাপলা সপুষ্পক উদ্ভিদ পরিবারের এক প্রকার জলজ উদ্ভিদ। এ পরিবারভুক্ত সকল উদ্ভিদই শাপলা নামে পরিচিত। সাদা শাপলা ফুল বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এই ফুল সাধারণত ভারত উপমহাদেশে দেখা যায়। হাওর-বিল ও দীঘিতে এটি বেশি ফুটে। শাপলা ফুল রাতে পূর্ণাঙ্গভাবে ফুটে। এরা দিনের বেলায় কিছুটা সংকুচিত হয়। শাপলা আসলে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এক ধরনের ফুল যার কোনো রকম পরিচর্যা ছাড়াই বিলে-ঝিলে জন্ম নেয়। সাধারণত আবদ্ধ অগভীর জলাশয়, খাল-বিলে জন্মে থাকে ফুলটি। শাপলা ফুল কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে। যার মধ্যে সাদা ফুলবিশিষ্ট শাপলাটি একসময় গ্রামবাংলায় অনেকেই সবজি হিসেবে ব্যবহার করতেন। বহু ঔষধি গুণও রয়েছে এই শাপলায়। হজমের সমস্যায় এই শাপলা ফুল ব্যবহার করা হয়। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য এই উদ্ভিদ উপকারী। অতিরিক্ত পিপাসা নিবারক ও আমাশা রোধে ব্যবহার করা হয় এই উদ্ভিদ। সাধারণত ওষুধের জন্য এই উদ্ভিদের ফুল ও বীজ ব্যবহার করা হয়। এই উদ্ভিদের বীজ ভেজে খাওয়া হয়। শাপলা ফুলের গোড়ায় পানির নিচে একপ্রকার আলুর মতো কন্দ থাকে, যা রান্না করে খাওয়া যায়। একসময় গ্রামবাংলায় এই ফুল বিভিন্ন জলাশয়ে বর্ষাকালে অহরহ দেখা যেত। আজ তা বিলুপ্তির পথে।
স্থানীয় বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘একসময় এই জনপদে বর্ষা মৌসুমে শুরুতে সকালে বিভিন্ন স্থানে শাপলার বাহারি রূপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যেত। এসব দৃশ্য চোখে না দেখলে বোঝানো যাবে না। অনেকে আবার শাপলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।’
স্কুল শিক্ষক আব্দুল হালিম বলেন, ‘বর্তমান সভ্যতার ছোঁয়ায় ফসলি জমি ভরাট করে ঘরবাড়ি নির্মাণ, পুকুর খনন, জলাশয়ে কীটনাশক ব্যবহারের পরিমাণ বেড়ে গেছে। যার কারণে শাপলা দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। একসময় বর্ষাকালে এই অঞ্চলের ফসলি মাঠে পানি জমত, আর ওই জমা পানিতে জন্মাতো নানা প্রজাতির শাপলা। এখন আর তেমন চোখে পড়ে না এ দেশের জাতীয় ফুলটি। এ ফুলের সঙ্গে বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্য আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। ফসলি মাঠে, ডোবা, পুকুর ও জলাশয়ে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার ও গ্রামীণ খালের নাব্যতা হারানোর কারণে জাতীয় ফুল শাপলা দিন দিন বিলুপ্ত হতে চলেছে। এ ফুলের অস্তিত্ব ধরে রাখতে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। বিলুপ্ত প্রায় জাতীয় ফুলটি সম্মিলিতভাবে রক্ষা করার দায়িত্ব এই অঞ্চলের প্রত্যেকটি মানুষের।
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে টানা পাঁচ দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর শনিবার সকাল থেকে দুদেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় শুরু হয়েছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হওয়ায় দুবন্দরে কর্মচঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চালু হওয়ার কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন বেনাপোল কাস্টমস এর কার্গো সুপারিনটেনডেন্ট আবু তাহের ।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজায় ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত পেট্রাপোল - বেনাপোল বন্দর দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। ছুটি শেষে আজ শনিবার সকাল থেকে দুই দেশে মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। কর্মচঞ্চলতা ফিরে এসেছে বান্দর এলাকায়।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, পূজার ছুটি শেষে আজ সকাল থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় চালু হয়েছে। তবে পেট্রাপোল বন্দরে সিএন্ডএফ অফিসের স্টাফদের উপস্থিতি কম থাকায় আমদানী রপ্তানি বাণিজ্যের গতি অন্যান্য দিনের চেয়ে কম।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. শামীম হোসেন বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে পাঁচ দিন সরকারি ছুটি ছিল । ৫ দিন সরকারি ছুটি থাকার কারণে এ পাঁচ দিন বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। ছুটি শেষে শনিবার সকাল থেকে দুদেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় চালু হয়েছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চালু হওয়ায় কর্মচঞ্চলতা ফিরে এসেছে উভয় বন্দর এলাকায়। তবে বন্ধের এ কয়দিন বেনাপোল কাস্টমস হাউস ও বেনাপোল বন্দর সীমিত পরিসরে কার্যক্রম চালু রেখে শুল্কায়ন কার্যক্রম চালু সহ ও বন্দরে লোড আনলোডের কার্যক্রম সীমিত পরিসরে হয়েছে।
মন্তব্য