উপহার হিসেবে চীন থেকে আসা টিকা দিয়েই আবার টিকা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী শনিবার শুরু হবে এই কার্যক্রম। তবে সেটি বড় পরিসরে নয়।
সরকারের প্রত্যাশা, আগামী জুলাইয়ের মধ্যে টিকার জোগান নিশ্চিত হলে বড় পরিসরে গণটিকা কার্যক্রম শুরু করা হবে।
সিনোফার্মের টিকায় অগ্রাধিকার পাবেন প্রবাসী কর্মীরা। যারা বিভিন্ন দেশ থেকে করোনার সময় দেশে এসে আর বিদেশ যেতে পারছেন না, কিংবা নতুন করেই কাজের উদ্দেশে বিদেশে যেতে পারছেন না তাদের অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেছে সরকার।
গত রোববার সন্ধ্যায় উপহার হিসেবে চীন থেকে সিনোফার্মের আরও ৬ লাখ ডোজ টিকা দেশে পৌঁছায়। এর আগে প্রথম দফায় ১২ মে দেশে ৫ লাখ ডোজ টিকা পাঠায় চীন। আর ৩১ মে কোভ্যাক্স থেকে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা পায় বাংলাদেশ। এসব দিয়েই শুরু হচ্ছে টিকা কার্যক্রম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সিনোফার্মের টিকা প্রদান করা হবে দেশের সব জেলায়। প্রতি জেলাতে মাত্র একটি টিকাদান কেন্দ্রে দুটি করে বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে এসব টিকা।
ঢাকার মধ্যে সরকারি চারটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি করে টিকাদান কেন্দ্রে ও দুটি করে বুথ করা হয়েছে। বিশেষ বিবেচনায় মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের এই টিকা দেয়া হচ্ছে।
যেসব জেলায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নেই, সেসব জেলায় সিভিল সার্জন ও করোনা টিকাদান কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে জেলা সদর হাসপাতাল বা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের মধ্যে যেকোনো একটি কেন্দ্র নির্বাচন করে টিকাদান কেন্দ্র ঘোষণা দেয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্যসচিব ডা. শামসুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শনিবার আবার গণটিকা শুরু হচ্ছে। ঢাকার চার হাসপাতালে ২৫ মে চীনের তৈরি টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। যে কারণে এবার অনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের কোনো কর্মসূচি থাকছে না।
‘টিকা দেয়া হবে স্বল্প পরিসরে। তবে দেশের সব জেলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই টিকা দেয়া হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক টিকাদান নিয়ে বলেন, উপহার হিসেবে চীন থেকে মোট ১১ লাখ ভ্যাকসিন এসেছে। সেগুলো দিয়েই দ্বিতীয় দফায় গণটিকা কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে সরকার।
‘এগুলোকে দেয়ার ব্যবস্থা শুরু করছি আমরা ১৯ তারিখ থেকে। টিকা কার্যক্রম আবার শুরু হচ্ছে। আমরা আশা করি, ৫ লাখ লোককে এই টিকা দেব। দ্বিতীয় ডোজ হাতে রেখে দেয়ার পরিকল্পনা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।‘
যারা পাচ্ছেন সিনোফার্মের টিকা
সঠিক সময়ে টিকা না পাওয়ায় বিদেশ যেতে পারছেন না দেশের লাখো প্রবাসী কর্মী। এমন বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিশেষ ব্যবস্থায় এবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রবাসী কর্মীদের টিকা দিয়ে কর্মস্থলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে গমনেচ্ছু বাংলাদেশি কর্মীদের টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে বয়স কমানোর চিন্তাভাবনাও করছে সরকার।
এ ছাড়া অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাবেন সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশ সদস্য, সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীরা, নার্স, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থী, সরকারি মেগা প্রকল্পে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী এ টিকা পাবেন।
এ ছাড়া করোনায় মৃতদেহ সৎকারে নিয়োজিত ব্যক্তি, দেশে বসবাসরত চীনা নাগরিক ও এর বাইরেও বিদেশি নাগরিকরা সিনোফার্মের টিকায় অগ্রাধিকার পাবেন।
আরও পড়ুন:রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, এসব নির্বাচন নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই, ভালোভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছি। এজন্য আপনাদের (সাংবাদিক) সাহায্য ও সহযোগিতা দরকার।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে রাকসু ও চাকসু নির্বাচন-২০২৫ উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ক সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি রাকসু ও চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজ তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা দেশের সবচেয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত, শুধু দেশেই না বিদেশেও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত । যারা ভোট দেবে তারাও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত।
তিনি বলেন, ‘তাদের অভিজ্ঞতা আজ শেয়ার করলাম। যেহেতু আমাদের একটা জাতীয় নির্বাচন আছে ফেব্রুয়ারিতে, এই নির্বাচনগুলো দেখে আমাদের কিছু অভিজ্ঞতা হচ্ছে। সেটা আমরা জাতীয় নির্বাচনে কীভাবে প্রয়োগ করতে পারবো সেজন্য আজকে বসেছিলাম।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তারা আজ ভালো ভালো সাজেশন দিয়ে গেছে। সেই সাজেশন আমরা ভবিষ্যতে কাজে লাগাবো। একইসঙ্গে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় তাদেরও উপকার হয়েছে। যেহেতু দুইটা নির্বাচন হয়েছে। সেখানে নির্বাচনে কী করতে হবে, ছোটখাটো ভুল-ত্রুটি থাকলে সেগুলো কীভাবে সমাধান করা হবে, এসব নিয়ে বিস্তারিত কথা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সভায় তারা কোনো ধরনের শঙ্কার কথা জানায়নি।
আজকের সভায় কি ধরনের সাজেশন এসেছে-এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে তারা বলেছে- কতগুলো সেন্টার হওয়া দরকার, ভোট গণনা কীভাবে হবে, কালি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, এসব নিয়ে কথা হয়েছে। দ্রুত ফল ঘোষণার জন্যও কি ব্যবস্থা নেয়া যায়, আলোচনা হয়েছে। ভোটারদের ছবিযুক্ত আইডি কার্ড ও ভোটার তালিকা যেন স্বচ্ছ থাকে এসব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার বলেন, রাকসু ও চাকসু নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়, এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ দুটি নির্বাচন থেকে অনেক কিছু শনাক্ত হয়েছে। এসব নির্বাচনে কোন বিষয়গুলো কাজ করেছে বা কোন বিষয়গুলো কাজ করেনি, তার একটি ধারণা পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে আমরা এখানে এসেছি। আজকের সভায় ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এ দুটি নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে। ভালো নির্বাচন হবে বলে আশা করছি।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পবিত্র রমজানের কারণে ২০২৬ সালের অমর একুশে বইমেলা চলতি বছর ১৭ ডিসেম্বর শুরু হবে। মাসব্যাপী এই মেলা শেষ হবে ১৭ জানুয়ারি।
আজ বিকেলে বাংলা একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে অমর একুশে বইমেলা সংক্রান্ত এক সভায় এ তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন, সংস্কৃতি সচিব মো. মফিদুর রহমান।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, একাডেমির সচিব, পরিচালকবৃন্দ এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির প্রতিনিধিবৃন্দ।
সোনালী আঁশ পাটের আবাদে কয়েক বছর ধরে চাষিরা লোকসানে পড়লেও এ বছর দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মূল্য না পাওয়া, মানসম্মত আঁশ সংগ্রহের প্রতিবন্ধকতা এবং রপ্তানি বাজার সংকটের কারণে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়ই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় ১৭ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকেরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন। কিন্তু উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ও আঁশের মানহানি নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তা থামছে না।
কৃষকেরা জানান, মুক্ত জলাশয়ের অভাবে পাট জাগ দিতে হচ্ছে ডোবা বা পুকুরের মতো বদ্ধ জলাশয়ে। এতে আঁশের মান কমে যাচ্ছে। রঙের পার্থক্য ও আঁশের তারতম্যের কারণে বাজারে সবসময় কম দাম পান তারা। ফলে ভালো ফলনের আশার মধ্যেও শংকা রয়েছে ন্যায্যমূল্য নিয়ে।
সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের কৃষক নিজাম উদ্দীন তিন বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এখনও এক বিঘার পাটও কাটতে পারিনি। শ্রমিক মজুরি জনপ্রতি ৬০০ টাকা। বাজারে এক মন শুকনো পাটের দাম ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার পাঁচশ টাকা। কৃত্রিম উপায়ে জাগ দিতে গেলে জমিতে পলিথিন বিছাতে হয়, শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে পানি তুলতে হয়। এত খরচ করলে বিক্রির টাকা দিয়ে খরচই ওঠে না। তাই নদীতে জাগ দেওয়ার অনুমতি চাই।’
তেতুলবাড়িয়া গ্রামের কৃষক জিয়াউল হকও একই সঙ্কটে আছেন। চার বিঘা জমিতে পাট করেছেন, পাশে চার কাটা জমিতে আমন ধানের চারা রয়েছে। তিনি জানান, ‘সময়মতো পাট কেটে জাগ দিতে না পারলে ধান রোপণ সম্ভব হবে না। আশপাশের পুকুরে পর্যাপ্ত পানি নেই। তাই আমরা নদীতে জাগ দেওয়ার অনুমতি চাই।’
কৃষকেরা অভিযোগ করেছেন, মানসম্মত পাট উৎপাদনে কৃষি বিভাগের তেমন কোনো কার্যকর ভূমিকা নেই। মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা না পাওয়ায় তারা সমস্যার সমাধান খুঁজে পাচ্ছেন না। কৃষকের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও লোকসানের শঙ্কায়।
মেহেরপুরের পাট ব্যবসায়ী কাউছার আলী জানান, ‘গত বছরের পাট বিক্রি করতে না পেরে গোডাউনে ভর্তি করে রেখেছি। ভারত কাঁচাপাট আমদানি বন্ধ করায় রপ্তানির পথ বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন বাজার তৈরি না হলে আমাদের বড় ক্ষতি হবে।
আরেক ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী বলেন, ‘কৃষকেরা এবছর তুলনামূলক ভালো দাম পাচ্ছেন। তবে আমরা গত বছরের তুলনায় বেশি দামে পাট কিনতে বাধ্য হচ্ছি। যদি নতুন বাজার তৈরি না হয়, কৃষকেরা এ চাষ থেকে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়বেন।’
জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা আ ক ম হারুন কৃষকদের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘নদী ব্যবহারে কোনো বাধা নেই। কৃষকদের মানসম্মত পাট উৎপাদনে আমরা সহযোগিতা করছি এবং বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।’
শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে পঞ্চগড় সদর উপজেলার মীরগড়ের রসাল মিষ্টান্ন টোপা। খেতে যতটা সুস্বাদু তেমনি স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ হওয়ায় বেড়েই চলেছে এর চাহিদা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় টোপা ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়। রংপুর বিভাগের উত্তরের জেলা হিমালয় কণ্যা পঞ্চগড়। সদর উপজেলার ৮নং ধাক্কামারা ইউনিয়নের মিরগড় বাজার এই জেলার ঐতিহ্যবাহী টোপা তৈরি করে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোজন রসিকরা ভীড় জমান। বিশেষ করে শুক্রবার ও সন্ধার পরে জেলার অন্যান্য জায়গা থেকে খাওয়ার জন্য আসেন অনেকেই। ঐতিহ্যবাহী টোপা প্রতি পিচ মূল্য ১০ টাকা করে। সেখানে চিনি ও গুড়ের তৈরি দুই ধরনের টোপা পাওয়া যায়। টোপা ব্যবসায়ী এনামুল সাথে কথা বললে তিনি জানান, ‘আমি এই ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছি দীর্ঘদিন থেকে। অন্য কোথাও টোপা তৈরি হয় না শুধু আমাদের এই মীরগড় বাজারের তৈরি হয়, তাই বিভিন্ন জায়গা থেকে এই টোপা খেতে আসেন ভোজন রসিকরা।’
পর্যটক সুকন্যা দে পুজা তিনি জানান, ‘আমি ঠাকুরগাঁও থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে এসেছি এরপর জানতে পারলাম মীরগড় বাজারে এই জেলার ঐতিহ্যবাহী টোপা খেতে সুস্বাদু তাই টোপা খেতে এসেছি আমিসহ আমার পরিবারের সদস্যরা।’ ক্রেতা মো. ওমর ফারুক বাপ্পির সাথে কথা বললে তিনি জানান, পৌর শহর থেকে টোপা খেতে এসেছি, সময় পেলেই টোপা খেতে এই বাজারে আসি।’
ময়মনসিংহে স্বাস্থ্যসেবাকে আরও সহজলভ্য করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যসেবা খাতে নিয়োজিত চিকিৎসক, ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক মালিকদের নিয়ে ‘স্বাস্থ্য ইউনিটি’ নামের সংগঠন করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে নগরীর চরপাড়া এলাকায় সংগঠনটির প্রথম মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি শামীম আহম্মেদের সভাপতিত্বে জমকালো এই আয়োজনের শুরুতেই অতিথিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির উপদেষ্টা মনসুর আলম চন্দন। এছাড়া ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাবেক বিভাগীয় সম্পাদক এম.এ মোতালেবসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন। নেতারা বলেন, ‘স্বাস্থ্য ইউনিটি’ শুধু একটি সংগঠন নয়, বরং এটি হবে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন এবং অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর একটি বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সংগঠনটি ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আরও বলা হয়, সংগঠনটির লক্ষ্য একত্রে কাজ করা এবং সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবাকে আরও সহজলভ্য করা। এ জন্য সাংবাদিক, চিকিৎসক, ব্যবসায়ীসহ সবাইকে সাথে নিয়ে সংগঠনের নেতারা তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে চায়।
এ সময় সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা ও স্থানীয় বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা এখনও চলমান রয়েছে এবং এই আলোচনার মাধ্যমেই রাজনৈতিক মতভিন্নতার শান্তিপূর্ণ সমাধান আসবে।
ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েক দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য দলের বিক্ষোভ কর্মসূচি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে প্রেস সচিব ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা আশাবাদী যে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার মাধ্যমেই সবকিছুর সমাধান হবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম জানান, চলতি বছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেবেন। তিনি স্পষ্ট করেন, এই সফর বাংলাদেশের নির্বাচন কেন্দ্রিক কোনো মধ্যস্থতা বা আলোচনার জন্য নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে। তিনি বলেন, ‘তারা সরকারের অংশীদার হিসেবে এ ধরনের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে অংশ নিচ্ছেন।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের যৌথ মহড়া ‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫–৩থ-এর অংশ হিসেবে ইনক্যাপ সিরিমনি। বৃহস্পতিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের ওই কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় প্রধান অতিথি ছিলেন বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হক-এর এয়ার অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল হায়দার আব্দুল্লাহ। তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রতিবছর দেশের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন মহড়ায় অংশগ্রহণ করে। এ বছর বিদেশে বেশ কয়েকটি মহড়া সম্পন্ন হয়েছে, আর এটাই ছিল চলতি বছরের শেষ মহড়া। এ মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হলো দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি অর্জন করা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যসেবা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আমেরিকান বিমান বাহিনীর দেওয়া অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে অপারেশন থিয়েটারের টেবিল, অপারেশন লাইট, এয়ার কন্ডিশন, জেনারেটর, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্র এবং অপারেশন থিয়েটারের অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রী।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর মিশন কমান্ডার মেজর জুদাহ বলেন, ‘আমরা এ কার্যক্রমে বিশেষভাবে নারী ও শিশুস্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়েছি। এ অঞ্চলের মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুসেবা আরও উন্নত করতে এসব সরঞ্জাম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এ ধরনের মানবিক উদ্যোগের মাধ্যমে শুধু স্বাস্থ্যসেবা নয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্যে আনোয়ারার মতো একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে বেছে নেওয়া নিঃসন্দেহে স্থানীয় মানুষের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। এখানে স্বাস্থ্য অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিক সরঞ্জাম সংযোজনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবার মান উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে সাধারণ মানুষ দ্রুত ও কার্যকর চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র টিমের সিনিয়র সদস্য কার্নেল অ্যান্ড্রু ব্রি, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রতিনিধি মেজর গ্রিন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের সদস্যসহ দুদেশের বিমান বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য