রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২৪ ঘণ্টায় আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
ওই ছয়জনের মধ্যে দুইজন করোনায় মারা গেছেন। আর চারজন করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মৃতদের মধ্যে একজন রাজশাহী আর তিনজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের। এ ছাড়া নাটোরের একজন ও চুয়াডাঙ্গার একজন রয়েছেন।
গত ২৪ মে থেকে ৬ জুন পর্যন্ত ১৪ দিনে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিট ও আইসিউতে মারা গেলেন ১০৭ জন।
রামেকের করোনা ইউনিটে ২৩৫ জন রোগী ভর্তি আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩০ জন। এর মধ্যে আটজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের, ১৮ জন রাজশাহীর, তিনজন নওগাঁর ও একজন নাটোরের।
রামেক হাসপাতাল ল্যাব সূত্রে জানা যায়, শনিবার এই দুই ল্যাবে ৫৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৯২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এর মধ্যে রাজশাহীর ৩৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৮৪ জনের পজিটিভ এসেছে। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০৮ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে।
সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁয় কিছুদিন ধরে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। রাজশাহীর পাশের চাঁপাইনবাবগঞ্জে এই সংক্রমণ হার ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।
এই অবস্থায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসন গত ২৫ মে থেকে জেলাটিতে লকডাউন ঘোষণা করে। প্রথম সপ্তাহের লকডাউন শেষে সংক্রমণ কিছুটা কমলেও আবার বাড়ানো হয় লকডাউন। নতুন করে এক সপ্তাহ বাড়িয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউন দেয়া হয় ৭ জুন পর্যন্ত।
পাশের জেলা নওগাঁতেও সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে এই সময়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন নিয়ামতপুর ও নওগাঁ সদর উপজেলায় সাত দিনের লকডাউন দেয় গত বুধবার রাত থেকে।
সংক্রমণ রাজশাহীতেও বেড়েছে গত কয়েক দিনে। সেখানেও সংক্রমণের হার ৫০ শতাংশের আশপাশে। এই পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন:ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় নূতন বিদ্যুৎ (বাংলাদেশ) লিমিটেড ও এক্টিস এক্ট সিআইও এর আর্থিক সহায়তায় দরিদ্র্য ও সুবিধাবঞ্চিত ৪০টি পরিবারের মধ্যে নিরাপদ পানির অভাব দূর করে সুপেয় পানি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টিউবওয়েল সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
গত শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে বোরহানউদ্দিনের কুতুবা ইউনিয়নের দক্ষিণ কুতুবায় অবস্থিত নূতন বিদ্যুৎ (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রকল্প এলাকায় সুবিধাবঞ্চিত ৮টি পরিবারের মাঝে টিউবওয়েল হস্তান্তর করা হয়।
এছাড়া পর্যায়ক্রমে প্রোজেক্ট এর নিকটবর্তী এলাকার সাধারণ জনগণের সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে আরো ৩২টি টিউবওয়েল স্থাপন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
নূতন বিদ্যুৎ (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রতিনিধি জানান, তারা প্রজেক্ট আরম্ভলগ্ন হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি প্রজেক্টসংলগ্ন জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিভিন্নভাবে ভূমিকা রেখে আসছে এবং তারা ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখবে।
টিউবওয়েল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রনজিৎ চন্দ্র দাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রুপ সিইও (ব্রিজিন পাওয়ার), গ্রুপ সিওও (ব্রিজিন পাওয়ার), গ্রুপ টেকনিক্যাল হেড(ব্রিজিন পাওয়ার), প্রকল্প প্রধান (এনবিবিএল), ইএইচএস প্রধান(এনবিবিএল) ও এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিন প্রধান (এনবিবিএল)।
নীলফামারীর বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরের শহিদ ডা. সামসুল হক সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। এবড়ো-থেবড়ো খানা-খন্দে ভরপুর থাকার কারণে ছোট যানবাহনতো দূরে থাক সাধারণ পথচারীরাও চলতে চাইতেন না। একটুখানি বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জমে যেত পানি। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে সৃষ্টি হত জলজট। এমন অবস্থা বিরাজ করায় ওই সড়কের দুপাড়ে গড়ে ওঠা ব্যবসায়ীদের দোকানে ক্রেতারা যেতেন না কেনাকাটা করতে। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে কেউ মাড়াতে চাইতেন না ওই পথ। ফলে ব্যবসায়ীরা সারাবছর জুড়ে টানাপোড়েনে দিন কাটাতেন। বছরব্যাপি শুনতে হতো তাদের দুঃখের কথা।
নতুন করে রাস্তাটি নির্মাণ শুরু হওয়ায় এই সড়কের ব্যবসায়ীরা এখন আছেন বেশ ফুরফুরে মেজাজে। ১ হাজার ৮০০ ফুট (৫৯০ মিটার) লম্বা সড়কটি নির্মাণে দুভাগে বিভক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৬০ ফুট (১৫০ মিটার) করা হচ্ছে আর সিসি ঢালাই। রাস্তার এই অংশটিতে পানি জমে থাকে। যার জন্য কার্পেটিংয়ের সড়ক নির্মাণ করা হলে আয়ুষ্কাল হত কম। কিন্তু আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে রাস্তা করায় স্থায়িত্ব হবে অনেক বছর। অবশিষ্ট সড়কটির তথা ১ হাজার ৩১০ ফুট (৪৪০ মিটার) বিটুমিন দিয়ে করা হচ্ছে কার্পেটিং। সব মিলে ব্যয় হচ্ছে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। কাজটি করছে এসএম সাইফুল্লাহ রুবেলের মালিকানাধীন সাইকী বিল্ডার্স।
ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ, এহসান, শহিদুল, আকবর ও শাহিনের সঙ্গে। তারা বলেন অনেকদিন পর এ সড়কটি নির্মাণ হওয়ায় আমরা পৌর কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানাই। তারা আমাদের দাবি বিবেচনা করেছে। সড়কের নির্মাণ কাজের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করছেন সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল খালেক ও উপসহকারি প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম। তারা বলেন, জনগণের টাকার কোনো অপচয় যাতে না হয় সেই দায়িত্ববোধ নিয়েই কাজের মান রক্ষায় আমরা পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষে দেখভাল করছি।
রাউজানে অর্ধশতাধিক ইটভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরে আইন অমান্য করে জ্বালানি কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তন্মধ্যে প্রায় ৩০ টি ইট ভাটায় জ্বালানি হিসবে কয়লা ব্যবহারের ব্যবস্থা নিলেও ২০ ইটভাটায় স্তুপ করছে বন কাটা লাকড়ি। উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের মেলুয়া, হলদিয়া ইউনিয়নের বৃন্দাবন- বেনারস, পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ড ও রাউজান সদর ইউনিয়নের পূর্ব রাউজান এলাকা পরিদর্শন কালে এমন চিত্র দেখা যায়। অপরদিকে গত বছর (২০২৪ সাল) জেলা পরিষদের পরিবেশ লাইসেন্স ও অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়ে অবৈধভাবে কাঠ জ্বালিয়ে ইটভাটা পরিচালনার অভিযোগে গুড়িয়ে দেওয়া ইটভাটা পুনরায় চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পরিবেশ আইন তোয়াক্কা না করে রাবার বাগান ঘেঁষে কিছু কিছু ইটাভাটা পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইটভাটায় আগুন দেওয়ার আগে জ্বালানি কাঠ ব্যবহারকারী ও রাবার বাগান ঘেঁষে গড়ে উঠা ইটভাটা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদী সংগঠন। গত বছর পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক গুড়িয়ে দেওয়া ডাবুয়া ইউনিয়নের মেলুয়া এলাকার বিবিসি নামক একটি ইটভাটা পুনরায় চালু করেছে। ডাবুয়া রাবার বাগান ঘেঁষে এ ইটভাটা বাংলা চিমনি স্থাপন করে জ্বালানি হিসাবে স্তুপ করেছে কাঠ। বনের কাঠ উজার করে কেটে জ্বালানি স্তুপ জনমনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এই ইটভাটায় আগুন দেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ভাটার মালিক।
বিবিসি নামক ইটভাটার ম্যানেজার শাহাবুদ্দিন জানান, এই ইটভাটার মালিক সৈয়দ হোসেন কোম্পানি। এ ভাটায় কয়লার পরিবর্তে জ্বালানো হবে বন থেকে সংগ্রহ করা কাঠ। তিনি আরো বলেন, একসাথে ৯ লাখ করে ইট পোড়ানো হবে। গত বছর ৮ রাউন্ডে ৬৩ লাখ ইট বিক্রি করা হয়েছিল। এছাড়া মেলুয়া এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের গুড়িয়ে দেওয়া আরো তিনটি ইটভাটা নতুন করে চালু করতে প্রস্তুতি নিয়েছে। একসাথে ইটভাটায় আগুন দিতে গাড়ি করে কাঠ সংগ্রহ চলছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভাটায় আগুন দেওয়ার কথা জানান ইটভাটার দায়িত্বে থাকা ম্যানেজাররা। হলদিয়া ইউনিয়নের বৃন্দাবন ও বেনারস এলাকায় নির্বিচারে সরকারি-বেসরকারি বন উজার করে কাটা হচ্ছে। ওই এলাকায় রয়েছে ১১ টি ইটভাটা। কয়েকটিতে কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানো হয়। বাকি ইটভাটায় জ্বালানো হয় বনের কাঠ। অনেক ইটভাটার লাইসেন্স নেই। নেই পরিবেশের ছাড়পত্র। পরিবেশ দূষণে এ এলাকায় ফলজ গাছের ফলন হয় না। বনজ বাগান শীত মৌসুমে মরুভূমিতে পরিণত হয়।
রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংছিং মারমা বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। কোনো ইটভাটায় জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করতে পারবে না। সরকারি নিয়ম মেনে ইটভাটা পরিচালনা করতে হবে, না হয় আমাদের নিয়মিত অভিযান চলমান থাকবে।
ঠাকুরগাঁওয়ে বুড়িববাঁধে মৎস্য উৎসবে এসে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে মাছ শিকারিরা। জেলা ও জেলার বাহির থেকে মৎস্য উৎসবের দিন মাছ ধরতে আসেন মাছ শিকারিরা। অর্ধবেলা জাল ফেলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছ না পাওয়ায় হতাশা বাড়ছে তারা। তার উপরে অসাধুদের পাতানো নিষিদ্ধ রিং জালের খুঁটিতে নিজেদের জাল ছিড়ে যাওয়াতে কষ্টেরও কোনো শেষ নেই মাছ শিকারিদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারো ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ও আকচা ইউনিয়নের শুক নদীত তীর বুড়ির বাঁধে শুরু হয়েছে মাছ ধরার উৎসব। বাঁধের গেট খুলে দেয়ায় এই উৎসবে যোগ দিয়েছেন আশে পাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
গত শুক্রবার বিকেলে ছেড়ে দেয়া হয় বাধের পানি। সেদিন থেকেই শুরু হয়ে জেলেদের আগমন। উৎসবটি চলবে শনিবার দিনব্যাপী। এই উৎসবে যোগ দিয়ে অসংখ্য মানুষ মাছ ধরতে ব্যস্ত। এদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ১৯৫১-৫২ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য এলাকায় একটি জলকপাট (স্লুইস গেট) নির্মাণ করা হয়। জলকপাটে আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতি বছর মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হয়। আর এ পোনাগুলোর দেখভাল করে আকচা ও চিলারং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)।
৫০ একর এলাকাজুড়ে সুক নদীর উপর নির্মিত বুড়ির বাঁধ মৎস্য অভয়াশ্রম। সারা বছর কাউকে এখানে মাছ ধরতে দেওয়া হয় না। শুধু জমানো পানি ছেড়ে দেওয়ার পর এ সময়ই মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হয়।
সদর উপজেলার নারগুন থেকে মাছ ধরতে এসেছেন রমজান আলী। বলেন বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে অনেক মানুষ আসেন মাছ ধরতে। আমিও এসেছি। কিন্তু অর্ধবেলা জাল ফেলেও এক কেজি মাছ ধরতে পারিনি। ভেতরে রিং জাল পাতানো আছে। ওই খুঁটিতে জাল ছিড়েছে। এখন দেখছি উৎসবে এসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।
পঞ্চগড় থেকে মাছে শিকারে এসেছেন দুই বন্ধু আতিক ও ফয়সাল। তারা জানান, মাছে নেই। দেশি প্রজাতির মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। রিং জাল আর কারেন্ট জালের ব্যবহারের কারনে আমরা প্রাকৃতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সেই সাথে দেশী মাছ হারাচ্ছি। আমরা তবুও সময়টাকে উপভোগ করছি।
এই উৎসবে মাছে কিনতে এসেছেন অনেক ক্রেতা। বিক্রেতাও আছে উৎসব জুড়ে।
এ সময় ক্রেতা রহিমুলের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এখানে তো তেমন মাছ নেই। অনেক বিক্রেতা বাহিরের মাছ এনে এখানে বিক্রি করছে। এখানে যারা মাছ বিক্রি করছে অধিকাংশ জনই বাহির থেকে মাছ আনছে। দামও অনেক বেশি। টাটকা মাছ ভরসা করে কিনতে এসেছি। দেখি পাই কি না?
অপরদিকে শহর থেকে দেশীয় মাছ কিনতে যাওয়া ক্রেতারা অভিযোগ করেন মাছের দাম অনেক বেশি। দেশীয় মাছ তেমন পাওয়া যায় না এখানে। যা পাওয়া যাচ্ছে, তার দাম অনেক। পুঁটি মাছ ৩০০-৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই অনেক ক্রেতাই মাছ কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।
মৎস্য কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসন বলছে, আমরা আমাদের জায়গা থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি রিংজাল ও কারেন্টজাল রোধে। অনেক অভিযানও করা হয়েছে। সবাইকে সচেতন হতে হবে।
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, কারেন্ট জাল ও রিংজালের ব্যবহার নিষিদ্ধ। আমরা ইতিমধ্যে অনেক জাল জব্দ করেছি। জালগুলো ধ্বংস করেছি। আইনের প্রয়োগ হচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করি মানুষ সচেতন হবে এবং এসব নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার থেকে দূরে থাকবে। আগামীতে মৎস্য উৎসব আরও ভিন্নরকম ভাবে উপভোগ করবে মানুষ এমনটি প্রত্যাশা এই কর্মকর্তার।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠাকুরগাঁওয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম যাকারিয়া জানান, ১৯৫১-৫২ সালের দিকে বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়। বাঁধটির সামনে একটি অভয়াশ্রম আছে। প্রতি বছর বাঁধটি ছেড়ে দেওয়ার পরে মাছ ধরার জন্য এখানে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। আমরা মনে করছি এটার মাধ্যমে আমিষের চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ হবে।
কুমিল্লায় দিদার সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির ৫৭তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সদর দক্ষিণ উপজেলার বলরামপুর দিদার সমিতির সম্মেলন কক্ষে এ সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। দিদার সমিতির চেয়ারম্যান জিএম নোমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াসিন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা সমবায় কর্মকর্তা মোঃ সালমান ইকবাল, সদর দক্ষিণ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম ভুঁইয়া। কুমিল্লা পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বার্ডের কর্মচারী এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জাকির হোসেন, ম্যানেজার মোস্তফা কামাল, সমিতির সহ সভাপতি মো. সৈয়দ, মো. রেজাউল করিম, কামাল হোসেন, হারিজ মিয়া, আ. মমিন, জিয়াউর রহমান জিয়া, জাকির হোসেন রনি, জান্নাতুল ফেরদৌস লিজা, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সদস্য প্রায় ১২ শতাধিক। বক্তারা বলেন, দিদার সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি হলো বাংলাদেশের একটি সমবায় ভিত্তিক জন-কল্যাণমূলক সংগঠন। ওই সমিতির প্রাথমিক সল্প সদস্যদের উদ্যোগে ১৯৬০ সালে এ সমিতির যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে গ্রামের চায়ের দোকানের মালিক মোহাম্মদ ইয়াছিন তার দোকানে আগত ৮ জন রিকশা ও ভ্যান চালক মো. বেনু মিয়া, মো. নুরু মিয়া, মো. আতর আলী, মো. নিলু মিয়া, মো. চরু মিয়া, মো. অহিদ মিয়া, মো. আব্দুল খালেক এবং মো. রফিক মিয়াকে নিয়ে প্রত্যেক সদস্য প্রতিনিদিন ১ আনা করে জমা রাখবে। এই শর্তে ১৯৬০ সালের ৯ অক্টোবর ৯ সদস্যবিশিষ্ট এই সমবায় সমিতিটির গোড়া পত্তন করেন তৎকালীন ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. আখতার হামিদ খান।
দিদার সমিতি মানব সেবায় অনন্য সাধারণ অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে ‘পল্লী উন্নয়নে স্বাধীনতা পুরস্কার’ অর্জন করে।
অরাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শিকড়ের হাত ধরে স্বাবলম্বীর যাত্রায় অংশীজন হচ্ছেন সমাজের পিছিয়ে পড়া ও হতদরিদ্র পরিবার। স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠনটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য সেলাই মেশিন ও ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে এসব পরিবারের মাঝে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ১০টি পরিবারের নারী সদস্যদের মাঝে দেয়া হয়েছে সেলাই মেশিন। শনিবার জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সমাজের অ-স্বচ্ছল দশজন নারীকে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ১০টি সেলাই মেশিন দেয়া হয়। সংগঠনটি ২০২০ সালের ২৬ মার্চ যাত্রা শুরু করে এবং ২০ তম কর্মসূচি হিসেবে সেলাই মেশিন দেয়া হয় বলে প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক (প্রধান) শফিকুল ইসলাম খোকন জানান।
তিনি বলেন- সমাজের অসহায় অ-স্বচ্ছল মানুষদের স্বাবলম্বি করার প্রচেস্টা থেকে আমাদের এই যাত্রা। বিগত দিনে আমরা ১৯টি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি, তার মধ্যে রয়েছে- ছাগল বিতরন, সেলাই মেশিন বিতরন, গ্রামের ছোট টং দোকানদারকে মুলধনী পন্য বিতরন। এছাড়াও ঈদে খাদ্যসামগ্রী ও পূজায় শাড়ি বিতরন, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরন, স্কুল পোষাকসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
এ কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে সেলাই মেশিনগুলো তুলে দেন শিকড়ের পরিচালনা পর্ষদ (নীতি-নির্ধারনী ফোরাম) এর প্রধান ও কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধাব শিক্ষক শাহ মো. শাহজাহান মোল্যা, প্রতিষ্ঠাতা শফিকুল ইসলাম খোকন, প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মো. আশরাফুল আলম কাজল, মো. তোফাজ্জেল হোসেন, মো. কামাল হোসেন মিয়া, প্রদীপ সাহা, মো. হাবিবুর রহমান সাইফুল, মো. সেলিম মিয়া, মো. মুজিবুর রহমান মিয়া, মুহাম্মদ জাকারিয়া আসিফ, মো. ফজলুর রহমান সুমন, মো. সবুজ মোল্যা প্রমুখ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, লালনের গান শুধুই সুর নয়-তা অত্যন্ত উচ্চমাত্রার সংগীত, যার মধ্যে রয়েছে গভীর দার্শনিক, রাজনৈতিক এবং সর্বোপরি মানবিক মূল্য। তার গানে যে মানবতার কথা বলা হয়েছে, তা আজকের পৃথিবীতেও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
উপদেষ্টা শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ঐতিহাসিক ছেঁউড়িয়ায় অবস্থিত লালন একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় পর্যায়ে লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আর ব্যবস্থাপনায় রয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, এবারই প্রথমবারের মতো ফকির লালন সাঁইয়ের তিরোধান দিবস দলীয় প্রভাবমুক্ত এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। এটি একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, সরকার মনে করে, লালনের দর্শন এবং অবদান শুধু জাতীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ রাখার নয়। ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক, লালনের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ থাকবে না — কারণ লালন কোনো দলীয় আদর্শের প্রতিনিধিত্ব করেন না, তিনি মানবতার প্রতীক।
ভিডিও বার্তায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, লালন সাঁই আমাদের দেশের অন্যতম বড় দার্শনিক ও ভাবুক। তার জীবনদর্শন ও আদর্শ আমাদের আত্মস্থ করা প্রয়োজন। এবারই প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে লালন তিরোধান দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান উদযাপিত হচ্ছে, যা অত্যন্ত গৌরবের বিষয়।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মফিদুর রহমান। আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান লেখক ও গবেষক লালন বক্তৃতার মুখ্য আলোচক প্রফেসর গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক, বিশিষ্ট কবি, লেখক ও চিন্তক এবং লালন বিশেষজ্ঞ ফরহাদ মজহার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ আল মামুন। এসময় স্বাগত বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন।
তিনদিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানমালায় দেশব্যাপী লালন অনুসারী, সাধক, গবেষক এবং সাংস্কৃতিক কর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন। লালন সাঁইয়ের জীবন দর্শন, মানবতা ও সাম্যের বাণীকে জাতীয়ভাবে স্মরণ ও উদযাপনের উদ্দেশে প্রতিবছরের মতো এবারও এ আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে অত্যন্ত ভাবগম্ভীর পরিবেশে।
মন্তব্য