চীনের সিনোফার্মের টিকা পাওয়া নিয়ে নতুন করে সংশয় দেখা দিয়েছে। চুক্তির আগেই দাম প্রকাশ করায় এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে।
এক সপ্তাহের মধ্যে চীনের তৈরি টিকার দেড় কোটি ডোজ কেনার কথা ছিল বাংলাদেশের। সে লক্ষে চুক্তির বিষয়টিও অনেকটা চূড়ান্ত হয়ে যায়।
অবশ্য চীন বাংলাদেশের কাছ থেকে টিকার চাহিদাপত্র পাওয়ার পর বাণিজ্যিক স্বার্থে টিকার দাম প্রকাশ যেন কোনোভাবেই না করা হয় সে বিষয়টি বলে দেয়।
সংবাদমাধ্যম ভয়েস অফ আমেরিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমে সিনোফার্মের টিকা প্রতি ডোজ ১০ ডলার করে কেনা হচ্ছে বলে জানান। এর পরই আপত্তি তোলে চীন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় কম দামে চীন টিকা দিতে চায়। কিন্তু দাম প্রকাশের পর আপত্তি তোলে শ্রীলঙ্কা। তারা চীনের কাছে জানতে চায়, বাংলাদেশকে ১০ ডলারে দেয়া হলেও তাদের কাছে কেন ১৫ ডলার করা চাওয়া হচ্ছে।
এরপরই চীন বাংলাদেশকে চিঠি দিয়ে কূটনৈতিকভাবে জানতে চায়, কেন দাম প্রকাশ করা হলো?
চিঠিতে চীন বলেছে, তাদের আশঙ্কা সত্যি হয়েছে। অনেক দেশ তাদের কাছে বিষয়টিতে আপত্তি জানিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে তৈরি হওয়া পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কূটনৈতিকভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
গত ২৭ মে সিনোফার্মের টিকা কিনতে মন্ত্রিসভার কমিটি সম্মতি দেয়। এরপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহিদা আখতার সংবাদ ব্রিফিং করে টিকা কেনার বিষয়ে বিস্তারিত বলেন। সেখানেই তিনি টিকার দাম জানান।
কেন তিনি গোপনীয়তা ভঙ্গ করে টিকার দাম প্রকাশ করেন সে বিষয়ে শাহিদা আখতারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়, দায়িত্ব থেকেও তাকে সরিয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়।
অবশ্য এই ঘটনার পর চীন জানিয়েছে, টিকা এখন নিতে হলে ১৫ ডলারেই কিনতে হবে তাদের কাছ থেকে।
বাংলাদেশ ফেব্রুয়ারিতে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি কোভিশিল্ড টিকা দিয়ে।
সিরামের সঙ্গে সরকার তিন কোটি ৪০ লাখ টিকা কেনার চুক্তি করে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে টিকা দেয়ার কথা বলা হয় চুক্তিতে। কিন্তু সিরাম বাংলাদেশকে মাত্র ৭০ লাখ টিকা দেয়।
এর বাইরে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে দেয়া হয় ৩৩ লাখ টিকা। বাকি টিকা পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে বাংলাদেশের।
এমন বাস্তবতায় দ্বিতীয় ডোজ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না অনেককে। টিকার এ ঘাটতি মেটাতে চীন, রাশিয়ার টিকা কিনছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২ কোটি ডোজ টিকা চাওয়া হয়েছে।
১২ মে চীন সরকার বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে ৫ লাখ ডোজ টিকা পাঠায়।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহের পাগলায় ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকাডুবির ২২ ঘন্টা পর নিখোঁজ দুই শিশু মরদেহ উদ্ধার করেছে নিহতের স্বজনেরা। বুধবার (০২ জুলাই) পাগলা থানার টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে তাদের মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশুরা হলো, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরআলগী এলাকার বাসিন্দা হাবিব মিয়ার ছেলে আবির (৬) এবং মুমতাজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়েদ (৬)। তারা দুজনই বিরুই নদীর পাড় দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (০১ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯ টার কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরআলগী এলাকা থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে মাদ্রাসায় যেতে ছোট একটি নৌকায় উঠেন ৯ শিক্ষার্থী। ময়মনসিংহের পাগলা থানার দত্তের বাজার সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছানোর পূর্বেই ডুবে যায় নৌকাটি। এর মধ্যে ৬ জন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ডুবে যায় তিন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে শাপলা আক্তারের (১৫) মরদেহটি ঘটনাস্থলের খানিকটা দুর থেকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভোরে নিহতের স্বজনরা নৌকা নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে নিখোঁজ আবির ও জুবায়েদকে খোঁজতে বের হয়। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকায় ব্রক্ষ্মপুত্র নদে দুজনের মরদেহ ভাসতে দেখে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূর থেকে তাদের মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয় বলেও জানান এই জনপ্রতিনিধি।
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। বুধবার (০২ জুলাই) দুপুরে দামুড়হুদা উপজেলার ঝাঁঝাডাঙ্গা সীমান্তে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহিম বাবু (৩২) ঝাঁঝাডাঙ্গা গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। ওই ঘটনায় পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে বিজিবি।
নিহতের পিতা নুর ইসলাম জানান, দুপুরে আমার ছেলেসহ ৪-৫ জন গরুর ঘাস কাটার জন্য সীমান্তের গালার মাঠে যায়। এ সময় অসাবধনতাবশত সীমান্তের ৭৯ নম্বর মেন পিলার পার হয়ে ভারতে ঢুকে পড়লে সেখানকার ৩২ বিএসএফ হালদারপাড়া ক্যাম্পের সদস্যরা ২ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এতে বিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় বাবু।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান গুলিবর্ষণের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, কয়েকজন স্বর্ণ চোরাকারবারির ওপর বিএসএফ গুলিবর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার (০১ জুলাই) বিকালে শ্রীঘর বাজারের নজরুল ইসলামের দোকানের সন্মুখ থেকে ১৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে। এ সময় আক্কাছ মিয়া (৩২) ও ছিদ্দিকুর রহমান (২১) নামের দুই মাদক ব্যবসায়িকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়- সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ শ্রীঘর বাজারের চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন কালে সন্দেহ জনক একটি সিএনজিকে থামিয়ে তল্লাশি করে। আক্কাছ মিয়া কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাঙ্গরা বাজার এলাকার মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে। ছিদ্দিকুর রহমান নবীনগর উপজেলার বড়াইল গ্রামের আতিকুর রহমানের ছেলে।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর ইসলাম জানান- এ ঘটনায় নবীনগর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ফেনীর পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া সীমান্ত এলাকা থেকে কয়েকটি গরুসহ কোটি টাকার ভারতীয় মালপত্র জব্দ করেছে বিজিবি। বুধবার (০২ জুলাই) উপজেলাদ্বয়ের ভারত সীমান্ত এলাকায় এসব মালপত্র জব্দ করা হয়। বিজিবি জানায়, ছাগলনাইয়া ও পরশুরাম সীমান্ত এলাকায় টহল দিচ্ছিল বিজিবি। টহল দলকে দেখে চোরাকারবারিরা বিপুল পরিমাণ ভারতীয় মোবাইল ডিসপ্লে ভর্তি কার্টন ও কয়েকটি গরু রেখে পালিয়ে যায়। বিজিবি সদস্যরা মালপত্র ও গরুগুলো জব্দ করে। এসবের আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। জব্দকৃত মালপত্র স্থানীয় কাস্টমসে জমা দেওয়া হয়েছে ।
ফেনীর ৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোশারফ হোসেন জানান, সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধসহ অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবির অভিযানিক কর্মকাণ্ড ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
ঝিনাইদহে সাপ নিয়ে খেলা করতে গিয়ে সাপের কামড়ে প্রাণ গেল মাহাফুজুর রহমান (১৬) নামের এক কিশোরের। মঙ্গলবার (০১ জুলাই) রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের বিষয়খালীর কেশবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত কিশোর মাহাফুজুর রহমান ওই গ্রামের মত. মতিয়ার রহমান মতির একমাত্র ছেলে।
স্বজন ও বন্ধু সোহান জানায়, গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাছের একটি তালগাছ থেকে সোমবার (৩০ জুন) বিকালে মাহাফুজুর রহমান একটি সাপ ধরে টিফিন বাটিতে করে আটকে রাখে। যা পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে ওই তালগাছের কাছে গিয়ে সাপ নিয়ে খেলা করতে গিয়ে মঙ্গলবার (০১ জুলাই) তার হাতে ছোবল দিলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে ঝিনাইদহ হাসপাতালে ভর্তিরপর অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।
জুয়া খেলারত অবস্থায় শিবপুর মডেল থানা পুলিশ ৭ জুয়ারিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। বুধবার (০২ জুলাই) সকালে শিবপুর উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের লাখপুর বাজারের পাশে বাবুল নাজিরের কলাবাগানের ভেতর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে- দৌলত হোসেন (৩৮) সাং-চরআলিনগর, খোরশেদ আলম (২৪) সাং-চরসিন্দুর, ফারুক (৪৫) সাং-হরিনারায়নপুর, আলামিন (৩৮) সাং-মানিকদী, মুকসিন (৪৪) সাং-শিমুলিয়া, সেলিম (৩৫) সাং-লাখপুর ও সুরুজ (৫২) সাং-লাখপুর। পুলিশ তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও জুয়া খেলার সরঞ্জামাদী উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে শিবপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধৃত: জুয়ারীদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জেলার সীতাকুণ্ডে সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মূল্যবান বনায়ন কেটে গড়ে ওঠা বিতর্কিত সেই জাহাজভাঙা কারখানাটিতে দ্বিতীয় দফায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। বুধবার (০২ জুলাই) সকালে জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ যৌথভাবে এ অভিযান শুরু করে। এর আগে গত ২৫ জুন প্রথম দফায় উচ্ছেদ করে কারখানাটির স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। কারখানা এলাকায় গড়ে ওঠা আরও কিছু স্থাপনা এবং ভবনের অবশিষ্টাংশে বুধবার (০২ জুলাই) জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয়েছে।
উচ্ছেদের পাশাপাশি সীতাকুণ্ডের ছলিমপুর এলাকার তুলাতলী মৌজার জায়গাটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বৃক্ষরোপণ শুরু করেছে বন বিভাগ। বিভিন্ন প্রজাতির দুই হাজার গাছ লাগানো হবে ওই স্থানটিতে। প্রথম দফায় সেখানে দুই হাজার বিভিন্ন গাছের চারা রোপণ করা হবে। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।
সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, অবৈধ জাহাজভাঙা কারখানাটি উচ্ছেদের পাশাপাশি সেখানে আমরা বৃক্ষরোপণ শুরু করেছি। এ জন্য চারা এনেছে বন বিভাগ। এ ছাড়া কারখানার অবশিষ্ট অংশটিতে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয়।’ এই উচ্ছেদ অভিযানে সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল মামুন ও উপকূলীয় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক আবুল কালাম আজাদ, রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। রেঞ্জ কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ঝাউ, করঞ্জা ও হিজল- এই তিন প্রজাতির দুই হাজার গাছের চারা এনেছি। এখানে লাগানো হচ্ছে। এর আগে এখানে প্রায় পাঁচ হাজার গাছ ধ্বংস করেন জাহাজভাঙা কারখানার লোকজন।’
জেলা প্রশাসনই বনের জায়গাটিতে জাহাজভাঙা কারখানা স্থাপনের জন্য দুবার ইজারার অনুমতি দিয়েছিল। আপত্তির পর আবার ইজারা বাতিল করা হয়। কোহিনূর স্টিল নামে এই কারখানা স্থাপন করেছিলেন আবুল কাসেম নামের এক ব্যক্তি। তিনি ‘রাজা কাসেম’ নামে পরিচিত।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, তুলাতলী মৌজায় বন বিভাগের ২০ ধারায় নোটিফিকেশনকৃত বনাঞ্চল রয়েছে। ইজারা চুক্তিতে কাগজে-কলমে সলিমপুর মৌজা দেখানো হলেও মূলত তুলাতলী মৌজায় বিতর্কিত এই ইয়ার্ড গড়ে ওঠে। বন বিভাগ বারবার এ ইজারায় আপত্তি জানিয়ে আসছিল। আপত্তি উপেক্ষা করে তখনকার জেলা প্রশাসকেরা একই ভূমি দুবার রাজা কাসেমকে ইজারা দিয়েছিলেন। ২০১৯ সালে প্রথম ৭ দশমিক ১০ একর ভূমি শিপইয়ার্ডের জন্য ইজারা পায় কাসেমের বিবিসি স্টিল। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) আইনি পদক্ষেপ নেয় এই ইজারার বিরুদ্ধে; কিন্তু তুলাতলী মৌজাটি বনাঞ্চল হওয়ায় উচ্চ আদালত ২০২০ সালের ২ জানুয়ারি ইজারা চুক্তি অবৈধ ঘোষণা করেন। পরে আর ইজারা চুক্তি নবায়ন করেনি জেলা প্রশাসন।
বিবিসির নামে ইজারা বাতিল হওয়ার পর কাসেম তার স্ত্রী কোহিনূর আকতার নতুন করে একই জায়গায় জমি ইজারার আবেদন করেন। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় কোহিনূর স্টিল। এরপর ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি কোহিনূর স্টিলের নামে সীতাকুণ্ডের উত্তর সলিমপুর মৌজা দেখিয়ে পাঁচ একর বনভূমি ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন।
এ নিয়ে ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘কৌশলে’ বন ইজারার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। আবার ২০২৩ সালের ৮ জুন ‘চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদারতায় ইয়ার্ডের পেটে ৫ হাজার গাছ’ শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। চুক্তির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে ২০২৩ সালে জেলা প্রশাসন সীতাকুণ্ডের কোহিনূর স্টিল নামের ওই জাহাজভাঙা কারখানার ইজারা বাতিল করেছিল। উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করে হাইকোর্টে প্রতিবেদনও দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। এরপর বিভাগীয় কমিশনার বরাবর ইজারা চুক্তি বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করেন কোহিনূর স্টিলের মালিক আবুল কাসেম। ইজারা ফিরে পেয়ে কারখানাটিতে ফের জোরেশোরে কাজ শুরু করা হয়। সীতাকুণ্ডের সলিমপুর এলাকার তুলাতলী মৌজায় কোহিনূর স্টিল নামের ইয়ার্ডটির অবস্থান। তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় বাতিল হওয়া ইজারা ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দেয় ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে। এরপর কাসেম আবার ওই জায়গায় কাজ শুরু করেছিলেন। পরে আদালতের নির্দেশে তা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন।
মন্তব্য