পাবনা শহরের পৈলানপুর এলাকার স্কুলশিক্ষক মুসলিমা খাতুন পাবনা জেনারেল হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্র থেকে করোনার টিকার প্রথম ডোজটি নেন গত ১৮ মার্চ। নিয়ম অনুযায়ী মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহেই পাওয়ার কথা দ্বিতীয় ডোজ।
এর জন্য মোবাইলে মেসেজের অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও মেসেজ না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন মুসলিমা। স্বাস্থ্য বিভাগে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, পাবনায় টিকা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
মুসলিমার মতো ৩৫ হাজারের বেশি গ্রহীতা দ্বিতীয় ডোজ আপাতত পাচ্ছেন না। প্রথম ডোজই পাননি ৮২ হাজার নিবন্ধিত ব্যক্তি।
জেলা সিভিল সার্জন মনিসার চৌধুরী জানিয়েছেন, নতুন করে সরবরাহ আসার পর আবার টিকার কার্যক্রম শুরু করা হবে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পাবনার জন্য বরাদ্দ টিকার মজুত ২০ মে শেষ হয়ে যাওয়ায় ২১ মে থেকে জেলায় করোনা টিকা দেয়ার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। টিকার কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় প্রথম ডোজ টিকা নেয়া ৩৫ হাজার ১৫৮ ব্যক্তি দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে পারেননি।
মনিসার চৌধুরী বলেন, দুই দফায় পাবনায় ১ লাখ ২৫ হাজার ডোজ করোনার টিকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দ টিকাগুলোর মধ্যে ২০ মে পর্যন্ত ৮০ হাজার ২৪৪ জনকে প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়। একই সময়ে ৪৫ হাজার ৮৬ জনকে দেয়া হয় দ্বিতীয় ডোজের টিকা।
সিভিল সার্জন আরও জানান, যারা প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন, তাদের সবাইকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া হয়েছে। ভারতীয় টিকা পাওয়া এখন অনিশ্চিত। নতুন করে যে টিকা বরাদ্দ হবে সেগুলো চীনের টিকা। ফলে যারা ভারতীয় টিকা প্রথম ডোজ হিসেবে গ্রহণ করেছেন, তাদের চীনের টিকা দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে দেয়ার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা না থাকায় বাকিদের ভারতীয় টিকা আসার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
টিকা-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন জেলার বাসিন্দারা। প্রতিদিন টিকার খোঁজ নিতে স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন অফিসে যোগাযোগ করছেন দ্বিতীয় ডোজ না পাওয়া ব্যক্তিরা। তবে ভারতীয় টিকার সরবরাহ না থাকায় হতাশ হয়েই ফিরছেন তারা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টিকা নিতে না পারলে প্রথম ডোজের কার্যকারিতায় কতটুকু সুরক্ষিত থাকা যাবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।
কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত পাবনায় প্রায় ১ লাখ ৬২ হাজার ২৮৪ জন করোনার টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেন।
সিভিল সার্জন মনিসার বলেন, ‘নতুন টিকার বরাদ্দ পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যারা প্রথম ডোজ পাননি, তাদের আগে টিকা দেয়া হবে।
‘করোনা পরিস্থিতি বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও পাবনাতে এখনও পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তবেই পরিস্থিতি ভালো রাখা সম্ভব। যারা এখনও টিকা নিতে পারেননি, তাদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে। আর যারা দ্বিতীয় ডোজ পাননি, তাদের আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ রইল। সবার সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ নেই।’
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া সর্বশেষ (২৫ মে) তথ্য অনুযায়ী পাবনায় ৩ হাজার ২৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে গত আট দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮০ জন। এ পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৫১ জন। আর মারা গেছেন ২২ জন।
আরও পড়ুন:“ফজরের নামাজের পর হাটতে বের হলে শিয়াল কুকুরের জ¦ালায় কোথাও যেতে পারি না। একটু নিরিবীলি জায়গা পেলেই দলবেধে ওরা এসে কামড়ে দেয়ার চেষ্ঠা করে। শুক্রবার ভোরে জলসিঁড়ির বালুতে হাটতে গেলে একদল শিয়াল আক্রমন করে বসে, কোন রকমে প্রাণপনে দৌড়ে রক্ষা পাই।” এমনি করে কথাগুলো বলেন কাজী আবুল হোসেন।
মহসিন মিয়া বলেন, রাতের আধারে আমার খামারে শিয়ালের দল ডুকে ৪ টা ছাগলকে কামড়ে মেরে ফেলেছে। এতে আমার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে। দিনে কুকুরে কামড়ায় আর রাতে শিয়ালে। এ থেকে আমাগো কেউ বাঁচান।
“কি আর কমু গো ভাই? নগর পাড়া ব্রিজ, কেওডালা ব্রিজ অদৃশ্য শক্তির ছোয়ায় আটকে আছে। ভয়ঙ্কর ঝুকিপূর্ন চনপাড়া সেতুর মেরামত হচ্ছে না একযুগ ধরে। আমরা রূপগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরের বাসিন্দারা অনেক বিপদে আছি। আমাগো দেখার কেউ নেই। আমরা নিজ দেশে পরবাসীর মত। নদীতে পচা পানি। দুর্গন্ধে ঘরে থাকা যায় না। মশার জ¦ালার কথা আর কি কমু? দিনে দুপুরেই কামড়ায়। রাত হলে তো কথাই নাই। একটু বাতাস ছুটলে বালির জ¦ালায় ঘরে বাহিরে থাকা দায়। এরওপর নতুন আরো জ¦ালা, দিনে কুকুরের জ¦ালা আর রাতের বেলায় শিয়ালের খেলা/ উপদ্রব। আর ভাল লাগে না। আল্লাহ ছাড়া আমাগো দেখার আর কেউ নাই।” এমনি করে মনের দুঃখে কথাগুলো বলছিলেন উপজেলার আমজাদ হোসেন।
দিনে কুকুর আর রাতে শিয়ালের উপদ্রবে অতিষ্ঠ নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জবাসী। জলাতঙ্ক প্রতিরোধে কুকুরকে ভ্যাকসিন দেয়া হলেও কুকুরের কামড়ে আহত হওয়ার শঙ্কায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। বেশি আতঙ্ক ছোট শিশুদের নিয়ে। ছোট্ট শিশু নুশাইবা বলেন, কুকুরের ভয়ে দিনের বেলায় ঘর থেকে বের হতে পারি না। দলবেধে যেভাবে খা খা করে এগিয়ে আসে ভয়েই সামনে দিয়ে যাওয়া যায় না। আরেকজন হামিম বলেন, বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। কি কারণে জানি না দলবদ্ধ কুকুর ভয়ঙ্কর আচরন করছে। বিগত ১ মাসে ২০ জনকে কামড়েছে এ কুকুর। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ১২ টি ছাগলকেও কামড়ে দিয়েছে ভয়ঙ্কর কুকুরদল।
এ তো গেল দিনের চিত্র, রাতের চিত্র ভিন্ন। উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের নানী দাদীরা ছোট শিশুদের ঘুম পাড়াতে রাক্ষস-খোক্কস, দৈত্য-দানবের গল্প না বলে শেয়ালের গল্প বলছে। শুধু গল্প নয়, শঙ্কাও আছে। এখানে সন্ধ্যা নামলেই শিয়ালের উপদ্রব বেড়ে যায়। দল বেঁধে শেয়াল বাড়ি-ঘরের আনাচে কানাচে ঘোরাফেরা শুরু করে। এতে হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল এমনকি ছোট শিশুদের নিয়েও ভয়ে আছে বাসিন্দারা। সন্ধ্যার আগেই গবাদিপশু ও ছোট শিশুদের নিয়ে ঘরে চলে আসতে হয়।
শেয়াল-কুকুরের উপদ্রব নিয়ে সিয়াম মিয়া বলেন, কী আর করমু ভাই, দিনের বেলা কুত্তা আর রাইতে হিয়ালের (শিয়াল) তা-বে আমরা আছি বড়ই যন্ত্রণায়। এসবের কারণে পশু-পাখিসহ বাচ্চাদের নিয়ে সারা দিন দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।
উপজেলার তালাশকুট এলাকার সারমিন আক্তার নামের এক গৃহবধূ বলেন, ছোট বাচ্চাটাকে নিয়ে ভয়ে থাকি। যে পরিমাণ শেয়াল-কুকুর বেড়েছে এলাকায়, না জানি কখন কাকে কামড়ে দেয়! সন্ধ্যার পর শেয়াল বেড়ে যায়। বেশ কিছু দিন আগে উপজেলার খামারপাড়া এলাকার এক মাদ্রাসার ছাত্র শিয়ালের কামড়ে ভোগে অবশেষে মৃত্যুবরণ করে।
রূপগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকাগুলোতে কুকুর বেশি থাকলেও শেয়াল তেমন একটা নেই। তবে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের খামারপাড়া , নগরপাড়া, কামসাইর, দেইলপাড়া, বাঘবাড়ী, পিরুলিয়া, ছনেরটেক, কায়েতপাড়া সহ বিভিন্ন গ্রামে শেয়াল-কুকুরের উপদ্রব বেশি।
উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের ডাঃ আইভী ফেরদৌস বলেন, শিয়াল কুকুরের কামড়েরর রোগী আসে। আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা করি। ওষুধ সাপ্লাই স্বল্পতা রয়েছে। আর এ চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে নেয়াই ভাল।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সজল কুমার দাস বলেন, ভাদ্র মাসে কুকুরের উপদ্রব একটু বেড়ে যায়। মানুষকেও কামড়ে দেয়। শুনেছি শিয়ালের উপদ্রবও বেড়ে গেছে। তাই আমরা উপজেলার প্রতিটি এলাকায় কুকুরকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। ভয়ের কিছু নেই। সচেতন থাকতে হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, শেয়াল কুকুরের উপদ্রব বৃদ্ধি সত্যিই আতঙ্কের বিষয়। বিশেষ করে শিশুরা অনেক ভয়ে থাকে। প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে বিষয়টি সমাধানে কথা বলব। তবে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সর্বক্ষেত্রেই সচেতনতার বিকল্প নেই।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের আনারপুরা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় ইউটার্নে যাত্রীবাহী বাস ও রেডিমিক্সের গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ উভয় পরিবহনের ১২জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টায় মহাসড়কের আনারপুরা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে ১০ জনের নাম জানা গেছে গেছে। তারা হলোঃ আয়াজ(৩৫), ইউনুস মুন্সী (৪৫), মাইন উদ্দিন (৪২), রাসেল(৪০), ওমর ফারুক (২৫), মারুফ(৪০), তারেক রহমান(৩০), হারুন-অর-রশিদ(৪০), হাবিবুর রহমান (৪৫) ও জেমস(২৮)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস। পথে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশের আনারপুরা এলাকায় প্রিমিয়ার সিমেন্ট কোম্পানির একটি রেডিমেক্সের গাড়ি ইউটার্ন নেওয়ার সময় সেটিকে ধাক্কা দেয় বাসটি। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। এ ঘটনায় রেডিমিক্সের গাড়ির চালক-হেলপার ও বাসের ১০জন যাত্রী আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় স্থানীয়রা।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ১০ জন গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। গুরুতর অবস্থায় ইউনুস মুন্সী, মাইন উদ্দিন, মারুফ ও রাসেলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে।
এ বিষয়ে গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শওকত হোসেন বলেন,' সড়ক দুর্ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িগুলো মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে'।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পাল্টা শুল্ক পুরোপুরি কার্যকর হয়েছে গত মাসে। এর আগে গত জানুয়ারি থেকে জুলাই (সাত মাসে) এই বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২২ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির এই হার যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শীর্ষ পাঁচ রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে ৪৯৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। শুধু জুলাইয়ে রপ্তানি হয়েছে ৭০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি।
গত ৩১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন বিভিন্ন দেশের পণ্য আমদানির ওপর সংশোধিত পাল্টা শুল্কহার ঘোষণা করে। গত ৭ আগস্ট এই শুল্কহার কার্যকর হয়। সংশোধিত হার অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের পণ্যে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বসেছে। ভারতীয় পণ্যের ক্ষেত্রে হারটি দাঁড়িয়েছে ২৫ শতাংশ। আর ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া ও পাকিস্তানের পাল্টা শুল্কের হার ১৯ শতাংশ। এখন পর্যন্ত চীনের পণ্যে পাল্টা শুল্ক ৩০ শতাংশ।
একাধিক তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক বলেন, চীনের হারানো ক্রয়াদেশের একটা অংশ বাংলাদেশে আসছে। ছয় থেকে আট মাস ধরে তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। পাল্টা শুল্কের কারণে সামনের মৌসুম থেকে আরও বাড়তি ক্রয়াদেশ আসতে পারে। যদিও কোনো কোনো ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাড়তি শুল্কের একটি অংশ বহন করতে রপ্তানিকারকদের চাপ দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দীর্ঘদিন ধরে চীন শীর্ষস্থানে থাকলেও উভয় দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে সেই জায়গাটি দখলে নিয়েছে ভিয়েতনাম। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ভিয়েতনাম ৯৪৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি। শুধু জুলাইয়ে ভিয়েতনাম ১৬৯ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এক্ষেত্রে তাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ১২ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে চীন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ে চীন ৬৯২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ কম। শুধু জুলাইয়ে চীন ১১৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ৩৮ শতাংশ কম। শীর্ষ ১০ রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে চীনের রপ্তানিই সবচেয়ে বেশি কমেছে।
অটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চতুর্থ শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক ভারত চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ৩৩১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ২৬৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৮০ শতাংশ।
বাংলাদেশের একাধিক উদ্যোক্তা জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়ায়। তখন থেকেই চীন থেকে অল্প অল্প ক্রয়াদেশ সরছে। গত বছর নির্বাচনী প্রচারণায় চীনের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের অনেকে বাংলাদেশে বাড়তি ক্রয়াদেশ দেওয়া শুরু করে। সে জন্য দেশটিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়তে থাকে।
বাংলাদেশের শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি অনন্ত গ্রুপ। গত অর্থবছরে শিল্প গ্রুপটির ছয়টি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে ৪৬ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে।
ওষুধ কম্পানির সরবরাহ করা ওষুধের তালিকা সরকারি হাসপাতালের টেবিলে না রাখাসহ চিকিৎসকদের ৮ নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে মানতে হবে বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা জারি করা হয়।
নির্দেশনার মূল দিকগুলো হলো–
১. কোনো অবস্থাতেই বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক বা ওষুধ কম্পানির নামাঙ্কিত প্যাডে প্রেসক্রিপশন বা পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া যাবে না।
২. সরকারি হাসপাতালে যে পরীক্ষা ও ওষুধ বিদ্যমান, তা বাইরের প্রতিষ্ঠান থেকে করানো বা কিনতে রোগীকে বলা যাবে না।
৩. সরকার অনুমোদিত বা সরবরাহ করা সিল ছাড়া অন্য কোনো বেসরকারি সিল ব্যবহার করা যাবে না। তবে জেনেরিক নামের বিজ্ঞাপনবিহীন সিল ব্যবহার করা যাবে।
৪. ওষুধ কম্পানির সরবরাহ করা ওষুধের তালিকা সরকারি হাসপাতালের টেবিলে রাখা যাবে না।
৫. কোনো কম্পানির প্রতিনিধি রোগীর প্রেসক্রিপশন বা ব্যক্তিগত তথ্যের ছবি তোলা বা সংগ্রহ করতে পারবেন না।
৬. সপ্তাহে নির্ধারিত দুই দিন– সোমবার ও বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত প্রতিনিধিরা চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।
৭. এ সময়ের বাইরে হাসপাতালে অবস্থান করলে সংশ্লিষ্ট কম্পানির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৮. সাক্ষাতের সময় কম্পানি কর্তৃক প্রদত্ত আইডি কার্ড অবশ্যই দৃশ্যমান স্থানে রাখতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট কম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। একইসঙ্গে চিকিৎসকদের প্রতিও কঠোর অবস্থান নেয়া হবে, যাতে সরকারি সেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা বিনষ্ট না হয়।
রাজবাড়ীর কালুখালীতে র্যাব-১০ এর অভিযানে ১৯ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়। জব্দকৃত গাঁজার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় পাঁচ লক্ষ সত্তর হাজার টাকা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মেহেরপুর সদর উপজেলার শোলমারী গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে মোঃ তোফাজ্জল (৪৫) এবং দিঘীরপাড় গ্রামের মোঃ রেজাউল ইসলামের ছেলে মোঃ রিজন (২১)।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক ২টা ১৫ মিনিটে র্যাব-১০, সিপিসি-৩ ফরিদপুর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কালুখালীর বোয়ালিয়া ইউনিয়নের সোনাপুর মোড় সংলগ্ন ভাবীর হোটেলের সামনে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালায়। এ সময় মেহেরপুর থেকে আসা একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়।
র্যাব-১০ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কর্মকার জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। তারা দীর্ঘদিন ধরে গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছিল।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারকৃতদের কালুখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ময়মনসিংহের ভালুকায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। শনিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার ভরাডোবা তাসরিফ কটন মিলের সামনে ময়মনসিংহগামী রোডে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
ভালুকা মডেল থানার ওসি হুমায়ুন কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় রাখা হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে প্রথমে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহতদের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ওসি আরো বলেন, দুর্ঘটনার পর পুলিশ বাস দুটি জব্দ করেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং নিহতদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
শেরপুরে সাপ ধরার সময় বিষাক্ত সাপের কামড়ে এক সাপুড়ে মারা গেছে ।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মৃত সাপুড়ে জামাল মিয়া (৭০) শেরপুর সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নের ডুবারচর গ্রামের বাসিন্দা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা যুবদল নেতা ও সাপুড়ের ভাতিজা রিপন।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, সাপুড়ে জামাল উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে সাপ ধরে আসছিলেন। সে ঝারফুকও দিতো। সাপ ধরে সাপ দিয়ে খেলাও দেখাতো। গতকাল ১২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে সাপুড়ে জামাল উদ্দিন পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার ইসলামপুরের ৪নং চরে গ্রামে একটি বিষাক্ত সাপ ধরতে যান। ধরার সময় সাপটি তার হাতের আঙ্গুলে কামড় দেয়। কিন্তু সাপুড়ে বিষয়টি আমলে নেয়নি। ঘণ্টা দুয়েক পরে ওঝার শরীরে বিষক্রিয়া শুরু হলে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত সদর হাসপাতালে আনা হয়।
মৃতের স্বজনদের দাবি, হাসপাতালে এন্টিভেনাম নেই বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে জানান। পরে একটি এন্টিভেনাম বাহির থেকে সংগ্রহ করে দেওয়ার পরেও তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে তাকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
শেরপুর জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিম মিয়া জানান, হাসপাতালে এন্টিভেনাম সরবরাহ আছে। রোগীর সঙ্গে এন্টিভেনাম নিয়ে কি হয়েছে, তা আরএমওকে (আবাসিক মেডিকেল অফিসার) জানানো হয়েছে। বিষয়টি দেখা হবে।
মন্তব্য