চুক্তি অনুযায়ী আগামী মাসের মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী তিন কোটি টিকা দেশে আসার কথা থাকলেও মাত্র ৭০ লাখ ডোজ দিয়েই টিকা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। এমনকি এ বছরের শেষে ছাড়া অন্য দেশকে টিকা দিতে পারবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মজুত ফুরিয়ে যাওয়ায় ১৪ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ টিকা সম্পন্ন নিয়ে বিপাকে পড়েছে সরকার। এদের দ্বিতীয় ডোজ শেষ করতে বিকল্প উৎস থেকে টিকা খোঁজা হচ্ছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেতে বিভিন্ন দেশকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে এখনও কোনো দেশ থেকে উত্তর পাওয়া যায়নি।
এমন পরিস্থিতিতে অন্য কোম্পানির টিকা দিয়ে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যায় কি না এমন ভাবনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। এরই মধ্যে দুই কোম্পানির দুই ডোজ মিলে করোনাভাইরাসের মিক্সড ডোজ টিকা দেওয়া যাবে কিনা সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে পরামর্শ চেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র রোবেদ আমীন বলেন, ‘স্পেনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথম ডোজ অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার এবং দ্বিতীয় ডোজ মডার্না কিংবা ফাইজারের মতো এমআরএনএ টিকা দেয়ার ফলে শরীরের অ্যান্টিবডি ৩০-৪০ গুণ বেড়েছে, যা করোনা প্রতিরোধে সহায়ক। আবার যারা প্রথম ডোজ এমআরএনএ টিকা এবং দ্বিতীয় ডোজ অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা নিয়েছেন, তাদেরও অনেক বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার প্রমাণ তারা পেয়েছেন।’
রোবেদ আমীন আরও বলেন, ‘আমাদের ভাবার সময় এসেছে, যখন একই টিকা অনেক পরিমাণে রাখতে পারছি না, সেক্ষেত্রে এই মিক্সড ডোজ ভ্যাকসিন চালু করা যাবে কিনা। এ বিষয়ে টিকা সংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির কাছে মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে।’
পরামর্শক কমিটি এক সদস্য ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, অন্য কোম্পানির টিকা দিয়ে দ্বিতীয় ডোজ নেয়া যাবে। তবে এখনও অধিদপ্তরকে কোনো ধরনের সুপারিশ করে নি করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। তারা বলছেন, এ বিষয়ে কয়েক দিনের মধ্যে বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দ্বিতীয় ডোজে অন্য কোম্পানির টিকা দেয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে কোনো সুপারিশ করা হয়নি। দ্বিতীয় ডোজে অন্য কোম্পানির টিকা দেয়ার আগে দেশে কোনো গবেষণা করা গেলে ভালো হতো।’
তবে প্রথম ডোজ অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে দ্বিতীয় ডোজ অন্য কোম্পানি টিকা দিলে কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, তবে এই সিদ্ধান্ত নেবে কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক ডা. বে-নজীর আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, অন্য কোম্পনির টিকায় দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যাবে কি না, সে সিদ্ধান্ত হতে হবে রেগুলেটরি অথোরিটি দিয়ে। যেমন এটি হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) অথবা এটি হতে পারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অথবা টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে বলতে হবে। টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো বলবে, তাদের প্রথম ডোজ টিকা দেয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ অন্য কোম্পানির টিকা দেয়া যাবে কিনা।
তিনি বলেন, তবে বাংলাদেশ তা মানবে কি না, সে সিদ্ধান্ত দেবে করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। তারা বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত জানাবে। তা না হওয়া পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ দিয়ে অন্য কোম্পানির টিকা দেয়া ঠিক হবে না।
তিনি বলেন, ‘অন্য দেশে মিক্সড ডোজ টিকা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। আমাদেরও এমন গবেষণা হওয়া উচিত। আমাদের দেশে এই ধরনের গবেষণার সুযোগ রয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা এসেছে ১ কোটি ৩ লাখ। এর মধ্যে বুধবার পর্যন্ত প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে দেওয়া হয়েছে ৯৬ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪৮ ডোজ। এর মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৩৮ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩৬ ও প্রথম ডোজ ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৯১২। অর্থাৎ সরকারের কাছে বুধবার পর্যন্ত মজুদ ছিল ৬ লাখের কিছু বেশি টিকা। হিসাব করে দেখা গেছে, প্রথম ডোজ নিয়েছেন এমন ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৮২৪ জন এ দফায় করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাবেন না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দুই মাস ও তিন মাস এমনকি চার মাস পরে দেয়া যায়। এই সময়ের মধ্যে যদি টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া সম্ভব না হয় তাহলে জটিল পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। এটি বৈজ্ঞানিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
আরও পড়ুন:ভোর হলেই জমে ওঠে পটুয়াখালীর বড় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আলিপুর-মহিপুর ঘাট। রাতভর মাছ ধরে বড় ট্রলার গভীর সমুদ্র থেকে ফিরছে। পন্টনে নোঙর করছে একের পর এক ট্রলার, লেবাররা মাছ উঠানোর জন্য প্রস্তুত, আড়তদাররা ব্যস্ত হিসাব কষতে আর পাইকাররা ব্যস্ত কত দ্রুত মাছ কিনে ঢাকায় পাঠানো যায়। তবে এ আড়তগুলোর ব্যস্ততা সারা বছর থাকে কিন্তু বর্তমান মাছের পরিমাণ বাড়লেও দেখা নেই বড় ইলিশের। মনকে মন উন্মুক্ত ডাকে মাছ বিক্রি হচ্ছে যার ওজন ৩০০ থেকে পাঁচশো গ্রাম। এদিকে, বড় ও মাঝারি আকারের ইলিশের দাম সাধারণ ক্রেতাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, এবার ইলিশের দাম কেজিপ্রতি ৯০০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে। গত বছর একই সময় এই দাম ছিল ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে।
বন্দরে ঘুরে দেখা যায়, বন্দরে মাছ বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৩৫টি আড়তে, যার প্রতিটি আড়তে আবার ৩-৪ টি ট্রলারে মাছ বিক্রি করে। এ ট্রলারগুলো মূলত এ বন্দরের নয়, কিছু এ বন্দরের থাকলেও বাকিগুলো চট্টগ্রাম কক্সবাজার, বাঁশখালী, ভোলা, নোয়াখালী, সন্দীপ, হাতিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে এখানে মাছ বিক্রি করেন।
যে কারণে যখন সমুদ্রে মাছ দেখা যায় তখন হাঁকডাকে মুখর থাকে এ বন্দর। তবে অনেক জেলেরা বড় মাছ না পেয়ে হতাশ, ছোট মাছ পরিমাণে বেশি পেলেও আর্থিকভাবে লাভবান কম হয়। যে কারণে সব জেলেদের আকাঙ্ক্ষা বড় মাছ শিকার করার।
জেলেরা বলছে, বেশ কয়েক বছর বড় মাছ কমে আসছে। আবার সমুদ্রে অবৈধ ট্রলিং ট্রলার চলার কারণে মাছ অনেকটা কমে আসছে। তবে বর্তমানে কিছু ট্রলিং এর ওপরে প্রশাসন নজরদারি বাড়ানোর কারণে ট্রলিং বন্ধের পথে তাই কিছু মাছের আবার দেখা মিলছে।
আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মৎস্য ব্যবসায়ী মো. রাসেল জানায়, বর্তমানে সমুদ্রের জেলেরা বড় মাছ কম পায় ছোট মাছ বেশি পায় যার ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম। আর এ ছোট মাছগুলোর দাম মন প্রতি ১৫ হাজার ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
মাছগুলো এক কেজি পরিমাণ হইতে ৫ থেকে আটটি মাছ দরকার হয়। তবে মার্কেটে এক কেজি ৮০০ গ্রাম, ৭০০ গ্রামের মাছও পাওয়া যায় তবে পরিমাণে খুবই কম।
ইউনুস নামের আর এক ব্যবসায়ী জানান, ‘আলিপুর মৎস্য অবদান কেন্দ্রে অনেক মাছের দেখা মিলছে। তবে সবগুলো মাছ জাটকা এবং অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ। ইলিশ বড় মাছের পরিমাণ খুবই সামান্য, কে আমি কিছু নরম (সামান্য পচা) মাছ কিনেছি ২৫০ টাকা কেজি। আমাদের এ বন্দরের বড় মাছগুলো অনেক সুস্বাদু হয়, বড় মাছের চাহিদাও বেশি তবে বড় মাছের এখন দেখা নেই। যখন সাগরে টলিং চলছে তখন কোনো ধরনের মাছ পাইনি জেলেরা।’
জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১ কেজি ওজনের ইলিশের মন এক লাখ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে। ৭-৮ শো গ্রামের ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকায়। ৫-৬ শো গ্রামের ওজন ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। বেশিরভাগ ট্রলার ১০ থেকে ৫০ মন পর্যন্ত মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরেছে।
আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার মো. কামাল ব্যাপারী জানান, আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মোট ৩৫টি মৎস্য আড়ত রয়েছে। যার প্রতিটিতে দৈনিক গড়ে ২-৩টি ট্রলার মাছ বিক্রি করে। বর্তমানে প্রতিটি ট্রলার মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরছে কিন্তু কোনো ট্রলারে বড় মাছের দেখা নেই। একসময়ে জেলেরা উপকূলের কাছাকাছি মাছ পেত কিন্তু এখন উপকূলের বেশিরভাগ স্থানে চর পরার কারণে মাছের অভায়শ্রম পরিবর্তন হয়েছে। যেটা বড় মাছ না পাওয়ার অনেক বড় কারণ।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, সাম্প্রতিক সময় আমরা লক্ষ্য করছি জেলেদের জালে বেশিরভাগ ছোট ইলিশ ধরা পড়ছে। আবহাওয়া জনিত কারণে জেলেরা অনেক সময় গভীর সমুদ্র যেতে পারে না, যে কারণে ছোট মাছগুলো বেশি ধরা পড়ছে। গভীর সমুদ্র যখন জেলেরা যেতে পারবে তখন আরো বড় মাছের দেখা মিলবে। জাটকা ইলিশের অবরোধকালীন সময় হলো পহেলা নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত। তাই বর্তমানে জাটকা ইলিশের বৈধতা রয়েছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে কঠিন লড়াইয়ের- এমন মন্তব্য করে বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি. কে. গউছ বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারালেও তাদের বীজ দেশে রয়ে গেছে, যা বিএনপির বিরুদ্ধে কাজ করছে। তবে জনগণের ভালোবাসা যদি বিএনপির সঙ্গে থাকে, দেশি-বিদেশি কোনো ষড়যন্ত্রই দলকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। শনিবার দুপুরে কুলাউড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জি. কে. গউছ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন, সেটিই জাতির মুক্তির রক্ষাকবচ। দুই বছর আগেই তিনি ভবিষ্যতের চিত্র জাতির সামনে তুলে ধরেছিলেন। বিএনপি কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করছে, এই নেতৃত্বই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে।
তিনি আরও বলেন, যে জাতি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, যে জাতি নিজের অধিকারের জন্য বুক পেতে দিয়েছে, সেই জাতিকে কোনো শক্তিই দমাতে পারেনি, পারবেও না। বিএনপি আজও সারাদেশের মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায়।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. রেদওয়ান খানের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপনের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির সিলেট বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি এম নাসের রহমান, জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন, সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানসহ জেলা ও উপজেলা নেতারা। প্রয়াত নেতাদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন বহির্বিশ্ব জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি ড. সাইফুল আলম চৌধুরী।
ময়মনসিংহের ভালুকায় দুটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই হেলপার নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ভরাডোবা তাফরিদ কটন মিলের সামনে ময়মনসিংহগামী সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ময়মনসিংহগামী আয়ান রিয়ান পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে উল্টো দিক থেকে আসা শ্যামলী বাংলা পরিবহনের একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অন্তত ১৫ জন আহত হন। গুরুতর অবস্থায় দুইজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতরা হলেন হালুয়াঘাট কড়ইকান্দার নুরুল আমিনের ছেলে শরীফ মিয়া (২১) এবং ময়মনসিংহের বলাশপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে নিরব (১৫)।
ভরাডোবা হাইওয়ে থানার ওসি এবিএম মেহেদী মাসুদ জানান, নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় রাখা হয়েছে। আহতদের ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে এবং গুরুতর কয়েকজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও নৃত্য শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবীতে রংপুরে মানবন্ধন সমাবেশ করেছে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম। সংগঠনের জেলা ও মহানগর কমিটির উদ্যোগে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর কাচারী বাজারে কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন জেলা কমিটির সভাপতি এটিএম গোলাম মোস্তফা। জাতীয় শিক্ষক ফোরাম জেলা কমিটির সভাপতি আব্দুল আলিমের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম মহানগরের সভাপতি আওলাদ হোসেন, মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক ধর্মীয় শিক্ষক এইচ এম হাবিবুর রহমান, রফিজ উদ্দিন মডেল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোজাম্মেল বিন আজাদ, ইসলামী আন্দোলন রংপুর জেলা শাখার সহ প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মুহাঃ লিয়াকত বিন সিদ্দিক, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম জেলা শাখার সেক্রেটারী মুহাঃ মশিউর রহমান।
এ সময় বক্তারা বলেন, ধর্মীয় শিক্ষা মানুষের মধ্যে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ তৈরী করে। একজন শিশু সেই শিক্ষা পেলে ছোট বয়স থেকেই তার সৎ আচারণের ভিত্তি গড়ে উঠে। ফলে ভবিষ্যতে তারা যখন নেতৃত্বে যাবে, তাদের মাধ্যমে ন্যায় ভিত্তিক সমাজ গড়ে উঠবে। অপরদিকে সংগীত বা নৃত্য কখনো প্রতিষ্ঠানে আবশ্যিক বিষয় হতে পারে না। কেউ চাইলে তাদের সন্তানকে আলাদাভাবে এসব শিখাতে পারে। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে সংগীত ও নৃত্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়া কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না।
কুমিল্লায় আমিনুল ইসলামকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় সজীব নামে এক যুবককে আটক করেছে র্যাব। শুক্রবার রাতে চান্দিনা উপজেলার এতবারপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এই সময় তার দেয়া তথ্যমতে হত্যার সময় ব্যবহার করা একটি দা এবং রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করা হয়। শনিবার দুপুরে র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার সাদমান ইবনে আলম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আটককৃত সজীব (২০) কুমিল্লা চান্দিনা থানার বদরপুর এলাকার সফিকুল ইসলামের ছেলে।
র্যাব জানায়, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগী আমিনুলের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়েছিল তার নিকটতম আত্মীয় সিরাজ। কিন্তু দীর্ঘদিন চাকরি না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকে সে। টাকা ফেরত চাইলে সিরাজ পরিকল্পিতভাবে আমিনুলকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ৯ সেপ্টেম্বর সিরাজ ও তার সহযোগীরা আমিনুলকে সিলেট ভ্রমণের কথা বলে বাসা থেকে বের করে। ওই রাতে তারা কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকার বিসমিল্লাহ আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে। পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর রাতে সদর দক্ষিণ উপজেলার মোস্তাফাপুর এলাকায় নিয়ে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিছন থেকে গলা কেটে আমিনুলকে হত্যা করা হয়। পরে লাশ বালু চাপা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তারা।
উল্লেখ্য যে, ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ বালুর নিচ থেকে আমিনুলের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে এবং পরিচয় শনাক্ত করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ১২ সেপ্টেম্বর সদর দক্ষিণ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত আমিনুল ইসলাম কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার পারুয়ারা গ্রামের আলী আজমের ছেলে।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মক সংকটে পড়েছে। প্রায় ৩ লাখ ১৬ হাজার মানুষের জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন চিকিৎসক। ফলে প্রতিদিন অসংখ্য রোগীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ২০১০ সালে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও দীর্ঘ ১৪ বছরেও কাঙ্খিত চিকিৎসক নিয়োগ হয়নি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা গেছে, এখানে মোট ৩২টি চিকিৎসক পদ অনুমোদিত থাকলেও বর্তমানে রয়েছেন একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএন্ডএফপিও), একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও চারজন মেডিকেল অফিসার। বিশাল জনসংখ্যার তুলনায় এই সংখ্যা অত্যন্ত অপ্রতুল।
রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী বহির্বিভাগ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে দুপুর ১টার পর ডাক্তার পাওয়া যায় না। ভর্তি রোগীদেরও নিয়মিত সেবা দেওয়া হয় না। হাসপাতালের ঔষধ সরবরাহ পর্যাপ্ত নয়, ফলে রোগীদের ওষুধ বাহির থেকে কিনতে হয়। বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটর থাকে না।
ডিমলার সদর এলাকার বাসিন্দা ইলিয়াস হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“এত বড় এলাকার জন্য যদি মাত্র কয়েকজন ডাক্তার থাকেন, তাহলে আমরা যাব কোথায়? চিকিৎসা নিতে এসে শুধু হয়রানি আর অবহেলা পাচ্ছি।”
রোগীর স্বজন মকবুল ইসলাম জানান, চিকিৎসক সংকটের কারণে অনেক সময় ইমারজেন্সি সেবা পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। জায়গার অভাবে রোগীদের মেঝে কিংবা বারান্দায় শুয়ে থাকতে হয়, অনেকে আবার চিকিৎসা না পেয়ে ফিরেও যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন,“এখানে চিকিৎসক, জনবল ও ওষুধের সংকট রয়েছে। তারপরও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার।”
জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন,“৪৮ তম বিসিএসের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এখান থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক দ্রত সময়ের মধ্যে পদায়ন করা হবে।”
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন(ইসি)। এরই অংশ হিসেবে আটোয়ারী উপজেলার সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র সহ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে, আটোয়ারী উপজেলার ৬ ইউনিয়নে মোট সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪০টি। মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ২২০ টি। এরমধ্যে স্থায়ী ১৯৯টি ও অস্থায়ী ২১ টি। এ উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ১১,২০২১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫,৬,১৫০ ও মহিলা ভোটার ৫,৫,৮৭১ জন।উপজেলা নির্বাচন অফিসার শাজাহান মানিক জানান, উপজেলার ৬ ইউনিয়নের মধ্যে ১নং মির্জাপুর ইউনিয়নে ৬টি ভোটকেন্দ্রে মোট ২০,৩৫৮ জন ভোটারের মধ্যে ১০,১৫৬ জন পুরুষ ও ১০,২০২ জন মহিলা ভোটার। ২নং তোড়িয়া ইউনিয়নে ৭টি ভোটকেন্দ্রে মোট ১৮,৭১১ জন ভোটারের মধ্যে ৯,৩৭৮ জন পুরুষ ও ৯,৩৩৩ জন মহিলা ভোটার। ৩ নং আলোয়াখোয়া ইউনিয়নে ৮টি ভোটকেন্দের্র মোট ২৩,০৭৫ জন ভোটারের মধ্যে ১১,৭৬৫ জন পুরুষ ও ১১,৩১০ জন মহিলা ভোটার। ৪নং রাধানগর ইউনিয়নে ৭টি ভোটেকেন্দ্রের মোট ২০,৩৩৫ জন ভোটারের মধ্যে ৯,৯৯৮ জন পুরুষ ও ১০,৩৩৭ জন মহিলা ভোটার। ৫নং বলরামপুর ইউনিয়নে ৬টি ভোটকেন্দ্রের মোট ১৪,৩২৪ জন ভোটারের মধ্যে ৭,০৯৭ জন পুরুষ ও ৭,২২৭ জন মহিলা ভোটার রয়েছে এবং ৬নং ধামোর ইউনিয়নে ৬টি ভোটকেন্দ্রের মোট ১৫,২১৮ জন ভোটারের মধ্যে ৭,৭৫৬ জন পুরুষ ও ৭,৪৬২ জন মহিলা ভোটার খসড়া তালিকাভুক্ত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার জানান, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশ হয়েছে। প্রকাশিত সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকার উপর কারো কোন দাবী/ আপত্তি/ সুপারিশ থাকলে তা আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অফিস চলাকালীন সময়ে জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবরে লিখিতভাবে দাখিল করতে হবে। প্রাপ্ত দাবী/ আপত্তি নিস্পত্তির শেষ তারিখ ১২অক্টোবর ২০২৫ এবং খসড়া ভোটকেন্দ্রের সম্ভাব্য তালিকা চুড়ান্তকরণ ২০ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
মন্তব্য