চট্টগ্রাম জেলায় দিনে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার ডোজ লাগে পাঁচ থেকে সাত হাজারের মতো। সেখানে যে পরিমাণ মজুত আছে, তাতে চলবে বড়জোর পাঁচ দিন।
জেলার সিভিল সার্জন ফজলে রাব্বি জানিয়েছেন, তাদের হাতে টিকা আছে ২৭ হাজারের মতো। যা আছে তা দিয়ে বড়জোর ঈদ পর্যন্ত টিকাদান কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া যাবে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে গণটিকা শুরু হওয়ার আগে-পরে বন্দর নগরীর জন্য টিকা পাঠানো হয় আট লাখের মতো।
জেলায় প্রথম ডোজের টিকা দেয়া হয়েছে ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৭০৭টি। টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৩ লাখ ১৬ হাজার ৩০১ জন। আরও ২৭ হাজার দ্বিতীয় ডোজ পাবেন। এরপরও টিকা পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকবে এক লাখের বেশি মানুষ।
এদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
একই চিত্র মোটামুটি সারা দেশেরই। কোনো কোনো জায়গায় এরই মধ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে টিকার দ্বিতীয় ডোজ। কোথাও চলবে এক দিন, দুই দিন বা তিন দিন।
কোনো কোনো জেলার চিত্র অবশ্য কিছুটা ভালো। তবে কোথাও প্রথম ডোজ যাদের দেয়া হয়েছে, তাদের সবার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যাবে না।
যে কারণে সংকট
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত টিকা পেয়েছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে। তবে যত টিকা পাওয়ার কথা ছিল, ততগুলো আসেনি।
৩ কোটি ৪০ লাখ কেনা টিকার মধ্যে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত পেয়েছে ৭০ লাখ। বাকি টিকা আসা অনিশ্চিত পুরোপুরি। এর বাইরে আছে ভারত সরকারের উপহারের ৩৩ লাখ টিকা।
সিরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের জন্য আরও ৫০ লাখ টিকা প্রস্তুত রাখালেও সেটি পাঠাতে পারছে না ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে।
সেখানে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা এখন চার লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে সে দেশই নিজেদের চাহিদামতো টিকা দিতে পারছে না।
সিরাম তার সক্ষমতা অনুযায়ী টিকা উৎপাদন করতে পারছে না কাঁচামালের অভাবে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার কাঁচামাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গণটিকাদান শুরুর ৭৮ দিনের মাথায় প্রথম ডোজ বন্ধ হয়ে গেলেও তত দিনে প্রয়োগ করা হয় ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৬ টিকা। এদের সবার দ্বিতীয় ডোজ লাগবেই।
এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য বলছে, প্রথম ডোজ যে কোম্পানির টিকা দেয়া হয়েছে, দ্বিতীয় ডোজের সেই পরিমাণ টিকাই লাগবে। ফলে প্রথম ডোজে যাদের সিরামের টিকা দেয়া হয়েছে, তাদের সবার টিকা নিশ্চিত করতে হলে আরও অন্তত ১৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৯২ ডোজ লাগবে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারত থেকে আরও ২০ লাখ টিকা আসবে বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু সেটি আসেনি।
বিকল্প হিসেবে ইউরোপ ও আমেরিকায় অব্যবহৃত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা চেয়েছে বাংলাদেশ।
সিরাম উৎপাদন করছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাই। ইউরোপের বেশ কিছু দেশে প্রয়োগের পর রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা তৈরি হওয়ার পর সেসব দেশে এই টিকা আর দেয়া হয়নি।
টিকা প্রয়োগ বন্ধ দুই জেলায়
চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় রোববার টিকা বন্ধ হয়ে গেছে খাগড়াছড়িতে।
এ জেলায় প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছেন ৩০ হাজার ২৩২ জন। এদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়ে গেছে ১৭ হাজার ৮১৭ জনকে। বাকিদের কী হবে, তা জানা নেই স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের বন্ধ করে দেয়া টিকাদান কেন্দ্র। ছবি: নিউজবাংলা
টিকার মজুত তলানিতে নামার পর প্রয়োগ বন্ধ রেখেছে সুনামগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রশাসনও।
আরও বেশ কিছু জেলায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোথাও টিকার মজুতে চলবে দুই দিন, কোথাও চলবে চার থেকে পাঁচ দিন।
বরিশাল বিভাগে মজুত চট্টগ্রাম জেলার সমান
গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গণটিকাদান শুরুর জন্য বরিশাল বিভাগে পাঠানো হয় ৪ লাখ ২৯ হাজার ৮২৩ ডোজ। বর্তমান মজুত রয়েছে ২৭ হাজার ৯২০ ডোজ।
এর মধ্যে প্রথম ডোজের জন্য পাঠানো হয় ২ লাখ ৫০ হাজার ৩০০টি। এর সব টিকাই প্রয়োগ হয়ে গেছে।
দ্বিতীয় ডোজের জন্য পাঠানো হয় ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫২০টি। দ্বিতীয় ডোজের টিকা বাকি আছে আর ২৭ হাজার ৯২০টি।
বিভাগে দিনে গড়ে তিন হাজার টিকা লাগে বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল। এই হিসাবে এ বিভাগে ৯ দিন পর আর কোনো টিকা থাকবে না।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটির কারণে টিকা সংকটের মধ্যে পড়তে হবে না। যা মজুত রয়েছে, তা দিয়ে বেশ কিছুদিন কভার করা যাবে।
‘তবে কত দিন যাবে, সেটা অ্যাগজ্যাক্ট বলতে পারছি না। সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলছে। শিগগিরই আরও টিকা আসবে বলে আশা আমাদের।’
সিলেটে চলবে আর দুই দিন
সিলেট মহানগরে দুই হাজার ও গোটা জেলায় আরও প্রায় সাত হাজার ডোজ টিকা মজুত রয়েছে। এই মজুত চলবে দুই দিন।
রোববার পর্যন্ত সিলেট নগরে প্রথম ও দ্বিতীয় মিলিয়ে ৫৯ হাজার ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।
যাদের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে তাদের সবার দ্বিতীয় ডোজ দিতে লাগবে আরও ১৫ হাজার।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, রোববার নগরে টিকা দেয়া হয়েছে ১ হাজার ১৩৭ জনকে। এ হারে চললে দুই দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে মজুত।
তিনি বলেন, ‘রোববার টিকা কেন্দ্রে উপস্থিত সকল গ্রহীতাকে টিকা দেয়া সম্ভব হয়নি। তাই দেশে নতুন করে টিকা না আসা পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজের জন্য নিবন্ধিতদের অপেক্ষায় থাকতে হবে।’
জেলার সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, ‘জেলায় আরও সাত হাজার ডোজ ভ্যাকসিনের মজুত রয়েছে। তা দিয়ে ঈদের আগে পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া যাবে।’
সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন শামস উদ্দিন জানান, জেলায় ৭০০ ভায়াল টিকা মজুত রয়েছে। চাহিদার তুলনায় এই মজুত সামান্য হওয়ায় টিকা দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এক ভায়ালে টিকা থাকে ১০টি। সে হিসাবে জেলায় টিকার মজুত আছে ৭ হাজার।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দিন মোর্শেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখনও ৪৯২ ভায়াল টিকা জমা আছে। আরও ৫ দিনের মতো টিকা দেয়া যাবে। যদি এরই মধ্যে নতুন টিকা না আসে তবে টিকাদান বন্ধ থাকবে।’
খুলনায় চলবে চার দিন
খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ফেরদৌসী আক্তার জানান, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় রোববার পর্যন্ত ৩৭ হাজার ১৩০টি টিকার মজুত আছে। আর এক দিনেই সেখানে লাগে ২০ থেকে ২৬ হাজার টিকা।
এর মধ্যে খুলনা জেলায় আছে সবচেয়ে বেশি ১৪ হাজার ৯৭০টি। এই জেলায় দিনে টিকা লাগে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার। এই হিসাবে চার থেকে বড়জোর পাঁচ দিন চলবে টিকা।
বাগেরহাটে ২ হাজার ৭৫০টি, যশোরে ২ হাজার ৯০টি, কুষ্টিয়ায় ১ হাজার ১৩০টি, মাগুরায় ২ হাজার ১৩০টি, নড়াইলে ২ হাজার ২৯০টি, সাতক্ষীরায় ২ হাজার ২৫০টি, ঝিনাইদহে ৩ হাজার ৩০টি, চুয়াডাঙ্গায় ৫ হাজার ৭৭০টি আর মেহেরপুরে ৭২০টি টিকা মজুত আছে।
এ পরিমাণ টিকায় কোনো জেলায় চলবে এক দিন, কোনো জেলায় দুই দিন বা কোনো জেলায় তিন দিন।
তুলনামূলক ভালো অবস্থানে ময়মনসিংহ
জেলার সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান, তাদের হাতে ১৯ হাজার টিকা রয়েছে। প্রতিদিন যে হারে টিকা লাগে, তা দিয়ে ২০ মে পর্যন্ত টিকাদান কর্মসূচি চালানো সম্ভব হবে।
ময়মনসিংহ বিভাগের আরেক জেলা জামালপুরের সিভিল সার্জন প্রণয় কান্তি দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে পাঁচ হাজার ডোজের কাছাকাছি টিকা এখন মজুত আছে। ঈদ পর্যন্ত আমরা এই টিকা প্রদান করতে পারব। তারপর শেষ হয়ে যাবে।’
এ জেলাতেও যে টিকা আছে, তা নিয়ে সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া সম্ভব হবে না।
সিভিল সার্জন বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দেবে সেভাবেই আমরা কাজ করব।’
ঠাকুরগাঁওয়ে চলবে তিন দিন
ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন মাহফুজুর রহমান জানান, গোটা জেলায় এখন টিকা আছে দুই হাজারের মতো। দিনে গড়ে ছয় থেকে সাত শ টিকা লাগে। এই হিসাবে এই জেলায় টিকা দেয়া সম্ভব আর বড়জোর তিন দিন।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কেবি) কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আতাউর রহমান আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তার এই পদক্ষেপে সংহতি জানিয়ে কলেজের অন্যান্য শিক্ষকরা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। শনিবার কলেজ প্রাঙ্গণে অনশন করেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, কেবি কলেজে বোমা হামলার হুমকি, শিক্ষকদের শারীরিক নির্যাতনের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নানা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে তারা এই আমরণ অনশন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক বি. এম. আব্দুল্লাহ রনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অধ্যক্ষ ঘোষণা দেন, কলেজ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে চলমান হুমকি এবং বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের প্রতিবাদে তিনি আমরণ অনশনে বসবেন। তখন অন্যান্য শিক্ষকরা একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমরা অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেব।’
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দিনদুপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় নগদ ৬০ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত যুবকের নাম আরকান চৌধুরী (২৫)। তিনি কাঞ্চনা ইউনিয়নের মনুফকিরহাট জাফর চৌধুরীবাড়ি এলাকার মো. জাকির হোসেনের ছেলে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মনুফকিরহাট জাফর চৌধুরীবাড়ি এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
থানার ওসি জাহেদুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আরকান চৌধুরী ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। শনিবার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে কাঞ্চনা মনুফকিরহাট হাটের জলদাশপাড়া ব্রিজের ওপর গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা অভি চৌধুরীর কাছ থেকে নগদ ৩ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন ছিনতাইকারীরা। অভি কাঞ্চনা শাখার কেন্দ্র ব্যবস্থাপক। পরে এ ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন ব্যাংক কর্মকর্তা।
নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় ধনু নদে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্পিডবোট উল্টে শিশুসহ ৪ জন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পর উষা মনির (৪) তার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। শনিবার ধনু নদের চরপাড়া এলাকায় ভাসমান অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়।
খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল অন্যদের লাশ উদ্ধারের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নিখোঁজ রয়েছেন, গাজীপুর ইউনিয়নের বয়রা গ্রামের নবাব মিয়ার মেয়ে শিরিন আক্তার (১৮), আন্ধাইর গ্রামের স্বপন মিয়ার মেয়ে লায়লা (৭) ও সামসু মিয়ার মেয়ে সামিয়া (১১)।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভুলুয়া নদীর তীব্র ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে গেছে কয়েক হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি ও কয়েক একর কৃষি জমি। ভাঙন রোদে ভূলুয়া নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ভূলুয়া নদীর পাড়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন- চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হুমায়ুন কবির, মীর সমাজ জামে মসজিদের সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ, স্থানীয় বাসিন্দা জহির উদ্দীন, শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলাম, আজিমা বেগম, কুলছুম ও রাবেয়া বেগম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার সিমান্তের চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ভূলুয়া নদী। নদীটির সুবর্ণচর অংশে চর জেগে ওঠায় রামগতির অংশে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে মীর সমাজের কয়েক হাজার পরিবার নদীভাঙনের মুখে পড়ে। ইতোমধ্যে অন্তত শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখনো ৪০টির মতো বসতবাড়ি হুমকির মুখে আছে। এছাড়া কয়েক একর কৃষি জমি ভূলুয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পাশেই রয়েছে, উত্তর চর আফজাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরআফজল মীর সমাজ নুরানী মাদ্রাসা, চরআফজল মীর সমাজ জামে মসজিদসহ অন্তত ১০ হাজার মানুষের বসবাস। এসব মানুষগুলো রয়েছে চরম উদ্বিগ্ন উৎকণ্ঠায়। বক্তারা আরও বলেন, ভুলুয়া নদীর ওই স্থানে দ্রুত ব্লক বাঁধ নির্মাণ না করলে অল্প সময়ের মধ্যে মীর সমাজটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই তারা দ্রুত নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান বলেন, সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে ওই স্থানে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দিন সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে স্ট্রোক করে মারা যান চ্যানেল এস-এর সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম শিবলী।
নবনির্বাচিত ডাকসু নেতা ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতারা গত শুক্রবার সন্ধ্যায় টঙ্গীর মধুমিতা রোডের শিবলীর বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তারা মৃতের পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং তরিকুল শিবলীর পরিবারের হাতে নগদ দুই লাখ টাকা তুলে দেন।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ডাকসুর নব-নির্বাচিত ভিপি ও শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম, ডাকসু জিএস এস এম ফরহাদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহ ও শিবিরের গাজীপুর মহানগর সভাপতিসহ অন্যান্য নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ডাকসুর নবনির্বাচিত জিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ লেখেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের দিন সংবাদ কাভার করতে গিয়ে ইন্তেকাল করেছেন তরিকুল শিবলী ভাই। তিনি রেখে গেছেন দুই সন্তান। বড় সন্তান আয়াতের বয়স চার বছর এবং ছোট সন্তান আজমীনের বয়স দেড় বছর।’
ফরহাদ আরও লেখেন, চার বছর বয়সী আয়াত দীর্ঘ আলাপের ফাঁকে আমাকে বলছে- ‘আমার বাবাকে আল্লাহ নিয়ে গেছেন এবং আল্লাহ বাবাকে সুন্দর একটা জায়গায় রেখেছেন। যেহেতু বাবা আসবেন না, তাই আমি ও আমার মা ছোট বোন আজমীনের খোঁজখবর রাখবো, আদর করবো।’ অবুঝ শিশুর মুখে এমন ভারি কথা!
তিনি জানান, আমরা পরিবারের সঙ্গে প্রাথমিক সাক্ষাতে ছোট্ট দুই শিশুর খরচের জন্য ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আপাতত দুই লাখ টাকা পৌঁছে দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা সব প্রয়োজনে সাধ্যমতো পরিবারটির পাশে থাকবো। বাবা হারানো ছোট শিশুদের জন্য দোয়া চাই।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার বিভিন্ন অপরাধ প্রবণ এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. দুলাল মিয়া (২৭), গোলাম রাব্বি ওরফে বাপ্পি (১৯), মো. শাকিল হাওলাদার (২৫), মো. বাপ্পি (৩০), মো. হৃদয় হোসেন (৩০), মো. বিজয় (১৮), মো. ইজাজুল হোসেন (১৮), মো. কামাল হোসেন (৩২), মো. বাবু ওরফে ছোট বাবু (৩০) ও মো. সুমন (৩২)।
এতে বলা হয়, গত শুক্রবার দিনব্যাপী বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদপুর থানার বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত থাকা দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে নিয়মিত মামলার আসামি, দস্যুতা মামলার আসামি, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী।
গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
রাজধানীর বনানীর একটি বাসা থেকে চুরি যাওয়া ২৪ লাখ সাড়ে ৮৪ হাজার টাকা, মোটরসাইকেল এবং দুইটি মোবাইল ফোনসহ মো. কাউছার আহমেদ (২২) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
গত শুক্রবার রাত পৌঁনে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির বনানী থানা পুলিশ।
শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত ৯ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী মুস্তাজিরুল শোভন ইসলামের বনানীর বাসায় চুরি হয়। হ্যান্ড সুটকেসে থাকা ব্যবসায়িক কাজের জন্য রাখা ৩০ লাখ টাকা চোর চুরি করে নিয়ে যায়। পরে ১১ সেপ্টেম্বর ভিক্টিম মুস্তাজিরুল বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন।
এতে আরও বলা হয়, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তকারী দল দ্রুত চুরির সাথে জড়িত ব্যক্তির পরিচয় ও অবস্থান শনাক্ত করে। পরবর্তীতে মানিকগঞ্জে অভিযান চালিয়ে কাউছারকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে চুরির ঘটনা স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
মন্তব্য