টানা লকডাউনের মধ্যে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মাত্রা কিছুটা কমেছে। সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৭ জনের, যা গত ২৬ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন।
এর আগে ৪ এপ্রিল ৫৩ জনের মৃত্যু সংবাদ দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত একদিনে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে ২ হাজার ১৭৭ জনের শরীরে। দেশে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ লাখ ৫৯ হাজার ১২৩ জনের দেহে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১ হাজার ৪৫০ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৪১৯টি ল্যাবে ২১ হাজার ৪৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
গত একদিনে ৪ হাজার ২৩৫ জন সুস্থ হয়েছে। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৬ লাখ ৮১ হাজার ৪২৬ জন। সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ৩২ জন পুরুষ, ২৫ জন নারী। তাদের মধ্যে দুইজন বাদে সবাই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
বয়স বিবেচনায় মৃত ৫৭ জনের মধ্যে বিশোর্ধ্ব এক, ত্রিশোর্ধ্ব ২১, চল্লিশোর্ধ্ব সাত, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৩, ষাটোর্ধ্ব ৩৫ জন।
বিভাগ অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপরই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ, ১৩ জন। এছাড়া, রাজশাহীতে দুই, খুলনায় পাঁচ, বরিশাল দুই, সিলেটে পাঁচ ও রংপুরে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছরের ৮ মার্চ। ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তথ্য প্রকাশ করা হয়। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের কথা ঘোষণা করে।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত বছরের ৪ জানুয়ারি থেকেই দেশের বিমানবন্দরসহ সব স্থল ও নৌবন্দরে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং শুরু করে। ওই বছরের ৪ মার্চ সমন্বিত করোনা কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়।
আরও পড়ুন:আদালত অবমাননার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার অপসারণের পর এটাই প্রথম কোনো আদালতের রায়, যাতে তাকে দণ্ডিত করা হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) আইসিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
একই মামলায় গাইবান্ধা জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এই ধরনের মামলায় পলাতক আসামির জন্য আইনজীবী নিয়োগের পূর্ব নজির না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত বছরের ২৫ অক্টোবর শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।
সেই অডিও ক্লিপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘২২৬ জনকে মারার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—যা বিচারব্যবস্থার প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে আদালত। পরে এই ঘটনায় আইসিটিতে মামলা করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ৩০ এপ্রিল এ-সংক্রান্ত শুনানিতে দুই আসামিকে ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। ধার্য তারিখে তারা হাজির হননি। কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা দেননি। সেদিন ট্রাইব্যুনাল দুই আসামিকে সশরীর হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেন।
পরদিন দুটি সংবাদপত্রে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দুজনকে গত ৩ জুন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়। সেদিনও তারা হাজির হননি। পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ১৯ জুন তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
১৯ জুন এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয় ২৫ জুন।
২৫ জুন মামলায় প্রস্তুতি নিতে অ্যামিকাস কিউরি মশিউজ্জামানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এক সপ্তাহ সময় দেন ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয় ২ জুলাই। আজ দুই আসামিকে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দিলেন ট্রাইব্যুনাল।
সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে গেল দু’দিন ধরে ভোলার অভ্যন্তরীণ নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে বইছে দমকা বাতাস।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর উপ-পরিচালক মো. রিয়াদ হোসেন দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাগর উত্তাল হওয়ায় সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর ও নদী বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। এ অবস্থায় বিআইডব্লিউটিএ ভোলার ইলিশা-লক্ষীপুর, আলেকজান্ডার-দৌলতখান, মনপুরা-তজুমুদ্দিন ও মনপুরা-ঢাকাসহ জেলার অভ্যন্তরীণ বেশ কয়েকটি রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছে।
এদিকে, লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। যাত্রীরা বলছেন, দ্বীপ জেলা ভোলা থেকে অন্য জেলায় যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌপথ। কিন্তু, বৈরী আবহাওয়ায় তারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
বিআইডব্লিউটিএ এর উপ-পরিচালক মো. রিয়াদ হোসেন জানান, সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত চলছে। এছাড়াও নদীবন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত চলছে। যাঁর ফলে নদী ও সমুদ্র বেশ উত্তাল রয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভোলার অভ্যন্তরীণ বেশ কয়েকটি রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি কিংবা তৃতীয় সপ্তাহের দিকে জুলাই সনদে পৌঁছানোর বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, ‘চেষ্টা করলে জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে আমরা একটি সনদের জায়গায় যেতে পারব।’
বুধবার (২ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আলোচনার শুরুতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘এক বছর আগে, আমরা সবাই মিলে সব ধরনের বাধা-বিঘ্ন মোকাবিলা করে যে অর্জন করতে চেয়েছি, তার একটি পর্যায় অতিক্রম করে আজ এখানে আমরা সমবেত হয়েছি। বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামোর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেন আমরা একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র তৈরি করতে পারি, সেই চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যেন নাগরিকের গণতান্ত্রিক ও জীবনের অধিকার সুরক্ষিত হয়, যেন গুম-হত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও বিচারিক হত্যার শিকার হতে না হয় আমাদের।’
‘এটি আপনাদের (রাজনীতিবিদ) অবদান, আপনাদের কর্মীদের অবদান, নাগরিকদের অবদান। এটি সব রাজনৈতিক দলের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের সাফল্য।’
তিনি বলেন, ‘এই সাফল্য শুধু একটি পর্যায়ে এসে থেমে গেলে হবে না। এটিকে সুরক্ষিত করতে হবে এবং সেই সুরক্ষার উপায় খুঁজছি আমরা, যেন সংস্কারের কার্যক্রমে এগিয়ে যেতে পারি। আপনারা তাতে আন্তরিকভাবে সহায়তা করছেন, যদিও এ দায়িত্ব আমাদের সবার।’
‘কখনো কখনো আমরা অগ্রসর হই, কখনো আবার যতটা অগ্রসর হতে চাই, ততটা না পেরে খানিকটা হতাশ হই। কিন্তু তবুও আজকের এই দিনে দাঁড়িয়ে আমার মনে হচ্ছে, আমরা চেষ্টা করলে জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে একটি সনদের জায়গায় যেতে পারব।’
ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, ‘আপনাদের সবার চেষ্টা ও সহযোগিতা হচ্ছে সবচেয়ে বড় জিনিস। দলগত, জোটগত ও ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করে আমরা আশাবাদী হয়েছি। আমি মনে করি, আমরা এই জায়গাটিতে পৌঁছাতে পারব। কারণ, আমাদের সবার সেই আন্তরিক চেষ্টা আছে।’
জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতদের স্মরণে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা আমাদের বন্ধু, কর্মী ও ভাইবোনদের হারিয়েছি। অনেকে আহত অবস্থায় এখনো জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন; লড়াই করছেন। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও দায়বদ্ধতা থেকে এখানে আমাদের আসা।’
‘প্রতিদিনই আমরা পরস্পরকে জানছি ও বুঝছি। সে কারণে আমি আশাবাদী। আমরা আশাবাদী যে একটি জায়গায় পৌঁছাতে পারব। কেননা, যে দায় ও দায়বদ্ধতা—সেটি আপনারা প্রাণ দিয়ে উপলব্ধি করেন। আমরাও প্রাণ দিয়ে উপলব্ধি করি। মানুষেরও প্রত্যাশা আছে, তারা আমাদের দিকে তাকিয়ে আছেন। সেই জায়গায়, আমরা সবাই যেন অগ্রসর হতে পারি।’
জুলাইয়ের মাঝামাঝি কিংবা তৃতীয় সপ্তাহের দিকে জুলাই সনদে পৌঁছানোর বিষয়ে আশাবাদের কথা জানিয়ে উদ্বোধনী বক্তব্য শেষ করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি।
বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি উপস্থিত আছেন, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার ও ড. আইয়ুব মিয়া।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সাভারের আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে (ফরমাল চার্জ) অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
বুধবার সকালে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর প্রধান প্রসিকিউটরের পক্ষে প্রসিকিউটর ফারুক আহমেদ ও মো. সাইমুম রেজা তালুকদার এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছে প্রসিকিউশন।
মামলা দায়েরের পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর, তাদের মরদেহ একটি পুলিশ ভ্যানে রেখে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, আগুন দেওয়ার সময় অন্তত একজন তরুণ জীবিত ছিলেন এবং তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগানো হয়।
তিনি আরো বলেন, এটি ছিল একটি ভয়াবহ ও নৃশংস ঘটনা, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের আওতায় বিচারযোগ্য।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার দুদকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকার পরও এই মামলা পরিসমাপ্তি করা হয়। গেল জানুয়ারিতে শুরু হওয়া অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গায়ের জোরেই পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছিল তৎকালীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দাবি, বেশকিছু দুর্নীতির তথ্য মিলেছে। এই মামলায় আসামির অব্যাহতির পেছনে তৎকালীন কমিশনের দায় আছে কি না তাও খতিয়ে দেখার কথা জানান তিনি।
আব্দুল মোমেন বলেন, নতুন তদন্তে কারো সংশ্লিষ্টতা মিললে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে করা মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘ একযুগ পর; গত জানুয়ারি মাসে সেই মামলা পুনরায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। গঠন করা হয় উচ্চ পর্যায়ে কমিটি।
জানা যায়, ২০১২ সালে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করে দুদক। তবে ২০১৪ সালে অদৃশ্য কারণে মামলাটি পরিসমাপ্তি করে তৎকালীন বদিউজ্জামান ও শাহাবুদ্দিন চুপ্পু কমিশন।
চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছ রক্ষায় এখন থেকে ড্রোন দিয়ে নজরদারি করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। গতকাল মঙ্গলবার হালদা নদীর মোবারক খিল এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হালদা নদীর মা মাছ রক্ষায় নজরদারির জন্য ব্যবহার করা হবে চারটি ড্রোন। নদীর পরিবেশ রক্ষায় এবং সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে এসব ড্রোন ব্যবহার করা হবে।
রাউজান উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলমগীর হোসাইন বলেন, চারটি ড্রোন মৎস্য অধিদপ্তর থেকে দেওয়া হয়েছে হালদা এবং কর্ণফুলীর মোহনা পর্যবেক্ষণ করার জন্য। ড্রোনগুলো দিয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের ১২টি দল নদী পর্যবেক্ষণ করবে। এতে নদীতে সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ হবে। একেকটি ড্রোন সাত লাখ টাকা করে কেনা হয়েছে ঠিকাদারের মাধ্যমে।
এর আগে সকালে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার গহিরা এলাকায় মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। এরপর স্পিডবোটে হালদা নদীর ২০ কিলোমিটার এলাকা পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। দুপুর দুইটায় হালদার অংশীজনদের সঙ্গে মোবারক খিল এলাকায় মতবিনিময় সভা করেন।
মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা হালদার প্রাকৃতিক পরিবেশ, দূষণ, ডিম সংগ্রহ ও জেলেদের নানা সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘হালদা দেশের বড় ঐতিহ্য। এটা আমাদের রক্ষা করতে হবে। তবে একা নয় সবাই মিলে।’
হালদার দূষণ প্রসঙ্গে ফরিদা আখতার বলেন, ‘যারা নদীর পরিবেশ দূষণ করে, তারা নদীকে নির্যাতন করে। এটাকে আমি দূষণ বলব না। এদের নির্যাতনকারী হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। তাহলে দূষণ বন্ধ করা সহজ হবে।’
মৎস্য অধিদপ্তরের হালদা নদী উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা প্রকল্প আয়োজিত এই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন। এতে বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব আবদুল করিম, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুর রউফ, নৌ পুলিশ সুপার আ ফ ম নিজাম উদ্দিন, হালদা প্রকল্পের পরিচালক মিজানুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হালদা গবেষক মনজুরুল কিবরিয়া, মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক আনোয়ার হোসেন হালদা রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আলী।
মন্তব্য