নিয়োগপ্রাপ্ত কেউ নেই। একজন ছিলেন, তিনি টানা দুই মাস কাজ করার পর চলে গেছেন। এখন ভরসা চার স্বেচ্ছাসেবী। তারাই করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো সহযোগিতা এবং কোনো ধরনের সুযোগসুবিধা ছাড়াই বিনা মূল্যে তারা এ কাজ করে যাচ্ছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে এ সংকটের সমাধান করা হবে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গত বছরের মার্চ থেকে করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের এবং পরীক্ষা করতে আসা মানুষের নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করেন হাসপাতালের নিয়োগকৃত টেকনোলজিস্ট বিভূতি ভূষণ এবং তার সহযোগী বায়জিদ। টানা দুই মাস নমুনা সংগ্রহের পর বিভূতি ও বায়জিদকে বিশ্রামে পাঠানো হয়।
এরপর থেকে নমুনা সংগ্রহে বিনা পয়সায় কাজ শুরু করেন পাঁচ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট। কিছুদিন পর একজন চলে যান। বাকি চারজন গত বছরের জুন থেকে টানা কাজ করে চলেছেন।
নমুনা সংগ্রহকারী স্বেচ্ছাসেবী মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) এবং বরিশাল নগরীর বাসিন্দা শাকিল আহমেদ জানান, প্রতিদিন এক শর বেশি নমুনা সংগ্রহ করতে হয়। করোনা ইউনিটে ভর্তি রোগী থেকে শুরু করে বাইরে থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য আসা মানুষের নমুনা আমাদেরই সংগ্রহ করতে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা আমরা পাইনি। কোনো প্রণোদনাও দেয়া হয়নি আমাদের।’
আরেক স্বেচ্ছসেবী মো. হোসেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা চারজন মিলে ২০ হাজারের বেশি নমুনা সংগ্রহ করেছি। কোনো লাভের জন্য আমরা এই কাজ করিনি। তবে আমরা আমাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু চাই।’
নমুনা সংগ্রহকারী মিরাজুল হক বলেন, ‘নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে আমাদের মধ্যে দুইজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়। মোটামুটি সুস্থ হয়ে আবার কাজে ফিরেছে। আমরা কাজ না করলে কাজ করার কোনো লোক নেই এখানে। মূলত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও বিপাকে রয়েছে। কেননা, এখানে কেউ কাজ করতে চাচ্ছে না। এখন নমুনা সংগ্রহের জন্য হাসপাতালের নিয়োগকৃত কেউই নেই। আমি, হোসেন, শাকিল ও প্রিন্সই কাজ করছি। আমাদের সুযোগসুবিধা সরকার দেখলে ভালো হতো।’
শের-ই-বাংলা মেডিক্যালের ইনডোর ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. সুদীপ হালদার বলেন, ‘নমুনা সংগ্রহে বা করোনা রোগীদের সেবায় যে স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন তাদের উপযুক্ত মর্যাদা এবং বেতনকাঠামোতে আনা প্রয়োজন। তারা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন।’
শের-ই-বাংলা মেডিক্যালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘স্বেচ্ছসেবকদের বিষয়টি আমাদের মাথায় রয়েছে। তাদের আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ এবং বেতনকাঠামোর মধ্যে আনার প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া তাদের একটি সনদ দেয়া হবে। যা তাদের চাকরি পেতে সহায়ক হবে।’
বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘সুযোগসুবিধা না দিলে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজের আগ্রহ হারাবে। এদের কীভাবে বেতনকাঠামোর মধ্যে আনা যায় সেই চিন্তা আমাদের রয়েছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।’
শার্শা গোগা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার সময় ৪ জন নারী পুরুষ কে আটক করেছে বিজিবি। শুক্রবার সকালে সীমান্ত এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এ সময় কোন পাচারকারীকে আটক করতে পারেনি বিজিবি।
খুলনা ব্যাটালিয়ন ২১বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ খুরশীদ আনোয়ার পিবিজিএম, পিএসসি, ইঞ্জিনিয়ার্স জানান গোপন সংবাদে জানতে পারি পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া কিছু লোক সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাবে। এমন সংবাদে ভিত্তিতে গোগা ক্যাম্পের সদস্যরা সীমান্তের কাছ থেকে তাদেরকে আটক করেন।
ওই সময় ৪টি মোবাইল ও ১টি মোটরসাইকেল আটক করা হয়।তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ আইনে মামলা দিয়ে শার্শা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
আটকরা হলো মো. মিঠু মোল্লা (৩২), পিতা-মো. কামরুল মোল্লা, গ্রাম বর্ণিমালাধরা, পোস্ট সিদ্ধারপুর, থানা অভয়নগর, জেলা যশোর, মো. মিজানুর সরদার (৪৫), পিতা মৃত আহমদ সরদার, গ্রাম পাতালিয়া, পোস্ট সিদ্ধারপুর যশোর, মোছা শাপলা খাতুন (২৩), পিতা মো. সরোয়ার বিশ্বাস, গ্রাম বলডাঙ্গা কাজিপুর, পো রাজারহাট, থানা কোতোয়ালি, জেলা যশোর ও সুমি আক্তার (২৪), পিতা রতন খলিফা, গ্রামঃ চরখোলা, পোস্টঃ নাজিরপুর, থানাঃ নাজিরপুর, জেলাঃ পিরোজপুর।
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কাভার্ডভ্যানে পেছন থেকে আসা বেপরোয়া গতির প্রাইভেটকার ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে বাবা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। একই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। হতাহত ব্যক্তিরা একটি প্রাইভেটকার করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম শহর ও কক্সবাজার বেড়াতে যাচ্ছিলেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মীরসরাইয়ের ঠাকুরদীঘি বাজার এলাকায় চট্টগ্রামমুখী লেনে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন, ঢাকার উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা গোলাম সারোয়ার (৪৩) ও তার তিন বছর বয়সের মেয়ে মুসকান। একই দুর্ঘটনায় গোলাম সারোয়ারের স্ত্রী উম্মে সালমা (৩৩), ছেলে ইমতিয়াজ আহমেদ (৯), গাড়িচালক গিয়াস উদ্দিন (৩০) ও সাগর (৩০) নামের এক সহকর্মী আহত হয়েছেন। গোলাম সারোয়ার একটি আসবাব তৈরির প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ছিলেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
মীরসরাই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দলনেতা সাহ্লাঞো মারমা জানান, সকালে ঠাকুরদীঘি বাজারে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনের পাশে থামিয়ে় রাখা একটি কাভার্ডভ্যানের পেছনে ধাক্কা দেয় চট্টগ্রামমুখী কালো রঙের প্রাইভেটকার। দুর্ঘটনায় প্রাইভেটকারটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন। এছাড়া চারজনকে উদ্ধার করে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গুরুতর আহত দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত গোলাম সরোয়ারের স্ত্রী উম্মে সালমা বলেন, ‘কাভার্ডভ্যানটির পেছনে ধাক্কা দেওয়ার পর বিকট শব্দে আমি অচেতন হয়ে পড়েছিলাম। হাসপাতালে জ্ঞান ফেরার পর জানতে পারি, আমার স্বামী ও তিন বছরের মেয়েটা আর বেঁচে নেই। আমার ছেলেটাও আহত হয়েছে, সে ঢাকার একটি মাদরাসায় পড়ে। একটি দুর্ঘটনা আমার সাজানো সংসারটি তছনছ করে দিল।’
মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজু সিংহ বলেন, আহত চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গিয়াস উদ্দিন ও সাগর নামের দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উম্মে সালমা ও তার ছেলে ইমতিয়াজ আহমেদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক বোরহান উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন দুটি পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মাইক্রোবাসটির চালক চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে ৮৩ জন আহত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া মানবিক রিকশা চালক মহরম আলী রুবেলকে পুরস্কৃত করেছেন প্রক্টরিয়াল বডি। গত বৃহস্পতিবার চবির প্রক্টর অফিসে তাকে পুরস্কৃত করা হয়। মানবিক রিকশা চালক মহরম আলী রুবেলে সরলতা, সততা, মানবিকতা ও দায়িত্ববোধের তাকে ওই পুরস্কার দেয়া হয়।
চবি সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন বলেন, মহরম আলী রুবেল পেশায় একজন রিকশা চালক হলেও চিন্তায় ও মননে পুরোদস্তুর একজন মানবিক মানুষ। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনায় ৮৩ জন আহত শিক্ষার্থীকে চবি মেডিকেল সেন্টারে বিনা ভাড়ায় নিজের রিকশায় যাত্রী হিসেবে সেবা দিয়ে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন তিনি। প্রক্টরিয়াল বডির পক্ষ থেকে রুবেলকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
গত ৩১ আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর চবি শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছিল। এ পরিস্থিতিতে যখন অধিকাংশ যানবাহন ভয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যায়। এ সময় মানবিক রুবেল তার রিকশা নিয়ে এগিয়ে আসেন। তিনি কোনো ভাড়া ছাড়াই প্রায় ৮৩ জন আহত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে পৌঁছে দেন। রুবেলের এই মহৎ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি তাকে পুরস্কৃত করেছে।
মাছের ঘেরে সারি সারি গাছে ঝুলছে হলুদ ও কালো রঙের অমৌসুমি তরমুজ। কৃষির এই নতুন উদ্যোগ আকৃষ্ট করেছে কৃষক ও ভোক্তাদের দৃষ্টি। আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়ায় অনেক কৃষক ঝুঁকছেন এ চাষের দিকে। এমনই আধুনিকভাবে তরমুজ চাষ করছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের এক কৃষক। যার নাম আধুনিক চাষি রমজান আলী। তিনি উন্নত প্রযুক্তি ও উন্নত জাতের বীজ থেকে আধুনিক চাষে চ্যালেঞ্জ নিয়ে ফসল উৎপাদন করছেন।
সোনারগাঁয়ের নোয়াগাঁও ইউনিয়নের গৌরবরদী গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে। বাবা কৃষক তাই তিনি কৃষিতে আগ্রহী হয়েছেন। বিএসএস পাস করে তিনি চাকরির পেছনে সময় নষ্ট না করে চাষবাসে সময় দিয়েছেন। ২০০৯ সাল থেকেই তিনি কৃষিতে হাতেখড়ি নিয়েছেন। ২০১৪ সালে ঢাকা বিভাগে তিনি প্রথম মালচিং চাষ পদ্ধতি শুরু করেন। টমেটো ও চিচিঙ্গা চাষের মধ্য দিয়ে তার মালচিং চাষ পদ্ধতি শুরু হয়। পরবর্তীতে একে একে তিনি দেশি ও বিদেশি সবজি ও ফল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন। বর্তমানে তিনি উন্নত প্রযুক্তি ও উন্নত জাতের বীজ থেকে ফসল উৎপাদন করে থাকেন। আবহাওয়া ও বাজার দরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তিনি আধুনিক চাষে চ্যালেঞ্জ নিয়ে ফসল উৎপাদন করছেন। তিনি এখন গ্রীষ্মের ফল তরমুজ উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সাড়ে ৫ বিঘা জমির চারপাশে তিনি মাচা দিয়ে কালাচাঁন ও তৃপ্তি জাতের তরমুজ চাষ করছেন। মাঝে সেখানে হলুদ ও কালো রঙের তরমুজ থোকায় থোকায় ছোট বড় ঝুলে আছে। মাঝখানের মাছের ঘের। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রমজান আলীর ফলানো তরমুজ বাজারে আসবে। পাশাপাশি তিনি পুকুর পাড়ে করলা ও লাউ চাষ করেছেন। তিনি স্থানীয় কৃষকদের প্রেরণা হয়ে উঠেছেন।
রমজান আলী জানান, এসএসসি পরীক্ষার আগে থেকেই কৃষি কাজে আগ্রহী ছিল তার। গতানুগতিক চাষ পদ্ধতি বাদ দিয়ে তিনি আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করে। উন্নত উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ রোপন করে তিনি ফসল উৎপাদন করছেন। তিনি ইউটিউব দেখে ও কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে কৃষিতে সাফল্য অর্জন করেছেন। তার উৎপাদিত ফসল যাত্রাবাড়ি ও গাউছিয়া কাঁচাবাজার ও ফলের আড়তে বিক্রি হয়।
রমজান আলী আরো জানান, হালাল টাকা উপার্জনে একমাত্র স্বাধীন পেশা কৃষি কাজ। আধুনিক কৃষি থেকে তিনি মাসে গড়ে ৫০ হাজার টাকা আয় করেন।
কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, অল্প বিনিয়োগে দ্বিগুন লাভের ফসল মালচিং চাষ পদ্ধতি। তিনিই প্রথম চাষবাস শুরু করেন বলে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান।
গৌরবদী গ্রামের কৃষক জহিরুল ইসলাম জানান, রমজান আলী এ এলাকার কৃষকদের প্রেরণা। তার পরামর্শে এ এলাকার কৃষকরা চাষ পদ্ধতি পরিবর্তন করে লাভবান হয়েছেন। তিনি পোকা মাকড় দমনের জন্য জৈব চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করেন। ফলে অর্গানিক বাম্পার ফলন উৎপাদন হয়।
নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, কৃষি প্রধান এলাকা হলেও কৃষকরা এক সময় চাষবাস করে লাভবান হতে পারিনি। রমজান আলীর কৃষিতে চমক দেখাচ্ছেন। দেশি ও বিদেশি সবজি ও ফল উৎপাদনে সাফল্য অর্জন করছেন। তাকে দেখে, ও তার পরামর্শ নিয়ে এ এলাকার অনেক কৃষকরা লাভজনক কৃষিতে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছেন।
সোনারগাঁ উপজেলা জানায়, তরমুজ একটি লাভজনক চাষাবাদ। অল্প সময়ে কম খরচে কৃষকেরা অধিক লাভবান হয়ে থাকেন। দুমাসে ফলন পাওয়া যায়। বিঘা প্রতি ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ করে অল্প সময়ে লাখ টাকার ওপরে আয় করা সম্ভব। মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রতিনিয়ত আধুনিক চাষি রমজান আলীকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাদিয়া সুলতানা জানান, প্রতিনিয়ত তিনি কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরামর্শ দিচ্ছেন। তাছাড়া রমজান আলী তরমুজ চাষ এ এলাকার চাষিদের জন্য অনুকরণ হতে পারে। তার দেখানে পথে চাষবাস করলে চাষিরা লাভবান হবেন। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে রমজান আলীকে সার, বীজ ও কিটনাশকসহ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক জানান, রমজান আলীর এ ধরনের উদ্যোগ আমাদের কৃষির নতুন সম্ভাবনার দিক দেখাচ্ছে। বর্ষাকালে মাচায় তরমুজ চাষ একটি উদ্ভাবনী পদ্ধতি। এতে করে অনাবাদি কিংবা জলাবদ্ধ এলাকার জমিও ব্যবহার করা সম্ভব। স্থানীয় বাজারে এখন তরমুজের চাহিদা বেশি, কারণ এটি সাধারণত গ্রীষ্মকালীন ফল হলেও এখন বর্ষাকালে পাওয়া যাচ্ছে। ফলে এর দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের রাহাতপুর মৌজায় যমুনা নদীতে ইজারাকৃত বালু মহালের বাহিরে বালু উত্তোলন করার অপরাধে মেসার্স প্রিন্স কনস্ট্রাকশনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। গত বৃহস্পতিবার দৌলতপুর উপজেলার যমুনা নদী থেকে ইজারাকৃত বালু মহালের বাহিরে বাল্কহেড দিয়ে বালু উত্তোলনের অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালত মেসার্স প্রিন্স কনস্ট্রাকশনের সুপারভাইজারকে আটক করে। পরে জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে মুচলেকায় ছাড়া পান সুপারভাইজার।
আটককৃত সুপারভাইজার মো. শরিফুল ইসলাম চাঁন মিয়া (৪৫)। তিনি সদর উপজেলার জয়রা এলাকার সালাউদ্দিনের ছেলে এবং মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
জানা গেছে, মেসার্স প্রিন্স কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান প্রিন্স। তিনি মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক।
আরো জানা যায়, বালু মহালের ইজারাকৃত অংশের ২ হাজার ফিট বাহিরে গিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। এ অপরাধে ইজারাকৃত প্রতিষ্ঠানকে বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৪, ৫ এবং ১৫ ধারায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
দৌলতপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসানুল আলম বলেন, রাহাতপুর বালু মহালের ইজারাদার মেসার্স প্রিন্স কনস্ট্রাকশন ইজারা এলাকার বাহিরে গিয়ে বালু উত্তোলন করছে এমন অভিযোগে অভিযানে গেলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
ঘটনাস্থল থেকে সুপারভাইজার শরিফুল ইসলাম চানকে আটক করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে তাকে মুচলেকায় ছাড়া হয়। এরপরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে ইজারা বাতিলের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণ চাওয়া হবে।
উত্তরের জেলা নওগাঁয় এখন চলছে আউশ ধান কাটা-মাড়াইয়ের ব্যস্ততম সময়। মাঠে-ঘাটে কৃষকদের প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেলেও তাদের মুখে নেই হাসি। কারণ, চলতি মৌসুমে বৈরি আবহাওয়া, পোকার আক্রমণ ও কৃষি উপকরণের ঊর্ধ্বগতির কারণে আউশ ধানের ফলন যেমন কম হয়েছে, তেমনি বাজারে দামও আশানুরূপ নয়। ফলে চাষাবাদে খরচের টাকা উঠানো নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
জেলার মহাদেবপুর, মান্দা, বদলগাছী, ধামইরহাটসহ বিভিন্ন উপজেলার মাঠ ঘুরে জানা গেছে, বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছে গড়ে ১২ থেকে ১৬ মন। যেখানে গত বছর ফলন ছিল ১৮ থেকে ২০ মন পর্যন্ত। এ বছর বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকায়, যা দিয়ে খরচই উঠছে না বলে অভিযোগ কৃষকদের।
উত্তরগ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন বলেন, ‘শীষ বের হওয়ার সময় অতিবৃষ্টি আর পরে পোকার আক্রমণে অনেক ধান চিটা হয়েছে। পারিজা জাতের ধান বিঘাপ্রতি ১২-১৪ মন হয়েছে, আর ব্রি-৪৯ ধান ১৫-১৮ মন পর্যন্ত। দামও ঠিক নাই, মনপ্রতি যদি অন্তত ১২০০ টাকা পেতাম তাহলে কিছুটা লাভ হতো।’
ভীমপুরের কৃষক ওবাইদুল ইসলাম জানান, ‘৮ বিঘা জমিতে আউশ ধান করেছি। ফলন আশানুরূপ হয়নি। সার, কীটনাশক, ডিজেল সবকিছুর দাম বেশি। এগুলোর দাম না কমলে আমাদের পক্ষে লাভবান হওয়া সম্ভব না।
শ্রমিক সংকট ও খরচের বোঝা:
আউশ ধান কাটা ও মাড়াইয়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি আশেপাশের জেলা থেকে আসা মৌসুমি শ্রমিকরা কাজ করছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা শ্রমিক সমশের আলী বলেন, ‘আমরা ১০ জনের দল নিয়ে ১৫ দিন ধরে মহাদেবপুরের বিভিন্ন মাঠে কাজ করছি। ধান কাটা হচ্ছে বিঘাপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় অথবা ৩ মন ধান মজুরি হিসেবে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু ফলন কম হওয়ায় কৃষকেরা খুশি না।’
চাষিরা জানান, সার, কীটনাশক, ডিজেল ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারণে বিঘাপ্রতি খরচ দাঁড়িয়েছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। অথচ বিক্রি করে সেই খরচও উঠছে না।
কৃষি বিভাগ যা বলছেন:
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) খলিলুর রহমান বলেন, ‘এ বছর জেলায় ৫৮ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৫ হেক্টর বেশি। ফলন কিছুটা কম হলেও ব্রি-৯৮ ও ব্রি-১৯ জাতের ধানে ফলন তুলনামূলক ভালো। কৃষকদের উৎসাহ দিতে আমরা ৪০ হাজার কৃষককে বীজ ও সার প্রণোদনা দিয়েছি।’
তিনি আরও জানান, কিছু এলাকায় অতিবৃষ্টি ও পানি জমে থাকায় ফলন কম হয়েছে। তবে আগামীতে উন্নত জাত ও সঠিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকরা আউশে ভালো ফলন পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
নওগাঁর মাঠে এখনো ধান কাটার ধুম পড়লেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। তারা চায় সরকারিভাবে ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা হোক এবং কৃষি উপকরণের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা হোক। তবেই কৃষক বাঁচবে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার স্বপ্নও বাস্তবায়ন হবে।
ভিসি এবং প্রক্টর জামাতীকরণের মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনকে কলুষিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না।
শুক্রবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের নরসুন্দা নদী পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
মুন্না বলেন, ব্যাপকভাবে কারচুপির মাধ্যমে ডাকসুতে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে তারা জয়লাভ করেছে। কিন্তু সাধারণ প্রত্যেকটি প্যানেল এটার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সেটা এনসিপি’র প্যানেল বলেন, স্বতন্ত্রের প্যানেল বলেন, উমামা ফাতেমার প্যানেল বলেন, প্রত্যেকেই এটাকে তীব্র ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা মনে করি, ভিসি এবং প্রক্টর জামাতীকরণের মাধ্যমে নির্বাচনকে কলুষিত করেছে। আমরা মনে করি, এটা কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করেছে। গতকালকে জাকসুতেও তারা একই কাজ করার চেষ্টা করেছে। ছাত্রদল নির্বাচন বর্জন করেছে।
যুবদল সভাপতি বলেন, আপনারা দেখেছেন, দুটো নির্বাচনের মধ্যে আমরা কোনোরকম বিশৃঙ্খলায় যাইনি। আমরা জনগণকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। জাতীয় নির্বাচনে আমরা মনে করি, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং আমাদের নেতাকর্মীরা সঠিকভাবে ভোটকেন্দ্র পাহারা দিয়ে ঠিকমতো মনিটরিং করতে পারলে আমরা মনে করি না বাংলাদেশের জনগণের বিপক্ষে কোনো ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে তারা পার পাবে।
নরসুন্দা নদী পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের উদ্যোগ সম্পর্কে আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেন, ৫ই আগস্টের পর থেকে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদেরকে বার্তা দিচ্ছেন এবং চাচ্ছেন, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে, জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করতে হবে। তার এই নির্দেশনা অনুযায়ী, দায়িত্বের এবং মানবিক সমাজ বিনির্মাণের যে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি, তারই অংশ হিসেবে জেলা যুবদল নরসুন্দা পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করেছে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল করিম পল, সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য এডভোকেট আশরাফ জালাল খান মনন, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান জিএস শরীফ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সুমন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোশতাক আহমেদ শাহীন, সিনিয়র যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক তারিকুজ্জামান পার্নেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন । এছাড়া কেন্দ্রীয় ও জেলা যুবদলসহ বিভিন্ন ইউনিটের কয়েকহাজার নেতাকর্মী তাদের সঙ্গে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে অংশ নেন।
মন্তব্য