করোনাভাইরাস মহামারিতে মৃত্যুপুরী ব্রাজিল। ছোঁয়াচে রোগ বলে বিদায় নেয়ার আগ মুহূর্তেও প্রিয়জনদের এক নজর দেখার সুযোগ পাননি হতভাগ্য লাখো মানুষের।
অন্তিম বিদায়ের আগে স্বজনহীনতার ভয়াবহ মানসিক যন্ত্রণা কিছুটা হলেও লাঘব করতে অভিনব উপায় বেছে নিয়েছেন ব্রাজিলের এক নার্স। মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকে স্বজনের স্পর্শের অনুভূতি দেয়ার চেষ্টা করেছেন অন্যভাবে।
ঘটনাটি সাও পাওলোর ভিলা প্রাডো ইমার্জেন্সি কেয়ার ইউনিটের। হাসপাতালটিতে দায়িত্বরত নার্স সেমেই আরাউজো চেয়েছিলেন ইনটিউবেশনে থাকা এক করোনা রোগীর মানসিক কষ্ট কমাতে।
স্বজনবিচ্ছিন্ন ওই নারীকে স্বজনের স্পর্শ অনুভব করাতে চেয়েছিলেন আরাউজো। তিনি রাবারের এক জোড়া গ্লাভসে উষ্ণ পানি ভরে তা ওই রোগীর হাতের ওপরে রাখেন।
দুই জোড়া গ্লাভস এমনভাবে মৃত্যুপথযাত্রী রোগীর হাতের ওপর রাখা হয়, যেন জীবন্ত কোনো মানুষ নিজের দুই হাত দিয়ে তাকে ধরে রেখেছে।
করোনা ওয়ার্ডের এমন দৃশ্যের ছবি ভাইরাল হয়েছে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে।
মহামারির এ সময়ে মানবিক স্পর্শের এ ছবি নাড়িয়ে দিয়েছে মানুষকে, কাঁদিয়েছে স্বজন হারানোর ক্ষত বয়ে চলা লাখো মানুষকে।
ছবিটি টুইটারে প্রথম প্রকাশ করেন আরাউজো নিজেই। ক্যাপশনে লেখেন, ‘রোগীর যত্ন করতে, তাকে স্বস্তি দিতে, তার প্রতি নিজের মমতা জানাতেই এ কাজটি করেছি। শুধু পেশাদার আচরণ হলেই তো চলে না।
‘মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া, তার মন কী চাইছে তা বোঝার চেষ্টা করাও আমার দায়িত্ব।’
ছবিটি ভাইরাল হলে এক সাক্ষাৎকারে এই নার্স বলেন, ‘ইনটিউবেশন ভীষণ কষ্টের একটি প্রক্রিয়া। কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসে সাহায্য করতে রোগীর শ্বাসনালিতে টিউব ঢোকাতে হয়।
‘এই ভয়াবহ শারীরিক যন্ত্রণা কিছুটা কমাতে রোগীকে বোঝাতে চেয়েছি যে, তাকে কেউ ধরে রেখেছে। একই সঙ্গে তার ঠান্ডা হয়ে যাওয়া শরীরকে খানিকটা উষ্ণও রাখা সম্ভব এতে।’
চেতনাহীন কিন্তু অনুভূতি কাজ করছে, এমন মানুষকে সহমর্মিতা জানানোর এর চেয়ে ভালো উপায় আর হয় কি না, তা জানা নেই অনেকের।
ছবিটি রিটুইট করা লাখো মানুষের আশা, মৃত্যুপথযাত্রী ওই রোগীর চেতনা ফেরাতে হয়তো এই ভালোবাসাই ওষুধের মতো কাজ করবে।
স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, এমন ঘটনা অবশ্য এটাই প্রথম নয়। আরাউজোর সহকর্মী মারিয়া সান্তোস ও ভেনেসা ফরমেন্টন এর আগেও এ কাজ করেছেন। তারা এই চিকিৎসার নাম দিয়েছে ‘লিটল হ্যান্ড’ বা ‘ছোট্ট হাত’।
মহামারির করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ ব্রাজিল। এক বছরে দেশটিতে সংক্রামক এ ভাইরাসে প্রাণ গেছে সাড়ে তিন লাখ মানুষের। আক্রান্ত হয়েছে আরও এক কোটি ৩৪ লাখ মানুষ।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ফেটালিয়া ও নাশেরা গ্রামের দুইশ’ কৃষকের প্রায় ৪ শ’ বিঘা জমির বোরো ধান ইটভাটার আগুনের তাপে নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভাটার আগুনের তেজস্ক্রিয়তায় পার্শ্ববর্তী দড়িনাশেরা গ্রামের কৃষকদেরও ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
অভিযোগ পেয়ে উপজেলা কৃষি অফিস জমির ফসল পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ নির্ণয় করে তাদের ক্ষতিপূরণ আদায়ের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইটভাটার চারপাশের বিপুল পরিমাণ জমির ফসল পুড়ে যাওয়ার মতো লালচে রঙ ধারণ করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন ফলজ গাছপালা ও সবজির বাগান।
স্থানীয়রা জানান, ২০১২ সাল থেকে কাপাসিয়ার তারাগঞ্জের ফেটালিয়া গ্রামে এসকেএস ইটভাটা স্থাপিত হয়। হাত বদল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নামেরও পরিবর্তন হয়। তবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামে কর্তৃপক্ষ ইটভাটার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। কখনও ফেটালিয়া ব্রিক ফিল্ড, ভাই ভাই ব্রিক ফিল্ড নামে ইটভাটা পরিচালনা করলেও বর্তমানে এসআরএফ নামে ইটভাটার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বর্তমান মালিক।
তারা জানান, এ ইটভাটার ২০০ ফিট দূরত্বের মধ্যে স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ ও ঘনবসতি রয়েছে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় আশপাশের গ্রামের বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছে ফুল-ফল থাকে না; সব কিছু অকালেই ঝরে যায়। প্রতি বছর যে সমস্যাটি প্রকট আকার ধারণ করে, তা হলো কালো ধোঁয়া ও তাপে পুড়ে যায় ফসলের মাঠ। এ বছরও বিস্তীর্ণ ধানের মাঠ ভাটার আগুনের তাপে পুড়ে গেছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, অনুমোদন না থাকায় ঈদের আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ইটের ভাটাটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে যায়। এই ভাটাটি জনবসতিপূর্ণ এলাকায় থাকায় দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধের দাবি করে আসছিল এলাকাবাসী। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকলেও ইট পোড়ানো হয় এ ভাটায়। কয়েকদিন পরপর ইটভাটায় কয়েক দফা অভিযান পরিচালনা করে প্রশাসন, কিন্তু পরবর্তীতে ফের শুরু হয় ভাটার কার্যক্রম। তবে সেসব সময় অদৃশ্য কারণে নীরবতা পালন করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ফেটালিয়া ও নাশেরা গ্রামটি ধান উৎপাদনে ব্যাপক প্রসিদ্ধ। এই এলাকার অধিকাংশ মানুষের আয়ের মূল চালিকা শক্তি ফল উৎপাদন ও কৃষির বিভিন্ন ফসল। কৃষকদের দাবি, অথচ এক ইটভাটার কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে পুরো এলাকার মানুষের।
মো. বুরুজ আলী নামের এক কৃষক বলেন, ‘আমি এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। ধানে দুধ আসার পরপরই ভাটার আগুনের তাপে তা পুড়ে গেছে। টাকা ধার করে জমি চাষ করেছিলাম। সেই ধারের টাকা এখন কীভাবে পরিশোধ করব, তা নিয়ে ভেবে কূল পাচ্ছি না।’
কৃষক মো. রফিকুল বলেন, ‘এ বছর ১৫ শতাংশ জমিতে ধানের চাষ করেছি। তার এক মুঠো ধানও ঘরে তুলতে পারব না। ইটভাটার আগুনের তাপে সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
‘গরুকে খাওয়ানোর যে কুটা (খড়) লাগবে তাও পাই কিনা সন্দেহ। আগুনের তাপে ঝলসে যাওয়া কুটা গরুও খেতে চায় না। এখন গরু কী খাবে, আর আমরাই বা কী খাব?’
আবাদি জমির পাশে ইটভাটা নির্মাণ হওয়ায় প্রতি বছরই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় বলে জানান কৃষক আব্দুল হাই।
কিছুটা ক্ষোভের সুরে তিনি বলেন, ‘ভাটার আগুনের তাপ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে, যা কোনোভাবেই পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হয় না। ওই জমির ফসল দিয়েই আমাদের সারা বছরের খাওয়ার যোগান হয়। কীভাবে কী করবো বুঝতে পারছি না।’
কৃষি জমিতে কাজ করতে গিয়ে ভাটার ধোঁয়ায় জনস্বাস্থ্যেও পড়ছে বিরূপ প্রভাব। এ বিষয়ে কৃষক আব্দুল বাতেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খেতে কাজ করতে গেলেই আমার বাবার তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি।’
এই এলাকায় যেন কোনো ইটের ভাটা না থাকে, প্রশাসনের কাছে এমন দাবি রাখেন তিনি।
দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ফেটালিয়া গ্রামের বাসিন্দা মঞ্জুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুই শতাধিক কৃষকের ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিপূরণ পেতে কৃষকরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তারা ক্ষতিপূরণ পাবে কি না এখনই বলা যাচ্ছে না।’
এ বিষয়ে ইটভাটার মালিক রমিজ উদ্দিন রমি বলেন, ‘আগুনের তাপে ধানের ফুল আসার সময় কয়েকজন কৃষকের ফসল নষ্ট হইছে। পরে তারা ইটভাটার গেইটে তালা মেরে রাখেন।’
কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমার ভাটাটি বন্ধ রয়েছে। আমি এখনও ভাটার লাইসেন্স করতে পারিনি।’
কৃষি বিভাগের ব্লক সুপারভাইজার মঞ্জুরুল আমিন সম্প্রতি কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত ফলজ গাছ ও ধানের ফসল পরিদর্শন করেছেন। সরেজমিনে তিনি কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে ও তথ্যানুসন্ধান করে জেনেছেন, স্থানীয় ইটভাটার কারণেই কৃষকদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, ‘ধান পরিপুষ্ট হওয়ার আগেই নির্গত ক্ষতিকর ধোঁয়ায় সব ঝলসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের তালিকা তৈরি করে উপজেলা কৃষি অফিসে জমা দেয়া হবে।’
কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার বসাক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বেতুয়া বাজার ব্রিজ সংলগ্ন মাতামুহুরী নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তারা হলেন- চকরিয়ার পূর্ব বড় ভেওলা এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মনছুর আলম ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুস সালামের ছেলে মুবিন।
বুধবার সকালে নদীতে মাছ ধরতে নেমে নিখোঁজ হন ওই দুই জেলে। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সহায়তায় নিখোঁজ হওয়ার ৬ ঘণ্টা পর বিকেলে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পূর্ব বড় ভেওলা ইউপি চেয়ারম্যান ফারহানা আফরিন মুন্না বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুই জেলে নিখোঁজ হন। স্থানীয়রা নদীতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও না পাওয়ায় ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা এসে নদীর গভীরে তল্লাশি চালিয়ে ওই দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করেন।
দেশজুড়ে বয়ে চলেছে তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমে অস্থির জনজীবন। বিদ্যুতের লোডশেডিং সেই অস্বস্তি-অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়লেও সারাদেশে লোডশেডিং কমার কোনো লক্ষণ নেই। বরং আগের তুলনায় লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) তথ্যের উল্লেখ করে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, বুধবার (দেশে প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। আগের দিন মঙ্গলবার তা ছিল ১ হাজার ৪৯ মেগাওয়াট।
এনএলডিসির তথ্যে আরও দেখা যায়, মঙ্গলবার রাত ১টায় লোডশেডিং ছিল ১ হাজার ৪৬৮ মেগাওয়াট। তবে বুধবার দিনের বেলায় বিদ্যুৎ ঘাটতির মাত্রা কমে সকাল ৭টায় ৫৪২ মেগাওয়াটে নেমে আসে। আবার বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। বিকেল ৩টায় লোডশেডিং বেড়ে দাঁড়ায় ৮২১ মেগাওয়াট।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও পিজিসিবির তথ্য বলছে, ১৫ হাজার ২০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে বুধবার বিকেল ৫টায় দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার ৪৭৩ মেগাওয়াট। সে হিসাবে সন্ধ্যার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উৎপাদন ঘাটতি ছিল ৭২৭ মেগাওয়াট।
ওদিকে বুধবার সন্ধ্যায় চাহিদার পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট এবং সরবরাহের পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ৫৩০ মেগাওয়াট।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে লোডশেডিং এড়াতে গিয়ে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে।
বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া সংবাদে জানা যায়, এই গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের মাত্রা গ্রামীণ মানুষের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার সরকারি তথ্যে দেখা যায়, ৩ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে দেশে গ্যাস উৎপাদন হয়েছে দৈনিক ৩ হাজার ৫৬ মিলিয়ন ঘনফুট।
বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশেষ করে যেগুলো প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করে, সেগুলোতে গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ২ হাজার ৩১৬ দশমিক ৯ মিলিয়ন ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে ১ হাজার ৩৪৯ দশমিক ৯ মিলিয়ন ঘটফুট গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে।
আরও পড়ুন:পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় বুধবার বিকেলে শ্রমিকবাহী ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে এই প্রাণহানি ঘটেছে। এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৮ জন।
পাহাড়ি সড়ক ধরে ছুটে চলার পথে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খাদে পড়ে যায়। এতে গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। আর এর যাত্রী শ্রমিক সড়কের পাশের ঢালে ছিটকে পড়েন। কেউ কেউ ট্রাকের নিচে চাপা পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই ৬ শ্রমিক নিহত হন। আহত হন আরও আটজন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হতাহত শ্রমিকদের বাড়ি রংপুর অঞ্চলে। তারা উদয়পুর-বাঘাইছড়ি সীমান্ত সড়কের ১৭ কিলোমিটার নামক স্থানে হারিজাপাড়া সেতু নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ছিলেন। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে কর্মস্থল থেকে ফিরছিলেন তারা।
সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে খবর নিয়ে জানতে পেরেছি যে গাড়িটিতে থাকা সবাই সীমান্ত সড়কের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক ছিলেন। এই সড়কে অনেক স্থানে উঁচু নিচু পাহাড় আছে। উদয়পুর সড়কের ৯০ ডিগ্রি নামক স্থানে গাড়ি নামার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়।’
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার জানান, আনুমানিক বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের কাজ শেষে খাগড়াছড়ির দিকে ফেরার পথে একটি ডাম্প ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। গাড়িটিতে মোট ১৭ জন শ্রমিক ছিলেন। তাদের মধ্যে ৬ মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও ৮ জন। যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী আহতদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ। আগামী তিন বছরের জন্য এই পদে তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বুধবার চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮ এর ধারা-৭ অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখার উপ-সচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ দেয়া হয়। বিকেলে তিনি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে গিয়ে এই পদে যোগদান করেন।
মোহাম্মদ ইউনুছ আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদের সদস্য এবং চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার সদস্য সচিব।
সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে বুধবার (২৪ এপ্রিল)। ২০১৯ সাল থেকে দুই মেয়াদে টানা পাঁচ বছর এই পদে ছিলেন তিনি।
২০০৯ সাল থেকে সরকারের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার এই পদে চুক্তিভিত্তিক রাজনৈতিক নিয়োগ দিয়ে আসছে সরকার। মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনের সংসদ সদস্য আবদুচ ছালাম টানা ১০ বছর এই দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল নিয়োগ দেয়া হয় মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জহিরুল আলম দোভাষকে।
চিটাগাং ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অর্ডিন্যান্স ১৯৫৯ কে যুগোপযোগী করে ২৯ জুলাই ২০১৮ সালে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। সেই আইনের ৭ নম্বর ধারায় উল্লেখ রয়েছে- চেয়ারম্যান বা বোর্ড সদস্য হিসেবে কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি সময়ের জন্য নিয়োগলাভের জন্য বলে বিবেচিত হবেন না। জহিরুল আলম দোভাষ ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল প্রথম মেয়াদে দুই বছরের জন্য ও ২০২১ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় মেয়াদে তিন বছরের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
সিডিএ’র উপ-সচিব অমল কান্তি গুহ বলেন, ‘দুপুরে প্রজ্ঞাপন হয়েছে। আমরা পেয়েছি। নিয়ম অনুযায়ী, নতুন চেয়ারম্যান মহোদয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে যোগদান করে এরপর সিডিএ কার্যালয়ে আসবেন।’
মোহাম্মদ ইউনুছ প্রয়াত রাজনীতিক এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ভাবশিষ্য হিসেবে পরিচিত। সত্তরের দশকে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা ইউনুছ বর্তমানে আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য।
দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ ও উত্তপ্ত তাপমাত্রার কারণে শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে ইউনিসেফ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট।
বুধবার ইয়েট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আপনার প্রতিবেশিদের দিকে নজর রাখুন- দুর্বল পরিবার, প্রতিবন্ধী শিশু, গর্ভবতী নারী এবং বৃদ্ধরা তাপপ্রবাহের সময় অসুস্থতা বা মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে। সময় নিয়ে প্রতিবেশীদের খোঁজখবর নিন, বিশেষ করে যারা একা থাকেন।’
ইউনিসেফের ২০২১ সালের শিশুদের জলবায়ু ঝুঁকি সূচক (সিসিআরআই) অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের ‘অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে বাংলাদেশের শিশুরা।
ইউনিসেফের মতে, তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে, বিশেষ করে নবজাতক, শিশু এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য যারা তাপজনিত অসুস্থতা যেমন হিট স্ট্রোক এবং ডিহাইড্রেশনের কারণে বিশেষভাবে ডায়রিয়া ঝুঁকিপূর্ণ জনসংখ্যা হিসেবে বিবেচিত হয়।
ইয়েট বলেন, ‘যেহেতু শিশুদের ওপর ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার প্রভাবের উদ্বেগের কারণে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে, তাই ইউনিসেফ অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের হাইড্রেটেড ও নিরাপদ রাখতে অতিরিক্ত সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।’
এই তাপপ্রবাহের তীব্রতা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়।
তাপমাত্রা নজিরহীনভাবে বাড়তে থাকায় অবশ্যই শিশু এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে জানান ইয়েট।
এই তাপপ্রবাহ থেকে ইউনিসেফ কর্মী, বাবা-মা, পরিবার, যত্নগ্রহণকারী এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে শিশু ও গর্ভবতী নারীদের রক্ষায় নিচের পদক্ষেপগুলো নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে-
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
প্রাথমিক চিকিৎসা
যদি কোনো শিশু বা গর্ভবতী নারীর হিটস্ট্রেসের লক্ষণগুলো দেখা যায়, যেমন- মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত ঘাম, বমি বমি ভাব, হালকা জ্বর, নাক দিয়ে রক্তপাত, পেশি খিঁচুনি, ফুসকুড়ি ইত্যাদি; ওই ব্যক্তিকে ভালো বায়ু চলাচলসহ শীতল, ছায়াযুক্ত জায়গায় রাখুন এবং ভেজা তোয়ালে বা শীতল পানি দিয়ে শরীর মুছে দিন।
পানি বা ওরাল রিহাইড্রেশন লবণ (ওআরএস) গ্রহণ করুন।
হিটস্ট্রেসের গুরুতর লক্ষণগুলোতে (যেমন: বিভ্রান্তি বা প্রতিক্রিয়া জানাতে অক্ষমতা, অজ্ঞান হওয়া, শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, খিঁচুনি এবং চেতনা হ্রাস) হলে জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালে নেয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে কক্সবাজারের টেকনাফে উপজেলার একটি পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়নের মোট ৫২৩ জন ভূমি ও গৃহহীনের মাঝে ঘর বিতরণ করা হয়। মাথা গোঁজার স্থায়ী একটি আবাসন পেয়ে নতুন জীবন শুরু করেন ভূমিহীন অসহায় মানুষ।
তবে এখানে ঘর বরাদ্দ পাওয়া অনেকেই ভূমিহীন নন। অভাবগ্রস্তও নন। দুর্নীতি ও প্রভাব খাটিয়ে ঘর বরাদ্দপ্রাপ্ত অনেকেই সচ্ছল। আশ্রয়ণের সেসব ঘর মাসিক ভিত্তিতে ভাড়া দিয়ে চলছে রমরমা বাণিজ্য।
আশ্রয়ণের ঘর বরাদ্দে অনিয়ম ও ভাড়া আদায়ের এমন একাধিক ঘটনা নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। বুধবার সরেজমিনে গিয়ে সেসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নে নয়াপাড়ার শেষ মাথায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালিকায় ৫ নম্বর সিরিয়ালে রয়েছে নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. কামালের ঘর। ওই গ্রামেই তার নিজস্ব টিনশেড ঘর রয়েছে। তারপরও প্রভাব খাটিয়ে তিনি আশ্রয়ণের ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। কামালের নিজের ঘর থাকায় এখন আশ্রয়ণে বরাদ্দ পাওয়া ঘরে থাকেন আরেকজন।
আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের অভিযোগ, কামাল হোসেন নিজের নামে বরাদ্দ ঘরে কখনোই বসবাস করেননি। কামালসহ প্রভাবশালী সাতজন একটি করে ঘর বরাদ্দ নিয়ে ভাড়া দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কামাল দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ঘরটি বিক্রি করে দেন রাশেদা নামের এক নারীর কাছে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ওই নারীকে তিনি টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে জানান বাসিন্দারা।
নয়াপাড়ায় (পুরান পাড়া) আশ্রয়ণের ঘরে বসবাসকারী এক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের এখানে ১০টি ঘরের মধ্যে মাত্র তিনটিতে আমাদের মতো অসচ্ছল উপকারভোগী বসবাস করে। বাকি সাতটি ঘরে বরাদ্দপ্রাপ্তরা কেউ থাকেন না।
‘৫ নম্বর ঘর বিক্রি করলেও পরে টাকা ফেরত নিছে। আর ১ নম্বর ঘর সাইফুল ইসলাম ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছিল। এখন সেই টাকা ফেরত দিছে কিনা তা জানি না। কেউ কেউ নিজের নামে বরাদ্দ ঘরটি দীর্ঘদিন তাদের আত্মীয়দের কাছে ভাড়া দিয়েছিল। বর্তমানে সেই সাতটি ঘরে তালা ঝুলিয়ে রাখলেও তারা নতুন ভাড়াটে খোঁজ করছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কামাল ও সাইফুল মোবাইল ফোনে বলেন, ‘ঘর আগে বিক্রি করেছিলাম। এখন আর ঘর বিক্রি করব না। ভাড়াও দেব না। অন্যদের পাঁচটি বাড়ি ভাড়া চলে। আমাদের ঘর তালাবদ্ধ করে রাখছি।’
বিষয়টি নিয়ে কোনো খবর প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন তারা।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, গৃহহীন ও ভূমিহীনদের তালিকা সঠিকভাবে করা হয়নি। তালিকা প্রস্তুতকারীরা প্রকৃত ভূমিহীনদের বদলে নিজেদের পছন্দের লোকের নাম দিয়েছেন। ফলে প্রকৃত অভাবীদের অনেকে আশ্রয়ণের ঘর থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সচ্ছল ব্যক্তিরা ঘর বরাদ্দ পেয়ে সেগুলো মাসিক ভিত্তিতে ভাড়া দিয়ে রাখছেন।
টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মুফিত কামাল ও ফেরুজা বেগম বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে সরকার গুচ্ছগ্রাম করে টিনের ঘর বানিয়ে বরাদ্দ দিয়েছিল। সেখানে প্রতিটি ঘরেই বরাদ্দপ্রাপ্ত অভাবী মানুষগুলো থাকে। বর্তমানে ওইসব ঘর জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলেই নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়।
‘পাশেই প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাকা ঘর রয়েছে। অথচ অনেকে বরাদ্দ পাওয়া ঘরে থাকছেন না। সবময় তালাবদ্ধ থাকে। আর যারা বসবাস করেন তাদের সিংহভাগই অন্যের বরাদ্দ পাওয়া ঘরে থাকেন। অনেকে উপহারের ঘর বিক্রি করে দিয়েছেন। আবার অনেকে ভাড়া দিয়েছেন।’
আশ্রয়ণ প্রকল্পের যেসব ঘর তালাবদ্ধ থাকে, সেগুলো গুচ্ছগ্রামে জরাজীর্ণ ঘরে থাকা বাসিন্দাদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
স্থানীয় কলেজ পড়ুয়া ছাত্র মো. শাহ্ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সিংহভাগ ঘরে বরাদ্দপ্রাপ্তরা থাকেন না। শুধু সাবরাং নয়, টেকনাফের বিভিন্ন স্থানে এই প্রকল্পের আওতায় যেসব ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সবখানেই এমন অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যাদের ঘরের প্রয়োজন নেই তারাই এসব ঘর বরাদ্দ নিয়েছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের কাছের লোক এবং আত্মীয়দের ঘর দিয়েছেন। তাই সিংহভাগ ঘর তালাবদ্ধ থাকছে।’
প্রশাসনের কাউকে কোনোদিন আশ্রয়ণ প্রকল্পে এসব ঘর তদারকি করতেও দেখেননি বলে উল্লেখ করেন তিনি। বরাদ্দ পাওয়া যেসব ঘরে প্রকৃত মালিকরা থাকেন না, সেগুলো ফেরত নিয়ে প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে বণ্টন করার দাবি জানান এই শিক্ষার্থী।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘর কেউ বিক্রি করে থাকলে এবং ভাড়া দিয়ে থাকলে যাচাই-বাছাই করে তাদের দেয়া ঘরের বরাদ্দ বাতিল করা হবে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিজের নামে বরাদ্দ পাওয়া ঘর ভাড়া দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এসব বিষয়ে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য