× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

স্বাস্থ্য
করোনায় যা যা করণীয় ডা এ বি এম আবদুল্লাহ  
google_news print-icon

করোনায় যা যা করণীয়: ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ  

করোনায়-যা-যা-করণীয়-ডা-এ-বি-এম-আবদুল্লাহ- 
করোনায় আক্রান্ত হলে অবশ্যই আইসোলেশনে থাকতে হবে। আইসোলেশন মানে, এই ১৪ দিন ঘরের বাইরে যাবেন না, বাড়ির অন্য কারো সঙ্গে মিশবেন না। কোয়ারেন্টিনে থাকা রোগীর খাবার ঘরের দরজার বাইরে রেখে আসতে হবে, কেউ ভেতরে ঢুকবেন না।

সারা বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বহু দেশ এখন চরম বিপর্যস্ত। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়।

মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন দেশে বাড়ছে শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ।

প্রথিতযশা মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবিএম আব্দুল্লাহ নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখন তিনি সুস্থ আছেন।

তার পরামর্শ, একজন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলে অবশ্যই তাকে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে থাকতে হবে।

আর আইসোলেশন মানে হলো, এই ১৪ দিন তিনি নিজে ঘরের বাইরে যাবেন না, আবার বাড়িতে অন্য কারো সঙ্গে মিশবেন না। ঘরে অবস্থানকালে পরিবারের অন্যদের সংস্পর্শও এড়িয়ে চলতে হবে। কোয়ারেন্টিনে থাকা রোগীর খাবার ঘরের দরজার বাইরে রেখে আসতে হবে, কেউ ভেতরে ঢুকবেন না।

ঘরের বাইরের অন্য কোনো প্রয়োজন দেখা দিলে নিজে না গিয়ে কারো সহায়তা নেয়াই ভালো। ঘরে পোষা প্রাণী থাকলে তাদের সংস্পর্শে না যাওয়াই ভালো। এক কথায় নিজে নিজেকেই অন্যদের থেকে পৃথক করে রাখা। এতে পরিবারের বা সমাজের অন্যরা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে না

আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় যদি কারোর জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা বেশি দেখা দেয়, তাহলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিতে হবে।

করোনায় আক্রান্ত মানেই মৃত্যু নয়

করোনা মানেই কি মৃত্যু? করোনা মানেই মৃত্যু নয়। বরং সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে, আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকলে শিশুসহ সবাই ক্রমে সুস্থ হয়ে ওঠে।

এজন্য দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করা উচিত। ভালো হবে প্রতিদিন সুষম খাবার, টাটকা শাকসবজি ও ফলমূল খেতে পারলে। এ ছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। ধূমপান ও মদ্যপান একদম নয়। আপনার শরীরে যদি করোনাভাইরাস ধরা পড়ে, তাহলে দুশ্চিন্তা না করে চিকিৎসা নিন। ভাইরাস পজিটিভ মানে মৃত্যু নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গবেষণায় দেখা গেছে, আক্রান্তদের শতকরা ৬ জনের মৃত্যু হয়।

আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজে একটি রুমে আবদ্ধ হয়ে যান। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করুন। যদি রুমে অ্যাটাস্ট বাথরুম থাকে তাহলে ভালো হয়।

পূর্বের কোনো রোগ থাকলে বা সেই রোগের জন্য ওষুধ খাচ্ছেন, এমন ওষুধসহ থালা-বাসন থেকে শুরু করে যা দরকারি জিনিস সঙ্গে রাখুন।

আসল কথা হলো সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে আপনি পরিবার থেকে দূরে থাকুন। এমন রুমে অবস্থান করুন যেখানে আপনার পরিবারের সদস্যরাও ঢুকবেন না। এমনকি আপনি ওই রুম থেকে বের হবেন না।

মনে রাখবেন, করোনায় আক্রান্ত হলেও অনেকের উপসর্গ দেখা যায় না। অনেকের আবার জ্বর জ্বর ভাব থাকে। কারো যদি জ্বর জ্বর ভাব থাকে থার্মোমিটার নিয়ে নিজেই পরিমাপ করে নিতে হবে। শুধু যদি জ্বর হয় তাহলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আপনি ঘরে বসেই চিকিৎসা নিতে পারবেন।

যে সব প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখবেন

আপনারা জানেন, কভিড-১৯-এর নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। চিকিৎসক লক্ষণ বুঝে উপসর্গ দেখে, নানা রকম চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। আপনার যদি এক শর ওপরে জ্বর থাকে; আর আপনি যদি পূর্ণবয়স্ক হন, তাহলে দিনে তিনবার প্যারাসিটামল খান। এভাবে কিছুদিন খেতে থাকেন, দেখবেন আপনার জ্বর, গলাব্যথা ও মাথাব্যথা এমনিতেই চলে যাবে।

যদি সর্দি, হাঁচি ও কাশি থাকে, তাহলে সিরাপ খেতে পারেন। ফেক্সোফেনাডিন প্রতিদিন একটা করে খান, দেখবেন কিছুদিন পর হাঁচি ও কাশি দূর হয়ে গেছে।

যদি কাশি বেশি হয় তাহলে তুসকা সিরাপ খেতে পারেন। তুসকা ছাড়াও বাজারে অনেক ধরনের সিরাপ রয়েছে; সেগুলো খেতে পারেন। শরীরে যদি ব্যথা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল খেতে পারেন।

মনোবল চাঙা রাখতে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকুন

করোনা আক্রান্ত হলে সবচেয়ে বড় চিকিৎসা হলো মনোবল শক্ত রাখা। যার যার সৃষ্টিকর্তাকে ডাকবেন। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে এই রোগ থেকে নিশ্চয়ই মুক্তি দান করবেন।

আপনি যদি মনোবল দুর্বল করে ফেলেন, তাহলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে।

আপনি যদি মনোবল শক্ত রাখতে পারেন, তাহলে দেখবেন আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনি এমনি বৃদ্ধি পাবে। করোনাভাইরাস আপনাকে কিছু করতে পারবে না।

‘অনেক রিপোর্টেই আমরা দেখেছি, বয়স্ক কিংবা অন্য কোনো রোগ আছে, এমন ব্যক্তিরা করোনায় আক্রান্ত হলে মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি থাকে। এটি আসলে অনেক ক্ষেত্রেই ভুল।

‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যেকোনো রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। সেই রোগের চিকিৎসা আছে। আপনি করোনা আক্রান্ত, আপনার আগে থেকে ডায়াবেটিস আছে, তাহলে আপনি করোনার সঙ্গে ডায়াবেটিসের চিকিৎসাও নেবেন।’

যে সময় হাসপাতালে যেতে হবে

নতুন ধরনের ভেরিয়েন্ট দ্রুত মানুষকে দুর্বল করে ফেলছে। দ্রুত অক্সিজেন লেভেল কমে আসছে। তাই করোনায় আক্রান্তের পর যদি শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, তাহলে আপনি এজমাসল ওষুধ ইউজ করবেন। ওষুধে যদি কাজ না হয়, করোনার চিকিৎসা দেয়, এমন হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেন। তবে উন্নত দেশগুলোতে ঘরে বসেই বেশির ভাগ রোগী করোনার চিকিৎসা নিচ্ছেন।

অনেক সময় এমনও হয়েছে, হাসপাতালে গিয়ে অনেক রোগী বেকায়দায় পড়েছেন, এমনকি মারাও গেছেন। তীব্র শ্বাসকষ্টে অক্সিজেন প্রয়োজন হলে অবশ্যই হাসপাতালে যাবেন। তাৎক্ষণিক অক্সিজেনের ব্যবস্থা করবেন।

যে সব খাবার খাবেন

আপনি বাসায় বসে ভিটামিন সি জাতীয় পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করবেন। ঘনঘন চা পান করবেন। সব খাবার গরম খান। প্রচুর পরিমাণে রঙিন শাকসবজি খান। প্রোটিন খান।

ডিম খাবেন ও দুধ পান করবেন। করোনা আক্রান্ত হলে ঠান্ডাজাতীয় কোনো কিছুই আপনি খেতে পারবেন না।

আইসোলেশনে যেভাবে সময় কাটাবেন

এই অবসর সময়ে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকার সবচেয়ে মোক্ষম সময়। মুসলিম হলে নামাজ পড়বেন। অন্য ধর্মের হলে উপাসনা করতে পারেন। মোবাইলের মাধ্যমে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। সামাজিক দূরত্ব মেনটেইন করে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন। সকাল বিকেল এক সময় শরীর চর্চা করতে পারেন। সবচেয়ে বড় বিষয় সামাজিক দূরত্ব মেইনটেইন করা।

প্রয়োজন হলেও আপনি বাইরে যেতে পারবেন না। কোনো প্রয়োজনে আপনার ঘরেও কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আইসোলেশনে রাখতে হবে। আপনি আইসোলেশনে থাকবেন, মনোবল শক্ত করবেন, দেখবেন খুব দ্রুত এই ভাইরাস থেকে মুক্তি লাভ করেছেন।

আরও পড়ুন:
করোনা মোকাবিলায় ‘সর্বদলীয় কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব
করোনায় আরও ৬৩ মৃত্যু, শনাক্ত ৭৪৬২
কুমিল্লা মেডিক্যালে করোনা ইউনিটে শয্যা খালি নেই
চট্টগ্রামে আইসিইউ বেড খালি মাত্র ৪টি
সব রেকর্ড ছাড়িয়ে করোনায় মৃত্যু ৭৪

মন্তব্য

আরও পড়ুন

স্বাস্থ্য
We are behind the collective lies

সম্মিলিত মিথ্যার পিছনেই আমরা

সাকিব রায়হান
সম্মিলিত মিথ্যার পিছনেই আমরা

আমি তখন কলেজে পড়ি। স্যারের বাসায় যত সিনসিয়ারলি যাই তত সিনসিয়ারলি পড়ালেখা করি না। পুরা শহর ঘুরে বেড়ানোয় যত মনোযোগ ততটা মনোযোগ কলেজে যাওয়ায় না। তবে নিঃসন্দেহে দারুণ সময় পার করছিলাম। একদিন আমি কোনো এক কাজে রিকশায় করে ফরেস্ট ঘাটের দিকে যাচ্ছিলাম। যথারীতি রিকশা চালকের সাথে নানবিধ গল্প করছি। রাজনীতি, শহর, দেশসহ প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ই আমাদের আলোচনায় স্থান পাচ্ছিল। রিকশা চালকের চিন্তা এবং জ্ঞান দেখে আমি বেশ মুগ্ধই হয়েছিলাম। মনে মনে ভাবছিলাম যে আমাদের সমাজে আসলেই অনেক সুচিন্তাশীল মানুষ আছে যারা অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে না। কিছুক্ষণের মধ্যেই একটা ঘটনা ঘটলো যেটা আমার চিন্তাশক্তিকে কিছুক্ষণের জন্যে অবশ করে দিলেও পরবর্তীতে একটা কঠিন সত্যকে জানতে সাহায্য করেছিল। ফরেস্ট ঘাটের কাছাকাছি একটা জায়গায় পৌঁছেতেই কিছু দূরে একটা জটলা মত পেলাম এবং একজন পথচারীর কাছ থেকে জানতে পারলাম তিনি আর কেউ না, শহরের সবচেয়ে কুখ্যাত টেরর (যার নাম বললে আপনারা সবাই চিনবেন)। আমি কেন যেন আর অগ্রসর হতে চাইলাম না। রিকশা চালককে ওখানেই আমাকে নামিয়ে দিতে বললাম। ঘৃণা থেকেই হোক বা অজানা শঙ্কায় হোক সে মুহূর্তে ওই মানুষটার কাছাকাছি যেতে আমার ইচ্ছা হচ্ছিল না। আমি রিকশা থেকে নেমে যখন ভাড়া মিটাচ্ছিলাম তখন দেখি আমার সেই রিকশাচালক বেশ রাগান্বিত হয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক রিকশা চালককে তার হাতের বিড়িটা ফেলে দিতে বলছে। প্রায় ধমকের স্বরেই বলেছিল, ‘বিড়ি ফ্যাল ব্যাটা। সামনে একজন সম্মানিত মানুষ দেখা যায় সেটার খেয়াল নেই?’ আমি বেশ ভালো রকমের ধাক্কা খেলাম। অনেকটা বিড়বিড় করে বললাম, ‘সামনে কোনো সম্মানিত লোক আছে যে এখানে দাঁড়িয়ে এই রিকশাচালক বিড়ি খেতে পারবে না?’ তখন আমার সেই রিকশাচালক আমার উপর বিরক্ত হয়েই বলেছিল, ‘ভাইরে চিনেন না?’ আমি আর কোন কথা না বলে যতটা সম্ভব দ্রুত হেঁটে বিপরীত দিকে চলে গিয়েছিলাম। মজার বিষয় হচ্ছে আমাদের রিকশা থেকে সেই সম্মানিত(!) লোক এতটুকু দুরুত্বে ছিল যে আরেকজন রিকশাচালক বিড়ি খেলে সেটা দেখতে পাবে না। তার মানে সে ভয় থেকে কথাটা বলে নি। বরং তার চোখে মুখে এক ধরনের মুগ্ধতা দেখেছিলাম। কিছুক্ষণ আগেও যে রিকশাচালককে আমি বুদ্ধিমান, বিবেকবান মনে করেছিলাম তার প্রতি আমার দৃষ্টি ভঙ্গিটাই মুহূর্তে পালটে গিয়েছিল।

এটুকু পড়ে হয়তো অনেকেই ভাবছেন এটাতে কি আর এমন ঘটনা আছে যে এত বছর পরে এসে আমাকে লিখতে হবে? আসলে এটা আমার একটা ভিন্ন চিন্তা শক্তিকে উন্মুক্ত করেছিল। এরপর থেকে একটা বিষয় আমি খুব ভালোভাবে বুঝার চেষ্টা করি। আমরা কম বেশি সবাই নীতি কথা বলি, বিবেকের কথা বলি; কিন্তু অসৎ এবং খারাপ মানুষদের কেন এক গোপন সমর্থন দিয়ে যাই? কেন অনেক ক্ষেত্রেই সমাজের সবচেয়ে খারাপ মানুষদের একজনকে ভোট দিয়ে আমরা নির্বাচিত করি? কোনো এক ব্যাক্তি যদি অশ্লীল কথা বলে তারপরেও কেন আমরা তাকে পছন্দ করি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে ফলো করে যাই? তারচেয়েও যেটা আমাকে বেশি ভাবতে সাহায্য করেছিল যে আমাদের চোখের সামনে পরিষ্কার অনিয়ম, অন্যায় দেখতে পেলেও কেন আমরা তার প্রতিবাদ তো করিই না বরং কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা তার নীরব সমর্থনও দিয়ে যাই? আর এই অনিয়মের অংশ কিন্তু মূর্খ, জ্ঞানহীন বা অবুঝ মানুষজনই শুধু না বরং শিক্ষিত, মার্জিত, বুদ্ধিমানেরাও। কখনো কি ভেবে দেখেছেন, কেন আমরা সম্মিলিতভাবে অন্যায়কে মেনে নেই?

আমরা সবসময় আমাদের স্বার্থ নিয়েই ভাবি। আমাদের কম্ফোর্ট নষ্ট হয় এমন কিছুকে ইচ্ছা করেই এড়িয়ে চলি। আর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে আমরা সত্য খুঁজি না, আমাদের কম্ফোর্ট খুঁজি। অর্থাৎ, যে ঘটনা বা তথ্য আমাদেরকে ডিসকম্ফোর্ট দিবে সেটাকে আমরা দেখেও না দেখার ভাণ করি। মনে করেন আপনি একটা গাড়িতে বসে আছেন। সেই গাড়িটা যদি ট্রাফিক নিয়ম ভঙ্গ করে বা কাউকে বোকা বানিয়ে আপনাকে বেশ কিছুটা পথ এগিয়ে দেয় তখন কিন্তু আপনি মনে মনে খুশী হবেন। আবার ঠিক বিপরীতভাবে, আপনার পাশ দিয়ে আপনাকে বোকা বানিয়ে যদি আরেকটা গাড়ি নিয়ম ভঙ্গ করে কোন ব্যানিফিট নেয় তাহলে তার উদ্দেশে নৈতিক কথা বলবেন এবং সে যে অন্যায় করেছে সেটার জন্যে আপনি কথা শুনিয়ে দিবেন। তার মানে ন্যায় এবং সত্য আপনার স্বার্থের সাথে সমন্বয় করে চলে। কোনো অসৎ এবং খারাপ মানুষের কাছ থেকে আপনি যদি সুবিধা পেয়ে থাকেন তাহলে তার সেই অসততা আপনি মনে মনে মেনে নেবেন।

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে যে তাহলে কি সবাই অন্যায়ের সাথেইে আপস করে চলে? না, সবাই আপস করে না। সংখ্যায় খুব অল্প হলেও অনেকেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে মতামত প্রদান করে। তবে এর ফলে তাকে অনেকটাই সমাজচ্যুত হতে হয়। এখন হয়তো ভাবছেন কয়টা বিষয়ে কজনা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছে? এই প্রতিবাদ শুধুমাত্র আন্দোলনে না। এর অনেক রূপ আছে। মজার বিষয় হচ্ছে সেসব প্রতিবাদীরা আইসোলোটেড হয়ে যায়, কারণ আমি আপনিই নিয়মের জালে তাদের একলা করে দেই। সোশ্যাল মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্টিং মিডিয়া সব জায়গায় দেখবেন চটুল লোকদের জয়জয়কার। যারা ন্যায়ের কথা বলছে, সমাজ ও দেশের কথা বলছে তাদের অস্তিত্ব থাকছে না। সবচেয়ে বিপজ্জনক বিষয় হচ্ছে ন্যায়ের কথা বলা লোকজনেরা শুধুমাত্র কোণঠাসাই হয় না, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আক্রমণের স্বীকারও হয়।

ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে সবচেয়ে ভালো ও জনপ্রিয় ছাত্রটিই সাধারনত সবচেয়ে ভালো মিথ্যাবাদী। অন্যভাবে বললে যে যত সুন্দরভাবে গুছিয়ে এবং কনভিন্সিংলি মিথ্যা বলতে পারে সে তত জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এমনকি গবেষকরা বলেছেন যে বর্তমান সমাজে বুঝিয়ে মিথ্যা বলতে পারাটা দারুণ একটা স্কিল হিসাবে গন্য হতে পারে। যারা এই মতবাদে বিশ্বাসী না তাদের অনুরোধ করব একটু ভালো করে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। অনেক ক্ষেত্রেই ডিসিভাররা দারুণভাবে জনপ্রিয়। তারা সুন্দরভাবে গুছিয়ে মিথ্যা বলে আমাদেরকে মিথ্যা গিলিয়ে দিচ্ছে। তাদের মিথ্যা ধরার মতো ক্ষমতা বেশিরভাগ মানুষেরই নেই। যারা মিথ্যাকে ধরতে পারছে তারা প্রতিবাদ করছে না কারণ এতে করে তারা আক্রমণের স্বীকার হবে। এটাই আমাদের সমাজের অদ্ভুত নিষ্ঠুরতা। সত্য যখন আমাদেরকে ডিসকম্ফোর্ট দেয় কিংবা আনসেটেল্ড করে দেয় তখন আমরা সত্যবাদীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আক্রমণ করে বসি।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে কেন সত্যের চেয়ে মিথ্যা বেশি প্রসারিত এবং জনপ্রিয়। এর সবচেয়ে সহজ ব্যাখ্যা হচ্ছে, সত্য উপলব্ধি করার জন্যে জ্ঞানের প্রয়োজন হয়, সত্যকে যাচাই করে নিতে হয়। সত্য কখনো কখনো রূঢ় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সত্য আমাদের ডিস্কম্ফোর্ট দেয়, আমাদের স্বার্থে আঘাত হানে। অন্যদিকে মিথ্যা হচ্ছে সহজ এবং চটুল। মিথ্যাকে যাচাই করতে হয় না, মিথ্যাকে ধারণ করার জন্যে কোন জ্ঞানের প্রয়োজন হয় না। মিথ্যার সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে মিথ্যা আপনাকে কম্ফোর্ট দিবে, কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি করে দিবে না। সত্য র‍্যাশিওনাল আর্গুমেন্টকে উৎসাহিত করে আর মিথ্যা আবেগকে ম্যানিপুলেট করে। যেটা আবেগকে ম্যানিপুলেট করতে পারে তার জয় তো হবেই, তাই না?

কগনিটিভ ডিসোন্যান্স নামে সাইকলোজিতে একটা পরিস্থিতি আছে। এটা হচ্ছে নিজের ভেতরে নিজের আরেকটা ভিন্নমত। আমার মনে হয় কম বেশি আমরা সবাই এই সমস্যাতে ভুগি। এটার মাত্রা বেড়ে গেলে তখন হয়তো রোগাক্রান্ত হিসাবে বিবেচিত হয়। অনেক সত্যই আমরা জানি কিন্তু সেই সত্যকে আরেকটা যুক্তি দিয়ে আমরা নিজের কাছে নিজেই আশ্বস্ত হতে চাই। একটা উদাহরণ দেই যেটা আমাদের আগে আলোচনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। একজন অসৎ এবং খারাপ মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই আমরা নেতা হিসাবে মেনে নেই। একজন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজকে দেখবেন পিএইচডি করা এক ব্যাক্তি ভোট দিচ্ছে। এসবই হচ্ছে কম্ফোর্ট দেয়া মিথ্যার আশ্রয় নেয়া। একজন খারাপ মানুষকে যখন আমরা সমর্থন করি তখন নিজের কাছে নিজেই যুক্তি দেই যে, অমুক তো এর চেয়েও বেশি খারাপ কাজ করেছে। তমুক তো, এই ভালো কাজটা করেনি। অতএব, আমি যে খারাপ মানুষটাকে সমর্থন করছি সেটা করাই যায়। আমাদের সমাজ নৈতিক অবক্ষয়ের এক চূড়ান্ত জায়গায় এসে উপনীত হয়েছে। আমরা নিজ স্বার্থে মিথ্যাকে আকড়ে ধরে পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে বসবাস অনুপযোগী এক সমাজ ব্যবস্থা রেখে যাচ্ছি। আমরা সম্মিলিতভাবে মিথ্যাকে মেনে নিয়েছি। আমরা সবাই কগনিটিভ ডিসোন্যান্সে সংক্রমিত।

লেখক: কথাশিল্পী ও নাট্যকার।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Award distribution of Dr Hamdu Mia Memorial Scholarship in Nabinagar

নবীনগরে ডা. হামদু মিয়া স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তির পুরস্কার বিতরণ

নবীনগরে ডা. হামদু মিয়া স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তির পুরস্কার বিতরণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ডা. হামদু মিয়া স্মৃতি শিক্ষা বৃত্তি–২০২৪-এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে উপজেলার ইব্রাহিমপুর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. কামরুজ্জামান। তিনি অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বও করেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নবীনগর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি গোলাম হোসেন খান টিটু, ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মোছা, সাবেক চেয়ারম্যান মো. নোমান চৌধুরী, ইব্রাহিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন, প্রধান শিক্ষক শাহানাজ আক্তার, আল আমিন খন্দকার, মো. আলী মাহমূদুর রহমান রাছেল ও মাজেদুল হকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশন ৯৬ ব্যাচ।

শেষে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Sonaimuri police station in various crises

নানা সংকটে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ

নানা সংকটে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ

একটি ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা। সোনাইমুড়ীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২০০৬ সালে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে থানায় রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে থানা এলাকার ভবন অত্যন্ত পুরাতন, জরাজীর্ণ ও বসবাসের অনুপযোগী। এখানকার সব ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ।

জানা যায়, সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ পরিত্যক্ত ভবনে কোনোরকমে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। এছাড়াও নেই দৈনন্দিন ব্যবহার ও খাওয়ার জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থাও। ১৭০.৪২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সোনাইমুড়ী থানায় ২০২২ সালের জনশুমারী অনুযায়ী রয়েছে মোট জনসংখ্যা ৩,৬৮,৮৪২। এই জনসংখ্যার জন্য নিয়োজিত রয়েছেন ১জন ওসি, ১ জন ওসি তদন্ত, এসআই ৮ জন, এএসআই ১০ জন ও ২৮ জন কনস্টেবল সহ প্রায় ৫০ জন। গত ৫'ই আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত থানায় ৪ টি গাড়ি থাকলেও বর্তমানে রয়েছে মাত্র ২টি গাড়ি। গাড়িতে ব্যবহারের জন্য ২৫ থেকে ৩০ লিটার জ্বালানি তেলের চাহিদা থাকলেও সরকারিভাবে বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ৫ লিটারের। ২০০৬ সালে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে থানায় রূপান্তরিত হলেও বর্তমানে এখানে নেই প্রয়োজনীয় জনবল। তাই এই এলাকায় গঠিত অপরাধ দমনে প্রতিনিয়ন হিমসিম খেতে হচ্ছে থানা কর্তৃপক্ষের। থানা ভবনের দ্বিতীয় তলায় টিন সেট ঘর নির্মাণ করে ফোর্সের আবাসিক ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে ৫ জনের স্থানে গাদাগাদি করে রাত্রি যাপন করে ৮/১০ জন। থানা পুলিশের ব্যারাকে ১৫ জনের মধ্যে থাকে ২০-২৫ জন। আর অফিসারদের জন্য কোন থাকার ব্যবস্থা নেই। ১৫ আগস্টে পুড়িয়ে দেওয়া থানা ভবন ও অন্যান্য ভবন কোনরকম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে থাকছে পুলিশ সদস্যরা। আগত সেবা-প্রার্থীদের বসার কোন স্থান নেই।

থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন জানান, এই থানায় জনবল অনুযায়ী নেই বসবাসের সুব্যবস্থা। একটি পরিত্যক্ত ভবনে কোনো রকম গাদাগাদি করে থাকতে হয়। বিশুদ্ধ পানিরও রয়েছে চরম সংকট। বরাদ্দকৃত গাড়ির জন্য ২৫ থেকে ৩০ লিটার জ্বালানি তেলের চাহিদা থাকলেও সরকারিভাবে বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ৫ লিটার তেল। এ অবস্থায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে হিমসিম খেতে হচ্ছে থানা পুলিশের।

সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, নানা সংকটে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ। এটা সত্য। ডিউটি করতে পুলিশের গাড়ি সংকট রয়েছে। এখানকার কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা সব সংকট মোকাবিলা করে থানার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। চুরি ছিনতাইসহ সকল অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইতোপূর্বে কয়েকটি ডাকাতি ও চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা উদঘাটন হয়েছে।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
The construction of the bridge in Sakhipur was not completed even in five years

সখীপুরে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি ব্রিজের নির্মাণকাজ

ভোগান্তিতে হাজার হাজার মানুষ
সখীপুরে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি ব্রিজের নির্মাণকাজ

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার করটিয়াপাড়া বাজারের উত্তর পাশে কাঁকড়ার ঝোড়ার ওপর ২ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৩১ টাকা ব্যয়ে

নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজ দীর্ঘ ৫ বছরেও শেষ হয়নি। ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় ব্রিজের নির্মাণকাজ। ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা দীর্ঘ সময়েও শেষ হয়নি ব্রিজের কাজ।

উপজেলার কালিদাস-বহুরিয়া সড়কের করটিয়াপাড়া বাজারের উত্তর পাশে কাঁকড়ার ঝোড়া নামক স্থানে ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ওই পিএসসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজ থেমে থেমে চলছে। একটানা যতদিন কাজ চলে তার কয়েক গুণ বেশি সময় বন্ধ থাকে নির্মাণ কাজ।

যানবাহন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্রিজের দুই পাড়ের হাজারো মানুষ। দৈনন্দিন প্রয়োজনে উপজেলা শহর বা অন্য কোথাও যেতে চাইলে ১৪ থেকে ১৫ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এতে অর্থ ও সময় দুই-ই বেশি ব্যয় হচ্ছে তাদের।

উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৩১ টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের পিএসসি গার্ডার ব্রিজটির কাজ পায় মাইন উদ্দিনবাসী নামক ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কাজটি শুরু হয়ে ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজটি এখনো চলমান। এলজিইডির কাগজপত্রে ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার তথ্যও পাওয়া গেছে।

ওই সড়ক ব্যবহার করে স্থানীয় বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সেবা গ্রহীতা ও উপকারভোগীদের একটি বৃহৎ অংশ যাতায়াত করে। বিকল্প সড়ক ঘুরে আসতে অনেক সময় লেগে যায়। এতে বয়োবৃদ্ধ,নারী -শিশুসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা বলেন, কাঁকড়ার ঝোড়া ব্রিজটি সম্পূর্ণ না হওয়ার কারণে কালিদাস, ঠকাইনাপাড়া, ফুলঝুড়িপাড়া, করটিয়া পাড়া, বেলতলী, হারিঙ্গাচালা, হতেয়া-রাজাবাড়ি, কালমেঘা, ছলংগা ও বহুরিয়া চতলবাইদসহ অন্তত ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার। ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান কিছুদিন কিছু কাজ করে বেশ কয়েকবার লাপাত্তা হয়ে গেছে। গত কয়েক মাস ধরেও বন্ধ রয়েছে ব্রিজের কাজ।

তারা আরো বলেন, ব্রিজটি সম্পন্ন না হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় আমাদের সন্তানেরা স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় সময় মতো যেতে পারছে না। অসুস্থ রোগীদের নিয়ে পড়তে হয় চরম বিপাকে। দ্রুত শহরের হাসপাতালে নেওয়ার উদ্দেশে কাঁধে করে তাদের পার করতে হয়। আমাদের প্রয়োজনে কোনো কাজের মালামাল আনতে পারি না। ফল-ফসল ও শাকসবজি ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রেও এই ব্রিজের কারণে আমরা খুবই সমস্যায় আছি। ছোট খাটো মালামাল হলে আমরা কাঁধে ও মাথায় করে পার করি। আমরা সকলে মিলে টাকা তুলে সাময়িক পারাপারের জন্য ব্রিজের পশ্চিম পাশ দিয়ে একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করেছি। অথচ সাময়িক পারাপারের ব্যবস্থাও সরকারিভাবে ঠিকাদারের করার কথা বলে আমরা জানি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি খুব তাড়াতাড়ি যেন এই ব্রিজের কাজটি সম্পন্ন হয়।

ব্রিজের দুই পাড়ের দুটি বাজার কালিদাস ও করটিয়া পাড়া বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেন, মালামাল পরিবহন করা কষ্টকর, সময় সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। প্রায় পাঁচ বছর যাবত আমরা কষ্ট, অতিরিক্ত সময় ও ব্যয়ভার বহন করছি। আমরা এর থেকে নিস্তার চাই।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

সখীপুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান জানান, পিএসসি গার্ডার ব্রিজটির ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে বৃষ্টির কারণে কাজটি সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই কাজটি শুরু হবে এবং আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে আমরা কাজটি শেষ করতে পারব।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Law and order and development discussion meeting of Alokbali Union

আলোকবালী ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়নবিষয়ক মতবিনিময় সভা

নরসিংদী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ
আলোকবালী ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়নবিষয়ক মতবিনিময় সভা

স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে এক অন্ধকার অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আলোর মুখ দেখলো নরসিংদীর সদর উপজেলার আলোকবালীর মানুষ। বিশ্ব যখন আধুনিকতার জয় গানে মুখরিত। ঠিক তখনি এক মধ্যযুগীয় বর্বরতার চোরাবালিতে আটকে ছিল আলোকবালী ইউনিয়নের মানুষের ভাগ্য।

সদর উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল আলোকবালীতে আধিপত্য বিস্তার, মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন, রাজনৈতিক কোন্দল এবং তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত ঘটে আসছিল খুন, হত্যা, চাঁদাবাজি আর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। ইতোপূর্বে এ এলাকার মানুষ টেঁটা ব্যবহার করে মারামারি করত। বর্তমানে তারা বন্ধুক, পিস্তল এবং অবৈধ ভারী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে এলাকার পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছিল। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দ্বন্দ্বের কারণে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ইদন মিয়া (৬০) নামে এক বিএনপির কর্মী, ১৯ সেপ্টেম্বর ফেরদৌসি বেগম (৩৬) নামে এক গৃহবধূ এবং ২৯ সেপ্টেম্বর সাদেক হোসেন (৪২) নামে এক যুবদল নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এ সকল ঘটনায় আরো অন্তত ২৫-৩০ জন আহত হয়।

এ এলাকার শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে গতকাল শনিবার সকালে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে আইনশৃংখলা ও উন্নয়ন কার্যক্রমসহ সার্বিক বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন, নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম পিপিএম, নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা জাহান সরকার, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিনথিয়া হোসেন, পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক দীপক কুমার বর্মন প্রিন্স ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা।

বক্তারা উপস্থিত সর্বস্তরের জনগণকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আজ (গতকাল শনিবার) থেকে আলোকবালীতে কোনো অস্ত্রবাজ, চাঁদাবাজ এবং বালু লুটেরার স্থান হবেনা। তাদেরকে অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। তারা যেকোন দলেরই হউক না কেনো তাদেরকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবেনা। জেলা প্রশাসনের এ মহৎ উদ্যোগটি অভিজ্ঞ মহল এবং এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তির নিশ্বাস ফিরে এসেছে।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Lakshya does not want to become MP minister BGMEA director

লক্ষ্য, এমপি-মন্ত্রী হতে চাই না: বিজিএমইএ পরিচালক

বেগম খালেদা জিয়ার জয়ই আমার
লক্ষ্য, এমপি-মন্ত্রী হতে চাই না: বিজিএমইএ পরিচালক

আসন্ন ক্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ফেনী-১ (ফুলগাজী-পরশুরাম-ছাগলনাইয়া) আসনে ধানের শীষের পক্ষে গণজাগরণ তৈরিতে মাঠে নেমেছেন ম্যাগপাই গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিজিএমইএর পরিচালক মজুমদার আরিফুর রহমান। গত শুক্রবার সকাল থেকে রাত অবধি ফেনী-১ আসনের ফুলগাজী পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে ব্যাপক গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় তিনি বলেন ‘আমি এমপি-মন্ত্রী হতে আসিনি, এসেছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ফেনী-১ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী করতে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমার এই গণমুখী কার্যক্রমে ঈর্ষান্বিত একটি মহল আমাকে নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা আমাকে প্রতিপক্ষ হিসেবে ভাবছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

গণসংযোগ কর্মসূচির শুরুতে সকাল ১০টায় তিনি ফুলগাজী বাশুড়া আজিজুল উলুম কাসিমিয়া নূরানী ও হেফজ মাদ্রাসায় নগদ অনুদান প্রদান করেন এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়ার আয়োজন করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষের পক্ষে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করেন।

দুপুরে তিনি দক্ষিণ দৌলতপুর নূরানী মাদ্রাসা ও উত্তর দৌলতপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিদর্শনকালে দুটি প্রতিষ্ঠানকেও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। উত্তর দৌলতপুরে বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনায় আয়োজিত দোয়া মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।

বিকালে তিনি মুন্সিরহাট ইউনিয়নের করইয়া গ্রাম ও আমজাদহাট ইউনিয়নে পৃথক গণসংযোগ কর্মসূচিতে অংশ নেন এবং করইয়া ঈদগাহ মাঠের উন্নয়নে অনুদান প্রদান করেন। বিকেলে তিনি পরশুরামের বিলোনিয়া স্থল বন্দর এলাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে বেগম খালা দিয়েন পক্ষে গণসংযোগ করেন।

দিনব্যাপী এই গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন ফুলগাজী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম রসুল মজুমদার গোলাপ, কৃষকদলের সাবেক সভাপতি আবু ইউসুফ মিয়া, উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, যুবদল নেতা মাস্টার আনোয়ার হোসেনসহ স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Tubewell distribution among poor and underprivileged families in Borhanuddin

বোরহানউদ্দিনে দরিদ্র্য ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের মাঝে টিউবওয়েল বিতরণ

বোরহানউদ্দিনে দরিদ্র্য ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের মাঝে টিউবওয়েল বিতরণ

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় নূতন বিদ্যুৎ (বাংলাদেশ) লিমিটেড ও এক্টিস এক্ট সিআইও এর আর্থিক সহায়তায় দরিদ্র্য ও সুবিধাবঞ্চিত ৪০টি পরিবারের মধ্যে নিরাপদ পানির অভাব দূর করে সুপেয় পানি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টিউবওয়েল সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।

গত শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে বোরহানউদ্দিনের কুতুবা ইউনিয়নের দক্ষিণ কুতুবায় অবস্থিত নূতন বিদ্যুৎ (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রকল্প এলাকায় সুবিধাবঞ্চিত ৮টি পরিবারের মাঝে টিউবওয়েল হস্তান্তর করা হয়।

এছাড়া পর্যায়ক্রমে প্রোজেক্ট এর নিকটবর্তী এলাকার সাধারণ জনগণের সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে আরো ৩২টি টিউবওয়েল স্থাপন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

নূতন বিদ্যুৎ (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রতিনিধি জানান, তারা প্রজেক্ট আরম্ভলগ্ন হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি প্রজেক্টসংলগ্ন জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিভিন্নভাবে ভূমিকা রেখে আসছে এবং তারা ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখবে।

টিউবওয়েল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রনজিৎ চন্দ্র দাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রুপ সিইও (ব্রিজিন পাওয়ার), গ্রুপ সিওও (ব্রিজিন পাওয়ার), গ্রুপ টেকনিক্যাল হেড(ব্রিজিন পাওয়ার), প্রকল্প প্রধান (এনবিবিএল), ইএইচএস প্রধান(এনবিবিএল) ও এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিন প্রধান (এনবিবিএল)।

মন্তব্য

p
উপরে