দেশে যাদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে ৮ এপ্রিল থেকে তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে।
সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে সংবাদিকদের জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘৬ এপ্রিল শেষ হচ্ছে প্রথম ডোজের টিকা প্রয়োগ। আর ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রয়োগ।’
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করে দিয়েছেন ৮ তারিখ থেকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রদান শুরু হবে।’
টিকার পর্যাপ্ত মজুত আছে কি না, জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘আছে, সেটা আমাকে জানানো হয়েছে।’ জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলে তিনি এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন।
৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হলেও প্রথম ডোজ দেয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
মানিকগঞ্জ সার্কিট হাউসে সোমবার সকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘টিকা দেয়া হচ্ছে এবং হবে। আমরা হয়তো যেভাবে শুরু করছিলাম সেভাবে দেব না। তবে প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ হবে না। ৮ এপ্রিল দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হবে।’
দেশে টিকার কোনো সংকট হবে না জানিয়ে ডিজি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। বেক্সিমকো বলেছে সময়মতো আমাদের টিকা দিতে পারবে।’
লকডাউনের সময় বাড়বে কি না, এমন প্রশ্নে ডিজি বলেন, ‘আগামীতে লকডাউন বাড়ানো হবে কি না, তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব না। অবস্থা দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
স্বাস্থ্যের ডিজি আরও বলেন, ‘লকডাউনের ফল পেতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে। আইনগুলো মানতে হবে। আমরা যদি ব্যক্তিগতভাবে এই আইনগুলো না মানি, তাহলে জোর করে মানানো যাবে না। জীবন রক্ষার জন্য এটা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ২৫ হাজার টন বিস্ফোরকদ্রব্য ছুড়েছে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডগুলোর জন্য নিয়োজিত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সিসকা আলবানিজ।
তার ভাষ্য, এসব বিস্ফোরকের বেশির ভাগ ছোড়া হয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে।
আল জাজিরা বৃহস্পতিবার জানায়, ইসরায়েলে হামাসের হামলার জবাবে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় শুরু হওয়া হামলার প্রথম সপ্তাহে গড়ে ২৫০ জন নিহত হন বলে জানান আলবানিজ।
জাতিসংঘের বিশেষ দূতের ভাষ্য, গাজায় হামলার শুরুর সপ্তাহে ‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়’ ইসরায়েল দুই হাজার পাউন্ড বাঙ্কার বাস্টার বোমা ছোড়ে।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত জিপি হটভলির এক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লিখিত কথাগুলো বলেন আলবানিজ।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম স্কাই নিউজকে হটভলি বলেন, ‘শুধু ভাবুন, জেরুজালেমের মতো কোনো শহরের মাঝখানে বিশাল একটি ক্ষেপণাস্ত্র পড়লে বিষয়গুলো কেমন ঠেকত।
‘শুধু ভাবুন, এটি লোকালয় এবং জনগণ ও শিশুদের ওপর আঘাত করছে।’
গত শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরানের ছোড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
জিপির দাবি, ইরানের হামলায় ক্ষতি হয়নি বললেই চলে।
আরও পড়ুন:বৈশাখের শুরুতেই তীব্র দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। চুয়াডাঙ্গায় আজও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে (৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। এ অবস্থা সপ্তাহজুড়ে চলমান থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে জলীয়বাষ্পের কারণে ভ্যাপসা গরম অস্বস্তি বাড়াবে বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ২২ শতাংশ। মঙ্গলবারও এ জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় (৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
প্রচণ্ড তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সেইসঙ্গে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকায় অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সূর্যের তাপ, তীব্র প্রখরতায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে চারপাশে।
প্রচণ্ড গরমে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইকচালক ও ভ্যান-রিকশাচালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। প্রয়োজনের তাগিদেও ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা। ছন্দপতন ঘটছে জেলাবাসীর দৈনন্দিন কাজকর্মে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপ্রবাহ বয়ে চলছে। এ অবস্থা আরও কিছুদিন চলতে পারে। তবে এখনই বৃষ্টির সম্ভবনা নেই।’
এদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ঢাকা, রংপুর, বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে এবং কিছু কিছু স্থানে তা প্রশমিত হতে পারে।
এ সময়ে ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে বলেও পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাতে কারণে বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেড়েছে। এর ফলে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বি.দ্র.: চুয়াডাঙ্গার তাপপ্রবাহের তথ্য নিউজবাংলার চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন:মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের জের ধরে প্রতিবেশী দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি’র মোট ২৬১ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে বুধবার একজন ও আগের দিন আসা ৪৬ রয়েছে।
অভ্যন্তরীণ সংঘাতের মুখে বুধবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তপথে বিজিপি’র এক সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। মঙ্গলবার সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এপারে চলে আসেন আরও ৪৬ জন বিজিপি সদস্য। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি তাদের সবাইকে হেফাজতে নিয়েছে।
আইন-শৃংখলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান বিদ্রোহীদের গোলাযোগ চলছে৷ মঙ্গলবার রাতেও সীমান্তের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। সংঘাতে আরাকান বিদ্রোহীদের সঙ্গে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশ আশ্রয় নিচ্ছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা।
স্থানীয়দের দাবি, রাতের অন্ধকারে ৪৬ জন বিজিপি সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বিজিবি তাদের নিরস্ত্র করে মঙ্গলবার সকালে আশ্রয় নেয়া ১২ জনের সঙ্গে নতুনদেরও হেফাজতে রেখেছে।
বিজিবি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতে নতুন করে ৪৬ জন মিয়ানমারের বিজিপি সদস্য পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। তাদের নিরস্ত্র করে বিজিবি ক্যাম্পের হেফাজতে রাখা হয়েছে। এছাড়া আজ (বুধবার) নতুন করে আরও একজন আশ্রয় নিয়েছে। এ নিয়ে বর্তমানে মোট ২৬১ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে অবস্থান করছে।
মার্চ মাসে সারা দেশে মোট ৫৫২টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এসব দুর্ঘটনায় মোট ৫৬৫ জন নিহত এবং এক হাজার ২২৮ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথ দুর্ঘটনার সংবাদ পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মার্চ মাসে রেলপথে ৩৮টি দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৮৬ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া নৌপথে ৭টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে ১৮১ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৩ জন নিহত, ১৬৬ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩২.৭৮ শতাংশ, নিহতের ৩৫.৯২ শতাংশ ও আহতের ১৩.৫১ শতাংশ।
এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। ১৬২টি সড়ক দুর্ঘটনায় এ বিভাগে ১৬৫ জন নিহত ও ৩০৬ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে, যেখানে ২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত ও ৯২ জন আহত হয়েছেন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৮৩ জন চালক, ৮২ জন পথচারী, ৮২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩১ জন শিক্ষার্থী, ৭ জন শিক্ষক, ১০৯ জন নারী, ৭০ শিশু, ৩ জন চিকিৎসক, একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং ৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীর পরিচয় মিলেছে।
এদের মধ্যে নিহত হয়েছেন- ৫ পুলিশ সদস্য, ১ আনসার, ৩ সৈনিক, ২ জন চিকিৎসক , ১ জন মুক্তিযোদ্ধা, ১৩০ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৭৮ জন পথচারী, ৬৪ জন নারী, ৬৩ শিশু, ২১ শিক্ষার্থী, ৩১ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬ জন শিক্ষক, ও ৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী।
এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৭৯৩টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৪.৭১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৫.৮৫ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১১.২২ শতাংশ বাস, ১৬.৩৯ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৫.১৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ১০.৪৬ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা এবং ৬.৪৩ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫৭.৪২ শতাংশ গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা, ১৭.২১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২১.৭৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ২.৮৩ শতাংশ বিবিধ কারণে এবং শূন্য দশমিক ৭২ ট্রোন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৪.৬০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৭.২১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৯.৪৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৭.৭৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও শূন্য দশমিক ৭২ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেছেন, প্রকাশিত এই তথ্য দেশে সংঘঠিত সড়ক দুঘর্টনার প্রকৃতচিত্র নয়। এটি কেবল গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য। দেশে সংঘঠিত সড়ক দুঘর্টনার একটি বড় অংশ (প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত) গণমাধ্যমে স্থান পায় না। তাই এসব তথ্য আমাদের প্রতিবেদনে তুলে ধরা সম্ভব হয় না।
তিনি বলেন, ‘দেশে সড়ক দুঘর্টনার প্রাথমিক উৎসস্থল দেশের হাসপাতালগুলোতে দেখলে এমন ভয়াবহ তথ্য মেলে। ঢাকা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতালে) মার্চ মাসে ১৩৬৯ জন সড়ক দুঘর্টনায় গুরুতর আহত পঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। বিজ্ঞান বলে একটি দুঘর্টনায় ১০ জন আহত হলে তার মধ্যে কেবল একজন গুরুতর আহত বা পঙ্গু হয়।
‘বাংলাদেশে ১০ হাজার সরকারি ও ৬ হাজার বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে এসব হাসপাতালে প্রতিবছর সড়ক দুঘর্টনায় আহত প্রায় ৩ লাখের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। অথচ গণমাধ্যমে তার ১০ ভাগের এক ভাগ তথ্যও প্রকাশিত হয় না বলে আমরা ঘটনার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরতে পারি না।’
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে মার্চ মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ
১. ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ, দুর্বল প্রয়োগ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনিয়ম দুর্নীতি ব্যাপক বৃদ্ধি।
২. মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি ও এসব যানবাহন সড়ক মহাসড়কে অবাধে চলাচল।
৩. সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং ও সড়কে বাতি না থাকা। রাতের বেলায় ফক লাইটের অবাধ ব্যবহার।
৪. সড়ক-মহাসড়কে নির্মাণত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও অদক্ষ চালকের হার ব্যাপক বৃদ্ধি।
৫. ফুটপাত দখল, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা।
৬. উল্টোপথে যানবাহন চালানো ও সড়কে চাদাঁবাজি।
৭. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো।
দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশসমূহ
১. রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে প্রাথমিক উৎস থেকে সড়ক দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ডাটা ব্যাংক চালু করা।
২. স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা। মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা।
৩. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস প্রদান।
৪. রাতের বেলায় বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চালকদের রিফ্লেক্টিং ভেস্ট পোশাক পরিধান বাধ্যতামূলক করা।
৫. সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা; চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা।
৬. রাতের বেলায় চলাচলের জন্য জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে পর্যাপ্ত আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা।
৭. ব্লাক স্পট নিরসন করা, সড়ক নিরাপত্তা অডিট করা ও স্টার মানের সড়ক করিডোর গড়ে তোলা।
৮. দেশে সড়কে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ-এর চলমান গতানুগতিক কার্যক্রম অডিট করে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা চিহ্নিত করা ও প্রাতিষ্ঠানিক অকার্যকারিতা সংস্কার করা জরুরি।
ইসরাইলে ইরানের হামলাকে ‘সীমিত আকারের’ বর্ণনা করে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, যদি ইরান বড় কোনো হামলা করতে চাইত, তাহলে ইহুদি শাসকগোষ্ঠীর (ইসরাইল) কিছুই অবশিষ্ট থাকত না।
বুধবার তিনি ইরানের রেভলুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) বার্ষিক প্যারেডে দেয়া ভাষণে এ সতর্কতা উচ্চারণ করেন।
রাইসি বলেন, ‘এই হামলার জবাবে ইসরাইল যদি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আক্রমণও চালায়, তাহলে তার জবাব হবে বিশাল ও কঠোর।’
ইসরাইল-ইরান সংকট নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যখন একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের হুমকি বিরাজ করছে, সে সময়ই এই হুংকার দিলেন ইব্রাহিম রাইসি।
সিরিয়ায় গত ১ এপ্রিল ইরানের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তেহরান। এসব অস্ত্রের বেশির ভাগ ভূপাতিত করে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো।
হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেটিতে কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। এ হামলায় সাত বছর বয়সী এক ইসরায়েলি শিশু মারাত্মক আহত হয়েছে। এর বাইরে বড় ধরনের ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ওই হামলার পর আন্তর্জাতিক মহল থেকে বার বার বিরত থাকার আহ্বান জানানো হলেও জবাব দেয়ার অঙ্গীকার করেছে ইসরাইল।
শনিবারের ওই হামলার প্রশংসা করেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। তিনি জানান, ওই হামলার নাম দেয়া হয়েছে ‘ট্রু প্রমিজ’। একইসঙ্গে ইসরাইল থেকে সম্প্রতি যে হুমকি দেয়া হচ্ছে তার জবাব কঠোর ও অগ্নিঝরা হবে বলে পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
১৩ই এপ্রিল ইসরাইলে ইরানের চালানো হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ওই অপারেশনের পরে বিশ্ববাসী দেখেছে যে, ‘ট্রু প্রমিজ’ ইহুদি রাষ্ট্রের মিথ্যা আধিপত্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে।”
ভাষণে ইসরাইলি মিত্রদের উদ্দেশে বলেন, ‘যেসব দেশ এই নিষ্ঠুর ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইছে, তারাও তাদের জাতির কাছে লজ্জিত হবে।’
আরও পড়ুন:টাইম ম্যাগাজিনের ২০২৪ সালের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন মেরিনা তাবাসসুম। বাংলাদেশের এই খ্যাতনামা স্থপতি সেরা উদ্ভাবক ক্যাটাগরিতে তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
মঙ্গলবার এই তালিকা প্রকাশ করে টাইম ম্যাগাজিন। তাবাসসুমকে নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনে লিখেছেন অ্যামেরিকান স্থপতি স্যারাহ হোয়াইটিং।
তাবাসসুমকে ‘নিঃস্বার্থ স্থপতি’ উল্লেখ করে স্যারাহ লিখেছেন, ‘‘তাবাসসুমের স্বার্থহীনতার পরিচয় তার নকশা করা ভবনগুলোর মাঝেও দেখা যায়। পৃথিবীর সম্পদে ভাগ বসানো প্রাণিকুলের অংশ হিসেবে তিনি তার নিজের সৃষ্টির প্রতি যত্নশীল।
“আগা খান পুরস্কারপ্রাপ্ত ঢাকার বাইত উর রউফ মসজিদ নিয়ে তাবাসসুম নিজে বলেছেন, ‘কৃত্রিম কোনো সাহায্য ছাড়াই একটা ভবনকে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে দিতে হবে।’ আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে বন্যা ঝুঁকি বাড়তে থাকা একটি দেশে তিনি এমন সব বাড়ির নকশা করেছেন যেগুলো কম খরচে নির্মাণ করা যায় ও সহজে সরিয়ে ফেলা যায়।’’
বাইত উর রউফ ছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতা জাদুঘর ও স্বাধীনতা স্তম্ভ মেরিনা তাবাসসুমের উল্লেখযোগ্য কীর্তি। আগা খান পুরস্কার ছাড়াও ২০২১ সালে সোন পুরস্কার পান এই স্থপতি।
টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় এবারে জায়গা করে নিয়েছেন এনএফএল সুপারস্টার প্যাট্রিক মাহোমস, অ্যানিমেটর হায়াও মিয়াজাকি, ফরমুলা ওয়ান ড্রাইভার ম্যাক্স ভেরস্টাপেন, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই, ভারতীয় অভিনেত্রী আলিয়া ভাট ও ব্রিটিশ পপ তারকা ডুয়া লিপা।
মধ্যপ্রাচ্যে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির দিকে যথাযথ নজর রাখতে মন্ত্রিসভার সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে অর্থাৎ যুদ্ধ শুরু হলে এবং সৃষ্ট উত্তেজনা দীর্ঘ সময়ে গড়ালে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবাইকে প্রস্তুত থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বুধবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই নির্দেশ দেন সরকার প্রধান। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার ফলে সম্ভাব্য রি-অ্যাকশন কী হতে পারে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এখন থেকেই সে বিষয় বিবেচনায় প্রস্তুতি নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। কনফ্লিক্ট যদি দীর্ঘমেয়াদি হয়, সেটি কীভাবে আমরা মোকাবিলা করব, সেগুলো মোকাবিলা করার জন্য আমরা কী করতে পারি; সেগুলোর প্রস্তুতি নিতে বলেছেন তিনি। ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখতে বলেছেন।
মাহবুব হোসেন বলেন, যুদ্ধ যদি দীর্ঘমেয়াদি হয় তখন বিভিন্ন সেক্টরে যে ইমপ্যাক্ট পড়তে পারে, সেটি সংশ্লিষ্ট সেক্টর থেকে এক্সারসাইজ করে তা মোকাবিলায় পরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলেছেন সরকার প্রধান। তিনি বলেছেন, যার যার সেক্টরে সবাই যেন প্রস্তুতি নেয়।
ক্রাইসিস তৈরি হলে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে। তখন কী করা যায়, সেসব বিষয়ে পরিকল্পনা রাখতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সচিব জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাস্তবায়নাধীন সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে মন্ত্রিসভাকে জানাতে বলেন।
দেশে এখনও ১৬টি আইন তালিকাভুক্ত করা হয়নি উল্লেখ করে সচিব মাহবুব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিগগির আইনগুলো বাদ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্ত্রিসভা ‘মহেশখালী ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এমআইডিএ) অ্যাক্ট-২০২৪’ এবং ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধা) আইন-২০২৪’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, মহেশখালীর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরকে কেন্দ্র করে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সমন্বিত প্রক্রিয়ায় পরিচালনার জন্য একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের লক্ষ্যে এমআইডিএ আইনের খসড়াটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব।
আইনটির আওতায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন এবং এটি ১৭ সদস্যের বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হবে। গভর্নিং বোর্ড ছাড়াও সরকার একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ করবে, যিনি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অফিসটি পরিচালনা করবেন।
কর্তৃপক্ষের মূল লক্ষ্য হচ্ছে- প্রায় ৫৫ হাজার ৯৬৮ একর জমির নির্দিষ্ট এলাকার জন্য একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা, সেখানে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে শৃঙ্খলা আনা, বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা এবং এলাকাটিকে উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধা) আইন-২০২৪’ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি মূলত প্রচলিত ইংরেজির বাংলা সংস্করণ এবং এই সংস্করণে কোনো পরিবর্তন নেই। এর আগে এই আইনের ইংরেজি ভার্সন অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি যে বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা পান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য নির্বাচন কমিশনাররাও সেই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এ আইনটিই পুনরায় বাংলায় করা হয়েছে। সেটির নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য