করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ চলছে বাংলাদেশে। ৯ মার্চ থেকে প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণ।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে আরও ৩ হাজার ৬৭৪ জনের শরীরে। শনাক্তের সংখ্যা হিসেবে প্রায় ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এর আগে ২ জুলাই এর চেয়ে বেশি শনাক্ত হয়, ৪ হাজার ১৯ জন। এদিনে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে; এর আগে ১৬ ডিসেম্বর এর চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। সেদিন ৪০ জনের মৃত্যুর সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত এক মাসে সংক্রমণ বাড়লেও আস্তে আস্তে কমছে টিকাগ্রহীতার সংখ্যা। শুরুর দিকে এক দিনে ১ লাখের বেশি মানুষ টিকা নিয়েছে। এই মাসের মাঝমাঝি সময়ে এটি বেড়ে ২ লাখ হলেও, সেটি কমতে কমতে ৬৫ হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গণটিকা দেয়া শুরুর ৪৩ দিনে টিকা নিয়েছেন ৫২ লাখের বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ৯২৭ জনের শরীরে। টিকা পেতে নিবন্ধন করেছেন ৬৬ লাখের বেশি মানুষ।
শনিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, শনিবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় টিকা নিয়েছেন ৬৫ হাজার ৩৬৮ জন। সব মিলিয়ে টিকা নিয়েছেন ৫২ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৪ জন।
এদের মধ্যে পুরুষ ৩২ লাখ ৪৪ হাজার ৩৯৯ জন এবং নারী ১৯ লাখ ৬০ হাজার ৪২৫ জন। এ ছাড়া ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে টিকা নেন আরও ৫৬৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জনসহ ৯২৭ জন টিকাগ্রহীতার শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে মাত্রা খুবই মৃদু। কারও সামান্য জ্বর কিংবা বমি হয়েছে।
রাজধানীতে ৪৩টি এবং রাজধানীর বাইরে ৯৫৫টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম চলছে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন ৬৫ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৩ জন।
গত এক দিনে জেলাভিত্তিক সবচেয়ে বেশি টিকা দেয়া হয় ঢাকায়, ৯ হাজার ২৪ জনকে। সবচেয়ে কম বান্দরবানে, ৩৭ জনকে।
ঢাকা বিভাগে টিকা নিয়েছেন ১৩ হাজার ৭৪৯ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর ১ জনের শরীরেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রাম বিভাগে টিকা দেয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৭৪৯ জনকে। কারও শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
রাজশাহী বিভাগে টিকা নিয়েছেন ৭ হাজার ৯৩৯ জন। এই বিভাগেও একজনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া গেছে। খুলনা বিভাগে ৬ হাজার ৪১০ জনের মধ্যে কারও শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
বরিশালে টিকা দেয়া হয়েছে ১ হাজার ৮৯৪ জনকে। এই বিভাগেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর নেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে। সিলেট বিভাগে ৫ হাজার ২৩৩ জন টিকাগ্রহীতার মধ্যে কারও শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
রংপুরে ৭ হাজার ৬০৬ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ময়মনসিংহ বিভাগে টিকা দেয়া হয়েছে ৫ হাজার ৮৩০ জনকে। এর মধ্যে ১ জনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে শিয়ালের কামড়ে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শনিবার (২৮ জুন) ভোরে হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের ফুলছোঁয়া গ্রামের বেপারীসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, গ্রামের একটি নির্জন জঙ্গলে মাটির গর্তে ১৫ থেকে ২০টি শিয়ালের একটি বাসা রয়েছে। সেখান থেকে শনিবার ভোরের দিকে দুটি শিয়াল বেরিয়ে এসে পাশের কয়েকটি বাড়িতে ঢুকে কামড়াতে শুরু করে। এতে ১০ জন আহত হন, যাদের মধ্যে দুজনকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
গ্রামবাসীর ধারণা, শিয়াল দুটি ক্ষুধার্ত ছিল বলেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য কালাম বেপারী ও কবির হোসেন মোল্লা ইউএনবিকে জানান, ভোরে লোকজন ঘুম থেকে উঠে বাইরে আসার পর, রাস্তায় থাকা দুটি শিয়াল একত্র হয়ে যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই হঠাৎ করে কামড়ে দিয়েছে। অনেকে হাতে পাওয়া লাঠিসোটা দিয়ে প্রতিহত করে রক্ষা পান।
কালাম বেপারীর দেওয়া তথ্যমতে আহতদের মধ্যে আছেন— বেপারী বাড়ির মৃত গফুর বেপারীর ছেলে বারেক বেপারী (৬০), মহসিনের ছেলে রনি (২০), কালাম বেপারীর ছেলে জসিম বেপারী (৩০), মৃত শাহালমের ছেলে রেহান (২০), রাজ্জাক বেপারীর ছেলে হাছান বেপারী (১৫), পণ্ডিত বাড়ির মিজির ছেলে রুবেল (৪০), মৃত লতিফ বেপারীর ছেলে আবু তাহের (৪০), আবু মিয়ার ছেলে লতিফ, রুহুল আমিনের ছেলে রুবেলসহ আরও কয়েকজন।
আরেক ইউপি সদস্য আবু তাহের বলেন, ‘শিয়ালের কামড়ে বারেক বেপারীর অবস্থা একটু বেশি খারাপ। বন্যপ্রাণী আইন রক্ষা করে কীভাবে শিয়াল প্রতিহত করা যায়, তা নিয়ে আমরা গ্রামবাসী মিলে চিন্তা করছি।’
এ বিষয়ে উপজেলা বন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘শিয়াল ধরে বনে ছেড়ে দেওয়া আমাদের কাজ। কিন্তু জনবল না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে স্থানীয়রা শিয়াল ধরে দিলে আমরা বনে অবমুক্ত করে দেব।’
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন জানান, তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে তিনজন মাদকসেবীকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহ জহুরুল হোসেন। অভিযানে তাকে সহযোগিতা করে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি দল।
রবিবার (২৯ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান। তিনি জানান, মাদক সেবনের অপরাধে লস্করপুর এলাকার মাছাদ আহম্মদ (৩০), মাগুরা এলাকার জুলহাস (৩৫) ও জয়পাশা এলাকার শিমুল হোসেন আক্তারকে (৩৫) বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়। পরে মাছাদ ও জুলহাসকে তিনদিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা অর্থদণ্ড এবং শিমুলকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
ফেনীতে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। সিগন্যাল না মেনে অটোরিকশাটি রেললাইনে উঠে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (২৮ জুন) রাতে ফেনী শহরের গোডাউন কোয়ার্টার রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের হাফেজুল ইসলাম (৪০) ও তার মা ফাতেমাতুজ্জোহরা (৬৩)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ফেনী রেলস্টেশনের কাছাকাছি পৌঁছালে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সিগন্যাল অমান্য করে রেললাইনে উঠে পড়ে। এ সময় ট্রেনটি এসে অটোরিকশাটিকে সজোরে ধাক্কা দিলে সেটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে অটোরিকশায় থাকা দুই যাত্রী গুরুতর আহত হন।
প্রায় সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা তাদের ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাফেজুল ইসলামকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢামেকে নেওয়ার পথে ফাতেমাতুজ্জোহরাও মারা যান বলে জানান তাদের আত্মীয় মাসুম বিল্লাহ।
প্রত্যক্ষদর্শী দিদারুল ইসলাম বলেন, ‘অটোরিকশাটি হাসপাতাল থেকে ট্রাংক রোডের দিকে যাচ্ছিল। সিগন্যাল অমান্য করে রেললাইনে উঠলে ট্রেন এসে ধাক্কা দেয়।’
তিনি আরও জানান, অটোরিকশায় চালকসহ পাঁচজন ছিলেন। দুর্ঘটনার মুহূর্তে তিনজন নেমে পড়ায় তারা রক্ষা পান।
ফেনী রেলস্টেশন মাস্টার মো. হারুন জানান, চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ফেনীর প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের আগমুহূর্তে, সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে দুর্ঘটনার পরও রেল চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি।
এ বিষয়ে ফেনী রেলস্টেশনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রেলওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ইকবাল হোসেন বলেন, ‘নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় লাকসাম জিআরপি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’
এনবিআর সংস্কার ও চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের 'শাটডাউন' কর্মসূচির কারণে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। গতকালের আন্দোলনে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আহ্বানে কর্মকর্তারা রাজধানীতে 'মার্চ টু এনববিআর' কর্মসূচি পালন করেন। আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ ছাড়া সংস্কার সম্ভব নয়। তবে ১২টি ব্যবসায়ী সংগঠন চেয়ারম্যানের অপসারণের বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস ও শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, আগে নিবন্ধন হওয়া জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানামা চললেও নতুন জাহাজের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে।
মোংলা, সোনামসজিদ, বেনাপোল ও বাংলাবান্ধা বন্দরেও একই অবস্থা। তবে আখাউড়া বন্দরে কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল বলে জানা গেছে।
কুমিল্লার মুরাদনগরে বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২৯ জুন) ভোর ৫টার দিকে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফজর আলী (৩৮) কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামের পুর্বপাড়ার বাসিন্দা।
ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন— বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামের অনিক, সুমন, রমজান ও বাবু।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান তাদের আজ সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দিবাগত রাতে মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামে এই ধর্ষণকাণ্ড ঘটে।
ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা আলোচনার জন্ম দেয়। নেটিজেনরা ব্যাপক সমালোচনা করে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এরপর ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের দায়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ। পরে আজ ভোরে সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার হন ফজর আলী।
পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পর ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় ফজর আলীকে প্রধান আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা করেন করেন। তবে ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করে যারা সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে, তাদের মধ্য থেকে আরও চারজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে, এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার জানান, বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে রামচন্দ্রপুর পাঁচকিত্তা গ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে স্থানীয়দের হাতে আটক হন ফজর আলী। পরে তাকে মারধরও করে বিক্ষুব্ধরা। তবে আহত অবস্থায় তিনি পালিয়ে যান।
ঘটনার পরপরই উপস্থিত কয়েকজন ধর্ষণের শিকার নারীর ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। খবর পেয়ে মুরাদনগর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়। সেই সময়ই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর মূল আসামিকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত ছিল বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ভুক্তভোগী নারী ১৫ দিন আগে বাপের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন বলে জানান পুলিশ সুপার।
বর্ষাকাল শুরু হতেই ঢাকার বায়ুমানে পড়েছে বৃষ্টির প্রভাব। বছরের বেশিরভাগ সময় বায়ুদূষণে বিশ্বের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানীকে দেখা গেলেও গত কয়েকদিন ধরে ঢাকার বাতাসের মান ‘মাঝারি’ শ্রেণিতে রয়েছে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
রবিবার (২৯ জুন) সকাল সোয়া ৯টায় ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৭৯, আইকিউ এয়ারের সূচকে যা ‘মাঝারি’ হিসেবেই শ্রেণিভুক্ত।
একই শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত হলেও গতকালের চেয়ে ঢাকার বায়ুমানে আজ কিছুটা অবনতি হয়েছে। গতকাল প্রায় এই সময়ে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৫৯। সেই হিসেবে আজ দূষণের পরিমাণ ২০ পয়েন্ট বেড়েছে।
কণা দূষণের এই সূচক শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। আর ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত একিউআই স্কোর ‘মাঝারি’ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
আজ দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ১৮। একিউআই স্কোর ৭৭ নিয়ে ঢাকার উপরে ছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শহর কলকাতা।
এই সময়ে ১৮০ স্কোর নিয়ে বায়ুদূষণে বিশ্বের শীর্ষ শহর হিসেবে দেখা যায় উগান্ডার রাজধানী কাম্পালাকে। স্কোর ১৭১ নিয়ে তারপরই ছিল লাহোর। এ ছাড়া ১৫৯, ১৫২ ও ১২৮ নিয়ে পরের তিনটি স্থানে ছিল চিলির সান্তিয়াগো, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ও চীনের বেইজিং।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ছোঁয়াছুঁয়ি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় শতাধিক গরুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে এর মধ্যে বাছুরের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। কোরবানির ঈদের আগেই এর সংক্রমণ প্রকোপ ছিল বলে জানা যায়। তবে এলএসডির সংক্রমণ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই আটোয়ারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের।
রোগটি সাধারণত বর্ষা মৌসুমের শেষে, শরৎ বা বসন্তের শুরুতে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। তবে এবার অনেকটা আগেভাগেই এর সংক্রমণের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে খামারিসহ সাধারণ মানুষের।
উপজেলার তোড়িয়া, ধামোর আলোয়াখোয়া ও বলরামপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যাচ্ছে যে, গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজের সংক্রমণের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি এ রোগে গরুর মৃত্যুও হচ্ছে। যার সংখ্যা ইতোমধ্যে প্রায় শতাধিক ছাড়িয়েছে বলে জানা যায়।
জানা যায়, গত দুই দিনে উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে মৃত্যু হয়েছে ১৫টিরও বেশি বাছুরের। পার্শ্ববর্তী আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়ও মারা গেছে ১০ থেকে ১২টি বাছুরের। এভাবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে এবং মৃত্যুও হচ্ছে অস্বাভাবিকভাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, তার বাছুরের প্রথম দিকে জ্বর ছিল প্রায় ১০৪°-১০৬° তাপমাত্রা। অতিরিক্ত জ্বরের জন্য মুখ ও নাক দিয়ে লালা পড়ে, পা ফুলে যায় এবং দুই পায়ের মাঝখানে পানি জমে। ধীরে ধীরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পিণ্ড আকৃতি ধারণ করে। পরে পিণ্ডাকৃতির স্থানে লোম উঠে গিয়ে ক্ষত হওয়া শুরু করে বিভিন্ন স্থানে তা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বাছুরটি মারা যায়।
তবে, এই রোগকে পুঁজি করে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন পল্লী পশু চিকিৎসকরা। তাদের এই অসাধু চিন্তার দিকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কোনো নজরদারি নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন বলেন, কারিয়াল (পল্লী পশু চিকিৎসক) আসার সঙ্গে সঙ্গে ৩-৪ টা ইনজেকশন দিয়ে দেন। তাতেই ভিজিট দিতে হয় ৪০০-৫০০ টাকা। কী ওষুধ দেন না দেন আর কিছু ওষুধের নাম লিখে দিয়ে চলে যান। তারা বর্তমানে টাকার পেছনে ছুটছেন। আমাদের এলাকার অনেক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে- তবে এর মধ্যে বাছুরের সংখ্যা ৯০ ভাগ।
এ বিষয়ে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মোসা. সোয়াইবা আখতার জানান, লাম্পি স্কিন ডিজিজ ১ থেকে ৬ মাস বয়সি বাছুরের আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এটি ভাইরাসংঘটিত হওয়ায় এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। শুধু সচেতনতার মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে এরপরও যদি কোনো প্রাণী আক্রান্ত হয়ে থাকে তবে প্রাথমিকভাবে অ্যান্টিপাইরেটিক বা অ্যান্টিহিস্টামিন দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। আর আক্রান্ত প্রাণীর নডিউল বা গুটি ফেটে গেলে সিস্টেমিক অ্যান্টিবায়েটিক প্রয়োগ করা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ওই সব একাডেমিক লাইসেন্সহীন, অদক্ষ, পল্লী পশু চিকিৎসক ও ড্রাগ লাইসেন্সহীন ফার্মেসির বিরুদ্ধে আটোয়ারী উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
মন্তব্য