আগামী জুন মাসের মধ্যে বৈশ্বিক কর্মসূচি কোভ্যাক্সের আওতায় ১ কোটি ৯ লাখ ডোজ টিকা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে বৃহস্পতিবার দেশের ৭০টি উপজেলা কমপ্লেক্সে কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা জানান।
ওই অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
করোনাভাইরাসের টিকার সমপ্রাপ্তির বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করছে ইউনিসেফ, গ্যাভি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সিইপিআইয়ের মতো সংস্থা ও জোটগুলো।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের টিকার দ্বিতীয় চালান এই মাসে আসতে পারে।
তিনি বলেন, বেপরোয়া চলাফেরা, স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে সংক্রমণ বাড়ছে। সমাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুধবারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় এক হাজার ১৮ জনের দেহে। এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে পাঁচ লাখ ৫৩ হাজার ১০৫ জন।
শনাক্তের এ সংখ্যা ৫৯ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। গত ১০ জানুয়ারি এক দিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়। সেদিন শনাক্ত হয়েছিল ১ হাজার ৭১ জন।
এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশে করোনা মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি আছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিভিন্ন অনুষ্ঠানসহ সামাজিক কার্যক্রম সীমিত পরিসরে করার আহ্বান জানান।
টিকার জন্য ৫৩ লাখেরও বেশি নিবন্ধন হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ৪১ লাখেরও বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আনন্দের বিষয় হলো, যত মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে প্রত্যেকে সুস্থ আছেন। কোনো জায়গায় কোনো অঘটন ঘটেনি।’
সরকার এখন যে টিকা দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতে যা দেবে, তা পুরোটাই বিনা মূল্যে থাকবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী এবং আবাসিক ছাত্রদের টিকা দেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ৩০ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি রয়েছে। এর আগেই শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের টিকা দেয়া হবে।
বয়সসীমা ৪০ নির্ধারণ করার কারণে দেশের ৪ কোটি লোককে টিকা দিতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যেভাবে ভ্যাকসিনেশন হচ্ছে, এ পর্যন্ত ভালোই আছে। এই ভালোটা বজায় রাখতে চাই।
‘টিকা যদি আমাদের হাতে বেশি আসে, সব শিডিউল ঠিক থাকে, তাহলে হয়তো বয়সের বিষয়ে চিন্তা করতে পারব।’
আরও পড়ুন:বান্দরবানে রুমা বাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে টোল-ট্যাক্স (হাসিল) আদায়ে অনিয়ম ও হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টায় রুমা বাজারে এই মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেছেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের বাজার ফান্ড কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত ইজারাদার মোহাম্মদ খালেদ বিন। তিনি রুমা বাজার ও বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সম্প্রতি অধিকাংশ স্থানে বেআইনিভাবে টোল-ট্যাক্স আদায় করছেন। ফলে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
ইজারাদার কর্তৃক জোরপূর্বক জবরদস্তি করে টোল-টেক্স আদায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।
ভুক্তভোগী ও খক্ষ্যংঝিরি বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. খালেক মেম্বার অভিযোগ করে তার বক্তব্যে বলেন, খক্ষ্যংঝিরি বাজার জেলা পরিষদের বাজার ফন্দের অধীনস্থ নয়। কিন্তু বটতলী, আমতলী ও বাগানপাড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে গাড়ি থামিয়ে জোরপূর্বক টোল-ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ সেপ্টেম্বর ও ৩ সেপ্টেম্বর রুমা উপজেলার সীমানার বাইরে রোয়াংছড়ি উপজেলায় তারাছা ইউনিয়নের ম্রোংগো বাজারে গিয়ে তাদের ট্রাক থেকে মোট ৩,৫০০ টাকা আদায় করা হয়েছে। প্রমাণস্বরূপ দুটি রশিদও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রদর্শন করা হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রুমা বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. এদ্রিছ মিয়া, মোহাম্মদ বাবুল এবং খক্ষ্যংঝিরি বাজারের ব্যবসায়ী নেতা মোহাম্মদ খালেদসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
বক্তারা বলেন, কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত পরিমাণের বাইরে ইজারাদারের নিজের ইচ্ছেমতো টোল-ট্যাক্স আদায়ের অধিকার নেই। অবিলম্বে এই অনিয়ম বন্ধ না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
প্রশাসনের কাছে দাবি করে বক্তারা বলেছেন, অবৈধ টোল আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং ব্যবসায়ীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে মো. ইদ্রিস মিয়া বলেন, রুমা বাজার সেডটির একটি কুচক্র ব্যবসায়ী গোষ্ঠী বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমল থেকে নিজের সম্পদ হিসেবে দখল করে রেখেছে। ফলে হাটবাজার দিনে দূর-দূরান্ত থেকে শাকসবজি ও ফলমূল পিঠে বহন করে নিয়ে আসা নারীরা বাজার শেড স্থান না পাওয়ায় রাস্তার ধারে শাকসবজিগুলো ফেলে রেখে বিক্রি করছেন। এতে দুরকম পাহাড় থেকে শাকসবজি বিক্রি করতে আসে নর-নারীরা একদিকে ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজে বিভিন্ন সময় ভোগান্তিতে শিকার হচ্ছে , অন্যদিকে দোকানদারের কাছে অশুভ আচরণে তিরস্কার শিকার হচ্ছে। এসব ভোগান্তি দূরীকরণে রুমা বাজার শেড নিচতলায় নিজের স্থায়ী সম্পত্তির মতো সবজি দোকান করা ওইসব ব্যবসায়ীদের একটা নিয়মের ভেতরে আনতে হবে যাতে উভয় ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
কেউ গারো সম্প্রদায়ের। কেউ কোচ-বর্মণ। কারও হাতে দা-বটি। কারও হাতে বাঁশের ফালি। কেউ চটা কাটছে। কেউবা আবার করছে বুননের কাজ। তাদের নিপুণ হাতে ফুটে উঠেছে বাঁশের শৌখিন বাহারি পণ্যে। বলছিলাম টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়ের ফুলবাগ চালা ইউনিয়নের পীরগাছা বর্মন পল্লির কথা।
পীরগাছা গ্রামটি মধুপুর শহর থেকে ১২-১৩ কি. মি. উত্তরে অবস্থিত। এ গ্রামের সিংহভাগ বসতি গারো কোচ সম্প্রদায়ের। কোচদের বেশি বসতি গ্রাম এটিই।
এখানে তারা যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছে। তাদের নিজস্ব ভাষা সংস্কৃতি অনেকটাই হারিয়ে গেলেও এখনো টিকে আছে বাঁশের কাজ। কোচ নারীরা বাড়িতেই কুটিরশিল্পের কাজ করে থাকে। নারী-পুরুষরা কৃষি ও বাঁশের কাজ তাদের প্রধান পেশা। কমবেশি সারা বছরই তারা বাঁশের কাজ করে থাকে। তাদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় হাত পাখা, কলমদানি, প্রিন্ট ট্রে, পেন হোল্ডারসহ নানা পণ্য তৈরি হচ্ছে।
পীরগাছা বর্মনপাড়ায় গিয়ে কোচ নারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের পাড়ায় কেউ কেউ গৃহস্থালি, কেউ কেউ দিন মজুরি, কেউবা ক্ষুদ্র ব্যবসা, কেউ কেউ বাঁশের কাজও করে থাকে। এক সময় নিজের সংসারের কাজের পাশাপাশি সারা বছরই বাঁশের কাজ করত। এখন বাঁশের দাম বেড়ে যাচ্ছে। প্লাস্টিকের পণ্যের চাহিদা
ও দাপটে তাদের পণ্যের চাহিদা কমে যাচ্ছে। তাদের গ্রামের প্রায় ২৫০ ঘরের নারীরাই কমবেশি বাঁশের কাজ করে থাকে বলে জানালেন সঞ্চিতা রানী।
বিভিন্ন জেলার লোকজন এসে তাদের বাঁশের তৈরি কিনে নেয়। পুঁজির অভাবে তারা কুটিরশিল্পের কাজ ঠিকমতো করতে পারে না। এ জন্য বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে সংসার চালিয়ে থাকে। প্রতি সপ্তাহেই অনেক পরিবারের কিস্তি গুণতে হয়। বাঁশের কাজ করেও তাদের অভাব থেকেই যাচ্ছে। তারা সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দাবি জানান।
উদ্যোক্তা লিটন নকরেক (৪৭) বলেন, তার পণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। অর্ডার আসলে তৈরি করে দেন। সে প্রতি মাসে ৫-৬ হাজার টাকার মতো বিক্রি করতে পারে বলে জানান তিনি।
পীরগাছা গ্রামের বাঁশের কাজ করা নারী রাঁধা রানী (৪০) বলেন, ‘তার বিয়ে হয়েছে ১৫ বছর আগে। সে তার বাবার বাড়িতে থাকতেই পরিবারের সাথে বাঁশের কাজ করত। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসেও এ কাজই করছে।’
সঞ্চিতা রানী (৩০) বলেন, ‘দুই ছেলে-মেয়ের সংসার। স্বামীর সংসারে সহযোগিতার জন্য সে বাঁশের কাজ করে থাকে। তার এক মেয়ে ক্লাস সেভেনে পড়ে। ছেলে কেজিতে পড়ে। পড়াশোনা শিখে তারা যেন ভালো মানুষ হয় এমনটাই তার চাওয়া। বাঁশের কাজে উপার্জিত অর্থ স্বামীকে দিয়ে সহযোগিতা করে।’
কোচ পল্লীর অহলা রানী (৪০) বলেন, ‘সে ২০০৮ সালে কাজ শেখেন। দেখাদেখি তার কাজ শেখা। তালাই, পাখা, ধারি, গাছেক, ফুলদানিসহ বিভিন্ন শৌখিন পণ্য তৈরি করে। তার অর্জিত অর্থ দিয়ে সংসারের কাজ লাগান। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচসহ বিভিন্ন প্রয়োজন মেটান। জলছত্র গ্রামের মুন্নি মৃ (৪০) বলেন, ‘তার স্বামী বাঁশ-বেতের কাজ করে। বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা ভালোই। চাহিদা বেশি তবে দাম কম। পোষাতে পারে না। সংসার চলাতে কষ্ট হয়। সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানান তিনি।’
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘মধুপুরের নারীরা বিভিন্ন ধরনের কুটিরশিল্পের কাজ করে থাকে। তাদের তৈরিকৃত পণ্য দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়ে তিনি বলেন, কুটিরশিল্পে মধুপুরে কাজের সাথে জড়িতদের তালিকা ঊর্ধ্বতন অফিসে পাঠানো হয়েছে।
নীলফামারীতে আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল ও নিরাপদ বাইপাস সড়ক নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জেলা ট্রাক-ট্যাংকলড়ী শ্রমিক ইউনিয়ন।
সোমবার দুপুর ১২টায় জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা ট্রাক-ট্যাংকলড়ী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুল মোহাব্বতের সভাপতিত্বে বক্তৃতা দেন ট্রাক মালিক সমিতির নেতা ও জেলা বিএনপির সদস্য আনিছুর রহমান কোকো, জেলা ট্রাক-ট্যাংকলড়ী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জামিয়ার রহমান, সহসম্পাদক আব্দুর রশিদ, দপ্তর সম্পাদক মোফাখখারুল ইসলাম চিনু প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘নীলফামারী মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হওয়ার দীর্ঘসময় পার হলেও এখনো আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়নি। জেলায়
ব্যক্তি মালিকানাধীন তিন শতাধিক ট্রাক ও ড্রাম-ট্রাক রয়েছে। এসব যানবাহন রাখার জন্য কোনো নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় চালকদের সড়কের পাশে যেখানে- সেখানে গাড়ি থামাতে হচ্ছে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন চালকরা অপর দিকে ট্রাফিক পুলিশের দ্বারা জরিমানারও শিকার হচ্ছেন।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে জেলা শহরের বাইপাস সড়কটি নির্মাণ
করা হয়েছে। অনেক বড় বড় বাক থাকার ফলে ট্রাক, বাসচালক ও সাধারণ মানুষের জন্য এই বাইপাস রাস্তাটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এতে প্রাণহানি ও যানবাহনেরও ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। তাই অবিলম্বে দ্রুত আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল ও নিরাপদ বাইপাস সড়ক নির্মাণ করতে হবে।’
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসককে স্বারকলিপি প্রদান করেন ট্রাক-ট্যাংকলড়ী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা। কর্মসূচিতে জেলা ট্রাক-ট্যাংকলড়ী শ্রমিক ইউনিয়ন ও ট্রাক মালিক সমিতির নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী তরুণ মোড় থেকে হাসিমপুর পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন হাজারও মানুষ। এই সড়ক দিয়েই সদকি, জগনাথপুর ইউনিয়ন এর পাশাপাশি খোকসা উপজেলারও বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ যাতায়ত করে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সংস্কারে নেই কোনো কার্যকর উদ্যোগ। ফলে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ, ঝুঁকিতে পড়ছেন রোগী, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ যাত্রীরা।
স্থানীয়রা জানান, খানাখন্দে ভরা এই সড়ক প্রতি বর্ষায় হয়ে ওঠে আরও ভয়ংকর। প্রতিনিয়ত ঘটে ছোটো বড় দুর্ঘটনা।
যানবাহন-ভ্যান উল্টে যাত্রী আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে। গাড়ির যন্ত্রাংশও নষ্ট হয়ে যায় বারবার। পথচারী আশিকুর রহমান বলেন ‘রোগী নিয়ে যাওয়া যেন বিপদজনক সড়কের কারণে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে।
দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা আপান ইসলাম বলেন, মাঝেমধ্যেই দেখি যাত্রীরা পড়ে গিয়ে নানা দুর্ঘটনা ঘটে। এতে শিশু-বৃদ্ধরা বেশি আহত হন। স্কুলের শিশুদের নিয়ে সবসময় ভয়ে থাকেন অভিভাবকরা।’
উপজেলা শহরে যাতায়াতের প্রধান সড়কের এই যদি হয় হাল। ট্রাকচালক রুস্তম আলী বলেন, মাঝেমধ্যেই এই সড়ক দিয়ে যাতায়ত করি। উঁচুনিচু গর্ত সড়ক হওয়ায় গাড়ির নানা যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে পড়ে প্রায়ই। এগুলো ঠিক করতে করতেই আমাদের লাভ-ক্ষতি প্রায় সমান হয়ে যায়। কুমারখালী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিডি) মো. নাজমুল হক বলেন, এই রাস্তার স্টেমেট পাঠাইছি দেখি বরাদ্দ পাইলে কি করা যাই। তবে উপজেলার আইডিভুক্ত সড়ক কত কিলোমিটার জানতে চাইলে তিনি বলেন,এভাবেতো বলা যায় না অফিসে আসতে হবে ফাইল-টাইলের ব্যাপার স্যাপার।
স্থানীয়রা বলছেন, বরাদ্দের অজুহাত না দেখিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু না করলে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে।
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার একটি আঞ্চলিক সড়ক দীর্ঘ ৫ বছর ধরে খানাখন্দে ভরা রয়েছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই বেহাল পথে চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। যানবাহন, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও রোগী পরিবহনে দেখা দিয়েছে মারাত্মক দুরবস্থা।
সোমবার বেলা ১২ টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, চরফ্যাশন উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের হলুদ দালান মেইন সড়ক থেকে ভাসানচর বেড়িবাঁধ পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৯৯ শতাংশ কার্পেটিং উঠে গেছে। কোথাও কাদামাটি, কোথাও আবার হাটুসম গর্ত তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপর থেকে কোনো সংস্কার করা হয়নি। ফলে ধীরে ধীরে পুরো কার্পেটিং উঠে গিয়ে সড়কটি প্রায় চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ে।
রসুলপুর ৪নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু তাহের মাঝি বলেন, এই সড়ক দিয়ে রসুলপুর ইউনিয়নের ৪ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড ও চরমানিকা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডসহ আশপাশের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করেন। অসুস্থ রোগী হাসপাতালে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। শুধু কষ্ট নয়, অনেক সময় জীবনও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।
একই এলাকার চা দোকানি জাহাঙ্গীর জানান, ২০১১ সালে সড়কটি নির্মাণের পর প্রায় ৮-৯ বছর মানুষ চলাচল করেছে। কিন্তু গত ৫ বছর ধরে কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে গাড়ি ও পথচারী সবাই মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে।
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক শফিউল্লাহ সবুজ বলেন, জরুরি রোগী পরিবহন করতে গিয়ে প্রচুর সময় নষ্ট হয়। মানুষের দুর্ভোগ সীমা ছাড়িয়েছে। অথচ কর্তৃপক্ষ কেউই নজর দিচ্ছেন না।
ওই সড়কে নিয়মিত অটো রিকশা চালক বশির ও বেলাল জানান, এই সড়কে রিকশা চালাতে গিয়ে বারবার যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়। যা আয় করি তার বেশির ভাগই মেরামতে চলে যায়। তাই দ্রুত সড়ক মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।
চরফ্যাশন উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. সাদ জগলুল ফারুক জানান, সড়ক সংস্কারের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই ওই আঞ্চলিক সড়কটির কাজ শুরু করা হবে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথি বলেন, গ্রামবাসীর ভোগান্তির বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ‘আগামীর অগ্রনায়ক’ শীর্ষক বুকলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা এলাকার বিভিন্ন মার্কেটে গিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাঝে বুকলেট বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক সাবেক সহসভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির দলীয় মনোয়ন প্রত্যাশী অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল।
বুকলেট বিতরণকালে অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল বলেন, রাষ্ট্র কাঠামোর ৩১ দফা আগামীর পজিটিভ বাংলাদেশ। ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে পারলেই বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে মাথা তুলে দাড়াবে। বাংলাদেশের জনগণ একটি সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রের গর্বিত নাগরিক হবেন। যেখানে দারিদ্র্যতা ও ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি বলেন, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফার মধ্যেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানসহ মানুষের মৌলিক অধিকার এবং বাস্তবায়নের পথ দেখানো হয়েছে। আমাদের এই ভাবনাকে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। দলের সকল নেতাকর্মী, তরুণরা প্রত্যেকেই এই ৩১ দফার অ্যাম্বাসেডর।
বুকলেট ও গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন, সোনারগাঁ পৌরসভা বিএনপির সহ সভাপতি আনোয়ার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মনির, কাঁচপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সোহেল আরমান, সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শফিক ভূইয়া, সোনারগাঁ পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আতা রাব্বি জুয়েল, সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা বাবু, বৈদ্দ্যের বাজার ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আদিব ইকবাল প্রমুখ।
একটি সভ্য সমাজে এই মব সংস্কৃতি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সরকারের সদিচ্ছার অভাব নেই, তবে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যে অভিজ্ঞতা দরকার, তার ঘাটতির কারণেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। দেশে চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।
সোমবার দুপুর ১২টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
রহমাতুল্লাহ বলেন, নির্বাচন ছাড়া দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই সরকারের অঙ্গীকার অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা তাদের দায়িত্ব। স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি না করে সেই অঙ্গীকার পূরণ করা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে সরকারের ব্যর্থতা জনগণের আস্থা ও প্রত্যাশাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক যখন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় উদ্যোগের অভাবের কথা স্বীকার করেন, তা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য দুঃখজনক।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে কথা বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হন। পরে শহীদ জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করেছিলেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না।
রহমাতুল্লাহ জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ হলে জাতীয় নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু হবে, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। তাই এখন থেকেই সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা আবারও হুমকির মুখে পড়বে। দলের প্রার্থী মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় হলে দল যাকে মনোনয়ন দেবে, বিএনপি ঐক্যবদ্ধভাবে তার পক্ষেই কাজ করবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম খসরু, সহসভাপতি জাকির হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক নুরুল আলম ফরিদ, কমল সেন গুপ্ত, সাইফুর রহমান মিরণ, সৈয়দ মেহেদী, তারিকুল ইসলাম তুহিনসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা।
মন্তব্য