দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেয়া শুরু হচ্ছে ২৭ জানুয়ারি থেকে।
এদিন রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একজন নার্সকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়ার মধ্যদিয়ে এ কার্যক্রমের শুরু হবে।
ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে টিকাদান কর্মসুচির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার রাজধানীর কিডনি হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদেরকে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান।
স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ‘ভারত সরকারের উপহার হিসেবে আমরা ২০ লাখ ডোজ করোনা ভ্যাকসিন এরই মধ্যে পেয়েছি। ২৫ জানুয়ারি পাব চুক্তি অনুযায়ী ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন। ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাথমিকভাবে ভ্যাকসিন কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।’
চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কিনছে বাংলাদেশ। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে আনা হবে এই টিকা। সোমবার দেশে পৌঁছানোর কথা কেনা টিকার ৫০ লাখ ডোজের প্রথম চালান। ধাপে ধাপে আসবে বাকি ডোজও।
তবে টিকা পেয়েই গণ প্রয়োগে যেতে চাচ্ছে না সরকার। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখতে অবলম্বন করা হচ্ছে সাবধানতা।
স্বাস্থ্য সচিব জানান, প্রথমে যে টিকা দেয়া হবে, তা হবে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ। ঢাকা মেডিক্যাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে প্রাথমিকভাবে এই টিকা দেয়া হবে।
একেবারে শুরুতে টিকা দেয়া হবে ২০ থেকে ২৫ জনকে। তাদের বাছাই করা হবে চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিকদের মধ্যে থেকে।
জাতীয় পর্যায়ে টিকার প্রয়োগ ফেব্রুয়ারিতে শুরু হবে জানিয়ে আব্দুল মান্নান বলেন, ‘টিকার ৭০ লাখ ডোজ সমন্বয় করে ফেব্রুয়ারির শুরুতে জাতীয়ভাবে প্রয়োগ শুরু হবে। প্রথম মাসে দেয়া হবে ৬০ লাখ ডোজ। দ্বিতীয় মাসে দেয়া হবে ৫০ লাখ ডোজ। তৃতীয় মাসে আবার ৬০ লাখ ভ্যাকসিন দেয়া হবে। প্রথম মাসে যারা পাবে তৃতীয় মাসে তারা দ্বিতীয় ডোজ পাবে।’
বিশ্বের অনেক দেশে করোনা প্রতিরোধী টিকার প্রথম ডোজটি নিয়েছেন সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানরা। কিন্তু ভারতের মতো বাংলাদেশেও তা হচ্ছে না। সরকার মনে করছে, করোনা মোকাবিলায় যারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, টিকা প্রদানে তাদেরই অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।
টিকা নেয়ার পর কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় কি না তা পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানান আব্দুল মান্নান। বলেছেন, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেয়া হবে।
করোনা মোকাবিলায় সাফল্য দেখানোয় বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশ প্রশংসা পাচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘করোনা মোকাবিলার স্বীকৃতি দেশে যতটুকু পেয়েছি, তার চেয়ে বেশি পেয়েছি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকও প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন।’
আরও পড়ুন:পরিচয় দেন ডাক্তার। প্যাডে লিখেন ডাক্তার। দিয়েছেন চেম্বার, নিয়মিত দেখেন রোগী। সঙ্গে রয়েছে ফার্মেসি। সেই ফার্মেসির দোকানের টেবিলের সামনে ডিজিটাল ব্যানারে পরিচালনায় লেখা চিকিৎসক। প্রেসক্রিপশনে লেখেন উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ। অথচ তিনি কোনো এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রীধারী কেউ নয়। এমনই ভুয়া চিকিৎসকের দেখা মিলেছে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনটে।
জানা যায়, উপজেলার পুনট ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের তছলিম উদ্দিন বাচ্চুর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসাইন (৩৮)। তিনি কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ছয় মাস মেয়াদি প্যারামেডিকেল কোর্স করেই ডাক্তার ও চিকিৎসক পদবি ব্যবহার করছেন। বর্তমানে এ ধরনের কোনো প্যারামেডিকেল কোর্স হাসপাতালে হয় না।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোনালী ব্যাংক পিএলসি পুনটহাট শাখার নিচে তামিম মার্কেটে দুটি দোকান ঘর নিয়েছেন জাহাঙ্গীর হোসাইন। একটিতে দোকান ঘরে ফার্মেসি। সেখানে তাকে তাকে সাজানো অ্যান্টিবায়োটিকসহ নানা ধরনের ওষুধ। ফার্মেসির সঙ্গে লাগানো আরেক দোকানে দিয়েছেন চেম্বার। সেই চেম্বারে দেখেন নিয়মিত রোগী। ওষুধ দেন ফার্মেসি থেকে, পরামর্শ ফি নেন প্রতি রোগী থেকে ৫০ টাকা। বুধবার সকালে তার চেম্বারে মাসুদুল ইসলাম নামে এক রোগী চিকিৎসা নিতে যান। তিনি চিকিৎসাপত্র সাদা কাগজে দিতে চাইলেও প্রেসক্রিপশন প্যাডে লিখে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
অথচ এ বিষয়ে ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাড়া অন্য কেউ তাদের নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ১২ মার্চ বিচারপতি রাজিক আল জলিল এবং বিচারপতি সাথীকা হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের শুনানি শেষে এ রায় দেন।
গোবিন্দপুর গ্রামের আক্কাস আলী বলেন, ‘জাহাঙ্গীরের বাপের বেশি জমি-জমা ছিল না। এক-দেড় বিঘা। এই চার বছরে চার বিঘা জমি কিনেছে, দুই তলা ফ্ল্যাট বাড়ি করিছে। বড় বড় গেরস্থরাই জমি কি না পারুছে না। আর জাহাঙ্গীর প্রতি বছর জমি কিনে। আগে চলতো ছোট হোন্ডায়। এখন চলায় বড় হোন্ডা। এছাড়া ব্যাংকে তার অনেক টাকাও আছে। ব্যক্তিগত ক্লিনিক দেওয়ার জন্য এখন পুনট বাজারে জায়গা খুঁজতেছে।’
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, নামের আগে এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রী ছাড়া ডাক্তার বা চিকিৎসক লেখা যাবে না। হাইকোর্টের এ রায় সম্পর্কে অবগত আছি। আগে প্রেসক্রিপশন প্যাড বানানো হয়েছিল এজন্য সেসব প্যাডে ডাক্তার পদবি লেখা ছিল। এছাড়া রোগীদের চিকিৎসার প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেওয়া হয়। ডিজিটাল ব্যানারে চিকিৎসক লেখার উত্তরে বলেন, আমি যেখানে থেকে ট্রেনিং নিয়েছি তারা এভাবে লিখতে বলেছেন। আমার ভুল হয়েছে। আজকে দিনের মধ্যে সব সরিয়ে ফেলব।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ডা. মো. আল মামুন বলেন, এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রীধারী ছাড়া কেউ ডাক্তার বা চিকিৎসক পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। যদি কেউ এ পদবি ব্যবহার করেন। তবে, সেটি দণ্ডনীয় অপরাধ। এ বিষয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।
কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুব উল আলম বলেন, আপনার তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারলাম। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের আধুনিক চাষাবাদ মালচিং পদ্ধতিতে আগাম টমেটো চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় করে বাজিমাত করেছেন কৃষক আব্দুল মান্নান। তার অভাবনীয় সাফল্যে অন্যান্য কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। তার এমন সাফল্যে এলাকার নতুন আরও ৫-৬ জন চাষি টমেটো চাষ করেছেন। মূলত মালচিং পদ্ধতির টমেটোতে এ অঞ্চলের কৃষকের সুদিন এসেছে। এ টমেটোর চারা বা ফল প্রাকৃতিকভাবে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও অনেক কম। তাই এ এলাকার কৃষকরা টমেটো চাষে মনোযোগী বেশি। এই পদ্ধতি এলাকায় জনপ্রিয় হলে উৎপাদন বৃদ্ধিসহ কৃষকরা বেশ লাভবান হবেন বলে আশাবাদ কৃষি বিভাগের।
কৃষি বিভাগ জানায়, এই পদ্ধতির চাষাবাদে জমি রোগ-বালাই থেকে মুক্ত থাকে। এতে পানি, সার, ওষুধ খরচ সাশ্রয়ী হয়, পাশাপাশি ফলন হয় বেশি এবং গাছ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে। বেডগুলো মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। মালচিং পেপার হলো বিশেষ ধরনের পলি পেপার (পলিথিন)। বীজগুলো থেকে চারা গজানোর পর চারার স্থানগুলো থেকে মালচিং পেপার ছিঁড়ে দিতে হয়। যাতে করে চারাগুলো মাথা তুলে বড় হতে পারে। এই মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে জমিতে আগাছা জন্মাতে পারে না। সেচের অতিরিক্ত পানি জমে জমি বিনষ্ট হয় না। অতিরিক্ত সারের প্রয়োজন হয় না। ফলে জমি চাষাবাদে শ্রম কমে যাওয়ায় কৃষি শ্রমিক কম লাগে। উৎপাদন খরচ কমে যায়। জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলন অনেক বেশি হয়। গাছের আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এতে করে কৃষক সবদিক থেকে লাভবান হয়।
জানা যায়, মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের শুকুর উল্লার গ্রামের তরুণ কৃষক আব্দুল মান্নান এ বছর সাড়ে ১২ বিঘা জমিতে আগাম টমেটো আবাদ করেছেন। ৫৫-৬০ দিনের ভেতরে টমেটো বাজারজাত করা যায়। এবার তার উৎপাদন খরচ হয়েছে ১৩ লাখের ওপরে। আরও ১০-১২ লাখ টাকা খরচ হবে বলে জানা যায়। বর্তমান বাজারে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে টমেটো বিক্রি হচ্ছে। ফলন ভালো হওয়ায় ও বাজারদর গত বছরের তুলনায় বেশি হওয়ায় এবার প্রায় ৫০-৬০ লাখ টাকার মতো বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। খরচ বাদে ৩০-৩৫ লাখ টাকা আয় হবে।
কৃষক আব্দুল মান্নান গত বছর ১০ বিঘা জমিতে আগাম জাতের টমেটোর আবাদ করেন। তার উৎপাদন খরচ হয় ২০-২২ লাখ। খরচ বাদে তার লাভ হয় ২৫-২৬ লাখ টাকা। নতুন এই পদ্ধতিতে আগাম টমেটো চাষ করে কৃষক আব্দুল মান্নানের ব্যাপক সাফল্যে ও অধিক লাভবান হওয়ায় ইতোমধ্যে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলে, প্রতি বছর তাকে দেখে উৎসাহিত হয়ে গ্রামে আরও ৫-৬ জন কৃষক ৩০-৩৫ বিঘা জায়গায় টমেটোর আবাদ করেছেন। তারাও সাফল্য পেয়েছেন। চারিদিকে সুনাম ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার কৃষক এসে খোঁজ-খবর ও পরামর্শ নিচ্ছেন। তারাও আগামীতে এই পদ্ধতিতে আগাম টমেটোর আবাদ ব্যাপকভাবে করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, ‘মালচিং পদ্ধতিতে খরচ কমেছে কয়েকগুণ অপরদিকে অসময়ে টমেটো চাষ করে বাড়তি আয় এর সুযোগ হয়েছে। খরচ বাঁচাতে এবং উৎপাদন বাড়াতে মালচিং পদ্ধতিতে টমোটো চাষ করেছি। তা ছাড়া মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে জমিতে আগাছা জন্মাতে পারে না। সেচের অতিরিক্ত পানি জমে চারা বিনষ্ট হয় না। অতিরিক্ত সারের প্রয়োজন হয় না। ফলে জমি চাষাবাদে শ্রম কমে যাওয়ায় কৃষি শ্রমিক কম লাগে। উৎপাদন খরচ কমে যায়। জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলন অনেক বেশি হয়। গাছের আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, আমার বাগানে বর্তমানে কাজের লোক আছে ১২-১৫ জন। পুরুষদের দৈনিক ৪৫০ টাকা ও মহিলাদের দেওয়া হয় ৩০০ টাকা।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় জানান, ‘কমলগঞ্জ উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের টমেটোর উৎপাদন হয়েছে। এই পদ্ধতিতে টমেটোর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং মালচিং পদ্ধতিতে করায় আর্দ্রতা বেশি থাকা সত্ত্বেও শেকড় অক্ষত থাকে, যা গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে সফলতা এনেছে এবং কৃষকদের আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। পাশাপাশি কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, গত বছরের চেয়ে এবার পূজা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, পূজা উপলক্ষে হামলার কোনো হুমকি নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আজ বুধবার রমনা কালী মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। এ সময় রমনা কালী মন্দির কমিটির সভাপতি অপর্ণা রায়সহ কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীর বলেন, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানের জন্য ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং করা হবে। সে কারণে একটি নতুন অ্যাপ খোলা হয়েছে। কোথাও কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি পূজা উদযাপন কমিটিকে নজরদারি করার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সে কারণে ধর্মীয় নিয়ম মেনে সবাই এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বিগত সরকারের সময় ২ কোটি টাকা পূজা উপলক্ষে বরাদ্দ দেওয়া হতো। বর্তমান সরকার তা থেকে বাড়িয়ে গত বছর এ লক্ষ্যে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল; এবার সেটি থেকে বাড়িয়ে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। পূজা মণ্ডপের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরো সহায়তা করা হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলম বলেছেন, যেসব শিশু জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হয়েছে, তাদের লেখা ও স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে 'নবারুণ' পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করতে হবে। এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করতে উপদেষ্টা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। বুধবার (১৭ই সেপ্টেম্বর) ঢাকার তথ্য ভবনে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর প্রকাশিত কিশোর মাসিক পত্রিক 'নবারুণ'-এর লেখকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
'নবারুণ' পত্রিকা নিয়ে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এই পত্রিকায় শিশু-কিশোরদের আঁকা ছবি ও লেখা গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করতে হবে। 'নবারুণ' পত্রিকায় শিশু-কিশোরদের লেখা ও ছবি বেশি পরিমাণে প্রকাশিত হলে তারা অনুপ্রাণিত হবে। এতে তাদের সৃজনশীলতা বিকশিত হবে।
মাহফুজ আলম বলেন, "যে সরকারই দায়িত্বে আসুক না কেন, শিশু-কিশোরদের ব্যাপারে নিরপেক্ষ থাকা উচিত।" তিনি ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান-সহ আর্থসামাজিক বিভিন্ন বিষয়ের ওপর লেখালিখি করার জন্য লেখকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
'নবারুণ' পত্রিকা ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, প্রকাশনার শুরু থেকে (১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দ) এ পর্যন্ত 'নবারুণ' পত্রিকার সকল সংখ্যা ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হবে এবং তা জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। এতে পাঠক অনলাইনে পুরাতন সংখ্যা পড়ে সমৃদ্ধ হতে পারবেন।
'নবারুণ' পত্রিকার কলেবর বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'নবারুণ' পত্রিকায় নতুন লেখকদের জন্য আলাদা বিভাগ চালু করা উচিত। পত্রিকার প্রতি সংখ্যায় কমপক্ষে পাঁচ জন নতুন লেখকের লেখা প্রকাশের জন্য তিনি কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেন। তিনি শিশু-সাহিত্যিকদের নিয়ে দিনব্যাপী একটি কর্মশালা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, যেসব লেখক ৪০-৫০ বছর ধরে লিখছেন, তাঁদের লেখা 'নবারুণ' পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে হবে। এতে পত্রিকা আরও সমৃদ্ধ হবে। তিনি 'নবারুণ' পত্রিকার লেখক-সম্মানি বাড়াতে কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেন।
সভায় 'নবারুণ' পত্রিকার লেখকরা তাঁদের মতামত তুলে ধরেন। তাঁরা 'নবারুণ'-কে একটি অসাধারণ ও সাহসী পত্রিকা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তাঁরা পত্রিকাটির মানোন্নয়নে বেশ কিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদা বেগম। সভার শুরুতে 'নবারুণ' পত্রিকা বিষয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপনা করেন পত্রিকার সম্পাদক ইসরাত জাহান। মতবিনিময় সভাটি সঞ্চালন করেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের সিনিয়র সম্পাদক শাহিদা সুলতানা।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ঘাটিয়ারপাড়া গ্রামে গত ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে কোদালের আঘাতে নৃশংসভাবে খুন হন স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহ আলম। ঘটনার ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও মূল আসামি লাবলু এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আধুনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন এনসিপি লোহাগাড়া শাখার প্রধান সমন্বয়ক মো. জহির উদ্দিন। আরো উপস্থিত ছিলেন, আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু মুছা মুহাম্মদ খালিদ জামিল, বড়হাতিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এমডি জোনাঈদ চৌধুরী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন লোহাগাড়া শাখার সিনিয়র সহসভাপতি মো. রফিক দিদার, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন লোহাগাড়া সভাপতি অধ্যাপক হামিদুর রহমান, সহসভাপতি মুহাম্মদ নুরুচ্ছফা, আধুনগর সমাজ উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি সর্দার মাওলানা নুরুল আলম এবং শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আধুনগর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামসহ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, দিনের আলোয় প্রকাশ্যে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সমাজকে আতঙ্কিত করেছে। দ্রুত ঘাতক লাবলুকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা। তারা আরও উল্লেখ করেন, শাহ আলম ছিলেন পরিশ্রমী ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। তার হত্যার বিচার বিলম্বিত হলে জনগণের ক্ষোভ ও অসন্তোষ আরও বাড়বে। সমাবেশ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘাতক লাবলুকে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। বক্তারা সতর্ক করে বলেন, দাবি আদায় না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি ও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য ফরিদুল আলম, শাহাজাহান চৌধুরী পারভেজ, সাবেক সদস্য ডা. হায়াত মাহমুদ, যুবদল নেতা রেজাউল করিম, এনসিপি লোহাগাড়া যুগ্ম-সমন্বয়কারী রিদওয়ান আর রায়হান, ছাত্র প্রতিনিধি মির্জা তামিম এবং ছাত্রদল নেতা ইমতিয়াজ আহমদ।
কিশোরদের মোবাইল আসক্তি কমিয়ে খেলার মাঠে ফিরিয়ে আনতে নীলফামারীর সৈয়দপুরে বুধবার দুপুরে খেলা সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এসব সামগ্রীর মধ্যে ছিলো মিনি ফুটবল বার, ফুটবল ও ফুটবল বার নেট। উপজেলার ১৫টি মাঠের কর্মকর্তাদের হাতে এসব সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। খেলা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী এম.এম আলী রেজা রাজু, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষন রায়, আইসিটি কর্মকর্তা আজিফার রহমান, উপ-সহকারি প্রকৌশলী শওকত কবির প্রমুখ। ভোরের শিশির স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালক মুসা ও সৈয়দপুর কিশোর ফুটবল একাডেমির খেলোয়ার সিজান বলেন, উপজেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ খেলা সামগ্রী সরবরাহ করায় আমরা ফের খেলার মাঠে ফিরতে পারছি। এতে করে কিশোর ও তরুণদের কমবে মোবাইল প্রেম। বর্তমান যুগের উঠতি তরুণরা মোবাইল পেয়ে লেখাপড়া বিমুখ হয়ে পড়েছে। খেলার মাধ্যমে অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আসবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপজেলা প্রকৌশলী এমএম আলী রেজা রাজু বলেন, কিশোর ও যুবকদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে খেলার বিকল্প নেই। তবে মোবাইলের খেলা বাদে মাঠের খেলায় তাদের ফিরতে হবে। এজন্য সরকারি অর্থে এই কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তুলনামূলক শ্রম ও ব্যয় কম হওয়ায় জমিতে মাচা পদ্ধতিতে উন্নত জাতের লাউ চাষে বেশি ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় খুশি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী।
লাউয়ের বাম্পার ফলন হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে লাউ যাচ্ছে ঢাকাসহ সারাদেশে। খাদ্যশষ্য উৎপাদনে মাটি ও পরিবেশ রক্ষার্থে জৈব সার ব্যবহার করে ব্যাপক সাফল্যের সাথে সাড়া ফেলেছেন এলাকায় তিনি।
উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী। তিনি এক একর জমিতে মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ শুরু করেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে নবাব জাতের লাউ বীজ রোপন করেন। উন্নত জাতের লাউ চাষ করে ভালো ফলন হওয়ায় প্রতিমাসে প্রায় ৮০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করছেন তিনি। কীট নাশকের পরিবর্ততে খেতে জৈব নাশক ব্যবহার করায় বাজারে তার লাউয়ের চাহিদাও ব্যাপক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তার প্রতিটি মাচায় পর্যাপ্ত পরিমান লাউ ধরেছে। লাউয়ের ভারে মাচা হেলে পড়েছে। জুলাই মাস থেকে পরিপক্ষ লাউ বাজারে বিক্রী শুরু করেছেন তিনি।
চারা লাগানোর মাত্র সঠিক পরিচর্যা আর ক্ষেতে ফেরোমন ফাঁদ ও জৈব বালাই নাশক ব্যবহার করায় ৫০-৫৫ দিনের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে। প্রতিটি লাউয়ের ওজন ২ থেকে ৩ কেজি হয়। তিনি প্রতিমাসে লাউ বিক্রি করেন ৮০ হাজার টাকা।
লাউ চাষি শাহজাহান আলী জানান, এক একর জমিতে লাউ চাষ করতে সার, বীজ, মাচা তৈরি ও অন্যান্য খরচ বাবদ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। জুলাই মাসেই প্রায় ৮০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। সেপ্টেম্বর মাসে এর চেয়ে বেশি বিক্রি করেছি। প্রতি দিন গড়ে ২ থেকে ৩ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করি। চলতি মাস পর্যন্ত আমি লাউ বিক্রি করতে পারব।
আমাকে বাজারে যেতে হয় না। আশপাশের বাজারগুলো থেকে পাইকাররা এসে খেত থেকে কিনে নিয়ে যায়। শুধু স্থানীয় বাজার না এমনকি ঢাকায়ও যাচ্ছে। লাউ বিক্রি করে খরচ বাদে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি জৈব বালাই নাশক ও ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করায় তার লাউ নিরাপদ সবজি হিসেবে ভোক্তাদের চাহিদাও ব্যাপক। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ বাড়ছে এই উপজেলায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার লোকমান আলম বলেন, মাচা পদ্ধতিতে উন্নত জাতের লাউ চাষে বেশি ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় খুশি কৃষকেরা। মাচা পদ্ধতিতে উন্নত জাতের লাউ চাষ করলে আসলেই লাভবান হওয়া সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, লাউ উত্তোলনের পর একই মাচা ব্যবহার করে আরও ২টি ফসল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এই এলাকার কৃষকরা।
মন্তব্য