দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৮৪৯ জন।
তবে গত একদিনে নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্ত হার নেমে এসেছে পাঁচের নিচে, যা দেশের করোনা পরিস্থিতি উন্নতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত একদিনে আরও ৮১৩ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মোট শনাক্ত দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ২৫ হাজার ৭২৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৮৩ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন চার লাখ ৭০ হাজার ৪০৫ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯৯ ল্যাবে ১৬ হাজার ৬০৮ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ, যা গত নয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত পাঁচ এপ্রিল শনাক্তের হার ছিল একই। মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন কোনো দেশের শনাক্তের হার পাঁচ শতাংশের নিচে হলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে বলে ধরা হয়। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন অন্তত ২০ নমুনা পরীক্ষা করতে হবে।
সংক্রমণ বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৯ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া ১৬ জনের মধ্যে পুরুষ ১১ ও নারী পাঁচ জন। বয়স বিবেচনায় চল্লিশোর্ধ্ব দুই, পঞ্চাশোর্ধ্ব পাঁচ, ষাটোর্ধ্ব নয় জন। শতাংশ হিসাবে পুরুষ ৭৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ ও নারী ২৪ দশমিক ১৪ শতাংশ।
বিভাগ অনুযায়ী, ঢাকায় ৯, চট্টগ্রামে পাঁচ, বরিশাল এক, সিলেট এক জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের সবাই হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গত ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম শনাক্তের খবর জানানো হয়। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ করোনায় দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে সরকার। এখন দেশে সংক্রমণের ১০ মাস চলছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, এপর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯ লাখ ৮৯ হাজার ২০ জন। মোট শনাক্ত হয়েছে ৯ কোটি ২৮ লাখ ৭২ হাজার ১৫৭ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৬ কোটি ৬৪ লাখ ১৭ হাজার ৫৬৭ জন।
জনস হপকিন্স ইউনির্ভাসিটির হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে করোনাভাইরাস শনাক্তের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ২৭তম আর মৃতের দিক থেকে ৩৭তম অবস্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মিয়ানমারের মানবাধিকারসংক্রান্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাক্ষাৎ করেছেন।
বৈঠকে অ্যান্ড্রুজ রোহিঙ্গা সংকটকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অগ্রাধিকার দিয়ে তুলে ধরার জন্য প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি স্মরণ করেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দফতরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বানের উদ্যোগও প্রধান উপদেষ্টার হাত ধরেই এসেছে।
অ্যান্ড্রুজ প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের উদারতায় বিশ্ব কৃতজ্ঞ। একই সঙ্গে স্থায়ী সমাধানের আশাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আপনার নেতৃত্ব বিশেষভাবে প্রশংসনীয়।’
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, আসন্ন জাতিসংঘ সম্মেলন দীর্ঘদিনের এই সংকট নিরসনে কার্যকর সমাধানের পথ দেখাবে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহ মৌলিক সেবা প্রদান কঠিন হয়ে পড়ছে। এ সময় তিনি পর্যাপ্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করতে অ্যান্ড্রুজকে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বানও জানান।
টম অ্যান্ড্রুজ বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন পক্ষকে যুক্ত করে সংকট সমাধানে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করছে। তবে রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা আনতে ও শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে, জাতিসংঘ মহাসচিবের মানবিক চ্যানেল স্থাপনের উদ্যোগটি বিদ্বেষমূলক প্রচারণার কারণে ব্যাহত হওয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।
তবুও টম অ্যান্ড্রুজ আশা করেন, সব পক্ষের ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় দ্রুত একটি টেকসই সমাধান সম্ভব। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, টম অ্যান্ড্রুজ আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ইস্যুতে স্টেকহোল্ডার সংলাপে যোগ দিতে বাংলাদেশে এসেছেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ওই সংলাপের উদ্বোধন করবেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার পদুয়ার বাজারে সিমেন্টবাহী লরির নিচে চাপা পড়ে প্রাইভেট লকারের চার যাত্রী নিহত হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের মোহাম্মদ ওমর আলী(৮০), তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম(৬৫), তার বড় ছেলে আবুল হাশেম (৫০)ও ছোট ছেলে আবুল কাশেম(৪৫)।
প্রাইভেটকারটি চালাচ্ছিলেন আবুল হাশেম। তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন।
ময়নামতি ক্রসিং হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক আনিসুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
উদ্ধারকারী পুলিশের সদস্য কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম জানান, দুপুর সাড়ে বারোটার সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার পদুয়ার বাজার ইউটার্নে ঢাকা মুখি লেনে একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টো পথে এসে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করে।
এই সময় বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্ট বোঝাই লরিটি বাসটিকে পাশ কাটাতে গিয়ে উল্টে যায়। এ সময় বাসের পিছনে থাকা একটি প্রাইভেট কার ও একটি সিএনজিকে চাপা দেয় লরিটি।
এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেট কারের চালকসহ চার যাত্রী নিহত হয়। এছাড়া সিএনজিতে থাকা আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসাপাতালে পাঠানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেসারাট নিউজে নিবন্ধ লিখেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে গত বছর বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। এতে প্রফেসর ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। আর নির্বাচন শেষেই তিনি রাষ্ট্রের সব দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। নির্বাচনে যে সরকার গঠিত হবে সেটির কোনো পদেই থাকবেন না বলে স্পষ্ট করেছেন তিনি।
ড. ইউনূস লিখেছেন, ‘আমি স্পষ্ট করেছি : জাতীয় নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারিতে হবে। এরপর যে সরকার আসবে সেখানে নির্বাচিত বা নিযুক্ত করা কোনো পদে আমি থাকব না।’
তিনি বলেছেন, ‘আমার সরকারের মূল লক্ষ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করা। যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের সঙ্গে তাদের পরিকল্পনাগুলো বলতে পারবে। আমাদের মিশন হলো, সব বৈধ ভোটার যেন তাদের ভোট দিতে পারে, যারা প্রবাসে আছেন তারাও। এটি একটি বড় কাজ। কিন্তু আমরা কাজটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
প্রফেসর ইউনূসের নিবন্ধটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
এক বছর আগে, এই মাসেই বাংলাদেশের হাজার হাজার সাহসী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ শিক্ষার্থী, যাদের পেছনে ছিল সমাজের সব স্তরের অগণিত মানুষের সমর্থন, আমাদের জাতির ইতিহাসে একটি অন্ধকার অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়েছিল। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, যা শেষ পর্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে দমন করা হয়েছিল, তার মাধ্যমেই তারা একজন স্বৈরাচারকে ৫ আগস্ট দেশ ছাড়তে বাধ্য করে।
এরপর যে ক্ষমতার শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে ছাত্রনেতারা আমাকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে অনুরোধ জানায়। এই সরকারের দায়িত্ব ছিল দেশকে স্থিতিশীল করা এবং গণতন্ত্রের নতুন পথ তৈরি করা। শুরুতে আমি রাজি হইনি। কিন্তু যখন তারা জোর করল, তখন আমি তরুণদের জীবন উৎস্বর্গের কথা ভাবলাম, আমি তাদের ফিরিয়ে দিতে পারলাম না। ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট, সুশীল সমাজের নেতাদের নিয়ে গঠিত একটি উপদেষ্টা পরিষেদের সঙ্গে আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করি।
এই গণআন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে ন্যায্যতা নিশ্চিত করা থেকে। এর মাধ্যমে বিশ্বের প্রথম ‘জেনারেশন জেড’ বিপ্লবের সূত্রপাত হয়েছিল। এই বিপ্লব তরুণদের জন্য একটি আদর্শ হয়ে উঠেছে, যা দেখায় কীভাবে তারা মানবজাতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো—যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং বৈষম্য—মোকাবিলার জন্য এগিয়ে আসতে পারে।
আমরা ভাগ্যবান যে তারা ‘তাদের পালা আসার জন্য’ অপেক্ষা করেনি। যখন সভ্যতা অনেক দিক থেকে ভুল পথে চালিত হচ্ছে, তখন তারা বুঝতে পেরেছিল যে এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।
স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে আমাদের উত্তরণের একটি স্পষ্ট প্রমাণ ছিল যখন দ্য ইকোনমিস্ট সাময়িকী বাংলাদেশকে তাদের ‘২০২৪ সালের সেরা দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করে। আমরা তখন অর্থনীতি পুনর্গঠন, নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং চুরি যাওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সম্পদ উদ্ধারে এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে, আমরা তখনো বুঝতে পারিনি বিশ্ব আমাদের এই অগ্রগতিকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে লক্ষ্য করছে। ডেসারেট নিউজ আমাদের এই যাত্রার চমৎকার কাভারেজ দিয়েছে, যা আমরা গভীরভাবে উপলব্ধি করি।
আমাদের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার ছিল গণঅভ্যুত্থানে যারা নির্মমভাবে নিহত হয়েছিল এবং যারা গুরুতর আহত হয়েছিল—সেই হাজার হাজার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা। এরসঙ্গে আমরা বিগত সরকার ও তার সহযোগীদের লুট করা অর্থ উদ্ধারেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে সাবেক স্বৈরাচারী সরকার বছরে ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে। এই অর্থ পুনরুদ্ধার করার জন্য যুদ্ধ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যখন আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন অব্যবস্থার মাত্রা দেখে আমি হতবাক হয়ে যাই। পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করছিল না। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছিল। অর্থনীতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। গণতন্ত্র ভেঙে পড়েছিল।
সরকারি কর্মচারীরা, যারা ক্ষমতাসীন দলের প্রতি যথেষ্ট আনুগত্য না দেখানোর কারণে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন, তারা ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন।
ধীরে ধীরে আমরা পুনর্গঠন শুরু করেছি। যেসব রাজনৈতিক দল স্বৈরাচারের প্রতিরোধ করেছিল, তাদের পাশাপাশি নতুন গঠিত দলগুলোও নতুন ধারণা, শক্তি এবং কর্মপ্রচেষ্টা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। সশস্ত্র বাহিনী, যারা ৫ আগস্ট বিক্ষোভকারীদের ওপর গণহত্যা চালাতে দেয়নি, তারা তাদের পেশাদারিত্ব বজায় রেখেছে এবং আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছে।
আমি এটি স্পষ্ট করে দিয়েছি: আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি এরপরের সরকারের কোনো নির্বাচিত বা নিযুক্ত পদে থাকব না।
আমাদের প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করা, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের কাছে তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারবে। বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকসহ সব যোগ্য নাগরিককে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া একটি বিশাল কাজ। কিন্তু আমরা এটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আমরা আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতেও পরিবর্তন এনেছি। যেন আমাদের প্রতিবেশী এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক জোরদার করা যায়।
বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে, বাংলাদেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির একটি মূল কেন্দ্র হতে পারে এবং হওয়া উচিতও। আমরা বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞ।
রুবিওরে সঙ্গে সম্প্রতি আমার একটি ফলপ্রসূ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে, যা আমাদের উভয় দেশের বাণিজ্যের জন্য ইতিবাচক ছিল।
যুক্তরাজ্য, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠী এবং জাতিসংঘও আমাদের সহায়তা করার জন্য এগিয়ে এসেছে। আমরা এই পথে একা নই।
নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক দল এবং নাগরিকদের নিয়ে একটি ব্যাপক সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছি। সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো একটি সাংবিধানিক সংশোধনী আনা। যা এমন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে যাতে বাংলাদেশ আর কখনো স্বৈরাচারী শাসনে ফিরে না যায়।
বাংলাদেশ যদি শেষ পর্যন্ত এমন একটি দেশে পরিণত হয় যেখানে দেশের সব মানুষ নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে। তবে তা হবে লাখ লাখ বাংলাদেশির দৃঢ়তা, কল্পনা এবং সাহসের ফল।
এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমাদের সঙ্গে যারা আছেন তাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে। তারাই আমাদের সর্বোত্তম আশা—এবং সম্ভবত আমাদের শেষ আশা।
দেশে ‘একাত্তরকে ভুলিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে’ বলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সম্মানে মতবিনিময় অনুষ্ঠান এই আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের কথা বারবার স্মরণ করতে চাই। এজন্য চাই যে, ১৯৭১ সাল আমাকে একটা স্বাধীন দেশ দিয়েছিল, ভূ-খণ্ড দিয়েছিল, আমাকে একটা স্বাধীন সত্ত্বা দিয়েছিল এবং সেজন্য আজকে আমার অস্তিত্ব আছে, আমি টিকে আছি। আমি স্মরণ করতে চাই, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের শহীদদের। কারণ তারা আমাদের একটা গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। এই দুইটা জিনিসই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আজকে একটা প্রচ্ছন্ন প্রচেষ্টা আছে, একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার। এটার বিরুদ্ধে দেশের নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ২৪’এর জুলাই-আগস্ট যেভাবে সত্য, ঠিক একইভাবে সত্য কিন্তু একাত্তরের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ। সেই মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন কে? শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা।’
তিনি বলেন, ‘আজকে নতুন করে একটা কথা উঠছে, ষড়যন্ত্র চলছে যে, আপনার বাংলাদেশে এখানে এক ধরনের উগ্রবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। এই উগ্রবাদকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। তাহলে আমাদের বাংলাদেশের যে আত্মা সেই অস্তিত্ব আমাদের রক্ষা পাবে না। এই কথাটা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে। আমি কথাটা আজকে এজন্য আরও বেশি করে বলছি যে, এইখানে বিভক্তি বিভাজনের রাজনীতি কেউ করবেন না, অতীতে যা হয়েছে হয়েছে। এখন বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য, বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য, বাংলাদেশকে সামনে নেওয়ার জন্য, বাংলাদেশকে আরও উন্নত করার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর যারা আমাদের ভুল বুঝিয়ে আমাদের ভোট নিয়ে দেশ শাসন করেছে তারা ১৫ বছর আমাদের বন্ধু হিসেবে মনে করেননি। তারা মনে করেছেন প্রজা হিসেবে। আমাদের ওপর অত্যাচার করেছেন, নির্যাতন করেছেন, আমাদের দেশের সমস্ত সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি কয়েকদিন আগে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলাম। ব্যাংককে গিয়ে আমি আমার বন্ধুদের কাছে শুনলাম যে, এখন ব্যাংককে সবচাইতে যেগুলো অভিজাত এলাকা সেই এলাকাগুলোতে বাড়ি ভাড়ার ধুম পড়ে গেছে। সেই বাড়িগুলো ভাড়া করছেন আওয়ামী লীগের বিতাড়িত নেতারা। তারা যে গাড়ি কিনছেন সেই গাড়িগুলো কোনটাই ২ কোটি, ৩ কোটি টাকার কম নয়। এসব টাকা কোত্থেকে গেল? এই দেশের সম্পদকে তারা পাচার করেছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন, নতুন করে কিছু বলতে চাই না। শুধু এইটুকু বলতে চাই যে, আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক যে কাঠামো সে কাঠামো ভেঙে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ এ দেশের সম্পদকে লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। প্রায় ৮৮ লাখ কোটি টাকা তারা বিদেশে পাচার করেছে। আমাদের সম্পদ বলতে আর কিছু নেই, সব পাচার হয়ে গেছে। আমাকে একজন অর্থনীতিবিদ জিজ্ঞেস করছিলেন, দেখে শুনে তো মনে হচ্ছে যে, এর পর তোমরাই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসবে। জনগণ তোমাদের ওপরে আস্থা রাখবে। তো তোমরা দেশ চালাবে কোত্থেকে? কারণ টাকা তো সব পাচার হয়ে গেছে অর্থাৎ আমাদের দেশের অর্থনীতির অবস্থা কী করুণ করেছে সেই জিনিসটাই শুধু আমি আপনাদের বললাম।’
বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক, ভৌগোলিক, রাজনৈতিক পরিস্থিতি পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধি) পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য উপযোগী নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনা সভায় তারেক রহমান এ কথাগুলো বলেন। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত এই সভায় যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পিআর পদ্ধতির সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, ‘কাকে কিংবা কোন ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠানো হচ্ছে, অবশ্যই সেটি জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত যে পিআর পদ্ধতি, এই পিআর পদ্ধতিতে কোন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করা হচ্ছে, জনগণের সেটি জানার পরিষ্কার কোনো সুযোগ নেই। যে কারণে কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা ব্যক্তি জাতীয় সংসদে বা সরকারে প্রতিনিধিত্ব করতে চাইলে অবশ্যই তাদের জনগণের মুখোমুখি হয়ে জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে জনগণের রায় অর্জন করা জরুরি।’
পিআর পদ্ধতি এবং আরও দুয়েকটি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ভিন্নমত রয়েছে, প্রতিটি বিষয়ই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুন্দরভাবে সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘যারা আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা করছেন, এর মাধ্যমে আপনারা হয়তো নিজেদের অজান্তেই গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করে তুলছেন। একই সঙ্গে পতিত পরাজিত পলাতক ফ্যাসিস্ট সরকারের পুনর্বাসনের পথও হয়তো সুগম হচ্ছে।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বক্তব্য বা নিত্যনতুন শর্ত জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি করছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে মানুষ বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিতে পারে, এই ভয়ে পলাতক স্বৈরাচার ‘বিএনপির বিজয় ঠেকাও’– এর মতো অপরাজনীতি চালু করেছিল। স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের রাজপথের সহযোদ্ধা কিছু ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীর আচরণেও সেই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
যারা বিএনপির বিজয় ঠেকানোর জন্য নানা অপকৌশল বা শর্তের বেড়াজালের আশ্রয় নিচ্ছে, তাদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়েই মোকাবিলা করুন। জনগণের শক্তির ওপর আস্থা রাখুন। বিএনপির বিজয় যদি জনগণ দিয়েই থাকে, সেই বিজয় ঠেকাতে গিয়ে জনগণের রায় প্রদানের পথ রুদ্ধ করবেন না।’
তারেক রহমান বলেন, প্রতিটি বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য হতে হবে, এমন নয়। তবে ফ্যাসিবাদ ঠেকানো বা দেশকে তাবেদারমুক্ত রাখার জন্য স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে অবশ্যই ঐকমত্য ও ঐক্যবদ্ধ থাকা অত্যন্ত জরুরি।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য আসন্ন জাতীয় নির্বাচন আমাদের সামনে একটি বিশাল বড় সুযোগ। সারা দেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাই ও বোনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আগামী নির্বাচনে বিএনপি আপনাদের সমর্থন এবং আপনাদের সক্রিয় সহযোগিতা চায়।’
হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, অতীতে বিভিন্ন সময়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব হামলার পেছনে ছিল অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা অবৈধ লোভ। ধর্মীয় কারণে এসব হামলা হয়নি। তিনি বলেন, ‘কোনো কারণেই যেন কারও ওপর হামলা বা অবিচার না হয়, তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্র ও সরকারের দায়িত্ব।’
বিএনপির আয়োজনে এই সভায় সভাপতিত্ব করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সারাদেশ থেকে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেন।
সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ।
সরকারি এবং কূটনীতিক পাসপোর্টে পারস্পারিক ভিসা অব্যাহতি সুবিধা পেতে পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
প্রেস সচিব বলেন, ‘পাকিস্তানের মতো এ রকম চুক্তি আমরা আরও ৩১টি দেশের সঙ্গে করেছি। এই চুক্তি পাঁচ বছরের জন্য করা হবে । এর ফলে যারা অফিসিয়াল পাসপোর্ট এবং কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন, তারা এখন বিনা ভিসায় পাকিস্তান সফর করতে পারবেন। একইভাবে পাকিস্তানের যারা অফিসিয়াল এবং কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন— তারাও বাংলাদেশে সফর করতে পারবেন কোন ভিসা ছাড়াই। এটা একটা স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস।’
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, এ বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের সম্মতি পাওয়া গেছে।
রাজধানীর রমনা থানা এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় করা মামলায় মির্জা ফখরুলসহ ৬৫ জনকে অব্যাহতি দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি প্রদান করেন।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্যরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বরকত উল্লাহ বুলু, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন ও বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম প্রমুখ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপি’র পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর রমনা থানা এলাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলটির নেতাকর্মীরা আসেন। এ সময় তারা যানবাহনে ক্ষতিসাধন ও পুলিশের কাজে বাধা প্রদান করেন।
এ ঘটনায় একই বছরের ৩১ অক্টোবর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে রমনা থানার এসআই আউয়াল এই মামলা করেন।
২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মামুন হাসান আদালতে পৃথক দুটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে মির্জা ফখরুলসহ ৬৫ জনকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। পরবর্তীতে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামান চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে তাদের অব্যাহতি দেন। একই সঙ্গে বিস্ফোরণ আইনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়।
মন্তব্য