দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৭৮১ জনে।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৭১ জনের শরীরে। এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে ৫ লাখ ২২ হাজার ৪৫৩ জন।
এতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ৭৩৭ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৮০৩ জন।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৮১টি ল্যাবে ১২ হাজার ৯২০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৮.২৯ শতাংশ।
মোট শনাক্তের হার ১৫.৭৬ শতাংশ। সুস্থতার হার ৮৯.২৫ শতাংশ; মৃত্যু হার ১.৪৮ শতাংশ।
সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ পুরুষ ও ৮ নারী রয়েছেন।
বিভাগ অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ১৯, চট্টগ্রামে ১, সিলেটে ১ ও ময়মনসিংহের ৪ জনের মৃত্যু হয়। তাদের সবাই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
গত ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম শনাক্তের খবর জানানো হয়। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ করোনায় দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে সরকার। এখন দেশে সংক্রমণের দশম মাস চলছে।
আরও পড়ুন:বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন ,বাণিজ্যে বৈচিত্র্য ও সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন দেশের সাথে উদারভাবে সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছি। বিক্রয় প্রবৃদ্ধি ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ মূল্যে আমদানির সক্ষমতা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে আমরা পাকিস্তানের প্রতিপক্ষের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করেছি।
শুক্রবার ( ২২ আগস্ট ) দুপুরে চট্রগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চিটাগাং এর হল রুমে চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত "মিটিং উইথ জাম কামাল খান ও শেখ বশিরউদ্দীন" শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বাণিজ্য বৃদ্ধি করা, আমদানি ও রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং এসব খাতের বাইরেও আমরা অনেক বিষয় নিয়ে কাজ করছি। আশা করি, বাংলাদেশের সব ব্যবসায়ীর একত্র শক্তিতে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি হবে।
পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন ,দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক পথনকশা (রোডম্যাপ) তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে জাম কামাল খান বলেন, আমরা ভাবছি, আগামী কয়েক বছরের জন্য একটি বাণিজ্য রোডম্যাপ তৈরি করব। কোন খাতগুলোতে নজর দিতে হবে, কোথায় বিনিয়োগ আসবে, কোন খাত রপ্তানি-আমদানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে—সেসব ওই রোডম্যাপে উঠে আসবে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ স্বাক্ষরের পরই এ বিষয়ে খসড়া তৈরি হবে।
গ্লোবাল ইকনমিক ট্রেন্ড দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সামনে সুবর্ণ সুযোগ এসেছে আমরা যদি একটি সঠিক ব্যবসায়িক রোডম্যাপ তৈরি করতে পারি তাহলে অবশ্যই ব্যবসা বাণিজ্য অগ্রগতি হবে। আগামী পাঁচ বছরে আমরা কোথায় থাকতে চাই, কোন খাতে আমাদের শিল্পকে নিতে চাই, সেই প্রস্তুতি নিতে হবে। নতুন প্রযুক্তি এআইয়ের সহযোগিতায় (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) এখন আর বছরের নয়, ঘণ্টার হিসাবেই সবকিছু বদলে যাচ্ছে। তাই প্রস্তুত থাকতে হবে। খাদ্য, কৃষি, উৎপাদন, বাণিজ্য, মাছ, সামুদ্রিক খাদ্য, সেবা খাত, মানুষে মানুষে সংযোগ, স্বাস্থ্যসেবা—এসবই আমাদের অগ্রাধিকার খাত। লেদার, ফুটওয়্যার, তৈরি পোশাক; এগুলোতেও আমরা শক্তিশালী। পাকিস্তান গম, চাল উৎপাদন করছে এবং আরও অনেক কিছু সরবরাহ করছে। তাই আমার মনে হয়, এখানে দারুণ সহযোগিতা হতে পারে।
পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য আগ্রহ রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান বলেন, তবে বিমান সংযোগ না থাকলে এটি সম্ভব নয়। আমরা এই বছরের শেষ নাগাদ সরাসরি পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ও বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে ফ্লাইট চূড়ান্ত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। দুই দেশে সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হলে মানুষে-মানুষে যোগাযোগ, ব্যবসায়িক সংযোগ, পণ্য পরিবহনসহ সবকিছু আরও সহজ হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা। বক্তব্য দেন বিএসআরএমের চেয়ারম্যান আলিহুসেইন আকবরআলী, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ড অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, চেম্বারের সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসাইন চৌধুরী প্রমুখ। সমাপনী বক্তব্য দেন বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দিন।
বৈঠকে ব্যাবসায়ী নেতৃবৃন্দ চট্রগ্রামের সাথে করাচির সরাসরি বিমান পরিবহন ও সামুদ্রিক জাহাজে পণ্য পরিবহণ চালু করা এবং শীপ বিল্ডিং খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির আহবান জানান। এর মাধ্যমে দুদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক শক্তিশালী হবে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমবে বলে তাঁরা অভিমত ব্যক্ত করেন।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার চারদিক থেকে মেঘনা নদী দ্বারা পরিবেশিত, মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এক জনপদ গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করেছে প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা পুলিশের ঐতিহাসিক উদ্যোগ বলে আখ্যায়িত করছে স্থানীয়রা।
জানা যায়, সড়কপথে গজারিয়া উপজেলার মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা গুয়াগাছিয়া। ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ছাড়া সেখানে যাওয়ার কোন উপায় নেই। সন্ধ্যার পর অথবা বৈরি আবহাওয়ায় ট্রলার বন্ধ হয়ে গেলে নদী পার হতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় ওই এলাকার বাসিন্দাদের। ইউনিয়নটিতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি সেভাবে। রাস্তাঘাট না থাকার কারণে সেখানে পুলিশি কার্যক্রম পরিচালনা করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়তো। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি কম থাকায় সেখানে তৈরি হয়েছে কয়েকটি নৌডাকাত গ্রুপ। নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, মেঘনা নদীতে চলাচলকারী নৌযান থেকে চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ওই নৌডাকাত গ্রুপের সদস্যরা। সম্প্রতি অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধের জেরে নৌডাকাত নয়ন-পিয়াস বাহিনীর হাতে খুন হয় ডাকাত সর্দার বাবলা, স্যুটার মান্নান ও হৃদয় বাঘ। এরপর আবারো আলোচনায় আসে গুয়াগাছিয়ার নিরাপত্তার বিষয়টি।
গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সেখানে একটি পুলিশ ক্যাম্প, একটি নৌপুলিশ ফাঁড়ি এবং একটি কোস্টগার্ড স্টেশন নির্মাণে উদ্যোগের কথা জানায় প্রশাসন। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সেখান একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হলো।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে ক্যাম্পটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম চালু করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম, গজারিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ডা. হামিদা মুস্তফা, গজারিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার আলম আজাদ, গজারিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো.শহীদুল ইসলাম।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গজারিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘গজারিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুয়াগাছিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। যাক আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে অবশেষে আমরা কাজটি শুরু করতে পারলাম। আশা করছি এখন থেকে গুয়াগাছিয়ায় পূর্ণ শক্তি নিয়ে পুলিশ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন’।
গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘এই অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ করে রাতের আঁধারে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে এই ক্যাম্পটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা করি।’
মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, এবার গুয়াগাছিয়ায় সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা কমে আসবে। যেহেতু সার্বক্ষণিক পুলিশ এখানে অবস্থান করবে যেকোনো ঘটনা ঘটলে তৎক্ষণাৎ পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারবে।
কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কটি বাংলাদেশের সর্বপ্রথম সাফারি পার্ক। প্রকৃত সাফারিতে রূপান্তরের প্রক্রিয়া পর্যায়ক্রমে চলমান রয়েছে। যেখানে বিশাল বেষ্টরনিতে বন্যপ্রাণী ঘুরে-বেড়াবে আপন মহিমায়। আর পর্যটক-দর্শনার্থীরা এনক্লোজারের ভেতর থেকে এসব বন্য প্রাণীর বিচরণ স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করার মধ্য দিয়ে আনন্দ উপভোগে মেতে উঠবেন। তারই আলোকে এবার পার্কটিতে সংযোজন করা হয়েছে তিনটি সাব এডাল্ট বাঘ শাবক। সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সংগৃহীত এই বাঘ শাবককে ইতোমধ্যে পার্কে আনার পর সেগুলোকে আলাদা নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র তথা কোয়ারেন্টাইন শেডে রাখা হয়েছে। আর প্রতিনিয়ত এসব শাবকের আচার-আচরণ নজরদারির মধ্যে রেখে প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহসহ যত্ন-আত্তি করা হচ্ছে।
ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী চিকিৎসক (ভেটেরিনারী সার্জন) হাতেম সাজ্জাদ জুলকার নাইন জানান, সুদূর আফ্রিকা থেকে কার্গো বিমানে করে ঢাকায় আনার পর বাঘ শাবক তিনটিকে কোয়ারেন্টাইন শেডে একটানা ২১ দিন পর্যন্ত রাখা হবে। মূলত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনেই এসব বাঘ ২১দিন পর্যন্ত তত্ত্বাবধানে থাকবে বলে একটি সূত্র জানায়।
চিকিৎসক জুলকার নাইন আরও বলেন, ‘যখন কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় শেষ হবে তখনই বাঘ শাবক তিনটির শারিরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আনুষ্ঠানিকভাবে পার্ক কর্তৃপক্ষ বুঝে নেবেন। যদি এই সময়ের মধ্যে কোনো শাবক অসুস্থ হিসেবে প্রতীয়মান হয় তাহলে তা গ্রহণ করা হবে না।’
কর্তৃপক্ষ জানায়, আর্ন্তজাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফ্যালকন ট্রেডার্সের মাধ্যমে আফ্রিকা থেকে বাঘ শাবক তিনটি কার্গো বিমানে করে আনা হয়। শাবক তিনটির মধ্যে রয়েছে পুরুষ লিঙ্গের একটি এবং অপর দুটি স্ত্রী লিঙ্গের। এগুলো মূলত এখনো সাব এডাল্ট তথা আনুমানিক আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যে হবে বয়স। অবশ্য একটি বাঘ প্রাপ্তবয়স্ক হতে সময় লাগে ৪ থেকে ৬ বছরের মধ্যে। সেই হিসেবে এখনো বাঘ শাবকতিনটি সাব এডাল্ট হলেও এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে মায়ের দুধ ছেড়ে দিয়ে মাংসাশী খাবার গ্রহণ করতে শুরু করে। এবারের নতুন এই তিন অতিথিকেও আনার পর কোয়ারেন্টাই শেডে রেখে গরুর মাংস খেতে দিচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফ্যালকন ট্রেডার্স।
সাফারি পার্কে বাঘ শাবক সরবরাহের জন্য নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফ্যালকন ট্রেডার্সের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান- সুদূর আফ্রিকা থেকে কার্গো বিমানে করে বাঘ শাবকতিনটিকে ঢাকায় আনার পর খাঁচায় বন্দি করে ট্রাকে করে সোজা নিয়ে আসা হয় ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে। এর পর থেকে প্রতিদিন নিয়ম করে মাংস খেতে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে ২১দিন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাই শেডে রেখে তাদের প্রাত্যহিক খাবারসহ প্রয়োজনীয় যত্ন-আত্তি করা হবে। এর পর আনুষ্ঠানিকভাবে পার্ক কর্তৃপক্ষকে বাঘ শাবক তিনটিকে হস্তান্তর করা হবে।
ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মনজুরুল আলম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সুদূর আফ্রিকা থেকে সংগৃহীত এই তিন বাঘ শাবককে এখনো পার্ক কর্তৃপক্ষ বুঝে নেয়নি। কারণ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে আনা-নেওয়াসহ পরিবেশ-প্রতিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার বিষয় অন্যতম। তাই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন শেডে রেখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট বন্যপ্রাণী চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে নিবিড় পরিচর্যার মধ্যে রাখা হয়েছে শাবকগুলোকে। এর পর নিয়মানুযায়ী আমরা সাব এডাল্টের এসব শাবক বুঝে নেওয়ার পর নির্দিষ্ট বেষ্টনিতে রাখা হবে এবং অন্যান্য প্রাণীর মতোই তাদেরও যত্ন-আত্তি করা হবে পার্কের পক্ষ থেকে।
তিনি আরও জানান- আগে থেকেই এই সাফারি পার্কে বাঘ রয়েছে দুই জোড়া। তন্মধ্যে নয়ন-আঁখি এবং জয়-জ্যোঁতি দম্পতি পার্কে আগত দেশি-বিদেশি পর্যটক-দর্শনার্থীকে আনন্দ দিয়ে আসছে। এবার নতুন করে অতিথি হিসেবে ঠাঁই পেয়েছে আরও তিন বাঘ শাবক। আগামীতে এসব শাবকও পরিপূর্ণ বয়সের হয়ে উঠবে এবং বাঘের প্রজননে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এমনটাই জানান পার্কের এ কর্মকর্তা।
ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাছের মো. ইয়াছিন নেওয়াজ বলেন, ‘সুদূর আফ্রিকা থেকে আনার পর সাফারি পার্কে প্রেরিত বাঘ শাবক তিনটি যাতে এখানকার বন-জঙ্গলের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এসব শাবকের কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় পার হলেই তাদের নির্দিষ্ট বেষ্টনীতে রাখা হবে এবং তাদের প্রত্যেকের নামও দেওয়া হবে।’
ডিএফও আরও বলেন, ‘মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় ইতোমধ্যে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কটিকে প্রকৃত সাফারি পার্কে রূপান্তরের প্রক্রিয়া প্রায়ই সম্পন্ন হয়ে গেছে। এরই অংশ হিসেবে বাঘ ও সিংহের বেষ্টনি নির্মাণ করা হয়েছে একরের পর একর বনভূমিতে। যাতে এসব বন্য প্রাণী দীর্ঘ এলাকাজুড়ে তাদের বিরচণ করাসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ-প্রতিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। আগামীতে এসব বাঘ প্রাপ্তবয়স্ক হলেই উন্মুক্ত বিচরণের জন্য নির্মিত বেষ্টনীতে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর দেশি-বিদেশি পর্যটক-দর্শনার্থীরা খাচায় বন্দি হয়ে এসব বন্য প্রাণীর বিচরণ ও জীবনাচার স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করতে পারবেন।’
জামালপুরে আজ শনিবার জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে শুক্রবার বিকেলে শহরের বেলটিয়া এলাকায় সম্মেলনের মাঠে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, দীর্ঘ ৯ বছর পর আজ শনিবার জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জেলার সাতটি উপজেলা ও ৮টি পৌর কমিটির ১ হাজার ৫১৫ জন কাউন্সিলরসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মীরা স্বতস্ফুর্তভাবে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জেলা বিএনপির সম্মেলন উপলক্ষে শহরের ভিন্ন জায়গায় তোরণ, ব্যানার ফেস্টুনে কেন্দ্রীয় নেতাদের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। এছাড়াও নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরনের আনন্দ উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি লিয়াকত আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আহসানুজ্জামান রুমেল, সাংগঠনিক সম্পাদক লোকমান আহমেদ খান লোটন, শফিকুল ইসলাম খান সজিবসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২০১৬ সালে শহরের সিংহজানী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সর্বশেষ জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় ৫ বছর ধরে কাজ করছেন হোটেলে। আবার পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছেন। হাজারো খাবার হোটেলের ভিড়ে চোখ থেমে যায় ছোট্ট একটি হোটেলে, যেটিতে কাজ করছেন ১৮ বছরের কলেজপড়ুয়া এক মেধাবী ছাত্রী। নাম তার নাসরিন আক্তার। তার নামেই হোটেলটির নামকরণ করা হয়েছে ‘নাসরিন হোটেল’। প্রায় ১২ বছর আগে হোটেলটি চালু করেন তার বাবা মোকাব্বর মণ্ডল। বাবার সঙ্গে খুবই ছোট পরিসরে এই হোটেল চালাচ্ছেন মেধাবী এ কলেজ শিক্ষার্থী।
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বৈরাগীহাট মোড়ে গেলেই দেখতে পাওয়া যায় নাসরিন হোটেল। এই হোটেল চালিয়েই সংসার ও পড়াশোনার খরচ চালান নাসরিন। নাসরিন এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছিলেন এ+। তিনি বর্তমানে উপজেলার কালাই সরকারি মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার স্বপ্ন উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করে মেডিকেলে পড়াশোনা করা। নাসরিনের মতো মেধাবী শিক্ষার্থীরা পরিবার ও দেশের জন্য সম্পদ।
সরেজমিনে দেখা যায়, শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও এই মেধাবী শিক্ষার্থী বাবার সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন খাবার হোটেলের কাজ। বর্তমানে চাকচিক্যতার ভিড়ে নিজের হোটেলটি টিকিয়ে রাখতে রীতিমতো ঘাম ঝড়াচ্ছেন তিনি। এলাকার বিভিন্ন মানুষের কটু কথা শুনেও দমে যাননি এই সংগ্রামী কলেজ শিক্ষার্থী। নিজেই তৈরি করছেন পুঁড়ি, পিঁয়াজু, সিংগারা, সামুচা, মোগলাই, চানাচুর। রান্না করেন ভাত, মাছ, মাংসসহ হরেক রকমের তরকারি। আবার নিজেই করছেন খাবার পরিবেশন।
স্বল্প মূল্যে সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করায় বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাস্টমাররা ছুটে আসে তার হোটেলে। খাবার খেতে আসা কাস্টমরা বলছেন এই হোটেলের খাবার দামে কম মানে ভালো ও সুস্বাদু।
হোটেল এ খাবার খেতে আসা ট্রাকচালক হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ি বগুড়া। আমি এই এলাকায় আসি কারণ গাড়ি চালাই। আমি এখানে আসছি গাড়ি লোড করতে। এই হোটেলের খাবারের মান ভালো।
হোটেলে খাবার খাচ্ছিলেন মোখলেছুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমার বাসা দিনাজপুর। আমি এই দিকে হরেক মালের ব্যবসা করি। বাড়ির মতো রান্নার স্বাদ পাওয়ায় এ হোটেলে খাওয়া দাওয়া করি। সকালে খিচুড়ি খেয়েছি, দুপুরে ডিম ভাজি, ডাল, ভর্তা দিয়ে ভাত খেলাম। পাশের মুদি দোকানি জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমার পাশেই নাসরিন হোটেল। তাদের হোটেলে আর্থিক সমস্যার কারণে তারা কোন কারিগর বা মেসিয়ার রাখতে পারেনা। এ কারণে মেয়ে হয়েও সে তার বাবার হোটেলের যাবতীয় কাজে সাহায্য করে থাকনে। পাশাপাশি আবার সে পড়াশোনাও করে। সে একজন ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট। এসএসসিতে এ+ পেয়েছিল।
কলেজ শিক্ষার্থী নাসরিন আক্তার বলেন, আমরা গরিব মানুষ। আমাদের হোটেলটি খুব ছোট। টাকার অভাবে হোটেলে কারিগর রাখা হয়না। কারিগর রাখতে হলে তাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হয়। যেটা আমার বাবা দিতে পারবে না। তাই আমি নিজেই এ কাজগুলো করি। আমি স্কুলে পড়াশোনার সময় তখনকার কারিগরের কাছে কাজগুলো শিখেছি। কালাই সরকারি মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছি। আমি ভোর ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত কাজ করে কলেজে যাই। এরপর কলেজ ছুটি দিলে ৩টার দিকে বাড়িতে আসি। তারপর বিকাল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত হোটেলে মা-বাবার কাজে সাহায্য করি। দিনে ৩-৪ হাজার টাকা বেচাকেনা হয়।
নাসরিন আক্তারের বাবা মোকাব্বর মণ্ডল বলেন, আমার মেয়ে কালাই সরকারি মহিলা কলেজ পড়াশোনা করছে। সকালে কাজ শেষ করে কলেজে যায় আবার কলেজ থেকে ফিরে এসে বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করে। আমার মেয়েই আমাকে সব কাজে সহযোগিতা করে। মেয়ে হয়েও আমাকে একজন ছেলের মতোই কাজে সহযোগিতা করে এতে আমি গর্বিত।
কালাই সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নাজিম উদ্দিন বলেন, সে ব্যবসা করে লেখাপড়া চালায় এবং কস্টের মধ্যে দিয়ে লেখাপড়া করেই এসএসসি পাস করে এখানে ভর্তি হয়েছে। শুনে আমি খুব অবাক বিস্ময়ে তাকালাম, এই মেয়েটা তো খুব মেধাবী। এই মেয়েটাকে সহযোগিতা করা হলে কাঙ্খিত লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে বলে বিশ্বাস করি।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান বলেন, বৈরাগীর মোড়ে নাসরিন হোটেলে নাসরিন আক্তার পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার সাথে বাবার হোটেলে কাজ করছে এটা একটা চমৎকার উদ্যোগ। তবে, এ কাজটি করতে গিয়ে তার পড়াশোনার যেন ক্ষতি না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। তাকে যতটুকু আর্থিক সহযোগিতা করা যায় উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনে সেটা আমরা করব।
কুড়িগ্রামে দুর্যোগ মোকাবেলায় লাইট হাউজের কার্যক্রমে সুফল পাচ্ছে দুর্যোগ প্রবণ এলাকার জনগোষ্ঠী। দুর্যোগ মোকাবেলায় লাইট হাউজ একটি স্বেচ্ছাসেবী ও উন্নয়নমূলক বেসরকারী সংস্থা ১৯৯২ সালে অনুমোদন পায়। এরপর লাইট হাউজ একটি স্বেচ্ছাসেবী ও উন্নয়নমূলক বেসরকারি সংস্থাটি দেশের গ্রামীণ-শহরে দরিদ্র, প্রান্তিক ও উচ্চ ঝুঁকির জনগোষ্ঠী, হিজড়া, আদিবাসী, কৃষকসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠানটি জেলার পাঁচটি উপজেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরমধ্যে কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট, উলিপুর, চিলমারী এবং রাজিবপুর। এসব উপজেলার মধ্যে দুর্যোগ প্রবণ ৩৫টি ইউনিয়নে স্থানীয় পর্যায়ে ৭০জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দেয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তা নদী ঘেঁষা রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বীর তৈয়ব খাঁ গ্রামে পিছিয়ে পড়া দরিদ্র প্রায় ৩০ জন কিশোরী-মহিলাকে নিয়ে আগাম দুর্যোগ পূর্বাভাস ও দুর্যোগকালীন স্বাস্থ্য ও সহিংসতা বিষয়ে উঠা বৈঠক করছে।
স্বেচ্ছাসেবক কমলা খাতুন, স্বেচ্ছাসেবক প্রীতিলতা রায়, স্বেচ্ছাসেবক জিহাদ হাসানসহ অনেক পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী লাইট হাউজের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন।
স্বেচ্ছাসেবক শাহিন আলম, জিহাদ হাসান জানান, অনেকের ধারণা আমাদের এসব উঠান বৈঠকের কারণে হয়তো কোন পারিশ্রমিক পেয়ে থাকি। কিন্তু এখানে কোন ধরনের পারিশ্রমিক পাইনা আমরা স্বেচ্ছাসেবকরা। মানুষের জন্য কাজ করার অনেক প্লাটফরম থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম ব্যতিক্রম মনে হওয়ায় এখানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছি। দুর্যোগকালীন সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য, দুর্যোগের প্রস্তুতি এবং সহিংসতা নিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে স্থানীয়দের সচেতনা তৈরিতে কাজ করছি আমরা স্বেচ্ছাসেবকরা।
এছাড়াও দুর্যোগ প্রবণ এলাকার দারিদ্রপীরিত এবং ঝুঁকিপ্রবণ এলাকায় নারী, কিশোরী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে দুর্যোগকালীন সময়ে জেন্ডার সহিংসতা হ্রাসে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান চালানোর জন্য ৯০জন স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
প্রকল্পের সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রকল্পের শুরু থেকেই স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। কুড়িগ্রাম জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নে প্রায় এক শতাধিকেরও বেশি উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকল্প শেষ হলেও স্বেচ্ছাসেবকগণ তাদের সচেতনতামূলক উঠান বৈঠক চালিয়ে যাবেন। এভাবে করে প্রায় ২০ হাজারের ও বেশি দুর্যোগ প্রবণ এলাকার দারিদ্র্যপীড়িত ও ঝুঁকিপ্রবণ এলাকায় নারী, কিশোরী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সচেতন করে গড়ে তোলা সম্ভব। এর ফলে মানুষ বিভিন্ন দুর্যোগ থেকে নিজে এবং নিজেদের পরিবার সহ জানমাল এবং তাদের সম্পদ গুলোকে রক্ষা করতে পারবে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘ঠাকুরগাঁও মডেল’ অনুসরণ করে বরিশাল জেলাকে সম্পূর্ণরূপে শিশুশ্রম মুক্ত করা হবে। শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কাজে নিয়োজিত না রাখার পাশাপাশি তাদের নিয়মিত স্কুলে পাঠানোর উপর জোর দেন তিনি।
শুক্রবার বরিশালের শিল্পকলা একাডেমিতে ‘শিশু শ্রম নিরসনে তারুন্যের ভুমিকা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম সচিব এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সরকার ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইএলও কনভেনশন ১৮২ অনুস্বাক্ষর করেছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ৪৩ ধরনের কাজের তালিকা প্রকাশ করেছে। কোনো শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকবে না। তারা বইখাতা নিয়ে স্কুলে যাবে।”
শ্রম সচিব আইএলও'র অর্থায়নে ইএসডিও কর্তৃক বাস্তবায়িত ঠাকুরগাঁও জেলার ‘চাইল্ড লেবার মনিটরিং সিস্টেম (সিএলএমএস)’ মডেলকে একটি অনুকরণীয় উদাহরণ আখ্যায়িত করেন। তিনি জানান, জাতীয় পর্যায়ে এই মডেল অনুসরণ করে বরিশাল জেলাসহ অন্যান্য জেলাতেও শিশুশ্রম নিরসনের কার্যক্রমকে গতিশীল করা হবে।
শ্রম সচিব তরুণ সমাজ ও এনজিওগুলোর প্রতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “শিশুশ্রম নিরসনে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। তরুণরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সমাজকে শিশুশ্রম মুক্ত করতে পারে। এখানে উপস্থিত সকলে যদি ১ জন শিশুরও দায়িত্ব নেন, তাহলেও বরিশাল জেলা অনেকাংশে শিশুশ্রম মুক্ত হবে।”
তিনি আরও জানান, শিশুশ্রম নিরসনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সাথে সমন্বয় করে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন দুস্থ শ্রমিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫৭ জন শ্রমিক ও তার পরিবারকে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন হতে ২৫ লক্ষ টাকার অর্থ সহায়তার চেক প্রদান করা হয়।
বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন এবং বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো: রায়হান কাওসার। এছাড়াও বরিশাল জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, সুধীজন, এনজিও কর্মী ও তরুণরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য