দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৬৫০ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯১০ জনের শরীরে। এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার ৯২৯ জন।
গত একদিনে ৯১৭ জনসহ সুস্থ হয়েছেন পাঁচ লাখ ৬১ হাজার ৫১৫ জন।
সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে পুরুষ ১৮ জন, নারী ছয়। তাদের সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গত ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম শনাক্তের খবর জানানো হয়। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ করোনায় দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে সরকার। এখন দেশে সংক্রমণের নবম মাস চলছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বন্ধ এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের সুযোগ তৈরিতে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের ছয় সদস্য।
কংগ্রেস সদস্য বব গুড ২৫ মে লেখা চিঠিটিসহ একটি বিবৃতি নিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ২ জুন প্রকাশ করেন। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী অন্য কংগ্রেস সদস্যরা হলেন- স্কট পেরি, ব্যারি মুর, টিম বারচেট, ওয়ারেন ডেভিডসন ও কিথ সেল্ফ। তারা সবাই বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির সদস্য।
চিঠিতে বাংলাদেশকে অবাধ নির্বাচনের একটি সর্বোত্তম সুযোগ করে দেয়ার জন্য কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সেনাদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস ও জাতিসংঘের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেস সদস্যরা চিঠিতে বাংলাদেশে ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ক্রমাগত প্রত্যাখ্যান করে আসা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন, বাক-স্বাধীনতার জায়গা সংকুচিত হয়ে আসা এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীদের ওপর হামলার’ কথা বলেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘২০০৯ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তার সরকার কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শত শত উদাহরণ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও এনজিও তাদের প্রতিবেদনে নথিভুক্ত করেছে। যাতে দেখা যায়, শেখ হাসিনার সরকার ক্রমবর্ধমানভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অস্বীকার করেছে।
‘সরকার তার নাগরিকদের ওপর নির্যাতন করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সাংবাদিকদের কারাগারে বন্দি করেছে, বিরোধীদের গুম করেছে এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের লাঞ্ছিত করেছে বা হত্যা করেছে। এ ঘটনা শুধু তার রাজনৈতিক বিরোধীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; জাতিগত এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাও নিপীড়নের শিকার হয়েছে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হাজার হাজার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বিক্ষোভ করেছে, যা হাসিনা সরকারের পরিবর্তনের জন্য জনগণের একমাত্র আশা। এর জবাবে বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করেছে, এমনকি হত্যা করেছে।
‘জার্মানির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম ডয়চে ভেলে এবং সুইডেনভিত্তিক সংবাদ সংস্থা নেত্রা নিউজের সাম্প্রতিক তদন্তে বলা হয়েছে, র্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও বলপূর্বক গুমের এসব ঘটনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন ছাড়া সম্ভব ছিল না।’
কংগ্রেস সদস্যরা চিঠিতে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এক বছরেরও বেশি সময় আগে র্যাবকে একটি ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং হত্যাকাণ্ডসহ অন্যান্য নৃশংসতার জন্য দায়ী একাধিক আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
‘যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা শেখ হাসিনার সরকারের সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণকে ধীর করার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি। উল্টো তারা আমেরিকার জাতীয় স্বার্থে আঘাত করার জন্য চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করে ফেসবুকে পোষ্ট দেয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষুব্ধদের সংঘর্ষ হয়েছে।
রোববার রাত ৮টার দিকে মিরপুর ১৩ নম্বরে পুলিশ স্টাফ কলেজের সামনে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। এক পর্যায়ে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ।
রাত ১০টার পরও থেমে থেমে হামলা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, হাফিজ সিরাজী নামে এক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া স্ট্যাটাস থেকে ঘটনার শুরু। গত শুক্রবার দুপুর ১২টা এক মিনিটে এ অ্যাকাউন্ট থেকে স্ট্যাটাস দিলে রোববার সন্ধ্যায় মিরপুর ১৩ নম্বরে করেকজন সন্দেহ করে একজনকে আটক করে। এ সময় কয়েকজন যুবক তাকে মারধর করলে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। এরপরই সংঘর্ষ বাধে।
হাফিজ সিরাজী নামের অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া স্ট্যাটাসের জন্য যাকে মারধর করা হয়েছে তিনি দাবি করেছেন, তার নাম সোহেল। তিনি স্থানীয় দোকানদার। উদ্ধার করে হাসপাতালে আনার পর এই ব্যক্তি বলেন, তার আইডি হ্যাক করে এসব পোস্ট দেয়া হয়েছে। তারই এক রুমমেট অন্যদের ডেকে এনে হামলা করিয়েছেন।
রাত পৌনে ১০টার দিকে কাফরুল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি করেছে- এমন অভিযোগে এক ব্যক্তিকে মারধর করে জনতা। তাকে উদ্ধার করে আমরা হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এর ফলে আমাদের ওপর হামলা করেছে। এখনো থেমে থেমে হামলা করা হচ্ছে। কতজন আহত হয়েছে তা এখনো বলা যাচ্ছে না।’
হামলাকারীদের বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে জৈনসার ইউনিয়নের ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে জেলা পুলিশের বিশেষ কর্মসূচিতে যোগ দি ৩০ শিক্ষার্থী অতিরিক্তি গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে ১৩ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ, জেলা পুলিশের সচেতনতা কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার বেলা ১১টার দিকে তীব্র গরমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খোলা মাঠে দীর্ঘ সময় অ্যাসেম্বলি করানো হয়। কর্মসূচিতে সিরাজদিখান থানার এএসআই কামরুল ইসলাম যৌন হয়রানি ও মাদকবিরোধী বক্তব্য দেয়ার সময় ওই শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আমিন উদ্দিন বলেন, ‘দুই মাস আগেই আমাদের স্কুলে অ্যাসেম্বলি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে শ্রেণিকক্ষে প্রার্থনা ও শপথ করানো হয়।
‘কামরুল ইসলাম নামে সিরাজদিখান থানার একজন অফিসার আমাদের বিদ্যালয়ে এসে সচেতনতামূলক কথা বলার জন্য শিক্ষার্থীদের মাঠে বের করেছিলেন। ওই সময় শিক্ষার্থীরা গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে।’
সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আঞ্জুমান আরা বলেন, ‘ভবানীপুর বিদ্যালয়ের ১৩ শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ হয়ে আমার এখানে চিকিৎসা নিয়েছে।’
মুন্সীগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান রিফাত জানান, বিদ্যালয়গুলোর নিয়মিত এসেম্বলিতে অল্প সময়ের জন্য শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি ও মাদক বিষয়ক সচেতনতামূলক বার্তা দেয়া হয়। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ পড়ে।
চট্টগ্রামে মাইলেজ জটিলতা নিরসনসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং কর্মচারী ঐক্যপরিষদ। সমাবেশ থেকে ১৩ জুনের মধ্যে কর্মচারীদের দাবি মেনে নেয়া না হলে পরদিন থেকে নিয়ম অনুযায়ী ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ না করার ঘোষণা দেয়া হয়।
রোববার বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন তারা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান ও রেলওয়ে গার্ডস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রোকনউদ্দিন এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন। রেলওয়ের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের কর্মচারীরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
শ্রমিকদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ১৩ জুনের রানিং স্টাফদের ৭৫ শতাংশ মাইলেজ যোগে ম্যানশন ও আনুতোষিক নিষ্পত্তি করা, আইবাস++ পদ্ধতিতে রানিং স্টাফদের বেতন-ভাতা প্রদান, নিয়োগ বিধি-২০২০ সংশোধন করে যোগ্যদের পদোন্নতি দেয়া এবং আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক লোক নিয়োগ বন্ধ করা।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লাসহ অন্য উপকরণগুলোর অভাব এখন বিশ্ববব্যাপী জানিয়ে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে একটু সাশ্রয়ী হতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার জাতীয় সংসদে উত্থাপিত এক শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আফসারুল আমীনের মৃত্যুতে সংসদে এই শোক প্রস্তাব তোলা হয়। পরে তা সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়।
শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে সরকারপ্রধান বর্তমান বৈশ্বিক সংকট নিয়ে কথা বলেন। সরকার জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় উদ্যোগ নিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু জ্বালানি তেল, কয়লা বা গ্যাসের অভাব বিশ্বব্যাপী। এখন তো কেনাটাই অনেকটা মুশকিল। ক্রয় করাটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারপরও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে কাতার ও ওমানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি সই হয়ে গেছে। আমরা জলবিদ্যুৎও আমদানির ব্যবস্থা নিয়েছি। কয়লা কেনার জন্য ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আমরা আবার চালু করতে পারি।
সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে অনুরোধ করব, বিদ্যুৎ ব্যবহারে একটু সাশ্রয়ী হতে হবে। সব জিনিস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। আমাদের খাদ্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে। আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে। বিশ্বের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আর কতদিন চলতে তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো বিশ্ব পরিস্থতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। তবে আমাদের দেশের মানুষের সুরক্ষার জন্য তাদের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমাদের যা যা করণীয় তা করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাচ্ছে। মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। যদিও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, স্যাংশন-পাল্টা স্যাংশন, বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি তেলের অভাব, যার জন্য এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে কিন্তু জ্বালানির অভাব হচ্ছে। সেখানে লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। উন্নত দেশেও বহু মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। এমন একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সারা বিশ্বব্যাপী। আমি জানি না আর কখনও এরকম পরিস্থিতি হয়েছিল কি না। হয়তো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তো দুর্ভীক্ষ, মন্বন্তর দেখা দিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের অতিমারি আর এরপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সমগ্র বিশ্বে যে খাদ্যমন্দা, মুদ্রাস্ফীতি, পরিচালনা ও পরিবহন ব্যয়, বিদ্যুতের ঘাটতি- এগুলো প্রত্যেকটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। বাংলাদেশে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি।
শোক প্রস্তাবের ওপর অন্যদের মধ্যে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সরকারি দলের সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান, মোতাহার হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু, মসিউর রহমান রাঙা বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণাকে দুরভিসন্ধিমূলক বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। তিনি বলেছেন, ১৪ দলীয় জোট মনে করে এই ভিসা নীতি অনাকাঙ্ক্ষিত, যা কারও পক্ষে ব্যবহার করা হচ্ছে।
রাজধানীর ইস্কাটনে নিজ বাসভবনে রোববার ১৪ দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমির হোসেন আমু এসব কথা বলেন। জোটের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিসহ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর বিশদ আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আমু বলেন, ‘সংবিধানের প্রতিটি প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখতে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমরা একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন উপহার দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো হস্তক্ষেপ আমরা কামনা করি না।’
আপনারা ভিসা নীতির সমালোচনা করছেন। অথচ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন যে তাদের টার্গেট করে এটা করা হয়নি। এমন এক প্রশ্নে আমু বলেন, ‘আমরা ভিসা নীতিকে অনাকাঙ্ক্ষিত মনে করি। আরেকটা কথা হলো- এটা ১৪ দল, আওয়ামী লীগের মিটিং না।
‘মনে রাখবেন, আমরা রাবার স্ট্যাম্প না। এখানে আরও ১৩টি দল আছে। ১৪ দল যেটা ফিল করে সেটাই বলবে। অন্য দল কে কী বলবে, সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। আমাদের আলোচনায় যেটা আসবে সেটা আমরা প্রকাশ করব।’
জোটের মুখপাত্র বলেন, ‘১৪ দল মনে করে, যারা নির্বাচনকে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে বানচাল করতে চায়, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, তাদের জন্য এটা (ভিসা নীতি) সহায়ক হতে পারে। যদি অন্য কোনো দেশের সন্দেহ থাকে, তাহলে তারা বসে সংবিধানের ভেতরে কোথায় কোন ফাঁকফোকর আছে সেটা বিবেচনা করুক। সেগুলো দেখুক, আলোচনা করুক।
‘কিন্তু সংবিধানের ভিত্তিতে নির্বাচনটা অনুষ্ঠিত হতে হবে। সংবিধানে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে, অন্য কোনো উপায়ে আঘাত আসুক এটা আমরা চাই না।’
সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের জন্য ১৪ দলীয় জোট কোনো আলোচনার উদ্যোগ নেবে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে জোটের মুখপাত্র বলেন, ‘যদি জনগণের ওপর আস্থা থাকে, সংবিধানভিত্তিক নির্বাচনে আস্থা থাকে তাহলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সব দলকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানাই। কোনো দলের পক্ষে জনস্রোত থাকলে, সেই স্রোতের বাইরে প্রশাসনও যেতে পারে না। সেদিকেই নির্বাচন ধাবিত হয়।’
বৈঠকে দ্রব্যমূল্য বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ১৪ দল। জোটের পক্ষ থেকে দ্রুত বাজার ও বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। আমু জোটের পক্ষে কলম ও কাগজের ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহারের দাবি জানান।
আমু জানান, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ১৪ দল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ৬ জুন বিকেলে জনসভা করবে।
আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টি (একাংশ)-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, গণআজাদী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট এস কে সিকদার ও বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান।
গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (গাউক)-এর চেয়ারম্যান পদে তিন বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন আজমত উল্লা খান।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় রোববার গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০২০ অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে তাকে নিয়োগ দিয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্ম সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে আজমত উল্লা খানের এই নিয়োগ কার্যকর হবে।
গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী নিয়োগের অন্যান্য শর্ত চুক্তিপত্রের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।
গত ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে লড়েছিলেন আজমত উল্লা। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের কাছে পরাজিত হন তিনি।
মন্তব্য