১৮ বছরের কম বয়সীদেরকে করোনার টিকা দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন। সন্তানসম্ভবা বা বিভিন্ন রোগ থাকলেও টিকা দেয়া হবে না।
এই সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে দেশে সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষকেই টিকা দেয়া হচ্ছে না।
এই নীতিমালা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করে দেয়া জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন জানিয়েছেন, তারা সেটা অনুসরণ করছেন মাত্র।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিকা পেতে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের টিকা পেতে জটিলতা হবে কি না- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জেলা পর্যায়ে কমিটি করেছি। সেই কমিটির মাধ্যমে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নিশ্চিত করা হবে।’
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু হলেও বাংলাদেশে কবে শুরু হবে, সেটা এখনও নিশ্চিত নয়। সরকার অক্সফোর্ডের তিন কোটি টিকা আনতে চুক্তি করলেও এই টিকার চূড়ান্ত অনুমোদন এখনও পাওয়া যায়নি।
ফাইজার ও মডার্নার যে টিকা নানা দেশে প্রয়োগ করা হচ্ছে, সেগুলোর সংরক্ষণের অবকাঠামো দেশে নেই জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, তারা অক্সফোর্ডের টিকার অপেক্ষায়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মন্ত্রিসভার সবশেষ বৈঠকে জানিয়েছেন, জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে এই টিকা আসতে পারে। এ ছাড়া টিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক জোট গ্যাভির কাছ থেকে পৌনে সাত কোটি টিকা আসবে জুনের মধ্যে। এই টিকা আসবে বিশ্বজুড়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকা সরবরাহে তৈরি করা আন্তর্জাতিক উদ্যোগে কোভেক্সের মাধ্যমে।
একেক জনকে টিকা দিতে হবে দুটি করে। ফলে এখন পর্যন্ত ১০ কোটি টিকার সংস্থান হয়েছে, যা পাবে পাঁচ কোটি মানুষ। ১৭ কোটি মানুষের দেশে বাকি ১২ কোটি মানুষের টিকা কীভাবে আসবে, সেটি এখনও স্পষ্ট নয়।
আবার তিন কোটি টিকা এলে কারা আগে টিকা পাবে, সেই বিষয়ে নীতিমালাও এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
রোববার দুপুরে মহাখালীতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে দুটি ভ্যাকসিন ল্যাব পরিদর্শন করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কথা বলেন টিকা নিয়ে।
মন্ত্রী বলেন, ‘করোনা ভ্যাকসিন বিতরণ করা হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী। তাদের নির্দেশনা ১৮ বছরের কম বয়সী, গর্ভবতী মা ও অন্য কোনো রোগ আছে এমন ব্যক্তিকে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হবে না। বাংলাদেশে এমন জনগণ রয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘করোনা ভ্যাকসিন আনতে সরকারের সব প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা ক্রয় অর্ডার দিয়ে রেখেছি, অনুমোদনের সঙ্গে সঙ্গে করোনা ভ্যাকসিন পাব।’
টিকা এলে তা সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘টিকা কীভাবে বণ্টন ও বিতরণ হবে সে বিষয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। টিকা প্রয়োগ ও বিতরণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘ভ্যাকসিন রাখার জন্য ইতিমধ্যে আমরা নতুন কিছু ফ্রিজ কেনার ব্যবস্থা করেছি। বর্তমানে যেসব ফ্রিজ আছে সেগুলোতে অন্যান্য টিকা রয়েছে।’
মন্ত্রীর দাবি, করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার সাফল্য দেখিয়েছে। আর এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও মিলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ব্লমবার্গের একটি প্রতিবেদন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম এবং বিশ্বে ২০তম স্থান পেয়েছে। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র অনেক পিছিয়ে।
আরও পড়ুন:ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ২ হাজার ১৫৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৬৭ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪৮৬ জন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার হিসাবে এদিন বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১০ হাজার ৭১ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৬৫৮ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৪১৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৮১ হাজার ৮৫২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৭৭ হাজার ২৮৯ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৫৬৩ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৭০ হাজার ৯০২ জন। ঢাকায় ৭৩ হাজার ৪১ এবং ঢাকার বাইরে ৯৭ হাজার ৮৬১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৮৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নারী ৫০৬ জন ও পুরুষ ৩৭৩ জন।
আরও পড়ুন:ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২ হাজার ৮৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৮৯ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১০০ জন।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১০ হাজার ২৮০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৬৯৬ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৫৮৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬৯৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৭৬ হাজার ৬২২ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ৩ হাজার ২৫৪ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫৪৪ জন। ঢাকায় ৭২ হাজার ৩৩৭ এবং ঢাকার বাইরে ৯৬ হাজার ২০৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৮৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশে ডেঙ্গু মহামারিতে স্যালাইনের সংকট স্বাস্থ্য সেবা খাতের বড় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। অনেক স্থানে আবার কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কয়েক গুণ বেশি দাম হাতিয়ে নিচ্ছে দোকানিরা। এমনই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে এসেছে ৫৩ হাজার ব্যাগ স্যালাইন।
ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে দুই দিনে ভারত থেকে প্রায় ৫৩ হাজার ব্যাগ স্যালাইন আমদানি করা হয়েছে। এর মধ্যে বুধবার এসেছে ২৭ হাজার ৭৮০ ব্যাগ এবং সোমবার আনা হয়েছে ২৫ হাজার ৪৭০ ব্যাগ স্যালাইন।
স্যালাইন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার জাস করপোরেশন। আর ভারতের রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠানটি হলো জেনটেক্স ফার্মাসিউটিক্যাল।
প্রতি ব্যাগ স্যালাইন ভারত থেকে কেনা হয়েছে ৬১ টাকা ৩৫ পয়সা দরে। পর্যায়ক্রমে প্রাথমিক অবস্থায় ৭ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানি করা হবে বলে জানা গেছে।
আমদানিকারকের প্রতিনিধি জানান, বর্তমান সংকটের মুহূর্তে আমদানিকৃত স্যালাইন বড় ভূমিকা রাখবে ও কম মূল্যে মানুষ কিনতে পারবে।
বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, ভারত থেকে আমদানিকৃত স্যালাইন বন্দর থেকে দ্রুত ছাড়করণে সহযোগিতা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, বাজার নিয়ন্ত্রণ ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ৯ সেপ্টেম্বর স্যালাইন আমদানির কথা জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
ভিটামিন ‘ডি’ এমন একটি পুষ্টি উপাদান যা আমরা খাবার হিসেবে যেমন গ্রহণ করি, তেমনি হরমোন হিসেবেও আমাদের শরীরে আপনা-আপনি তৈরি হয়। সূর্যের আলো গ্রহণ করে হরমোনোর মাধ্যমে শরীরে তৈরি হয় ভিটামিন ‘ডি’। এ কারণে এর আরেক নাম ‘দ্য সানশাইন ভিটামিন’।
ভিটামিন ‘এ’র মতো এই ভিটামিনটিও চর্বিতে দ্রবণীয় যা খাবার থেকে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ করে শরীরের পুষ্টির প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করে। এটি আমাদের হাড়, দাঁত ও শরীরের পেশী গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সহায়ক।
মানব শরীর যখন সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসে, আলোর প্রতিক্রিয়ায় আমাদের শরীরে প্রাকৃতিকভাবেই হরমোন হিসেবে ভিটামিন ‘ডি’ তৈরি হয়।
প্রাকৃতিক খুব কম খাবারেই ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায়। তাই খাবারের পাশাপাশি যদি শরীরে ভিটামিন ‘ডি’র চাহিদা পূরণ করতে হয় তবে নির্দিষ্ট কিছু খাবার বা ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লি্মেন্ট গ্রহণ করা জরুরি।
যাদের ভিটামিন ‘ডি’র অভাব বেশি হয়
সাধারণত মার্চের শুরু থেকে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত পর্যাপ্ত সূর্যের আলো শরীরে লাগানোর মাধ্যমে শরীরে ভিটামিন ‘ডি’র উৎপাদন বেশি হয়। তবে সারা বছরই সকালের মিষ্টি রোদে অন্তত ৩০ মিনিট ঘোরাঘুরি করেও দৈনন্দিন ভিটামিন ‘ডি’র চাহিদা মেটাতে পারেন।
যারা বাইরে ঘোরাঘুরি কম করেন, তাদের শরীরে এ ভিটামিনটির অভাব বেশি দেখা যায়। আবার সম্পূর্ণ শরীর ঢেকে যারা বাইরে বের হন, তাদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তবে বাড়ির মধ্যে থেকে সকালের রোদ গায়ে লাগালে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।
অন্যদের তুলনায় শিশু, গর্ভবতী ও বুকের দুধ পান করান এমন মায়েদের শরীরে ভিটামিন ‘ডি’র প্রয়োজনীয়তা বেশি। তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট খাবার ও ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের মাধ্যমে শরীরে এ ভিটামিনের ভারসাম্য আনতে হবে।
শরীর নিজে থেকেই এই ভিটামিনটি তৈরি করলেও আরও কয়েকটি বিষয় রয়েছে যাতে শরীরে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি হতে পারে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-
ভিটামিন ‘ডি’র অভাবজনিত লক্ষণ
হাইপোক্যালসেমিয়া, ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত রোগ ও হাইপার প্যারাথাইরয়েডিজমের কারণ হতে পারে ভিটামিন ‘ডি’র দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতি।
চলুন জেনে নেই কোন কোন লক্ষণ দেখে বোঝা যাবে আপনার শরীরে ভিটামিন ‘ডি’র অভাব রয়েছে-
বেশি ভিটামিন ‘ডি’ গ্রহণের ফল
শরীরের জন্য অবশ্যই ভিটামিন ভিটামিন ‘ডি’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে সাপ্লিমেন্টের মাধ্যমে অতিরিক্ত ভিটামিন ‘ডি’ গ্রহণ করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
অতিরিক্ত ভিটামিন ‘ডি’র ফলে শরীরে তৈরি হতে পারে বিষক্রিয়া। এর ফলে দেখা দিতে পারে ক্ষুধামন্দা, ওজন হ্রাস, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, শরীরে রক্তনালীর সমস্যার মতো শারীরিক জটিলতা।
আবার অনেকদিন ধরে ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম জমা হতে পারে। এতে হাড়, কিডনি ও হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।
একজন সাধারণ মানুষের শরীরে প্রতিদিন ১০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘ডি’ই যথেষ্ট। তবে এর অন্যথা হলে চিকিৎকের পরমর্শ না নিয়ে কোনোভাবেই ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা উচিৎ নয়।
তবে বলে রাখা ভালো, বেশি সূর্যের আলো শরীরে লাগলেও শরীরের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভিটামিন ‘ডি’ উৎপন্ন হয় না। তাই যারা রোদে কাজ করেন, তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
যেসব খাবারে পাবেন ভিটামিন ‘ডি’
প্রকৃতিতে খুব কম খাবারেই ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায়। তবে তেলযুক্ত মাছ, লাল মাংস, কলিজা, ডিমের কুসুম, কিছু প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন: সিরিয়াল জাতীয় খাবার, কমলার জুস ও টুনা মাছে সল্প পরিমাণে ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে আরও ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ১৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৫৭ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩০২৫ জন।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১০ হাজার ২৬৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৮১৯ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৪৪৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৭৬ হাজার ৮১০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৭৫ হাজার ৮৩৩ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ৯৭৭ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৮০ জন। ঢাকায় ৭১ হাজার ৪২৬ এবং ঢাকার বাইরে ৯৪ হাজার ২৫৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৮৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন:বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পেটে ও বুকে জোড়া লাগানো দুটি শিশুর দেহে সফলভাবে অস্ত্রোপচার শেষ হয়েছে। এই অস্ত্রোপচারে শিশু দুটিকে আলাদা করা হয়েছে।
বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের অপারেশন থিয়েটারে এই অস্ত্রোপচার করা হয়। এতে আলাদা হওয়া দুটি শিশু হলো গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার ৭৮ দিন বয়সী আবু বকর ও ওমর ফারুক।
অস্ত্রোপচারের আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ অস্ত্রোপচারে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ এবং শিশু দুটির মা-বাবার সঙ্গে দেখা করে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আল আমিন শেখ ও চায়না বেগম দম্পতির ঘরে চলতি বছরের ৪ জুলাই পেটে জোড়া লাগা ওই শিশুর জন্ম হয়।
জন্মগ্রহণের পর শরীরে জটিলতা দেখা দিলে ৫ জুলাই তাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কেএম জাহিদ হোসেনের অধীনে ২০১ নম্বর কেবিনে ভর্তি করা হয়।
এরপর পেটে জোড়া লাগানো যমজ এ দু শিশুর চিকিৎসার সব দায়িত্বভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রহণ করেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল আবু বকর ও ওমর ফারুকের নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে বুধবার সকাল সাড়ে আটটায় তাদের শরীরে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন।
এ অস্ত্রোপচারে শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কে এম জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে বিভাগের অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন, সহকারী অধ্যাপক ডা. কে.এম. সাইফুল ইসলাম, মেডিক্যাল অফিসার ডা. উম্মে হাবিবা দিলশান মুনমুন এবং নার্সিং অনুষদের ডিন ও অ্যানেসথিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, এনেসথিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবাশীষ বণিক এবং নার্সিং ইনচার্জ মেহেরুন্নেসাসহ অন্যরা অংশ নেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবু বকর ও ওমর ফারুকের লিভার ও বুকের হাড় সংযুক্ত ছিল। পোস্ট অপারেটিভে এ দু শিশু বিশেষজ্ঞদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছে। এ শিশু দুজনের শারীরিক অবস্থা এখন পর্যন্ত সংকটমুক্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের দেশের সার্জনরা এ ধরনের জটিল রোগের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে সক্ষম এবং এ রকম জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। স্বল্প খরচে দেশের প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধাতেই বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব।’
আরও পড়ুন:বেসরকারি চাকুরে হাসান সাহেবের স্ত্রী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর মগবাজারের কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি। জ্বর কমে যাওয়ার পর রোগীর রক্তের প্লাটিলেট কমতে কমতে এক পর্যায়ে মাত্র ১০ হাজারে নেমে আসে।
জরুরিভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন। অথচ কোনো ডোনারের তথ্য জানা নেই। কারণ স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এবি-নেগেটিভ। নানামুখী তৎপরতায় একজন ডোনার পাওয়া যায়।
ওদিকে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানিয়ে দিয়েছেন, চারজন ডোনার থেকে এক ব্যাগ করে চার ব্যাগ রক্ত যোগাড় করে তা থেকে এক ব্যাগ প্লাটিলেট বের করে রোগীর শরীরে দ্রুত পুশ করতে হবে।
নেগেটিভ গ্রুপের এই রক্তের একজন ডোনারই যোগাড় হয় না, সেখানে চারজন কোথা থেকে মিলবে? এমন দিশেহারা অবস্থায় তাকে ওই ডোনার জানান, তিনি একটাই প্রয়োজনীয় প্লাটিলেট দিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন এফেরেসিস মেশিন। ওই মেশিনের মাধ্যমে একজন ডোনার থেকেই এক ব্যাগ প্লাটিলেট নেয়া যাবে।
শেষ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে থাকা এফেরেসিস মেশিন বা প্লাটিলেট মেশিন দিয়ে ওই ডোনার থেকেই প্রয়োজনীয় প্লাটিলেট সংগ্রহ করা হয়।
এফেরেসিস কী?
বর্তমানে এফেরেসিস প্লাটিলেট ডেঙ্গু রোগীদের জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বিশেষ করে যেসব ডেঙ্গু রোগীর এফেরেসিস প্লাটিলেট প্রয়োজন হয় তাদের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এই প্রযুক্তি।
এফেরেসিস বা প্লাটিলেট মেশিন দিয়ে একজন ডোনারের শরীর থেকে ২৫০ মিলিলিটারের মতো রক্ত টেনে নিয়ে যন্ত্রের মাধ্যমে প্রসেসিং করে প্লাটিলেট বের করে নেয়া হয়। আর টেনে নেয়া রক্তের বাকি অংশটুকু পুনরায় ডোনারের শরীরে পুশ করে দেয়া হয়।
অবশ্য ব্যয়টা একটু বেশি, একজন ডোনার থেকে প্রয়োজনীয় প্লাটিলেট বের করে নিতে ২০/২২ হাজার টাকা লাগে। আর খোদ রাজধানীতেই সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মিলে হাতেগোনো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এই অত্যাধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তির সুবিধা রয়েছে।
এফেরেসিস দিবস পালন
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেই ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ চলছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন তিন হাজারেরও বেশি রোগী। মৃত্যুর সংখ্যাও থাকছে প্রায় ২০-এর ঘরে। মুমূর্ষু রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় রক্তের সন্ধানে হাসপাতালগুলোতে রোগী রেখে স্বজনরা ছুটছেন বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংকে। হয়রানির চূড়ান্ত হয়ে সময়মতো রক্তের যোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
ডেঙ্গু মহামারির এমন বাস্তবতায় বিশ্বের অন্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও মঙ্গলবার পালন করা হয়েছে ‘বিশ্ব এফেরেসিস সচেতনতা দিবস’।
আমেরিকান সোসাইটি ফর এফেরেসিস প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার বিশ্ব এফেরেসিস সচেনতা দিবস পালনের নির্দেশনা দিয়ে থাকে। এফেরেসিস ডোনার এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও অন্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনই দিবসটি পালনের মুখ্য উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে উক্ত দিবসটি পালিত হয়েছে।
এদিন সকাল ৯টায় বিএসএমএমইউতে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা। বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।
বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন। পরে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের ক্লাস রুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘প্রতিটি দিবসের উদ্দেশ্য থাকে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ৮ অক্টোবর ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ উদ্বোধন করেছিলেন।
‘বঙ্গবন্ধু জনসাধারণকে রক্তদানে এগিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন। একই ভাবনা থেকে তিনি রক্ত নিয়ে গবেষণায় জোর দিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় বিএসএসএমইউ’র শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা রক্ত নিয়ে অনেক গবেষণা করে চলেছেন। ফলে রক্তের মাধ্যমে বর্তমানে অনেক জটিল রোগের সেবা বাংলাদেশেই দেয়া সম্ভব হচ্ছে।’
মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘রক্তদানে কোনো ক্ষতি নেই। বরং রক্ত দিলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তবে রক্তদানের ক্ষেত্রে নিরাপদ রক্ত সঞ্চালনের বিষয়টিও মনে রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপদ রক্তদানের আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে।’
অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে বিভাগে আরও অত্যাধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা যোগ করা হচ্ছে। সে সুবাদে রক্তরোগে আক্রান্ত কোনো রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আর দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।’
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- অধ্যাপক ডা. আয়েশা খাতুন, সহযোগী অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমান, সহকারী অধ্যাপক ডা. সোনিয়া শারমিন, গবেষণা সহকারী ডা. খান আনিসুল ইসলাম, মেডিক্যাল অফিসার ডা. ফিরোজা বেগম, ডা. সুর্বণা সাহা, ব্লাড প্রোগ্রাম অফিসার ডা. নাদিয়া শারমিন তৃষা, কাউন্সিলর ও মিডিয়া সেলের সমন্বয়ক সুব্রত বিশ্বাস, চিফ রেসিডেন্ট ডা. খাদিজাতুল কোবরা, সিনিয়র রেসিডেন্ট ডা. মেহেদী হাসান, ডা. রনি রায় প্রমুখ।
এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রী, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের এফেরেসিস ইউনিটে ১০ বছর ধরে এফেরেসিস প্লাটিলেট সেবা দেয়া হচ্ছে। এই বিভাগ থেকে করোনা মহামারির সময়ে কনভালেসেন্ট প্লাজমা সংগ্রহ করে তা কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া বন্ধ্যাত্বসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্তদের জন্য স্টেম সেল সংগ্রহ এবং চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য