করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে অনুমোদন পেয়েছে ফাইজার ও মডার্নার টিকা। এর মধ্যে ১১ ডিসেম্বর অনুমোদন পাওয়া ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু হয়েছে দেশটির স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্সিং হোমের বাসিন্দাদের।
কার্যকর প্রথম টিকা হিসেবে ফাইজারের টিকা যখন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের বাজারও দখল করে ফেলছে, ঠিক তখনই এর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে মডার্নার টিকা।
প্রশ্ন হচ্ছে- এই দুই টিকার কোনটি কেমন, শেষপর্যন্ত কোনটি পাবে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্যতা?
ফাইজার ও মডার্নার টিকার বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে সায়েন্সনিউজের একটি প্রতিবেদনে। নিউজবাংলার পাঠকের জন্য সেটি কিছুটা সংক্ষিপ্ত আকারে বাংলায় অনুবাদ করেছেন মেহরিন জাহান।
যুক্তরাষ্ট্রে এবার দ্বিতীয় করোনাভাইরাস টিকা (মডার্নার টিকা) কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) গত ১৮ ডিসেম্বর ১৮ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের ব্যক্তিদের দেহে জরুরি পরিস্থিতিতে মডার্নার টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দেয়। এই সিদ্ধান্তটি আসে এই টিকার চলমান ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্য পর্যালোচনা শেষে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সম্মতির প্রেক্ষাপটে।
এই টিকাটি এরই মধ্যে বাজারে থাকা ফাইজার ও তাদের জার্মান অংশীদার বায়োএনটেকের টিকার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে, যেটি যুক্তরাষ্ট্রে ১১ ডিসেম্বর অনুমোদন পায়। ফাইজারের টিকা এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্যসেবা কর্মী ও নার্সিংহোমে বসবাসকারীসহ উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মাঝে প্রয়োগ শুরু হয়েছে।
এবার দেখা যাক দুটি টিকা কীভাবে একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
দুটি টিকাই ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের সুরক্ষা দেবে
মডার্না ও ফাইজার- দুটি প্রতিষ্ঠানের টিকাই ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে।
পর্যালোচনার জন্য এফডিএকে সরবরাহ করা নথিতে মর্ডানা জানায়, তাদের তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলেছে ৩০ হাজারের বেশি মানুষের ওপর, যেখানে টিকার ৯৪.১ শতাংশ কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। এর আগে গত ৩০ নভেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি দুই সপ্তাহের ব্যবধানে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়া স্বেচ্ছাসেবীদের অবস্থা সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করে। একইভাবে দেখা গেছে, ফাইজারের টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকারিতা নিয়ে কোভিডের লক্ষণগুলো প্রতিরোধে সক্ষম।
এর কারণ ব্যাখ্যা করে ডিউক ইউনিভার্সটির সুজানা নাগি বলছেন, ‘দুটি টিকার তুলনামূলক ফলাফল একই রকম হওয়ার কারণ সম্ভবত এটাই যে, এগুলোর মধ্যে পার্থক্যের চেয়ে মিলই বেশি। আমি মনে করি, এজন্যই আমরা প্রথম দিকের কার্যকারিতার ক্ষেত্রে একই ধরনের ফল দেখতে পাচ্ছি।’
১৬ বছর থেকে ৮৯ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে ফাইজারের টিকা বেশ কার্যকর। আর মডার্নার টিকা ১৮ থেকে ৬৪ বছর পর্যন্ত বয়সীদের ক্ষেত্রে ৯৫.৬ শতাংশ কার্যকর, তবে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এর কার্যকারিতা ৮৬.৪ শতাংশে নেমে আসে।
মডার্নার সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান জ্যাকুলিন মিলার গত ১৭ ডিসেম্বর এফডিএর উপদেষ্টা কমিটির শুনানিতে অবশ্য দাবি করেন, এই পার্থক্যটি অল্পসংখ্যক বয়স্ক ব্যক্তির ওপর প্রয়োগের (ভ্যাকসিন গ্রুপ থেকে চার জন এবং প্লাসেবো গ্রুপ থেকে ২৯ জন) ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়েছে, কাজেই এটি পরিসংখ্যানগত দিক থেকে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।
তিনি বলেন, ‘বয়স্কদের মধ্যে মডার্নার টিকার কার্যকারিতা সামগ্রিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে এর কার্যকারিতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
'প্লাসেবো গ্রুপ' হলো, যাদের কোনো ধরনের অবহিত না করে টিকাসদৃশ ওষুধ দেয়া হয়, কিন্তু সেটিতে টিকা থাকে না। অর্থাৎ এই গ্রুপটি বাস্তবে টিকার অধীনে না এলেও মানসিকভাবে ভাবতে থাকে তারা টিকা পেয়েছে।
প্রথম ডোজের পর মডার্নার টিকা বেশি সুরক্ষা দিতে পারে
দুটি টিকার ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ সুরক্ষার জন্য গ্রহিতাদের দুটি ডোজ নেয়ার প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে প্রাথমিক প্রমাণগুলি ইঙ্গিত দিচ্ছে, প্রথম ডোজের দুই সপ্তাহের মধ্যেই মডার্নার টিকা কোভিডের লক্ষণগুলো প্রতিরোধে ফাইজারেরটির চেয়ে ভালো কাজ করে। ফাইজারের ট্রায়ালে প্রথম ডোজ দেয়ার পরে গ্রহিতাদের মধ্যে ভ্যাকসিন গ্রুপের ৩৯ জনের এবং প্লাসেবোতে ৮২ জনের কোভিড ধরা পড়ে, যা টিকার প্রথম ডোজের ৫২.৪ শতাংশ কার্যকারিতার প্রমাণ দেয়। অন্যদিকে মডার্নার প্রথম ডোজের কার্যকারিতা ছিল ৮০.২ শতাংশ।
তবে মডার্নার টিকার ডোজের এই কার্যকারিতা অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক গ্রহিতার ওপর প্রয়োগ করে পাওয়া গেছে। এছাড়া, প্রায় সব গ্রহিতা প্রথম টিকার পর দ্বিতীয় ডোজও গ্রহণ করেছিলেন, ফলে প্রথম ডোজের কারণেই তারা সুরক্ষা পেয়েছেন কিনা- সেটা বলা বেশ কঠিন।
মডার্নার টিকার প্রাথমিক ফল ইঙ্গিত দিচ্ছে, এটি লক্ষণযুক্ত কোভিডের পাশাপাশি লক্ষণবিহীন সংক্রমণ ঠেকাতেও সক্ষম
কিছু প্রাথমিক তথ্য দেখাচ্ছে, মডার্নার টিকা লক্ষণযুক্ত কোভিড সংক্রমণের পাশাপাশি লক্ষণবিহীন উপসর্গও নিরাময় করতে পারে। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ এবং কমিউনিটিতে ইমিউনিটি তৈরির জন্য জনগোষ্ঠীর মধ্যে লক্ষণবিহীন সংক্রমণ প্রতিরোধ খুবই জরুরি।
মডার্নার ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় প্লাসেবো পাওয়া ১৪ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে ৩৮ জন প্রথম ও দ্বিতীয় ইঞ্জেকশনের মধ্যবর্তী সময়ে লক্ষণবিহীন কোভিড পজেটিভ হিসেবে শনাক্ত হন। অন্যদিকে, টিকা পাওয়া বাকিদের ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের মধ্যবর্তী সময়ে লক্ষণবিহীন আক্রান্ত শনাক্ত হন মাত্র ১৪ জন। এতে প্রমাণিত হয় টিকার মাধ্যমে লক্ষণবিহীন সংক্রমণ কিছুটা হলেও ঠেকানো গেছে।
অন্যদিকে, ফাইজার এখনও এমন কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি, যার মাধ্যমে বোঝা সম্ভব তাদের টিকাও লক্ষণবিহীন সংক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম। তবে নাগি মনে করছেন, ‘দুটি টিকার ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো পার্থক্য দেখা যাবে বলে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।’
দুটি টিকার ক্ষেত্রেই এমআরএনএ জিন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যেটি মানব কোষকে করোনাভাইরাস স্পাইক প্রোটিন তৈরিতে সাহায্য করে, যে প্রোটিনকে অপসারণ করেই ভাইরাস কোষের ভেতরে আস্তানা গাড়ে। টিকা পাওয়ার পর দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাসের স্পাইক সম্পর্কে সচেতন হয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধের সক্ষমতা অর্জন করে।
দুটি টিকারই একই ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, যদিও গুরুতর অ্যালার্জি সম্পর্কে প্রশ্ন থেকেই যায়
প্রতিটি টিকার ক্ষেত্রে ইনজেকশনের পরে শরীরে একই ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ভাইরাল সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ আন্দ্রিয়া কক্স বলেন, ‘দুটি টিকার সাধারণ প্রতিক্রিয়া হলো বাহুতে ব্যথা। এছাড়া, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিশেষ করে দ্বিতীয় ডোজের পর ক্লান্তি, ঠান্ডা লাগা, শরীর ব্যথা বা মাথা ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা গেছে।’
কক্স বলছেন, ‘ফাইজারের চেয়ে মডার্নার টিকায় দেহে ফোলাভাবসহ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মাত্রা খানিকটা বেশি। এর কারণ হতে পারে দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত বাড়িয়ে তোলার জন্য মডার্না তাদের টিকার প্রতিটি ডোজে বেশি পরিমাণে এমআরএনএ যোগ করেছে।’
অন্যদিকে নাগির মত হলো, ‘টিকার ক্ষেত্রে এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অস্বাভাবিক নয়। বাস্তবতা হলো- টিকা আপনার শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে নতুন ধরনের শক্তি দেয়, আর সেটাই সবার কাম্য।’
দুটি টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালেই গ্রহিতার মধ্যে অস্থায়ী দুর্বলতা বা মুখের পেশী বিবশ হওয়ার মতো বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এগুলো খানিকটা উদ্বেগের জন্মও দিয়েছে। তবে কক্স বলেছেন, এখনও দুটি টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা বিচারে এই ঘটনাগুলো বিরল।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ফাইজারের টিকা উন্মুক্ত হওয়ার পর এর গ্রহিতা কিছু স্বাস্থ্যসেবা কর্মী আরও তীব্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছেন, যেগুলো ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সময়ে দেখা যায়নি। আলাস্কার তিন জনের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে দুজন অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছে।
মডার্নার টিকা গ্রহণকারীরাও একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হবেন কিনা- সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। গত ১৭ ডিসেম্বর এফডিএ-এর শুনানিতে মডার্নার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাল জ্যাকস বলেছিলেন, দুটি টিকার ন্যানো পার্টিকেল আলাদা, এটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে ব্যবধান তৈরি করতে পারে। আর সত্যিই সেটি হলে মডার্নার টিকা ফাইজারের টিকার মতো অ্যালার্জির জটিলতা তৈরি নাও করতে পারে। তবে কিছু বিশেষজ্ঞের সন্দেহ, অ্যালার্জির কারণ হলো পলিথিলিন গ্লাইকল নামের ন্যানো পার্টিকেল, যা দুটি টিকাতেই রয়েছে।
মডার্নার টিকা সংরক্ষণে খুব বেশি ঠান্ডার প্রয়োজন নেই, তাই বিতরণ সহজ
দুটি টিকার একটি বড় পার্থক্য রয়েছে সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায়। ফাইজারের টিকা অবশ্যই অতি শীতল ফ্রিজারে রাখতে হবে, যেখানে তাপমাত্রা হবে অন্তত মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে মডার্নার স্ট্যান্ডার্ড ফ্রিজারের তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া মডার্নার টিকা একটি ফ্রিজে এক মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা সম্ভব। ফলে এই টিকা বিতরণ ফাইজারের চেয়ে অনেক সুবিধাজনক।
নাগি বলছেন, ‘এ ধরনের সুবিধা আমাদের সবার জন্য বেশ সুবিধাজনক।’
কিছু কিছু হাসপাতাল দীর্ঘ সময়ের জন্য অতি শীতল পরিবেশে ফাইজারের টিকা সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে। তবে যাদের সে সুবিধা নেই, সেই ক্লিনিকগুলো মডার্নার শটের দিকে ঝুঁকতে পারে। অন্যদিকে ভবিষ্যতে সম্ভবত অন্য আরও সংস্থা- যেমন অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকাও আসবে, যেগুলো আরও বেশি দিন ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যাবে।
আরও পড়ুন:দেশে আরও ২৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টার এই হিসাব দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
এতে জানানো হয়, নতুন করে ১৪ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৯৪৫ জনে।
তবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি। এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৯৪ জনের।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। একই সময় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৯ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৭ হাজার ৩৭৪ জনে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন তীব্র দাবদাহের কারণে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সারা দেশের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
রোববার সচিবালয়ে সারাদেশের হাসপাতালের পরিচালক এবং সিভিল সার্জনদের সঙ্গে অনলাইনে আয়োজিত এক সভা থেকে তিনি এই নির্দেশনা দেন। সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এই নির্দেশনার কথা জানান। খবর বাসসের
তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গরম চরম আকার ধারণ করেছে। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারা দেশের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা এবং একই সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে জরুরি রোগী ছাড়া ভর্তি না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
বয়স্ক ও শিশুরা যেন প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে না যায়, সে বিষয়েও পরামর্শ দেয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই গরমে সবচেয়ে বেশি ভালনারেবল বয়স্ক এবং বাচ্চারা। এবার এমন একটা জলবায়ু পরিবর্তন হলো যে আমরা জীবনে কখনো শুনিনি যে দুবাই বিমানবন্দর পানিতে ডুবে গেছে। যাহোক এটা প্রকৃতির নিয়ম। আমাদের এগুলোফেস করতে হবে।’
তীব্র দাবদাহে বাচ্চাদের ঝুঁকি এড়াতে পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে যখন মেসেজ আসলো (হিট অ্যালার্ট), আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সান্নিধ্যে গিয়ে স্কুলটা বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কারণ, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে বাচ্চা এবং বয়স্করা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওরাল স্যালাইনের কোথাও কোনো ঘাটতি হলে যেন আমাকে সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয়। এখন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। প্রকৃতির ওপর তো আমাদের কারও হাত নেই। এটা আমাদের রেডি রাখতে হবে।
শিশুদের জন্য হাসপাতালগুলোতে পর্যপ্ত ব্যবস্থা আছে কি না- জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি শনিবার শিশু হাসপাতালে গিয়েছিলাম। শিশু হাসপাতালগুলোকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখার জন্যই সারাদেশের হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দিয়েছি। কোল্ডকেসগুলোকে এখন হাসপাতালে ভর্তি না করতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাচ্চাদের ব্যাপারে আজকে থেকে একটা অনলাইন ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করছি সারা দেশের চিকিৎসকদের নিয়ে।
সভায় জানানো হয়, মহাখালীতে করোনা চিকিৎসার জন্য ডিএনসিসি হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের জন্য আলাদাভাবে বেড রাখতে বলা হয়েছে।
এ সময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রোববার ও সোমবার দুই ঘণ্টা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখা। বলা হয়েছে, এই দুদিন চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসও করবেন না।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহণে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। সূত্র: ইউএনবি
বিএমএ চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, স্বাধীনতা প্রকাশ পরিষদ, চট্টগ্রাম প্রকাশ সমিতিসহ ৯টি সংগঠন অংশ নেয়।
বিএমএ নেতারা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চিকিৎসকরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। বিচার না হওয়ায় চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনা বাড়ছে। চিকিৎসকরা তাদের কর্মস্থলে খুবই অনিরাপদ।
চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনারও দাবি জানান তারা।
মুজিবুল হক বলেন, ‘হামলার বিচার পাওয়ার জন্য আমরা পাঁচদিন অপেক্ষা করেছি। কিন্তু কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।’
প্রসঙ্গত, ১০ এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত এক রোগীর চিকিৎসা দিতে দেরি হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের হামলায় গুরুতর আহত হন চট্টগ্রামের পটিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রক্তিম দাস।
পরে ১৪ এপ্রিল ভুল চিকিৎসায় এক বছরের শিশুর মৃত্যুর অভিযোগে রোগীর স্বজনদের হামলায় রিয়াজ উদ্দিন শিবলু নামে আরেক চিকিৎসক আহত হন।
আরও পড়ুন:স্বাস্থ্যসেবায় চিকিৎসকদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেছেন, ‘কোনো চিকিৎসকের ওপর হামলা যেমন মেনে নেব না, তেমনই চিকিৎসায় কোন ধরনের অবহেলা হলে সেটাও মেনে নিতে পারব না।’
বুধবার বিকেলে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন শেষে চিকিৎসদের নিয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) চট্টগ্রামের পটিয়ায় চিকিৎসদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে চিকিৎসা কাজে চিকিৎসকদের আরও বেশি মনোযোগী ও আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকদের যেমন সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্ব আমার, রোগীদের সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্বও আমার। কোনো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পেশাগত দায়িত্ব পালনে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের তুলনায় এগিয়ে আছে। বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা নিয়ে সম্প্রতি ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ভূয়সী প্রশংসা করেন। ভুটান রাজার আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকার ভুটানে বার্ন হাসপাতাল করার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত করোনার টিকা নেয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে চর্ম রোগ দেখা দেয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে কোনো ড্রাগেই এলার্জি প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। তবে এ বিষয়টি আমি এখনও শুনিনি।’
এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনার প্রধান মুখপাত্র প্রফেসর ফলস-এর গবেষণায় এখনও এমন কোনো তথ্য উঠে আসেনি। তবে এমনও হতে পারে যে করোনার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো এখন দেখা দিচ্ছে।’
এর আগে চান্দিনার মাধাইয়া ইউনিয়নের সোনাপুর কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব কমল কুমার ঘোষ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সারওয়ার হোসেন, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান, জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার, চান্দিনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন বক্সী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাবের মো. সোয়াইব, পৌর মেয়র শওকত হোসেন ভূইয়া, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন:পাবনায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় দুই প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক তদন্ত করে হাসপাতালটি সিলগালা করে দিয়েছেন সিভিল সার্জন। একইসঙ্গে অভিযোগ তদন্তে ডেপুটি সিভিল সার্জনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গা-ঢাকা দিয়েছে।
সোমবার ঘটনাটি জানাজানি হলে জেলা সিভিল সার্জন সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির প্রাথমিক তদন্ত করে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেন।
পাবনা সদর পৌর এলাকার শালগাড়িয়া হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত বেসরকারি আইডিয়াল হাসপাতালে রোববার (১৪ এপ্রিল) রাত ৩টার দিকে পৃথক চিকিৎসক দ্বারা সিজারিয়ান অপারেশনের সময় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। এর আগে দুপুরে রোগীদের সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য হাসপাতালটিতে ভর্তি করা হয়।
অভিযোগে জানা যায়, কুষ্টিয়ার শিলাইদহ এলাকার মাহবুব বিশ্বাসের স্ত্রী ইনসানা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে রোববার দুপুরে তাকে পাবনা আইডিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় জাহিদা জহুরা লীজা নামক এক চিকিৎসক অপারেশন করতে গেলে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়।
অপর ঘটনায় একই সময়ে পাবনার আটঘরিয়ার স্বপ্না খাতুন নামক এক রোগী কাজী নাহিদা আক্তার লিপির কাছে সিজারিয়ান অপারেশন করতে আসেন। ভুল চিকিৎসায় তারও মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে কর্তৃপক্ষ রাতেই রোগীসহ স্বজনদের হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। পরে রোগী মারা যাওয়ার ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়লে তা ধামাচাপা দিতে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মরদেহসহ স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
এ ঘটনায় সঠিক তদন্ত শেষে হাসপাতাল-সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন। সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করার সময়ে যেসব উপকরণ ও মেডিসিন ব্যবহার হয়েছে সেগুলোর নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লা দেওয়ান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন বা ওষুধ সেবনের ফলে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় চিকিৎসকসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যারা জড়িত রয়েছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেসরকারি ক্লিনিকটি যেহেতু স্বাস্থ্য বিভাগের রেজিস্ট্রেশনভুক্ত, তাই নিয়ম মেনে সব কার্যক্রম চলছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’
পাবনা সদর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, ‘ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখনও কোনো পরিবার থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’
আরও পড়ুন:দেশে প্রথমবারের মতো ক্যাডাভেরিক কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট (ব্রেন ডেথ রোগীর অঙ্গ প্রতিস্থাপন) করা হয়। গত বছরের জানুয়ারি মাসে সারাহ ইসলাম নামে একজনের অঙ্গদানের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্য সেবা খাতে এমন রেকর্ড সৃষ্টি হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শামীমা আক্তার ও হাসিনা নামে দুই রোগীর শরীরে ওই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে সে সময় নিউজবাংলায় প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়।
সারাহ ইসলামের কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগীদের একজন শামীমা আক্তার মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বিএসএমএমইউ’র আইসিইউতে মারা গেছেন। কিডনি গ্রহীতা অপরজন হাসিনা হাসিনা এর আগে গত বছরের অক্টোবরে মারা যান। এর ফলে সারাহর কিডনি পাওয়া দুই নারীরই মৃত্যু হলো।
বিএসএমএমইউ’র ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল মঙ্গলবার রাতে শামীমা আক্তারের মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘কিডনি গ্রহীতা প্রথম জন (হাসিনা) ফুসফুসের সংক্রমণে মারা গিয়েছিলেন। অপরজন শামীমাও চলে গেলেন। এটি খুবই কষ্টের। শামীমা শেষ ছয় মাস আমাদের আওতার বাইরে ছিলেন।’
তিনি বলেন, সম্প্রতি শামীমার ভাই জানায় যে শামীমার ক্রিয়েটিনিন বেড়ে গেছে, একেবারে শুকিয়ে গেছে। তিন সপ্তাহ আগে আবারও তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। শুরুর দিকে কিছুটা উন্নতি হলেও শামীমার শুকিয়ে যাওয়ার কারণটা ধরতে পারছিলেন না চিকিৎসকরা।
‘ক্রিয়েটিনিন পুনরায় বাড়ায় ওয়ার্ড থেকে তাকে কেবিনে আনা হয়। তারপরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চার দিন আগে আইসিইউতে নেয়া হয়।’
ডা. হাবিবুর রহমান জানান, শামীমার শরীরে হেপাটাইটিস-সি ধরা পড়ে। কারও হেপাটাইটিস-সি পজিটিভ হলে রক্ত কাজ করে না। এজন্য বিশেষ রক্ত লাগে। সেটি দেয়ার পরও কিন্তু শেষ মুহূর্তে রেসপন্স করেনি। আর বাড়িতে থাকার সময় অবস্থা খারাপ হলেও সময়মতো আমাদের জানানো হয়নি।’
আরও পড়ুন:জাতিসংঘের শিশু তহবিল থেকে দেশের শিশুদের শতভাগ ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা ও নিরাপদ মাতৃত্বসহ স্বাস্থ্যখাতের অন্যান্য দিক নিয়ে ইউনিসেফ দেশে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
সচিবালয়ে রোববার সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দপ্তরে ইউনিসেফের জাতিসংঘ শিশু তহবিলের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট এবং জাতিসংঘ শিশু তহবিলের হেলথ সেকশনের চিফ মায়া ভ্যানডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ইউনিসেফ করোনার সময় গোটা বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। এখন জাতিসংঘের শিশু তহবিল থেকে দেশের শিশুদের শতভাগ ভ্যাকসিন পাওয়া নিশ্চিত করা, নিরাপদ মাতৃত্বসহ স্বাস্থ্যখাতের অন্যান্য দিক নিয়েও জাতিসংঘের এই বিশেষ সংস্থাটি দেশে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপদ মাতৃত্ব, ভ্যাকসিন কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করা, দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনে সহায়তা করা, তৃণমূল পর্যায়ে শিশুদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অবকাঠামো নির্মাণ করাসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজেও ইউনিসেফ ভূমিকা রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
‘এগুলোর সঙ্গে, শিশুদের জন্য তৃণপর্যায়ে স্বাস্থ্য অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ইউনিসেফ প্রতিনিধিদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানালে তারা সেটিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন।’
বৈঠকে জাতিসংঘের শিশু তহবিলের প্রতিনিধি দল করোনাকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানারকম ফলপ্রসূ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। দেশের স্বাস্থ্যখাত আগের থেকে আরও উন্নত হচ্ছে বলেও জানান তারা। টিকাদানে বাংলাদেশকে বিশ্বের একটি উদাহরণ হিসেবেও উল্লেখ করেন প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য