কোনো রোগের টিকা উদ্ভাবন দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়া। সাধারণ পরিস্থিতিতে কোনো টিকা অনুমোদন, বাজারে ছাড়া ও বিতরণের স্তরে আসতে লেগে যায় ১০ থেকে ১৫ বছর সময়।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ার শুরু থেকেই করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিলেন মহামারি বিশারদরা। অতি ছোঁয়াচে এই ভাইরাসে এরই মধ্যে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ১৩ লাখ মানুষের।
বিষয়টি পরিষ্কার যে, স্বাভাবিক সময়ে নেই বিশ্ব। এই রোগের প্রতিষেধক উদ্ভাবনেও উঠেপড়ে লেগেছে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। চলমান মহামারি এক বছর পার না হতেই মনে হচ্ছে, কার্যকরী টিকা খুব দূরে নেই।
নভেম্বরের প্রথমার্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ওষুধ কোম্পানির ঘোষণা করোনা প্রতিরোধ নিয়ে আশার সঞ্চার করেছে।
তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে ফাইজার জানায়, করোনা প্রতিরোধে তাদের উদ্ভাবিত টিকা ৯০ শতাংশ কার্যকর।
সপ্তাহের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের আরেক প্রতিষ্ঠান মডার্না জানায়, তাদের টিকা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া থেকে মানুষকে রক্ষায় প্রায় ৯৫ শতাংশ কার্যকর।
ফাইজার এরই মধ্যে তাদের টিকা নিয়ে চূড়ান্ত বিশ্লেষণ সম্পন্ন করেছে। তাতে দেখানো হয়, প্রতিষ্ঠানটির করোনা টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকর। ‘কয়েক দিনের’ মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের ফুড ও ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হবে বলেও প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলছেন, একটি টিকা উদ্ভাবন ও অনুমোদন কেবল একটি চ্যালেঞ্জের অর্ধেক। এরপর আসছে আরও কঠিন কাজ—টিকা বিতরণ ও জনসাধারণের দোড়গোড়ায় পৌঁছানো। আর এসব চ্যালেঞ্জ জানান দিচ্ছে, চলমান মহামারির লাগাম এখনই টানা যাচ্ছে না।
বেশ কয়েকজন শীর্ষ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ২০২১ সালের শীত পর্যন্ত মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব মানার বিষয়টি চালিয়ে যেতে হতে পারে।
টিকার বর্তমান অবস্থা
নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ৫৪টি করোনা টিকার পরীক্ষা চলছে মনুষ্য শরীরে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মাত্র দুটি টিকা অনুমোদন পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে।
ফাইজার: ৯ নভেম্বর আশাব্যঞ্জক এক ঘোষণা নিয়ে আসে ফাইজার। তারা জানায়, জার্মান প্রতিষ্ঠান বায়ো-এনটেকের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্ভাবিত টিকা আগে আক্রান্ত হয়নি এমন লোকজনকে ৯০ শতাংশের বেশি নিরাপদ রাখতে পারে।
টিকাটি ২১ দিনের ব্যবধানে নিতে হয় দুই ডোজ। প্রাথমিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ৯০ শতাংশ কার্যকারিতার খবর দেয়ার পর ১৮ নভেম্বর ট্রায়ালের চূড়ান্ত বিশ্লেষণের তথ্য জানায় ফাইজার।
কোম্পানিটির ঘোষণায় বলা হয়, টিকাটি হালকা ও গুরুতর পর্যায়ের সংক্রমণ রোধে ৯৫ শতাংশ কার্যকর। কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও তৈরি করে না।
এ বিষয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিস্তৃত প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে থাকা বয়স্কদের ক্ষেত্রেও টিকাটি ৯৪ শতাংশ কার্যকর। টিকা ব্যবহারের অনুমতি পেতে দ্রুতই এফডিএর অনুমতি চাওয়া হবে বলে ফাইজার থেকে জানানো হয়।
মডার্না: ১৬ নভেম্বর মডার্না এক ঘোষণায় জানায়, গবেষণায় দেখা গেছে তাদের টিকা করোনা রোধে ৯৪.৫ শতাংশ কার্যকর। চার সপ্তাহের ব্যবধানে দুই ডোজ নিতে হয় এই টিকা। যদিও এটির ট্রায়াল এখনও শেষ হয়নি।
এই টিকার ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের করোনা মহামারি মোকাবিলাবিষয়ক টাস্কফোর্সের অন্যতম সদস্য অ্যান্থনি ফাউচি বলেন, ‘আমি আগে থেকেই বলছিলাম, ৭৫ শতাংশ কার্যকর কোনো টিকা পেলেই আমি সন্তুষ্ট থাকব।
‘উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা বললে, আপনারা হয়তো ৯০, ৯৫ শতাংশ কার্যকর টিকা দেখতে চাইবেন। তবে আমি এমনটা প্রত্যাশা করছি না।’
এ ছাড়া বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের করোনা টিকা পাইপলাইনে আছে। টিকা উদ্ভাবন প্রতিযোগিতায় ফাইজার ও মডার্নার খানিক পরই রয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন, সানোফি অ্যান্ড জিএসকে, নোভাভ্যাক্স ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার অবস্থান।
একাধিক টিকা পাওয়া যাবে?
বিশ্বজুড়ে করোনার যে বিস্তৃতি, তাতে একাধিক টিকার প্রয়োজনের প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বলছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বেথ ইসরায়েল ডেকোনেস মেডিক্যাল সেন্টারের ভাইরাস ও টিকা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. ড্যানিয়েল ব্যারোচ বলেন, ‘বিশ্বে ৭০০ কোটি মানুষ। তাই সফল হওয়ার জন্য আমাদের একাধিক টিকা প্রয়োজন। এটা কেবল টিকা উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আরেকটি টিকা উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতা নয়। এটা বৈশ্বিক ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা।
‘সকল টিকা উদ্ভাবকদের আমি বলব, আমরা চাই সবগুলো প্রকল্পই সফল হোক।’
মডার্না ও ফাইজারের সামনের বাধা
কার্যকারিতার প্রমাণ দিতে পারায় জরুরি ব্যবহারের জন্য প্রতিষ্ঠান দুটির টিকা এখন অবশ্যই অনুমোদন দেবে যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও মানবসেবাবিষয়ক মন্ত্রী অ্যালেক্স অ্যাজার সিএনবিসিকে জানান, উভয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে তার দফতর। অপ্রয়োজনীয় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা যাতে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সে ব্যবস্থাও নেয়া হবে।
এরপরও কিছু চ্যালেঞ্জ থেকে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কিছু অঙ্গরাজ্য আছে, যেখানে করোনার টিকার প্রতি তেমন আস্থাই নেই। টিকা সম্পর্কে সেসব এলাকায় আস্থা ফেরানোটা কঠিনই হবে বৈকি।
এ ছাড়া এফডিএ অনুমোদিত কোনো টিকার জন্য ভ্যাট না দেয়ার ব্যাপারে অনেক গভর্নর এরই মধ্যে জোট বেঁধেছেন বলে নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
টিকা নিয়ে ফেডারেল সরকার ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের জানাশোনার ব্যাপারটি এখনও যথাযথভাবে শেষ হয়নি। এসব কারণেও টিকা জনসাধারণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি হতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের স্বাস্থ্য ও জনসেবা বিভাগের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ পল ম্যাঙ্গো বলেন, ‘কোনো অঙ্গরাজ্য যদি বাধা আরোপ করে, তাহলে খুব ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকদের টিকা পেতেও দেরি হবে।’
প্রথমে টিকা পাবে কারা?
টিকার খবর আসার পর কাদের ওপর আগে প্রয়োগ করা হবে, এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বেশ কিছু সংস্থা। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তরও পাওয়া যায়নি।
তবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চারটি গ্রুপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)। এতে প্রথমেই রয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীরা। এরপরই রয়েছেন অতি প্রয়োজনীয় দায়িত্বে নিযুক্ত কর্মীরা। এরপর বৃদ্ধ ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতায় শয্যাশায়ীরা।
শিশুদের ক্ষেত্রে কী হবে?
প্রকৃতিগভাবে পর্যাপ্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকার কারণে শিশুদের ক্ষেত্রে টিকার সাড়াটা প্রাপ্তবয়স্কদের মতো পাওয়া যায় না। ফলে টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠাগুলোও ট্রায়ালে শিশুদের রাখেনি।
অবশ্য অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই বলছে, শিশুদের জন্যও টিকা উদ্ভাবনের ইচ্ছা আছে তাদের। তাই ২০২১ সালের শেষ নাগাদ শিশুদের জন্য করোনার টিকা পাওয়া যাবে কি না, তা এখনও বলা যাচ্ছে না।
ব্যাপকভাবে টিকা বিতরণ কবে
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সালের জুনের মধ্যেই করোনার টিকা পেয়ে যেতে পারে প্রত্যেক আমেরিকান।
তবে বিতরণ প্রক্রিয়াটা সহজ হবে না। বিশেষ ক্ষেত্রে ফাইজারের টিকা বিতরণ বেশি কঠিন হবে।
ফাইজার ও মডার্না ‘এমআরএনএ’ জেনেটিক কোড ব্যবহার করলেও প্রথম কোম্পানিটির টিকা সংরক্ষণ প্রক্রিয়াটা জটিল।
টিকাটি মাইনাস ৯৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার বিশেষায়িত ডিপ ফ্রিজ স্যুটকেসে বহন করতে হবে ফাইজারের টিকা। স্যুটকেস দিনে খোলা যাবে দুবার। তবে কোনোবারই ১৮০ সেকেন্ডের বেশি খোলা অবস্থায় রাখা যাবে না।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় ওষুধ সামগ্রী সরবরাহ প্রতিষ্ঠান প্রিমিয়ারের পরিচালক সুমি সাহা সিবিসিকে বলেন, ‘বাস্তবতা হলো কোনো ওষুধ সংরক্ষণে এমন তাপমাত্রার প্রয়োজন পড়েনি।’
তার মতে, গ্রামাঞ্চলের যেসব হাসপাতাল টিকা সংগ্রহ ও সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করতে সক্ষম নয়, সেসব এলাকার লাখ লাখ মানুষের কাছে টিকা পৌঁছানোটা ‘যৌক্তিকভাবেই দুঃস্বপ্ন’।
মডার্নার টিকাটিও হিমায়িত জাহাজে বহন করতে হবে। তবে বিষয়টি ফাইজারের টিকার মতো দুরূহ হবে না। তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৪৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রাতেই মডার্নার টিকা বহন করা যাবে।
টিকার দাম কেমন হবে?
বিষয়টি নিয়ে এখনও স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে করোনাভাইরাস সংকট নিয়ন্ত্রণে ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নেয়া ‘অপারেশন র্যাপ স্পিড’-এ বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে টিকা কেনার পর তা প্রত্যেক নাগরিকের জন্য বিনা মূল্যে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
আরও পড়ুন:ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার প্রমাণ কানাডার হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এ ঘটনায় ভারতীয় এজেন্টরাই জড়িত বলে ফের মন্তব্য করে তিনি জানিয়েছেন, তবে নিজ্জর হত্যার প্রমাণ কানাডা ফাঁস করবে না।
বিবিসি জানায়, গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ট্রুডো ভারতের বিরুদ্ধে তার অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, কানাডার মাটিতে কানাডীয় নাগরিক শিখ নেতা নিজ্জর হত্যায় ভারতীয় সরকারের এজেন্টদের জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
বিবিসি জানায়, গত ১৮ জুন কানাডায় খলিস্তানপন্থি আন্দোলনকারী শিখ নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জর খুন হন। তিনি ছিলেন খলিস্তানপন্থি সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ বা কেটিএফের প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান। দুই অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ী ৪৬ বছরের নিজ্জরকে গুলি করে খুন করেন। শুরু থেকেই কানাডা সরকারের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘হাত’ রয়েছে। গত সোমবার পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে প্রথম ভারতের এজেন্টদের জড়িত থাকার ব্যাপারে সরাসরি অভিযোগ তোলেন ট্রু়ডো। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ট্রুডো সরকার। এদিকে, ভারত কানাডার এ অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘কানাডা যে অভিযোগ করেছে, কিন্তু আমাদের মনে হয়েছে, এ অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা মনে করি, তাদের অভিযোগ পক্ষপাতপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘অভিযোগ করার আগে বা পরে কানাডা কোনো তথ্যপ্রমাণ ভারতকে দেয়নি। আমরা বলেছি, কোনো নির্দিষ্ট তথ্য পেলে দেখব। এখনো কিছু পাইনি। আমাদের তরফ থেকে কানাডাকে কিছু ব্যক্তির ভারতবিরোধী কাজের নির্দিষ্ট তথ্য দিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘আমরা আমাদের বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে এ বিষয়সহ নানা বিষয়ে কথা বলেছি এবং বলছি। আমরা আমাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছি।'
শিখ নেতা নিজ্জর হত্যাকাণ্ড ঘিরে কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। কানাডা খালিস্তানপন্থি আন্দোলনকারীদের সমর্থন করে তাদের আশ্রয় দেয় বলে অভিযোগ ভারতের। ভারত গত বুধবার বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং দুষ্কৃতি নেটওয়ার্কে জড়িত ৪৩ জনের তালিকা কানাডা সরকারকে পাঠিয়েছে। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, ভারতে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা অনেকেই কানাডায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, কানাডায় বহু ভারতীয় বাস করেন। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ। তার মধ্যে অন্তত ১৪ লাখ ভারতীয় আছেন। উচ্চশিক্ষা কিংবা চাকরির সূত্রে ভারত থেকে তারা কানাডায় গেছেন। কানাডায় প্রবাসী ভারতীয়ের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৩.৭ শতাংশ। কানাডায় প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে অনেকেই শিখ ধর্মাবলম্বী। সেখানে ৭ লাখ ৭০ হাজার শিখ রয়েছেন, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ। ভারতে শিখদের অনুপাত কানাডার চেয়ে কম। ভারতের মোট জনসংখ্যার বিচারে শিখদের সংখ্যা মাত্র ১.৭ শতাংশ। কানাডায় জাস্টিন ট্রুডোর সরকার গঠনে শিখদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শিখরা কানাডার রাজনীতিতেও যথেষ্ট সক্রিয়। কানাডার হাউস অব কমন্সে ১৮ জন শিখ সাংসদ রয়েছেন। শতাংশের বিচারে যা ভারতের চেয়েও বেশি। তাই ট্রুডো বা কানাডার কোনো রাজনৈতিক দলই শিখদের চটাতে চান না।
আরও পড়ুন:বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবে বিদ্ধস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত সিরিয়ার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সার্বিক সহযোগিতার ব্যাপারে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে চীন। এ কর্মকাণ্ডে ইরান ও সৌদি আরবের সঙ্গে চীন একটি কৌশলগত অংশীদারত্বে যেতে চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং।
শুক্রবার পূর্ব চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের রাজধানী হ্যাংঝুতে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে করা বৈঠকে একথা জানান চিনপিং।
মি. আসাদকে চিনপিং বলেন, ‘সিরিয়ায় চলমান অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল করতে দেশটির জনগণের পাশে থাকতে চায় বন্ধু চীন। এছাড়া ন্যায়বিচার ও ন্যায্যতা পাওয়ায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের ব্যাপারেও চীন সিরিয়াকে সহযোগিতা করবে।
‘চীন সিরিয়ায় বিদেশি হস্তক্ষেপ, একতরফা গুণ্ডামি ও সিরিয়া-বিরোধিতাকে সমর্থন করে না। সেইসঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটির পুনর্গঠনে যথাসম্ভব সহযোগিতা করা হবে।’
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ব কূটনীতি থেকে একপ্রকার ‘একঘরে’ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। তবে এই অচলাবস্থার অবসান এবং নিজ দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়িয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় বর্তমানে এক সফরে চীনে রয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
বৈঠকে বৈশ্বিক নিরাপত্তা উন্নয়ন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে প্রাচীন সিল্ক রোড-সংলগ্ন অবকাঠামোগত অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমর্থন জানিয়েছে চীন। এ ছাড়া অন্যান্য আরব দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতেই চীন সিরিয়াকে সহযোগিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চিনপিং বলেন, “চীন আঞ্চলিক ও বিশ্বশান্তি স্থাপন প্রচেষ্টার পাশাপাশি বৈশ্বিক উন্নয়নেও ইতিবাচক অবদান রাখতে চায়। এ কারণে আমরা ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের’ মাধ্যমে সিরিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক।”
তবে কূটনীতিকদের সন্দেহ, সিরিয়ার দুর্বল নিরাপত্তা ও ভয়াবহ আর্থিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দেশটিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে লাভবান হতে চায় চীন। এ কারণেই সিরিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে নজর দিয়েছে দেশটি।
২০১১ সালে বাশার আল আসাদের ক্ষমতায় থাকাকালে একটি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে জড়ায় সিরিয়া। ওই ঘটনায় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়াও লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে অন্য দেশে শরণার্থী হিসেবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ঘটনাটির পর সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো। তবে রাশিয়া ও ইরানের প্রত্যক্ষ মদদে এখনও টিকে রয়েছে আসাদ সরকার।
২০২০ সালে পশ্চিমারা সিরিয়ায় সহযোগিতা বন্ধ রাখতে একটি আইন জারি করে। সিজার আইন নামের ওই আইনটিতে বলা হয়, দেশটিতে কোনো ধরনের বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের সকল সম্পদ জব্দ করা হবে।
ফলে সিরিয়াকে চীনের এ ধরনের সমর্থন বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন:রাশিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে অনিশ্চয়তার মধ্যেই কৃষ্ণ সাগর হয়ে মিশরের পথে যাত্রা করল গমবাহী একটি বড় জাহাজ।
১৭ হাজার ৬০০ টন গম নিয়ে এই জাহাজটি মিশরের উদ্দেশে ওডেসার চোরনোমর্স্কে বন্দর ছেড়েছে বলে ইউক্রেনের উপ প্রধানমন্ত্রী অলেক্সান্ডার কুব্রাকভ শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে জানিয়েছেন।
রয়টার্স বলছে, সম্প্রতি নতুন রুট দিয়ে কয়েকটি কার্গো জাহাজ ইউক্রেনে পৌঁছায়। এরপর ইউক্রেনের বন্দর থেকে খাদ্যশস্য বহন করে রওনা হতে শুরু করে এই জাহাজগুলো। চলতি সপ্তাহে এর আগে আরও একটি জাহাজ ৩ হাজার গম নিয়ে ইউক্রেনের বন্দর ছেড়েছে।
যুদ্ধের প্রতিদ্বন্দ্বি রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের চুক্তির চেষ্টা ব্যর্থ ও রাশিয়ার পক্ষ থেকে নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে কোনো নিশ্চয়তা না পাওয়ার মধ্যেই কিছুদিন আগে অস্থায়ী মানবিক করিডোর গড়ে তোলে ইউক্রেন।
এরপর প্রথম বারের মতো কোনো বেসামরিক জাহাজ ইউক্রেনে পৌঁছায়। নতুন যে রুটে খাদ্যশস্য বহন করা হচ্ছে, এ রুট দিয়ে এর আগে শুধু ইউক্রেনের জাহাজই যাতায়াত করেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ইউক্রেনের উপ প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি আসা দুই জাহাজ নিয়ে জানান, আফ্রিকা এবং আরোয়াট মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ পালাউয়ের পতাকা উড়িয়ে যাত্রা করেছে এসব জাহাজ। এতে ইউক্রেন, তুরস্ক, আজারবাইজান এবং মিশরের জনবল রয়েছেন।
ইউক্রেনীয় বন্দরগুলো থেকে শস্য রপ্তানির সুবিধা দেয়- এমন একটি জাতিসংঘ-সমর্থিত চুক্তি রাশিয়া ত্যাগ করার পর ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা সামুদ্রিক করিডোর ঘোষণা করে নতুন এই রুটের কথা জানান।
অবশ্য মস্কো বলছে, যে চুক্তির আওতায় খাদ্য ও সার রপ্তানির হওয়ার কথা তা মানা হয়নি। বরং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো বিষয়টিকে সীমাবদ্ধ করছে।
এর পর পর থেকে রাশিয়া ইউক্রেনে আসা বেসামরিক জাহাজগুলোকে সম্ভাব্য সামরিক লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করার হুমকি দিয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ওডেসায় অবস্থান করা জাহাজে হামলা চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাজ্য।
ইউক্রেন সূর্যমুখী তেল, বার্লি, ভুট্টা এবং গমের মতো ফসলের বিশ্বের বৃহত্তম সরবরাহকারী। এ দেশ থেকে এসব খাদ্যপণ্য রপ্তানির পথ বন্ধ হওয়ার প্রভাব পড়েছে বিশ্বজুড়েই।
বেশ কিছুদিন ধরে সীমান্তে অবস্থান নেয়ার পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা করে রাশিয়া। ওই সময় রাশিয়ার নৌবাহিনী কৃষ্ণ সাগর বন্দরগুলো অবরোধ করলে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত ২০ মিলিয়ন টন শস্য আটকে যায়।
এতে বিশ্বে খাদ্যের দাম বেড়ে যায় এবং মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকান দেশগুলোতে ঘাটতি দেখা দেয়। এসব দেশ ছাড়া অনেক দেশই এ নিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের নামে মামলা করেছেন জনপ্রিয় টেলিভিশন সিরিজ ‘গেম অফ থ্রোনস’ (গট) লেখক জর্জ আরআর মার্টিন ও লেখক জন গ্রিশাম।
বিবিসির শুক্রবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই লেখকের দাবি, সিস্টেমকে প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে চ্যাটজিপিটি লেখকদের মেধাস্বত্ব লঙ্ঘন করেছে।
মার্টিন তার ফ্যান্টাসি উপন্যাস সিরিজ ‘আ সং অফ আইস অ্যান্ড ফায়ার’ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। পরবর্তী সময়ে এ উপন্যাস অবলম্বনে ২০১১ সালে এইচবিওতে নির্মাণ হয় গেম অব থ্রোনস শো, যা বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করে।
চ্যাটজিপিটি ও অন্যান্য লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলগুলো (এলএলএম) অনলাইনে ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিজেদের প্রশিক্ষণ দেয়।
মামলায় দাবি করা হয়, চ্যাটজিপিটিকে আরও স্মার্ট করে তুলতে লেখকদের অনুমতি ছাড়াই তাদের বই ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে ওপেনএআই কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা লেখকের মেধাস্বত্বের প্রতি সম্মান জানায় ও বিশ্বাস করে যে, এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তারাও উপকৃত হবেন।
মামলায় পক্ষভুক্ত হয়েছেন জোনাথন ফ্রানজেন, জোডি পিকো ও জর্জ সন্ডাজের মতো লেখকরাও।
লেখকদের হয়ে কাজ করা ট্রেড গ্রুপ ‘অথরস গিল্ড’ নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন ফেডারেল আদালতে মামলা করে।
ওপেনএআইয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বিশ্বের অনেক নির্মাতার সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা করছি। আমরা এআই নিয়ে তাদের উদ্বেগের কারণগুলো বুঝতে এক হয়ে কাজ করছি।’
মামলার বিবরণে পুরো গণমাধ্যম শিল্পে এআই নিয়ে উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, ‘এ ধরনের প্রযুক্তি মানুষের লেখা কনটেন্টের জায়গা করে নিচ্ছে।’
মামলায় ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে ‘বড় ধরনের পরিকল্পিত চুরির’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন:ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পানিপথে তিন নারীকে তাদের পরিবারের সদস্যদের সামনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টুডের শুক্রবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তদের কাছে ছুরি ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্র ছিল।
পুলিশ জানায়, ওই রাতে চার পুরুষ এক বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের বেঁধে তিন নারীকে তাদের সামনেই ধর্ষণ করেন। অভিযুক্তরা টাকা, গয়নাও নিয়ে যান।
ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একই রাতে এক দম্পতির বাড়িতে ঢুকে স্বামী-স্ত্রীর ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় স্ত্রীর মৃত্যু হয়। তারা ওই বাসা থেকে কিছু টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যান।
আলাদা এ দুটি ঘটনায় একই ব্যক্তিদের জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ করছে পুলিশ।
পানিপথের মাতলাউদা থানার স্টেশন হাউস অফিসার বিজয় বলেন, ‘দুটি ঘটনাই একই গ্রামে ঘটেছে। তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।’
আরও পড়ুন:জাম্বিয়ায় প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাচীন একটি কাঠের শিল্পকর্ম আবিষ্কার করেছেন যা প্রায় অর্ধ মিলিয়ন (পাঁচ লাখ) বছর পুরানো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, জাম্বিয়ার একটি নদীর তীরে পাওয়া ওই শিল্পকর্মটি সাধারণ কাঠামোর কাঠের ওপর তৈরি। দুটি কাঠের লগ দিয়ে জোড়া লাগানো ক্যানভাসে ফুটে উঠেছে শিল্পীর হাতের কাজ।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের অ্যাবেরিস্টউইথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পৃথিবী বিজ্ঞানের অধ্যাপক জিওফ ডুলার বলেন, ‘আধা মিলিয়ন বছর ধরে শিল্পকর্মটি যে স্থানে ছিল সেখানেই রয়ে গেছে। সবচেয়ে অসাধারণ বিষয় এই যে, সেটি এখনও অক্ষত রয়েছে।’
২০১৯ সালে যে দলটি এ শিল্পকর্ম আবিষ্কার করে তার সদস্য ছিলেন অধ্যাপক জিওফ ডুলার।
প্রস্তর যুগের মানুষ যে যাযাবর ছিলেন, সে ধারণাটিকে নতুন আবিষ্কৃত এ শিল্পকর্মটি চ্যালেঞ্জ করছে বলে জানান ডুলার।
এর আগে পাওয়া সবচেয়ে প্রাচীন কাঠের শিল্প নিদর্শনটি (চরা এবং শিকারের জন্য কাঠের সরঞ্জাম) প্রায় ৪,০০,০০০ বছর আগের বলে দাবি গবেষকদের। আর সবচেয়ে পুরানো কাঠের শিল্পকর্ম হিসেবে পরিচিত যে শিল্পকর্মটি (পালিশ করা তক্তার পুরানো টুকরো ), তা প্রায় ৭,৮০,০০০ বছর পুরনো বলে দাবি গবেষকদের।
আরও পড়ুন:পোশাক বিধি অমান্যে সর্বোচ্চ ১০ বছর সাজার বিধান রেখে একটি বিল পাস করেছ ইরানের পার্লামেন্ট।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, বুধবার পাস হওয়া বিলটিকে আইনে পরিণত করতে অনুমোদন দরকার ইরানের ‘গার্ডিয়ান কাউন্সিলের’।
ইরানের পার্লামেন্ট সদস্যরা ‘হিজাব ও সতীত্ব বিল’ নামের বিলটির পক্ষে ভোট দেন।
প্রস্তাবিত আইনটিতে বলা হয়, জনসমক্ষে ‘অনুপযুক্ত’ পোশাক পরা নারীকে দেশের আইন অনুযায়ী ‘চতুর্থ মাত্রার’ শাস্তি দেয়া হবে।
বিলে নির্দিষ্ট বিধান অমান্যকারী নারীদের পাঁচ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১৮ কোটি থেকে ৩৬ কোটি রিয়াল জরিমানা করা হবে।
বিলটি এখন ‘গার্ডিয়ান কাউন্সিলের’ অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। এ কাউন্সিল আলেম ও আইনবিদদের নিয়ে গঠিত।
বিলটিকে সংবিধান ও শরিয়াহর সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ মনে করলে এতে ভেটো দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে কাউন্সিলের।
২০২২ সালে হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনার এক বছর পর পোশাক বিল পাস করা হয়। মাহসাকে ‘অনুপযুক্ত’ হিজারের জন্য আটক করেছিল পুলিশ।
মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানের নারীরা তাদের মাথার স্কার্ফ পুড়িয়েছে যা দেশব্যাপী বিক্ষোভর সৃষ্টি করেছে। ওই সময় নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর ব্যবস্থায় কয়েক শ মানুষ প্রাণ হারান।
ইরানের আইন অনুযায়ী দেশটির শরিয়ার ব্যাখ্যার ওপর ভিত্তি করে, বয়ঃসন্ধির ঊর্ধ্বে সব মেয়ে ও নারীদের অবশ্যই তাদের চুল হিজাব দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। একই সঙ্গে মুখ ও শরীর ঢাকতে তাদের ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে।
বর্তমানে যারা দেশের পোশাক সংক্রান্ত আইন মানছেন না, তাদের ১০ দিন থেকে দুই মাসের জেল বা ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হচ্ছে।
মন্তব্য