সুন্দর ত্বক আমাদের সবার কাম্য। মেকআপ আপনাকে তাৎক্ষণিকভাবে সুন্দর করে তুললেও চেহারার আসল স্নিগ্ধতা আসে ত্বকের ভেতর থেকেই। ত্বকের সুস্থতা ও লাবণ্য ধরে রাখতে নিয়মিত পরিচর্যার বিকল্প নেই।
করোনার এই সময়ে অনেকেই হয়তো বিউটি স্যালনে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। ভাবছেন কী করে ত্বকের যত্ন নেব। আসলে ঘরে থেকেই ত্বকের যথাযথ যত্ন নেয়া সম্ভব এবং অনেক কম খরচে।
আজকের এই লেখাটি তাদের জন্যই যারা ঘরে বসেই নিজের ত্বককে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতে চান।
এই তিনটি হলো ত্বক সুস্থ রাখার সবচেয়ে কার্যকর মৌলিক তিনটি ধাপ। এই তিনটির একটিও বাদ দেয়া যাবে না, যদি আপনি সুস্থ ও চকচকে ত্বক আশা করেন।
ত্বক সবসময় পরিষ্কার রাখা উচিত। আপনার ত্বকের ধরন বুঝে আপনি একটি ভালো ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে পারেন। এখন অনেক হ্যান্ড মেইড সাবান পাওয়া যায়, যেগুলো বাজারের অন্যান্য সাবানের মতো ত্বকের ক্ষতি করে না।
সাবান বা ফেসওয়াশ যেটাই ব্যবহার করবেন, অবশ্যই ত্বকের সঙ্গে মানানসই কি না, তা আগে খেয়াল করা প্রয়োজন।
ময়দা দিয়েও কিন্তু খুব সুন্দর করে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। পরিমাণমতো ময়দা ও পানি দিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগিয়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করে আলতো করে ম্যাসাজ করে মুখ ধুয়ে ফেললেও ক্লেনজিং হয়ে যাবে।
কাঁচা দুধ কটন বলে ভিজিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। কাচা দুধ খুব ভালো প্রাকৃতিক ক্লেনজার।
এই ধাপটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা অনেকেই এটা এড়িয়ে যাই। নিয়মিত টোনার ব্যবহারে ত্বকের সৌন্দর্য অনেকটাই বেড়ে যাবে। অতিরিক্ত তেল বা ব্রণের সমস্যায় টোনার বেশ কার্যকরী।
অনলাইনে কিংবা দোকানে নানা ধরনের টোনার কিনতে পাওয়া যায়। আপনার ত্বক অনুযায়ী টোনার ব্যবহার করলে ভাল ফল পাবেন।
আপনার কাছে যদি টোনার নাও থাকে তাহলেও চিন্তার কিছু নেই। আমাদের রান্নাঘরের কিছু কমন উপাদান দিয়েও টোনারের কাজ চালিয়ে নেয়া যাবে।
সমপরিমাণ আলুর রস ও পানি একসাথে মিশিয়ে টোনার হিসেবে লাগাতে পারেন। যাদের ত্বক অতিরিক্ত তেলতেলে তাদের জন্য শসার রস খুব ভাল একটি বিকল্প হতে পারে বাজারের কেনা টোনারের। ত্বকের উজ্জ্বলতায় গোলাপ জল খুব কার্যকরী একটি প্রাকৃতিক টোনার। আপেল সিডার ভিনেগার ও পানির মিশ্রণ ও একটি ভাল টোনার। এক ভাগ ভিনেগারের সাথে দুই ভাগ পানি মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন টোনিং করার জন্য।
টোনার ব্যবহারের নিয়ম মুখ পরিষ্কারের পর । পরিষ্কার ও শুকনো মুখে টোনার লাগাতে হয়। তুলার প্যাড অথবা ছোট কটন বলে একটু টোনার মিশিয়ে পুরো মুখ ও গলায় আলতো ভাবে মুছে নিতে হবে।
ত্বকের সুরক্ষায় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতেই হবে। অনেকের ভুল ধারণা থাকে যে ময়েশ্চারাইজার শুধু শুষ্ক ত্বকের জন্য কিংবা গরমে ময়েশ্চারাইজার লাগানোর প্রয়োজন নেই। আসলে, সব ঋতুতেই এবং শব ধরণের ত্বকের জন্যই ময়েশ্চারাইজার একটি কার্যকরী স্কিন কেয়ার আইটেম।
ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে, বয়সের ছাপ কমাতে, ব্রণের প্রকোপ রুখতে অথবা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচাতে ময়েশ্চারাইজার খুব উপকারী।
বাজারে ত্বকের ধরণ ভেদে নানা প্রকারের ময়েশ্চারাইজার রয়েছে। যার ত্বক তৈলাক্ত সে অয়েল ফ্রী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবে আবার যার শুষ্কতার সমস্যা রয়েছে সে অয়েল বেইজড ক্রিম লাগাবে।
সকালে ও রাতে দুইবার ময়েশ্চারাইজিং করাটা ভাল।
অলিভ অয়েল, নারিকেল তেল, এলোভেরা জেল কিংবা মধু হতে পারে কেনা ময়েশ্চারাইজারের বিকল্প। তবে অবশ্যই ত্বকের ধরণ বুঝে ময়েশ্চারাইজিং করতে হবে এবং ঘরোয়া উপাদানটি যেন খাঁটি হয় তাও লক্ষ্য রাখতে হবে। বাজারের সস্তা নারিকেল তেল দিয়ে ময়েশ্চারাইজিং করলে ভাল ফল আশা করা যাবেনা।
ত্বকের নিয়মিত পরিচর্যার পাশাপাশি কিছু বাড়তি যত্নও দরকার। সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার ফেস প্যাক ব্যবহারে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে আরও সুন্দর। নানারকম রেডি ফেস প্যাক বাজারে আছে। এ ছাড়াও আপনি চাইলে ঘরে বসেই বানিয়ে নিতে পারেন দারুণ কার্যকরী কিছু প্যাক।
পাকা কলা ও ই- ক্যাপসুলের ভিতরের তেল একসাথে ব্লেন্ড করে মসৃণ পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার এই প্যাকটি আপনার পুরো মুখে অ্যাপ্লাই করুন। ২০-৩০ মিনিট রেখে ভালো করে প্যাকটি ধুয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে এর সাথে চন্দন পাউডার বা গোলাপজলও মিক্স করতে পারেন। এতে ত্বক আরও সুন্দর হবে।
প্রথমে কলা ছিলে নিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে নিন। এবার এতে মধু ও অলিভ অয়েল মিক্স করুন। সবগুলো উপাদান ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে মুখে লাগিয়ে রাখুন প্রায় ১০-১৫ মিনিট। তারপর নরমাল পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন।
অলিভ অয়েল ও ডিমের কুসুম উচ্চমানের প্রোটিন ও ভিটামিন ই সমৃদ্ধ দুটি উপাদান। একটি পাত্রে অলিভ অয়েল ও একটি ডিমের কুসুম নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে নিন। শুষ্ক ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিটের পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুবার লাগাতে পারেন।
পাকা কলা ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে অন্যতম কার্যকরী উপাদান। টক দই ও কলা একসাথে পেস্ত করে মুখে লাগাতে পারেন। সাথে একটু মধু দেয়া যায় যদি আপনার ত্বকে মধু সহনশীল হয়।
মুলতানি মাটি ত্বকের পরিচর্যায় ব্যবহৃত একটা প্রাচীন উপাদান। এটা ত্বকের ময়লা এবং অতিরিক্ত তেল দূর করে। ব্রণের সমস্যা দূর করতে মুলতানি মাটি ব্যবহৃত হয়। মুলতানি মাটি ও পানি অথবা শসার রস মিসিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগাতে হবে। শুকিয়ে গেলে মুখ ভাল করে ধুয়ে ফেলবেন। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন এটি ব্যবহার করুন।
টক দইয়ের সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে মুখে লাগালে ত্বক পরিষ্কার হয় এবং ভাল ফল পাওয়া যায়। একটা ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে এক টেবিল চামচ দই মেশান। মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে শক্ত হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন এই প্যাক ব্যবহার করুন।
ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে স্ক্রাবিং খুব উপকারী। নিয়মিত স্ক্রাবিং করলে ত্বক অনেক মসৃণ ও কোমল হয়। ত্বকের উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি পায় এর ফলে।
ঘরে থাকা উপাদান দিয়েই স্ক্রাবিং করা যেতে পারে। এ ছাড়াও বাজারে অনেক ধরণের স্ক্রাব আছে।
চালের গুঁড়া খুব ভাল একটি স্ক্রাব। স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বক হলে চালের গুঁড়ার সাথে দুধ এবং মধু মিশিয়ে মুখে কিছুক্ষণ হালকা ভাবে ঘষে নিলেই হল। জাদের তক তেলতেলে তারা দুধের বদলে শসার রস কিংবা মাল্টার রস অথবা লেবুর রস ও পানির মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারে।
স্ক্রাবিং উপকারী কিন্তু প্রয়োজনের অধিক করলে ত্বকের ক্ষতি করে। তাছাড়া বেশি জোরে ম্যাসাজ করাও ঠিক না।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে কেউ মারা যায়নি। আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ দিন প্রতি ১০০ নমুনায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় মৃত্যু ২৯ হাজার ৫২১ জন। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। এছাড়া ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে মোট শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৫২ হাজার ১২৭ জন। এর মধ্যে গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৫৮২ জন।
এডিশ মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সারা দেশে মশা নিধন কার্যক্রমের দুর্বলতার কারণে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক মোড় নিয়েছে। চলতি বছরের মে মাসের তুলনায় জুন মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, বছরের শুরুর দিকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল। জানুয়ারিতে ১,১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪, মার্চে ৩৩৬ এবং এপ্রিলে ৭০১ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে মে মাস থেকে পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে এবং জুনে এসে তা ভয়াবহ রূপ নেয়। আশঙ্কার বিষয় হলো, ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে, বিশেষ করে বরগুনায়, ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেশি।
এদিকে চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ২৯৬ জনে পৌঁছেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৪২৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন শনাক্ত ৪২৯ জন ডেঙ্গুরোগীর মধ্যে— বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৪৯ জন; চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৭ জন; ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬১ জন; ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ৪২ জন; ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৪৫ জন; খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১ জন ও রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৪ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৫৮ জন রোগী। চলতি বছরে এ পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৮৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৫৯ দশমিক ১ শতাংশ এবং নারী ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৪২ জন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে একজন রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দা।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এডিস মশার বিস্তার এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে। বিশেষ করে রাজধানীর বাইরের এলাকাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার গণমাধ্যমকে বলেন, 'মে মাসের তুলনায় জুনে আক্রান্তের সংখ্যা তিনগুণ হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে জুলাইয়ে এ সংখ্যা চার থেকে পাঁচগুণ এবং আগস্টে দশগুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে।'
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ২৯৬ জনে। এর আগে ২০২৩ সালের পুরো বছরে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন। ২০২৪ সালের পুরো বছরের (১ জানুয়ারি–৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত) সর্বমোট হিসাব অনুযায়ী, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৭৫ জন।
করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের মধ্যে দেশে আরও ২১ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।
রবিবার (২৯ জুন) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব শনাক্ত হয়েছে। তবে, নতুন করে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি এই সময়ের মধ্যে।
সোমবার (৩০ জুন) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ২০ লাখ ৫২ হাজার ১১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২২ জন। আর দেশে ভাইরাসটিতে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫২১ জনের।
গত শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৮৩ জন রোগী। এসব রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩৬ জন আক্রান্ত বরিশাল বিভাগে। একইসঙ্গে এই সময়ে ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৩৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৫ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৮, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩২ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২৮, খুলনা বিভাগে ৪১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন এবং রাজশাহী বিভাগে ৩৩ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে গত এক দিনে সারাদেশে ৩৪৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮ হাজার ৭২৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৯ হাজার ৮৬৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের।
সারাদেশে করোনা ভাইরাসের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পর সিলেট এ ভাইরাসে আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার দুপরে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নতুন করে করোনার আক্রমন শুরুর পর সিলেটে প্রথম এই কোন রোগী মারা গেলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনায় আক্রান্ত ৬৯ বছর বয়েসি পুরুষ ১৯ জুন শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান তিনি। এছাড়া সিলেটে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০ জন বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মো. মিজানুর রহমান জানান, নিহত ব্যক্তির বাড়ি সিলেট সদর উপজেলায়। তিনি করোনা ছাড়াও আরও অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে; গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ছয়জন। এ নিয়ে চলতি জুন মাসেই জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা সাতজনে দাঁড়াল।
২৮ জুন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাঠানো সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জেলার মিরসরাই উপজেলার বাসিন্দা সালেহা বেগম (৪০) নামে এক নারী শুক্রবার নগরের জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকেই তিনি হৃদরোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
এদিকে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৯১টি নমুনা পরীক্ষা করে ছয়জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন নগরের এবং দুজন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে নগরের শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চারজন এবং এভারকেয়ার হাসপাতালে দুজনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে চলতি জুন মাসে মোট ১৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৬ জন পুরুষ, ৬৩ জন নারী ও একজন শিশু রয়েছে।
মশাবাহীত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালের দুই জেলায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় গোটা বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ১০৫ জন আক্রান্ত রোগী। এ নিয়ে বর্তমানে বিভাগের ছয় জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৩৫ জন। মৃত্যুবরণ করা দুজন হলেন- বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার কালিকাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আ. করিম (৫০) ও পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের রাজপাড়া এলাকার মো. ইউসুফ খন্দকার (৭২)। এর মধ্যে আ. করিম বরিশাল শেরইবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ও বৃদ্ধ মো. ইউসুফ খন্দকার কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গতকাল শুক্রবার দুপুরে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা উদ্বেগ ও আশঙ্কাজনক। এ পরিস্থিতি থেকে বেরোতে হবে। চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ জরুরি। তাই মশার বিস্তার রোধ করতে বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ৩০৫ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৩৫ জন।
বরগুনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। মৃত ১১ জনের মধ্যে ছয়জনেরই বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। শুধু মৃত্যুই নয় এ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি, বরগুনা জেলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ৬৩২ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
মন্তব্য