ইরানে নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে চলা বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নারীদের যৌনাঙ্গ, মুখ ও স্তনে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালিয়েছে বলে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ইরানে আহত বিক্ষোভকারীরা গ্রেপ্তারের ভয়ে গোপনে চিকিৎসা করান।
কিছু নার্স ও চিকিৎসক জানান, পুরুষদের চেয়ে নারীদের ক্ষতস্থানগুলো ভিন্ন। পুরুষ বিক্ষোভকারীদের সাধারণত পা, পেছনের অংশ ও পিঠে গুলি করা হয়।
গার্ডিয়ান ইরানের চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট ১০ ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছে। তারা জানিয়েছেন, গুরুতর আঘাতের কারণে শত শত ইরানি তরুণ স্থায়ী ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। বিশেষ করে সেসব নারী, পুরুষ ও শিশুর চোখে গুলি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইরানের ইস্পাহান প্রদেশের এক পুরুষ চিকিৎসক জানান, নারী ও পুরুষ বিক্ষোভকারীদের আলাদাভাবে টার্গেট করা হচ্ছে। কারণ তারা নারীদের সৌন্দর্য নষ্ট করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘আমি ২০ বছরের এক নারীকে চিকিৎসা করেছি, যার যৌনাঙ্গে দুটি ছড়রা গুলি ছিল। আরও ১০টি ছড়রা গুলি পাওয়া যায় তার ঊরুতে। এগুলো সহজে বের করা গেলেও যৌনাঙ্গে থাকা ছড়রা গুলি বের করা ছিল চ্যালেঞ্জিং, কারণ সেগুলো মূত্রনালি ও যোনির মধ্যের অংশ ছিল। এতে যোনিতে সংক্রমণ হতে পারত।
‘এমন অবস্থা দেখে আমি তাকে একজন বিশ্বস্ত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে বলেছি। তখন তিনি জানান, বিক্ষোভে অংশ নেয়ার পর ১০ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য তাকে ঘিরে রেখে গুলি করে।’
ওই চিকিৎসক আরও জানান, এসব বিষয় তাকে মানসিকভাবে পীড়া দিয়েছে। এতে তিনি কষ্টও পেয়েছেন।
আরও কয়েকজন চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এমন কর্মকাণ্ডে ইরানের কয়েকটি নিরাপত্তা বাহিনীর দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। এর মধ্যে ইরানের আধাসামরিক বাহিনী বাসিজও রয়েছে।
ওই ব্যক্তিরা জানান, এসব নিরাপত্তা বাহিনী দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের নিয়ম অনুসরণ করছে না। তারা পায়ে গুলি না করে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে।
তেহরানের কাছের শহর কারাজের এক চিকিৎসক বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নারীদের মুখ এবং শরীরের বিশেষ অঙ্গে গুলি করছে। কারণ তারা হীনম্মন্য। নারীদের ওইসব জায়গায় আঘাত করে যৌনতা নিয়ে তাদের মধ্যে যে জটিলতা রয়েছে, তা থেকে তারা মুক্তি পেতে চায়।’
এসব অভিযোগ নিয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে কোনো তথ্য পায়নি গার্ডিয়ান।
সঠিকভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যু হয় গত ১৬ সেপ্টেম্বর। সেদিন থেকেই প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে গোটা ইরানে।
তেহরানের অভিযোগ, বিদেশি শত্রুরাই তাদের দেশে অস্থিরতা তৈরি করছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে,যাদের মধ্যে ৪০টি শিশু।
ইরানের মাজানদারা প্রদেশের এক চিকিৎসক জানান, তিনি নারীদের শরীর থেকে প্লাস্টিক ও ধাতবের তৈরি ছড়রা গুলি বের করেছেন।
তিনি বলেন, ‘নারীরা এসব ক্ষেত্রে হাসপাতালে যেতে লজ্জা পান। এতে অনেকেই বাড়িতে চিকিৎসা করান, যা খুবই বিপজ্জনক।’
গত ২৬ অক্টোবর ইরানের মেডিক্যাল কাউন্সিলের সামনে বিক্ষোভ করেন শত শত চিকিৎসক। ওই সময় তাদের ওপর ছড়রা গুলি চালানো হয়।
এ ঘটনার পর তেহরানের এক সার্জন তার সহকর্মীদের চিকিৎসা করেছিলেন । তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্ধের মতো গুলি করে। আহতদের মধ্যে একজন বিক্ষোভেই ছিলেন না।’
তেহরানের ওই সার্জন আরও জানান, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২৫ বছরের যুবকের চোখে গুলি লাগে, যিনি বিক্ষোভেই ছিলেন না। ওই যুবকের দুই চোখই প্রায় নষ্ট হয়ে যায়।
শুধু এই যুবকই নন, এমন অনেক বিক্ষোভকারীর চোখেই গুলি করে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
ইরানের ৪ শতাধিক চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞের স্বাক্ষর সংবলিত চিঠি ইরানি সোসাইটি অফ অফথালমোলজির মহাসচিব মাহমুদ জাব্বারভান্দকে দেয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে চিকিৎসকরা লেখেন, বিক্ষোভকারীদের ইচ্ছাকৃতভাবে অন্ধ করা হচ্ছে বলে তাদের মনে হয়।
ওই চিঠিতে সই করা কয়েকজন চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ জানান, তারা চারজন রোগীর চিকিৎসা করেছেন, যাদের প্রায় সবাই অন্ধ হয়ে গেছে। এদের মধ্যে ২০ বছরের এক যুবক ছিল, যার মুখ থেকে ১৮টি ছড়রা গুলি অপসারণ করা হয়।
গুরুতর আঘাতের জন্য বিক্ষোভকারীদের চিকিৎসার প্রয়োজন হবে, এটি মাথায় রেখে কর্তৃপক্ষ হাসপাতালগুলোতে নজরদারি বাড়িয়েছে। ইরানের শিরাজ শহরের এক চিকিৎসক জানান, গত মাসের শেষের দিকে জরুরি চক্ষু চিকিৎসা বিভাগের বাইরে নতুন নিরাপত্তা প্রহরী মোতায়েন করা হয়।
ইরানের অন্যান্য অংশে, বিশেষ করে কুর্দিস্তান অঞ্চলে সরকার পুরো শহর অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সেখানে স্বেচ্ছাসেবকরা পায়ে করে ব্যান্ডেজ ও ওষুধ লুকিয়ে আনছে।
কুর্দি মানবাধিকার কর্মী সোরান মানসোর্নিয়া বলেন, ‘আহতের সংখ্যা অনেক বেশি। গ্রেপ্তারের ভয়ে হাসপাতালে যাননি এমন একজন আহত ব্যক্তির মৃত্যুর কথা আমরা প্রতিদিন শুনি।’
ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।
তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।
সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে শুক্রবার বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত করার কয়েক দিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ঘিরে রোনেন বারের ব্যর্থতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, তাকে আর বিশ্বাস করা যায় না।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইসরায়েল সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইএসএ পরিচালক রোনেন বারকে বরখাস্তে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোনেন বারের উত্তরসূরি নিযুক্ত হওয়ার পর অথবা ১০ এপ্রিলের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করবেন।
এর আগে গত রবিবার নেতানিয়াহু বলেন, তার ওপর আস্থার অভাব রয়েছে। তাকে এ পদে রাখা যাবে না। তাই বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বার ১৯৯৩ সালে শিন বেতে যোগ দিয়েছিলেন।
বারের মেয়াদ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে পূর্ববর্তী ইসরায়েলি সরকার শিন বেতের প্রধান হিসেবে তাকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার এক বছর আগেই তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করল।
ইসরায়েলে হামাসের হামলা চালানোর আগে থেকেই রোনেন বারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত ৪ মার্চ হামাসের হামলার ওপর শিন বেতের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন প্রকাশের পর সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।
আরও পড়ুন:মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফিলিপাইন সরকার তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হংকং থেকে দেশে আসার পর আইসিসির নির্দেশে পুলিশ দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের চালানো অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।
আইসিসি দুতার্তের শাসনামলে মাদক নির্মূলের নামে চালানো অভিযানে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর দাভাওয়ের মেয়র থাকার সময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে ২০১৯ সালে ফিলিপাইনকে রোম সংবিধি থেকে প্রত্যাহার করে নেন দুতার্তে।
দুতার্তে প্রশাসন ২০২১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। আইসিসির আদালত হলো সর্বশেষ অবলম্বন।
আইসিসির আর বিচার করার এখতিয়ার নেই—এমন যুক্তি দিয়ে সে সময় তার প্রশাসন বলেছিল, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন:স্কটল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টার্নবেরি গলফ রিসোর্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনপন্থি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন‘ নামের একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংগঠনটি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে জানানো হয়, ট্রাম্পের গাজা নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও পরিকল্পনার কারণে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি মানুষ ও তাদের সমর্থকরা। এরই জেরে এ হামলা ঘটিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সংগঠনের সদস্যরা।
টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। রিসোর্টের সবুজ মাঠে লাল রং দিয়ে লেখা হয়েছে ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’।
সংগঠনটির কর্মীরা জানান, ট্রাম্প গাজাকে নিজের সম্পত্তির মতো মনে করে, যা খুশি তাই করতে পারে না। তারই প্রতিবাদ এটা।
তারা বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমাদের প্রতিরোধ থেকে তার নিজের সম্পত্তিও নিরাপদ নয়।’
ফিলিস্তিনিনের এই হামলাকে ট্রাম্প ‘শিশুসুলভ, অপরাধমূলক’ কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তার পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ ঢেলে সাজাতে উঠেপড়ে লেগেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ উদ্যোগ পৌঁছেছে ইরানের দ্বারপ্রান্তেও।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আলোচনায় না বসলে সামরিক অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের নেতাদের উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির উদ্দেশে বলেছি, আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন। কারণ, এটি ইরানের জন্য ভালো হবে।’
একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় তেহরানের কল্যাণে সমঝোতাই যুক্তিসঙ্গত হবে।
যদিও ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন। তারা জানিয়েছে, এমন কোনো চিঠির বিষয়ে অবগত নয় তারা।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ট্রাম্পের চিটি পাঠানোর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তিনি শুক্রবার এএফপিকে বলেন, শক্তি প্রয়োগ করলে তারা পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না।
আরও পড়ুন:ইরান ও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন।
নতুন টার্মিনাল ও জাহাজ চালু হওয়ায় মার্চ থেকে চীন তেল আমদানি বৃদ্ধি করবে বলে খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি সত্ত্বেও চীন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ‘অয়েল প্রাইস’ নামের ওয়েবসাইট।
অয়েল প্রাইসের তথ্য অনুযায়ী, ইরান ও রাশিয়া থেকে চীনের তেল আমদানি দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ওয়েবসাইটটির উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া শনিবার এ খবর জানায়।
কয়েকজন বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানান, চীন তেল ট্যাংকারগুলোতে পরিবর্তন এনেছে যাতে সেগুলো আর নিষেধাজ্ঞার আওতায় না থাকে। এর ফলে রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারবে বেইজিং। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এই দুই দেশ থেকে চীন বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে। এ আমদানি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা চীনা তেল ট্যাংকারগুলো এরই মধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন:ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের চবাহার কাউন্টিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের সদরদপ্তরে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জয়শুল আজল।
স্থানীয় সময় শনিবার সকালে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশন সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন তৈরি এবং হাউজিং ইউনিট নির্মাণ করে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এ খবর জানায়।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের দপ্তরে সাউন্ড বোমা বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে।
প্রাদেশিক প্রসিকিউটর মেহদি শামসাবাদি জানান, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
তিনি জানান, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলো এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
বিস্ফোরণে ভবনটির একাংশের ক্ষতি হয়েছে।
পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশে বিগত বছরগুলোতে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় অনেকবার সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। যেসব গোষ্ঠী এসব হামলা চালিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্পর্ক রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের তাফতান কাউন্টির গোহার কুহ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই হামলারও দায় এ সংগঠন স্বীকার করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য