“আপনি কি জানেন রাস্তায় মাথার স্কার্ফ খুলে নাচিয়ে বেড়ানো গুটিকয়েক নারী কী চান?... তারা একমাত্র যে ‘স্বাধীনতাটি’ চান তা হলো প্রতি রাতে কারও সঙ্গে ঘুমানো এবং পশুর মতো আচরণ করা”- মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে ইরানজুড়ে পোশাকের স্বাধীনতা দাবিতে রাস্তায় নামা নারীদের সম্পর্কে এমনটাই বলেছেন দেশটির পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য হামিদ রাসাই।
নারীদের নিয়ে শাসকগোষ্ঠীসংশ্লিষ্টদের এমন অবমাননাকর মন্তব্য ইরানে অতিপরিচিত। এর আগেও নারী স্বাধীনতা প্রশ্নে বিভিন্ন আন্দোলনের সময় দেশটির উচ্চপদস্থরা এমন অসংখ্য মন্তব্য করেছেন।
নারীদের অধিকারের বিষয়টি আড়াল করতে যৌন সুড়সুড়িমূলক ব্যাঙ্গ নিয়মিত ঘটনা। আন্দোলনকারীদের ‘নৈতিক অবক্ষয় ঘটেছে’ বা তারা ‘যৌনকর্মী’ এমন কথাও বলা হয়েছে।
ইরানে ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খোমেনি এবং উচ্চপদস্থ নেতারা বহুবার বিরোধীদের, বিশেষ করে নারীর বাধ্যতামূলক হিজাবের বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে যৌনতাসূচক অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করেছেন। এমনকি খোমেনিবিরোধী অন্য ইসলামি দলগুলোকে পর্যুদস্ত করতেও এগুলো ব্যবহার করা হয়েছে।
১৯৮০-এর দশকে তেহরানের প্রসিকিউটর আসাদুল্লাহ লাজেভার্দি দাবি করেছিলেন- নিষিদ্ধ ঘোষিত পিপলস মোজাহেদিন অর্গানাইজেশনের (এমইকে) কর্মীদের বাড়িতে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি পাওয়া গেছে।
তবে যৌনতাকেন্দ্রিক অবমাননাকর অভিযোগের মাধ্যমে বিরোধীদের কোণঠাসা করার অস্ত্র ধীরে ধীরে অকেজো হয়ে পড়ছে ইরানে। দেশটিতে এখন ব্যক্তিগত পছন্দ এবং যৌনতা আগের মতো ট্যাব্যু হিসেবে নেই। এমনকি যৌন সুড়সুড়িমূলক কথাবার্তা মানুষকে তেমন আলোড়িতও করে না।
ফলে এবারের আন্দোলনে নারীর মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা খুব একটা সফল হচ্ছে না।
এর পরেও হামিদ রাসাইয়ের মতো আরও অনেক কট্টরপন্থি হাল ছাড়েননি। দেশটির বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত হোসেন কাচুয়ান তাদের একজন। চলমান আন্দোলনের জনপ্রিয় একটি স্লোগান- ‘জিন, জিয়ান, আজাদি’; যার অর্থ ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’। হোসেন কাচুয়ান একে বদলে দিয়ে বলছেন, ‘নারী, যৌনবৃত্তি, লাম্পট্য’।
এর আগে ২০১৮ সালে বিপ্লবী রেভিলিউশনারি গার্ডের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক জেনারেল মোহাম্মদ রেজা নাগদি হিজাবের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ‘যৌনকর্মী’ বলে আখ্যায়িত করেন।
নাগদি সে সময় বলেছিলেন, “তারা (পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম) ‘বাধ্যতামূলক হিজাববিরোধী’ হিসেবে যাদেরকে তুলে ধরছে তারা আসলে যৌনকর্মী, এমনকি একই ভুল আমাদের দেশের সংবাদমাধ্যমও করছে।“
নারী অধিকার দমনে ঘুরেফিরে সেই পুরোনো ‘অস্ত্র’
ইরানে নারীর অধিকার নিয়ে সোচ্চার কণ্ঠ দমনে শুরু থেকেই ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির শাসকগোষ্ঠী যৌনতাকেন্দ্রিক ‘কলঙ্ককে’ অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে, এমনকি উদার ইসলামি দলগুলোও এই অস্ত্র থেকে রেহাই পায়নি।
ইসলামি বিপ্লবের নেতৃত্ব দেয়া আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি শুরুর দিকে বাধ্যতামূলক হিজাবের বিরোধী নারীদের উদ্দেশে বলতেন, তারা শাহ শাসনামলের ‘নগ্নতা’, ‘নৈতিক অবক্ষয়’ ও ‘যৌনকর্ম’ ফিরিয়ে আনতে চান।
এই অভিযোগের তীর পরে বিরোধী রাজনৈতিক বা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর দিকেও বর্ষিত হতে শুরু করে, যদিও এসব গোষ্ঠীর কর্মীদের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের যৌন সম্পর্কের বিষয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা ছিল।
শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যৌনতাকেন্দ্রিক প্রকাশ্য গালগল্প প্রচার করা ছাড়াও রাজনৈতিক বন্দিদের কাছ থেকে জোর করে যৌন সম্পর্কের স্বীকারোক্তি নেয়ার অভিযোগও রয়েছে।
খোমেনি বারবার তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছেন, ‘স্বাধীনতা’ বলতে তারা যেটি বোঝাতে চান সেটা আসলে পশ্চিমা অনুকরণের স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা ‘দুর্নীতি ও যৌনতার’ স্বাধীনতা।
১৯৭৯ সালে এক বক্তৃতায় খোমেনি বলেন, “তারা (বিরোধীরা) চায় আমাদের তরুণেরা ‘মুক্ত’ হোক। তারা চায় জুয়ার আসর অবাধে উন্মুক্ত থাকুক, মদের আসর উন্মুক্ত থাকুক, বেলেল্লাপনা অবাধে উন্মুক্ত থাকুক, হেরোইনের আড্ডা উন্মুক্ত হোক, আফিমের আসরে কেউ বাধা না দিক …।
“তারা যেসব কিছুর মধ্যে স্বাধীনতা দেখে, তার সবই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। তারা নারী-পুরুষের স্বাধীনতা চায়, উদোম দেহে সাগরে একসঙ্গে সাঁতার কাটতে চায়। যৌনকর্মীর ঘরে একত্রিত হয়ে তারা বলতে চায় এর নামই হলো যা খুশি তা করা।“
দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা ১৯৮০-এর দশকে ‘পশ্চিমা স্বাধীনতা’ প্রতিহত করার দিকে মনযোগ দেন। তারা বলতে শুরু করেন নারী অধিকারের সমর্থকরা প্রকৃতপক্ষে নারীর ‘যৌন দাসত্বের’ সমর্থক।
তাদেরই একজন আলি আকবর হাশেমি রাফসানজানি পরে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৮৪ সালে এক জুমার নামাজের খুতবায় বলেন, ‘পশ্চিমারা যখন অন্তর্বাস বা হাফপ্যান্ট প্রদর্শনের জন্য দোকানের জানালার পিছনে নারীর ম্যানিকিন সাজিয়ে রাখে তখন কি নারীরা সম্মানিত বা মুক্ত হয়?’
বিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠীকেও হেনস্তা
ইরানের শাসকগোষ্ঠী যৌনতাকেন্দ্রিক অস্ত্র নাগরিক অধিকারের সমর্থকদের পাশাপাশি বিরোধী দলের নেতাদের ওপরের প্রয়োগ করেছে। এই দলগুলো ইসলামি বিপ্লবের আগে শাহ শাসনের বিরুদ্ধেও লড়াই করেছে।
তেহরানের প্রসিকিউটর আসাদুল্লাহ লাজেভার্দিসহ অন্য সরকারি কর্মকর্তারা বারবার নিষিদ্ধঘোষিত এমইকে-এর সেফ হাউসে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি পাওয়ার কথা বলেছেন। খোমেনি সমর্থক লেখক মোজতবা সোলতানি এক বক্তৃতায় দাবি করেন, ওইসব সেফ হাউজে এমইকে-এর পুরুষ কর্মীরা সমকামী সম্পর্কেও জড়িত।
তবে এমইকে-এর মতো গেরিলা গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে সে সময় যৌনসম্পর্কের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ ছিল। বামপন্থি গেরিলা গোষ্ঠী ইরানি পিপলস ফেদাইয়ের সদস্য আবদুল্লাহ পাঞ্জে-শাহী নিজ সংগঠনের এক নারী কর্মী এডনা সাবেতের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোয় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার নজিরও রয়েছে।
লেখকদের বিরুদ্ধে যৌনতার অভিযোগ
যৌনতাকেন্দ্রিক গালগল্প প্রচার করে ইরানে ভিন্নমত দমনের কৌশল ১৯৯০-এর দশকে আরও তীব্র হয়। ভিন্নমতাবলম্বী লেখক ও সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা একের পর এক এ ধরনের অভিযোগের মুখে পড়তে থাকেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ১৯৯৬ সালে হোভায়াত বা আইডেন্টিটি নামে একটি পাক্ষিক অনুষ্ঠান শুরু করে। এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল, ‘পশ্চিমা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন মোকাবিলা।’
এই অনুষ্ঠানে ইরানি বুদ্ধিজীবী (ধর্মনিরপেক্ষ ও আধুনিকতাবাদী), প্রত্নতাত্ত্বিক, শিল্পী, বিজ্ঞানী এবং জাতীয় নেতাদের একটি বড় অংশকে হেনস্তার লক্ষ্যে পরিণত করা হয়।
অনুষ্ঠানটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ইরানের ইসলামিক রিপাবলিক ব্রডকাস্টিংয়ের (আইআরআইবি) প্রধান আলী লারিজানি বলেন, ‘অনুষ্ঠানে যে সমস্ত লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের আক্রমণ করা হয়েছে তাদের সবার কাজের মান ছিল নিম্নাঙ্গ (আন্ডারবেলি) সমতুল্য।’
এ ধরনের অভিযোগ ১৯৯৭ সালে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সংস্কারপন্থি মোহাম্মদ খাতামির বিরুদ্ধেও ছড়ানো হয়েছিল। হিজবুল্লাহ প্রেস একটি বইয়ের কিছু অংশ প্রকাশ করে, যাকে ‘অশ্লীল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। খাতামি সংস্কৃতি ও ইসলামিক গাইডেন্স মন্ত্রী থাকার সময়ে বইটি প্রকাশের অনুমতি দেয়া হয়েছিল, যাতে করে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর ভোট তার পক্ষে না যায়।
পরে খাতামি আট বছর প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনি ও তার সমর্থকেরা বারবার অভিযোগ করেছেন, একদল লোক স্বাধীনতার নামে ‘অশ্লীলতা এবং যৌনবৃত্তির’ প্রসার ঘটাতে চায়।
খাতামি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ২০০০ সালে মন্ত্রিসভার সঙ্গে এক বৈঠকে খামেনি বলেন, “বহুল অপব্যবহৃত ‘স্বাধীনতা’ শব্দের জন্য আমাদের অবশ্যই চোখের পানি ফেলতে হবে। স্বাধীনতার নামে কিছু লোক সমাজে পাপ কাজ, যৌনবৃত্তি এবং লাম্পট্যের প্রচার চালাচ্ছে। এর ফল হলো, জনগণের কাছে সরকার সমালোচিত হবে।“
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।
তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।
সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে শুক্রবার বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত করার কয়েক দিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ঘিরে রোনেন বারের ব্যর্থতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, তাকে আর বিশ্বাস করা যায় না।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইসরায়েল সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইএসএ পরিচালক রোনেন বারকে বরখাস্তে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোনেন বারের উত্তরসূরি নিযুক্ত হওয়ার পর অথবা ১০ এপ্রিলের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করবেন।
এর আগে গত রবিবার নেতানিয়াহু বলেন, তার ওপর আস্থার অভাব রয়েছে। তাকে এ পদে রাখা যাবে না। তাই বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বার ১৯৯৩ সালে শিন বেতে যোগ দিয়েছিলেন।
বারের মেয়াদ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে পূর্ববর্তী ইসরায়েলি সরকার শিন বেতের প্রধান হিসেবে তাকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার এক বছর আগেই তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করল।
ইসরায়েলে হামাসের হামলা চালানোর আগে থেকেই রোনেন বারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত ৪ মার্চ হামাসের হামলার ওপর শিন বেতের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন প্রকাশের পর সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।
আরও পড়ুন:মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফিলিপাইন সরকার তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হংকং থেকে দেশে আসার পর আইসিসির নির্দেশে পুলিশ দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের চালানো অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।
আইসিসি দুতার্তের শাসনামলে মাদক নির্মূলের নামে চালানো অভিযানে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর দাভাওয়ের মেয়র থাকার সময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে ২০১৯ সালে ফিলিপাইনকে রোম সংবিধি থেকে প্রত্যাহার করে নেন দুতার্তে।
দুতার্তে প্রশাসন ২০২১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। আইসিসির আদালত হলো সর্বশেষ অবলম্বন।
আইসিসির আর বিচার করার এখতিয়ার নেই—এমন যুক্তি দিয়ে সে সময় তার প্রশাসন বলেছিল, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন:স্কটল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টার্নবেরি গলফ রিসোর্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনপন্থি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন‘ নামের একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংগঠনটি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে জানানো হয়, ট্রাম্পের গাজা নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও পরিকল্পনার কারণে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি মানুষ ও তাদের সমর্থকরা। এরই জেরে এ হামলা ঘটিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সংগঠনের সদস্যরা।
টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। রিসোর্টের সবুজ মাঠে লাল রং দিয়ে লেখা হয়েছে ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’।
সংগঠনটির কর্মীরা জানান, ট্রাম্প গাজাকে নিজের সম্পত্তির মতো মনে করে, যা খুশি তাই করতে পারে না। তারই প্রতিবাদ এটা।
তারা বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমাদের প্রতিরোধ থেকে তার নিজের সম্পত্তিও নিরাপদ নয়।’
ফিলিস্তিনিনের এই হামলাকে ট্রাম্প ‘শিশুসুলভ, অপরাধমূলক’ কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তার পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ ঢেলে সাজাতে উঠেপড়ে লেগেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ উদ্যোগ পৌঁছেছে ইরানের দ্বারপ্রান্তেও।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আলোচনায় না বসলে সামরিক অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের নেতাদের উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির উদ্দেশে বলেছি, আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন। কারণ, এটি ইরানের জন্য ভালো হবে।’
একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় তেহরানের কল্যাণে সমঝোতাই যুক্তিসঙ্গত হবে।
যদিও ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন। তারা জানিয়েছে, এমন কোনো চিঠির বিষয়ে অবগত নয় তারা।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ট্রাম্পের চিটি পাঠানোর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তিনি শুক্রবার এএফপিকে বলেন, শক্তি প্রয়োগ করলে তারা পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না।
আরও পড়ুন:ইরান ও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন।
নতুন টার্মিনাল ও জাহাজ চালু হওয়ায় মার্চ থেকে চীন তেল আমদানি বৃদ্ধি করবে বলে খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি সত্ত্বেও চীন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ‘অয়েল প্রাইস’ নামের ওয়েবসাইট।
অয়েল প্রাইসের তথ্য অনুযায়ী, ইরান ও রাশিয়া থেকে চীনের তেল আমদানি দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ওয়েবসাইটটির উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া শনিবার এ খবর জানায়।
কয়েকজন বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানান, চীন তেল ট্যাংকারগুলোতে পরিবর্তন এনেছে যাতে সেগুলো আর নিষেধাজ্ঞার আওতায় না থাকে। এর ফলে রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারবে বেইজিং। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এই দুই দেশ থেকে চীন বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে। এ আমদানি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা চীনা তেল ট্যাংকারগুলো এরই মধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন:ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের চবাহার কাউন্টিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের সদরদপ্তরে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জয়শুল আজল।
স্থানীয় সময় শনিবার সকালে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশন সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন তৈরি এবং হাউজিং ইউনিট নির্মাণ করে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এ খবর জানায়।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের দপ্তরে সাউন্ড বোমা বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে।
প্রাদেশিক প্রসিকিউটর মেহদি শামসাবাদি জানান, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
তিনি জানান, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলো এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
বিস্ফোরণে ভবনটির একাংশের ক্ষতি হয়েছে।
পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশে বিগত বছরগুলোতে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় অনেকবার সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। যেসব গোষ্ঠী এসব হামলা চালিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্পর্ক রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের তাফতান কাউন্টির গোহার কুহ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই হামলারও দায় এ সংগঠন স্বীকার করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য