সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী নারী ফুটবল দলকে নিয়ে সারা দেশ যখন উচ্ছ্বসিত, তখন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আগের দিন ফ্রেঞ্চ বেণি করে ছবি তোলা চট্টগ্রামের একটি স্কুলের ছাত্রীদের মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে মাথা ন্যাড়া করার কথা জানিয়েছেন ওই স্কুলের শিক্ষক জাহিদা পারভীন।
এ শিক্ষকের অভিযোগ, তার প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম নগরীর এয়াকুব আলী দোভাষ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর ছাত্রীদের মারধর ও বকা দেন প্রধান শিক্ষক নিপা চৌধুরী, তবে নিপা এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
কী অভিযোগ জাহিদার
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বৃহস্পতিবার রাতে ব্যক্তিগত আইডি থেকে নিজের মাথা ন্যাড়া করা ছবি পোস্ট করেন জাহিদা। এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি মাথা ন্যাড়া করেন।
ওই ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘স্কুলের মেয়েদের মাসখানেক কষ্ট করে খেলা শিখিয়ে মাঠে নিতে যাওয়ার আগের দিন তাদের ফেঞ্চ বেণি করে ছবি তোলা ও খেলতে যাওয়ার অপরাধে আমার স্কুলের হেডমাস্টার মেয়েদের চুল ধরে মারা ও বকার প্রতিবাদে নিজের মাথার চুল ফেলে দিয়েছি। খুব কি খারাপ দেখা যাচ্ছে?
‘পুনশ্চ: আমার মেয়েরা খেলার মাঠে খেলতে নামার অনুমতি পায়নি। স্কুলের সভাপতি আবার বর্তমানে চট্টগ্রামের সিডিএর চেয়ারম্যান এবং স্কুলটি উনার বড় আব্বার নামে।’
জাহিদা নিউজবাংলাকে জানান, গত ৮ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানা জোনে ৪৯তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় কাবাডি খেলার সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। স্কুলের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক হিসেবে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য টিম তৈরি তার দায়িত্ব। অংশগ্রহণের নিয়ম অনুযায়ী খেলার এক দিন আগে অংশগ্রহণকারী দলের ছবি তোলে কো-অর্ডিনেটরকে জমা দিতে হয়।
তার ভাষ্য, ওই দিন (৭ সেপ্টেম্বর) ছাত্রীদের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে ছবি তোলার জন্য তিনি তাদের জার্সি পরে তৈরি হতে বলেন। কাবাডি খেলায় চুলে কোনো অলংকার বা ক্লিপ থাকতে পারে না। তাই বেণি করতে হয়। সে কারণে সবাই বেণি করেছিল। ছবি তোলার জন্য মেয়েদের ডেকে তিনি টয়লেটে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে চিৎকার শোনেন যে, প্রধান শিক্ষক তাদের বকাবকি করছেন।
তিনি আরও জানান, ছাত্রীরা দ্বিতীয় তলায় ছিল। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক তাদের নিচে ডেকে নিয়ে চুল ধরে মারছিলেন। তিনি (জাহিদা) বের হয়ে ছাত্রীদের মারতে ও বকতে দেখে প্রধান শিক্ষিকাকে নিবৃত্ত করেন।
জাহিদা পারভীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বেণি কেন করছে সেটা বলে তিনি তাদের মারছিলেন, বকাবকিও করছিলেন। এর মধ্যে কাবাডি টিমের মীম নামের একজনকে বলছিলেন যে, সে-ই সব নষ্টের মূল, সে সব মেয়েদের নষ্ট করছে। আমি বের হয়ে উনাকে থামাই। বলি যে, আমিই তাদের বেণি করত বলেছি।
‘তিনি তখন আমাকেও বলেন যে, এভাবে বেণি করতে পারবে না। তা ছাড়া খেলার দিন মাঠে যাওয়ার আগে নানা ছুতোয় আমাদের দেরি করছিলেন। যেমন: মেয়েদের খাবার-দাবারের হিসাব দিয়ে যেতে বাধ্য করেছিলেন, এটা তো এসেও দেয়া যায়, কিন্তু উনি হিসাব দিয়ে তবেই যেতে বলেছেন।’
শিক্ষক জাহিদার অভিযোগ অস্বীকার করেন এয়াকুব আলী দোভাষ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিপা চৌধুরী। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি ওই দিন শিক্ষার্থীদের মারধর বা বকাবকি কোনোটাই করিনি; বরং আমিও তাদের সঙ্গে ছবি তুলেছিলাম।’
এই বিষয়ে জাহিদা পারভীন বলেন, ‘উনি মারধর ও বকাবকির পর নিয়ম রক্ষার ছবি উঠিয়েছেন।’
খেলার দিন প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মডেল টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধ্য করায় ভেন্যুতে যেতে দেরি হয়েছে বলে অভিযোগ জাহিদার। তার ভাষ্য, দেরি হওয়ার কারণে আগে জানিয়ে রাখা সত্ত্বেও কো-অর্ডিনেটর শিক্ষার্থীদের মাঠে নামতে দেননি।
জাহিদা বলেন, ‘৩ তারিখ এই সম্পর্কিত একটা মিটিং হয়েছিল। আমি মিটিংয়ে সবার সামনে স্কুলে মডেল টেস্ট চলায় আমার একটু দেরি হবে বলে জানিয়েছিলাম। থানা শিক্ষা কর্মকর্তাকেও জানিয়েছিলাম, কিন্তু খেলার দিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট দেরিতে যাওয়ার অজুহাতে কো-অর্ডিনেটর খাস্তগীর স্কুলের কাজল স্যার আমার মেয়েদের মাঠে নামতে দেননি। আমি এটার প্রতিবাদ জানানো সত্ত্বেও তারা কর্ণপাত করেনি।’
শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা এবং নানা ছুতোয় দেরি করানোর অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নিপা চৌধুরী বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা; বরং আমি বলেছি যে, মডেল টেস্ট পরীক্ষা না দিলে কিছু হবে না। তিনি বলেছেন, পরীক্ষা দিক, তিনি কো-অর্ডিনেটরকে বলে রেখেছেন। তা ছাড়া খেলার দিন সকালে আমি উনাকে (জাহিদা) বলেছিলাম যে, আপনার দেরি হয়ে যাচ্ছে। উনি সেটা গুরুত্ব দেননি।’
এই বিষয়ে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাজল চৌধুরীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি।
কোতোয়ালি থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হুদা ছিদ্দিকী বলেন, ‘দেরি হবে বলে আমাকে খেলার আগে তো জানায়ইনি। খেলতে না দেয়ার বিষয়েও কিছু জানায়নি; বরং উনার সময়ের চেয়ে দুই ঘণ্টা দেরিতে অন্যান্য স্কুলের টিচারদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ এসেছে জাহিদা পারভীনের বিরুদ্ধে। তিনি নাকি কাজল স্যারসহ আরও কয়েকজনকে খুব বাজেভাবে গালাগাল করেছেন।
‘তা ছাড়া উনি দুই ঘণ্টা দেরিতে এসেছেন বলে দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা জানিয়েছেন। এতক্ষণ অপেক্ষা করা সম্ভব ছিল না। কারণ ২০ মিনিটের ওই খেলা এক দিনেই শেষ করতে হয়েছে। ওই এক দিনে মোট ২০টা খেলা শেষ করতে হয়েছে।’
চাপ দিয়ে পদত্যাগপত্র নেয়ার অভিযোগ
ওই ঘটনার পর প্রধান শিক্ষক চাপ দিয়ে পদত্যাগপত্র দিতে বাধ্য করে বৃহস্পতিবার থেকে আর স্কুলে ঢুকতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন জাহিদা পারভীন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খেলার দিন বিকেলে বাসায় ফিরে আমি ডায়াবেটিসজনিত সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়ি। তখন থেকে তিন দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। তিন দিন পর আমি প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানিয়েছিলাম।
‘তিনি আমার অসুস্থতার বিষয়টি গুরুত্বই দেননি; বরং আমার ভাইকে ফোন দিয়ে আমার ওপর চাপ তৈরি করেছেন। আমার নামে খুব বাজে কথা বলেছেন। এমনকি আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে টি-শার্ট পরে ছবি তুলেছিলাম। সেটা নিয়ে বাজে কথা বলেছে। আমাকে পদত্যাগপত্র দিতে বাধ্য করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৩ বা ১৪ তারিখ নিজের ভেতর জমে থাকা ক্ষোভ থেকে বাসার সামনের সেলুনে গিয়ে আমি আমার মাথা ন্যাড়া করেছি প্রতিবাদস্বরূপ। কারও প্রতি অভিযোগ থেকে না।’
চাপ দেয়ার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নিপা চৌধুরী বলেন, ‘এটা আসলে মিথ্যা কথা, আমি কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগ করিনি; বরং তিনি শিক্ষদানের যোগ্য নন উল্লেখ করে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। আমার স্কুলে সিসিটিভি ফুটেজ আছে। তাকে ঢুকতে না দেয়ার বিষয়টাও মিথ্যা।’
স্কুলের শিক্ষককে চাপ দিয়ে পদত্যাগপত্র নেয়ার আইনি কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হুদা ছিদ্দিকী।
তিনি বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের এ রকম কোনো সুযোগ নেই। এটা তিনি কোনোভাবেই পারবেন না। বিদ্যালয়ের কমিটি হলে অন্য বিষয়।’
আরও পড়ুন:দেশে সম্প্রতি নারীদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে কয়েকটি বাধা প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে মেয়েদের দুটি ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নারীরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং পুরুষদের মতোই সমানভাবে মানবিক ও নাগরিক অধিকার ভোগ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, কেউ নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত হলে বা এই ধরনের বেআইনি বিধিনিষেধ আরোপের সঙ্গে যুক্ত হলে তিনি বা তারা দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থার মধ্যে পড়বেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেকোনো গোষ্ঠীর নাগরিকদের প্রতি বৈষম্য বা নিপীড়নের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ইতোমধ্যে দিনাজপুর এবং জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনকে স্থগিত ফুটবল ম্যাচ পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন যে, তারা সম্প্রতি তাদের জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করেছেন।
‘শত শত মানুষ ম্যাচগুলো উপভোগ করেছেন এবং তাদের জেলার সকল শ্রেণির মানুষ এসব আয়োজনের প্রশংসা করেছেন। আমরা এই বিবৃতির সঙ্গে জয়পুরহাটের নারী ফুটবল ম্যাচের একটি ভিডিও সংযুক্ত করেছি।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত এক মাসে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বৃহত্তম যুব উৎসবগুলির মধ্যে একটি আয়োজন করেছে, যার মধ্যে শত শত গ্রামীণ জেলা এবং উপজেলা শহরে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নারী খেলোয়াড়দের জন্য নানা ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামীণ জেলায়ও হাজার হাজার মেয়ে ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল।
‘প্রফেসর ইউনূস আজীবন নারী অধিকারের পক্ষের একজন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের ৯০ শতাংশেরও বেশি মালিকানা ছিল নারীদের। গত সপ্তাহে প্রফেসর ইউনূস ফিফা প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সাথে দেখা করেন এবং বাংলাদেশে নারী ফুটবলারদের জন্য অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে তার সহায়তা চান।’
আরও পড়ুন:ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে শুক্রবার বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো দশম কেএসআরএম গলফ টুর্নামেন্ট।
এ টুর্নামেন্টে নারী, সিনিয়র ক্যাটাগরিসহ ১৫৮ গলফার অংশ নেন।
টুর্নামেন্ট উপলক্ষে সবুজে আচ্ছাদিত গলফ ক্লাবকে সাজানো হয় দৃষ্টিনন্দন সাজে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের স্টেশন কমান্ডার ও ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ভিপি (প্রশাসন ও অর্থ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম এনডিসি, পিএসসি।
কেএসআরএমের পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জসিম উদ্দিন, বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. আশফাকুল ইসলাম, ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. মোকাদ্দেস হোসেন, কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা কেএসআরএমের সহযোগিতায় এ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে থাকি, যা অত্যন্ত আনন্দের ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা। এ জন্য কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘আমরা আশা করছি কেএসআরএমের সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক এ সম্পর্ক আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক পর্যায়ের এসব গলফ টুর্নামেন্ট জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব বড় বড় প্রকল্পে কেএসআরএমের রড ব্যবহার হয় ব্যাপক হারে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে গর্বিত নির্মাণ অংশীদার ছিল কেএসআরএম।
‘আমাদের কাঁচামাল বিশ্বমানের। যেকোনো ডায়ামিটার ও গ্রেডের রড তৈরিতে সক্ষম আমরা। আমাদের শিপিং সেক্টরে ২৮টি মাদার ভ্যাসেল রয়েছে, যা দিয়ে আমরা জাতির সেবা করছি। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছি প্রচুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে। আগামীতেও আমাদের সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের উপ-মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নুরুল মোমেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মবিনুর রহমান চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক তাজ উদ্দিন, উপব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান রিয়াদ, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া, আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে।
টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ও র্যাফেল ড্রর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সাত সদস্যের এ কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য পদে আরও যে পাঁচজনের নাম রয়েছে তারা হলেন ওসমান গনি (ক্রীড়া অনুরাগী), মানিক রায় (কোচ), মো. মামুন (রেফারি), দিবস তালুকদার (ক্রীড়া সাংবাদিক) এবং আরিফুর রহমান (ছাত্র প্রতিনিধি)।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে কমিটির অনুমোদনপত্র পাঠানো হয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়য়ের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব বরাবর অনুমোদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারি অনুমোদন হওয়া ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাত সদস্যের অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনপত্রে লেখা রয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ২ (১৫)-এ উল্লিখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে ঝালকাঠি জেলার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৮-এ বর্ণিত পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সদয় অনুমোদিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ৫১তম আগা খাঁন গোল্ড কাপ গলফ টুর্নামেন্ট।
তিন ব্যাপী এ টুর্নামেন্ট শেষ হচ্ছে শনিবার, যা শুরু হয় বৃহস্পতিবার।
টুর্নামেন্টে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের দেশি/বিদেশি সদস্যসহ দেশের সব গলফ ক্লাবের প্রায় ৫০০ জন গলফার অংশ নেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা ছাড়াও কমান্ড্যান্ট, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক, প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মাদাদ আলী ভিরানী, ক্লাব ক্যাপ্টেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌহিদ হোসেন, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবিদুর রেজা খান (অব.), সংশ্লিষ্ট ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য, ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্নেল মো. শহিদুল হক (অব.), ক্লাব সেক্রেটারি কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন, কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের লেডি ক্যাপ্টেন প্রফেসর শাহীন মাহবুবা হক, ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, ক্লাব অ্যাফেয়ার্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মো. সাইদুর রহমান (অব.), ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, গলফ অপারেশনস লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আনোয়ার হোসেন (অব.), বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিল বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নবনিযুক্ত সভাপতি। পদাধিকারবলে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিওএ-র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সেনাবাহিনী প্রধান তার এই প্রথম সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিওএ-র কার্যনিবাহী কমিটির সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন এবং সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুলিশ সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারিতে) রাখা হয়েছে।
রোববার পল্টনে আউটার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘ওয়ালটন-ক্র্যাব স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’-এর ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এরকম (শীর্ষ সন্ত্রাসী) যারা ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে, তারা দীর্ঘ সময় জেল খেটে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে। তারা আমাদের সার্ভেইল্যান্সে রয়েছে। নতুন করে অপরাধে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশে এখনও যোগদান না করা সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনুল হাসান বলেন, ‘এটা একেবারেই মিনিমাম নম্বর। যারা যোগদান করেননি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএমপি মহানগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তেমনই ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) বিভিন্নভাবে অপরাধ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করছে।
‘ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন, যেটি বহুদিন থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সব সময় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে থাকে।’
ডিএমপি কমিশনার পরে পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ক্র্যাব সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানসহ ক্র্যাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিয়ান ঢাকা কমিটির পক্ষ থেকে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় আসিয়ান ঢাকা কমিটির প্রতিনিধি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হারিস বিন ওথম্যান, ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত হিরু হারতানতো সুবোলো, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কেইও সোয়ে মোয়ে, ফিলিপাইনের জুনিয়র রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আউসান, সিঙ্গাপুর প্রজাতন্ত্রের হাইকমিশনার মাইকেল লি, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিটমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মানহ কুওয়ংসহ কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য