আফগান নারী, শিশু ও মানবাধিকার-বিষয়ক আমেরিকার বিশেষ দূত রিনা আমিরি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোকে আফগানিস্তানের নারী অধিকার ও মানবাধিকারের বিষয়ে উচ্চকণ্ঠে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন।
সৌদি গেজেটে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আমিরি বলেছেন, তালেবানের ব্যাখ্যাকে (নারীবিষয়ক ধর্মীয় বিধিনিষেধ) মোকাবিলায় সৌদি আরবের নেতৃস্থানীয় উচ্চকণ্ঠ হওয়া উচিত। কারণ সামগ্রিকভাবে মুসলিম বিশ্ব সৌদি আরবের দিকেই তাকিয়ে থাকে।
তিনি বলেন, ‘আমি মুসলমান, আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতা এবং ইতিহাস থেকে জানি যে ইসলামই প্রথম ধর্ম, যা নারীদের অধিকার দিয়েছে। আমি মুসলিম দেশগুলোর দিকে তাকিয়ে আছি, যারা তালেবানের ব্যাখ্যাকে চ্যালেঞ্জ করবে এবং সেখানে সাধারণ আফগানদেরও সম্পৃক্ত করে তালেবানদের না বলবে।’
আমিরি আরও বলেন, ‘ইসলাম একটি ধর্ম, যা মানবাধিকার ও নারী অধিকারের সঙ্গে অনেক বেশি সমন্বিত।’
তিনি বলেন, এ ছাড়া জিসিসি ও ওআইসির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো আফগানদের দেখাতে পারে যে তারা সাধারণ আফগানদের ত্যাগ করেনি এবং মুসলিম বিশ্বের ভাই ও বোনেরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং ইসলামের কাঠামোর মধ্যে তাদের অধিকার রক্ষা হবে।
এ সময় তিনি ওআইসি ও ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত আফগানিস্তানের মানবিক ত্রাণ তহবিলে সৌদি আরবের ৩০ মিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রশংসা করেন।
আমিরি বলেন, ‘এই মুহূর্তে যেসব প্রকল্প রয়েছে তার জন্য আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। এই কাজটি আমাদের সবাইকে একসঙ্গে করতে হবে। মৌলিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই আফগান জনগণকে সমর্থন দিতে হবে।’
তালেবানদের ক্ষমতা দখলের এক বছর পর আফগানিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে একটি বড় ট্র্যাজেডি হিসেবে আমিরি বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে আফগানিস্তানে ২০ বছরের প্রচেষ্টায় একটি প্রজন্ম তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে সেখানকার নারীরা, যারা সমাজের প্রতিটি স্তরে, সরকারের ঊর্ধ্বতন স্তরে, সংসদে, সুশীল সমাজের অগ্রভাগে ছিলেন। কর্মী হিসেবে, বিচারক থেকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ সব পেশায় তাদের বিচরণ ছিল। তালেবানরা ক্ষমতা দখলের পর রাতারাতি জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়।’
তিনি দাবি করেন, সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, গত ২৩ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত নারীদের অধিকার ও চলাফেরাকে সীমাবদ্ধ করতে অন্তত ১৬টি ডিক্রি জারি করা হয়েছে।
অনেক সেক্টরেই মেয়েদের কাজ করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে নারীদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাদের পোশাকের ক্ষেত্রেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তাদের প্রতিটি স্তরের স্বাধীনতা, এমনকি তাদের চলাফেরার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।
আমিরি বলেন, ‘সেখানকার নারীরা মনে করেন যে তাদের কারাগারে রাখা হয়েছে। তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা হারিয়ে ফেলছেন।’
বাইরে থেকে আফগান নারীদের অধিকারের বুলি চাপিয়ে দেয়া হয়েছে, এমন ধারণাকেও আমিরি উড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আফগান নারীরা ২০ বছর ধরে নিজেদের অধিকারের বিষয়ে তাদের সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন, তারা ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের কাছেও গিয়েছিলেন এবং বয়স্কদের কাছেও পৌঁছেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘তালেবানরা আফগান জনগণের চাওয়াকে সম্মান করে না। যদি তালেবানরা এখন যেদিকে যাচ্ছে, সেদিকে চলতে থাকে। অর্থাৎ মেয়েদের অধিকার দিতে অস্বীকার করে, পরিবারগুলোকে তাদের মেয়েদের স্কুলে যেতে এবং কাজ করার অনুমতি দিতে অস্বীকার করে, তাহলে ব্যাপকভাবে দেশত্যাগের ঘটনা ঘটবে। দেশটি আরও দরিদ্র হবে। শেষ পর্যন্ত দেশটি অস্থিতিশীলতার দিকে চলে যাবে। আশাহীন দেশে পরিণত হবে।
এমনকি মৌলবাদও বৃদ্ধি পাবে। ফলে এটি শুধু আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যাই থাকবে না, বিশ্বের জন্য একটি ঝুঁকি তৈরি করবে। সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়বে।
আমিরির মতে, সন্ত্রাসবাদ আসে আশার অভাব থেকে এবং কট্টরপন্থি সমাজ থেকে।
তবে তিনি মনে করেন, কিছু তালেবান সদস্য আছে যারা ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করেন। তবে তা তালেবানের সামগ্রিক নীতি ও চিন্তার বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করে না।
এদিকে তালেবান বলছে, নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে নয় তারা। গত জুলাইয়ে ইসলামিক আমিরাত আফগানিস্তানের ধর্মীয় পণ্ডিতদের প্রধান শেখ ফকিরুল্লাহ ফাইক বলেছিলেন, ইসলামিক আমিরাতের সর্বোচ্চ নেতা মাওলাবি হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা ষষ্ঠ শ্রেণির ঊর্ধ্বে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল পুনরায় খোলার বিপক্ষে নন।
তিনি সে সময় বলেছিলেন, মেয়েদের স্কুলগুলো পুনরায় খোলায় দেরি হওয়ার একমাত্র কারণ হলো তালেবান চাচ্ছে পুরুষ ও নারী শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম আলাদা করতে। শিগগিরই মেয়েদের জন্য স্কুলগুলো আবার চালু হবে। আমাদের সব মন্ত্রী ও নেতা এ বিষয়ে একমত।
এর আগে তালেবানের পক্ষ থেকে এর আগে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণ স্থগিত করে দেয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীদের নিরাপত্তা ও উপযুক্ত পরিবেশের অভাব থাকার কারণেই এমন পদক্ষেপ বলে জানায় তালেবান।
সেখানকার নারীরা মনে করেন যে তাদের কারাগারে রাখা হয়েছে। তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা হারিয়ে ফেলছেন।
আফগান নারী অধিকার কর্মী শাহলা আরেফি বলেন, ‘মেয়েদের স্কুলে যাওয়া আটকানো আফগানিস্তানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে।’
নারী অধিকার কর্মী মনিসা মুবারিজ বলেন, ‘এক বছর হয়ে গেল আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে বাস করছি। আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে? কেন আমাদের শিক্ষা কেড়ে নেয়া হয়েছে?’
এর আগেও শেখ ফকিরুল্লাহ ফাইক মেয়েদের স্কুল বন্ধ করার বিষয়ে তালেবান সরকারের সমালোচনা প্রকাশ করেছিলেন এবং ইসলামি কাঠামোর মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির ঊর্ধ্বে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল পুনরায় চালু করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।
আরও পড়ুন:‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের প্রখ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই, যার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
গত সপ্তাহ থেকেই এ শিল্পী হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু এবং নাক-কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, প্রতুলের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
প্রতুলের গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় গান হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে’। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার গানের গুণমুগ্ধ ছিলেন। মমতার তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে।
বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। শৈশব থেকেই গান লিখে তাতে সুর দিয়ে গাওয়ার ঝোঁক ছিল তার।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে পাদপ্রদীপের আলোয় আনে তার গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য শিল্পী ছিলেন তিনি।
তার মতে, সৃষ্টির মুহূর্তে লেখক-শিল্পীকে একা হতে হয়। তারপর সেই সৃষ্টিকে যদি মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায়, কেবল তাহলেই সেই একাকিত্বের সার্থকতা। সেই একক সাধনা তখন সকলের হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় হারনাই জেলায় শুক্রবার শ্রমিক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির কোয়েটা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা শাহজাদ জাহরি এএফপিকে জানান, হারনাই জেলায় এ বোমা বিস্ফোরণে ১০ খনিশ্রমিক নিহত হন।
একই জেলার আরেক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা সেলিম তারিন এএফপিকে বলেন, ‘শ্রমিকরা কাজের জায়গা থেকে বাজারে কেনাকাটার জন্য যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই তাদের গাড়িটি আক্রমণের শিকার হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি ছিল একটি আইইডি বিস্ফোরণ।আমরা হামলার তদন্ত করছি।’
হারনাই দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি জেলা।
কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে বেলুচ লিবারেশন আর্মি প্রায়ই অন্যান্য প্রদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বা পাকিস্তানিদের, বিশেষ করে বেলুচিস্তানের পাঞ্জাবিদের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলার দাবি করে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সেনাবাহিনীর আলাদা তিন অভিযানে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী প্রদেশের লাক্কি মারওয়াত, কারাক ও খাইবার জেলায় অভিযান চালায়।
এতে আরও বিবৃতিতে বলা হয়, লাক্কি মারওয়াতে অভিযানে ১৮ সন্ত্রাসী নিহত ও ছয়জন আহত হন। কারাক জেলায় আরও ৮ সন্ত্রাসী নিহত হন।
সেনাবাহিনী আরও বলেছে, তাদের তৃতীয় অভিযানটিতে গোষ্ঠীটির নেতাসহ ৪ সন্ত্রাসী নিহত ও দুজন আহত হন।
অভিযানে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
এলাকায় অন্য সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি নির্মূল করতে একটি ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালানো হচ্ছে।
সেনাবাহিনী বলেছে, দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিপদ নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
আরও পড়ুন:ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
পুলিশ জানায়, একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মীর কাজ করতেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
বাহিনীটি আরও জানায়, শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা একটি নির্জন এলাকায় নারীর মৃতদেহ দেখতে পান। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন।
কর্ণাটক থেকে পিটিআই শনিবার এ খবর জানায়।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রাণ হারানো নারী বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি ছয় বছর ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন।
তার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তবে তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
ওই নারী বৃহস্পতিবার তার সহকর্মীকে বলেছিলেন, তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে এবং দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে বলেন তাকে ছাড়াই চলে যেতে। তবে বাড়ি ফিরতে নারীর দেরি হলে তার স্বামী রামমূর্তি নগর থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী স্বেচ্ছায় কোনো নির্জন জায়গায় গিয়েছিলেন পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল।
তথ্য পাওয়ার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পূর্ব বিভাগ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) দেবরাজ।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১২ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
নয়াদিল্লি মাওবাদীদের দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা দমনে পদক্ষেপ জোরদার করেছে। শুক্রবার পুলিশ এই খবর জানায়।
কয়েক দশকের মাওবাদী সহিংসতায় ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হন।
বিদ্রোহীদের দাবি, তারা প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সহিংসতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছত্রিশগড়ের বিজাপুর জেলার বন-জঙ্গলে বৃহস্পতিবার এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পি. এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১২ মাওবাদী নিহত হয়েছে।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই শতাধিক মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সরকার আশা করছে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্রোহীদের দমন করা সম্ভব হবে।
বিদ্রোহীরা গত কয়েক বছরে সরকারি সেনাদের টার্গেট করে বেশ কিছু প্রাণঘাতী হামলা চালায়।
চলতি মাসের গোডার দিকে রাস্তায় পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে ৯ ভারতীয় সেনা নিহত হন।
আরও পড়ুন:ভারতের মুম্বাইয়ে নিজ বাসায় অনুপ্রবেশকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলী খান।
স্থানীয় সময় বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, রাত আড়াইটায় একজন অনুপ্রবেশকারী বাসায় ঢুকে সাইফ আলীকে ছয়বার ছুরিকাঘাত করে। বর্তমানে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার চলছে।
হাসপাতালকর্মীরা বলছেন, সাইফ আলী খান এখন বিপদমুক্ত। রাতে তার নিউরো সার্জারি করা হয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি চলছে।
এ ঘটনায় বান্দ্রা থানায় একটি এজাহার করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, সাইফ আলী যখন বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন একজন অনুপ্রবেশকারী চুপিসারে তার বাসায় ঢোকেন। এ সময়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাইফের হাতাহাতি হয়।
এরপর সাইফ আলী খানকে ছয়বারের বেশি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান অনুপ্রবেশকারী।
এক বিবৃতিতে লীলাবতী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছয়টি আঘাতের মধ্যে দুটি তার মেরুদণ্ডের কাছে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।
এরই মধ্যে তার বাসার তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত করছে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
এক বিবৃতিতে সাংবাদিক ও ভক্তদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে সাইফ আলী খান টিম।
এতে বলা হয়, ‘এটি এখন পুলিশের কাজ। আমরা আপনাদের হালানাগাদ তথ্য জানিয়ে দেব।’
কারিনা কাপুর খান টিমও একই বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পরিবারের অন্য সদস্যরা ভালো আছেন।’
আরও পড়ুন:নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই শনিবার বলেছেন, তিনি তার জন্মভূমি পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে ‘অভিভূত’ ও ‘আনন্দিত’।
ইসলামি বিশ্বে নারী শিক্ষাবিষয়ক বিশ্বব্যাপী এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ২০১২ সালে স্কুলছাত্রী মালালাকে পাকিস্তানি তালেবানরা গুলি করে এবং এরপর তিনি বিদেশে চলে যান। বিদেশে যাওয়ার পর মাত্র কয়েকবার তিনি দেশে আসেন।
রাজধানী ইসলামাবাদে সম্মেলনে পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত, অভিভূত ও আনন্দিত।’
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দুই দিনব্যাপী এ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন শনিবার সকালে। এতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন।
স্থানীয় সময় রোববার ইউসুফজাইয়ের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম এক্সে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি সকল মেয়ের স্কুলে যাওয়ার অধিকার রক্ষার বিষয়ে কথা বলব। আফগান নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কেন তালেবান নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারেও বলব।'
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এএফপিকে জানান, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তালেবান ইসলামাবাদের এ আমন্ত্রণে কোনো সাড়া দেয়নি।
আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেতে বাধা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবান সরকার আফগানিস্তানে কঠোরভাবে ইসলামী আইন আরোপ করেছে। জাতিসংঘ একে ‘লিঙ্গ বর্ণবাদ’ বলে অভিহিত করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তান তীব্র শিক্ষা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটিতে দুই কোটি ৬০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে। তাদের অধিকাংশই দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকার একটি স্কুল বাসে ২০১২ সালে পাকিস্তান তালেবান জঙ্গিদের হামলার পর ইউসুফজাই বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপর তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়।
পরবর্তী সময়ে তিনি নারী শিক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। ১৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হন তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য