সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্বের বার্তা দিতে এবার দলিত পুরোহিতের চিবানো মিষ্টি হাসিমুখে খেয়ে নিলেন ভারতের এক মুসলিম রাজনীতিবিদ।
বেঙ্গালুরুর চামরাজপেট আসনের বিধায়ক (এমএলএ) জামির আহমেদ খান রোববার দলিত সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব আম্বেদকর জয়ন্তী এবং মুসলমানদের ঈদে মিলন উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।
সেখানে বক্তব্য দেয়ার মাঝে একটি মিষ্টি তিনি তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুরোহিতকে খাইয়ে দেন। এরপর পুরোহিতকে চিবানো মিষ্টি মুখ থেকে বের করে তার মুখে দেয়ার অনুরোধ করেন এমএলএ নিজেই।
এতে পুরোহিত কিছুটা ঘাবড়ে গেলেও দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বিধানসভার সদস্যের অনুরোধে নিজের চিবানো মিষ্টি পুড়ে দেন এমএলএ-র মুখে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তুলে ধরতে বিধায়কের এমন দৃষ্টান্তমূলক সম্প্রীতির ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
ভারতে হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ইস্যুগুলোকে উসকে দিয়ে ফায়দা আদায় করা রাজনীতিকদের উদ্দেশ করে বিধায়ক জামির আহমেদ খান বলেন, ‘বিভিন্ন ধর্মীয় উগ্রবাদী দল ভারতের মাটিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
চারবারের বিধায়ক জামির খান এর আগে খাদ্য ও নাগরিক অধিকার, ভোক্তা অধিকার এবং সংখ্যালঘুদের কল্যাণবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ভারতের উত্তরপ্রদেশে হিন্দু দেবদেবীর ছবি ছাপা ছিল এমন খবরের কাগজে মুড়ে মুরগির মাংসের খাবার বিক্রির অভিযোগে এক রেস্তোরাঁ মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেস্তোরাঁ মালিক মহম্মদ তালেবের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
দেবদেবীর ছবিযুক্ত কাগজে খাবার বিক্রি করে হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ তুলে তালেবের দোকানের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজ্যটির উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ‘হিন্দু জাগরণ মঞ্চ’ এই বিক্ষোভ করে।
পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
যেভাবে ঘটনার শুরু
উত্তরপ্রদেশের সম্ভল শহরে তালেবের রেস্তোঁরাটির নাম ‘মেহেক’। বেশ পুরনো এই রেস্তোরাঁ থেকে অনেকেই মাটন কাবাব, চিকেন তান্দুরির মতো খাবার পার্সেল করে নিয়ে যায়।
গত ১ জুলাই থেকে ভারতে পলিথিনের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে দোকানিরা বাধ্য হয়ে কাগজের ব্যাগ বা খবরের কাগজের ঠোঙাতেই ক্রেতাদের হাতে জিনিসপত্র তুলে দিতে শুরু করেছেন। তালেব দোকানে ব্যবহার করছিলেন পুরনো খবরের কাগজ। আর হিন্দুদের নবরাত্রি উৎসবের সময় প্রকাশিত সেই কাগজগুলোতে ছিল নানা হিন্দু দেবদেবীর ছবি।
সেই কাগজে মুড়ে মুরগির মাংস দিয়ে তৈরি খাবার বিক্রি করা হচ্ছে বলে রোববার খেয়াল করেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরা। তারা রেস্তোরাঁটির সামনে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন।
হিন্দু জাগরণ মঞ্চের জেলা সভাপতি কৈলাস গুপ্তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তালেব ও তার দোকানের কর্মীরা।
রাজ্য পুলিশ যা বলছে
সম্ভলের পুলিশ সুপার চক্রেশ মিশ্রা মঙ্গলবার টুইটারে জানান, রেস্তোরাঁয় হিন্দু দেবদেবীদের ছবি সংবলিত কাগজে মুড়ে মাংস বিক্রি করার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ দোকানের মালিক তালেব ও কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তাদের ওপর ছুরি-চাকু নিয়ে হামলার চেষ্টা চালানো হয়।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ এরপর তালেবকে গ্রেপ্তার করে। আদালতের নির্দেশে তাকে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
‘এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। কেউ যাতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে না পারে সে ব্যাপারেও পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’
তালেবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানো এবং ইচ্ছাকৃতভাবে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
‘সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত’
এদিকে রেস্তোরাঁটির একজন কর্মী জানিয়েছেন, তাদের মালিক কাবাডি বা পুরনো জিনিসপত্রের দোকান থেকেই ওই খবরের কাগজগুলো ঠোঙা বানাতে কিনে এনেছিলেন। তারা কেউ খেয়াল করেননি যে তাতে হিন্দু দেবদেবীর ছবি আছে।
এই ঘটনা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত বলে তিনি দাবি করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়
ভারতে সোশ্যাল মিডিয়াতে এ ঘটনা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। একদল বলছেন, হিন্দু দেবদেবীদের যারা এভাবে অপমান করার সাহস পায় তাদের এ ধরনের শাস্তিই প্রাপ্য।
আরেক দল বলছে, তালেব যদি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে গ্রেপ্তার হন তাহলে বিজেপির সাবেক মুখপাত্র নূপুর শর্মা এখনও জেলের বাইরে কেন?
অর্থনীতিতে আমদানি ব্যয়ের চাপ কমাতে এবং বিলাস পণ্য আমদানির লাগাম টেনে ধরতে আরও কড়াকড়ি আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সব ধরনের মোটরকার, হোম অ্যাপ্লায়েন্স হিসেবে ব্যবহৃত ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, প্রসাধনী, স্বর্ণালংকার, তৈরি পোশাক, গৃহস্থালি বৈদ্যুতিক সামগ্রী বা হোম অ্যাপ্লায়েন্স, পানীয়সহ বেশকিছু পণ্য আমদানিতে এখন থেকে ব্যাংক থেকে কোনো ধরনের ঋণসুবিধা পাবেন না আমদানিকারকরা।
এসব পণ্যের আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে শতভাগ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে। এর আগে যা ছিল ৭৫ শতাংশ।
অর্থাৎ এসব বিলাসজাতীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে পণ্যের পুরো আমদানিমূল্য ব্যাংকে জমা দিতে হবে আমদানিকারকদের। এসব পণ্য আমদানির জন্য ব্যাংক কোনো ধরনের ঋণ দিতে পারবে না।
সব ধরনের মোটরকারসহ বেশকিছু বিলাস পণ্য আমদানিতে এখন থেকে ব্যাংক থেকে কোনো ধরনের ঋণসুবিধা পাবেন না আমদানিকারকেরা। ফাইল ছবি
দেশের সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এক সার্কুলারে সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় চাপের মুখে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। বাণিজ্য ঘাটতি ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
ফলে ডলারের দাম বেড়েই চলেছে। আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারেই এখন এক ডলারের জন্য ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা খরচ করতে হচ্ছে।
ব্যাংকগুলো ডলার বিক্রি করছে এর চেয়ে সাড়ে পাঁচ-ছয় টাকা বেশি দরে।
এ নাজুক পরিস্থিতিতে আমদানি ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরতে বিলাস পণ্য আমদানি কমাতে আরও কড়াকড়ি আরোপ করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, করোনার দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব এবং বহির্বিশ্বে সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থা প্রলম্বিত হওয়ার কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে দেশের মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অধিকতর সুসংহত রাখার লক্ষ্যে আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে নগদ মার্জিন হার পুনর্নির্ধারণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হলো।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মোটরকার (সেডানকার,এসইউভি, এমপিভি ইত্যাদি), ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিকস হোম অ্যাপ্লায়েন্স, স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার, মূল্যবান ধাতু ও মুক্তা, তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্রসাধনী, আসবাব ও সাজসজ্জার সামগ্রী, ফল ও ফুল, নন–সিরিয়াল ফুড (যেমন অশস্য খাদ্যপণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য ও পানীয়, যেমন টিনজাত খাদ্য, চকলেট, বিস্কুট, জুস, সফট ড্রিংকস ইতাদি), অ্যালকোহল–জাতীয় পানীয়, তামাক, তামাকজাত বা এর বিকল্প পণ্যসহ অন্যান্য বিলাসজাতীয় পণ্যের আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে শতভাগ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে।
অর্থাৎ কোনো ব্যবসায়ী বা ব্যক্তি ১ কোটি টাকার একটি গাড়ি আমদানি করতে চাইলে তাকে পুরো টাকা নগদ দিতে হবে। ব্যাংক কোনো ঋণ দেবে না।
গত ১১ এপ্রিল জরুরি পণ্য ছাড়া অন্য সকল পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ এলসি মার্জিন রাখার নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
এরপর ১০ মে সে নির্দেশনায় পরিবর্তন এনে সব ধরনের গাড়ি, ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আমদানির এলসি খুলতে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ নগদ মার্জিন রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। জরুরি পণ্য ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ মার্জিন রাখতে বলা হয়।
আরও পড়ুন:ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে ফিল্ডস নামে একটি শপিং মলে এক বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
রোববার মাঝরাতে দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় আরও অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন।
কোপেনহেগেন পুলিশ অপারেশন ইউনিটের প্রধান পুলিশ ইন্সপেক্টর সোরেন থমাসেন বলেছেন, সন্দেহভাজন হামলাকারীকে ইতোমধ্যেই আটক করা হয়েছে। ২২ বছর বয়সী জাতিগত ডেনিশ ওই যুবককে রাজধানীর দক্ষিণ প্রান্তে ফিল্ডস শপিং সেন্টারের কাছ থেকে আটক করা হয়।
সাংবাদিকদের সোরেন বলেন, ‘আমরা জানি সেখানে কয়েকজন নিহত হয়েছেন। অনেকে আহতও হয়েছেন।’
এ ঘটনায় সন্ত্রাসবাদকে উড়িয়ে দেয়া যায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এতে আরও মানুষের সম্পৃক্ততা আছে কি-না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই মুহূর্তে শহরের কাউকেই সন্দেহের বাইরে রাখা হচ্ছে না। তবে ‘জাতিগত ডেন’ ছাড়া আটক যুবক সম্পর্কে খুব বেশি বিবরণ দেননি সোরেন।
ফিল্ডস শপিং সেন্টারটি কোপেনহেগেনের উপকণ্ঠে অবস্থিত। সাবওয়ে লাইনের বিপরীতে, যা শহরের কেন্দ্রকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে যুক্ত করেছে।
পাশ্চাত্যের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ঘটনাস্থল থেকে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার তৎপরতা ছাড়াও প্রাণভয়ে নারী-পুরুষদের ছোটাছুটি করতেও দেখা গেছে।
কোপেনহেগেনের মেয়র সোফি এইচ অ্যান্ডারসেন এক টুইটে লিখেছেন, ‘ফিল্ডসে গুলি চালানোর ভয়ংকর খবর! আমরা এখনও নিশ্চিত নই কতজন আহত বা মারা গেছেন। তবে এটি খুবই গুরুতর।’
আরও পড়ুন:ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পাঁচিল টপকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি ভেতরে ঢুকে পড়ায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
কলকাতার কালীঘাটের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষীরা রোববার সকালে ওই ব্যক্তিকে বাড়ির ভেতরে দেখতে পান। একইসঙ্গে তারা জানতে পারেন, ওই লোক সেখানে পুরো রাত নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, শনিবার রাত ১টার পর হরিশ চ্যাটার্জী রোডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পাঁচিল টপকে ভেতরে ঢুকে পড়েন ওই ব্যক্তি। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি রাখার জায়গা পর্যন্ত পৌঁছে যান। এবং সারারাত মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেই কাটান। পরে কালীঘাট থানার পুলিশ তাকে আটক করে।
ওই ব্যক্তি কী উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকেছিলেন তা জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে কিভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়লেন ওই ব্যক্তি তা তদন্ত করে দেখছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
এ ঘটনার পর রাজ্যের পুলিশ কমিশনার, ডিজি, ডিসি সাউথসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা জরুরি বৈঠকে বসেন।
জয়েন্ট সিপি ক্রাইম মুরলিধর শর্মা বলেন, ‘সন্দেহজনক উদ্দেশ্য নিয়েই ওই ব্যক্তি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিষয়টি বিশেষ জোর দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে।’
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। সেই নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে কীভাবে ওই ব্যক্তি কী উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকেছিলেন তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:মহানবী (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য ঘিরে সৃষ্ট বিতর্কে ভারতে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেত্রী নূপুর শর্মাকে দু-দুবার হাজিরা দেয়ার নোটিশ পাঠালেও তিনি পুলিশের মুখোমুখি হননি। এবার তার বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করেছে কলকাতা পুলিশ।
কলকাতার নারকেলডাঙ্গা থানায় নূপুরের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে এই লুকআউট নোটিশ জারি করেছে পুলিশ।
বিজেপি থেকে বরখাস্ত হওয়া নূপুর শর্মা মহানবী (স.)কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার জের ধরে ভারতে অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিদেশেও এ নিয়ে সমালোচনা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। বাদ যায়নি পশ্চিমবঙ্গও। এই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শক্রমে কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন থানায় এফআইআর দায়ের হয় নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে। কলকাতার নারকেলডাঙ্গা থানায় নূপুরের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে সমন পাঠায় কলকাতা পুলিশ। কিন্তু নূপুর কলকাতা পুলিশকে ই-মেইল করে জানান, নিজের প্রাণের ঝুঁকির কারণে তিনি এখনই হাজিরা দিতে পারছেন না। সে জন্য তিনি চার সপ্তাহ সময় চেয়ে নেন।
চার সপ্তাহ পর আবারও জুনে সমন পাঠালে বিজেপি নেত্রী সেই হাজিরাও এড়িয়ে যান। এরপর নারকেলডাঙ্গা থানার অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করে।
পুলিশ সূত্রে খবর, নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে রাজ্যের অন্তত ১০টি থানায় এফআইআর হয়েছে। নূপুরের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগের তদন্ত প্রয়োজন। সে কারণে লুকআউট নোটিশ জারি হয়েছে।
আরও পড়ুন:বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্যপদ ছেড়ে দিচ্ছে সাত দেশ- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কিছু পোস্ট এখন আলোচনায়। এসব পোস্টে বলা হচ্ছে, চীন, ভারত এবং রাশিয়াসহ সাত দেশ ঘোষণা দিয়েছে, তারা সংস্থাটি ছেড়ে দেবে। তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে বাস্তবে এমন কিছুই ঘটছে না। সংস্থাটির কোনো সদস্যই এমন ঘোষণা দেয়নি।
মিথ্যা দাবিটি ৪ জুন প্রথম টুইটারে শেয়ার হয়। যে অ্যাকাউন্ট থেকে এটি শেয়ার হয়, সেটির প্রায় ১৪ হাজার ফলোয়ার রয়েছে।
চীনা অক্ষরে ওই পোস্টে লেখা হয়, ‘রাশিয়া, ভারত, চীন, সাউথ আফ্রিকা, ইরান এবং মালয়েশিয়ার পাশাপাশি ব্রাজিল ঘোষণা দিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও)-এর সদস্যপদ ছেড়ে দিচ্ছে তারা।
লেখার সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধিবেশনের একটি ছবি প্রকাশ হয়, যেটি ২০১৭ সালের।
আরও কয়েকটি অ্যাকাউন্ট থেকে একই দাবি করে টুইট করা হয়। বাদ যায়নি ফেসবুক। কেবল তা-ই নয়, ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায় একই ধরনের দাবি করা আরও কিছু টুইট ছড়িয়ে পড়েছে।
সেখানে বলা হয়, ভবিষ্যতে রোগের প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে এজেন্সির প্রতিক্রিয়াকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ডব্লিওএইচও নীতিমালায় পরিবর্তন আনছে। যুক্তরাষ্ট্র সংশোধনীর প্রস্তাবটি তুলেছে।
এই প্রস্তাব পাস হলে ডব্লিওএইচও সদস্য দেশের অভ্যন্তরীণ নীতিতে হস্তক্ষেপ করতে পারবে।
এসব পোস্টে করা মন্তব্যগুলোও জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালকে উল্লেখ করে একজন লেখেন, ‘ডব্লিউএইচও কি চীন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়? টেড্রোসের এখন কী হবে?’
আরেকজন লেখেন, ‘আপনি চলে যাওয়ার সময় দয়া করে টেড্রোসকে নিয়ে যান।’
বিষয়টি নিশ্চিত হতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, সংস্থাটির এক মুখপাত্র জানান, এমন কিছুই ঘটছে না।
তিনি বলেন, ‘ডব্লিউএইচও-এর ১৯৪ সদস্য রাষ্ট্রের কেউই সংস্থা থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়নি।’
একাধিক গুগল কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানেও এ ইস্যুতে বিশ্বাসযোগ্য কোনো প্রতিবেদন বা ঘোষণা পাওয়া যায়নি। ডব্লিওএইচও-র ওয়েবসাইটে এসব দেশের নাম এখনও রয়েছে।
আরও পড়ুন:পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য ভারতের তাজমহলের ভেতরে কোনো হিন্দু মন্দির বা দেবদেবীর মূর্তি নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই)।
পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র আরটিআই অ্যাক্টিভিস্ট সাকেত গোখেলের প্রশ্নের জবাবে ভারতের পুরাতত্ত্ব বিভাগ এমন তথ্য জানিয়েছে।
তথ্য জানার অধিকার আইনের আওতায় সাকেত গোখেলের প্রশ্নের জবাবে পুরাতত্ত্ব বিভাগ জানায়, এএসআইয়ের রেকর্ড অনুযায়ী ‘তেজো মহালয়’ নামে কোনো শিবমন্দিরের কাঠামোর ওপর তাজমহল নির্মিত হয়নি। আর তাজমহলের ভেতরে হিন্দু দেবদেবী রয়েছেন, এমন কোনো বন্ধ ঘরও নেই।
দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি নেতারা দাবি করে আসছিলেন, তাজমহল আসলে হিন্দুদের তেজো মহালয় বা শিবমন্দিরের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে। কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলাও করে। এমনকি তাজমহলের একাংশ ভেঙে শিবমন্দির গড়ার দাবি তোলে তারা।
সেই দাবি নিয়ে আদালতে ধাক্কা খাওয়ার পর ভারতের পুরাতত্ত্ব বিভাগের এই জবাবে শিবমন্দির এবং তাজমহল বিতর্কে বড়সড় ধাক্কা খেল বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের হিন্দু-মুসলিম বিতর্ক উসকে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার হাতিয়ার ভোঁতা হয়ে গেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
মন্তব্য