সন্তান জন্মদানের মধ্য দিয়ে মাতৃত্বের জটিল অধ্যায় শুরু হয় নারীর। প্রক্রিয়াটি প্রাকৃতিক হলেও গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদান-পরবর্তী সময়গুলো একজন নারীর সামনে তৈরি করে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে প্রথমবার মা হওয়া নারীর জন্য জটিলতাগুলো বেশি প্রকট।
নতুন মা হওয়া নারীরা তাদের স্বজন, বন্ধু এমনকি অপরিচিতজনের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত পান নানান পরামর্শ ও উপদেশ। এগুলো তাদের আরও ভারাক্রান্ত করে ফেলতে পারে। নিজের মাতৃত্বের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইসে এ বিষয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছেন ওয়ানা নিনেচিউ। আন্তর্জাতিক মা দিবস উপলক্ষে নিবন্ধটি বাংলায় ভাষান্তর করেছেন নুসরাত জাবীন বিভা।
সন্তান জন্মদান একটি ভীষণ একান্ত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। আমি আগে এ বিষয়ে প্রচুর পড়েছি, কথা বলেছি। এর পরও সন্তান জন্ম দেয়ার দিনটিতে আচ্ছন্ন করে রাখা উত্তেজনা, ভয় ও পরম মমতাবোধের অনুভূতির জন্য আমি তৈরি ছিলাম না। বিষয়টি চমৎকার, কিন্তু একই সঙ্গে ভীতিকর ও তীব্র একাকিত্বের।
প্রথমবার মা হওয়ার সময় আপনার প্রচুর বন্ধুসুলভ সমর্থন প্রয়োজন। কারণ আপনাকে তখন অনেক কিছু মোকাবিলা করতে হবে। তবে বাস্তবে এমনটি ঘটে না। প্রচুর মানুষ আপনাকে বলবে কী করা উচিত এবং কী উচিত নয়। তাদের অনেকে হয়তো আপনার পরিস্থিতি জানেনও না।
রাস্তার অপরিচিত লোক থেকে শুরু করে আপনার ভালো চান এমন বন্ধু, আত্মীয়, ফেসবুকের প্যারেন্টিং গ্রুপের অপরিচিত সদস্য- সবার কাছ থেকে সন্তানের পরিচর্যা, খেলনা, খাবার চিকিৎসা, অভ্যাস নিয়ে প্রচুর পরামর্শ পাবেন। আমি যখন এমন অতিরিক্ত উপদেশ পাচ্ছিলাম তখন সেগুলোর মানে বুঝতে সমস্যা হচ্ছিল। সঠিক কাজটা করতে আমাকে প্রচুর ধকলও পোহাতে হয়েছে।
আমার ক্ষেত্রে তখন থেরাপি ছিল একমাত্র সমাধান। এটি সন্তান জন্মদান-পরবর্তী সময়ে আমার ও আমার সন্তানের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। আমি বুঝতে শিখেছি পারফেক্ট মা বলে কিছু নেই, বরং সন্তানের জন্য ভালো মা হওয়াটিই বেশি জরুরি। ভালো মা হওয়া মানে হলো সন্তান ও নিজের মধ্যে একটি ছন্দময় জীবন গড়ে তোলা।
মাতৃত্বের এই সময়ে আমি বেশ কিছু বিষয় শিখেছি, যা আমাকে সেই ছন্দ তৈরিতে সাহায্য করেছে।
গর্ভাবস্থা এবং সুন্দরের মানদণ্ড
গর্ভাবস্থা চলার সময় আমি মোটামুটি ভালোই ছিলাম। কোনো বমি বমি ভাব বা ব্যথা ছিল না। আমার সন্তান যখন পেটে লাথি দেয়া শুরু করল তখন শারীরিকভাবে বুঝতে পারি আমি গর্ভবতী। পুরোটা সময় খুব সক্রিয় ছিলাম। খেলাধুলা করেছি, প্রচুর হেঁটেছি, প্রায় সবকিছু খেয়েছি এবং কখনও কখনও এক গ্লাস রেড ওয়াইনও খেয়েছি। একটি জিনিসই আমি বাদ দিয়েছিলাম, সেটি হলো সিগারেট। আমি খুব ভাগ্যবান ছিলাম, কারণ আমার অতিরিক্ত ওজন বাড়েনি। যদিও মানুষ আমাকে প্রথম প্রশ্নই করত, ওজন কত বেড়েছে?
আমার ক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষের মন্তব্য ছিল তুষ্টিমূলক। মানুষ বলেছে আমাকে কতটা সুন্দর দেখাচ্ছে, আর এই কথা শুনে আমার মুখ আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠত। তবে দয়া করে আপনারা একজন গর্ভবতী নারীর শারীরিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে মন্তব্য করবেন না।
স্বাভাবিকভাবে জন্মদান বনাম সিজার
গর্ভে আমার সন্তানের অবস্থান বদলে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে প্রসব সম্ভব ছিল না। তাই সিজার করতে হয়েছিল। এটি আমার কাছে ছিল একটি ধাক্কা। আমি স্বাভাবিকভাবে প্রসবের জন্য সংকল্পবদ্ধ ছিলাম। সবাই আমাকে বলত এটি একটি চমৎকার সিদ্ধান্ত, অনেক সহজ এবং সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো। তাই যখন শুনলাম এটি সম্ভব নয় তখন ভেঙে পড়েছিলাম। আমি কেঁদেছি এবং প্রচুর দুশ্চিন্তা করেছি। তবে আসলে এটি কোনো বিষয়ই ছিল না। অপারেশন ঠিকঠাক হয়েছিল, আমি দ্রুত সেরে উঠেছিলাম এবং সন্তান সুস্থ ছিল।
কে কীভাবে সন্তানের জন্ম দেবে, সেটি আপনার বলার কথা নয়। ‘প্রাকৃতিকভাবে জন্মদানের আশ্চর্য’ অভিজ্ঞতা না পেলে খারাপ কিছু ঘটবে না। বিষয়টি নিয়ে আমারও একদম কোনো অনুশোচনা ছিল না।
স্তন্যদান
আমার কাছে বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো জাদুর মতো ছিল। ছোট্ট মেয়েটার ওজন বাড়ছিল না, কারণ সে আমার স্তন চুষতে পারত না। তাই ডাক্তার আমাকে কৌটার দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন।
আমি সবভাবে অনেক চেষ্টা করেছি, তবে ওর বয়স যখন পাঁচ মাস তখন একেবারে চোষা বন্ধ করে দেয়। আমার শরীরে দুধ তৈরিও বন্ধ হয়ে যায়। আমি আমার ডাক্তারকে এর জন্য দোষ দিই, আমার কম বয়সকে দোষ দিই। মাথায় গেঁথে যাওয়া তথাকথিত ব্যর্থতাকে ব্যাখ্যা করার সব রকম চেষ্টা করেছি। তবে বিষয়টির সমাপ্তি ঘটায় গোপনে খুশিও হয়েছিলাম।
ওই সময়টা আমার জন্য খুব কঠিন ছিল। নিজেকে ভীষণ অসম্পূর্ণ মনে হতো। তবে ছয় মাস বয়সে যখন বাচ্চাকে নানা বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার খাওয়ানোর কথা, তখন ওকে যা খেতে দিয়েছি তাই খেয়েছে। সে কখনোই বুকের দুধের ওপর নির্ভরশীল ছিল না।
আমি একা নই। আমার অনেক বন্ধু এবং পরিচিতজনও একই সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছেন। তাদের সবসময় বলা হয়েছে, ‘স্তন্যদান বিশেষজ্ঞকে ডাকো’, ‘হাল ছেড়ে দিয়ো না’, ‘দুধ ফ্রিজে রেখে দাও’ এবং ‘আরও অত্যাধুনিক ব্রেস্ট পাম্প কেনো।’
যেসব মা তাদের সন্তানদের অন্তত ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ান না, মানুষ তাদের ধিক্কার জানান এবং গুঁড়া দুধ সম্পর্কে ভীতির জন্ম দেন। এসব মানুষের উদ্দেশে আমার একটাই কথা, আপনারা নিজের চরকায় তেল দিন।
বুকের দুধ খাওয়ানো বাধ্যতামূলক নয়। এটি সেসব মায়েদের জন্য যারা বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন এবং খাওয়াতে চান। আমরা জানি বিষয়টি স্বাস্থ্যকর। আমরা এটাও জানি, গবেষণায় দেখা গেছে, এতে শিশুরা কিছু বাড়তি সুবিধা পায়। তবে অনেক সময় এটি সম্ভব হয় না এবং কৌটার দুধ খাওয়াতে সমস্যা নেই।
শিশুর খাবার
সবজির ভেতরে আমি আমার বাচ্চাকে প্রথমে গাজর খেতে দিয়েছিলাম। সে আধ চামচ খেয়ে ফেলেছিল। তবে ঘটনাটি বলার পর সবার যেন প্রশ্নের শেষ ছিল না। ‘গাজরগুলো কোথায় থেকে কিনেছিলে?’, ‘এগুলো কি অর্গানিক ছিল?’, ‘তুমি কি এগুলো গ্রামের দিক থেকে এনেছিলে?’
কেউ কেউ যেকোনো খাবার নিয়েই খোঁচার ভঙ্গিতে এসব বলেছেন। সত্যি বলতে, আমার দামি অর্গানিক দোকানে দোকানে যাওয়ার মতো সময় ছিল না। আর আমি বেশিদিন এগুলো কিনতেও পারতাম না। এই আলোচনাগুলো খুবই অর্থহীন এবং এগুলো কোনো কাজে আসে না।
আমার এক বন্ধু একবার ফেসবুকে পোস্ট করেছিল, ‘যদি একজন দরিদ্র গর্ভবতী নারী কলের পানি খায় এবং তার কোনো ক্ষতি না হয় তাহলে আমি বোতলের পানি কেন কিনব?’ কেউ যখন বিরক্তিকরভাবে অযাচিত বড়লোকি উপদেশ দিত তখন আমি এটি নিয়ে ভাবতাম। এটি আমাকে বাস্তবে টিকে থাকতে সাহায্য করত।
শিশুর পোশাক
আপনি নতুন মা হিসেবে অনলাইনে ঢোকামাত্র বাচ্চাদের হালকা বাদামি, সাদা ও প্যাস্টেল রঙের পোশাক পরা হাজারও ছবি দেখবেন। কিন্তু আপনি তিন মাসের একটি বাচ্চার জন্য উলের দামি টাইটস কেন কিনবেন, যা কি না আর তিন মাস পরই ছোট হয়ে যাবে? তার ওপর হালকা বাদামি! এটি তো এক মিনিটেই নোংরা হয়ে যাবে।
আরেকটি কথা, কিছু মানুষ আছে যাদের জীবনের সম্ভবত একমাত্র লক্ষ্য আপনি আপনার বাচ্চাকে কী পরাচ্ছেন তা দেখভাল করা। ‘মাথায় একটি টুপি পরাও,’ ‘এখন শীতকাল, মুখ আর গলা অবশ্যই ঢাকতে হবে,’ ‘মেয়ে বাবু? গোলাপি রঙের জামা পরাওনি কেন?’
দয়া করে এ ধরনের অযাচিত উপদেশ থামান।
শিশুর ঘুম
আমার বাচ্চার বয়স এখন ছয় বছর। সে সবসময় মোটামুটি একাই ঘুমায়, আঙুল চোষে না। পার্কের বেঞ্চে অথবা তার স্কুলে সহজেই দুই ঘণ্টা ঘুমিয়ে নিতে পারে। অথচ ওর বেড়ে ওঠার সময় দোল দিয়ে ঘুম পাড়ানো থেকে শুরু করে, চুষনি দেয়া অথবা বিছানায় ঘুম পাড়িয়ে একা রাখলে ভয় পাবে এবং সারা জীবনের মতো ঘুমের স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যাবে- এমন নানান বিষয় আমাকে বিশ্বাস করানো হয়েছিল।
ঠিক আছে, যখন আমরা শিশু ছিলাম তখন এই সাধারণ অভ্যাসগুলো আমাদের করানো হয়েছে। তবে ঘুম বিষয়টি জটিল। দুটি বাচ্চা যেমন এক নয়, তেমন অভ্যাসও নয়। আমাদের খুঁজে বের করতে হবে কোন অভ্যাসটি বাচ্চার জন্য উপযোগী। কীভাবে ঘুম পাড়ানো হচ্ছে সেটি নয়, বরং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাচ্চার যতটা প্রয়োজন ততটা ঘুমাতে দেয়া।
শুরুতে আমার বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানো কঠিন ছিল। মাঝে মাঝে আমাকে রাত ৩টার সময় মেয়েকে প্র্যামে শুইয়ে ঘুম পাড়ানোর জন্য নিয়ে বের হতে হতো। শিশুর ঘুমের ধরন একজন মায়ের জীবনে প্রচুর সমস্যা তৈরি করতে পারে, তাই এ বিষয়ে নাক গলাতে আসবেন না। নতুন বাবা-মা হিসেবে আপনি নানা রকম চেষ্টা করুন। যদি বিষয়গুলো কঠিন হয়ে ওঠে তাহলে মনে রাখতে হবে আপনার পেশাদার কারও কাছে যেতে হতে পারে।
অযাচিত উপদেশ বন্ধের বিষয়টি আমাকেও শিখতে হয়েছে
সম্প্রতি এক বন্ধুর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। মাত্র সন্তান প্রসব করায় সে তখনও হাসপাতালে। আমি তাকে বলছিলাম বাচ্চাকে নার্সদের কাছে দিয়ে পেইনকিলার খেতে। তাহলে সে অন্তত দুই ঘণ্টা ঘুমাতে পারবে। তাকে এমন বলার কারণ হলো, আমি ভেবেছিলাম হাসপাতাল ছাড়ার পর সে ঘুমানোর সুযোগ পাবে না। আমি এটা বলেছিলাম কারণ ওই পরিস্থিতিতে আমিও এটা করতাম বলে মনে হয়েছিল।
তারপর আমার মনে হলো হয়তো সে বাচ্চাকে পাশে শুইয়ে তার নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে চায়, যেমনটা আমি করেছিলাম। হয়তো আমি যা বলেছি তা নির্বোধের মতো ছিল। সম্ভবত সে আমার উপদেশে খুশি হয়নি। আমার এই নতুন উপলব্ধিটি তৈরি হয়েছে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে।
মানুষের নিজের সিদ্ধান্ত নিজের নেয়ার স্বাধীনতা আছে। সেগুলো সবচেয়ে ভালো যদি নাও হয় বা অন্যদের থেকে আলাদা কিছুও যদি হয়, তাহলেও এই ব্যক্তির স্বাধীনতা বজায় থাকা উচিত। আমরা মায়েদের এত বেশি চাপ দেই যে, মাঝে মাঝে এই সত্যটি আমরা ভুলে যাই।
ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮-এর তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে মাত্র ২৯ শতাংশ নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে। অর্থাৎ প্রায় ৭১ শতাংশ নারী এখনও স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে না। পিরিয়ডের সময় অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করার ফলে সার্ভিক্যাল ইনফেকশন হতে পারে। এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহারের ফলে পরবর্তীতে বন্ধ্যাত্ব এমনকি ক্যান্সার-এরও ঝুঁকি থাকে। এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা।
এ লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই)-এর জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন’ দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশেষ ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। ‘এক্সিলেন্স বাংলাদেশ’-এর সাথে যৌথ উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে। ক্যাম্পেইন-এর অংশ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ওয়ার্কশপ ও সেশন। এর বাইরে কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের নারীদের জন্য সহজে ও সুলভ মূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন সংগ্রহরে সুবধর্িাথরে জন্য ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করছে ফ্রেশ অনন্যা।
ফ্রেশ অনন্যা-ই বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র স্যানিটারি ন্যাপকিন, যাতে রয়েছে ডাবল লেয়ারড অ্যাডভান্সড অ্যাবজর্পশন টেকনোলজি। সুবিধা ও উপযোগিতার কথা বিবেচনায় রেখে, ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এ ব্যবহার করা হয়েছে এয়ারলেইড পেপার এবং এডিএল লেয়ার। যা নিশ্চিত করে আরও দ্রুত শোষণ এবং সুরক্ষা। তাই পিরিয়ডের দিনগুলো কাটে আরও বেশি স্বস্তিতে।
ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের মাঝে পিরিয়ডকালীন পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে দেশব্যাপী স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম, ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন ইত্যাদি।
৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:
মন্তব্য