বিশ্বের সর্ববৃহৎ শিল্পকর্ম জাদুঘর ল্যুভ-এ প্রথমবারের মতো নারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন লরেন্স দেজ কার্স।
১৭৯৩ সালে ফরাসি বিপ্লবের সময় প্রতিষ্ঠিত হয় ল্যুভ। ২২৮ বছরের ইতিহাসে জাদুঘরটির প্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়া একমাত্র নারী কার্স।
শিল্পকলার মাধ্যমে সামাজিক নানা সমস্যা তুলে ধরার জন্য সুপরিচিত কার্সকে বুধবার ল্যুভ-এর পরবর্তী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ।
ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ল্যুভপ্রধান হিসেবে কার্স আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবেন।
ল্যুভ-এর বর্তমান পরিচালক জ্যঁ-লাক মার্টিনেজের মেয়াদ শেষে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন কার্স। ২০১৩ সাল থেকে ল্যুভ-এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মার্টিনেজ।
বর্তমানে প্যারিসের আরেকটি ঐতিহাসিক জাদুঘর মুজি দো’র্সের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ৫৪ বছর বয়সী লরেন্স দেজ কার্স। চার বছর আগে ল্যুভ-এর কাছেই অবস্থিত এই জাদুঘরটিরও প্রথম নারীপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।
ল্যুভ, মুজি দো’র্সে, শ্যাতু দে ভ্যার্সাই ও পম্পিদু মর্ডান আর্ট মিউজিয়ামসহ ফ্রান্সের শীর্ষ সব রাষ্ট্রীয় জাদুঘরের প্রধানদের নিয়োগে সরাসরি যুক্ত থাকেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
উনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর শিল্পকলাবিষয়ক ইতিহাসবিদ ও বিশেষজ্ঞ লরেন্স দেজ কার্স। মুজি দো’র্সে জাদুঘরের পরিবর্তন ও বৈচিত্র্যে বড় ধরনের ভূমিকা রাখার কৃতিত্ব দেয়া হয় তাকে।
২০১৯ সালে কার্সের নেতৃত্বে জাদুঘরটির একটি প্রদর্শনী সমালোচকদের ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। একই সঙ্গে এই প্রদর্শনীটি কার্সের মেয়াদে মুজি দো’র্সের সবচেয়ে আলোচিত আয়োজন হিসেবেও সুনাম কুড়ায়।
‘ব্ল্যাক মডেলস: ফ্রম জেরিকোল্ট টু ম্যাটিস’ শীর্ষক ওই প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছিল ফ্রান্সে শিল্পকলার পুরোধা খ্যাত সেসব কৃষ্ণাঙ্গ মডেলদের, আধুনিক বিশ্ব যাদের নাম ভুলতে বসেছে।
সম্প্রতি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কার্স বলেছিলেন, ‘সামাজিক বিতর্কগুলোর সঙ্গে যোগসূত্র রক্ষার মাধ্যমেই কেবল নতুন প্রজন্মের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবে জাদুঘরগুলো।’
উনবিংশ শতাব্দীর অস্ট্রিয়ান চিত্রশিল্পী গুস্তভ ক্লিমতের আঁকা একটি ছবি ১৯৩৮ সালে নাৎসি বাহিনীর কাছে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছিল একটি ইহুদি পরিবার। ছবিটি এত দিন মুজি দো’র্স জাদুঘরে সুরক্ষিত ছিল। চলতি বছর কার্সের নেতৃত্বেই ছবিটি ওই পরিবারের উত্তরসূরিদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
২০১৭ সালে মুজি দো’র্সের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন কার্স। এর আগে সোফি ম্যাকারিউয়ের পর প্যারিসের প্রধান কোনো জাদুঘরের দ্বিতীয় নারী কিউরেটর হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন কার্স।
তিনি এমন একসময়ে ল্যুভ-এর দায়িত্ব নিচ্ছেন, যখন করোনাভাইরাস মহামারি ও লকডাউনের প্রভাবে সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে কম দর্শনার্থী জাদুঘরটিতে পা রাখছে।
মহামারির দুই বছর আগে ১২ মাসে এক কোটির বেশি মানুষ ল্যুভ দর্শন করেছিলেন।
আরও পড়ুন:পঞ্চগড়ের আটোয়ারী সীমান্তে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ের সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিজিবির আহ্বানে বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত পঞ্চগড় ১৮ বিজিবির নিয়ন্ত্রণাধীন গিরাগাঁও বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার ৪০৯/২ এস সীমান্ত পিলার সংলগ্ন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রমজানপাড়া এলাকার শুন্যরেখায় এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
সৌজন্য সাক্ষাতে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন ১৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মনিরুল ইসলাম ও বিজিবি, এমএস, পিএসসি, এসি ৫০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল তানজির আহমেদ।
তার সঙ্গে ছিলেন স্টাফ অফিসারসহ মোট ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। অপরদিকে বিএসএফ-এর পক্ষে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিএসএফ ১৭ ব্যাটালিয়নের কমান্ডেন্ট শ্রী অজয় কুমার শুকলা ও বিএসএফ ১৩২ ব্যাটালিয়নের কমান্ডেন্ট রাজেশ বোহরা।
সৌজন্য সাক্ষাতে দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা, সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি রক্ষা, সীমান্ত হত্যা প্রতিরোধ, মানব পাচার, গরু পাচার রোধ এবং মাদক চোরাচালান প্রতিরোধ, পুশইনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়াও শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশার কারণে চোরাকারবারীরা সুযোগ নিতে পারে। সাক্ষাতে সীমান্ত সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। উভয় পক্ষই সীমান্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা ও চোরাচালান রোধে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
সৌজন্য সাক্ষাতের শুরুতে বিজিবি- বিএসএফ কমান্ডার পর্যায়ে কুশলাদি বিনিময় করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) শাপলা প্রতীক দিতে কোনো আইনগত বাঁধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির (উত্তরাঞ্চল) মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছি। নির্বাচন কমিশন কাউকে খুশি করার জন্য এ সিদ্ধান্ত দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন আমাদের দেখাক কোন আইনে শাপলা প্রতীক এনসিপিকে দেওয়া যাবে না। রোববার দিনাজপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সমন্বয় সভা শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, যে নির্বাচন কমিশন একটি রাজনৈতিক দলকে তাদের প্রাপ্য মার্কা দেয়ার সৎ সাহস দেখাতে পারে না, আমরা মনে করি সেই কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন এই বাংলাদেশে হতে পারে না। এনসিপি আমাদের জায়গা থেকে অবশ্যই প্রত্যাশা করি, যে আমরা শাপলা প্রতীক পেয়েই আগামী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবো। এটা যদি তারা আমাদের সাথে অন্যায় করে, তাহলে আমরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পূর্বে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলো রাস্তাঘাটে নেমে হাহাকার করতো। কর্মসূচী দিয়ে হাহাকার করতো। আমরা অনেক অফিস দেখেছি যে, অফিসের সামনে ১০ জন লোক দাড়ানোর মতো ছিল না, বড় বড় রাজনৈতিক দলের অফিস। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে জনগণ তখনই রাস্তায় নেমেছে, যাদের ওপর জনগণ আস্থা রেখেছে। এখন যদি জনগণের ওই আস্থার প্রতিদান কেউ কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দল না দেয়, জনগণ তাদের মতো করে আগামীতে যখন সুযোগ হবে জনগণ তার সুফল দেখাবে। আমরা স্পষ্ট করে বলি, আপনারা ইতিহাস থেকে দয়া করে শিক্ষা নেন। জুলাই সনদ আপনারাও চান, আমরাও চাই। আপনারা যদি জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণা পত্রের মতো নাম কাওয়াস্তে একটি পেপার চান, ওই সনদ আমরা চাই না।
এর আগে তিনি জেলা এনপিসির সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। জেলা এনপির প্রধান সমন্বয়কারী ফয়সনাল করিম সোয়েবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. আতিক মুজাহিদ ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ডা. মো. আব্দুল আহাদসহ প্রমুখ নেতারা।
খুলনার বাজারে কমছে না সবজির দাম। মাছের দামও কমেনি। সবজি ও মাছের চড়া মূল্যের কারণে ক্রেতাদের অভিযোগেরও শেষ নেই। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি সরবরাহ না থাকায় সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে, শীতকালীন সবজি বাজারে উঠতে শুরু করলে দাম কমে যাবে। রোববার খুলনার নতুন বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার, খালিশপুর বাজার ও নিউমার্কেট বাজার ঘুরে এমনটা জানা যায়।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, টমেটো ১২০, পটল ৬০, চিচিঙ্গা ৬০ ও কচুমুখী ৪০ টাকা কেজি, চায়না গাজর ১৪০, মোটা গোল বেগুন ১২০ ও শসা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০, শিম ১২০-১৪০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ ৮০ টাকা, ঝিঙে ৬০-৭০, চিকন বেগুন ৬০-৭০ টাকা, ঢেড়স ৭০-৮০, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ ২৮০-৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাংসের বাজারে, ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে, সোনালি ২৭০-২৮০ টাকা কেজি দরে ও লেয়ার ২৯০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি দরে ও খাসির মাংস ১,১৫০ টাকা থেকে ১,২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে, রুই মাছ আকারভেদে ৩৫০-৪০০ টাকা, ভেটকি মাছ আকারভেদে ৬০০-৮০০ টাকা কেজি, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা দরে, ছোট মাছ ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, পাঙাশ মাছ ১৬০-২০০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সবজি বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির হওয়ার সম্ভাবনা কমে গেছে। নতুন সবজি বাজারে উঠলেই দাম অনেকটা কমে যাবে। মাঝে সবজির দাম ১০-১৫ টাকা কেজিতে কমলেও বৃষ্টি হওয়ায় ফের দাম বেড়েছিল। তবে বাজারে সবজির সরবরাহ কম; কিন্তু চাহিদা অনেক বেশি।
মিস্ত্রিপাড়া বাজারের খুচরা সবজি ব্যবসায়ী সবুজ মোল্যা বলেন, ‘শীতকালীন কিছু সবজি উঠলেও এখন চড়া দাম। পাইকার বাজারেও দাম অনেক বেশি। এ জন্য অল্প-স্বল্প সবজি উঠাচ্ছি। দাম বেশি হওয়ায় অনেকে কম কম সবজি ক্রয় করছেন।’
নিউমার্কেট বাজারে আসা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘সবজি কিনতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর মাছের দামে তো আগুন। সামুদ্রিক মাছের দামও হুহু করে বেড়েছে। এমন চড়া দামে মাছ-সবজি কেনা অনেক কষ্টকর। কোনো সবজি ৫০ টাকার নিচে নেই।’
পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী কামাল মিয়া বলেন, ‘সবজির আমদানি কম থাকলে দাম একটু বেশি থাকে। আর গত কয়েক মাস ধরে তো বৃষ্টির কারণে সবজি নেই বললেই চলে বাজারে। শীতকালে একটু বাজারের পরিবেশ ঠাণ্ডা হতে পারে। তবে আমাদের সবজির দাম বেশি রাখার কোনো সুযোগ নেই।’
বাংলার গ্রামীণ কৃষিজীবনে একসময় ছিল দোন আর সেঁউতির রাজত্ব। বাঁশ, কাঠ, দড়ি ও মাটির কলস বা টিনের পাত্র দিয়ে তৈরি এই সেচযন্ত্রগুলো ছিল কৃষকের অমূল্য সম্পদ। খাল, পুকুর কিংবা নদী থেকে পানি তুলে উঁচু জমিতে ফসল ফলাতে দোন ও সেঁউতির বিকল্প ছিল না। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এখন সেই ঐতিহ্যবাহী সেচব্যবস্থা হারিয়ে গেছে সময়ের স্রোতে।
মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া, বুনাগাতী, গঙ্গারামপুরসহ মাগুরার বিভিন্ন অঞ্চলে একসময় দোন-সেঁউতি ছাড়া সেচ দেওয়ার কথা ভাবাই যেত না। ভোর কিংবা বিকেলে দল বেঁধে কৃষকরা যেতেন খাল বা নদীর ধারে। কেউ টানতেন সেঁউতি, কেউ চালাতেন দোন। দোলনার মতো দোন নড়াচড়া করত একদিক থেকে অন্যদিকে, আর তার সঙ্গে উঠত স্বচ্ছ পানি- যা ঢালা হতো ফসলি জমিতে।
দোনকল সাধারণত একটি লম্বা বাঁশ বা কাঠের সঙ্গে তৈরি হতো। এক প্রান্তে থাকত মাটির পাত্র বা টিনের কলস, অন্য প্রান্তে ভারসাম্য রাখার জন্য ভারী বস্তু। একজন মানুষ সহজেই এটি চালাতে পারতেন। অন্যদিকে সেঁউতি ছিল কিছুটা বড়, দোলনার মতো কাঠামো, যা দুই বা ততোধিক ব্যক্তি পা দিয়ে চালাতেন।
এখন আর গ্রামের মাঠে এই দৃশ্য দেখা যায় না। বিদ্যুৎচালিত পাম্প আর ডিজেল ইঞ্জিনের আগমনে দোন-সেঁউতি হারিয়েছে জীবনের বাস্তবতা, টিকে আছে শুধু স্মৃতিতে।
শালিখার আড়পাড়া ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামের প্রবীণ কৃষক শুকুর বিশ্বাস সেই দিনের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আগেকার দিনে মেশিন তো ছিল না। আমরা দোনে পানি তুলে জমি ভরতাম। সেই সময়ের পরিশ্রম, মিলেমিশে কাজ করার আনন্দ- সব হারিয়ে গেছে। এখন মেশিনে সব হয়, কিন্তু মানুষের মধ্যে সেই একতা নেই।’
বুনাগাতীর দেশমুখপাড়া গ্রামের কৃষক লুৎফর বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের সময়ে খাল থেকে দোনে পানি তুলে পাতোর ভুঁইতে দিতাম। একজনের কাজ শেষ হলে অন্যজনের জমিতে যেতাম। কাজটা কঠিন ছিল, কিন্তু সবাই মিলেমিশে করতাম বলে ক্লান্তি লাগত না। এখন এসব দেখে না নতুন প্রজন্ম।’
শ্রীপুর উপজেলার প্রবীণ কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আগে যখন মোটর বা ডিজেল পাম্প ছিল না, তখন দোন আর সেঁউতি দিয়েই আমরা জমিতে পানি দিতাম। দুজন মিলে দিনভর সেঁউতি টানলে জমি ভিজে যেত, ক্লান্তি থাকত কিন্তু তৃপ্তিও ছিল।
দোন ও সেঁউতি কেবল সেচযন্ত্র নয়- এগুলো ছিল গ্রামীণ জীবনের এক অনন্য ঐতিহ্য, যা মানুষের পরিশ্রম, সহযোগিতা আর আনন্দের প্রতীক হয়ে বেঁচে ছিল প্রজন্মের পর প্রজন্ম। আজকের তরুণ কৃষকরা হয়তো জানেনই না। তাদের পূর্বপুরুষরা কীভাবে নিখুঁত দক্ষতায় জমিতে পানি দিতেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মাগুরা খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ আলমগীর হোসেন বলেন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন কৃষিযন্ত্র দোন-সেঁউতি। একসময় এগুলোর ব্যাপক ব্যবহার ছিল; কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির কারণে তা এখন বিলুপ্তপ্রায়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।
এখন দোন-সেঁউতির শব্দ আর শোনা যায় না, দেখা যায় না খালের পাড়ে দোলায় দুলতে থাকা বাঁশের দণ্ড। তবু মাটির গন্ধে, পুরোনো কৃষকের কপালের ঘামে, আর তাদের স্মৃতিচারণে এখনো বেঁচে আছে সেই সোনালি দিনের কৃষি ঐতিহ্য।
মাগুরার মাটিতে তাই এখনো লুকিয়ে আছে এক চিরচেনা গল্প- যেখানে প্রযুক্তি জয় করেছে সময়কে; কিন্তু হারিয়ে গেছে গ্রামীণ জীবনের সোনালি এক অধ্যায়।
দোন-সেঁউতির ইতিহাস: দোন-সেঁউতির ইতিহাস মূলত বাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী কৃষি সেচ পদ্ধতির ইতিহাস। অতীতে, যখন আধুনিক যন্ত্র ছিল না, তখন কৃষক এই হাতে তৈরি পদ্ধতি ব্যবহার করে নদী, খাল বা জলাশয় থেকে জমিতে জলসেচ দিত। এটি একটি সরল; কিন্তু কার্যকর পদ্ধতি ছিল যেখানে ‘দোন’ নামক বড় আকারের পাত্র ও ‘সেঁউতি’ নামক বিশেষ ধরনের নলের মাধ্যমে জল উত্তোলন করা হতো। প্রযুক্তিগত উন্নতির কারণে এখন এটি প্রায় বিলুপ্ত; কিন্তু গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে এটি এখনো কিছু স্মৃতিতে বেঁচে আছে।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে।
অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব মুঃ রইচ উদ্দিন খান ও মোঃ তারেক হাসান এবং ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ কামরুল হাসান। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব পঙ্কজ বড়ুয়া।
কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র: বাসস
বিএনপির কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা আহ্বায়ক কমিটির ১ নং সদস্য মানিকগঞ্জ-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী এস.এ জিন্নাহ কবির বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক জাতির সামনে ঘোষিত রাস্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফায় বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশ কীভাবে চলবে, শিক্ষিত যুবকদের চাকরি ব্যবস্থা করা হবে, চাকরী যতদিন না হবে তাদের বেকার ভাতা দেওয়া হবে। ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে কৃষকদের উৎপাদিত ফসল সরকার ক্রয় করবে। ৩১ দফায় কৃষকদের কৃষি উপকরণ, কৃষক-শ্রমিক গ্রাম-গঞ্জে খেটে খাওয়া দিনমুজুর, মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের কথা রয়েছে। শনিবার রাতে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা কলিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বিএনপির উদ্যোগে তালুকনগক ডিগ্রী কলেজ মাঠে তারেক রহমানের ৩১ দফার প্রচারণা সভা ও লিফলেট বিতরণে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিতে হবে। আমি নির্বাচিত হলে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দিরের উন্নয়ন ও কৃষক শ্রমিক, দু:স্থ জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করব।
তালুকনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে ও কলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক আব্দুস সামাদ এবং উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার রবিউজ্জল রবির সঞ্চলানায় আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু, উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, জেলা বিএনপি সাবেক কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি লোকমান হোসেনসহ নেতারা।
মন্তব্য