করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত বছর যুক্তরাজ্যে প্রথম লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এরপর দেশটিতে বসবাসরত পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষদের ওপর বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধ ৩০০ শতাংশ বেড়ে যায়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ‘এন্ড দ্য ভাইরাস অফ রেসিজম’ এমনই তথ্য তুলে ধরেছে।
চীনের উহান শহরকে করোনার উৎপত্তিস্থল উল্লেখ করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হলে যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি চীনা রেস্তোরাঁ ভাঙচুর করা হয়। বেশ কয়েকটি শহরে সংখ্যাগরিষ্ঠ চীনাদের একঘরে করে রাখা হয়। এশীয় বংশোদ্ভূত মানুষ রাস্তাঘাটে হামলারও শিকার হন।
করোনাভাইরাসকে ‘চীনা ভাইরাস’ হিসেবে অভিহিত করতে ছাড়েননি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। চীন বিশ্বজুড়ে এ মহামারি ছড়ায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বেশ কয়েকজন পর্যবেক্ষকের ভাষ্য, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায় বন্দুকধারীর গুলিতে ছয় এশীয় নারীর মৃত্যু এ বার্তা দেয়, এশীয়দের জীবন কী পরিমাণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো যুক্তরাজ্যেও এশীয়বিরোধী বর্ণবাদ উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত পূর্ব এশীয় সম্প্রদায়ের কয়েকজনের সঙ্গে তাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে কথা বলেন আল জাজিরার প্রতিবেদক। আলাপকালে তারা জীবন নিয়ে নানা ধরনের উদ্বেগের কথা জানান।
আগের মতো নিরাপদ বোধ করি না: পেং
৩৭ বছর বয়সী পেং ওয়াং আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ের প্রভাষক। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে যুক্তরাজ্যে আসি। এর আগে ছয় বছর ফিনল্যান্ডে ছিলাম। প্রথম প্রথম এখানকার লোকজনের আচরণ ফিনল্যান্ডের মানুষের চেয়ে অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। তবে ব্রেক্সিট ও করোনা মহামারির পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়।’
বর্ণবাদী আচরণ নিয়ে ওয়াং বলেন, ‘গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে বাড়ির কাছে জগিং করছিলাম। ওই সময় রাস্তার অপর পাশে চলমান এক গাড়ির চালক চিৎকার করে আমাকে “চায়নিজ ভাইরাস” বলে।
‘আমিও পাল্টা চিৎকার করি। নিজেকে শান্ত করার পর আবার জগিং শুরু করি। অল্প কিছুদূর যাওয়ার পর গাড়িটি ফিরে আসে। আবার আমাকে চিৎকার করে কিছু বলে। আমি খুব ক্ষেপে যাই। গাড়ির কাছে গিয়ে বলি, “কেন এমন করছ? চলে যাও!” এরপর গাড়ির ভেতর থেকে চালকসহ আরও কয়েকজন বেরিয়ে এসে আমাকে পেটাতে শুরু থাকে। নিজেকে আর আগের মতো নিরাপদ লাগে না।’
করোনার আগে থেকেই এমন পরিস্থিতি: ব্রিটিশ এমপি
যুক্তরাজ্যের মধ্য-বামপন্থি লেবার পার্টির এমপি ৩৮ বছর বয়সী সারাহ ওয়েন বলেন, ‘এশীয়দের ওপর হামলা কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, যুক্তরাজ্যেও হচ্ছে। করোনা মহামারির আগে থেকেই নিশ্চিতভাবেই এখানে এ সমস্যা ছিল।’
তিনি বলেন, ‘গত বছর করোনার সংক্রমণ শুরুর আগে টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘গুড মর্নিং ব্রিটেন’-এর ব্রডকাস্টার পিয়ার্স মরগান চীনা ভাষা নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করেন। একে স্বাভাবিক হিসেবেই ধরে নেয় অনেকে। মরগান ওই ঘটনা নিয়ে কখনো ক্ষমাও চাননি।
‘আমি মনে করি, এশীয়দের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত মনোভাব, কর্মকাণ্ড বা অপরাধ ঠেকাতে সরকার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। মাঝেমধ্যে তাদের উদ্দেশ্যে আবেগপূর্ণ কথা বলা হয়। যারা বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের শিকার বা যাদের দোকানপাটে হামলা হয়েছে, তারা ওই সব কথা শুনে স্বস্তিবোধ করেন। এর বেশি কিছু না।’
নিজের শহরকে অচেনা লাগে: লিসা
ভিয়েতনাম বংশোদ্ভূত ২৯ বছর বয়সী লিসা ড্যাং পেশায় রাঁধুনি। তিনি বলেন, ‘বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাবা প্রায়ই বলতেন, “তোমাকে দ্বিগুণ পরিশ্রম করতে হবে। কারণ, তুমি নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে বাস করছ।” বাবার সঙ্গে এ নিয়ে তর্কাতর্কি করতাম। তাকে বলতাম, “আমার জন্ম এ দেশে। আমি এখানকারই মানুষ।’”
লিসা বলেন, ‘আমার প্রতিবেশী নিঃসন্তান শ্বেতাঙ্গ দম্পতি। তারা আমাকে তাদের নাতি হিসেবে দত্তক নেন। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু মাধ্যমিকে পড়ার সময় হঠাৎ পরিবর্তন টের পাই। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আমাকে আক্রমণ করা শুরু হয়।
‘আমার নাম নিয়ে ঠাট্টা, কুকুর খাই এমন সব বর্ণবাদী মন্তব্য আমাকে শুনতে হয়। পরে একপর্যায়ে বর্ণবাদী মন্তব্য শোনা কমতে থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর নিজেকে সত্যিকার অর্থেই লন্ডনেরই একজন মনে হতে থাকে। নিরাপদ বোধ করতে থাকি।’
করোনা শুরুর পরের পরিস্থিতি নিয়ে লিসা বলেন, ‘গত বছরের মার্চে করোনার সংক্রমণ শুরুর পর আমার চীনা প্রেমিককে নিয়ে এসেক্স যাই শ্বেতাঙ্গ বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে। মদের একটি দোকানে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে একজন আমাদের “উহান” বলে চিৎকার করে সম্ভাষণ জানায়। ওই মুহূর্তে মনে হচ্ছিল, সবকিছু থেমে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসেক্স লন্ডনের বাইরে। নানা বৈচিত্র্যের, সংস্কৃতির মানুষের বাস সেখানে কম। তাই ওই ঘটনাকে পরে বিচ্ছিন্ন হিসেবে দেখি। কিন্তু গত নভেম্বরে লন্ডনের সুপারমার্কেটের একটি ঘটনা আমার ধারণা পাল্টে দেয়। সেখানে ২০ বছর বয়সী কয়েকজন তরুণ আমাকে বর্ণবাদী গালি দেয়। ওই তরুণরা আমার মতোই জাতিগত সংখ্যালঘু। এখানে পারস্পরিক সম্প্রীতি কোথায়?’
শৈশবের স্মৃতিচারণা করে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এ নারী বলেন, ‘এখন বুঝতে পারি বাবা আমাকে ছোটবেলায় কী বোঝাতে চেয়েছিলেন। এ শহর আমাকে স্বাগত জানিয়েছে, এখন আর তা মনে হয় না। যে শহর আমার জন্মভূমি, তাকে আর নিজের মনে হয় না, অচেনা লাগে।’
ইরানের মাটিতে হামলার বিষয়ে ইসরায়েলকে কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, আরেকবার ‘ভুল’ করলে তেহরানের জবাব হবে বিপর্যয়কর।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গভর্নমেন্ট কলেজ ইউনিভার্সিটি লাহোরে (জিসিইউএল) মঙ্গলবার দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির সংস্কৃতি ও শিক্ষাঙ্গনের প্রভাবশালীদের সঙ্গে বৈঠকে রাইসি এ বার্তা দেন বলে জানায় প্রেস টিভি।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, বক্তব্যে সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে সম্প্রতি ইসরায়েলের মাটিতে তেহরানের আক্রমণের বিষয়টি তুলে ধরেন রাইসি।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, দামেস্কে ইসরায়েলের হামলাটি ছিল সব আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের সনদের বিরোধী। এ কারণে ইসরায়েলকে শাস্তি দিয়েছে ইরান।
ইসরায়েলকে ফের ভুল না করার বিষয়ে সতর্ক করে রাইসি বলেন, ‘জায়নবাদী সরকার যদি আরেকবার ভুল করে ইরানের মাটিতে আগ্রাসন চালায়, তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হবে এবং এই শাসনব্যবস্থার কতটা অবশিষ্ট থাকবে, তা পরিষ্কার নয়।’
গত ১৩ এপ্রিল ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ’ নামে অভিযানের অংশ হিসেবে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে কয়েক শ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এসব অস্ত্রের বেশির ভাগ ভূপাতিত করে আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। এ কাজে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র রাষ্ট্রগুলো।
আরও পড়ুন:ভারতে চলমান লোকসভা নির্বাচনের পর ক্ষমতায় আসা সরকারের জন্য বেকারত্ব সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
বার্তা সংস্থাটি অর্থনীতিবিদদের ওপর চালানো জরিপের ফল বুধবার এক প্রতিবেদনে তুলে ধরে।
জরিপে অংশ নেয়া অর্থনীতিবিদদের আশা, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশ।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বড় অর্থনীতিগুলোর তুলনায় দ্রুততম গতিতে ভারতের প্রবৃদ্ধি হলেও বিপুল ও ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছে দেশটি।
গত ১৬ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত ২৬ জন অর্থনীতিবিদের ওপর জরিপ চালায় রয়টার্স, যাদের মধ্যে ১৫ জনই বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের পর সরকারের জন্য বৃহত্তম চ্যালেঞ্জ হবে বেকারত্ব।
অন্যদিকে আট অর্থনীতিবিদ দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশটির গ্রামাঞ্চলে ভোগকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেন। অন্যদিকে দুজন অর্থনীতিবদ মূল্যস্ফীতি এবং একজন দারিদ্র্যকে বৃহত্তম চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন দল বিজেপি ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে কর্মসংস্থান বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছিল। চলতি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে পারে দলটি।
বিজেপির প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেকারত্বের হার পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টির ইঙ্গিত দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের একর শহরের উত্তরে দেশটির ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলের এত ভেতরে এটিই হিজবুল্লাহর প্রথম হামলা।
হিজবুল্লাহ মঙ্গলবার বিবৃতিতে জানায়, ফাঁদ সৃষ্টিকারী ও বিস্ফোরক ড্রোন দিয়ে আকাশপথ থেকে সমন্বিত হামলা চালানো হয়েছে, যার লক্ষ্যবস্তু ছিল একর ও নাহারিয়ার মধ্যবর্তী ইসরায়েলের দুটি ঘাঁটি।
ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটির ভাষ্য, ইসরায়েলি হামলায় তাদের এক যোদ্ধা নিহত হওয়ার বদলা হিসেবে ইসরায়েলে হামলাটি চালানো হয়।
হামলার একটি ছবি প্রকাশ করেছে হিজবুল্লাহ, যেটি দৃশ্যত স্যাটেলাইট চিত্র। এতে হামলাস্থল চিহ্নিত করা হয়েছে লাল দাগ দিয়ে।
হিজবুল্লাহর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে জানানো হয়, তাদের কোনো স্থাপনায় হিজবুল্লাহর হামলার বিষয়ে তথ্য নেই।
এর আগে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানায়, দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলের কাছে ‘আকাশপথে আসা দুটি লক্ষ্য’ প্রতিহত করা হয়েছে।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এনএনএ জানায়, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হানিনে আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে দুজন নিহত ও ছয়জন আহত হন।
আরও পড়ুন:মালয়েশিয়ায় একটি সামরিক মহড়ার সময় মাঝ আকাশে নৌবাহিনীর দুটি উড়োজাহাজের সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলভার সাড়ে ৯টার দিকে মালয়েশিয়ার লুমু শহরে নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
প্রতিবেদন বলছে, রয়্যাল মালয়েশিয়ান নৌবাহিনীর কুচকাওয়াজের জন্য একটি সামরিক মহড়া চলাকালীন মাঝ আকাশে নৌবাহিনীর ওই দুই উড়োজাহাজের সংঘর্ষ হয়। পরে বিধ্বস্ত হয়ে মাটিতে পড়ে যায় বাহন দুটি। কেউই বেঁচে নেই।
নানা মাধ্যমে এর ফুটেজও প্রকাশিত হয়েছে।
রয়্যাল মালয়েশিয়ান নৌবাহিনী জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই ১০ জনকে মৃত বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। লুমুত সামরিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে মরদেহ শনাক্তের জন্য। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি কমিটি গঠন করা হবে।
যে দুটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে এর মধ্যে একটি হলো এইচওএম এম৫০৩-৩। এতে সাতজন আলোরী ছিলেন। চলমান ট্র্যাকে বিধ্বস্ত হয়েছে এই উড়োজাহাজটি। অন্যটি ফেনেক এম৫০২-৬। এতে ছিলেন তিনজন আরোহী। এটি বিধ্বস্ত হয় কাছাকাছি একটি সুইমিং পুলে।
রাজ্যের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ বিভাগ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার বিষয়য়ে সতর্ক করা হয়েছিল।
এর আগে গত মার্চ মাসে একটি মালয়েশিয়ান কোস্ট গার্ড উড়োজাহাজ প্রশিক্ষণ ফ্লাইটের সময় মালয়েশিয়ার আংসা দ্বীপের কাছে সাগরে বিধ্বস্ত হয়। ওই দুর্ঘটনার পর পাইলট, কো-পাইলট এবং এতে থাকা দুই যাত্রীকে জেলেরা উদ্ধার করেন।
এক রাতে ৮০ বারেরও বেশি ভূমিকম্পে দফায় দফায় কেঁপে উঠল তাইওয়ান। স্থানীয় সময় সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এসব কম্পন অনুভূত হয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তীব্রতার ভূমিকম্পের উৎপত্তি পূর্বাঞ্চলীয় হুয়ালিয়েনে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশিমক ৩।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া প্রশাসনের বরাত দিয়ে বাসস জানায়, স্থানীয় সময় সোমবার বিকেল ৫টা ৮ মিনিটে প্রথম যে ভূমিকম্প আঘাত হানে রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশিমক ৫। রাজধানী তাইপেতেও এ কম্পন অনুভূত হয়। এরপর দফায় দফায় কম্পন অনুভূত হতে থাকে। বিশেষ করে মঙ্গলবার সকালে আঘাত হানা দুটি ভূমিকম্প ছিল তীব্র।
রিখটার স্কেলে প্রথমটির তীব্রতা ছিল ৬.০ এবং দ্বিতীয়টির ৬.৩।
এর আগে গত ৩ এপ্রিল শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তাইওয়ানের পূর্ব উপকূল। এতে অন্তত ১৭ জন মারা গেছে। অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
তীব্র এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৪। ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল হুয়ালিয়েন শহরের ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে।
তাইওয়ানে গত ২৫ বছরের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। এর আগে ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প তাইওয়ানে আঘাত আনে। তাতে প্রায় ২ হাজার ৪০০ মানুষ মারা যায়।
এদিকে নতুন এ ভূমিকম্পের পর ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে ঘটনাস্থলে অগ্নিনির্বাপক দলকে পাঠানো হয়েছে।
কেউ হতাহত হয়নি বলে তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
দুটি টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত বলে তাইওয়ানে ঘন ঘন ভূমিকম্প আঘাত হানে।
আরও পড়ুন:নথিপত্রবিহীন অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডা পাঠাতে আইন পাস করেছে যুক্তরাজ্য।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউজ অফ লর্ডসের বিরোধিতা এবং নানা বিতর্কের পর পার্লামেন্টে মঙ্গলবার সকালে এ সংক্রান্ত বিলটি পাস করে আইনে পরিণত করা হয় বলে জানায় বিবিসি।
পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসে বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ৩১৭টি এবং বিপক্ষে ভোট পড়ে ২৩৭ টি। মোটামুটি বড় ব্যবধানেই বিলটি পাস হয়।
এ আইনে রুয়ান্ডাকে একটি নিরাপদ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সেখানে কিছু আশ্রয়প্রার্থী পাঠানো সরকারের পরিকল্পনার একটি মূল অংশ।
হাউস অব লর্ডস থেকে এই বিলের বিষয়ে দুটি আপত্তি জানানো হয়। সেই বিষয়ে হাউস অব কমনসে বিতর্ক শুরু হয় স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে। পরে দীর্ঘ বিতর্ক শেষে মঙ্গলবার প্রথম প্রহরে বিলটি পাস হয়।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক সোমবার জানান, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডা পাঠানোর ফ্লাইট ১০ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যেই শুরু করতে চান। প্রথম ফ্লাইট জুলাইয়ে রুয়ান্ডায় রওনা হবে।
এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার ঋষি বলেন, ‘আমরা বিমানঘাঁটি প্রস্তুত রেখেছি। বাণিজ্যিক বিমান ভাড়া করেছি এবং অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদেরকে পাহারা দিয়ে রুয়ান্ডায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ৫০০ স্টাফকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আর কোনো যদি এবং কিন্তু নেই। ফ্লাইটগুলো রুয়ান্ডায় যাচ্ছে। আমরা প্রস্তুত, ফ্লাইটগুলো পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’
এর আগে নথিপত্রবিহীন অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডায় স্থানান্তরের জন্য দেশটির সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে যুক্তরাজ্য। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিনসেন্ট বাইরুতার সঙ্গে এ বিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, নিজ দেশের অভিবাসী কেন্দ্রগুলো থেকে সব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে রুয়ান্ডা পাঠাবে ব্রিটেন। সেই সঙ্গে ব্রিটেন থেকে যাওয়া অভিবাসীদের অন্য কোনো দেশে পাঠানো যাবে না বলে রুয়ান্ডারকে শর্ত দেয়া হয়েছে।
ওই সময় চুক্তিতে মতানৈক্য থাকায় যুক্তরাজ্যের অভিবাসনমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন রবার্ট জেনরিক।
আরও পড়ুন:কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর এবার ভারি বৃষ্টিপাতের কবলে পড়েছে আরেক মরুর দেশ সৌদি আরব। রাজধানী রিয়াদের কিছু অঞ্চলসহ দেশটির অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে রাস্তাঘাটও।
সৌদি আরবের আবহাওয়া বিভাগ সতর্কতা জারি করে বলেছে, আগামী কয়েকদিন বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। সতর্কতার অংশ হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
দেশটির আবহাওয়া দপ্তর বলছে, শনিবার থেকে রাজধানী রিয়াদসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা। বৃষ্টিতে ভেসে গেছে বেশ কয়েকটি গাড়ি। ভারী বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে রাজধানী রিয়াদ ছাড়াও দিরিয়াহ, হুরায়মালা, ধুর্মা থেকে কুয়াইয়াহ পর্যন্ত।
আবহাওয়ার চলমান এ পরিস্থিতি মঙ্গলবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এই সময়কালে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে সতর্কতার অংশ হিসেবে সৌদি আরবের বিভিন্ন জায়গায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। বৃষ্টির সময় উপত্যকা ও জলাবদ্ধ এলাকা থেকে নাগরিকদের দূরে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই প্রতিকূল আবহাওয়ার মুখোমুখি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। সবশেষ গেল সপ্তাহে অতি বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেখা যায় দুবাই ও শারজাহতে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য