চার চারবার বিশ্বকাপ জিতলেও ইউরোতে শুধু একবার শিরোপা ঘরে তুলেছে ইতালি। সেটাও ১৯৬৮ সালে। এবার সেই অপেক্ষার অবসান হলো ইতালির।
ইংল্যান্ডকে টাইব্রেকার রোমাঞ্চে হারিয়ে ৫৩ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ট্রফি জিতেছে রবার্তো মানচিনির দল।
ওয়েম্বলিতে ইংল্যান্ডের স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে ইতালি। নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলের সমতার রোমাঞ্চের পর টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলেছে ইতালি।
টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স বিবেচনায় যোগ্য দল হিসেবেই ফাইনালে উঠেছিল ইংল্যান্ড ও ইতালি। ঘরেই থাকছে নাকি রোমে যাচ্ছে, এটাই ছিল প্রশ্ন। সব প্রশ্নের জবাব মিলল আজ।
তবে ম্যাচ শুরুর পরপরই রবার্তো মানচিনির অপ্রতিরোধ্য বাহিনীকে থমকে দেয় গ্যারেথ সাউথগেইটের দল।
ম্যাচের তখন মাত্র দুই মিনিট। দুর্দান্ত এক গোলে ওয়েম্বলিতে লিড নিয়ে ফেলে ইংল্যান্ড। নিজেদের অর্ধ থেকে মাঝমাঠে বল এগিয়ে দেন ডিফেন্ডার লুক শ।
বল ঠেলেই দৌড় শুরু করেন। এদিকে মাঝমাঠ থেকে বল চলে যায় ডি-বক্সের ডান প্রান্তে। এদিকে ফাঁকায় ওত পেতে থাকা লুক শ হাত দিয়ে ইশারা দিলে ডান প্রান্ত থেকে বলটা ক্রস করেন কিয়েরান ট্রিপিয়ার।
বল মুহূর্তেই চলে আসে শয়ের পায়ে। গোলকিপার দোনারুমার ডান পাশে ছোট জায়গা দিয়ে দারুণ একটা ভলিতে বল জালে জড়ান এই ডিফেন্ডার।
স্বাগতিকদের উল্লাসে মাতায় ইংল্যান্ড। এটিই ছিল ইউরোর ফাইনাল ইতিহাসে দ্রুততম গোল।
এই এক গোলের লিডের স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতিকদের চেপে ধরে ইতালি। ধারাবাহিক আক্রমণ সাজিয়ে ম্যাচের ৬৭ মিনিট সমতায় ফেরে মানচিনির শিষ্যরা।
লরেঞ্জো ইনসিনিয়ের কর্নার থেকে ডি-বক্সের ভেতর হেড করেন মারকো ভেরাত্তি। সুযোগটি রুখে দেন জর্ডান পিকফোর্ড। ফিরতি বলে টোকা দিয়ে জালে জড়িয়ে ইতালিকে সমতার উল্লাসে মাতান লিওনার্দো বোনুচ্চি।
ম্যাচের ৭৩ মিনিটে লিড নেয়ার দারুণ একটি সুযোগ হাতছাড়া হয় ইতালির। ইংল্যান্ডের ডিফেন্সের ওপর দিয়ে দেয়া ভেরাত্তির ক্রসটা ডি-বক্সের উপরে পড়লে শূন্যে থাকা বলটা ঠিকমতো গোল বরাবর রাখা সম্ভব হয়নি ডমিনিকো বেরার্দির পক্ষে।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আর কোনো গোলের দেখা না পাওয়ায় ম্যাচ গড়ায় এক্সট্রা টাইমে। এই ৩০ মিনিটেও কেউ লক্ষ্যভেদ করতে না পারলে ম্যাচের ভাগ্য চলে যায় পেনাল্টি শুটআউটে।
ইউরোর ইতিহাসে ১৯৭৬ সালের পর এটাই প্রথম ফাইনালে পেনাল্টি শুট আউট। সেবার চেক রিপাবলিকের সঙ্গে পশ্চিম জার্মানির ম্যাচটা টাইব্রেকারে গড়িয়েছিল।
ইতালি গোলকিপার ডোনারুমা দুটি শট ঠেকান। আর র্যাশফোর্ডের শট লাগে বারে।
টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলে নেয় ইতালি।
আরও পড়ুন:বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নে মঙ্গলবার দিনব্যাপী দেবিদ্বার উপজেলার ৬নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নে লিফলেট বিতরণ ও ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ করেন কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ এফ এম তারেক মুন্সী। এ সময় তিনি খলিলপুর বাজার, নূরপুর, ফতেহাবাদ মোকামবাড়ি ও ফতেহাবাদ বাজার এলাকায় লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করেন। এছাড়া খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়, গঙ্গামন্ডল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ, নূরপুর উচ্চ বিদ্যালয় এবং ফতেহাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়সহ স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
গণসংযোগকালে এ এফ এম তারেক মুন্সী বলেন, “ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি হলো জাতির পুনর্জাগরণের নকশা। এই কর্মসূচির মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা, দুর্নীতি দমন ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ধানের শীষ কেবল একটি প্রতীক নয়, এটি পরিবর্তন ও আশার প্রতীক। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন—উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন মাহফুজ, সদস্য সচিব আব্দুল আলিম পাঠান, ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পূর্ব বিএনপির সভাপতি শাকিল মুন্সী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, পশ্চিম শাখার সভাপতি এডভোকেট সোহরাব হোসেন, সদস্য সচিব দৌলত খান, কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম ইমরান হাসান, উপজেলা যুবদলের সভাপতি নুরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক মো. রকিবুল হাসান, জাফরগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নেয়ামত উল্লাহ এবং উপজেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক কাউছার মোল্লা।
নওগাঁয় চক্ষু শিবিরে বিনামূল্যে দরিদ্র মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে তিনটি ইউনিয়নের ৫শতাধিক মানুষকে এই এই চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।
নওগাঁ সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের প্রথম ভিপি, বিএনপির তথ্য সংগ্রহ কমিটির সদস্য ও নওগাঁ-৫ (সদর) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মাহবুবুর রহমান ডাবলুর এই আয়োজন করে।
জয়পুরহাট জেলার খঞ্জনপুর মিশন চক্ষু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এই চিকিৎসা সেবা দেন। এই উদ্যোগের ফলে অনেক দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষ প্রয়োজনীয় চক্ষু চিকিৎসা সেবা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন বলে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
চোখের ছানি নিয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা আকবর হোসেন জানান, তার পক্ষ্যে অর্থের অভাবে কোনো হাসপাতালে গিয়ে ছানি অপারেশন করা সম্ভব ছিল না। এখান থেকে তার অপারেশন, থাকা-খাওয়া সব ফ্রিতে করে দিবে।
ফাতেমা বেগম নামের সেবা প্রত্যাশাী বলেন, শহরে বড় হাসপাতালে গেলে অনেক টাকা লাগতো। এখানে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা পেলাম। যারা এমন মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন বিশেষ করে ডাবলু ভাতিজার জন্য দোয়া ও শুভ কামনা রইলো।
এসময় মাহবুবুর রহমান ডাবলু জানান, চিকিৎসা সেবায় দরিদ্রদের চক্ষু পরীক্ষা এবং চশমা প্রদান করা হয়। এছাড়া চোখের ছানি পড়া রোগীদের বাছাই করে বিনামূল্যে আপারেশন, কৃত্রিম লেন্স সংযোজনসহ ওষুধ প্রদান, হাসপাতালে ভর্তি ও খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, এলাকার অনেক অসহায় ও দরিদ্র মানুষ অর্থাভাবে ঠিকমতো চিকিৎসা করাতে না পেরে নানা রোগে ভুগে থাকে। আর চোখ হচ্ছে মানুষের অমূল্য সম্পদ। তাই সমাজের পিছিয়ে পড়া এসব মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিনামূল্যে চক্ষু শিবিরের আয়োজন করেছি। এই কার্যক্রম আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। এসময় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৬৩৩টি খামারের ১ লাখ ৩০ হাজার ৯১৫টি গবাদিপশু নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে খামারিরা। এসব গবাদিপশুর মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি নামে একটি রোগ। যাকে পক্সভাইরাস বলা হয়। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়া অ্যানথ্রাক্স নিয়েও আতঙ্কে রয়েছে এ অঞ্চলের গরুর খামারিরা। গবাদিপশুর পাশাপাশি সাধারণ মানুষও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারিভাবে নেই কোনো উদ্যোগ। এই রোগের জন্য সরকারিভাবে টিকা দেওয়া কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রয়েছে সম্পূর্ণ উদাসীন। তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এসব রোগ সম্পর্কে অবহিত না করে ঘুমিয়ে আছেন। গরুর খামারিদের জনসচেতনতা নিয়ে কোনো সহায়তা করছে না বলে অভিযোগ খামারিদের।
পশু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি রোগটি গবাদিপশুর জন্য খুবই ক্ষতিকর। এর মধ্যে যদি অ্যানথ্রাক্স রোগটিও ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে এ অঞ্চলে ১ লাখ ৩০ হাজার ৯১৫টি গবাদিপশু ও সাধারণ মানুষের অবস্থা খারাপ হতে পারে। তাই শুরুতেই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
পক্সভাইরাস ও অ্যানথ্রাক্স মূলত গবাদিপশুর থেকে ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এই রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারিভাবে টিকা দেওয়া কথা রয়েছে। কিন্তু লক্ষ্মীপুরের উপকূলীয় অঞ্চল রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
ইতোমধ্যে অধিকাংশ খামারের গরু-ছাগল ও ভেড়ার মধ্যে লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি রোগ ছড়িয়ে পড়লেও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাউকে পাশে পাচ্ছে না বলে জানান, কয়েকজন খামার মালিক।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানায়, রামগতিতে ১০২টি গরুর খামারে ৬৭ হাজার ২৫১টি গরু, ১৩৯টি ছাগলের খামারে ১৩ হাজার ৩৩৮টি ছাগল, ৫৯টি ভেড়ার খামারে ১০ হাজার ২২৮টি ভেড়া ও ৮ হাজার মহিষসহ মোট ৯৯ হাজার ১০৭টি গবাদিপশু রয়েছে।
কমলনগরে ২৫০টি গরুর খামারে ২০ হাজার ২৩০টি গরু, ৫০টি মহিষের খামারে ৬ হাজার ৫২৫টি মহিষ, ২৫টি ছাগলের খামারে ৪ হাজার ৫৯৮ ছাগল ও ৮টি ভেড়ার খামারে ৪৫৫টি ভেড়াসহ মোট ৩১ হাজার ৮০৮টি গবাদিপশু আছে। দুই উপজেলায় মোট ১ লাখ ৩০ হাজার ৯১৫টি গবাদিপশু রয়েছে।
রামগতি উপজেলার চরলক্ষ্মীগ্রামের খামার মালিক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘তার খামারের সব গরুর মধ্যে লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি রোগ রয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে ফোন দিলে তারা ফোন ধরে না। কোনো খবরও নিচ্ছে না।’
কমলনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন ও রামগতি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রুবেল সরকার বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে গবাদিপশু বা মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স রোগ ধরা পড়লেও আমাদের এ অঞ্চলে এখন পর্যন্ত এই ধরনের রোগের খবর আমরা পাইনি। তবে কয়েকটি গরু-ছাগলের খামারে লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি রোগ ধরা পড়েছে। আমরা কিছু কিছু খামারের গরুকে টিকা দিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সব খামারে টিকা দেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য মরহুম সাংবাদিক সরওয়ার উদ্দিন আহমেদর স্মরণে এক শোক ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত সোমবার সন্ধ্যা সাতটায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে ইউনিয়নের সভাকক্ষে এ শোক ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়নের সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান।
দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের ব্যুরো প্রধান মজুমদান নাজিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সাংবাদিক সারোয়ার উদ্দিন আহম্মদের স্মৃতিচারণ করেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক সমবায় সমিতির সভাপতি, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান মোস্তফা নঈম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ টাইমস্ এর ব্যুরো প্রধান সালেহ নোমান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি সানের সাবেক ব্যুরো প্রধান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম সেলিম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি ও আরটিভির ব্যুরো প্রধান গোলাম মওলা মুরাদ, দৈনিক পূর্বদেশের স্পোর্টস এডিটর সাইফুল্লাহ চৌধুরী, এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবুল হাসনাত, দৈনিক নয়া দিগন্তের ব্যুরো প্রধান নুরুল মোস্তফা কাজী, সাংবাদি ছগির আহমদ, মাহবুবুল মওলা, ইকবাল করিম, দৈনিক বাংলার ব্যুরো প্রধান জামালুদ্দিন হাওলাদার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোখলেছুর রহমান ফরহাদী, শহিদুল ইসলাম, এনাম হায়দার, মীম ওসমান গণি, জাহাঙ্গীর আলম ও বজলুর রহমান প্রমুখ। উল্লেখ্য: সাংবাদিক সরওয়ার উদ্দিন আহমেদ গত শনিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ইন্তেকাল করেছেন।
যারা ভারতীয় আধিপত্যের বাইরে থাকবে, তাদের সঙ্গে এনসিপি জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের চিন্তা করছে বলে জানিয়েয়েছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
এ সময় তিনি বলেন, এনসিপির শাপলা প্রতীকে আইনি কোনো বাঁধা নেই। তাই আমরা শাপলা প্রতীকেই নির্বাচন করব। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপি যেকোনো এলায়েন্সেও যেতে পারে। তবে এনসিপি নিজের প্রতীকে নির্বাচন করবে।
গত সোমবার রাতে শেরপুর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা ও উপজেলা নেতা ও কর্মীদের নিয়ে সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নিজেদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে সাংগঠনিক ভিত্তিকে মজবুত করা। আগামীর রাজনীতির লড়াইয়ের জন্য, গণতান্ত্রিক পথ উত্তরণের জন্য, ফ্যাসিস্টবিরোধী লড়াই অব্যাহত রাখার জন্য কিংবা নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই সাংগঠনিক কাঠামো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রত্যেক জেলায় সমন্বয় সভা করছে এনসিপি।
তিনি বলেন, ইতোপূর্বে বিএনপি কখনো এককভাবে সরকার গঠন করেনি, আবার জামায়াতও কখনো বড় পরিসরে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেনি। সে জায়গা থেকে আগামী নির্বাচনে কারা সরকার গঠন করবে সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীর ভূমিকায় থাকবে এনসিপি। এজন্য আমরা সাংগঠনিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সারাদেশে সমন্বয় সভা করছি। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশের সব ওয়ার্ডে এনসিপির কমিটি থাকবে।
শেরপুর জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার মো. লিখন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এনসিপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলমসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের এনসিপি নেতা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতারা ও জুলাই যোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
বহুমুখী সংকটের মধ্যে সময় পার করছে রাউজানের প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এ উপজেলার ১৮১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৮১টিতে নেই প্রধান শিক্ষক। সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদ প্রায় অর্ধশত। চলতি অর্থবছরে আরও অনেক শিক্ষক অবসরে যাচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে। শিক্ষক সংকটের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংকট রয়েছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়েও। এখানে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার (এটিও) ৮টি পদের মধ্যে আছেন মাত্র ৩ জন। ৫ কর্মচারীর মধ্যে আছেন ৫ জন। রাউজানের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর বর্তমান অবস্থার খবর নিতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ব্যক্তিগত নাম ব্যবহারের কারণে উপজেলার ৮টি বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে। নানা সমস্যায় থাকা প্রাথমিক শিক্ষার হালচাল দেখতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে থাকা কয়েকটি বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকট। শিক্ষার্থীরা পাঠ নিচ্ছে বারান্দায় অথবা বেঞ্চে গাদাগাদি করে বসে। প্রধান শিক্ষক না থাকা বিদ্যালয়ে লক্ষ্য করা গেছে, বিশৃঙ্খল পরিবেশ। অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা মানছেন না বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময়সূচি। সাধারণ শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বললে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘরের মূল অভিভাবক না থাকলে যেমন হয় সেই অবস্থায় চলছে প্রধান শিক্ষকবিহীন বিদ্যালয়গুলো। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে এক সহকারীকে দেওয়া হলেও তার পক্ষে অন্য সহকর্মীদের শৃঙ্খলা দেখা সম্ভব হয় না। খবর নিয়ে জানা গেছে, রাউজানে যারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় আছেন তাদের মধ্যে বেশির ভাগ নারী শিক্ষক। তাদের প্রায় আশি শতাংশ থাকেন চট্টগ্রাম শহরে। এসব শিক্ষককে সকালে সংসারের কাজ গুছিয়ে বাসা থেকে বের হতে হয়। অনেক সময় রাস্তায় যানজটে পড়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে হয় বিলম্বে। এমন সমস্যার মধ্যে কিছু কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষক উপস্থিতি দেখা যায় ১০টার পর। আরও দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ সংকটে থাকা এমন অন্তত ৩০টি বিদ্যালয়ের পাশে নতুন ভবন নির্মাণকাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কয়েকটির কাজ চালানো হচ্ছে ধীরগতিতে। কাজ বন্ধ হয়ে থাকা নির্মাণাধীন ভবন নিয়ে কথা বললে রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এসব ভবন নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছিল। সেই সময় নির্মাণকাজ পেয়েছিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঠিকাদাররা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে তারা কাজ ফেলে এলাকা ছেড়েছেন। এখন তিনি পলাতক ঠিকাদারদের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে বিকল্প ব্যবস্থায় নির্মাণাধীন ভবনসমূহের কাজ শেষ করার ব্যবস্থা নিয়েছেন। ইতোমধ্যে বেশ কিছু ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করা হয়েছে। অন্যগুলো দ্রুত শেষ করতে পারবেন বলে তিনি দাবি করেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ ও নিজ কার্যালয়ে জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুন্নবী বলেন, চলতি অর্থবছরে আরও কিছু শিক্ষক অবসরে যাবেন। অতিদ্রুত শূন্যপদে শিক্ষক, কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অবশ্য এ কর্মকর্তা যোগ করেন জনবল নিয়োগ বিলম্ব হলে বিদ্যমান সমস্যা আরও বেড়ে যাবে। বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষকদের আসা-যাওয়ার নিয়ম না মানার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষকতায় থাকা বেশির ভাগ শিক্ষক শহরে থাকেন। বিভিন্ন সময় রাস্তায় যানজটে পড়তে হয়। তবে সকলকে সতর্ক করা হয়েছে যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়ে পৌঁছে পাঠদানে অংশ নেন। তিনি আরও বলেন, ৮টি বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য ও তার পিতা-মাতার নামে নামকরণ করা সাতটিসহ-আটটি বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত পেলে কার্যকর হবে।
কোন জায়গাকে কারাগার ঘোষণা করা হচ্ছে, সেটা তাদের বিবেচ্য বিষয় নয় বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, আসামিকে গ্রেপ্তার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে আনতে হবে।
গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন। ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকেরা।
এ সময় চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত জানি না যে আদৌ কোনো সাবজেল ঘোষণা হয়েছে কি না। কোনো ডকুমেন্ট আমার হাতে নেই, যেহেতু আপনারা বলছেন। যদি সরকার কোনো নির্দিষ্ট জায়গাকে সাবজেল ডিক্লেয়ার (উপকারাগার ঘোষণা) করে, সরকারের সেই ক্ষমতা আছে। কোন জায়গাটাকে তারা জেল ঘোষণা করবেন, প্রিজন অথরিটির আওতায় নিয়ে আসবেন, সেটা সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত। সুতরাং এটা আমাদের কোনো কনসার্ন হওয়ার কোনো বিষয় নয়।’
সরাসরি কাউকে জেলে নেওয়ার বিধান নেই উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আইন হচ্ছে আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে আনতে হবে। আদালতে আনার পর আদালত যদি ফারদার অর্ডার (পরবর্তী আদেশ) দিয়ে বলেন—কারাগারে পাঠান, তখন কারাগার বলতে সেটা কেন্দ্রীয় কারাগারও হতে পারে, সেটা জাতীয় সংসদ ভবনের মধ্যেও হতে পারে, এমপি হোস্টেল হতে পারে বা অন্য কোনো জায়গাকেও যদি সরকার কারাগার ঘোষণা করেন, সে জায়গায় পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু সেটা জেল বা কারাগার হিসেবে গণ্য হবে।’
সুতরাং কোন জায়গাকে কারাগার ঘোষণা করা হচ্ছে, তা ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের (রাষ্ট্রপক্ষ) বা তদন্ত সংস্থার বিবেচ্য বিষয় নয় বলে উল্লেখ করেন চিফ প্রসিকিউটর। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, আইন অনুযায়ী কাজটা করতে হবে। আসামিকে গ্রেপ্তার যদি করা হয়, করা মাত্রই উইদিন টোয়েন্টি ফোর আওয়ার্স (২৪ ঘণ্টার মধ্যে) তাকে আদালতে আনতে হবে। এটা হচ্ছে মোদ্দাকথা। সেটা সংবিধানে যেমন আছে, আইসিটির আইনে আছে, সিআরপিসিতে (ফৌজদারি কার্যবিধি) আছে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানেই পুলিশ উল্লেখ করে ব্রিফিংয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, আর্মির (সেনাবাহিনী) হাতে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা নেই।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম-নির্যাতনের মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় ২৫ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
ওই সেনা কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এই আদেশ (গ্রেপ্তারি পরোয়ানা) পালনের ব্যাপারে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের অফিসকে অবহিত করা হয়েছে। তারা কিন্তু গ্রেপ্তার করবে না। তারা অবহিত থাকার অর্থ হচ্ছে যখন পুলিশ এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করতে যাবে, তারা অবহিত থাকলে এই পরোয়ানা তামিল করতে তাদের সাহায্য করবে। সুতরাং অ্যারেস্টিংয়ের পাওয়ার (গ্রেপ্তারের ক্ষমতা) কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর, অন্য কারও নয়।
তাহলে হেফাজতে থাকার ব্যাখ্যা কী, এ প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, যখনই গ্রেপ্তার দেখানো হবে, গ্রেপ্তার করা হবে, তখন থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই তাকে আদালতে আনতে হবে।
মন্তব্য