২৮ বছর পর বিশ্ব ফুটবলে কোনো ট্রফি জিতল মেসির আর্জেন্টিনা। আনহেল দি মারিয়ার একমাত্র গোলে ব্রাজিলকে হারিয়ে ১৫তম বারের মতো কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আলবিসেলেস্তেরা। ম্যাচের প্রথমার্ধের ২২ মিনিটে করা দি মারিয়ার গোলটিই শিরোপা নির্ধারণী হয়ে দাঁড়ায়।
মারাকানার ঐতিহাসিক ভেন্যুতে দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বীর শিরোপা লড়াইয়ের আগে হয় লেজার শো ও আতশবাজির খেলা। হাজার পাঁচেক দর্শককে অনুমতি দেয়া হয় ফাইনালের।
দর্শকসারিতে আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো।
ফাইনালে শুরুটা ভালো করে ব্রাজিল। প্রথম ১৫ মিনিটে ম্যাচে একচেটিয়া প্রাধান্য ছিল তাদের।
স্বাগতিকদের হয়ে ম্যাচে প্রথম সুযোগ পান নেইমার জুনিয়র। ১৩ মিনিটে রিচার্লিসনের বাড়ানো বল থেকে তার ভলি ঠেকিয়ে দেন আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেস।
মাঠের অন্য প্রান্তে নিজেদের প্রথম প্রচেষ্টাতেই গোল করে বসে আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠ থেকে রদ্রিগলো দে পলের বাড়ানো বল ব্রাজিল ডিফেন্ডার রেনান লোদি ক্লিয়ার করতে না পারলে ব্রাজিলের বক্সের কাছে তা পেয়ে যান আনহেল দি মারিয়া।
আগুয়ান গোলকিপার এডারসনের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন অভিজ্ঞ এই উইঙ্গার। লিড নিয়ে কিছুটা আগ্রাসী হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা।
১০ মিনিট পর লিওনেল মেসির শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বাকি সময়ে আর গোল না হওয়ায় ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয়ার্ধে পুরো চড়াও হয়ে খেলে ব্রাজিল। কিন্তু গোলের দেখা পাচ্ছিল না তারা।
৫২ মিনিটে পাকেতার পাস থেকে জোরালো শটে বল জালে জড়ান রিচার্লিসন। কিন্তু অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় গোল।
ব্রাজিল কোচ লিওনার্দো তিতে দ্বিতীয়ার্ধের একপর্যায়ে মাঠে চারজন স্ট্রাইকার খেলান যাদের মধ্যে ছিলেন অভিজ্ঞ গাবিগোলও। তাতে কাজ হয়নি।
বারবার নেইমার-ভিনিসিয়ুসরা চেষ্টা করেছেন আর্জেন্টাইন রক্ষণ ভাঙার। সেটি হয়ে ওঠেনি। ধীরে ধীরে শিরোপা চলে যায় ব্রাজিলের নাগালের বাইরে।
অন্য প্রান্তে মেসি একেবারে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন শেষ মুহূর্তে। ৮৯ মিনিটে এডারসনকে ওয়ান-অন-ওয়ান পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।
ইনজুরি টাইমের পাঁচ মিনিট দাঁতে দাঁত চেপে ব্রাজিলের আক্রমণের তোড় সয়ে যায় আর্জেন্টাইন ডিফেন্স।
আর কোনো গোল না হলে আর্জেন্টিনা ও লিওনেল মেসির হাতে ওঠে বহুল প্রতীক্ষিত কোপা আমেরিকার শিরোপা।
এই জয়ে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৫ বার ট্রফি জিতল আর্জেন্টিনা। উরুগুয়েও জিতেছে ১৫টি।
আর ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের পর দ্বিতীয়বার মারাকানায় শিরোপা খোয়াল নেইমারের ব্রাজিল।
আরও পড়ুন:Hoy fuimos 4⃣5⃣ millones de argentinos jugando con la Albiceleste 🇦🇷
— Selección Argentina 🇦🇷 (@Argentina) July 11, 2021
¡Siempre juntos, siempre unidos! 🙌🫂 pic.twitter.com/wP1KLqcs6C
কয়েক দিন ধরে অতিরিক্ত ঘনকুয়াশায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে দিনের বেলাতেও বাতি জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
এ মহাসড়কে কোনো যানজটের চিত্র না থাকলেও স্বাভাবিক গতির তুলনায় কিছুটা ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল লক্ষ করা গেছে।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার সকালে মহাসড়কের যমুনা সেতু পূর্ব রেলস্টেশন, জোকারচর ও সল্লা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কে ঘন কুয়াশার ফলে দিনের আলোতে লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এতে করে যানবাহন চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটছে না।
ঢাকার গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা নীলফামারীর সৈয়দপুরগামী হানিফ পরিবহনের চালক উজ্জ্বল মিয়া বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই খুব কুয়াশা পড়েছে। এই কুয়াশার জন্যে দূরের কিছু দেখা যায় না। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে দিনের বেলাতেও লাইট জ্বালিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে কম গতিতে গাড়ি চালাচ্ছি।’
যমুনা সেতু পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর আশরাফ বলেন, ‘রাত থেকেই তীব্র কুয়াশা পড়েছে। ফলে স্বাভাবিক গতির চেয়ে কিছুটা কম গতিতে যানবাহন চলাচল করছে, তবে মহাসড়কে কোনো ধরনের যানজট নেই। এ ছাড়া দুর্ঘটনা রোধে পুলিশ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বুধবার বলেছে, মঙ্গলবার ঢাকার উত্তরা এলাকায় একজন ইসকন সদস্যের ওপর হামলা হয়েছে বলে দাবি করে বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটি ভুয়া।
১০ ডিসেম্বর এবিপি আনন্দ এবং সংবাদ প্রতিদিনসহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, ঢাকার উত্তরায় একজন ইসকন সদস্যের ওপর হামলা হয়েছে।
সিএর প্রেস উইংয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকার উত্তরা এলাকার রাধারমণ মন্দিরের (ইসকন উত্তরা) পুরোহিত কৃষ্ণ প্রিয়া নিতাই দাস বলেছেন, তিনি উত্তরা এলাকায় কোনো ইসকন ভক্ত বা সদস্যের ওপর হামলার ঘটনা সম্পর্কে অবগত নন।’
ঢাকার পুলিশও জানিয়েছে, তারা এ ধরনের কোনো অভিযোগ পায়নি।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ভারতীয় মিডিয়া ‘ভুক্তভোগীর’ কোনো বক্তব্য বা পরিচয় প্রকাশ করেনি। বাংলাদেশ পুলিশ অথবা কোনো ইসকন নেতারও বক্তব্য নেই এসব প্রতিবেদনে, যা সার্বিক বিবেচনায় খবরগুলোকে অসত্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সাংবাদিকতার নীতি বহির্ভূত হিসেবে চিহ্নিত করে।
প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশ ইসকনের কেন্দ্রীয় নেতা হৃষিকেশ গৌরাঙ্গ দাস বলেছেন, উত্তরায় সাম্প্রতিক একটি পারিবারিক ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পারিবারিক বিষয়ে জড়িত যুবকরা ইসকনের সদস্য নন।
আরও পড়ুন:জাতীয় স্বার্থে দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই ব্যর্থ হবে। আল্লাহ তাদেরকে ব্যর্থ করে দেবেন ইনশাআল্লাহ।
রাজধানীর মগবাজারে আল ফালাহ মিলানায়তনে বুধবার জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার বার্ষিক অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের পরিচালনায় অধিবেশনে নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের ও মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘পরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচনের নামে প্রহসন করায় দেশের মানুষ ভোটের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। অসংখ্য যুবক-যুবতীর বয়স হয়েছে ভোট দেয়ার। কিন্তু তারা ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। নির্বাচনের প্রতি তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। এজন্য আমরা যৌক্তিক সময় দেয়ার পক্ষে।
‘বিলম্বিত বা দীর্ঘায়িত সময় নয়, যৌক্তিক সময় দিতে চাই। পাশাপাশি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে প্রবাসী ভাইয়েরা আমাদের সঙ্গে সমান তালে যুদ্ধ করেছেন। আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাদেরকেও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশ যখন পরিবর্তনের ইতিবাচক ধারায় রয়েছে তখন লক্ষ্য করছি, দেশকে অশান্ত করার জন্য পতিত স্বৈরাচার এবং তাদের দোসররা দেশ-বিদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তারা সমাজকে অস্থিতিশীল করতে চায়। বাংলাদেশের বিচক্ষণ দেশপ্রেমিক জনতা তাদের পালস বুঝতে পেরে তাদেরকে ব্যর্থ করে দিয়েছে।
‘তাদের এই অপপ্রয়াস জাতিকে আরেকবার ঐক্যবদ্ধ হতে সহযোগিতা করেছে। এই দেশের মানুষ আর কারও কাছে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করবে না এবং কোনো রক্তচক্ষুকে পরোয়া করবে না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ মানবিক, দুর্নীতিমুক্ত দেশ চাই। সুবিচারপূর্ণ একটি সমাজ চাই। আমরা যুবকদেরকে এদেশের উন্নয়নের কারিগর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সমাজ পরিচালনার দায়িত্ব ক্রমান্বয়ে তাদের হাতে তুলে দিতে চাই। আমরা আশাবাদী, প্রিয় দেশবাসীর সহযোগিতা পেলে একটা কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন:সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে দাওয়াতপত্রটি হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে দাওয়াতপত্র গ্রহণ করেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
জানতে চাইলে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বুধবার রাতে বার্তা সংস্থা বাসস-কে বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ রাত ৮টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব এই আমন্ত্রণপত্র আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।’
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে বদলি ও রদবদলের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন জেলার ১২ পুলিশ সুপারকে (এসপি) একযোগে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব আবু সাঈদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুলিশ অধিদপ্তরের (টিআর) পুলিশ সুপার আবু সাইমকে রংপুরের পুলিশ সুপার, গাইবান্ধার কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার আবু সায়েম প্রধানকে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমকে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার জাকির হোসেনকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দীনকে বরিশালের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ অধিদপ্তরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেককে গাজীপুরের পুলিশ সুপার, এন্টি টেররিজম ইউনিটের ঢাকার পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুনকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার, এপিবিএন সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলাকে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার আসলাম শাহাজাদাকে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এহতেশামুল হককে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এবং এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ারকে নওগাঁর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আইনি সুযোগ না থাকায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারান্তরীণ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানি হয়নি। এ সংক্রান্তে ঢাকা থেকে আসা এক আইনজীবীর তিনটি আবেদনই নাকচ হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলামের আদালতে বুধবার উপস্থিত হয়ে চিন্ময়ের জামিন শুনানি এগিয়ে আনাসহ তিনটি আবেদন করেছিলেন হাইকোর্টের এক আইনজীবী। কিন্তু ওকালতনামা না থাকায় আদালত তার তিনটি আবেদনই নামঞ্জুর করে।
এ সময় ওই আদালতে উপস্থিত চট্টগ্রামের সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন বার্তা সংস্থা বাসসকে জানান, আসামি পক্ষে ঢাকা থেকে আসা আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ আদালতে তিনটি দরখাস্ত দিয়েছিলেন। এর একটি চিন্ময়ের জামিন শুনানির তারিখ ২ জানুয়ারি থেকে এগিয়ে আনার জন্য, একটি নথি উপস্থাপনের জন্য এবং অপরটি তাকে শুনানি করার অনুমতি দেয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য।
আদালত অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষের কাছে জানতে চায়, তার কাছে ওকালতনামা আছে কিনা বা মামলা পরিচালনার জন্য আসামি পক্ষের আইনজীবীর অনুমতি আছে কিনা। এ সময় তিনি নেই বলে জানালে আদালত তাকে আইন মেনে আসতে বলেন।’
অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আদালতকে বলেছি ওনার এ ধরনের দরখাস্ত দেয়ার আইনি অধিকার নেই। তার কাছে আসামির ওকালতনামা নেই এবং যিনি এই মামলা ফাইল করেছেন তার পক্ষ থেকেও তাকে কোনো পাওয়ার দেয়া হয়নি।
‘শুনানি করা বা নথি উপস্থাপনের জন্য অবশ্যই ওকালতনামা দিতে হবে অথবা ফাইলিং আইনজীবীকে বলতে হবে- ঢাকা থেকে যিনি এসেছেন তিনি তাকে ক্ষমতা দিয়েছেন। কিন্তু ওই আইনজীবীর কাছে এর কোনোটাই ছিল না। তাই আদালত এটা রিজেক্ট করে দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে গত ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। এরপর ২৫ নভেম্বর ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়। ২৬ নভেম্বর জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে চিন্ময় দাসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। ৩ ডিসেম্বর জামিন শুনানির দিন থাকলেও কোনো আইনজীবী না থাকায় শুনানির দিন আগামী ২ জানুয়ারি ধার্য রয়েছে।
আরও পড়ুন:চলমান সংস্কার কার্যক্রমে সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে তাদের অবস্থান অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে জাপানি রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি বলেন, ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক- এই তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে জাপান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করবে। আমরা এই তিনটি স্তম্ভের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচনি ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সংস্কার কার্যক্রমে টোকিওর দৃঢ় সমর্থনের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ইউনূস উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখায় জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, ‘এই সম্পর্ক সবসময় খুব শক্তিশালী ছিল।’
সরকার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি আমাদের জন্য ইতিবাচক বার্তা দেয়।
জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ থেকে জাপানি কোনো কোম্পানি চলে যায়নি। তারা এখানে থাকতে আগ্রহী।’
নিক্কেইয়ের বার্ষিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রদূত। সেখানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখবেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ওই সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূস জাপানের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন এবং তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাতে পারবেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার পদক্ষেপের প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, টোকিও এই বৈঠককে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।
অধ্যাপক ইউনূস মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের গ্যারান্টিযুক্ত একটি নিরাপদ এলাকা তৈরির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন, যেখানে সংঘাত শেষ হওয়ার পর বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে তাদের বাড়িতে ফেরার আগে সাময়িকভাবে পুনর্বাসিত করা যেতে পারে।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য