ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জয়হীন থাকল বিশ্বকাপ রানার্স আপ ক্রোয়েশিয়া। গ্রুপ ডি-এর ম্যাচে চেক রিপাবলিকের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে লুকা মডরিচের দল।
স্কটল্যান্ডের হ্যাম্পডেন পার্কে অনন্য এক রেকর্ড নিয়ে মাঠে নামে ক্রোয়েশিয়া। সবশেষ দশটি মেজর টুর্নামেন্টে তারা কখনও নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ হারেনি। ২০১৬ ইউরোতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে চেক রিপাবলিকের সঙ্গেই ২-২ গোলে ড্র করে তারা।
একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এবারের টুর্নামেন্টে শুরুটা ভালো হয়নি ক্রোয়াটদের। দ্বিতীয় মিনিটে ইয়াঙ্কটোর ক্রস নিজেদের বক্স থেকে পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডার সিমে ভারসালিকো।
ছুটে যাওয়া বলে হেড করেন ভ্লাদিমির কুফাল। কাছ থেকে দারুণ ব্লক করে ক্রোয়াটদের সুরক্ষিত রাখেন অভিজ্ঞ ডোমাগোই ভিডা।
চেক রিপাবলিক গোল করতে না পারলেও হতাশ হয়নি। বারবার চেষ্টা করে গেছে ক্রোয়াটদের বক্সে। এর ফল পায় তারা বিরতির আগে।
৩৫ মিনিটে নিজেদের বক্সে প্যাটট্রিক শিককে ফাউল করেন ক্রোয়েশিয়ার ডেয়ান লভরেন। ভিডিও অ্যাসিস্টেন্টের সাহায্য নিয়ে রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন।
পেনাল্টি স্পট থেকে ঠাণ্ডা মাথায় লক্ষ্যভেদ করেন শিক। টুর্নামেন্টে এটি তার দ্বিতীয় গোল। ওই এক গোলে এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে চেকরা।
বিরতির পরপরই সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। আন্দ্রেই ক্রামারিকের ফ্রি-কিক থেকে বল পেয়ে যান ইভান পেরিসিচ। কুফালকে ডজ দিয়ে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন এই ইন্টার মিলান উইঙ্গার।
কামব্যাক করে উজ্জ্বীবিত হয়ে খেলা শুরু করে বিশ্বকাপ ফাইনালিস্টরা। তবে কাছ থেকে শট বারে রাখতে ব্যর্থ হন নিকোলা ভ্লাসিচ।
আর শেষ মুহূর্তে ব্রুনো পেটকোভিচের শট ঠেকিয়ে দেন চেক রিপাবলিকের ডিফেন্ডার টমাস কালাস।
ফলে ১-১ সমতাতেই শেষ হয় ম্যাচ। ড্রয়ের পরও দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে আছে চেক রিপাবলিক।
আর টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জয় বঞ্চিত থাকায় তারা আছে গ্রুপের তিনে। বুধবার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে চেক রিপাবলিক আর ক্রোয়েশিয়া খেলবে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে
আরও পড়ুন:Croatia & Czech Republic share the points after Ivan Perišić's second-half leveller.
— UEFA EURO 2020 (@EURO2020) June 18, 2021
Who will qualify? 🤔#EURO2020 | #CRO | #CZE
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে এক হাজার কেজি হাড়িভাঙ্গা আম পাঠাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোমবার (১৫ জুলাই) এই আমের চালানটি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছাবে।
নয়াদিল্লি পৌঁছানোর পর আমগুলো ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, কূটনীতিক এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যেও বিতরণ করা হবে— মৈত্রীর অংশ হিসেবে।
এছাড়া, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আম পাঠাচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীসহ সেখানকার বিশিষ্টজনদের জন্য ৩০০ কেজি হাড়িভাঙ্গা আম উপহার পাঠানো হয়। আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে ৬০টি কার্টনে এসব আম পাঠানো হয়।
প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকার মৌসুমি উপহার হিসেবে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য আমসহ বিভিন্ন ফল পাঠিয়ে থাকে। এর জবাবে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারও উপহার হিসেবে বাংলাদেশের জন্য পাঠায় বিখ্যাত রসালো ‘কুইন’ জাতের আনারস।
চলতি বছরের আম উপহার পাঠানোর কার্যক্রমটি পরিচালনা করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এটি রপ্তানিকারকের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন, আগরতলার কর্মকর্তাদের কাছে উপহারের চালানটি হস্তান্তর করা হয়।
এই উদ্যোগকে ‘আম কূটনীতি’ হিসেবে অভিহিত করা হয়, যা আগের প্রশাসনের সময়েও চলমান ছিল। এখনো এটি সৌহার্দ্য ও পারস্পরিক শুভেচ্ছার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বিষয়ে ঐক্য গড়ে এবং রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন বিষয়ে একমত হয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ তৈরির লক্ষ্যে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আজ আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আজ সকাল সাড়ে ১১টায় দ্বিতীয় দফার দ্বাদশ দিনের মত আনুষ্ঠানিকভাবে এ আলোচনা শুরু হয়েছে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আজকের আলোচনার সূচিতে প্রাধান্য পাচ্ছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা, প্রধান বিচারপতি নিয়োগবিধি ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা।
এর আগে, উল্লেখ্য তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। পূর্বের অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আজ অধিকতর আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
বরাবরের মতো আজকেও আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
এছাড়া, কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন- বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
সংলাপ শুরু হওয়ার আগে সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে বলেন, যেহেতু আপনারা রাজনৈতিক দল করেন, সেহেতু সব বিষয়ে আপনাদের একটি নির্দিষ্ট অবস্থান থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে আপনাদের প্রতি অনুরোধ, একটি মাঝামাঝি স্থানে এসে আমাদের দাঁড়াতে হবে।
পরবর্তীতে যদি জনগণের কাছ থেকে আপনারা প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারেন, তাহলে সেটি পরিবর্তন করতে পারেন এবং সেটি জনগণের রায়ের ওপর নির্ভরশীল থাকবে।
কিন্তু কমিশন মনে করছে, একটি পর্যায়ে আসা ভালো।
তিনি আরো বলেন, আমরা আপনাদের বক্তব্যকে গুরুত্বহীন মনে করছি না, বরং আমরা চাচ্ছি সকলে একটি ঐক্যমতে পৌঁছাক। চাইলেই এ আলোচনা বাদ দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু তাতে বিদ্যমান পরিস্থিতিই থেকে যাবে। আমাদের একটি জায়গায় আসতে হবে- এই বিবেচনাটা যদি আপনারা করেন, তাহলে আমাদের পক্ষে ঐকমত্য গঠন করা সম্ভব।
তিনি সকলের প্রতি কিছুটা ছাড় দিয়ে ও কিছুটা অবস্থান পরিবর্তন করে একটি জায়গায় আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা অবস্থার পরিবর্তন করে হলেও এগিয়ে আসুন। না হলে আমরা যেখানে আছি, সেখানেই থেকে যাব। গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে এইটুকু বিবেচনা করুন যে, এটা সম্ভব কি-না।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করছে- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
এর আগে, দফায় দফায় বৈঠকে কমিশন প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণকল্পে স্বতন্ত্র কমিটি গঠন করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, আলোচনা শেষে ব্রিফ করবেন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ত্রাস খ্যাত শাহীনুর রহমান ওরফে শাহীন ডাকাতকে কক্সবাজার আদালতের হাজতে মুঠোফোন সুবিধা দেয়ার ঘটনায় দুই টিএসআই সহ ৫ জনকে দায়িত্ব অবহেলার দায়ে পুলিশ লাইন্স এ সংযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এছাড়া কোর্ট হাজতে আসামিদের সাথে সাক্ষাৎতের বিষয়ে আরও সর্তক হওয়ার কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ক্লোজড হওয়াদের দুই টিএসআই, তিনজন কনস্টেবল। তারা হলেন টিএসআই সুরেন দত্ত, আবদুল ওয়াহেদ, কনস্টেবল নাজম হায়দার, গোলাম।মোস্তফা ও ইয়াছিন নূর।
এর আগে এই ঘটনা নিয়ে শুক্রবার কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যোর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত বুধবার (৯ জুন) আদালতে হাজিরা দিতে কোর্ট পুলিশের হেফাজতে হাজতখানা থেকে বের করে আনা হয় শাহীনকে। ঠিক তখনই তার পকেটে থাকা মোবাইল ফোন নজরে আসে কক্সবাজারের গণমাধ্যমকর্মী দের চোখে। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে গঠিত হয় তদন্ত কমিুট।
জানা গেছে, গত ৫ জুন সকালে কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য শাকের আহমদের বাড়ি থেকে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় শাহীন ডাকাতকে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, অস্ত্র, মাদকসহ অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে।
কক্সবাজার আদালতের কোর্ট পরিদর্শক মো. গোলাম জিলানী ক্লোজড'র বিষয়টি স্বীকার করেন।
‘মন মোর মেঘেরও সঙ্গী’ এই স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে নওগাঁয় উদযাপিত হলো বর্ষা উৎসব-১৪৩২।
শনবিার (১২ জুলাই) রাত ৮টায় শহরের প্যারিমোহন লাইব্রেরী গ্রন্থাগারে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই বর্ষা উৎসব। শুরুতে দলীয় গান পরিবেশনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় উৎসব। পরে একে একে গান, নাচ, আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
এছাড়াও বর্ষাকথনসহ অন্যান্য আয়োজনের মাধমে রাত ১০টায় শেষ হয় এই বর্ষা বরণ উৎসবটি। বর্ষা বরণ উৎসবের আয়োজন করেন ‘নওগাঁ সাংস্কৃতিক ঐক্য’ নামে একটি সংগঠন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন সংগঠনটির সভাপতি মনোয়ার লিটন ও সাধারন সম্পাদক মাগফুরুল হাসান বিদ্যুৎ।
অনুষ্ঠানে নাচ, গান আর কবিতা আবৃত্তি ও বর্ষাকথনে ক্ষণে ক্ষণে ভেসে আসে গ্রাম বাংলার প্রকৃতিতে বর্ষার আবেদনের কথা। শিল্পীদের এমন পরিবেশনায় বর্ষা বন্দনায় মেতে ওঠে স্থানীয় শিল্পী এবং সংস্কৃতি কর্মীরা।
আয়োজকরা জানান, বর্ষা উৎসব উদযাপন করার মাধ্যমে প্রকৃতির প্রতি মানুষের ভালবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ প্রকাশ পায়। এছাড়াও প্রজন্মের সাথে প্রজন্মের মিল বন্ধন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও শহরের যান্ত্রিক জীবনে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যর ধারনা দিতে এমন উৎসবের আয়োজন।
নওগাঁ সাংস্কৃতিক ঐক্য সংগঠনটির সভাপতি মনোয়ার লিটন বলেন, বর্ষা আবহমান বাংলার শিল্প, সাহিত্য সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। বর্ষার সাথে বাংলার মানুষের সম্পর্ক বহু প্রাচীন। বর্ষায় প্রকৃতির রূপ-বৈচিত্র্যে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। প্রচন্ড খরতাপের পর বর্ষা এলে প্রাণ ফিরে পায় প্রকৃতি। সাহিত্যের পরতে পরতে বর্ষা যেমন উদ্ভাসিত তেমই যাপিত জীবনেও বর্ষা এনে দেয় নিজেকে খুজে পাওয়ার মূহুর্ত। গ্রীষ্মের ধূলোমলিনতা ধুয়ে প্রকৃতি সবুজের সমারোহে সাজে। জীর্ণতা ধুয়ে মুছে, নব-যৌবন আর শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিক এবারের বর্ষা এমনি প্রত্যাশার কথা বলেন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে নবীনগর-কোম্পানিগঞ্জ রোড়ের পৌর এলাকার আলীয়াবাদ বাজারে সড়কের পাশে মাটির চাপে ড্রেইন ভেঙে গিয়ে মরণ ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। যে কোন সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
জানা যায়- জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে টানা বৃষ্টিতে নবীনগর- কোম্পানিগঞ্জ সড়কের আলীয়াবাদ বাজারে সড়কের পাশের ড্রেইটি ভেঙে যাওয়ার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে সড়কটি। ঝুঁকি নিয়েই এ সড়কে প্রতিনিয়ত চলাচল করে নবীগর, কুমিল্লা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের যানবহন। তাই চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ সড়ক যাতায়াতকারী যাত্রীদের। আলীয়াবাদ বাজারে আসা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জনদুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ- পৌরসভার এ ড্রেইনটি দিয়ে আলীয়াবাদ গ্রামের পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে। ফলে ওই এলাকায় তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। অবিলম্বে ড্রেইনটি নির্মাণ করে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল ও ফাটল ধরে যাওয়া সড়কের কাজ দ্রুত করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান- প্রতিদিন পৌর এলাকারসহ আশপাশের গ্রামের হাজারো মানুষ আসে এ বাজারে। এ ড্রেইনটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। পরিবহণ শ্রমিকরা জানান- ঝুঁকি নিয়ে আমাদেরকে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এ স্থানে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এ ড্রেনটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে প্রতি দিনই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নবীনগর পৌরসভার প্রশাসক রাজীব চৌধুরী বলেন-"সড়কের মালিক সওজ, তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে, তারা জানিয়েছেন দ্রুত সময়ে কাজ শুরু হবে"।
চাঁদপুরে ‘রাসূল (সা.) বার্তা বাহক’ এমন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে মসজিদের ভেতরে খতিবের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত আসামি বিল্লাল হোসেনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
শনিবার (১২ জুলাই) তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন চাঁদপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাতুল হাসান আল মুরাদ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকালে তাকে আদালতে হাজির করে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। পরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আসামি। এরপর আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে, শুক্রবার (১১ জুলাই) এই ঘটনায় আহত খতিব মাওলানা আ ন ম নুরুর রহমান মাদানীর ছেলে আফনান তাকি বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
এসব তথ্য ইউএনবিকে নিশ্চিত করেছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের এপিপি আব্দুল কাদের খান ও জেলা জজ আদালতের এপিপি ইয়াসিন আরাফাত ইকরাম।
চাঁদপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক শহীদুল্লাহ ইউএনবিকে জানান, শনিবার বিকাল ৩টার দিকে আসামিকে আদালতে আনা হয়। এরপর আসামি বিচারকের কাছে জবানবন্দী দেন। জবানবন্দী শেষে বিকালে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন— চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হোসেন।
এদিকে, শনিবার দুপুর থেকে একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ায়, খতিব নুরুর রহমান মাদানী মারা গেছেন।
তবে মামলার বাদী আহত খাতিবের ছেলে আফনান তাকী জানান, তারা বাবা প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর ঢাকা হলি কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং শঙ্কামুক্ত আছেন।
গুরুতর আহত খতিব মাওলানা নূরুর রহমান মাদানী শহরের গুনরাজদী এলাকার বাসিন্দা। তিনি মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে প্রায় শুক্রবার খুতবা দেন।
অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেন সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মনোহর খাদি গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে। শহরের বকুলতলায় বসবাস করেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার বাদ জুমা মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদে হামলার শিকার হন মাওলানা নূরুর রহমান মাদানী। আগেই জুম্মার নামাজে আলোচনা ও খুতবা নিয়ে ক্ষিপ্ত ছিলেন ওই এলাকার ভ্রাম্যমাণ সবজি ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন। ঘটনার দিন নামাজ শেষে তিনি মসজিদের ভেতরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র (চাপাতি) দিয়ে খতিবের ওপর হামলা চালান। এতে খতিবের কানে ও মাথায় মারাত্মক জখম হয়। পরবর্তীতে মুসল্লিরা তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ সময় হামলাকারী বিল্লাল হোসেনকে আটক করে পুলিশ সোপর্দ করেন মুসল্লিরা।
এদিকে, এই ঘটনায় শহরে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বিকাল ৩টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব।
এ ছাড়া, বিকাল ৫টায় শহরের রেলওয়ে বায়তুল আমিন জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াতে ইসলামী চাঁদপুর শহর শাখা।
গোলাকান্দাইলের হাটে এসেছেন শামীম মিয়া। তিনি বলেন, সারা বছর চাষের মাছ খেতে আর ভাল লাগে না। বর্ষাকালে আশেপাশের এলাকা থেকে প্রচুর দেশি মাছ রূপগঞ্জের হাট বাজারে পাওয়া যায়, তা কিনতেই হাটে আসা। আবুল হোসেন নামে আরেকজন বলেন, নতুন পানির টাটকা মাছ খাওয়ার মজাই আলাদা। তবে দাম একটু বেশি। এখন বর্ষাকাল। নতুন পানি এসেছে নদী-নালা, খাল-বিল, খেত, হাওর-বাঁওড়ে। মুক্ত জলাশয়ে এখন পাওয়া যাচ্ছে দারকিনা, পুঁটি, মলা, ঢেলা, চেলা, চান্দা, খলসে, গজার, বোয়াল, চিতল, বাগাড়, আইড়সহ নানা প্রজাতির মাছ। গ্রামগঞ্জ হয়ে এসব মাছ যাচ্ছে রাজধানীসহ বড় বড় শহরে।
কায়েতপাড়া বাজারে শনিবার দেখা যায়, নীলাস্বরের দোকানে পুঁটি, বোয়াল, ট্যাংরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। পুঁটিগুলো টাটকা, আকারে বেশ বড়। তিনি প্রতি কেজি পুঁটি এক হাজার টাকা দর হাঁকাচ্ছিলেন। তাঁর দোকান থেকে আধা কেজি পুঁটি দর-কষাকষি করে ৪০০ টাকায় কেনেন ব্যবসায়ী আলো মিয়া। ৬০০ টাকায় আধা কেজি ট্যাংরা, ১ হাজার টাকায় এক কেজি ওজনের একটি বোয়াল কেনেন তিনি।
বর্ষার এই মৌসুমে দেশি মাছের প্রতি মানুষের আগ্রহও বেশি। গাউছিয়ার তাতবাজার এলকার কাঁচাবাজার থেকে বড় আকারে এক কেজি বেলে মাছ ১ হাজার ৩০০ টাকায় কেনেন বেসরকারি চাকরিজীবী মিঠু। এ ছাড়া এক হাজার টাকা কেজির চিংড়ি মাছ এবং ২ হাজার ৩০০ টাকা দরের ইলিশও কিনেছেন তিনি। মিঠু বলেন, দেশি মাছের দাম অনেক বেশি। বাসার লোকজন বাইল্যা মাছ খেতে চাচ্ছিল, দাম বেশি সত্ত্বেও এক কেজি কিনলেন।
বাজারে নানা প্রজাতির ছোট মাছের পাশাপাশি বড় মাছও লক্ষণীয়। ভুলতা বাজারের বাচ্চু মিয়ার দোকানে অনেক মাছের মধ্যে একটি রুই মাছ পাওয়া গেল ১২ কেজি ওজনের। প্রতি কেজি ১ হাজার ৬০০ টাকা হিসেবে এই মাছটি ১৯ হাজার ২০০ টাকা হাঁকাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর দোকানে চার কেজি ওজনের চিতলও ছিল। প্রতি কেজি এক হাজার টাকা করে চার হাজার টাকা দাম চান একটি চিতল মাছের। তাঁর কাছে ছয় কেজি ওজনের আইড় মাছও দেখা গেল। বাচ্চু মিয়া বলেন, নদীর মাছ এগুলো। সব সময় এমন মাছ পাওয়া যায় না। তাই দাম বেশি।
তাঁর পাশেই মাছ নিয়ে বসে ছিলেন মতিন। সাত কেজি ওজনের একটি বাগাড় মাছের দাম চাইছিলেন তিনি সাত হাজার টাকা। মতিনের মতে, যাদের বড় পরিবার তারা বড় আকারের মাছ কেনে। নদ-নদীর এসব বড় মাছ খুব সুস্বাদু।
মুক্ত জলাশয়ের মাছের দাম বেশ চড়া। বাজারভেদে ও আকারভেদে দেশীয় এসব দামের পার্থক্য হয়ে থাকে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি পুঁটি ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, প্রতি কেজি ট্যাংরা ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, বেলে ৫০০ থেকে ১ হাজার ৩০০, বাইন ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০, চিংড়ি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪০০, মলা ৬০০ টাকা, পিয়ালি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, গুলশা ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, বাতাসি ১ হাজার ২০০, কাচকি ৮০০, শোল ১ হাজার টাকা, মাগুর ৫০০ থেকে ৬০০, শিং ৪০০ থেকে ৫০০, পাবদা ৪০০, বাগাড় ১ হাজার টাকা, আইড় ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০, বোয়াল ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, চিতল ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, বড় রুই ১ হাজার ৬০০ টাকা প্রতি কেজি।
মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে উৎপাদিত মোট মাছের ৫৯ শতাংশ চাষের। নদী, খাল, বিল, হাওরের মতো মুক্ত জলাশয়ের মাছ মোট উৎপাদনের মাত্র ১৫-১৭ শতাংশের মতো। অর্থাৎ মুক্ত জলাশয়ের মাছের উৎপাদন কম। তা ছাড়া মুক্ত জলাশয়ের মাছের স্বাদ বেশি। সরবরাহ কম এবং চাহিদা বেশি থাকায় মুক্ত জলাশয়ের মাছের দাম বেশি।
বর্ষার নতুন পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে খেতে, বিলে, হাওরে, নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের দেখা মেলে। মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, মিঠাপানির মাছ প্রায় ২৬১ প্রজাতির। এর মধ্যে বর্ষায় ৩০-৩৫ প্রজাতির ছোট মাছ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দেখা যায়।
মুড়াপাড়া কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক খোরশেদ আলম বলেন, বর্ষা শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দারকিনা, পুঁটি, মলা, ঢেলা, চেলা, টাকি, শোল, গজার, শিং, মাগুরহ অসংখ্য ছোট প্রজাতির মাছ দেখা যায়। শুষ্ক মৌসুমে অল্প পানিতে কিছু মাছ থাকে। অনেক মাছ বৃষ্টি আসার সঙ্গে সঙ্গে ডিম ছাড়ে। ডিম থেকে পোনা খুব দ্রুত বড় হয়। বৃষ্টির কারণে বিল, খাল ও নদীর সংযোগ হওয়ায় মাছ ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পায়। মাছের প্রাচুর্য বাড়ে।
মৎস্য অফিসার আলমগীর হোসেন বলেন, মুক্ত জলাশয়ের মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে অধিদপ্তর কাজ করছে। রূপগঞ্জে মাছের অভয়াশ্রম নেই বললেই চলে। এর আওতায় নদী বা খাল-বিলের গভীর অংশে মাছ ধরা নিষেধ থাকে সারা বছর। সেখানে মাছ তৈরি হবে এবং বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায়। প্রকল্প নিয়ে এ ধরনের অভয়াশ্রমের সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে।
মন্তব্য