চ্যাম্পিয়নস লিগের একাধিক ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও, পেপ গার্দিওলার চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির সামনে ২০২১ সালের ফাইনালে আন্ডারডগ হিসেবেই নামে চেলসি।
মৌসুমে ইংলিশ লিগের শিরোপা দৌড় থেকে বেশ খানিকটা দূরে ছিল তারা। বাজে পারফরম্যান্সের কারণে মৌসুমের অর্ধেকে এসে তাদের পাল্টাতে হয় ম্যানেজার। ঘরের ছেলে ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডকে সরিয়ে দায়িত্ব নেন টমাস টুখেল।
এই জার্মান ট্যাকটিশিয়ানের ছোঁয়াতেই যেন পাল্টে গেছে চেলসি। লিগের শেষ দিনে চ্যাম্পিয়নস লিগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি তারা ঘরে তুলেছে ইউরোপীয় ফুটবলের সবচেয়ে বড় ট্রফি। দ্বিতীয়বারের মতো ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ চ্যাম্পিয়ন লন্ডনের ক্লাবটি।
২০১১-১২ মৌসুমের পর আবারও ইউরোপের সেরা ক্লাবের সম্মান পেল চেলসি। বিপর্যয়ের দিকে যেতে থাকা মৌসুম শেষ হলো সাফল্যের চূড়ান্ত শিখরে।
পোর্তোর স্তাদিও দ্রাগাওয়ে ম্যানচেস্টার সিটি নামায় একেবারে আক্রমণাত্মক একাদশ। গার্দিওলার লক্ষ্য ছিল পরিষ্কার। শুরু থেকেই করবেন আক্রমণ।
অন্যদিকে, টুখেলের চেলসি খেলে কাউন্টার অ্যাটাকনির্ভর। সিটির আক্রমণের তোড় সামলে নিজেদের আক্রমণ রচনা করেন কাই হাভের্টস-টিমো ভের্নাররা।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের জমে ওঠা ম্যাচে গোল পায় চেলসি। সিটির হাইলাইন ডিফেন্সকে বোকা বানানো মেসন মাউন্টের পাস পেয়ে লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি হাভের্টস।
প্রথমার্ধের ৪২ মিনিটে করা এই জার্মান ফরোয়ার্ডের গোলটিই শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠে শিরোপাজয়ী।
বিরতির পর ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা চালায় সিটি। কিন্তু তাদের অধিনায়ক ও সেরা তারকা কেভিন ডি ব্রুইনা আহত হয়ে মাঠ ছাড়লে নিভে যায় তাদের ম্যাচে লড়াই করার আশা।
এরপরও চেষ্টা করেছেন গার্দিওলার শিষ্যরা। ডি ব্রুইনার বদলি হিসেবে নামা গাব্রিয়েল জেসুস, অভিজ্ঞ সার্হিও আগুয়েরো ও তরুণ ফিল ফোডেনের একের পর এক আক্রমণ নস্যাৎ করে দেয় চেলসির রক্ষণভাগ।
ব্লুদের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা আহত হয়ে মাঠ ছাড়লেও চিড় ধরেনি রক্ষণে। ৯০ মিনিট ও ইনজুরি টাইমের বাড়তি সাত মিনিট দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে চেলসি। ফলস্বরূপ তাদের হাতেই ওঠে ইউরোপ সেরা দ্বিতীয় ট্রফি।
টুখেলের কাউন্টার অ্যাটাকিং কৌশলের কাছে হার মানতে হয় গার্দিওলার আল্ট্রা অ্যাটাকিং মানসিকতাকে।
৯ বছর পর ইউরোপ সেরা ক্লাবের স্বীকৃতি পেল চেলসি। পোর্তোতে রচনা করলো প্রথম কোনো ইংলিশ ক্লাবের শিরোপা জয়ের ইতিহাস।
আর গার্দিওলাকে ফিরতে হবে এখন ড্রয়িং বোর্ডে। লিওনেল মেসিকে ছাড়া সাফল্য পাননা চ্যাম্পিয়নস লিগে, এই অপবাদ মুছতে তাকে আরও অপেক্ষা করতে হবে অন্তত এক বছর।
আরও পড়ুন:Soak it up Chelsea fans! 🎇#UCL #UCLfinal pic.twitter.com/BgsxKX4xpD
— UEFA Champions League (@ChampionsLeague) May 29, 2021
শেখ হাসিনার সরকার গত ১৫ বছরে কীভাবে অর্থ পাচার করেছে তা পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, আগামী প্রজন্ম যাতে এ সম্পর্কে জানতে পারে এবং সচেতন থাকতে পারে সেজন্য এসব তথ্য পাঠ্যপুস্তকে রাখা হবে।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রোববার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রেস সচিব।
শফিকুল আলম বলেন, আর্থিক খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি তিন মাসের অনুসন্ধান প্রতিবেদন আজ সকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনটি শিগগির জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করা হবে।
তিনি বলেন, ক্ষমতা হারানোর কিছুদিন আগেও শেখ হাসিনা সরকার ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়েছিল। মূলত এস আলমকে টাকা পাচারের সুযোগ করে দিতেই এতো পরিমাণ টাকা ছাপানো হয়েছিল।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, এই মহাচুরির বিচার অবশ্যই হবে। পাশাপাশি পাচার হওয়া টাকা ফেরানোর চেষ্টা করবে সরকার। আমরা সর্বোচ্চভাবে এই চেষ্টা চালিয়ে যাব।
তিনি বলেন, টাকা চুরি করে কোথায় নিয়ে গেছে, সেটা বের করা এবং টাকা দেশে ফেরানোই সরকারের লক্ষ্য। পাচার হওয়া অর্থ বিদেশ থেকে ফেরত আনার জন্য এফবিআইসহ বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করছে সরকার।
শফিকুল আলম বলেন, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির পরীক্ষা করা সাতটি প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ছিল এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। অতিরিক্ত উপাদান যোগ করে, জমির দাম বেশি দেখিয়ে এবং ক্রয়ের ক্ষেত্রে হেরফের করে প্রকল্পের ব্যয় সংশোধন করে এক লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়। ব্যয়ের সুবিধা বিশ্লেষণ না করেই প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ কে এনামুল হকের রেফারেন্স দিয়ে প্রেস সচিব বলেন, গত ১৫ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) সাত লাখ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে এবং এর ৪০ শতাংশ অর্থ আমলারা লুটপাট করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর।
আরও পড়ুন:গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া রায়ের কারণ দেখে ও নির্দেশনা নিয়ে তারপর আপিলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আপিল করা উচিত বলে মনে করি।’
রোববার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এমন মন্তব্য করেন।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রোববার রায় দেয় হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ডেথ রেফারেন্স নাকচ করে ও আসামিদের আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেয়া হয়। ফলে এ মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ দণ্ডিত সব আসামি খালাস পেয়েছেন।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রায় দেয়। হাইকোর্টের একই বেঞ্চ গত ২১ নভেম্বর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি গ্রহণ শেষ করে। সেদিন আদালত মামলা দুটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে। রোববার তা ঘোষণা করা হয়।
রায়ের পর আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ বলা হয়েছে। শোনা সাক্ষীর ওপর ভিত্তি করে রায় দেয়া হয়েছিল। কেউ স্বচক্ষে দেখেছেন- এ মর্মে কোনো প্রমাণ নেই।’
তিনি বলেন, ‘স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া হয়েছে নির্যাতনের মাধ্যমে। মুফতি হান্নান দুটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। চারশ’ বছরের ইতিহাসে ভারতীয় উপমহাদেশে দ্বিতীয় জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে কাউকে সাজা দেয়ার নজির নেই।’
আরও পড়ুন:জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের শহীদদের জাতীয় বীর আখ্যায়িত করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শহীদদের স্বপ্ন পূরণে জামায়াত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
খুলনা নগরীর ইস্টার্ন জুট মিল শ্রমিক মাঠে জামায়াতের খানজাহান আলী থানা ইউনিটের কর্মী সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদরা বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। আমরা তাদের স্বপ্ন পূরণে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তারা জুলাই-আগস্টে দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করেছে এবং স্বৈরাচারের অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করেছে।’
জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই- যেখানে জাতি, দল, ধর্ম নির্বিশেষে মানুষের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। এদেশের নাগরিক হিসেবে সব মানুষ মর্যাদার সঙ্গে তাদের ন্যায্য অধিকার ভোগ করবে।’
তিনি বলেন, ‘শত শত ছাত্রের রক্তের বিনিময়ে স্বৈরশাসককে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। বাংলার মাটিতে স্বৈরাচারীরা যাতে আর ফিরে আসতে না পারে, সেজন্য যে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে ডা. শফিকুর বলেন, ‘দেশের মানুষ গত ১৭ বছরের আওয়ামী লীগ শাসনামলে সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ‘লগি-বৈঠা’র মাধ্যমে তাদের হত্যা যাত্রা শুরু করে।
‘ফ্যাসিবাদী এই শাসক বিডিআর বিদ্রোহের সময় ৫৭ জন প্রতিভাবান সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে এবং তাদের অনেককে গুম করে- যা এ বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা এই অঞ্চলের সব পাটকল ও কৃষি জমি ধ্বংস করেছে। সব বন্ধ পাটকল পুনরায় চালু ও শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি।’
খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি গাজী মোরশেদ মামুনের পরিচালনায় এবং থানা আমির সাঈদ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
জামায়াতের আমির এর আগে নগরীর আল ফারুক সোসাইটিতে মহিলা জামায়াত খুলনা সিটি ইউনিটের মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
আরও পড়ুন:সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত কাজ করছে। সামনে আরও কঠিন সময় আছে। সবাই মিলে কাজ করলে দেশকে এই ক্রান্তিলগ্ন থেকে উদ্ধার করা সম্ভব।
রোববার ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্যদের সংবর্ধনা এবং সেনাবাহিনীর শান্তিকালীন পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্যদের কাছে দোয়া চেয়ে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘সামনে আরও সময় আছে। একটু কঠিন সময় পার করতে হবে আমাদের। আমরা যেন দেশ ও জাতিকে একটা ভালো জায়গায়, একটা নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে পারি সেজন্য দোয়া করবেন।’
স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেনাবাহিনী গঠনে অবদান রাখায় মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান সেনাবাহিনী প্রধান।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের অবদানের ফলশ্রুতিতেই আজকের এই সেনাবাহিনী দাঁড়িয়ে আছে। সেনাবাহিনী দেশের ক্রান্তিকালে অনেক ভালো কাজ করে যাচ্ছে। দেশ এবং জাতি এই সেনাবাহিনীর কাছে কৃতজ্ঞ। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সেনাসদস্যরা দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাছাড়াও দেশ ও জাতি গঠনের বিভিন্ন কাজে আমরা নিয়োজিত আছি।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বিশ্বশান্তি রক্ষায় আমরা ইউএন মিশনে কাজ করে যাচ্ছি। ডিজাস্টার ও রিলিফে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা পারদর্শিতা অর্জন করেছি। এটা সম্ভব হয়েছে আপনাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে। আপনারা যেভাবে আমাদের প্রশিক্ষিত করেছেন, যেভাবে মোটিভেটেড করেছেন, যেভাবে আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, তার ফলশ্রুতিতে সেনাবাহিনী আজ বর্তমান জায়গায় আছে। এর কৃতিত্ব, অবদান আপনাদের।’
শান্তিকালীন পদক বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে যদি কাজ করি ইনশাআল্লাহ দেশকে এই ক্রান্তিলগ্ন থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হবো। একটা শান্ত, সুশৃঙ্খল ভবিষ্যতের দিকে যেতে সক্ষম হবো।’
২০২৩-২৪ অর্থবছরে শান্তিকালীন সময়ে বিভিন্ন বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২৮ সেনা সদস্যকে পদক পরিয়ে দেন সেনাপ্রধান। তাদের মধ্যে পাঁচজন সেনাবাহিনী পদক, পাঁচজন অসামান্য সেবা পদক ও ১৮ জন বিশিষ্ট সেবা পদক অর্জন করেন।
অনুষ্ঠানে খেতাবপ্রাপ্ত ও মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্য এবং তাদের নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় ও শুভেচ্ছা উপহার দেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
আরও পড়ুন:সিভিল সার্ভিস থেকে ‘ক্যাডার’ শব্দটি বাদ দেয়ার সুপারিশ করবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে কমিশনের ১২তম বৈঠক শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘ক্যাডার শব্দটি নেতিবাচক হওয়ায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন এই সুপারিশ করবে। কমিশন অনেকগুলো সংস্কারের প্রস্তাব দেবে। ক্যাডার শব্দটি বাদ দিয়ে যার যে সার্ভিস যেমন- সিভিল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, সিভিল সার্ভিস হেলথ, সিভিল সার্ভিস অ্যাগ্রিকালচার- এ রকম। এটা আমাদের বড় সংস্কার।’
ডিসি শব্দের বিষয়ে মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসক ব্রিটিশদের সৃষ্টি। এই শব্দের বাইরে আরও অনেক শব্দ আছে যেমন- কালেক্টর, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট। এসব বিষয়ে সাধারণ মানুষ জানতে চায়। আমরা এসব নিয়ে সুপারিশ দেব। তবে সরকার সেটাই নেবে যেটা দেশের জনগণ চায়।’
জেলা প্রশাসক নাম পরিবর্তন হবে কি না- জানতে চাইলে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘অনেকে বলেছেন জনপ্রশাসন না বলে জনসেবা বলা যায় কি না। জেলা প্রশাসক নামের বিকল্প বিষয়ে সাজেশন দেব, সরকার যেটা নেয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ট্যুর করতে গিয়ে যে জিনিসটা দেখলাম, মানুষ মনের কথা বলতে চেয়েছে। কয়েকটি অফিস সম্পর্কে মানুষের একেবারেই নেগেটিভ ধারণা। এগুলো আপনারা জানেন, আমি জানি, উল্লেখ করতে চাই না। তারপরও দু-একটার কথা বলতে হয়।
‘এসিল্যান্ড অফিস সম্পর্কে বাজে ধারণা, রেজিস্ট্রি অফিস সম্পর্কে খুবই বাজে ধারণা। রেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতি এমন লেভেলে যে কোনো অভিযোগ নেই। শেয়ারিংটা খুবই সায়েন্টিফিক। কারও কোনো অভিযোগ নেই- দিচ্ছে এবং নিচ্ছে। বরং বলে আগের স্যারের চেয়ে আপনি কম নিচ্ছেন।’
প্রেস ক্লাবের আয়োজনে সাংবাদিকদের এবং এফবিসিসিআইয়ের আয়োজনে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় হবে বলেও জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব।
তিনি বলেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চায়। আর সেই পরিবর্তনের জন্যই এই পরিবর্তিত সরকার এসেছে। আমরা সেটা নিয়ে কাজ করছি।’
ইতিমধ্যে এক লাখ মানুষ অনলাইনে কমিশনের প্রশ্নের জবাব দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে সিলেটে দায়ের করা দুটি মামলা খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
রোববার দুপুরে সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছগির আহমেদ মামলা দুটি খারিজ করে তারেক রহমানকে খালাসের রায় দেন।
এর আগে ২০১৪ সালে বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সিলেটে মামলা দুটি দায়ের করেন ছাত্রলীগের দুই নেতা।
মামলা খারিজের তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট জেলা জজ আদালতের আইনজীবী এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে হাসিনা সরকারের আমলে মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছিল। আজ আদালত দুটি মামলাই খারিজ করে দেন।’
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে এই দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এর একটি করেছিলেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান আহমদ চৌধুরী এবং অপরটি করেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সে সময়ের সভাপতি শামীম মোল্লা।
আদালতের তৎকালীন বিচারক আনোয়ারুল হক মামলা দুটি গ্রহণ করে সরকারের অনুমোদনক্রমে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে সিলেটের শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
মামলা দুটিতে অভিযোগ করা হয়- ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য বিএনপির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি তারেক রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে বিরোধিতা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করেন।
আরও পড়ুন:গ্রেনেড হামলা মামলা থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামি হাইকোর্ট থেকে খালাস পাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, এর মাধ্যমে প্রমাণ হলো যে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা সব মামলাই ছিল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক।
দেশের উচ্চ আদালতে রোববার রায় ঘোষণার পর লন্ডন থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করায় মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানের পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘এই রায়ে প্রমাণ হলো আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এই মামলাতে তারেক রহমানকে অভিযুক্ত করেছিলো।
‘তারেক রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত মামলার অভিযোগ আইনগতভাবে মোকাবিলা করে উচ্চ আদালত থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন। ঐতিহাসিক এই রায়ের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হলো যে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আনীত সব মামলাই ছিল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক।’
মন্তব্য