ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা ক্লাব টুর্নামেন্ট ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দিকে একধাপ এগিয়ে গেছে টটেনহ্যাম হটস্পার। টুর্নামেন্টের শেষ ষোলোতে ক্রোয়েশিয়ার ডিনামো জাগরেবকে ২-০ গোলে হারায় লন্ডনের ক্লাবটি। বৃহস্পতিবার রাতের ম্যাচে দুটি গোলই এসেছে দলের তারকা স্ট্রাইকার হ্যারি কেইনের পা থেকে।
ম্যাচের ২৫ ও ৭০ মিনিটে গোলটি করেন কেইন। এতে করে ইউরোপা লিগের স্বপ্ন জিইয়ে রাখল জোসে মরিনিয়োর দল। ইউরো লিগ জিতে সামনের মৌসুমের ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে অংশ নিতে চায় স্পার্স।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সাত নম্বরে থাকা দলটির জন্য শীর্ষ চারে থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগে কোয়ালিফাই করা বেশি কঠিন এই মৌসুমে। এ কারণে ইউরোপা লিগ জিতেই তারা ইউরোপ সেরা টুর্নামেন্টে খেলতে চাইছে।
সে কারণে নক আউটে কোনো ম্যাচকেই হালকাভাবে নিতে চান না মরিনিয়ো। নিজ মাঠে সহজ জয়ে তাই তারকা স্ট্রাইকারকে নিয়ে প্রশংসা টটেনহ্যাম ম্যানেজারের কণ্ঠে।
‘কেইন সবই করে। সে স্ট্রাইকারের গোল করার দায়িত্বও পালন করে। দলের সঙ্গে কাজ করে মাঝমাঠে জায়গা তৈরি করে। অধিকাংশ স্ট্রাইকাররা যে কাজটা করে না ডিফেন্সে সেই বাড়তি পরিশ্রমটুকুও সে করে।’
নিজেদের শেষ ম্যাচের একাদশ থেকে সাতজন খেলোয়াড়কে বদলেছেন মরিনিয়ো। তারপরও তার মতে কেইনের কারণেই ফলে পরিবর্তন আসেনি।
‘সে আমাদের অনেক সাহায্য করে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমি অনেককেই আজ বিশ্রাম দিয়েছি। কিন্তু হ্যারি মাঠে থাকলে সবকিছু পালটে যায়।’
২-০ গোলে এগিয়ে থেকে ম্যাচের দ্বিতীয় লেগে ১৮ মার্চ জাগরেবের মাঠে নামবে টটেনহ্যাম।
ইউরোপা লিগে রাতের বড় ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও এসি মিলান। জয় পেয়েছে আর্সেনাল ও রোমা। অলিম্পিয়াকোসকে ৩-১ গোলে হারায় আর্সেনাল। আর শাখতার দোনেৎসকে ৩-০ গোলে হারায় রোমা।
আরও পড়ুন:⏰ RESULTS ⏰
— UEFA Europa League (@EuropaLeague) March 11, 2021
ℹ️ Round of 16, first legs
Best performance? 🧐#UEL
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে নেতৃত্ব দিতে চায় সৌদি আরব। হামাসকে নিরস্ত্র ও প্রভাবহীন করার পাশাপাশি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে (পিএ) আর্থিক ও লজিস্টিক সহায়তা দিয়ে পুনরায় শক্তিশালী করতে চায় রিয়াদ। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক গোপন প্রতিবেদন সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের হাতে এসেছে। সেখানেই এই পরিকল্পনার কথা উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌদি আরব গাজায় একটি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের উদ্যোগকে সমর্থন করবে। এমন একটি বাহিনীতে সৌদি আরবসহ অন্য আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ অংশ নিতে পারে।
এতে বলা হয়, গাজা উপত্যকা ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে স্থিতিশীলতা বাড়াতে সৌদি আরব নিজের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করতে চায়। এটি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে গাজার শাসনব্যবস্থায় হামাসের ভূমিকা কমানো এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে এমনভাবে সংস্কার করা হবে, যাতে ১৯৬৭ সালের সীমানার ভিত্তিতে জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়।
সৌদি আরব মনে করে, হামাস শান্তি প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং বিভাজনকে আরো গভীর করছে, তাই গোষ্ঠীটির প্রভাব কমানো জরুরি। হামাসকে নিরস্ত্র করার কাজটি হবে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক চুক্তির মাধ্যমে ধাপে ধাপে, যা নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করবে।
ধীরে ধীরে গাজায় প্রশাসনিক দায়িত্ব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিলে হামাসের প্রভাব কমবে। এই প্রক্রিয়াকে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সঙ্গে সংযুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরো উদ্যোগটি মিসর, জর্ডান ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে। এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী কর্মকর্তা মানাল বিনতে হাসান রাদওয়ান।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ২০০৭ সালের পর থেকে গাজায় কোনো উপস্থিতি বজায় রাখতে পারেনি। সে সময় হামাসের নির্বাচনী বিজয়কে কেন্দ্র করে ফাতাহ ও হামাসের সংঘর্ষ শুরু হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতি মোকাবিলা, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সব ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার মাধ্যমে সৌদি আরব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংস্কার আনতে চায়। সৌদি ফিলিস্তিনি জনগণের মৌলিক সেবা নিশ্চিত করতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তাও দেবে। এ ছাড়া ‘ফিলিস্তিনি জাতীয় সংলাপের’ আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে বিভিন্ন গোষ্ঠী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ছাতার নিচে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। সৌদি আরব এই সংলাপকে সহায়তা করতে আঞ্চলিক কর্মশালা ও সম্মেলনের আয়োজন করবে।
তবে হামাসকে এই সংলাপে অন্তর্ভুক্ত করা হবে কি না, সে বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই। পুরো প্রতিবেদনে ইসরাইলের নাম একবারও আসেনি।
কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট
প্রতিবেদনটিতে যে তারিখ উল্লেখ ছিল, এর আগের দিনই জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
গ্রীষ্মকালে সৌদি আরব ও ফ্রান্স যৌথভাবে গাজার জন্য একটি শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব করে, যা চলমান গণহত্যা বন্ধ, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংলাপ পুনরায় চালুর আহ্বান জানায়।
তবে অক্টোবরের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজস্ব যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর করেন, যেখানে কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র সহযোগিতা করে। ওই চুক্তিতে সৌদি-ফরাসি প্রস্তাবের অনেক অংশই অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর বন্দি বিনিময় ও আংশিক ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার ঘটে। হামাস নিরস্ত্রীকরণের কথা বলা হয় চুক্তিতে। তবে হামাস নেতারা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ইসরাইলি দখল শেষ হয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত নিরস্ত্রীকরণ সম্ভব নয়।
জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে ট্রাম্প জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, তুরস্ক, সৌদি আরব, কাতার ও মিসরসহ বিভিন্ন আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি গাজায় শান্তিরক্ষী বাহিনী গঠনে এসব দেশের সেনা পাঠানোর আহ্বান জানান।
পরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে মিসরের শারম আল শেখে গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে এক শীর্ষ বৈঠক ডাকা হয়। তবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান বৈঠকে অংশ নেননি।
মিসর, সৌদি ও আমিরাতি সূত্রগুলো মিডল ইস্ট আইকে জানায়, তাদের অনুপস্থিতির কারণ ছিল চুক্তিতে প্রত্যাশিত প্রভাব ও ভূমিকা না পাওয়া নিয়ে অসন্তুষ্টি।
অঞ্চলের সবচেয়ে ধনী রাষ্ট্র হিসেবে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকেই গাজার মানবিক ত্রাণ ও পুনর্গঠনের মূল ব্যয় বহন করতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরাইলের প্রতিক্রিয়া
এদিকে বৃহস্পতিবার ইসরাইলের কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ বলেছেন, সৌদি আরব যদি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিনিময়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চায়, তবে ইসরাইল তা প্রত্যাখ্যান করবে। সূত্র : মিডল ইস্ট আই
তিনতলা ভবন নির্মাণ শেষে হস্তান্তরের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) কার্যক্রম এখনো চালু হয়নি। সেখানে নেই কোন আসবাবপত্র ও বিদ্যুৎ–সংযোগ। পর্যাপ্ত জনবলও নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী বছর থেকে ম্যাটস চালুর সম্ভাবনা আছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ম্যাটসে রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেইনিংয়ে (আরএফএসটি) কার্যক্রম শুরু হতে পারে। এরপর পূর্ণাঙ্গভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি ও পাঠদানের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ৩০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালে জয়পুরহাট-মোকামতলা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলীতে ম্যাটসের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
কাজটি সম্পন্ন করে ময়মনসিংহের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এস এন্টারপ্রাইজ। নির্মাণ শেষে ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভবনটি তৎকালীন জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ওয়াজেদ আলীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত ২০ জানুয়ারি কে এম জোবায়ের গালিবকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তবে এখনো অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানটিতে একটি একাডেমিক ভবন, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের দুটি পৃথক বাসভবন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য দুটি আবাসিক হল, গ্যারেজ ও অন্যান্য ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ক্ষেতলাল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল ভবন ৩০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাটস বুঝিয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, ম্যাটস হস্তান্তরের পর কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না। কেউ না থাকায় রাতের বেলায় কয়েক দফায় ম্যাটসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। দ্রুত চালু করা না গেলে অযত্ন আর অবহেলায় প্রতিষ্ঠানটি নষ্ট হয়ে হবে।
বটতলী এলাকার মিনহাজুল মুকিত বলেন, যদি চালুই করতে না পারে, তাহলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করার কোন প্রয়োজন ছিল না।
ম্যাটসের অধ্যক্ষ কে এম জোবায়ের গালিব বলেন, আমাকে গত জানুয়ারিতে এখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখনো অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আসবাব ও বিদ্যুৎ–সংযোগ নেই। প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক বরাবরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর প্রতিষ্ঠানটি চালু হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে ম্যাটসে রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেনিংয়ের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন আল মামুন বলেন, ম্যাটস নির্মাণের পর তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে এখন অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জানামতে, আপাতত ম্যাটসের কার্যক্রম থাকবে না। রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেইনিংয়ের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শান্তি ও বহুপাক্ষিকতার যৌথ আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য জাতিসংঘকে ক্রমাগত বিকশিত হতে হবে এবং সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, ‘যদি জাতিসংঘ আমাদের সবার শান্তি ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই পরিবর্তিত বিশ্ব বাস্তবতার সঙ্গে অভিযোজিত হতে হবে। আমরা জাতিসংঘ সংস্কারের পক্ষে— যাতে এটি আরও গতিশীল, সমন্বিত এবং পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সবার প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হয়।’
প্রধান উপদেষ্টা ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন। এ বছর জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ৮০তম বার্ষিকী পালন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই তাৎপর্যপূর্ণ দিনে আমরা অঙ্গীকার করছি যে, জাতিসংঘ সনদে কল্পিত শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল বিশ্ব গড়ে তুলতে বাংলাদেশ তার দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে।’
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ, জাতিসংঘ সব অংশীদার এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে ‘জাতিসংঘ দিবস’-এর শুভেচ্ছা জানান।
তিনি বলেন, ‘এ দিনটি হলো ভয় ও অভাবমুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার অঙ্গীকার নতুন করে স্মরণ করার একটি সুযোগ। একই সঙ্গে জাতিসংঘ যে বহুপাক্ষিক সহযোগিতা ও ঐকমত্যের চেতনা বহন করে, তা পুনরুজ্জীবিত করারও সময়।’
গত আট দশকে জাতিসংঘ তার কার্যক্রমের পরিধি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে এবং বিশ্বজুড়ে সম্পৃক্ততা আরও গভীর করেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা, মানবাধিকার সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন ও মানবকল্যাণে এক অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ পাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ একটি সক্রিয়, দায়িত্বশীল ও অবদানশীল সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তিনি বলেন, ‘শান্তির সংস্কৃতির পতাকা হাতে নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে অংশ নিয়েছে এবং নীল হেলমেটধারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম শীর্ষ অবদানকারী দেশ হিসেবে অবস্থান করছে।’
‘আমাদের অনেক সাহসী শান্তিরক্ষী বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন,’ যোগ করেন অধ্যাপক ইউনুস।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন, বাণিজ্য কিংবা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রেই হোক—বাংলাদেশসহ বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলো নিয়মভিত্তিক বহুপাক্ষিক ব্যবস্থায় বিকশিত হয়।
‘তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, একতরফা সিদ্ধান্ত ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে বৈষম্যমূলক আচরণের ফলে বিশ্বে উত্তেজনা বেড়ে চলেছে,’ তিনি মন্তব্য করেন।
সাম্প্রতিক সংঘাতসমূহ বিশ্বকে গভীর অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের স্বীকার করতে হবে যে বহুপক্ষীয় কূটনীতি এখন কঠিন পরীক্ষার মুখে। চরম জাতীয়তাবাদ ও মানবিক কষ্টের প্রতি উদাসীনতা মানবজাতির দীর্ঘ সংগ্রামে অর্জিত অগ্রগতিকে ধ্বংস করছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ বিশ্বের মানুষ গাজার এক ভয়াবহ গণহত্যার সরাসরি সম্প্রচার প্রত্যক্ষ করছে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব অঞ্চলেও আমরা রোহিঙ্গাদের অধিকারবঞ্চনা ও নির্যাতনের সাক্ষী। এটি সাংস্কৃতিক পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতির ফল। এ বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নতুন মনোযোগ কামনা করেছি।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি প্রতিনিধি দল। শনিবার সকাল ১০টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এনসিপির প্রতিনিধি দলে থাকবেন—দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা।
বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধি দল জুলাই সনদের বাস্তবায়ন আদেশ, আইনি ভিত্তিসহ সনদের নানা বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।
নওগাঁর ধামইরহাটে গরুবোঝাই ইঞ্জিন চালিত ভটভটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে চালকসহ দুইজন মারা গেছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় উপজেলার বিহারীনগর বাইপাস সড়কের তালঝাড়ি ফুটবল মাঠের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও ৪ জন আহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন ভটভটি চালক আড়ানগর এলাকার বাসিন্দা পাড়ার জয়দুল ইসলামের ছেলে মাসুদুর রহমান মওলা (৩৫) ও আড়ানগর গ্রামের নজিম উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ ভুট্টু (৪০)।
এ ঘটনায় আড়ানগর গ্রামের মুকুল হোসেনের ছেলে জিহাদ (২৫), ফতেপুর গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে জাইদুল ইসলাম (৫৫), লক্ষণপাড়া গ্রামের মৃত আছির উদ্দিনের ছেলে নাজিম উদ্দিন (৭০) ও মোটরসাইকেল চালক দিনাজপুর জেলার জহুরুল ইসলামের ছেলে মো. সেলিম রেজা আহত হয়েছেন। আহত সেলিম ও নাজিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকালে উপজেলার আড়ানগর এলাকা থেকে একটি ভটভটিযোগে বিহারীনগর-পিড়লডাঙ্গা বাইপাস সড়ক হয়ে জয়পুরহাট জেলার গরুর হাটে যাচ্ছিলেন কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী। পথে বাইপাস সড়কের তালঝাড়ি এলাকার ডবল ব্রিজের কাছে একটি মোটরসাইকেলকে সাইড দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভটভটি ও মোটরসাইকেল উল্টে রাস্তার পাশে ধানক্ষেতে পড়ে যায়। খবর পেয়ে ধামইরহাট থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস টিম স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে ধামইরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন।
ধামইরহাট থানার ওসি ঈমাম জাফর জানান, নিজ গাড়িতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মৃত্যুবরণ করায় এবং কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক ঘোষণায় জানানো হয়েছে, গত এক সপ্তাহে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক, খারকিভ এবং জাপোরিজঝিয়া অঞ্চলের মোট ১০টি নতুন বসতির দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ থেকে ২৪ অক্টোবরের মধ্যে এই এলাকাগুলো রুশ নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, একই সময়সীমায় ইউক্রেনীয় সেনাদের ২২টি অস্ত্রাগার ও সামরিক সরঞ্জামাগার ধ্বংস করা হয়েছে। রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেনীয় বাহিনী একাধিকবার বিমান হামলার চেষ্টা করলেও প্রতিবারই তা ব্যর্থ হয়েছে।
রুশ পক্ষের হিসাব অনুযায়ী, ১৭ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ইউক্রেন হারিয়েছে একটি এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমান, চারটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ১৮টি গাইডেড বোমা, ১৫টি হিমার্স রকেট এবং ১,৪৪১টি ড্রোন।
রাশিয়ার এই দাবির বিষয়ে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
উল্লেখ্য, ন্যাটো জোটে যোগদানের ইচ্ছা এবং ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া ইস্যু ঘিরে কয়েক বছর ধরে উত্তেজনা চলার পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া।
গত তিন বছরে রুশ সেনারা ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিজঝিয়া ও খেরসন প্রদেশের অংশবিশেষ দখল করেছে, যা ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের প্রায় এক-দশমাংশ। দখলকৃত এলাকা পুনরুদ্ধারে ইউক্রেনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকায় যুদ্ধ থামার কোনো ইঙ্গিত এখনো দেখা যাচ্ছে না।
রাজধানী ঢাকায় বৃষ্টিহীন আবহাওয়ায় গরমের দাপট কমছে না। সকালে কিছুটা শীতল বাতাসে স্বস্তি থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বেড়ে অস্বস্তি ফের বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শনিবার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য প্রকাশিত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকলেও আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। উত্তর ও উত্তর–পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।
গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আজও তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে দিনের বেলায় ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৫ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর্দ্রতা ছিল ৮৮ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। আজ সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ২৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ১ মিনিটে।
অন্যদিকে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে, যা আরও ঘনীভূত হতে পারে। এর প্রভাবে আজ চট্টগ্রাম বিভাগের দু–একটি স্থানে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মন্তব্য