গ্রামটিতে একসময় কিশোরী বয়স পেরোনোর আগেই বিয়ের পিঁড়িতে বসত মেয়েরা। পাঠশালার বই-খাতার পরিবর্তে তারা ব্যস্ত থাকত হাড়ি-পাতিল নিয়ে। সেই গ্রামের মেয়েরা এখন স্বপ্ন দেখছে বিশ্ব জয়ের। ফুটবলার হিসেবে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরছে বিশ্ব দরবারে।
রংপুর শহর থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরের সদ্যপুস্কুরিনী ইউনিয়নের পালিচড়া গ্রামের মেয়েদের ফুটবল খেলা শুরু হয় ১০ বছর আগে। এ সময়েই দেশসেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে তারা।
গ্রামের মেয়েদের জন্যই পালিচড়ার নতুন নাম হয়েছে ‘ফুটবলারদের গ্রাম’। গ্রামের গণ্ডি পেরিয়ে তারা খেলছে ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে।
২৭ মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া নারী ফুটবল লিগে অংশ নিচ্ছে স্থানীয় ফুটবলারদের দিয়ে তৈরি সদ্যপুষ্করিনী যুব ক্লাব।
এ বিষয়ে সদ্যপুষ্করিনী যুব ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোলজার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০১০ সালে এখানকার মেয়েরা খেলা শুরু করে। ওই সময় গ্রামের মানুষজন নানা ধরনের নেতিবাচক কথা বলত। তারপরও মেয়েরা মাঠে এসে নিজে নিজে খেলত।’
২০১১ সালে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় টুর্নামেন্ট চালু হয়। ওই টুর্নামেন্টে পালিচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তাদের ছাত্রীদের নাম লেখায়।
সেবার জাতীয় পর্যায়ে রানার্স-আপ হয় পালিচড়ার মেয়েরা। ওই টুর্নামেন্টের পর গ্রামের মেয়েদের আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। স্থানীয় ফুটবলপ্রেমীদের উৎসাহ আর অভিভাবকদের এগিয়ে আসায় প্রতি বছর সাফল্য পাচ্ছে দলটি। চলতি বছরের ক্রীড়া পরিদপ্তর বিচ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা।
২০১৫ সালে কেএফসি জাতীয় মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে ওঠে পালিচড়া বিদ্যালয়। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও জিতেছিল ফেয়ার প্লে ট্রফি। ২০১৬ সালে কেএফসি সিনিয়র ন্যাশনাল উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপে তারা অর্জন করে তৃতীয় স্থান।
২০১৭ সালে জেএফএ অনূর্ধ্ব-১৪ টুর্নামেন্টে তারা রানার্স-আপ, ২০১৮ সালে ৪৭তম গ্রীষ্মকালীন ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়ন ও এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপে কৃতিত্বের জন্য এই গ্রামের সুলতানা, লাভলী, রত্নাসহ বেশ কয়েকজন ফুটবলার প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আর্থিক সম্মাননা পেয়েছেন।
বঙ্গমাতা গোল্ডকাপে পরপর দুই বছর সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বুট জিতেছেন পালিচড়ার রোকসানা পারভীন। এখন ঢাকায় বিজিএমসিতে খেলছেন। নিউজবাংলাকে তিনি জানান ফুটবলার তৈরিতে আর্থিক সংকটের কথা।
‘আমি এএফসির বি-লাইসেন্স পাওয়া কোচ। এখানে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এই ফুটবলারদের বল, জার্সি, বুটসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কিনতে টাকার প্রয়োজন। সেই টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়।’
লিগ শুরু হতে খুব বেশি দেরি নেই। তাই নিবিড় প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ফুটবলাররা। অনুশীলনের ফাঁকে নবম শ্রেণির ছাত্রী রুমি আক্তার জ্যোতি কথা বলেন নিউজবাংলার সঙ্গে।
তিনি বলেন, “গ্রামে এসব পছন্দ করত না। বলত, ‘তুমি খেলতে যাও কী জন্য? খেলে কী হবে।’ কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি।”
২০১৪ সালে খেলা শুরু করা রুমি এখন অনুশীলন করান উঠতি ফুটবলারদের। বয়সভিত্তিক দলে খেলার অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিচ্ছেন কিশোরীদের মাঝে। তার চোখে ধরা পড়ে বদলে যাওয়ার দৃশ্য।
‘পায়ের ইনজুরির কারণে বড় দলে খেলতে পারছি না। এখানে যারা আছে তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। গ্রামজুড়ে এখন ফুটবলের আলোচনা। যারা খারাপ চোখে দেখত তারাও এখন ভালো বলছে।’
একই রকম পরিবর্তনের কথা জানালেন ফারজানা আক্তার। পালিচড়া গ্রামের মাটি ভাটা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী তিনি। বলেন, “ফুটবল খেলতে ভালো লাগে। তাই খেলি। প্রথমে আমাকে অনেকে বাধা দিছে গ্রামের মানুষ ও আত্মীয় স্বজনেরা। এখন বলে, ‘তুমি এখন ভালো খেলো।’ আমাকে এখন সবাই উৎসাহ দেয়।”
পালিচড়া সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জুআরা বেগম জানালেন ফুটবলারদের নিয়ে গর্ব করেন এখন গ্রামবাসী। সঙ্গে যোগ করেন তাদের উন্নয়নে দরকার আরও অর্থের।
‘নিভৃত পল্লী এই গ্রামটি। এখানকার অধিকাংশ মানুষই কৃষি কাজ করি। মেয়েদের খেলার মাঠে যেতে দেবে এটা ভাবাই কষ্টকর। তারপরও মেয়েরা এখন খেলছে। তারা আমাদের অহংকার। এই মেয়েরা শুধু নিজেরাই সাফল্য অর্জন করেনি গোটা গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করেছে। ওরা আমাদের সোনার মেয়ে। সহযোগিতা পেলে আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে।’
স্কুলের শিক্ষক আখতারুজ্জামান সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সত্যি বলতে শুরুতে আমাদের গ্রামের মানুষ চায়নি মেয়েরা এভাবে মাঠে খেলুক। যখন একটা সফলতা আসল তখন আমরা বললাম, না আর মেয়েদের নিষেধ করব না। তখন থেকেই তারা মাঠে খেলে, আমরা ক্লাসে উদাহরণ দেই। ক্লাসের সব মেয়ে এখন খেলতে চায়।’
‘মুই এলা এইলে কতা শোনোং না’
মেয়েদের ধারাবাহিক সাফল্যে গ্রামের বাসিন্দাদের অন্যতম আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছে ফুটবল। মেয়েদের ফুটবলকে আর বাঁকা চোখে দেখেন না এখানকার মানুষ। বারণ নেই আগের মতো। বাবা-মা, অভিভাবকেরাই স্বত:স্ফূর্ত হয়ে মেয়েদের ফুটবল শিখতে অনুপ্রাণিত করছেন।
শুধু রংপুরই নয়, নেত্রকোনা জেলার ২৭ কিশোরী ফুটবলার এখানে এসেছেন খেলা শিখতে। ক্লাবের ক্যাম্পে থেকে প্রতিদিন ফুটবল খেলার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
তাদেরই একজন বিরিশিরি মিশন গার্লস স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী রিয়া রেমা। তিনি বলেন, ‘এখানে ২৭ জন আসছি। সবার সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলছি। এখন অনেকটা শিখে গেছি। আমি খেলা শিখে দেশের হয়ে সুনাম অর্জন করতে চাই।’
শামীমা আক্তার মেয়েকে নিয়ে এসেছেন ক্যাম্পে। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের গ্রামাঞ্চলে বাড়ি। নানান জন নানান কথা বলতেছে। কেয়ার করি নাই। সব কথাত কান দিতে নাই। গত শনিবার আমার ভাতিজিকে নিয়ে মাঠে এসেছি। সে এখন বেশ ভালো খেলছে। আমি চাই, মেয়েরা বাইরে আসুক, খেলুক।’
ক্যাম্পে অনুশীলন করা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ময়না খাতুনের বাবা মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘মুই তো খেলবার দিবের চাং নাই। সবার বেটিরা খেলে মাডোত আসি। তারপর ময়নাও আইসে। এলা শুনবেনজি হামার ময়না নাকি ঢাকাত খেলবে। খেলুক দেহি কী হয়। মানুষ আগোত মেলা কতা কইছে মোক, মুই এলা এইলে কতা শোনোং না।’
কিশোরী ফুটবলারদের থাকা, খাওয়া ও নিরাপত্তার বিষয়টি দেখছেন স্থানীয় প্রশাসন। এ বিষয়ে সদ্যপুস্কুরিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেল রানা নিউজবাংলাকে বলেন, মেয়ে ফুটবলারদের দেয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ সহায়তা।
‘খেলার মাঠের পাশে মেয়েদের থাকা ও খাওয়ার জন্য একটি ক্যাম্প রয়েছে। জেলা প্রশাসন সেটি করেছে। ওই ক্যাম্প ও গ্রামের খেলোয়াড় মেয়েদের নিরাপত্তা আমরা দিচ্ছি। পুলিশও সেখানে অবস্থান করে। এই মেয়েরা গ্রামকে নতুন করে চিনিয়েছে। দল-মত নির্বিশেষে সবাই তাদের সহযোগিতা করি। এরা আমাদের গর্ব। আমি ও গ্রামবাসী তাদের পাশে আছি।’
ইউনিয়নে ফুটবল খেলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে একটি মিনি-স্টেডিয়াম। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।
‘তাদের এই অর্জন অন্যন্যদের মাঝেও উৎসাহ তৈরি করবে; অনুপ্রেরণা তৈরি করবে। শুধু খেলাধুলা নয়, সকল ক্ষেত্রে এই অনুপ্রেরণা নারী জাগরণে সহযোগিতা করবে,’ যোগ করেন তিনি।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে চারজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পতেঙ্গা থানাধীন ১৫ নম্বর ঘাটে নোঙর করা একটি ফিশিং বোটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- ৫৫ বছর বয়সী জামাল উদ্দিন, ৪৫ বছর বয়সী মাহমুদুল করিম ও মফিজুর রহমান এবং ২৮ বছর বয়সী এমরান। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনের শরীরের ৮০-৮৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। অন্যজনের শরীর পুড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ।
চমেক হাসপাতালে বার্ন ও ক্যাজুয়ালটি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের বড় ধরনের বার্ন হয়েছে। এই ধরনের রোগীদের অবস্থা ভালো থাকে না।’
চট্টগ্রাম সদরঘাট নৌ-থানার ওসি একরাম উল্লাহ বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারে ইঞ্জিন থেকে সৃষ্ট আগুনে ৪ জন দগ্ধ হয়েছে। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রকাশ্যে দুর্নীতি করার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে লালপুর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যের এক পর্যায়ে দুর্নীতি করার ঘোষণা দেন এ সংসদ সদস্য।
তার বক্তব্যের অংশবিশেষের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
প্রকাশিত ওই ভিডিওতে আবুল কালাম আজাদকে বলতে শোনা যায়, ‘পাঁচটা বছর (২০১৪-২০১৮) বেতন ভাতার টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না; আগামীতেও থাকবে না। এবার (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা আমি তুলব। যেভাবেই হোক তুলবই। এতটুক অনিয়ম আমি করবই। এটুকু অন্যায় করব, আর করব না।’
প্রকাশ্যে সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আখতার। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্য উনি বলেছেন, এখানে আমার কোনো কথা নেই।’
বক্তব্যর বিষয়ে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার বক্তব্যে এটা বোঝাতে চেয়েছি যে, অনেকেই এরকম করে। আমার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক। সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যে তার সহকারী এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা দুর্নীতিতে উৎসাহিত হবেন। এটা একদিকে যেমন পরিষ্কারভাবে শপথের লংঘন, অন্যদিকে নির্বাচনি বিধিরও লংঘন।
‘নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, নির্বাচনি প্রচারকাজে একজন সংসদ সদস্য ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন না।’
সংসদ সদস্যের কাছে গঠনমূলক বক্তব্যেরও প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশপথে যানজট নিরসনে ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্থায়ী কিছু ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এতে করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পথচারীদের সুবিধার্থে যানজট দূর করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মো. তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠির রাজাপুরে নদীর তীর থেকে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো যুবকের মামুন হোসেন, যার বয়স ২৫ বছর। তিনি রাজাপুরের পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে।
ভ্যানচালক মামুন দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন জানিয়ে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকায় কচা নদীর তীর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। লাশের ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেটি তদন্তে বের হবে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব পূয়ালী গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে রাব্বি হাওলাদার।
২৫ বছর বয়সী রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শ তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রাব্বির কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য এতো টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তার কৃষক বাবা সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের কাছে। কেন না তার সবকিছুই বিক্রি করে দিলেও এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ্য হচ্ছে না।
রাব্বি বর্তমানে ঢাকার মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন অবস্থায় কৃষক বাবা তার সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়ত বেঁচে যাবে তার সন্তান।
রাব্বির পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বি হাওলাদার কয়েক মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (সেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল রাব্বির, কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওপরে শুধু হাসপাতাল ও ওষুধের বিল দিতে হয়েছে। দরিদ্র এই পরিবারটি আত্মীয়স্বজনসহ সবার সহায়তায় ওই বিল দেয়া সম্ভব হয়।
রাব্বির মা রেভা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এভাবে আর কয়দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। কারণ আমাদের সামর্থ্য শেষ হয়ে এসেছে। শুধু টাকার অভাবে তাকে ভালো কোনো হাসপাতালেও নিতে পারছি না, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশনের ধকল সহ্য করার মতো সুস্থ অবস্থায় আনা খুব জরুরি।’
রাব্বির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনাদের ভালোবাসা ও সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন। কারণ শুধু টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার একমাত্র ছেলে অকালে ঝরে যাবে তা আমার জীবন থাকতে মানতে পারছি না।’
তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৯৭-২২৮৯৭৫ ও ০১৯৮৭-৩৬৬৫৬৮ (বিকাশ-পার্সোনাল) নাম্বারে পাঠাতে পারেন ও যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:ফরিদপুর সদরে যৌনপল্লি থেকে দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই পল্লির এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) জেলার রথখোলা যৌনপল্লির বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আপন (৩০), জহির (৩০) ও ববি (৩৮)।
গ্রেপ্তার না হওয়া এ তিনজনের মধ্যে ববি যৌনপল্লির সর্দারনি হিসেবে পরিচিত। আপন ও জহিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানা এলাকা থেকে এক তরুণীকে গত ১০ মার্চ ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন। দুই দিন সেখানে রেখে তাকে (তরুণী) তিন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন তিনি। ওই তিন ব্যক্তি ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় তরুণীকে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরের দিন একটি সাদা কাগজে তরুণীর স্বাক্ষর নিয়ে জানানো হয়, এখন থেকে তিনি যৌনপল্লির লাইসেন্সধারী সদস্য।
এতে আরও বলা হয়, মেয়েটিকে পারুর বাসায় রেখে ববি ও অন্যদের মাধ্যমে জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এর মাঝে মেয়েটি বাড়িতে যোগাযোগের জন্য একজন খদ্দেরকে তার ছোট বোনের মোবাইল নম্বর দেন। পরে ওই খদ্দেরের মোবাইল কলের মাধ্যমে মেয়েটির সন্ধান পায় তার পরিবার। এরপর তার মা ও ফুফা রথখোলায় এসে তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ যৌনপল্লিতে অভিযান চালানোর পর ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেক তরুণীও তাকে উদ্ধারে পুলিশের সাহায্য চান। ওই তরুণী জানান, তাকেও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় এক রাত রেখে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান জানান, যৌনপল্লিতে তরুণীকে নেয়ার ঘটনায় তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
নোয়াখালীর কবিরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে সহোদর দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের ছর আলী মাঝি বাড়ির পুকুরে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুই শিশু হলো সাত বছর বয়সী বিবি ফাতেমা বেগম ও তার চার বছরের ভাই আবিদ হোসেন। শিশুদ্বয় ছর আলী মাঝি বাড়ির আবদুল হাইয়ের সন্তান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হুমায়ন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই ভাই-বোন সকালে ঘরের পাশে পুকুরে দাঁত ব্রাশ করতে যায়। এ সময় হাত-মুখ ধোয়ার সময় একজন পুকুরে পড়ে গেলে আরেকজন উদ্ধার করতে পানিতে নামে।
‘পরে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য