× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

ফুটবল
এবার ইতালিকে কাঁদালেন পাওলো রসি
google_news print-icon

এবার ইতালিকে কাঁদালেন পাওলো রসি

এবার-ইতালিকে-কাঁদালেন-পাওলো-রসি
১৯৮২ স্পেন বিশ্বকাপের গল্পটা যাঁরা জানেন, তাঁদের কাছে প্রশ্নটা একেবারেই অবান্তর বলে মনে হতেই পারে। বরং তাঁদের সবাইকে একমত হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখি যে, পাওলো রসির আত্মজীবনীর এর চেয়ে ভালো কোনো নাম হতে পারত না।

বিশ্ব জয়ের ২০ বছর পর প্রকাশিত হয়েছে তাঁর আত্মজীবনী। নাম 'আমি ব্রাজিলকে কাঁদিয়েছি।'

ইতালি ১৯৮২ বিশ্বকাপ জিতেছে ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে। এর আগে সেমিফাইনালে হারিয়েছে পোল্যান্ডকে। তারপরও সেই বিশ্বকাপ জয়ের নায়কের আত্মজীবনীর এই নাম কেন? ব্রাজিলকে হারিয়েই ইতালি বিশ্বকাপ জিতে ফেলেছিল না কি?

১৯৮২ স্পেন বিশ্বকাপের গল্পটা যাঁরা জানেন, তাঁদের কাছে প্রশ্নটা একেবারেই অবান্তর বলে মনে হতেই পারে। বরং তাঁদের সবাইকে একমত হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখি যে, পাওলো রসির আত্মজীবনীর এর চেয়ে ভালো কোনো নাম হতে পারত না।

সেমিফাইনাল-ফাইনাল জিতেই বিশ্বকাপ জিততে হয়। এই ধ্রুবসত্য নিয়ে তর্ক করার কিছু নেই। কিন্তু ১৯৮২ এমন অবাক করা এক বিশ্বকাপ, যেটির কথা উঠলে সেমিফাইনাল-ফাইনাল ছাপিয়ে বড় হয়ে ওঠে অন্য এক একটি ম্যাচ। অফিসিয়ালি দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচ। যদিও তা রূপ পেয়েছিল অলিখিত কোয়ার্টার ফাইনালের। ১৯৮২ সালের ৫ জুলাই মহাকাব্যিক সেই ম্যাচের সাক্ষী বার্সেলোনোর এস্তাদিও সারিয়া (এসপানিয়লের মাঠ)। ওই বিশ্বকাপের মীমাংসাও সম্ভবত হয়ে গিয়েছিল সেখানেই। তর্কযোগ্যভাবে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত হ্যাটট্রিকে বলতে গেলে একাই যা করে দিয়েছিলেন পাওলো রসি।

ব্রাজিলকে কাঁদিয়েছেন বলে যে দাবি করেছেন, তা খুবই সত্যি। মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ফিরেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়েরা। হোটেলে ফেরার পর শেষ টিম মিটিংয়ে আরেক দফা কান্নাকাটি হয়েছে। দেশে ব্রাজিলিয়ানরাও নিশ্চয়ই কেঁদেছে। সেই কান্নার নাম পাওলো রসি। সেই ম্যাচের ফল তো আক্ষরিক অর্থেই: রসি ৩-ব্রাজিল ২।

সেমিফাইনালে ইতালির দুটি গোলই রসির। ফাইনালে ৩-১ গোলে জয়ের প্রথমটিও। তারপরও পাওলো রসি মানেই সিয়ারা স্টেডিয়ামের ওই ম্যাচ। মনে হয় না বিশ্বকাপ ইতিহাসে আর কোনো একটা ম্যাচ একজন খেলোয়াড়ের এমন সমার্থক হয়ে আছে। তুলনায় আসতে পারে শুধু ১৯৮৬ বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনা-ইংল্যান্ড। যেটি কাগজে-কলমেই কোয়ার্টার ফাইনাল এবং যে ম্যাচ মানেই ডিয়েগো ম্যারাডোনা।

পাওলো রসির কীর্তধন্য ১৯৮২ বিশ্বকাপেই ম্যারাডোনার আবির্ভাব। মাঠেও দুজনের দেখা হয়েছিল। ব্রাজিলের বিপক্ষে ওই ম্যাচের আগেই ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হয়েছে রসির ইতালি এবং জিতেছে ২-১ গোলে। কী অদ্ভুত দেখুন, ম্যারাডোনার মৃত্যুর পনের দিনের মধ্যেই রসিরও এই পৃথিবীর পাট চুকিয়ে অনন্তলোকে যাত্রা।

ব্রাজিলের বিপক্ষে ইতালির জয়ের মাহাত্ম্য বোঝানোর কাজটা একটু পরে করছি। আগে ১৯৮২ বিশ্বকাপের ব্যতিক্রমী ফরম্যাটের কথাটা বলে নেওয়া ভালো। ইতালি-ব্রাজিল ম্যাচটা বোঝাতেও তা জরুরি। গ্রুপ পর্বের পরই নকআউট শুরু হয়ে যাওয়ার বদলে সেবার দ্বিতীয় রাউন্ডে তিনটি করে দল নিয়ে চারটি গ্রুপ। কোয়ার্টার ফাইনাল বলে কিছু নেই। গ্রুপ চ্যাম্পিয়নরা উঠে যাবে সেমিফাইনালে। গ্রুপের তিন ম্যাচেই দর্শকের মন রাঙিয়ে হেসেখেলে জিতেছে ব্রাজিল। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে গ্রুপে পেয়ে গেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ও আগের বারের চতুর্থ ইতালিকে। কারণ এই দুই দল হয়েছে রানার্স আপ। আর্জেন্টিনা উদ্বোধনী ম্যাচেই বেলজিয়ামের কাছে হেরে বসার পর পরের দুই ম্যাচ জিতলেও ইতালি দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে রীতিমতো কেঁদে কঁকিয়ে। গ্রুপের বাকি তিন দল পোল্যান্ড, পেরু ও ক্যামেরুনের সঙ্গেই ড্র। ওই বিশ্বকাপেই অভিষিক্ত ক্যামেরুনও তিন ম্যাচই ড্র করায় দুই দলের পয়েন্ট সমান, গোল পার্থক্যও। ইতালির পরের রাউন্ডে উত্তরণ ক্যামেরুনের চেয়ে শুধুই একটি গোল বেশি করার কল্যাণে।

গ্রুপ পর্বে যে পারফরম্যান্স, তাতে ইতালির বিশ্বকাপ দ্বিতীয় রাউন্ডেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাকে টপকে ওই ছন্নছাড়া ওই দলের সেমিফাইনালে ওঠার পক্ষে ইতালিয়ানরাও বাজি ধরেছিলেন বলে মনে হয় না। দ্বিতীয় রাউন্ডে সেই ছন্নছাড়া দলই বদলে গেল ভোজবাজির মতো। প্রথম ম্যাচে হারিয়ে দিল আর্জেন্টিনাকে এবং জেতার মতো খেলেই। তাতে কি! ব্রাজিলের কাছে এই ইতালি পাত্তা পাবে না কি! ইতালির মুখোমুখি হওয়ার আগ পর্যন্ত ব্রাজিল খেলেছে স্বপ্নের ফুটবল এবং এই ম্যাচে তাদের ড্র হলেই চলে। কারণ আর্জেন্টিনাকে ৩-১ গোলে হারানোয় গোল ব্যবধানে তারাই এগিয়ে। এই সুক্ষ্ম হিসাবের কোনো প্রয়োজন পড়বে বলেও কেউ ভাবেননি। ব্রাজিলের সেই দলে তারকার মেলা। সক্রেটিস, জিকো, ফ্যালকাও, সেরেজো, জুনিয়র, এডার, অস্কার...বল পায়ে যাঁরা ফুল ফোটাচ্ছেন মাঠে। বাঁধনহারা, মুক্ত আক্রমণাত্মক ফুটবলের এক প্রদর্শনী দর্শকের চোখে বুলিয়ে দিচ্ছে মায়াঞ্জন। ১৯৭০ বিশ্বকাপের যে ব্রাজিল দলকে ফুটবলীয় উৎকর্ষের চূড়া বলে ধরা হয়, সেটিকেও চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে কোচ টেলে সান্টানার "আক্রমণই শেষ কথা" মন্ত্রে দীক্ষিত এই দল। কাল হলো হয়তো এই দর্শনই। ৫ মিনিটে রসির প্রথম গোল, ২৫ মিনিটে দ্বিতীয়। দুইবারই পিছিয়ে পড়ার পর সমতা এনেছে ব্রাজিল। ৬৮ মিনিটে ২-২ হওয়ার পর অন্য যেকোনো দল বাকি সময়টা একটু রক্ষণাত্মক খেলে কাজের কাজটা করে নিত। কিন্তু ওই ব্রাজিল দল আক্রমণাত্মক ফুটবল ছাড়া আর কিছু খেলতে জানলে তো!

আর পাওলো রসিও যেন সেদিন সব অপমানের জবাব দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করে নেমেছিলেন। ৭৪ মিনিটে তৃতীয়বারের মতো এগিয়ে দিলেন ইতালিকে, শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত ইতালি এগিয়েই থাকল। দ্বিতীয় রাউন্ডে ইতালির বদলে যাওয়ার কথা বলছিলাম। সেই বদলের প্রতীকি রূপও পাওলো রসিই। আগের চার ম্যাচে কোনো গোল তো নেই-ই, গোল করার কোনো সম্ভাবনাও জাগাতে ব্যর্থ। যাঁকে নিয়ে পত্রিকায় লেখা হচ্ছে,"লক্ষ্যহীনভাবে এক ভুত যেন ঘুরে বেড়াচ্ছে মাঠে।" তাঁকে দলে নেওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে ইতালিয়ান সংবাদ মাধ্যমে। সমালোচনার সব তিরই কোচ এনজো বিয়ারজোটের দিকে। সাংবাদিকদের সঙ্গে সম্পর্কটা এমনই তিক্ত হয়ে গেছে যে, দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেই সংবাদ মাধ্যমকে অচ্ছুত বলে ঘোষণা করেছেন ইতালির বিয়ারজোট। ইতালিয়ান ফুটবলে যা বিখ্যাত হয়ে আছে "সাইলেনজিও স্টাম্পা" নামে।

ব্রাজিলের বিপক্ষে যে ম্যাচ নিশ্চিত করে দিয়েছে রসির অমরত্ব, তাতে ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই রসির প্রথম গোল। ইউটিউবে সেই ম্যাচটি যদি দেখেন, গোলের আগে ওটুকু সময়ের মধ্যেই দলে রসির অন্তভূর্ক্তি নিয়ে বিতর্কের কথা একাধিকবার বলতে শুনবেন ধারাভাষ্যকারকে। বিতর্ক তো আর এমনি এমনি হয়নি। রসির তো ওই বিশ্বকাপে খেলারই কথা না। ১৯৮০ সালে ইতালিয়ান ফুটবলকে টালমাটাল করে দেওয়া "টটেনেরো" (ব্ল্যাক লটারি) নামে কুখ্যাত ম্যাচ পাতানো কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গেছে তাঁর নামও। ২-২ গোলে ড্র হওয়া পেরুজিয়া-অ্যাভেলিনো ম্যাচটি ফিক্সড ছিল বলে প্রমাণিত হয়েছে। তা নিশ্চিত করতে আরও অনেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে পেরুজিয়ার রসিকেও ২ মিলিয়ন লিরা দেওয়া হয়েছে বলে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন দুজন। রসি নিষিদ্ধ হয়েছেন তিন বছরের জন্য। যার মানে ১৯৮২ বিশ্বকাপের সময় তাঁর নিষিদ্ধই থাকার কথা। সেই নিষেধাজ্ঞা এক বছর কমে যাওয়ায় ভূমিকা আছে কোচ এনজো বিয়ারজোটের। বিশ্বকাপে যে তাঁর রসিকে লাগবেই।

এর আগেই একটি বিশ্বকাপ খেলেছেন রসি। ১৯৭৮ বিশ্বকাপে গোলও করেছেন ৩টি। জিতেছেন দ্বিতীয় সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার সিলভার বল। বিয়ারজোট কেন তাঁকে দলে চেয়েছেন, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। কিন্তু গায়ে ওই কলঙ্কের ছাপ আর দুই বছর ফুটবলের বাইরে থাকা মিলিয়ে রসির দলভূক্তি মোটেই জনসমর্থন পায়নি। সেই রসিই বিশ্বকাপের পর ইতালিয়ানদের নয়নমণি।

রসির জন্য এটিকে তাই পাপমোচনের বিশ্বকাপ বলতেই পারেন। প্রায়শ্চিত্তের বিশ্বকাপও। নিজেকে অবশ্য বরাবরই নির্দোষ দাবি করে গেছেন রসি, তবে ১৯৮২ বিশ্বকাপের পরই শুধু তা বিশ্বাস করার লোক পাওয়া গেছে ইতালিতে। ছয় গোল করে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতার গোল্ডেন বুট, টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বলও তাঁর, পরে যার সঙ্গে যোগ হয়েছে তখন শুধুই ইউরোপিয়ান ফুটবলারদের জন্য বরাদ্দ ব্যালন ডি'অরও। বিশ্বকাপের সঙ্গে গোল্ডেন বুট ও গোল্ডেন বলও জিতেছেন আরও দুজন--১৯৬২ সালে ব্রাজিলের গারিঞ্চা ও ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনার মারিও কেম্পেস। তবে একই বছরে বিশ্বকাপ, গোল্ডেন বুট, গোল্ডেন বল আর ব্যালন ডি'অর---এই চতুষ্টয় জয়ের কীর্তি পাওলো রসি ছাড়া আর কারও নেই।

আরেক দিক থেকেও অনন্য বলতে হয় তাঁকে। বিশ্বকাপ রাঙানো অন্য সব ফুটবলারেরই ক্লাব পর্যায়ে বেশি অর্জন। ইতালির প্রথম স্ট্রাইকার হিসাবে পরপর দুই মৌসুমে সিরি 'বি' ও সিরি 'আ'র সর্বোচ্চ স্কোরার হয়েছেন, ১৯৮৪ সালে জুভেন্টাসের হয়ে জিতেছেন ইউরোপিয়ান কাপ (এখন যা চ্যাম্পিয়নস লিগ), তারপরও রসির ক্লাব ক্যারিয়ারকে মোটেই আহামরি কিছু বলা যাবে না। পাওলো রসিকে চিনতে তাই বিশ্বকাপেই ফিরে যেতে হয়।

সেই বিশ্বকাপেও বলতে গেলে শুধু গোলই করেছেন। গোল করার সহজাত দক্ষতা নিয়েই জন্মেছিলেন। এর বাইরে এমন বিশেষ কিছু ছিল না, যা দেখে দর্শক আহা-উহু করবেন! বিশ্বকাপের রসিকে মনে করতে গেলেও চোখে তাই শুধু গোলগুলিই ভাসে। সেগুলোও বিশ্বকাপের সবচেয়ে দর্শনীয় গোলের তালিকায় স্থান পাওয়ার মতো নয়। তাতে কি, ওই গোলগুলো করেই তো দেশকে এনে দিয়েছেন একটা বিশ্বকাপ। সেই ১৯৩৪ আর ১৯৩৮ সালে বিশ্বকাপের আদিকালে পরপর দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইতালি। এরপর অপেক্ষা আর অপেক্ষা...। আবার বিশ্বকাপ হাতে নিতে ইতালির ৪৪ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান পাওলো রসির কল্যাণে। ফুটবল পাগল ইতালিয়ানদের হৃদয়ে রসির জন্য আলাদা একটা জায়গা তো তাই বরাদ্দ থাকবেই। তাঁর মৃত্যুতে কাঁদবেই ইতালি।

১৯৮২ সালে ব্রাজিলকে কাঁদিয়েছিলেন, ৩৮ বছর পর ইতালিকেও কাঁদালেন পাওলো রসি।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

ফুটবল
Leverkusen won the Bundesliga for the first time in 120 years

১২০ বছরে প্রথম বুন্দেসলিগা জিতল লেভারকুসেন

১২০ বছরে প্রথম বুন্দেসলিগা জিতল লেভারকুসেন শিষ্যদের নিয়ে শিরোপা হাতে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়ছেন শাবি আলোনসো। ছবি: সংগৃহীত
এ পর্যন্ত পাঁচবার দ্বিতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করলেও শিরোপার স্বাদ কখনও পাওয়া হয়নি লেভারকুসেনের। এই শিরোপার মাধ্যমে লেভারকুসেনর তাদের কুখ্যাত ‘নেভারকুসেন’ তকমা থেকেও সরে আসতে সমর্থ হয়েছে।

১২০ বছরের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বুন্দেসলিগার শিরোপা জেতার কৃতিত্ব দেখিয়েছে বায়ের লেভারকুসেন। রোববার ভার্ডার ব্রেমেনকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে লিগে বায়ার্ন মিউনিখের ১১ বছরের টানা আধিপত্য ভাঙতে সক্ষম হয়েছে শাবি আলোনসোর দল।

লিগের ২৯তম ম্যাচে এসে পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখেই লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে তারা। পুরো মৌসুমে দারুণ ফর্মে থাকা লেভারকুসেন এখন পর্যন্ত শুধু লিগে নয়, ইউরোপা লিগসহ সব ধরনের প্রতিযোগিতায় অপরাজিত রয়েছে।

ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টসের হ্যাটট্রিক এবং ভিক্টর বনিফেস ও গ্রানিট জাকার গোলে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এদিন লেভারনকুসেন টানা ৪৩ ম্যাচে অপরাজিত থাকার গৌরব অর্জন করল।

১২০ বছরে প্রথম বুন্দেসলিগা জিতল লেভারকুসেন
খেলা শেষ হওয়ার আগেই স্ট্যান্ড ছেড়ে লাইনে ভিড় জমান লেভারকুসেন সমর্থকরা। ছবি: সংগৃহীত

এ পর্যন্ত পাঁচবার দ্বিতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করলেও শিরোপার স্বাদ কখনও পাওয়া হয়নি লেভারকুসেনের। এই শিরোপার মাধ্যমে লেভারকুসেনর তাদের কুখ্যাত ‘নেভারকুসেন’ তকমা থেকেও সরে আসতে সমর্থ হয়েছে।

শিরোপা জয়ের আনন্দে কাল ম্যাচ শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগেই উদযাপন শুরু করে দেয় উচ্ছসিত সমর্থকরা। একে একে তারা সাইডলাইনে জড়ো হতে শুরু করেন। যদিও ম্যাচ তখনও চলছিল। লেভারকুসেনের খেলোয়াড়রা এক পর্যায়ে তাদের অনুরোধ জানায় গ্যালারিতে ফিরে যেতে। কিন্তু ৯০ মিনিটে পর পুরো স্ট্যান্ডই খালি হয়ে যায়, তখন সবাই ছিল মাঠের ভেতর। আবেগ আপ্লুত সমর্থকরা এ সময় খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাদের এই বিজয় উৎসব উপভোগ করতে থাকেন।

১২০ বছরে প্রথম বুন্দেসলিগা জিতল লেভারকুসেন
খেলা শেষ হতে না হতেই গ্যালারি ছেড়ে মাঠে নেমে আসেন সমর্থকরা। ছবি: সংগৃহীত

এই জয়ে লেভারকুসেনের পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯। জার্মান লিগ ইতিহাসে ২৯ ম্যাচ পর এটাই সর্বোচ্চ পয়েন্ট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বায়ার্ন মিউনিখের থেকে লেভারকুসেন ১৬ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছে।

ম্যাচের হ্যাটট্রিকম্যান ভিয়ার্টস বলেন, ‘এটা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। আমি বলতে পারব না, আমরা কী করেছি। আমার এখন ড্রেসিং রুমে ফিরে গিয়ে শান্ত হয়ে বসতে হবে। ইতোমধ্যেই আমরা সমর্থকদের সঙ্গে পার্টি শুরু করে দিয়েছি।’

১২০ বছরে প্রথম বুন্দেসলিগা জিতল লেভারকুসেন
সমর্থকদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন ম্যাচের ‘হ্যাট্রিক বয়’ ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস। ছবি: সংগৃহীত

ম্যাচ শুরুর ৯০ মিনিট আগে স্টেডিয়ামে এসে উপস্থিত হয় লেভারকুসেনের বাস। ৩০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ঘরের মাঠ বে আরেনাতে কাল পুরোটা সময়জুড়েই ছিল লাল-কালো জার্সিধারীদের আধিপত্য।

কোচ শাবি আলোনসোর সম্মানে শহরের বিমসার্ক স্ট্রিটটি সমর্থকরা সাময়িকভাবে ‘শাবি আলোনসো স্ট্রিট’ নামে আখ্যায়িত করে।

১২০ বছরে প্রথম বুন্দেসলিগা জিতল লেভারকুসেন
স্টেডিয়ামে খেলোয়াড়দের বাস আসার সঙ্গে সঙ্গে তা ঘিরে উল্লাসে মেতে ওঠেন সমর্থকরা। ছবি: সংগৃহীত

শিরোপা জয় নিশ্চিত হবার পর আলোনসোর এখন মূল লক্ষ্য বৃহস্পতিবার ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে লন্ডনে ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষেও ম্যাচটি। ওই ম্যাচকে সামনে রেখে গতকাল মূল একাদশে সাতটি পরিবর্তন এনেছিলেন আলোনসো। এ কারণে বদলি বেঞ্চে ছিলেন ভিয়ার্টস, জেরেমি ফ্রিমপং ও আলেক্স গ্রিমালদো। এদের মধ্যে মৌসুমে এই প্রথম ম্যাচ শুরু করার সুযোগ পাননি গ্রিমালদো। তার পরিবর্তে মাঠে নামা পিয়েরো হিনকেপি শুরুতেই গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।

এদিন ব্রেমেন ডিফেন্ডার হুলিয়ান মালাতিনির বিপক্ষে ইয়োনাস হফমানের আদায় করা পেনাল্টি থেকে লেভারকুসেনকে এগিয়ে দেন বনিফেস। রেফারি সরাসরি পেনাল্টির নির্দেশ দিলেও পরবর্তীতে ভিএআর পরীক্ষা করে তা নিশ্চিত হতে হয়। বিরতির ঠিক আগে হফম্যান আবারও গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন, কিন্তু তার পাস থেকে আমিন আদলির শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে।

১২০ বছরে প্রথম বুন্দেসলিগা জিতল লেভারকুসেন
ফ্রিমপংকে শূন্যে তুলে সমর্থকদের উদযাপন। ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা আগ্রাসী হয়ে খেলা শুরু করে ব্রেমেন, কিন্তু ম্যাচের ৬০তম মিনিটে বনিফেসের পাস থেকে শক্তিশালী শটে জাকা ব্যবধান দ্বিগুণ করলে ব্রেমেনর সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়।

আদলির পরিবর্তে মাঠে নামা ভিয়ার্টস আট মিনিট পর জাকার মতো প্রায় একইভাবে বল জালে জড়ান। ম্যাচ শেষের সাত মিনিট আগে ভিয়ার্টস তার দ্বিতীয় গোল করেন। এরপর ৯০তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ২০ বছর বয়সী এ জার্মান ফুটবলার। শেষপর্যন্ত ৫-০ গোলের বড় জয় পেয়ে শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে লেভারকুসেন।

মন্তব্য

ফুটবল
Xabi Alonso is staying in Leverkusen not Bayern Liverpool

লেভারকুজেনেই থাকছেন শাবি আলোনসো

লেভারকুজেনেই থাকছেন শাবি আলোনসো চলতি মৌসুমে বায়ের লেভারকুজেনকে স্বপ্নের গালিচায় চড়ানো স্প্যানিশ কোচ শাবি আলোনসো। ছবি: ফোর্বস
শিষ্যদের শাবি বলেছেন, ‘আমি তোমাদের সঙ্গে আরও ট্রফি জিততে চাই। আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জন্য প্রস্তুত হও।’

ইউরোপিয়ান ফুটবলে বড় চমক। লিভারপুল, বায়ার্ন মিউনিখ নয়, বায়ের লেভারকুজেনেই থেকে কোচিং চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শাবি আলোনসো।

ট্রান্সফার মার্কেট গুরু ফাব্রিৎসিও রোমানো এক্স পোস্টে জানিয়েছেন, কিছুক্ষণ আগেই লেভারকুজেনের খেলোয়াড়দের শাবি জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি এ ক্লাবটিতেই থেকে যাচ্ছেন।

ওই পোস্টে রোমানো লেখেন, শিষ্যদের তিনি (শাবি) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের সঙ্গে আরও ট্রফি জিততে চাই। আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জন্য প্রস্তুত হও।’

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে শাবি আলোনসো বলেন, ‘লেভারকুজেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার মিটিং হয়েছে। সেখানে আমি তাদের জানিয়েছি, আগামী মৌসুমে আমি এখানেই নিজের কাজ চালিয়ে যাব।

‘অনেক ভেবেচিন্তে আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মনে করি, আমার জন্য বর্তমানে এটিই (লেভারকুজেন) সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা।’

এ স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘এখানে আমার কাজ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। ক্লাবকে আমি সাহায্য করতে চাই, খেলোয়াড়দের আরও উন্নতি করতে চাই। আমাদের ভক্তরা, (লেভারকুজেন) বোর্ডও অসাধারণ… এখানকার সবকিছুই চমৎকার।

‘ম্যানেজার হিসেবে আমি এখনও অনেক ছোট। তাই মনে করি, নিজের ভবিষ্যত সম্পর্কে এটিই আমার জন্য সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত। আমি এ কথাগুলো বলার আগে যথেষ্ট সময় নিয়েছি এবং এ বিষয়ে আমার মনে কোনো সংশয় নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘হ্যাঁ, শিষ্যদের আমি ইতোমধ্যে আমার সিদ্ধান্ত জানিয়েছি।’

লেভারকুজেনেই থাকছেন শাবি আলোনসো
সংবাদ সম্মেলনে শাবি আলোনসো। ছবি: এক্স

এ সময় লিভারপুল ও বায়ার্ন মিউনিখ সম্পর্কে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নটি তিনি এড়িয়ে যান। বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। তারা (লিভারপুল ও বায়ার্ন) অবশ্যই অনেক বড় ক্লাব এবং দুই ক্লাবের সঙ্গেই আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তবে আমি যেখানে থাকতে চাই, সে জায়গাটিই এখন বেছে নিয়েছি।

‘নিজের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবার সময় এখনই নয় বলে মনে করছি। বায়ের লেভারকুজেনে আমি নিজেকে আরও উন্নীত করতে চাই।’

চলতি মৌসুমে লেভারকুজেনের খেলোয়াড় ও ভক্ত-সমর্থকদের রূপকথার গালিচায় চড়িয়ে নিয়ে চলেছেন শাবি আলোনসো। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে শুধু তার দলই এখনও সব প্রতিযোগিতায় অপরাজিত।

বুন্দেসলিগায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে একপ্রকার অজেয় বায়ার্ন মিউনিখকে নাকানি-চুবানি খাইয়েছে তার শিষ্যরা। পয়েন্ট টেবিলেও বেশ বড় ব্যবধানে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে দলটি। চলতি মৌসুমে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বায়ার্নের সঙ্গে তাদের ব্যবধান ১০ পয়েন্টের। দুই দলেরই হাতে রয়েছে কেবল আটটি করে ম্যাচ।

অনেক ফুটবলবোদ্ধার মতো বায়ার্নের সাবেক অধিনায়ক ফিলিপ লামও মনে করেন, এবার লিগ শিরোপা লেভারকুজেনের ঘরেই যাচ্ছে। আর তা হলে ক্লাবটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বুন্দেসলিগার শিরোপা জয়ের স্বাদ দিতে চলেছেন আলোনসো।

শুধু তা-ই নয়, শীর্ষ চারে থাকায় আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে লেভারকুজেন।

গত ২৬ জানুয়ারি চলতি মৌসুম শেষে লিভারপুলের দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। ক্লপের এমন ঘোষণায় লিভারপুল সমর্থকরা চমকে গেলেও তখন থেকে ইংলিশ ক্লাবটির পরবর্তী কোচ কে হবেন, তা নিয়ে ফুটবল পাড়ায় শুরু হয় জোর আলোচনা।

এক্ষেত্রে আলোনসোর নামটি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেতে থাকে। আলোনসোর খেলোয়াড়ি জীবনের শুরুর দিকে অল রেডদের জার্সি পরে খেলার কারণে তার প্রার্থিতা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছিল।

লিভারপুলের পরবর্তী কোচ হিসেবে আলোনসোকে দেখতে চেয়েছিলেন খোদ ক্লপও।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের ক্লপ বলেছিলেন, ‘সে (শাবি) বিশ্বমানের খেলোয়াড় ছিল। কোচিং পরিবার থেকে আসায় এ কাজেও সে ভালো মনোবল পায়।

‘খেলোয়াড়ি জীবন থেকেই সে কোচের মতো ছিল। (লেভারকুসেনকে) যে ফুটবল সে খেলাচ্ছে, যেভাবে খেলোয়াড় এনে দল সাজিয়েছে- এককথায় অনবদ্য।’

লিভারপুলের পরবর্তী কোচ সম্পর্কে ক্লপ বলেন, ‘আপনি যদি আমাকে আরও আট সপ্তাহ আগেও এই প্রশ্নটি করতে, তাহলেও আমি একই কথা বলতাম। ওর জন্য আমি যেকোনো মুহূর্তে স্থান ছেড়ে দিতে পারি।’

অন্যদিকে চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতায় ভালোভাবে টিকে থাকা সত্ত্বেও গত বছরের মার্চে কোচ ইউলিয়ান নাগেলসমানকে ছাঁটাই করে বায়ার্ন মিউনিখ। দল জয় পেলেও ‘পারফরম্যান্স ভালো নয়’ অজুহাতে তাকে সরিয়ে ডর্টমুন্ড ও চেলসির সাবেক কোচ টমাস টুখেলকে দায়িত্ব দেয় ক্লাবটি।

তবে টুখেলের কোচিংয়েও সন্তুষ্ট নয় বায়ার্ন কর্তৃপক্ষ। এমনকি চলতি মৌসুম শেষে তার সঙ্গে ক্লাবটির সম্পর্কচ্ছেদের কথাও জানিয়ে দেয়া হয়েছে ইতোমধ্যে। ফলে নতুন কোচের খোঁজে রয়েছে তারাও।

এদিকে বায়ার্নে খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার শেষ করা আলোনসো যেভাবে লেভারকুজেনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাতে তার নামটি বায়ার্নেরও পরবর্তী কোচ হওয়ার তালিকায় উপরের দিকে স্থান পায়।

এসব বিষয় নিয়ে এতদিন টুঁ-শব্দ করেননি শাবি। তবে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এসে সব জল্পনায় জল ঢেলে দিলেন তিনি। জানিয়ে দিলেন, লেভারকুজেন থেকে সরছেন না লিভারপুল, রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখের জার্সি গায়ে মাঝমাঠ সামলানো সাবেক এ তারকা ফুটবলার।

আরও পড়ুন:
হঠাৎ লিভারপুল ছাড়ার ঘোষণা ক্লপের

মন্তব্য

ফুটবল
Former footballer Robinho arrested in rape case

ধর্ষণের মামলায় সাজা পাওয়া সাবেক ফুটবলার রবিনহো গ্রেপ্তার

ধর্ষণের মামলায় সাজা পাওয়া সাবেক ফুটবলার রবিনহো গ্রেপ্তার ব্রাজিলের সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় রবিনহো। ছবি: সংগৃহীত
ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানে খেলাকালীন ২০১৩ সালে একটি নাইট ক্লাবে আলবেনিয়ান নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ইতালিতে রবিনহোকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

ব্রাজিলের সাবেক আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলোয়াড় রবিনহোকে ধর্ষণের দায়ে গ্রেপ্তার করেছে ব্রাজিলের ফেডারেল পুলিশ।

ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানে খেলাকালীন ২০১৩ সালে একটি নাইট ক্লাবে আলবেনিয়ান নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ইতালিতে রবিনহোকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল বলে জানায় বিবিসি।

ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৭ সালে রবিনহোকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয় ইতালির আদালত। এরপর বৃহস্পতিবার নিজ শহর সান্তোসের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন ৪০ বছর বয়সী এ খেলোয়াড়।

ব্রাজিলের একটি আদালত বুধবার তাকে কারাগারের পাঠানোর আদেশ দেয়।

দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ২০২২ সালে ইতালির সর্বোচ্চ আদালত রবিনহোর শাস্তি বহাল রেখে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

ব্রাজিলের আইন অনুযায়ী, বিদেশে অপরাধ সংঘটিত করে কোনো নাগরিক দেশে ফিরলে বিদেশের বিচারিক কর্তৃপক্ষের কাছে অপরাধীকে হস্তান্তর করে না ব্রাজিল সরকার। রায়ের আগেই রবিনহো ইতালি ছাড়ায় ব্রাজিলেই শাস্তি কার্যকরের অনুরোধ জানায় দেশটির আদালত।

ব্রাজিলের বিচার ব্যবস্থার দ্বারা গৃহীত এ পদক্ষেপ স্থানীয় মিডিয়াতে অনেকের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, রবিনহো তার খ্যাতি এবং সম্পদের কারণে ন্যায়বিচার এড়িয়ে যাবেন।

তবে ম্যানচেস্টার সিটিতে দুই বছর কাটানো এ ফুটবলার বরাবরের মতো এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, নাইট ক্লাবের ঘটনাটি ওই নারীর ‘সম্মতিতে’ হয়েছিল।

আরও পড়ুন:
৬২.৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ঝলসাচ্ছে ব্রাজিলের জনজীবন
গ্যালারিতে বর্ণবাদী স্লোগান, দল নিয়ে মাঠ ছাড়লেন এসি মিলানের গোলরক্ষক
ব্রাজিলে পর্যটকবাহী বাসে ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২৫

মন্তব্য

ফুটবল
National womens football player Razia passed away

সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে হারিয়ে গেলেন জাতীয় ফুটবলার রাজিয়া

সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে হারিয়ে গেলেন জাতীয় ফুটবলার রাজিয়া ছবি: সংগৃহীত
রাজিয়ার স্বামী ইয়াম রহমান জানান, সন্তান প্রসবকালে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।

মাত্র ২৫ বছর বয়সেই চলে গেলেন জাতীয় নারী দলের ফুটবলার রাজিয়া। বৃহস্পতিবার পুত্র সন্তান জন্ম দেয়ার পর সাতক্ষীরায় মারা গেছেন এই রাইট উইঙ্গার।

রাজিয়া সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার মৌতলা ইউনিয়নের লক্ষ্মীনাথপুর গ্রামের নূর আলী সরদারের মেয়ে।

জাতীয় ও বয়সভিত্তিক বিভিন্ন টুর্নামেন্টে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত খেলেছেন রাজিয়া। ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্বে খেলেন তিনি। ভুটানে ২০১৮ সালের অনূর্ধ্ব-১৮ সাফে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নেন রাজিয়া। এছাড়া ২০১৯ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত সাফে জাতীয় দলে সাবিনা খাতুনদের সঙ্গেও খেলেছেন তিনি।

নারী ফুটবল লিগে খেলেছেন নাসরিন স্পোর্টিং ও এএফসি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জার্সিতে।

তার স্বামী ইয়াম রহমান জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রাজিয়ার মৃত্যু হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি গাজীপুরে চাকরি করি। ইফতারির সময় বাসায় গিয়ে ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু ফোনটা ওর ছোট ভাই রিসিভ করে বলে ব্যস্ত আছি। কেউ আমাকে জানায়নি যে ওর পেইন (প্রসব ব্যথা) উঠেছে। আসলে ওর প্রচুর রক্তক্ষরণে হয়েছে। অথচ কেউ বিষয়টাতে গুরুত্ব দেয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওরা আমাকে গত রাত ১১টার দিকে জানায়, ছেলে ও মা সুস্থ আছে। কিন্তু পরে ওর প্রচুর রক্ত ঝরেছে। অচেতন হয়ে ছিল অনেক সময়। ভোর বেলা হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা গেছে। আমি সিজার করাতে বলেছিলাম, কিন্তু ওরা শোনেনি।’

ইয়াম নিজেও ফুটবলার ছিলেন। খেলেছেন বসুন্ধরা কিংস অনূর্ধ্ব-১৮, সাইফ স্পোর্টিং যুব দলে। তৃতীয় বিভাগেও খেলেছেন। ভালোবেসে ৩ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন রাজিয়াকে।

মন্তব্য

ফুটবল
Bangladesh girls beat India as champions
সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ

ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা

ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা ফাইল ছবি
খেলার পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যায়ং ভারত। দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে ম্যাচের ৭১ মিনিটে ফেরে সমতা। এরপর টাইব্রেকারে গোলকিপার ইয়ারজান বেগমের দক্ষতায় কাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয় বাংলাদেশের। 

সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে লিগ পর্বে টানা জয়ের পর শিরোপাও জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা।

রোববার কাঠমান্ডুর অদূরে ললিতপুরে আনফা একাডেমিতে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ১-১ সমতার পর টাইব্রেকারে ভারতকে ৩-২ গোলে হারান প্রীতিরা।

খেলার পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যায়ং ভারত। দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে ম্যাচের ৭১ মিনিটে ফেরে সমতা। এরপর টাইব্রেকারে গোলকিপার ইয়ারজান বেগমের দক্ষতায় কাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয় বাংলাদেশের।

এর আগে ৮ মার্চ লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে দারুণ জয় পায় বাংলাদেশের মেয়েরা। নেপাল ও ভারতকে হারিয়ে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করা দল সেদিন ভুটানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেয়।

আরও পড়ুন:
ভুটানকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশের মেয়েরা
জয় দিয়ে সাফ শুরু বাংলাদেশের
এশিয়ান গ্রুপের ঘরেই গেল করপোরেট ফুটসাল কাপ

মন্তব্য

ফুটবল
Bhutan was blown away by the girls of Bangladesh

ভুটানকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশের মেয়েরা

ভুটানকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশের মেয়েরা
নেপাল ও ভারতকে হারিয়ে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করা বাংলাদেশ শুক্রবার নেপালের কাঠমান্ডুর চেসাল স্টেডিয়ামে ভুটানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেয়।

সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে লিগ পর্বে শেষ ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা।

নেপাল ও ভারতকে হারিয়ে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করা বাংলাদেশ শুক্রবার নেপালের কাঠমান্ডুর চেসাল স্টেডিয়ামে ভুটানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেয়।

টানা তিন ম্যাচ জিতে শীর্ষে থেকে সাইফুল বারী টিটুর দল খেলার ১৩ মিনিটেই এগিয়ে যায়। এরপর একে একে ৬টি গোল। সুরভী আকন্দ পেয়েছেন জোড়া গোল। বাকি ৪টি গোল করেছেন ফাতেমা, ক্রানুচিং, সাথী মানদা ও থুইনুই মারমার।

আগামী রোববার কাঠমান্ডুর অদূরে ললিতপুরে আনফা একাডেমিতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। লিগ পর্বে তাদের ৩-১ গোলে হারিয়েছিলেন প্রীতিরা।

মন্তব্য

ফুটবল
Bangladesh started with a win
অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ

জয় দিয়ে সাফ শুরু বাংলাদেশের

জয় দিয়ে সাফ শুরু বাংলাদেশের ছবি: সংগৃহীত
সাফ-১৬ টুর্নামেন্টে চারটি দল অংশ নিয়েছে। এক ম্যাচ শেষে সমান তিন পয়েন্ট করে অর্জন করেছে ভারত ও বাংলাদেশ। ৫ মার্চ বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে।

সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে ২-০ গোলে হারিয়ে দারুণ সূচনা করেছে বাংলাদেশের নারীরা।

শুরু থেকেই দাপটের সঙ্গে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। সংঘবদ্ধ এক আক্রমণের প্রদর্শনীতে প্রথমার্ধের ২৪ মিনিটে বাংলাদেশ গোল পায়। সাথী মুন্ডার দারুণ এক মুভে থ্রু বল ঠেলে দেন প্রতিপক্ষের গোল বক্সের ভেতর। নেপালের গোলরক্ষক গোল বাঁচাতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড সুরভী আকন্দ প্রীতি দ্রুতগতিতে বক্সে প্রবেশ করে প্লেসিংয়ে গোল করেন।

৫ মিনিট পর গোলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন প্রীতি নিজেই। বক্সের বাম দিকে দিয়ে আক্রমণে ছিলেন বাংলাদেশের আরেক খেলোয়ার আলফি। গোলরক্ষক তাকে থামাতে গিয়ে গিয়ে ফেলে দেন মাটিতে। ফলে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। স্পট কিক থেকে বাংলাদেশকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন প্রীতি। এভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।

বিরতির পর স্বাগতিক নেপাল ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালালেও বাংলাদেশের রক্ষণভাগ ভেদ করেতে পারেনি। বারবার তাদের আক্রমণ নস্যাৎ করে দিয়েছে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ। খেলার ৬২ মিনিটের মাথায় আরিফার করা ক্রসে সুরভী প্রীতির প্লেসিং করা বল ফিরে আসে জালের পাশে লেগে। এরপর নির্ধারিত নব্বই মিনিটের খেলায় গোল পায়নি আর কোনো দল।

এবারের সাফ-১৬ টুর্নামেন্টে চারটি দল অংশ নিয়েছে। এক ম্যাচ শেষে সমান তিন পয়েন্ট করে অর্জন করেছে ভারত ও বাংলাদেশ। ৫ মার্চ বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে।

মন্তব্য

p
উপরে