বিশ্ব জয়ের ২০ বছর পর প্রকাশিত হয়েছে তাঁর আত্মজীবনী। নাম 'আমি ব্রাজিলকে কাঁদিয়েছি।'
ইতালি ১৯৮২ বিশ্বকাপ জিতেছে ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে। এর আগে সেমিফাইনালে হারিয়েছে পোল্যান্ডকে। তারপরও সেই বিশ্বকাপ জয়ের নায়কের আত্মজীবনীর এই নাম কেন? ব্রাজিলকে হারিয়েই ইতালি বিশ্বকাপ জিতে ফেলেছিল না কি?
১৯৮২ স্পেন বিশ্বকাপের গল্পটা যাঁরা জানেন, তাঁদের কাছে প্রশ্নটা একেবারেই অবান্তর বলে মনে হতেই পারে। বরং তাঁদের সবাইকে একমত হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখি যে, পাওলো রসির আত্মজীবনীর এর চেয়ে ভালো কোনো নাম হতে পারত না।
সেমিফাইনাল-ফাইনাল জিতেই বিশ্বকাপ জিততে হয়। এই ধ্রুবসত্য নিয়ে তর্ক করার কিছু নেই। কিন্তু ১৯৮২ এমন অবাক করা এক বিশ্বকাপ, যেটির কথা উঠলে সেমিফাইনাল-ফাইনাল ছাপিয়ে বড় হয়ে ওঠে অন্য এক একটি ম্যাচ। অফিসিয়ালি দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচ। যদিও তা রূপ পেয়েছিল অলিখিত কোয়ার্টার ফাইনালের। ১৯৮২ সালের ৫ জুলাই মহাকাব্যিক সেই ম্যাচের সাক্ষী বার্সেলোনোর এস্তাদিও সারিয়া (এসপানিয়লের মাঠ)। ওই বিশ্বকাপের মীমাংসাও সম্ভবত হয়ে গিয়েছিল সেখানেই। তর্কযোগ্যভাবে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত হ্যাটট্রিকে বলতে গেলে একাই যা করে দিয়েছিলেন পাওলো রসি।
ব্রাজিলকে কাঁদিয়েছেন বলে যে দাবি করেছেন, তা খুবই সত্যি। মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ফিরেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়েরা। হোটেলে ফেরার পর শেষ টিম মিটিংয়ে আরেক দফা কান্নাকাটি হয়েছে। দেশে ব্রাজিলিয়ানরাও নিশ্চয়ই কেঁদেছে। সেই কান্নার নাম পাওলো রসি। সেই ম্যাচের ফল তো আক্ষরিক অর্থেই: রসি ৩-ব্রাজিল ২।
সেমিফাইনালে ইতালির দুটি গোলই রসির। ফাইনালে ৩-১ গোলে জয়ের প্রথমটিও। তারপরও পাওলো রসি মানেই সিয়ারা স্টেডিয়ামের ওই ম্যাচ। মনে হয় না বিশ্বকাপ ইতিহাসে আর কোনো একটা ম্যাচ একজন খেলোয়াড়ের এমন সমার্থক হয়ে আছে। তুলনায় আসতে পারে শুধু ১৯৮৬ বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনা-ইংল্যান্ড। যেটি কাগজে-কলমেই কোয়ার্টার ফাইনাল এবং যে ম্যাচ মানেই ডিয়েগো ম্যারাডোনা।
পাওলো রসির কীর্তধন্য ১৯৮২ বিশ্বকাপেই ম্যারাডোনার আবির্ভাব। মাঠেও দুজনের দেখা হয়েছিল। ব্রাজিলের বিপক্ষে ওই ম্যাচের আগেই ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হয়েছে রসির ইতালি এবং জিতেছে ২-১ গোলে। কী অদ্ভুত দেখুন, ম্যারাডোনার মৃত্যুর পনের দিনের মধ্যেই রসিরও এই পৃথিবীর পাট চুকিয়ে অনন্তলোকে যাত্রা।
ব্রাজিলের বিপক্ষে ইতালির জয়ের মাহাত্ম্য বোঝানোর কাজটা একটু পরে করছি। আগে ১৯৮২ বিশ্বকাপের ব্যতিক্রমী ফরম্যাটের কথাটা বলে নেওয়া ভালো। ইতালি-ব্রাজিল ম্যাচটা বোঝাতেও তা জরুরি। গ্রুপ পর্বের পরই নকআউট শুরু হয়ে যাওয়ার বদলে সেবার দ্বিতীয় রাউন্ডে তিনটি করে দল নিয়ে চারটি গ্রুপ। কোয়ার্টার ফাইনাল বলে কিছু নেই। গ্রুপ চ্যাম্পিয়নরা উঠে যাবে সেমিফাইনালে। গ্রুপের তিন ম্যাচেই দর্শকের মন রাঙিয়ে হেসেখেলে জিতেছে ব্রাজিল। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে গ্রুপে পেয়ে গেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ও আগের বারের চতুর্থ ইতালিকে। কারণ এই দুই দল হয়েছে রানার্স আপ। আর্জেন্টিনা উদ্বোধনী ম্যাচেই বেলজিয়ামের কাছে হেরে বসার পর পরের দুই ম্যাচ জিতলেও ইতালি দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে রীতিমতো কেঁদে কঁকিয়ে। গ্রুপের বাকি তিন দল পোল্যান্ড, পেরু ও ক্যামেরুনের সঙ্গেই ড্র। ওই বিশ্বকাপেই অভিষিক্ত ক্যামেরুনও তিন ম্যাচই ড্র করায় দুই দলের পয়েন্ট সমান, গোল পার্থক্যও। ইতালির পরের রাউন্ডে উত্তরণ ক্যামেরুনের চেয়ে শুধুই একটি গোল বেশি করার কল্যাণে।
গ্রুপ পর্বে যে পারফরম্যান্স, তাতে ইতালির বিশ্বকাপ দ্বিতীয় রাউন্ডেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাকে টপকে ওই ছন্নছাড়া ওই দলের সেমিফাইনালে ওঠার পক্ষে ইতালিয়ানরাও বাজি ধরেছিলেন বলে মনে হয় না। দ্বিতীয় রাউন্ডে সেই ছন্নছাড়া দলই বদলে গেল ভোজবাজির মতো। প্রথম ম্যাচে হারিয়ে দিল আর্জেন্টিনাকে এবং জেতার মতো খেলেই। তাতে কি! ব্রাজিলের কাছে এই ইতালি পাত্তা পাবে না কি! ইতালির মুখোমুখি হওয়ার আগ পর্যন্ত ব্রাজিল খেলেছে স্বপ্নের ফুটবল এবং এই ম্যাচে তাদের ড্র হলেই চলে। কারণ আর্জেন্টিনাকে ৩-১ গোলে হারানোয় গোল ব্যবধানে তারাই এগিয়ে। এই সুক্ষ্ম হিসাবের কোনো প্রয়োজন পড়বে বলেও কেউ ভাবেননি। ব্রাজিলের সেই দলে তারকার মেলা। সক্রেটিস, জিকো, ফ্যালকাও, সেরেজো, জুনিয়র, এডার, অস্কার...বল পায়ে যাঁরা ফুল ফোটাচ্ছেন মাঠে। বাঁধনহারা, মুক্ত আক্রমণাত্মক ফুটবলের এক প্রদর্শনী দর্শকের চোখে বুলিয়ে দিচ্ছে মায়াঞ্জন। ১৯৭০ বিশ্বকাপের যে ব্রাজিল দলকে ফুটবলীয় উৎকর্ষের চূড়া বলে ধরা হয়, সেটিকেও চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে কোচ টেলে সান্টানার "আক্রমণই শেষ কথা" মন্ত্রে দীক্ষিত এই দল। কাল হলো হয়তো এই দর্শনই। ৫ মিনিটে রসির প্রথম গোল, ২৫ মিনিটে দ্বিতীয়। দুইবারই পিছিয়ে পড়ার পর সমতা এনেছে ব্রাজিল। ৬৮ মিনিটে ২-২ হওয়ার পর অন্য যেকোনো দল বাকি সময়টা একটু রক্ষণাত্মক খেলে কাজের কাজটা করে নিত। কিন্তু ওই ব্রাজিল দল আক্রমণাত্মক ফুটবল ছাড়া আর কিছু খেলতে জানলে তো!
আর পাওলো রসিও যেন সেদিন সব অপমানের জবাব দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করে নেমেছিলেন। ৭৪ মিনিটে তৃতীয়বারের মতো এগিয়ে দিলেন ইতালিকে, শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত ইতালি এগিয়েই থাকল। দ্বিতীয় রাউন্ডে ইতালির বদলে যাওয়ার কথা বলছিলাম। সেই বদলের প্রতীকি রূপও পাওলো রসিই। আগের চার ম্যাচে কোনো গোল তো নেই-ই, গোল করার কোনো সম্ভাবনাও জাগাতে ব্যর্থ। যাঁকে নিয়ে পত্রিকায় লেখা হচ্ছে,"লক্ষ্যহীনভাবে এক ভুত যেন ঘুরে বেড়াচ্ছে মাঠে।" তাঁকে দলে নেওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে ইতালিয়ান সংবাদ মাধ্যমে। সমালোচনার সব তিরই কোচ এনজো বিয়ারজোটের দিকে। সাংবাদিকদের সঙ্গে সম্পর্কটা এমনই তিক্ত হয়ে গেছে যে, দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেই সংবাদ মাধ্যমকে অচ্ছুত বলে ঘোষণা করেছেন ইতালির বিয়ারজোট। ইতালিয়ান ফুটবলে যা বিখ্যাত হয়ে আছে "সাইলেনজিও স্টাম্পা" নামে।
ব্রাজিলের বিপক্ষে যে ম্যাচ নিশ্চিত করে দিয়েছে রসির অমরত্ব, তাতে ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই রসির প্রথম গোল। ইউটিউবে সেই ম্যাচটি যদি দেখেন, গোলের আগে ওটুকু সময়ের মধ্যেই দলে রসির অন্তভূর্ক্তি নিয়ে বিতর্কের কথা একাধিকবার বলতে শুনবেন ধারাভাষ্যকারকে। বিতর্ক তো আর এমনি এমনি হয়নি। রসির তো ওই বিশ্বকাপে খেলারই কথা না। ১৯৮০ সালে ইতালিয়ান ফুটবলকে টালমাটাল করে দেওয়া "টটেনেরো" (ব্ল্যাক লটারি) নামে কুখ্যাত ম্যাচ পাতানো কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গেছে তাঁর নামও। ২-২ গোলে ড্র হওয়া পেরুজিয়া-অ্যাভেলিনো ম্যাচটি ফিক্সড ছিল বলে প্রমাণিত হয়েছে। তা নিশ্চিত করতে আরও অনেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে পেরুজিয়ার রসিকেও ২ মিলিয়ন লিরা দেওয়া হয়েছে বলে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন দুজন। রসি নিষিদ্ধ হয়েছেন তিন বছরের জন্য। যার মানে ১৯৮২ বিশ্বকাপের সময় তাঁর নিষিদ্ধই থাকার কথা। সেই নিষেধাজ্ঞা এক বছর কমে যাওয়ায় ভূমিকা আছে কোচ এনজো বিয়ারজোটের। বিশ্বকাপে যে তাঁর রসিকে লাগবেই।
এর আগেই একটি বিশ্বকাপ খেলেছেন রসি। ১৯৭৮ বিশ্বকাপে গোলও করেছেন ৩টি। জিতেছেন দ্বিতীয় সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার সিলভার বল। বিয়ারজোট কেন তাঁকে দলে চেয়েছেন, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। কিন্তু গায়ে ওই কলঙ্কের ছাপ আর দুই বছর ফুটবলের বাইরে থাকা মিলিয়ে রসির দলভূক্তি মোটেই জনসমর্থন পায়নি। সেই রসিই বিশ্বকাপের পর ইতালিয়ানদের নয়নমণি।
রসির জন্য এটিকে তাই পাপমোচনের বিশ্বকাপ বলতেই পারেন। প্রায়শ্চিত্তের বিশ্বকাপও। নিজেকে অবশ্য বরাবরই নির্দোষ দাবি করে গেছেন রসি, তবে ১৯৮২ বিশ্বকাপের পরই শুধু তা বিশ্বাস করার লোক পাওয়া গেছে ইতালিতে। ছয় গোল করে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতার গোল্ডেন বুট, টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বলও তাঁর, পরে যার সঙ্গে যোগ হয়েছে তখন শুধুই ইউরোপিয়ান ফুটবলারদের জন্য বরাদ্দ ব্যালন ডি'অরও। বিশ্বকাপের সঙ্গে গোল্ডেন বুট ও গোল্ডেন বলও জিতেছেন আরও দুজন--১৯৬২ সালে ব্রাজিলের গারিঞ্চা ও ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনার মারিও কেম্পেস। তবে একই বছরে বিশ্বকাপ, গোল্ডেন বুট, গোল্ডেন বল আর ব্যালন ডি'অর---এই চতুষ্টয় জয়ের কীর্তি পাওলো রসি ছাড়া আর কারও নেই।
আরেক দিক থেকেও অনন্য বলতে হয় তাঁকে। বিশ্বকাপ রাঙানো অন্য সব ফুটবলারেরই ক্লাব পর্যায়ে বেশি অর্জন। ইতালির প্রথম স্ট্রাইকার হিসাবে পরপর দুই মৌসুমে সিরি 'বি' ও সিরি 'আ'র সর্বোচ্চ স্কোরার হয়েছেন, ১৯৮৪ সালে জুভেন্টাসের হয়ে জিতেছেন ইউরোপিয়ান কাপ (এখন যা চ্যাম্পিয়নস লিগ), তারপরও রসির ক্লাব ক্যারিয়ারকে মোটেই আহামরি কিছু বলা যাবে না। পাওলো রসিকে চিনতে তাই বিশ্বকাপেই ফিরে যেতে হয়।
সেই বিশ্বকাপেও বলতে গেলে শুধু গোলই করেছেন। গোল করার সহজাত দক্ষতা নিয়েই জন্মেছিলেন। এর বাইরে এমন বিশেষ কিছু ছিল না, যা দেখে দর্শক আহা-উহু করবেন! বিশ্বকাপের রসিকে মনে করতে গেলেও চোখে তাই শুধু গোলগুলিই ভাসে। সেগুলোও বিশ্বকাপের সবচেয়ে দর্শনীয় গোলের তালিকায় স্থান পাওয়ার মতো নয়। তাতে কি, ওই গোলগুলো করেই তো দেশকে এনে দিয়েছেন একটা বিশ্বকাপ। সেই ১৯৩৪ আর ১৯৩৮ সালে বিশ্বকাপের আদিকালে পরপর দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইতালি। এরপর অপেক্ষা আর অপেক্ষা...। আবার বিশ্বকাপ হাতে নিতে ইতালির ৪৪ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান পাওলো রসির কল্যাণে। ফুটবল পাগল ইতালিয়ানদের হৃদয়ে রসির জন্য আলাদা একটা জায়গা তো তাই বরাদ্দ থাকবেই। তাঁর মৃত্যুতে কাঁদবেই ইতালি।
১৯৮২ সালে ব্রাজিলকে কাঁদিয়েছিলেন, ৩৮ বছর পর ইতালিকেও কাঁদালেন পাওলো রসি।
টার্ফের সবুজ গালিচায় মৃদু আলোর অপরূপ দৃশ্য। চারপাশে সারিবদ্ধ দর্শকের ভিড়। থেমে থেমে উল্লাসের সুর বেজে উঠছে দর্শক ও খেলোয়াড়দের মাঝে।
রেফারি বাঁশিতে ফুঁ দিতেই শুরু হয়ে যায় যুদ্ধ। তবে এ যুদ্ধ সংঘাতের নয়, সৌহার্দ্যের ফুটবল যুদ্ধ।
প্রথম দিন প্রতিটি ম্যাচে ফুটবল শৈলীতে শেষমেশ জয়ের হাসি হাসে ছয়টি দল। তবে গোলে স্বপ্নভঙ্গ হলেও দারুণ খেলে সবার মন কেড়েছে প্রতিটি ফুটবল দল।
টানটান উত্তেজনার মধ্যে টুর্নামেন্টের প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হয় ছয়টি ম্যাচ। হালিশহর কেএসআরএম টুর্নামেন্টের গতকালের চিত্র এটি।
নগরের হালিশহরের কেএসআরএম টার্ফে শুক্রবার টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন কেএসআরএমের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক নবাব সিরাজুদ্দৌলা, সেলিম উদ্দিন, করিম উদ্দিন ও সরওয়ার জাহান।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (করপোরেট) শামসুল হক ও পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) জসিম উদ্দিনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে কেএসআরএম গ্রুপের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে ২৮টি দল। প্রথম দিনে ১২টি দলই তাদের নৈপুণ্য দেখাতে সক্ষম হয়।
৫২ ম্যাচের প্রতিযোগিতামূলক এ টুর্নামেন্টের খেলা চলবে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:ঐতিহ্যবাহী সান মামেসে ম্যাচ শুরুর পর থেকেই নিজেদের জাত চেনাতে থাকেন অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের ফুটবলাররা। প্রথম মিনিট থেকেই রিয়াল মাদ্রিদকে চেপে ধরে গোল আদায়ের চেষ্টা চালান তারা। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম গোলটিও পেয়ে যায় বিলবাও।
ওই গোলের ১৫ মিনিট পরই বিলবাও গোলরক্ষকের ভুলে পেনাল্টি পেয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। তবে দুর্বল স্পটকিকের কারণে হুলেন আগিরেসাবালাকে বোকা বানাতে ব্যর্থ হন তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে।
মিনিট দশেক পর বেলিংহ্যামের গোলে রিয়াল মাদ্রিদ সমতায় ফিরলেও ম্যাচটি ২-১ গোলে হেরে বার্সেলোনার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমানোর সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে লস ব্লাঙ্কোসদের।
ম্যাচ হেরে, বিশেষ করে পেনাল্টি থেকে গোল আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন পিএসজির পাঠ চুকিয়ে চলতি মৌসুমে রিয়াল শিবিরে যোগ দেয়া এমবাপ্পে।
এ নিয়ে পরপর দুই ম্যাচে দুটি পেনাল্টি নিয়ে ব্যর্থ ফরাসি স্ট্রাইকার। সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুলের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারের ম্যাচেও পেনাল্টি মিস করেন এমবাপ্পে। মাঝে লা লিগায় গেটাফের বিপক্ষে জয়ের রাতে আরও একটি পেনাল্টি পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে সেটি নিজে না নিয়ে জুড বেলিংহ্যামকে দেন ২৫ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। তা থেকে দলকে গোলও এনে দেন বেলিংহ্যাম। তবে পরের ম্যাচেই পেনাল্টি পেয়ে নিজে শট নিয়ে ব্যর্থ এমবাপ্পে।
এর ফলে ক্যারিয়ারে এই প্রথম এমবাপ্পে এক সপ্তাহে দুটি পেনাল্টি মিস করলেন। আর পিএসজি ও রিয়াল মিলিয়ে এ বছর তার পেনাল্টি মিসের সংখ্যা মোট চারটি। এক বছরে চারটি পেনাল্টি মিস করার ঘটনাও তার ক্যারিয়ারে এই প্রথম।
টানা দুই ম্যাচে পেনাল্টি মিস করায় ‘ট্রল ফুটবল’ নামের এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি মিম শেয়ার করা হয়েছে, যেখানে একজন মিস ইউনিভার্সের শরীরের ওপর এমবাপ্পের মাথা লাগিয়ে ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে- আমাদের নতুন ‘মিস পেনাল্টি’।
তবে এমন কঠিন সময়েও ভেঙে না পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন ফ্রান্সের ২০১৮ বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘বাজে ফল। যে ম্যাচে ছোটখাটো বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে এটি বড় ধরনের ভুল। এর পুরোটা দায় আমি নিচ্ছি। কঠিন মুহূর্ত! তবে পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার এবং আমি কে, তা দেখিয়ে দেওয়ার এখনই সেরা সময়।’
তবে শিষ্যের কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি। প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও এখনই তাকে কাঠগড়ায় তুলতে চান না এই ইতালিয়ান।
ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কোচ বলেন, ‘ওর সঙ্গে আমার এখনও কথা হয়নি। তবে পেনাল্টি দিয়ে আমি একজন খেলোয়াড়কে মূল্যায়ন করতে পারি না। নিশ্চিতভাবেই সে হতাশ ও ভারাক্রান্ত। তবে আমাদের নিজেদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
‘জানি, সে তার সেরা ফর্মে নেই। কিন্তু (দলে) মানিয়ে নিতে তাকে আমাদের সময় দিতে হবে। এরই মধ্যে সে (মাদ্রিদের জার্সিতে) ১০ গোল করেছে। আরও ভালো করার সামর্থ্য সে রাখে এবং সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:কোপা আমেরিকা জয় এবং ইন্টার মায়ামির হয়ে মাঠে দারুণ সময় কাটালেও এ বছরের ব্যালন ডি’অরের ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন না লিওনেল মেসি। তবে বছরজুড়ে মেসির কাজের স্বীকৃতি দিতে ভোলেনি বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ২০২৪ সালে ফুটবলের বর্ষসেরার পুরস্কার ‘দ্য বেস্ট’-এর তালিকায় রয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
শুক্রবার ফিফার ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের দ্য বেস্টের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ১১ জনের ওই সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছে মেসির নাম।
মেসি ছাড়াও এই তালিকায় রয়েছেন এবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী রদ্রি। তালিকায় রিয়াল মাদ্রিদেরই রয়েছেন ছয়জন- ভিনিসিউস জুনিয়র, জুড বেলিংহ্যাম, দানি কারভাহাল, ফেদেরিকো ভালভার্দে, টনি ক্রুস ও কিলিয়ান এমবাপে।
এছাড়াও ম্যানচেস্টার সিটির আর্লিং হলান্ড, বেয়ার লেভারকুসেনের ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস ও বার্সেলোনার বিস্ময়বালক লামিন ইয়ামাল জায়গা করে নিয়েছেন এই তালিকায়।
ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ প্রচলনের পর থেকে এ পর্যন্ত ৯ বারই মনোনয়ন পেলেন মেসি। এর মধ্যে তিনি পুরস্কারটি জিতেছেন তিনবার- ২০১৯, ২০২২ ও ২০২৩ সালে।
‘দ্য বেস্ট’ পুরুষ ফুটবলারের পাশাপাশি আরও ১০টি পুরস্কারের মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেছে ফিফা। এর মধ্যে রয়েছে বর্ষসেরা নারী ফুটবলার, বর্ষসেরা কোচ, বর্ষসেরা গোলরক্ষক, বর্ষসেরা একাদশ ও বর্ষসেরা গোলের পুরস্কার। এছাড়া দেয়া হবে ফিফা ফ্যান অ্যাওয়ার্ড।
পুরস্কারগুলোর প্রতিটির জন্য ভোট দিতে পারেন ভক্ত-সমর্থকরা। সেরা খেলোয়াড়, সেরা কোচ ও সেরা গোলরক্ষক নির্বাচনে মোট ভোটের এক-চতুর্থাংশ রাখা হয়েছে দর্শকদের জন্য। বাকি তিন ভাগ দেন ফিফার সদস্য দেশগুলোর অধিনায়ক, কোচ ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা। সেরা গোল ও একাদশ নির্বাচনে ভক্তদের ভোটের হার অর্ধেক।
ফিফার ওয়েবসাইটে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভোট দেয়া যাবে।
২০২৩ সালের ২১ আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট পর্যন্ত পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি বিভাগের সংক্ষিপ্ত মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেছে ফিফা। ‘দ্য বেস্ট’-এর ১১ জনের মধ্যে ইউরোপের বাইরের ক্লাব থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন শুধু মেসিই।
মেসিকে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাখ্যায় ফিফা বলেছে, বয়স ৩৭ হয়ে গেলেও ইন্টার মায়ামি ও আর্জেন্টিনা দলে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছেন মেসি। তার অনুপ্রেরণামূলক পারফরম্যান্সে ২০২৩ লিগস কাপের পর রেকর্ডসংখ্যক পয়েন্ট অর্জন করে ২০২৪ সালের সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছে মায়ামি। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে তার নেতৃত্বে কোপা আমেরিকা জিতেছে আর্জেন্টিনা। এমনকি বিশ্বকাপ বাছাইয়ের লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে জয় দিয়ে বছর শেষ করা আর্জেন্টিনা রয়েছে পয়েন্ট টেবিলের চূড়ায়, আর এই আসরে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬ গোল নিয়ে সবার উপরে রয়েছেন মেসি।
এক নজরে ‘দ্য বেস্ট’-এর সংক্ষিপ্ত তালিকা
সেরা পুরুষ ফুটবলার: জুড বেলিংহ্যাম (ইংল্যান্ড/রিয়াল মাদ্রিদ), দানিয়েল কারভাহাল (স্পেন/রিয়াল মাদ্রিদ), আর্লিং হলান্ড (নরওয়ে/ম্যানচেস্টার সিটি), টনি ক্রুস (জার্মানি/রিয়াল মাদ্রিদ), কিলিয়ান এমবাপে (ফ্রান্স/রিয়াল মাদ্রিদ), লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা/ইন্টার মায়ামি), রদ্রিগো এরনান্দেস (স্পেন/ম্যানচেস্টার সিটি), ফেদেরিকো ভালভার্দে (উরুগুয়ে/রিয়াল মাদ্রিদ), ভিনিসিউস জুনিয়র (ব্রাজিল/রিয়াল মাদ্রিদ), ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস (জার্মানি/বেয়ার লেভারকুসেন) ও লামিন ইয়ামাল (স্পেন/বার্সেলোনা)।
সেরা কোচ: শাবি আলোনসো (বেয়ার লেভারকুসেন), কার্লো আনচেলত্তি (রিয়াল মাদ্রিদ), লুইস দে লা ফুয়েন্তে (স্পেন), পেপ গার্দিওলা (ম্যানচেস্টার সিটি) ও লিওনেল স্কালোনি (আর্জেন্টিনা)।
সেরা গোলরক্ষক: জানলুইজি দোন্নারুম্মা (ইতালি/পিএসজি), এদেরসন মোরায়েস (ব্রাজিল/ম্যানচেস্টার সিটি), আন্দ্রিই লুনিন (ইউক্রেন/রিয়াল মাদ্রিদ), মাইক মাইনিয়ঁ (ফ্রান্স/এসি মিলান), এমিলিয়ানো মার্তিনেস (আর্জেন্টিনা/অ্যাস্টন ভিলা), দাভিদ রায়া (স্পেন/আর্সেনাল), উনাই সিমোন (স্পেন/আথলেটিক বিলবাও)।
আরও পড়ুন:চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু। সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
রোববার সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পিন্টু। আরও কিছু গুরুতর শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ায় তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে রাখা হয়েছিল।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের শীর্ষ ফুটবলাররা গঠন করেছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। দেশের মানুষের মুক্তির পক্ষে বিশ্ব জনমত তৈরি করেছিল এই ফুটবল দল।
জাকারিয়া পিন্টু ছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের গর্বিত অধিনায়ক। তিনি একজন অসাধারণ ডিফেন্ডার ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক হিসেবে অমর হয়ে থাকবেন বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল জাকারিয়া পিন্টুর নেতৃত্বে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ১৬টি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল। এর ১২টিতেই জিতেছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। ওই ম্যাচের টিকিট বিক্রির অর্থ স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল তুলে দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে।
১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়ার মারদেকা কাপে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলকে নেতৃত্ব দেন জাকারিয়া পিন্টু। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলেরও প্রথম অধিনায়ক। মোহামেডানের সাবেক এই তারকা সংগঠন হিসেবেও মোহামেডানের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন।
১৯৪৩ সালের ১ জানুয়ারি নওগাঁয় জন্ম নেয়া এই কিংবদন্তির ফুটবলের শুরু পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে। ১৯৬১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত টানা খেলেছেন মোহামেডানে। ক্লাবটির কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
ফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো জানুয়ারিতে বাংলাদেশে যুব উৎসবে যোগদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা আসন্ন যুব উৎসবে যোগদানের জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানান এবং বিশ্বজুড়ে স্বনামধন্য কয়েকটি নারী ফুটবল দলকে বাংলাদেশে আনার বিষয়ে তার সহযোগিতা চান।
জবাবে ফিফা প্রেসিডেন্ট তার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং যুব উৎসবে উপস্থিত থাকার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন।
নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে টানা দু’বার শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। তাদের টানা নৈপুণ্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে এক কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার নেপালে ২০২৪ সাফ জয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের জন্য দেড় কোটি টাকা অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)
শনিবার সাবিনা-তহুরাদের জন্য দেড় কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করা হয়েছে।
তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বাফুফের নতুন কমিটির প্রথম সভা ছিল শনিবার। টানা কয়েক ঘণ্টার সভা শেষে সদস্য আমিরুল ইসলাম বাবু সংবাদ মাধ্যমে এমন কথা জানান।
এছাড়া সভায় কমিটিও গঠন করা হয়েছে। চার বছরের জন্য গঠিত ফিন্যান্স কমিটির দায়িত্ব থাকবে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের অধীনে। এছাড়া অন্য কমিটিগুলো হবে এক বছর মেয়াদি।
বাফুফের সদস্য ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই কমিটির পক্ষ থেকে সাফজয়ী মেয়েদেরকে দেড় কোটি টাকা বোনাস দেয়া হবে। সভায় এটাই ছিল প্রথম সিদ্ধান্ত।’
গত ৩০ অক্টোবর কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে বাংলাদেশ। দেশে ফেরার পর ছাদখোলা বাসে আবারও সংবর্ধনা দেয়া হয় তাদের।
পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সংবর্ধনা দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসও।
আরও পড়ুন:চোটের কারণ দেখিয়ে অক্টোবরের আন্তর্জাতিক বিরতির সময়ে ফ্রান্স দলে ছিলেন না রিয়াল মাদ্রিদের তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপে। এবার নভেম্বরে নেশন্স লিগের দুই ম্যাচের জন্য তাকে ছাড়াই দল ঘোষণা করেছে ফ্রান্স।
নেশন্স লিগের ‘এ’ লিগের ২ নম্বর গ্রুপের পঞ্চম ম্যাচে ১৪ নভেম্বর ইসরায়েলকে আতিথ্য দেবে দিদিয়ের দেশমের দল। এর তিন দিন পর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে টেবিলের শীর্ষে থাকা ইতালির বিপক্ষে মাঠে নামবে ২০২১ সালের শিরোপাজয়ীরা।
এই দুই ম্যাচের জন্য ঘোষিত ২৩ সদস্যের ফ্রান্স স্কোয়াডে প্রথমবার ডাক পেয়েছেন চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ পারফর্ম করা লিলের তরুণ গোলরক্ষক লুকা শেভালিয়েঁ। তবে ঘোষিত স্কোয়াডে জায়াগা হয়নি এমবাপের।
অক্টোবরে চোটের কারণ দেখিয়ে রিয়াল মাদ্রিদে থেকে যান এমবাপে। এরপর ইউরোপীয় সংবাদধ্যমের খবরে জানা যায়, ফ্রান্স যখন নেশন্স লিগের ম্যাচ খেলছে, তখন তিনি সুইডেনের একটি ক্লাবে আড্ডা দিচ্ছেন। ওই ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ২৫ বছর বয়সী ফরাসি অধিনায়ক।
স্টকহোমের যে হোটেলে তখন তিনি ছিলেন, সে সময় সেখানে একটি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। এ খবর চাউর হওয়ার পর রিয়াল মাদ্রিদ তাকে পোশাকের একটি বিজ্ঞাপন থেকেও সরিয়ে দেয়। এবার রিয়ালের জার্সিতে মাঠে বেশ কিছুদিন ধরে বিবর্ণ থাকার পর ফ্রান্স দলেও ব্রাত্য হলেন এই ফরোয়ার্ড।
স্কোয়াড ঘোষণার সময় এমবাপের অনুপস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দেশম বলেন, ‘অনেক ভেবেচিন্তে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, এই মুহূর্তে এটিই সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।’
এমবাপেকে দলের বাইরে রাখার সিদ্ধান্তের পেছনে ফুটবলের বাইরের কোনো কারণ নেই জানিয়ে কোচ বলেন, ‘আমি কিলিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছি। সে দলে ফিরতে চায়। তবে আগামী দুই ম্যাচের জন্য এটি একটি বিশেষ সিদ্ধান্ত।’
ফ্রান্স স্কোয়াড
গোলরক্ষক: লুকা শেভালিয়েঁ (লিল), মাইক মাইনিয়ঁ (এসি মিলান) ও ব্রাইস সাম্বা (লঁস)।
ডিফেন্ডার: জনাথন ক্লুস (নিস), লুকা দিনিয়ে (অ্যাস্টন ভিলা), ওয়েসলে ফোফানা (চেলসি), থেও এরনান্দেস (এসি মিলান), ইব্রাহিমা কোনাতে (লিভারপুল), জুল কুন্দে (বার্সেলোনা), উইলিয়াম সালিবা (আর্সেনাল) ও দায়োত উপামেকানো (বায়ার্ন মিউনিখ)।
মিডফিল্ডার: এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা (রিয়াল মাদ্রিদ), মাতেও গেন্দুসি (লাৎসিও), এনগলো কান্তে (আল ইত্তিহাদ), মানু কোনে (রোমা), আদ্রিয়েন রাবিও (অলিম্পিক মার্শেই) ও ওয়ারেন জাইরে-এমেরি (পিএসজি)।
ফরোয়ার্ড: ব্রাদলে বারকোলা (পিএসজি), উসমান দেম্বেলে (পিএসজি), রান্দাল কোলো মুয়ানি (পিএসজি), ক্রিস্তোফার এনকুঙ্কু (চেলসি), মিকেল অলিস (বায়ার্ন মিউনিখ) ও মার্কাস থুরাম (ইন্টার মিলান)।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য