প্রয়াত ফুটবল কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে নিউ জিল্যান্ডের রাগবি জাতীয় দল।
অল ব্ল্যাকস নামে জনপ্রিয় দলটি ম্যারাডোনার নাম ও ১০ নম্বর লেখা নিজেদের দলের একটি জার্সি মাঠে রেখে ম্যাচ শুরু করে।
রাগবি চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টে ম্যারাডোনার দেশ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলা ছিল সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।
নিউ জিল্যান্ডের অধিনায়ক স্যাম কেইন ম্যারাডোনার নাম ও নম্বর দেওয়া অল ব্ল্যাকস জার্সিটি রাখেন নিউকাসল স্টেডিয়ামের সেন্টার সার্কেলে।
এরপর শুরু হয় তাদের ‘হাকা’। নিজেদের প্রতিটি ম্যাচের আগে নিউ জিল্যান্ডের রাগবি দলের সদস্যরা মাউরি আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী সমরনৃত্য ‘হাকা’ তে অংশ নেন।
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তিন দলের রাগবি চ্যাম্পিয়নশিপ। নিউকাসলের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের কাছে ৩৮-০ পয়েন্টে হেরে গেছে আর্জেন্টিনা।
আরও পড়ুন:🏉 We loved & will never forget one of your immortals, Jonah Lomu, who helped Germany train for the 2010 #WorldCup 🖤
— FIFA.com (@FIFAcom) November 28, 2020
⚽️ Thank you to the @AllBlacks for a truly amazing show of respect to one of our immortals, Diego Maradona 💙@DFB_Team_EN | @Argentina pic.twitter.com/KHQMPNIw8E
এশিয়ান গেমস ফুটবলে চীনের সঙ্গে গোলশূন্যভাবে ড্র করেছে বাংলাদেশ। এই ‘স্বস্তি’ নিয়েই আপাতত ফিরতে হচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল দলকে।
চীনের শহর হ্যাংঝুতে পরপর দুই ম্যাচ হারের পর তৃতীয় ম্যাচে এসে রোববার এই ফল আসে দলের।
অবশ্য এবারের এশিয়ান গেমসের আয়োজক চীন প্রথম দুই ম্যাচ জিতেই নিশ্চিত করেছে পরের রাউন্ডে খেলা। আর বাংলাদেশ ১ পয়েন্ট নিয়ে ফিরছে দেশে।
মিয়ানমারের কাছে প্রথম ম্যাচে আত্মঘাতী গোলে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে বিতর্কিত পেনাল্টি গোলে পরাজয় আসে বাংলাদেশের।
এবার গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেয়া বালাদেশ গত গেমসে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছিল।
চুমুকাণ্ডে অবশেষে দায়িত্ব ছাড়তেই হলো স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) প্রেসিডেন্টে লুইস রুবিয়ালেসকে।
স্পেনের বিশ্বকাপ জয়ী নারী দলের ফরোয়ার্ড জেনি হারমোসোকে চুমু দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠেছিল।
এ অবস্থাতেই শেষ পর্যন্ত লুইস রুবিয়ালেস পদ ছেড়েছেন বলে সোমবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
৩৩ বছর বয়সী হারমোসো জানিয়েছেন, এই চুমু দুজনের সম্মতিতে হয়নি। গত মঙ্গলবার এ নিয়ে একটি আইনি অভিযোগও জমা দিয়েছেন তিনি।
রুবিয়ালেস ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পেদ্রো রোচাকে একটি বিবৃতির মাধ্যমে তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
একটি টেলিভিশন শোতে তিনি বলেন, আমি আমার কাজ আর চালিয়ে যেতে পারি না।
৪৬ বছর বয়সী রুবিয়ালেস উয়েফার কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতির পদ থেকেও পদত্যাগ করেছেন।
গত ২০ আগস্ট অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফিফা নারী বিশ্বকাপ শিরোপা জেতে স্পেন। পুরস্কারমঞ্চে স্পেনের মিডফিল্ডার হারমোসো পদক নেয়ার সময় রুবিয়ালেস শুভেচ্ছা বিনিময় তরদে ড়িয়ে তার ঠোঁটে চুমু দেন।
এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ক্ষমা চেয়েছিলেন রুবিয়ালেস। তবে বিষয়টি গড়ায় স্পেনের প্রধানমন্ত্রী থেকে ফিফার দরবার পর্যন্ত। ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো দেশই।
আরও পড়ুন:ফুটবলপ্রেমীদের বহুল প্রতীক্ষিত উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩১ আগস্ট। মোনাকোতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় (বাংলাদেশ সময় রাত দশটায়) ২০২৩-২৪ আসরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
আসন্ন ২০২৩-২৪ মৌসুমের জন্য হওয়া ড্রয়ে শক্তি ও সামর্থ্যের বিচারে সব ধরনের দল নিয়ে হয়েছে বিভিন্ন গ্রুপ। এবার শক্তিশালী দলের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে তুলনামূলক কম শক্তিধর দল। আবার শুধু শক্তিধর দলগুলোকে নিয়ে যেমন হয়েছে গ্রুপ, তেমনই তুলনামূলক দুর্বল দলগুলো নিয়েও রয়েছে গ্রুপ।
ধারাবাহিকভাবে আমরা প্রতিটি গ্রুপ নিয়ে আলোচনা করব। আজ চলুন জেনে নেই গ্রুপ ‘এ’ সম্পর্কে।
গ্রুপ ‘এ’র দল চারটি হচ্ছে- সেভিয়া, আর্সেনাল, পিএসভি আইন্ডহোভেন ও লঁস।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এবারের মৌসুমে সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ গ্রুপগুলোর একটি হচ্ছে গ্রুপ ‘বি’। গ্রুপটিতে গত কয়েক মৌসুম ধরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দাপট দেখানো কোনো দল নেই। আবার শক্তিমত্তায় দলগুলোর বিশাল পার্থক্যও নেই। একটি ভারসাম্যপূর্ণ গ্রুপ এটি। এই গ্রুপে রয়েছে মিকেল আর্তেতার হাত ধরে নতুন যুগে প্রবেশ করা আর্সেনাল, আর্সেন ওয়েঙ্গার যুগের পর যারা ফের ঘরোয়া ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। ‘বি’ গ্রুপের আরেক দল সেভিয়ার বিষয়টি একটু জটিল। প্রতিবছর ইউরোপের মঞ্চে খেলা আন্দালুসিয়ার এ দলটির অবস্থা গত মৌসুমে লা-লিগায় ছিল যাচ্ছেতাই। তবে ইউরোপের মঞ্চে খেলার প্রবল ইচ্ছাশক্তি কাজে লাগিয়ে ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সরাসরি এসেছে গ্রুপপর্বে। ফলে দলটিকে নিয়ে বেশি আশা করা যেমন অনুচিত, তেমনই হতাশ হওয়ারও কিছু নেই।
নেদারল্যান্ডসের লিগ এরিডিভিজি’র এ ক্লাবটি এবার প্রায় প্রতিবার চ্যাম্পেয়ন্স লিগ খেলা আয়াক্সকে ইউরোপা লিগে পাঠিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এসেছে। দলবদলের মৌসুমেও তাদের দল গোছাতে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তারা প্রতিপক্ষকে ভালো চ্যালেঞ্জ দেবে। তবে ফরাসি লিগের ক্লাব লসেঁর পরিস্থিতি ভিন্ন। গত মৌসুমে মাত্র ১ পয়েন্টের ব্যাবধানে লিগে দ্বিতীয় হয়েছে দলটি। তবে ফরাসি লিগ থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো প্রতিযোগিতায় এসে কতটা নিজেদের মেলে ধরতে পারবে সেটি তাদের মনোবল ও খেলোয়াড়ি কৌশলই বলে দেবে।
চলুন জেনে নেই দলের খবর-
আর্সেনাল
আর্সেন ওয়েঙ্গারের বিদায়ের পর আর্সেনালের অবস্থা যে খানিকটা এলামেলো হয়ে যাবে, তা সবাই অনুমান করেছিল। তবে দেড় বছরের ঝড়ের পর আবারও ক্লাবটির ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করে চলেছেন ম্যানেজার মিকেল আর্তেতা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আর্সেনালের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই ফুটবলের মূল ধারায় ফিরতে শুরু করেছে ক্লাবটি। কোভিড পরবর্তী সময় থেকেই দল গোছাতে ব্যস্ত স্প্যানিশ এ ম্যানেজার। এক্ষেত্রে আর্সেনালের অ্যাকাডেমির তরুণদের সুযোগ দিয়ে তারুণ্যনির্ভর দল গঠন করেও যে ভালো প্রতিযোগিতা করা যায়, তা প্রমাণ করে চারদিক থেকে প্রসংশা কুড়িয়েছেন তিনি। গত মৌসুমে ইংলিশ লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে হতেও শেষে এসে তরী ডোবে আর্সেনালের। ফলে সদ্য শেষ হওয়া দলবদলের মৌসুমে তাদের ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো।
ওয়েস্ট হ্যাম থেকে ক্লাব রেকর্ড ১১৬ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ইংল্যান্ডের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ডেকলান রাইসকে কিনে নেয় আর্সেনাল। এরপর ৭৫ মিলিয়ন ইউরোতে চেলসি থেকে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার কাম উইংগার কাই হাভার্টসকে কেনে তারা। এছাড়া আয়াক্স থেকে ৪০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে সেন্টার ব্যাক ইউরোন টিম্বার ও ব্রেন্টফোর্ডের স্প্যানিশ গোলকিপার ডাভিদ রায়াকে ধারে দলে টেনেছেন আর্তেতা। এদের বয়স যথাক্রমে ২৪, ২৪, ২২ ও ২৭ বছর। এদের সঙ্গে বুকায়ো সাকা, এডি এনকিয়েতা, মার্টিন ওডেগার্ডরা তো আগে থেকে আছে। আবার গ্যাব্রিয়েল জেসুস, জর্গিনিয়ো, ওলেকসেন্ডার জিনচেঙ্কো, থমাস পার্টি, নিকোলাস পেপে, লেয়ান্দ্রো ত্রোসার মতো অভিজ্ঞ ফুটবলারও রয়েছে। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রতিযোগিতার জন্য প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের শক্তিতে নির্ভর করে আর্সেনাল যে এবার লম্বা রেসের ঘোড়া, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সেভিয়া
ইউরোপিয়ান ফুটবলের মঞ্চে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সামর্থ্যের তেমন প্রমাণ দিতে না পারলেও ইউরোপা লিগের একচ্ছত্র অধিপতি সেভিয়া। রেকর্ড সাতবারের চ্যাম্পিয়ন স্পেনের আন্দালুসিয়ার এ ক্লাবটি। ইউরোপা লিগের জোরেই এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এসেছে সেভিয়া। তবে অন্যান্যবারের তুলনায় এবার গ্রুপপর্বে দলটির ভালো করার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনোর সৌদি প্রো লিগে চলে যাওয়াটা সেভিয়ার জন্য একটি বড় ধাক্কা। তবে লিগে নতুন মৌসুম ভালোই সামলাচ্ছেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক মার্কো দিমিত্রোভিচ। তবে বরাবরের মতো অভিজ্ঞতার ওপরই ভরসা রেখেছেন দলটির ম্যানেজার হোসে লুইস মেন্দিলিবার। ইভান রাকিতিচ, ইউসুফ এন-নেসিরি, পাপু গোমেজ, হেসুস নাভাস, মার্কোস আকুনিয়া ও রাফা মিয়ারদের সঙ্গে সদ্য সমাপ্ত দলবদলের মৌসুমে যুক্ত হয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড মারিয়ানো দিয়াস, রেনের সেন্টার ব্যাক লুইস বাদে, ফ্রাঙ্কফুর্টের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ডাইব্রিল সো, হার্থা বার্লিনের দোদি লুকেবাকিও। নতুন এ নামগুলো সেভিয়ার অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে দলে কতটা ভারসাম্য আনতে পারে, তার ওপর নির্ভর করছে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তাদের সাফল্যযাত্রা।
পিএসভি আইন্ডহোভেন
১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে ইউরোপিয়ান কাপ (বর্তমান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ) জেতা পিএসভি আইন্ডহোভেন একবিংশ শতাব্দীতে এ প্রতিযোগিতায় তেমন কোনো সাফল্যের সাক্ষর রাখতে পারেনি। এ সময়ে তাদের সবচেয়ে সেরা পারফরম্যান্স ছিল ২০০৪-০৫ সালে সেমি ফাইনাল ও ২০০৬-০৭ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা।
সদ্যসমাপ্ত দলবদলের মৌসুমে আক্রমণে শক্তি বাড়িয়েছে আইন্ডহোভেন। নাপোলি থেকে ১৫ মিলিয়নে উইঙ্গার হার্ভিং লোসানোকে দলে টেনেছে তারা। এছাড়া ক্লাব ব্রুজের উইঙ্গার নোয়া লাং, আউগসবুর্গের আমেরিকান ফরোয়ার্ড রিকার্ডো পেপি, বায়ার্ন মিউনিখের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মালিক টিলমানকে দলে ভিড়িয়েছে তারা। এছাড়া বার্সেলোনার উইং ব্যাক সার্জিনিও দেস্ত, সাউদহ্যাম্পটনের সেন্টার ব্যাক আরমেলা বেল্লা-কটচাপরাও দলটির রক্ষণের ভিত মজবুত করবে।
নতুনদের সঙ্গে বিদ্যমান খেলোয়াড়দের মিশেলে একটি শক্তিশালী দল গঠনের চেষ্টা করেছেন দলটির ম্যানেজার পিটার বশ। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বাকি দলগুলোকে পিএসভি যে এবার সমান টক্কর দেবে, সেটি মাথায় নিয়েই তাদের বিপক্ষে খেলতে নামবে প্রতিপক্ষরা।
লসঁ
ফ্রান্সের এ ক্লাবটি যেন লুকোচুরি খেলতে ব্যস্ত। ঘরোয়া লিগ হোক, কিংবা ইউরোপের আসর, একবার ভালো পারফরম করল, তো পরেরবার হাওয়া। ফলে কোন কৌশল অবলম্বন করে খেলবে দলটি বা এবার তারা ঠিক কতটা শক্তি প্রদর্শন করতে পারবে, সেই হিসাব কষতে ঘাম ছুটবে প্রতিপক্ষ দলগুলোর।
৩০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে মতঁপেলিয়ে’র ফরোয়ার্ড এলিয়ে ওয়াহিকে দলে টেনেছে লসঁ। এছাড়া অ্যাঞ্জেলো ফুলগিনি ও ওস্কার কর্তেস নামের দুই উইঙ্গারও কিনেছে ক্লাবটি। তাছাড়া মাঝমাঠ ও রক্ষণেও শক্তি বাড়িয়েছে তারা। অবশ্য সাড়ে ৩৮ মিলিয়ন ইউরোরর বিনিময়ে সেন্টার ফরোয়ার্ড লইস ওপেন্দাকে লাইপসিগের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে লসঁ। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার সেসকো ফোফানাও সৌদির উদ্দেশে ইউরোপ ছেড়েছেন। ফলে দলের ভারসাম্য কতটা রয়েছে, তা বুঝতে লিগের কয়েকটি ম্যাচ দেখা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
ট্যাকটিকাল বিশ্লেষণ
এই গ্রুপটি থেকে আর্সেনালই একমাত্র দল যারা সবগুলো ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে যেতে চাইবে। অন্তত মিকেল আর্তেতার সাম্প্রতিক সময়ের আক্রমণাত্মক ফুটবল সে কথাই বলে। প্রীতি ম্যাচেও বার্সেলোনার সঙ্গে তারা যে প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাব দেখিয়েছে, তাতে মূল পর্বের খেলায় তাদের সে মনোভাব আরও দৃঢ় হবে বলে ধরে নেয়া যায়। তাদের দলবদলের পরিস্থিতিও সেই বিষয়টিকে সমর্থন দেয়।
এক্ষেত্রে রক্ষণাত্মক কৌশল অবলম্বন করতে পারে সেভিয়া। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পরের রাউন্ডে যাওয়ার চেষ্টা অবশ্যই থাকবে তাদের। তবে পরের রাউন্ডে বেশি ভালো করতে না পারলে পয়েন্ট টেবিলের তিনে থাকার চেষ্টা করতে পারেন হোসে লুইস মেন্দিলিবার। কারণ তিনে থেকে গ্রুপ শেষ করতে পারলেই ইউরোপা লিগে অবনমন। আর ইউরোপা লিগ জিততে পারলে সম্মানের পাশাপাশি আয়ও হবে বেশি। তাছাড়া ইউরোপা লিগ নিয়ে সেভিয়ার একটি অন্যরকেম অনুভূতি তো থাকেই সবসময়।
তবে আক্রমণাত্ম ফুটবল খেলতে পারে পিএসভি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের যতটা সম্ভব উচ্চতায় ওঠানোর চেষ্টা থাকবে দলটির। সেভাবেই সব বিভাগে শক্তি বাড়িয়েছে তারা। এক্ষেত্রে সেভিয়ার রক্ষণাত্মক কৌশলকে কাজে লাগাতে পারে তারা। আর্সেনালের সঙ্গে অন্তত ড্র করে সেভিয়া ও লসঁকে নিজেদের মাঠে হারাতে চাইবে পিএসভি। আর ওই দুই মাঠে ড্র করে ফিরতে পারলেও পরের রাউন্ডে চলে যেতে পারে তারা। না হলেও অন্তত তিনে থেকে ইউরোপা লিগ খেলার সুযোগ পাবে পিটার বশের শিষ্যরা।
লসঁ-এর শক্তিমত্তার বিষয়টি এখনও অস্পষ্ট। তবে পরের রাউন্ডে যাওয়ার চেষ্টা তাদেরও থাকবে। এক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে চাইবে ফরাসি এ দলটি। আর নিজেদের দর্শকের সামনে সবগুলো ম্যাচ জেতার চেষ্টা করবে। সেক্ষেত্রে অন্য যেকোনো এক বা দুই দলকে টার্গেট করে তাদের বিপক্ষে ৬ পয়েন্ট করে অর্জনের কৌশলও আঁটতে পারেন দলটির ম্যানেজার ফঙ্ক হেইজ। সফল হলে তাদের শেষ ষোলোতে ওঠা আটকায় কে!
প্রেডিকশন
ক্রমিক | দল | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | পয়েন্ট |
১ | আর্সেনাল | ৬ | ৩ | ২ | ১ | ১১ |
২ | সেভিয়া | ৬ | ২ | ৩ | ১ | ৯ |
৩ | পিএসভি আইন্ডহোভেন | ৬ | ২ | ১ | ৩ | ৭ |
৪ | লসঁ | ৬ | ১ | ৩ | ২ | ৬ |
২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত একটায় প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে আর্সেনাল-পিএসভি ও সেভিয়া-লসঁ। গ্রুপ পর্বের খেলা চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে নকআউট পর্বের খেলা। এ মৌসুমের ফাইনাল ম্যাচটি হবে আগামী বছরের ১ জুন। এবারের ফাইনালের জন্য লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামকে নির্ধারণ করেছে উয়েফা।
বর্তমান ফরম্যাটে ৩২ দল নিয়ে প্রতিযোগিতার এটিই শেষ আসর। আগামী মৌসুম থেকে নতুন ফরম্যাটে ভিন্ন আঙ্গিকে চ্যাম্পিয়ান্স লিগের আয়োজন করবে উয়েফা। ৩২ থেকে বেড়ে হবে ৩৬টি দল নিয়ে হবে আগামী মৌসুমের আসর।
ফুটবলপ্রেমীদের বহুল প্রতীক্ষিত উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩১ আগস্ট। মোনাকোতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় (বাংলাদেশ সময় রাত দশটায়) ২০২৩-২৪ আসরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
আসন্ন ২০২৩-২৪ মৌসুমের জন্য হওয়া ড্রয়ে শক্তি ও সামর্থ্যের বিচারে সব ধরনের দল নিয়ে হয়েছে বিভিন্ন গ্রুপ। এবার শক্তিশালী দলের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে তুলনামূলক কম শক্তিধর দল। আবার শুধু শক্তিধর দলগুলোকে নিয়ে যেমন হয়েছে গ্রুপ, তেমনই তুলনামূলক দুর্বল দলগুলো নিয়েও রয়েছে গ্রুপ।
ধারাবাহিকভাবে আমরা প্রতিটি গ্রুপ নিয়ে আলোচনা করব। আজ চলুন জেনে নেই গ্রুপ ‘এ’ সম্পর্কে।
গ্রুপ ‘এ’র দল চারটি হচ্ছে- বায়ার্ন মিউনিখ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, এফসি কোপেনহেগেন ও গালাতেসারাই।
২০২৩-২৪ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ ‘এ’ নিয়ে চর্চা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে এক গ্রুপে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ড্র হওয়ায় হচ্ছে আলোচনা। কারণ চলতি দলবদলের মৌসুমে টটেনহ্যাম থেকে হ্যারি কেইনকে দলে টানার চেষ্টা করেছিল এরিক টেন হাগের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কিন্তু তাদের সে চেষ্টা সফল হয়নি। কেইন পাড়ি জমিয়েছেন জার্মানিতে। একই গ্রুপে দুই দল পড়ায় তাই হ্যারি কেইনের বায়ার্নের মোকাবিলা করতে হবে ইউনাইটেডের।
বায়ার্ন মিউনিখ
জার্মান লিগে প্রতি বছর আধিপত্য বিস্তার করা বায়ার্ন মিউনিখ ইউরোপ সেরার মঞ্চেও কম যায় না। ২০১০-১১ মৌসুমের পর থেকে মাত্র একবার শেষ ষোল পার করতে ব্যর্থ হয়েছে জার্মানির এ ক্লাবটি। এর মধ্যে তিনবার ফাইনালে উঠে দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। তাছাড়া প্রতিবছরই ফাইনালসে অংশ নিতে দেখা যায় তাদের।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ও এসি মিলানের পরই লিভারপুলের সঙ্গে যৌথভাবে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন। তবে মূল একাদশের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় চলে যাওয়ায় এবারের আসরে তারা ঠিক কেমন পারফরম করবে, তা নিয়ে ভক্তদের থাকতে হবে অপেক্ষায়। চলতি গ্রীষ্মকালীন দলবদলে দলটির প্রতিষ্ঠিত দুই সেন্টার ব্যাক লুকা এরনান্দেস ও বেনিয়ামিন পাভার্দ বায়ার্ন ছেড়ে নাম লিখিয়েছেন যথাক্রমে ফ্রান্সের পিএসজি ও ইতালির ইন্টার মিলানে। ফরোয়ার্ড সাদিও মানে সৌদির ক্লাব আল-নাসর এবং মিডফিল্ডার মার্সেল জাবিৎসার গিয়েছেন বায়ার্নের ঘরোয়া প্রতিপক্ষ বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে। মানুয়েল নয়ার ইনজুরিতে পড়ার পর গত মৌসুমে দলে ভেড়ানো গোলরক্ষক ইয়ান জমারও বায়ার্ন ছেড়ে ইন্টার মিলানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ফলে দলের শক্তি ও ভাসাম্য যে খানিকটা কমে গিয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
অবশ্য দলে শক্তিও বাড়িয়েছে তারা। ইংলিশ ফুটবলের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড হ্যারি কেইনকে রেকর্ড ১০০ মিলিয়নে ইউরোর বিনিময়ে দলে ভিড়িয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। তাছাড়া ৫০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে নাপোলির দক্ষিণ কোরিয়ান সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার মিন-জায়ে কিমকে দলে টেনেছে তারা। এছাড়া ফ্রি ট্রান্সফারে আরবি লাইপসিজ থেকে বায়ার্নে এসেছে সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার কনরাড লাইমার ও ডর্টমুন্ড থেকে লেফট ব্যাক রাফায়েল গেরেইরো।
তবে নতুন খেলোয়াড় এসে নতুন পরিবেশ, নতুন ম্যানেজারের খেলোয়াড়ি দর্শনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। ফলে কতটা তাড়াতাড়ি বায়ার্ন ম্যানেজার টমাস টুখেল দলে ভারসাম্য এনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের শক্তিমত্তার প্রমাণ দিতে পারবে, সেটা দেখতে অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
২০০৭-০৮ মৌসুমে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সেবার চেলসির সঙ্গে ফাইনালে ১-১ গোলে ড্রয়ের পর টাই-ব্রেকারে ৬-৫ গোলে জিতে ইউরোপ সেরার মুকুট পরে স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের শিষ্যরা। তারপর থেকেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ধুঁকছে দলটি। তার পর ২০০৮-০৯ ও ২০১০-১১ মৌসুমে ফাইনালে উঠলেও দুবারই বার্সেলোনার কাছে হেরে যায় দলটি। তখন থেকে ঘরোয়া লিগসহ ইউরোপিয়ান কম্পিটিশনে খুব বেশি ভালো করতে পারেনি ম্যানচেস্টারের এ ক্লাবটি। গতবার তো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগই পায়নি তারা। তার আগেরবার শেষ ষোলোয় আতলেতিকো মাদ্রিদের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় রেড ডেভিলসদের। ২০২০-২১ মৌসুমে গ্রুপ পর্বই পার হতে পারেনি তারা।
অবশ্য গত মৌসুমে এরিক টেন হাগ দলটির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই নতুন করে দল গোছানোর চেষ্টা করছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। নতুন খেলোয়াড় দলে টানা ও কোচের পরিকল্পনায় না থাকা খেলোয়াড়দের বিক্রি করে দিয়ে দলবদলের বাজারে তারা বেশ সাড়া ফেলেছে গত দুই মৌসুম ধরে।
চলতি মৌসুমে ক্লাবের প্রথম দুই গোলরক্ষক দাভিদ দে হেয়া ও ডিন হেন্ডারসনকে বিদায় দিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তাছাড়া ফরোয়ার্ড ভুট ভেগহোর্স্ট, বায়ার্ন থেকে ধারে আনা মিডফিল্ডার মার্সেল জাবিৎসার, ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফ্রেদ, ডিফেন্ডার অ্যালেক্স টেলেস ও ব্রেন্ডন উইলিয়ামসকে ছেড়ে দিয়েছেন টেন হাগ।
পরিবর্তে হ্যারি কেইনকে দলে ভেড়াতে ব্যর্থ হয়ে কিনেছেস আতালান্তার ফরোয়ার্ড রাসমুস হইলুনকে। তাছাড়া ইন্টার মিলানের গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা, চেলসির অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ম্যাসন মাউন্টের মতো খেলোয়াড়রা ইতোমধ্যে ইউনাইটেডের লাল জার্সি পরে খেলা শুরু করেছেন। দলবদলের শেষ সময়ে মরোক্কান মিডফিল্ডার সোফিয়ান আমরাবাট এবং সেভিয়া থেকে উইং ব্যাক সের্হিও রেগিলনকেও দলে টানার চেষ্টা করছে বলে জানা যাচ্ছে।
টেন হাগের নেতৃত্বে গত মৌসুম থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েছে ইউনাইটেড। গত মৌসুমে রক্ষণে শক্তি বাড়ানোর পর এ মৌসুমে আক্রমণভাগ ও মিডফিল্ডের প্রতি নজর দিয়েছেন দলটির কোচ। নতুন মৌসুমের শুরুতে প্রিমিয়ার লিগে এর ফলও দেখা যাচ্ছে তাদের পারফরম্যান্সে। নতুন করে ফিরে আসা ইউনাইটেড ইউরোপ সেরার মঞ্চে কতটা ভালো করে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এফসি কোপেনহেগেন
গত মৌসুমে লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ালিফাইয়ার খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ডেনমার্কের এ ক্লাবটি। ১৯৯২ সালে আত্মপ্রকাশের পর ইউরোপের মঞ্চে প্রায় নিয়মিতই বলা চলে কোপেনহেগেনকে।
১৯৯৩-৯৩ মৌসুমে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও এ পর্যন্ত তারা ছয়বার ইউরোপ সেরার লিগে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে। তবে তাদের সেরা পারফরম্যান্স ছিল ২০১০-১১ মৌসুমে। সেবার শেষ ষোলোতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে দলটি। তবে চেলসির কাছে হেরে শেষ ষোলো থেকেই বিদায় নিতে হয় তাদের। এছাড়া বাকি মৌসুমগুলোতে গ্রুপ পর্বে অংশগ্রহণ করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের।
চলতি মৌসুমে ঘরোয়া লিগে ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে লিগ টেবিলের দুইয়ে রয়েছে কোপেনহেগেন। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তাদের বায়ার্ন, ইউনাইটেডর মতো বড় দলের বিপক্ষে ভালো করার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এক্ষেত্রে পয়েন্ট টেবিলের তিনে অবস্থান করাই হতে পারে তাদের লক্ষ্য। তাহলে ইউরোপা লিগে অবনমন হলেও ইউরোপিয়ান কোনো আসরে টিকে থাকার সম্ভাবনা থকবে ফুটবল ক্লাব কোপেনহেগেনের।
গালাতেসারাই
দলবদলের এ মৌসুমে দলের শক্তিমত্তা বাড়াতে বেশ ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে গালাতেসারাইকে। পিএসজির আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মাউরো ইকার্দিকে ১০ মিলিয়ন ইউরোরর বিনিময়ে ও চেলসি থেকে ধারে মরক্কোর অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হাকিম জিয়েচকে দলে ভিড়িয়ে আলোচনায় উঠে আসে তুরস্কের এ ক্লাবটি। এ ছাড়া ক্রিস্টাল প্যালেসের উইঙ্গার উইলফ্রেড জাহা ও আরবি লাইপসিগের লেফট ব্যাক আঞ্জেলিনিওকে চলতি দলবদলে দলে টেনেছে তারা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জনের পরই যে তারা প্রতিপক্ষকে টক্কর দিতে দলের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করেছে, একথা স্পষ্ট। ইউরোপের অন্যতম দুই পরাশক্তি বায়ার্ন ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে দিলেও গালাতেসারাইকে নিয়ে এ মৌসুমে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ট্যাকটিকাল বিশ্লেষণ
নিজের মাঠে তিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই জিতে পূর্ণ পয়েন্ট অর্জন করতে চাইবে বায়ার্ন মিউনিখ। সেইসঙ্গে প্রতিপক্ষের মাঠেও সবগুলো ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য থাকবে টমাস টুখেলের।
তবে এরিক টেন হাগ এক্ষেত্রে কিছুটা রক্ষণশীল কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। নিজেদের মাঠে ও তুলনামূলক দুর্বল দুই প্রতিপক্ষের মাঠে জয়ের পরিকল্পনা করলেও বায়ার্নের মাঠ থেকে অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে আসতে চাইবেন তিনি। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অবলম্বন করতে পারেন ভিন্ন কৌশল। তুলনামূলক দুর্বল দলগুলোর বিপক্ষে বেশি গোলের ব্যবধানে জেতার লক্ষ্য থাকবে তার। তাহলে বায়ার্নের সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে গ্রুপ পর্ব শেষ করার সম্ভাবনা থাকবে তাদের।
গালাতেসারাইয়ের কৌশল নিয়ে খানিকটা ধন্ধে থাকবে সবাই। প্রথমত তারা অন্তত দ্বিতীয় হয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়ার চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে বড় দুই দলের যেকোনো একটিকে টার্গেট করতে পারেন ক্লাবটির কোচ ওকান বুরুক। নিজেদের মাঠে বায়ার্ন কিংবা ইউনাইটেডের অন্তত একটি দলের সঙ্গে জিততে পারলে ওই দলের মাঠে গিয়ে অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে চাইবেন তিনি। অর্থাৎ নিজেদের সমর্থকের সামনে সব দলের বিপক্ষেই জয় এবং বড় দুই দলের মাঠে গিয়ে অন্তত ড্র এবং কোপেনহেগেনের বিপক্ষে ৬ পয়েন্ট আদায় করতে পারলে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে থাকতে পারে তারা। আর এ কাজে সফল হতে পারলে পরের রাউন্ডে না পৌঁছাতে পারলেও তিনে থেকে ইউরোপা লিগে প্রতিযোগিতা করাটা তাদের জন্য অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।
তবে কোপেনহেগেনের চিন্তাটা থাকবে অন্য জায়গাতে। বড় দুই দলের বিপক্ষে অন্তত ড্র করতে চাইবে তারা। আর গালাতেসারাইকে টার্গেট করতে পারে ক্লাবটির কোচ। তুরস্কের ক্লাবটির সঙ্গে দুই লেগেই জিততে পারলে অন্তত ইউরোপা লিগে খেলার সুযোগ পাবে দলটি। তবে বড় দুই দলের বিপক্ষে চমক দেখাতে পারলে পরের রাউন্ডেও উঠে যেতে পারে এ গ্রুপের সবচেয়ে আন্ডারডগ এ দলটি।
প্রেডিকশন
ক্রমিক | দল | খেলা | জয় | ড্র | হার | পয়েন্ট |
১ | বায়ার্ন মিউনিখ | ৬ | ৫ | ১ | ০ | ১৬ |
২ | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | ৬ | ৩ | ২ | ১ | ১১ |
৩ | গালাতেসারাই | ৬ | ২ | ১ | ৩ | ৭ |
৪ | কোপেনহেগেন | ৬ | ০ | ০ | ৬ | ০ |
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) গ্রুপ পর্বের সময়সূচি জানা যাবে। আর গ্রুপ পর্বের খেলা শুরু হবে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর, যা চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে নকআউট পর্বের খেলা। এ মৌসুমের ফাইনাল ম্যাচটি হবে আগামী বছরের ১ জুন। এবারের ফাইনালের জন্য লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামকে নির্ধারণ করেছে উয়েফা।
বর্তমান ফরম্যাটে ৩২ দল নিয়ে প্রতিযোগিতার এটিই শেষ আসর। আগামী মৌসুম থেকে নতুন ফরম্যাটে ভিন্ন আঙ্গিকে চ্যাম্পিয়ান্স লিগের আয়োজন করবে উয়েফা। ৩২ থেকে বেড়ে হবে ৩৬টি দল নিয়ে হবে আগামী মৌসুমের আসর।
আরও পড়ুন:অনুষ্ঠিত হয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের বহুল প্রতীক্ষিত উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র। আসন্ন ২০২৩-২৪ মৌসুমের জন্য হওয়া এ ড্রয়ে স্পেনের দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা পেয়েছে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ।
তবে এবার এক গ্রুপে পড়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও বায়ার্ন মিউনিখ। এবারের ড্রয়ে ‘মৃত্যুকূপ’ খ্যাত সবচেয়ে কঠিন গ্রুপ হয়েছে গ্রুপ ‘এফ’। পিএসজির সঙ্গে এ গ্রুপে পড়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, এসি মিলান ও ইংলিশ ফুটবলে নতুন শক্তিধর নিউক্যাসল ইউনাইটেড।
মোনাকোতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় (বাংলাদেশ সময় রাত দশটায়) ২০২৩-২৪ আসরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
এ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপপর্বের ড্রয়ে সর্বোপরি ভারসাম্য রয়েছে বলা চলে। এবার শক্তিশালী দলের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে তুলনামূলক কম শক্তিধর দল; শুধু শক্তিধর দলগুলোকে নিয়ে যেমন হয়েছে গ্রুপ, তেমনই তুলনামূলক দুর্বল দলগুলো নিয়েও রয়েছে গ্রুপ।
গ্রুপ এ
আসন্ন মৌসুমে গ্রুপ ‘এ’-র সমীকরণটি বেশ মজার। জার্মানির ঘরোয়া লিগ চ্যাম্পিয়ন ও ইউরোপ সেরার মঞ্চে বারবার দাপট দেখানো বায়ার্ন মিউনিখ এবার পেয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বেশ কয়েক বছর ধরে ধুঁকতে থাকার পর এরিক টেন হাগের নেতৃত্বে সবশেষ মৌসুমে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দেয়। চলতি মৌসুমেও তারা ভালো করছে। তবে ডেনিশ ক্লাব এফসি কোপেনহেগেন ও তুরস্কের গালাতেসারাইয়ের মতো তুলনামূলক দুর্বল দলগুলোরও চমক দেখানোর সুযোগ থাকবে এবার।
গ্রুপ বি
গ্রুপ ‘বি’কে বলা চলে তুলনামূলক দুর্বলদের গ্রুপ। গতবছর লা লিগায় ১২তম অবস্থানে থেকে লিগ শেষ করা সেভিয়ার এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আসাটা দুর্দান্ত বলা চলে। লিগে ১২তম হলেও ইউরোপা লিগ জিতে সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে আন্দালুসিয়ার এ ক্লাবটি। ‘বি’ গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ সাম্প্রতিক সময়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের রাইজিং স্টার আর্সেনাল। নেদারল্যান্ডের পিএসভি আইন্ডহোভেন এবং ফরাসি লিগে প্রতিবছরই পিএসজিকে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেয়া লঁস। ফলে সবগুলো দল শক্তিমত্তায় খুব বেশি তারতম্য না থাকায় এ গ্রুপ থেকে যে কোনো দলের সুযোগ থাকবে গ্রুপপর্ব পার করে শেষ ষোলতে জায়গা করে নেয়ার।
গ্রুপ সি
৩৩ বছর পর স্কুদেত্তো জিতে স্বপ্নের মধ্যে থাকা নাপোলির জন্য গ্রুপ ‘সি’তে পড়াটা দুঃস্বপ্ন বলা যেতে পারে। কেননা এই গ্রুপে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদ। শুধু তাই নয়, দুই মৌসুম আগে বুন্দেসলিগায় উঠে আসা উনিয়ন বার্লিনও রয়েছে এ গ্রুপে। বুন্দেসলিগায় ফিরেই দাপট দেখাতে শুরু করেছে তারা। ফলস্বরূপ গত মৌসুমে প্রথম চারে থেকে এ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নিয়েছে বার্লিনের এ ক্লাবটি। এছাড়া পর্তুগিজ লিগে গত কয়েক মৌসুম ধরে ভালো পারফরম করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে-অফে জায়গা করে নেয় এফসি ব্রাহা। প্লে-অফ পর্ব পার করে মূল পর্বে আসা এ দলটিও মুখিয়ে থাকবে ইউরোপ সেরার মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরতে।
গ্রুপ ডি
এবারের গ্রুপ ‘ডি’ও শক্তির বিচারে বেশ ভারসাম্যের বলা চলে। এই গ্রুপে পর্তুগিজ লিগ চ্যাম্পিয়ন বেনফিকার সঙ্গে রয়েছে ইতালিয়ান সেরি-আ’র গত মৌসুমের দ্বিতীয় হওয়া সিমিওনে ইনজাগির ইন্টার মিলান। গতবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপপর্বে শুধু বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরেছিল তারা। বার্সেলোনাকে কাঁদিয়ে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় করে ইউরোপা লিগ খেলতে বাধ্য করা ইন্টারের কথা ইউরোপিয়ান ফুটবলের ভক্তেদের নিশ্চয়ই মনে আছে। তাদের অপর দুই সঙ্গী অস্ট্রিয়ান বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন রেড বুল জালসবুর্গ ও স্পেনের রিয়াল সোসিয়েদাদ। ফুটবল কোচিংয়ের অন্যতম সেরা মস্তিষ্ক ইমানোল আলগুয়াচির দলের সামর্থ্য কতটা, স্প্যানিশ ফুটবল দেখা প্রত্যেকেই তা জানেন। শুধু তাই নয়, ইমানোলের কৌশলকে সমীহ করেন না, এমন ফুটবল ম্যানেজার স্পেনে নেই বললেই চলে। ফলে এ গ্রুপে যে একের পরেএক চমক দেখা যাবে, তা আগে সহজেই অনুমান করা যায়।
গ্রুপ ই
গ্রুপ ‘ই’ও বেশ মজার হয়েছে এবার। দিয়েগো সিমিওনের আতলেতিকো মাদ্রিদের এবারের সঙ্গী ফেয়েনুর্ড, লাৎসিও এবং সেল্টিক। চিরো ইম্মোবিলের মতো তারকাসমৃদ্ধ মাউরিসিও সারির লাৎসিওই যে আতলেতিকো মাদ্রিদকে এ গ্রুপ থেকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দিবে, সেটা বোঝা যাচ্ছে। তাছাড়া স্কটল্যান্ডের সেল্টিক পার্কে গিয়ে জয় নিয়ে আসাটা যে ইউরোপের যেকোনো বড় দলেরই দুশ্চিন্তার বিষয়, তা ইউরোপিয়ান ফুটবলপ্রেমীদের জানার কথা। অন্যদিকে আয়াক্স, পিএসভি আইন্ডহোভেনের মতো দলকে পেছনে ফেলে গত মৌসুমে ডাচ লিগ চ্যাম্পিয়ন ফেয়েনুর্ডও কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না।
গ্রুপ এফ
এই গ্রুপটিই এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ‘গ্রুপ অব ডেথ’ বা ‘মৃত্যুকূপ’। বারবার লিগ ১ চ্যাম্পিয়ন পিএসজির প্রধান উদ্দেশ্যই মূলত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা। এর জন্য গত কয়েক বছর ধরে তারা চেষ্টাও কম করছে না। কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে নামী-দামী সব তারকা দিয়ে বারবার সাজিয়েছে দল। কিন্তু প্রতিবারই তাদের ব্যর্থ হতে হয়েছে। এবারও সবচেয়ে শক্ত গ্রুপে পড়েছে লুইস এনরিকের দায়িত্ব নেয়া পিএসজি। বুন্দেসলিগার বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, স্তেফানো পিওলির এসি মিলান বা সৌদির টাকায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে পুনরুত্থান হওয়া এডি হাওয়ির নিউক্যাসল ইউনাইটেড- কেউই কাউকে সুচাগ্র মেদিনী ছাড় দেবে না। এই গ্রুপে ঠিক কোন দুই দল পরের রাউন্ডে যাবে তা অন্তত তিন-চার লেগের খেলা শেষ হওয়ার পরও বলা কঠিন হবে।
গ্রুপ জি
গতবারের চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি ‘জি’ গ্রুপে এবার তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ পেয়েছে। তাদের মূল মাথাব্যথার কারণ হতে পারে রেজেন বলস্পর্ট (আরবি) লাইপসিগ। এছাড়া রেড স্টার বেলগ্রেড ও ইয়াং বয়েজের মতো ক্লাবগুলো বাকি দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে শক্তিমত্তায় বেশ খানিকটা পিছিয়ে। ফলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন কে হবে এবং পয়েন্ট টেবিলের তিনে থেকে কে ইউরোপা লিগে খেলবে, তা নিয়ে দেখা যাবে লড়াই।
গ্রুপ এইচ
গত কয়েক মৌসুম ধরে কঠিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে গ্রুপপর্বে খেলেলেও এবার খানিকটা স্বস্তি পেয়েছে বার্সেলোনার সমর্থকরা। গতবারের মতো বায়ার্ন মিউনিখ, ইন্টার মিলানের মতো শক্তিশালী দলকে এবার গ্রুপপর্বেই মোকাবিলা করতে হচ্ছে না তাদের। এইচ গ্রুপে এবার তাদের প্রতিপক্ষ পর্তুগালের পোর্তো, ইউক্রেনের শাখতার দোনেৎস্ক এবং বেলজিয়ামের ক্লাব রয়াল আন্টওয়ের্প। ফলে পোর্তোর সঙ্গে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলেও বাকি দুই দলের সঙ্গে তাদের শক্ত লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা কম।
গ্রুপপর্বের খেলা শুরু হবে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর, যা চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে নকআউট পর্বের খেলা। এ মৌসুমের ফাইনাল ম্যাচটি হবে আগামী বছরের ১ জুন। এবারের ফাইনালের জন্য লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামকে নির্ধারণ করেছে উয়েফা।
বর্তমান ফরম্যাটে ৩২ দল নিয়ে প্রতিযোগিতার এটিই শেষ আসর। আগামী মৌসুম থেকে নতুন ফরম্যাটে ভিন্ন আঙ্গিকে চ্যাম্পিয়ান্স লিগের আয়োজন করবে উয়েফা। ৩২ থেকে বেড়ে হবে ৩৬টি দল নিয়ে হবে আগামী মৌসুমের আসর।
আরও পড়ুন:নারী ফুটবলারকে চুমু দেয়া নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে স্পেনসহ ইউরোপের ফুটবল অঙ্গন উত্তপ্ত। অবশেষে সেই উত্তেজনায় পড়ল জল। নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমেই শেষ পর্যন্ত স্পেনের ক্রিড়াঙ্গন স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হলো।
বিশ্বকাপের ফাইনালে পুরস্কার বিতরণের সময়ে নারী ফুটবলার হেনিফার এরমোসোর ঠোঁটে চুমু দেয়ার দায়ে রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) সভাপতি লুইস রুবিয়ালেসকে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফুটবলের কোনো কার্যক্রমে তিনি অংশ নিতে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি এরমোসোর সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগের চেষ্টাও করতে পারবেন না তিনি।
শনিবার এক বিবৃতিতে রুবিয়ালেসকে সব ধরনের ফুটবল থেকে সাময়িক নিষিদ্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। প্রাথমিকভাবে ৯০ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তাকে। এই সময়ে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আজ (আমরা) জনাব লুইস রুবিয়ালেসকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফুটবল সম্পর্কিত সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে ফিফা শাস্তিমূলক কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেয়ার আগে শুক্রবার বিশেষ সভা ডেকেছিল স্পেনের ফুটবল ফেডারেশন। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, সেখানে পদত্যাগ করবেন রুবিয়ালেস। কিন্তু সভায় নিজের সাফাই গেয়ে রুবিয়ালেস জানিয়ে দেন, তিনি পদত্যাগ করছেন না। এর জেরে স্পেনের নারী বিশ্বকাপজয়ী ২৩ জনসহ ৮০ জন খেলোয়াড় ধর্মঘটের ডাক দিয়ে জানান, ‘নেতৃত্ব’ পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত তারা স্পেনের হয়ে খেলবেন না।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে, যখন স্পেন ফুটবল ফেডারেশন ভুক্তভোগী হেনি এরমোসোর বক্তব্য মিথ্যা দাবি করে আইনি ব্যবস্থার হুমকি দেয়।
এর আগে সিডনিতে অনুষ্ঠিত নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে দলটির ফুটবলার এরমোসোর ঠোঁটে আচমকা চুমু দিয়ে বসেন রুবিয়ালেস। বিতর্কিত এই কাণ্ড ঘটানোর পর থেকে তোপের মুখে রয়েছেন তিনি। চুমু বিতর্কে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হলেও রুবিয়ালেস নিজের অবস্থানে ছিলেন অনড়। সমালোচনাকারীদের ‘ইডিয়ট’ বলে উড়িয়ে দিলেও পরে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।
তবে রুবিয়ালেসের এমন বেগতিক অবস্থায় তার পাশেই দাঁড়ায় স্পেনের ফুটবল ফেডারেশন। সংস্থাটি প্রমাণ করতে চাইছে, এরমোসোর বলা ‘সম্মতি ছিল না’ কথাটা মিথ্যা। রুবিয়ালেসই সত্য বলছেন যে সম্মতি নিয়েই তিনি চুমু দিয়েছেন।
নিজেদের ওয়েবসাইটে এ-সংক্রান্ত কয়েকটি ছবিও প্রকাশ করেছে স্পেনের ফুটবল ফেডারেশন। সেই ছবিগুলোর মাধ্যমে তারা প্রমাণ করতে চেয়েছে যে এরমোসোই চুমু দিতে উৎসাহিত করে তুলছিলেন রুবিয়ালেসকে।
শেষ হলো কেএসআরএম ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৩। ১৫ আগস্ট অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হওয়া টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন কেএসআরএম স্টিল প্ল্যান্ট লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম উদ্দিন।
টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব শেষে মঙ্গলবার ফাইনালের মুখোমুখি হয় মার্কেটিং ভাইকিংস বনাম এমসিডি ওয়ারিওরস। টুর্নামেন্টে মার্কেটিং ভাইকিংস এমসিডি ওয়ারিওরসকে ১-০ গোলে পরাজিত করে।
সমাপনী আয়োজনে বিজয়ী দল মার্কেটিং ভাইকিংসকে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তুলে দেন কেএসআরএমের মহাব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) সৈয়দ নজরুল আলম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপনন) সুজন কুমার দাশ, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (আইটি) হাসান মুরাদ, পিএস টু ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবদুল্লাহ আল মামুন, উপব্যবস্থাপক (ব্রান্ড), মনিরুজ্জামান রিয়াদ, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা (ব্রান্ড) মিজান উল হক, মিঠুন বড়ুয়া, আশরাফুল ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা (সেলস্ অডিট) বাবু কান্তি দাশ প্রমুখ। টুর্নামেন্টে ফাইনাল খেলা পরিচালনা করেন জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (এমআইএস) আবদুল্লাহ আল মামুন।
সমাপনী আয়োজনে মহাব্যবস্থাপক নজরুল আলম বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজন কেএসআরএমে কর্মরত সহকর্মীদের মধ্যে সৌহার্দ্য সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধের মেলবন্ধন তৈরি করবে। পরস্পরের মধ্যে সুসম্পর্ক রক্ষায় ভুমিকা রাখবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এ ধরণের টুর্নামেন্টের আয়োজন থাকা জরুরি। এতে কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ হবে। এমন কোনো টুর্নামেন্টের আয়োজন হলে কেএসআরএম সানন্দে অংশগ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য