দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার থেকে খুলছে দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্য সিলেটের স্পটগুলো দর্শনার্থীদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত।
তবে পর্যটনকেন্দ্র খোলার ঘোষণা এলেও এখন পর্যন্ত পর্যটকদের তেমন সাড়া মিলছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
করোনার সংক্রমণ না কমা ও বিধিনিষেধে মানুষের আয় কমে যাওয়ার কারণে তেমন পর্যটক সমাগম হবে না বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। বুধবার পর্যন্ত পর্যটকদের তেমন সাড়া মেলেনি বলেই তারা জানালেন।
গত বছর মার্চে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই বন্ধ করে দেয়া হয় পর্যটন কেন্দ্রগুলো। মাঝখানে কিছুদিন খুলে দেয়া হলেও সংক্রমণ বাড়ায় গত এপ্রিলের শুরুতে আবার পর্যটকদের সমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
স্বাভাবিক সময়ে সিলেটের চার জেলায় সারা বছরই পর্যটক সমাগম লেগে থাকে। পাহাড়, ঝর্ণা, চা বাগান আর হাওরের সৌন্দর্য বরাবরই প্রকৃতিপ্রেমীদের টানে।
পর্যটক বাড়ায় সিলেটে গত একদশকে গড়ে উঠেছে শতাধিক হোটেল ও রিসোর্ট। বিনিয়োগবিমুখ হিসেবে পরিচিত সিলেটের উদ্যোক্তাদের অনেকে এই খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছেন। ফলে পর্যটনকেই ধরা হয় সিলেটের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত। তবে গত দেড় বছরে এই খাতই পড়েছে সবচেয়ে সংকটে।
পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়ার ঘোষণায় এই অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে বলে মনে করেন সিলেটের হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমাত নুরী জুয়েল।
তিনি বলেন, ‘আমরা তো একেবারে পথে বসে গেছি। সিলেট বিভাগে প্রতিদিন এই খাতে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় তিন কোটি টাকা। সহজে এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যাবে না। তবে বন্ধ করে রাখলে তো কোনো দিনই ক্ষতি পূরণ হবে না। বরং চালু করলেই একটা সম্ভাবনা তৈরি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত আছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত পর্যটকদের তেমন সাড়া পাচ্ছি না। মানুষের আয়-রোজগার কমে গেছে। সরকারি কর্মকর্তা ছাড়া সবাই করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ফলে এখন কেউ ঘুরতে বের হতে চাচ্ছেন না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।’
সিলেট নগরের জিন্দাবাজার এলাকার হোটেল গোল্ডেন সিটির ব্যবস্থাপক মিষ্ঠু দত্ত বলেন, ‘অন্যান্য সময় শুক্রবারের জন্য আগেই আমাদের সব কক্ষ বুকিং হয়ে যেত। এখন বুধবার পর্যন্ত কেউ বুকিংয়ের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।
‘পর্যটনকেন্দ্র খুললেও দেশে করোনার সংক্রমণ এখনও কমেনি। সিলেটেও সংক্রমণের হার এখনও আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া বেশির ভাগ মানুষ এখনও টিকা নিতে পারেনি। তাই মানুষ ঘুরতে বের হতে ভয় পাচ্ছে। বিশেষত পরিবার নিয়ে কেউ ঘুরতে আসতে চাচ্ছেন না।’
সিলেটের বিমানবন্দর এলাকায় সরকারি মালিকানাধীন পর্যটন মোটেলে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশে পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। ধোয়া-মোছা করা হচ্ছে মোটেলের স্থাপনাগুলো।
পরিচ্ছন্নতা কাজে তদারকি করছেন সাইফুল ইসলাম নামের এক কর্মী। তিনি বলেন, ‘বাক্কাদিন বন্ধ আছিল। এর লাগি আশপাশে আগাছা জমছে। সব কিছু ময়লাও হয়ে গেছে। কাইল থাকি তো টুরিস্ট আওয়া শুরু অইব। তাই সব কিছু পরিষ্কার করছি।’
সিলেটের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র বিছনাকান্দি। পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণা আর পাথুরে নদীর সৌন্দর্য দেখতে এখানে ভিড় করেন প্রচুর পর্যটক। গোয়াইনঘাট উপজেলার হাদারপার বাজার থেকে ইঞ্জিন নৌকায় করে যেতে হয় বিছানাকান্দি।
হাদারপাড়ের নৌকাচালক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘পর্যটক না আওয়ায় বহুত কষ্টে আছি। আয়-রোজগার নাই। কাইল থাকি হুনছি আবার মানুষ বেড়ানিত আইব। আমিও আমার নৌকা ঠিকঠাক করছি। কিছু মেরামত কাজ করছি। এখন পর্যটক অখল আইলে আমরা খাইয়া বাঁচতে পারি।’
বর্ষা মৌসুমে পানিতে টইটম্বুর থাকে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর। সেখানে নৌকা ভ্রমণে যান প্রচুর পর্যটক। তবে গত দুই বর্ষায়ই নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটক সমাগম হয়নি। এখন নিষেধাজ্ঞা উঠলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পর্যটকদের আসতে হবে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কাল থেকে সব কিছু আমরা খুলে দিব। প্রস্তুতি তেমন কিছু না, তবে যেহেতু এখন পানির মৌসুম, তাই অনেকেই ঘুরতে আসতে পারেন। তবে যারা আসবেন তাদের সবাইকে মাস্ক পড়তে হবে এবং আগে যেখানে ১০০ জন এসেছেন সেখানে এখন আসবেন ৫০ জন।
তিনি জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় প্রশাসনের নজরদারি থাকবে। এ ব্যাপারে পর্যটকদেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।
বিভাগের অন্যতম আকর্ষণীয় স্পট শ্রীমঙ্গল। এখানকার হোটেল-রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসগুলোতেও চলছে পর্যটক বরণের প্রস্তুতি।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক ও গ্রীনলিফ গেস্ট হাউসের পরিচালক এস কে দাশ সুমন বলেন, ‘করোনার কারণে শ্রীমঙ্গলের পর্যটন শিল্প রীতিমতো স্থবির হয়ে পড়েছে। পর্যটক না আসায় কেবল বড় উদ্যোক্তারা নন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বর্তমানে যেহেতু সরকার পর্যটনকেন্দ্র খুলে দিচ্ছে, তাই আশা করি আস্তে আস্তে এই অবস্থার পরিবর্তন হবে।’
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ট্যুর গাইড হিসেবে কাজ করেন সাজু মারছিয়াং। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তাই আমাদেরও তেমন কোনো কাজ ছিল না। বৃহস্পতিবার থেকে আবার উদ্যানে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হবে। তাই আমরাও প্রবেশ পথের কাউন্টার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে পর্যটক বরণে প্রস্তুত থাকব।’
সিলেটের পর্যটন খাতের উন্নয়নে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন হাসান মোরশেদ। তিনি বলেন, পর্যটনকেন্দ্র খুললেও এখনই পর্যটন সেক্টরের সংকট কেটে যাবে না। কারণ মানুষের আয় কমেছে। ফলে খরচ কমাবে। আগের মতো পর্যটকরা আসবে না। এতে একেবারে শূন্য থেকে শুরু করতে হবে পর্যটন খাতের উদ্যোক্তাদের।
সিলেটের হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি সুমাত নুরী জুয়েল বলেন, সরকারি সহযোগিতা ছাড়া এই খাতে ঘুরে দাঁড়ানো খুব কঠিন। পর্যটন খাতে সরকার প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু প্রণোদনা পাওয়ার জন্য যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে তা মানা বেশির ভাগ ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রেই সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই শর্ত শিথিলের দাবি জানিয়েছি। এ ছাড়া হোটেল খাতে কর কমানোর দাবি জানিয়ে আসছি।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
মন্তব্য