২০২০ সালটি বিমান চলাচল খাতের জন্য ছিল একটি আতঙ্কের বছর। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে লকডাউন, যাত্রী পরিবহনে কড়াকড়ি আর নতুন নতুন স্বাস্থ্যবিধির কারণে যেসব খাত সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে তার মধ্যে এভিয়েশন বা বিমান পরিবহন খাত অন্যতম।
তবে খুব খারাপ এই বছরটিতেও হাতেগোনা কিছু মজার, আশা জাগানিয়া ও ব্যতিক্রমী মুহূর্ত কিছুটা হলেও খুশির ছটা ফেলেছে।
১. বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত আলাস্কার পিচ্চি বিমানবন্দর
বরফে ঢাকা যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার অ্যাংকরেজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে না আছে সিঙ্গাপুরের চেঙ্গি বিমানবন্দরের মতো ঝরনা বা শিকাগোর ও’হারা বিমানবন্দরের মতো আটটি রানওয়ে। তারপরেও গত এপ্রিলে ছোট এই বিমানবন্দরটিই কিছু সময়ের জন্য হয়ে উঠেছিল বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দর। মূলত মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে যাত্রী পরিবহন অনেকটা স্থবির হওয়ার কারণে এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে গিয়েই এমন ঘটনা। পণ্য পরিবহনে অ্যাংকরেজ বিমানবন্দরের বিশেষ সুবিধা থাকায় হঠাৎ করেই এর নাম বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দরের তালিকায় উঠে যায়।
২. ‘ফ্লাইটস নোহোয়্যার’ বা ‘গন্তব্যহীন ফ্লাইট’
মহামারির এই সময়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে অভিনব উপায় বের করার বিকল্প নেই, আর সে পথে হেঁটেছে কোয়ানটাস/কানটাস এয়ারলাইনসের ‘ফ্লাইট নোহোয়্যার’। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে উড়ে আবার সিডনি বিমানবন্দরেই ফিরে আসা যাত্রীর অভাব হয়নি এমন ফ্লাইটে। ভ্রমণপাগল মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে কিনেছেন টিকিট। এয়ারলাইনস কর্মীরা জানান, বায়রন বে ও গোল্ড কোস্টের মতো দর্শনীয় স্থানের ওপর দিয়ে ঘুরে আসার সাত ঘণ্টার একটি ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।
তাইওয়ানেও বেশ ভালো সাড়া মিলেছে এ ধরনের ‘গন্তব্যহীন ফ্লাইট’-এ। সেখানকার বিমান পরিবহন সংস্থাগুলো আরও অভিনব উপায় বের করেছে, উড়োজাহাজে ‘স্পিড ডেটিং’। ওই অঞ্চলের জনপ্রিয় একটি বিমান পরিবহন সংস্থা ইভা এয়ার-এর স্লোগান ‘ফ্লাই! লাভ ইজ ইন দ্য এয়ার (উড়ুন! ভালোবাসা বাতাসে ভাসছে)’। থাই এয়ারওয়েজ তাদের ‘ফ্লাই নোহোয়্যার’-এর আয়োজনে গুরুত্ব দিয়েছে আধ্যাত্মিকতাকে। সেদেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থানগুলোর ওপর দিয়ে যাত্রীদের ঘুরিয়ে আনছে এয়ারলাইনসটি।
৩. এভিয়েশন-এর নসট্রাডামুস নাওমি ক্যাম্পবেল
ব্রিটিশ মডেল, অভিনেত্রী নাওমি ক্যাম্পবেল যেন বিমান পরিবহন খাতের এক নসট্রাডামুস- ভবিষ্যৎদ্রষ্টা। ২০১৯ এর গ্রীষ্মে নাওমি উড়োজাহাজে ভ্রমণে তার রীতিনীতি চালু করেন। হাতমোজা, মাস্ক, ব্যাকটেরিয়া নিরোধক ইত্যাদির ব্যবহার তিনি যখন শুরু করেন, তখনও বিশ্ববাসী ভাবতেও পারেনি আর কয়েক মাসের মধ্যে এটাই হয়ে উঠবে স্বাভাবিক বিধি।
৪. বিশ্বের দীর্ঘতম ফ্লাইট আরও দীর্ঘ
করোনা মহামারির কারণে পথ-পরিবর্তন, সূচি-পরিবর্তন করার পাশাপাশি বিমান পরিবহনের রেকর্ড বইতেও বেশ ওলটপালট হয়েছে। প্রথম ঘটনাটি ফরাসি বিমান পরিবহন সংস্থা এয়ার তাহিতি নুই-র।
যাত্রী পরিবহনে বিশ্বের দীর্ঘতম পথ পাড়ি দেয়ার রেকর্ড গড়েছে তাদের একটি ফ্লাইট। কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে নয় হাজার ৭৬৫ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে তাহিতি থেকে প্যারিস পৌঁছায় উড়োজাহাজটি। এরপর, কিছুদিন বিশ্বের সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী বিমান এয়ারবাস এ থ্রিএইটজিরো দিয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে কোয়ানটাস। সবশেষ ঘটনাটি সিঙ্গাপুর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়ার্ক বিমানবন্দর যাওয়ার।
নভেম্বরে টানা ১৮ ঘণ্টা উড়ে বিশ্বের স্বীকৃত দীর্ঘতম যাত্রীবাহী ফ্লাইটের রেকর্ড গড়ে এই ফ্লাইট। কারণ, মহামারি পরিস্থিতিতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস তাদের গন্তব্য নিউ ইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দর থেকে নিউ জার্সির নেওয়ার্ক বিমানবন্দরে সরিয়ে নেয়, ফলে যাত্রা পথের মোট দূরত্ব আরও আড়াই মাইল বেড়ে হয় নয় হাজার ৫৩৬ দশমিক ৫ মাইল।
৫. যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ হয়েছে মালবাহী উড়োজাহাজ
করোনা মহামারির কারণে যাত্রী বহনে খরা, দুর্দশা কাটাতে পণ্য পরিবহনেই মনোযোগ বাড়াতে হয়েছে বিমান সংস্থাগুলোর। এই পথে হাঁটতে গিয়ে সংবাদ হয়েছে পর্তুগালের চার্টার অপারেটর হাই ফ্লাই। বিমান পরিবহন সংস্থাটি তাদের মালিকানাধীন একমাত্র এ থ্রিএইটজিরো উড়োজাহাজের বেশিরভাগ যাত্রী-আসন সরিয়ে একে মালবাহী উড়োজাহাজে রূপান্তর করেছে। এর মধ্যদিয়ে তারা প্রথম একটি এ থ্রিএইটজিরো উড়োজাহাজকে পণ্যবাহী উড়োজাহাজে পরিণত করার রেকর্ড গড়ে।
৬. পাইলটের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই উড়োজাহাজের টেক অফ
এটা বছরের শুরুর দিকের একটি ঘটনা। জানুয়ারিতে বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস সফলভাবে স্বয়ংক্রিয় পাইলট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উড়োজাহাজের টেক অফ বা উড্ডয়ন করে সংবাদ মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ফ্রান্সের তুলো-ব্লাগনাক বিমানবন্দরে একটি এ থ্রিফাইভজিরো-থাউজেন্ড উড়োজাহাজে এই সাফল্য অর্জন করে তারা। সাধারণত আকাশে ওড়ার সময় উড়োজাহাজের অটো-পাইলট সিস্টেম সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং টেক অফ এবং ল্যান্ডিংয়ের কাজটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে পাইলটরাই এই দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তবে এই প্রথম অটো-পাইলটে আটবার সফলভাবে টেক অফ করার খবর জানায় এয়ারবাস। এ সময় দুজন পাইলট বিমানের ককপিটে স্ট্যান্ডবাই ছিলেন।
৭. জ্বালানি তেল ছাড়াই উড়োজাহাজের উড্ডয়ন
বিমান পরিবহন খাতের আরেকটি সাফল্যগাঁথার খবর আসে ২০২০ সালের মে মাসে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সম্পূর্ণ বিদ্যুৎচালিত উড়োজাহাজ এর প্রথম ফ্লাইট সম্পন্ন করে। নয় জন যাত্রী বহনে সক্ষম ইক্যারাভান উড়োজাহাজটি ওয়াশিংটনের মুসা হ্রদের ওপর ৩০ মিনিটের সফল উড়ান পরিচালনা করে। এরপর সেপ্টেম্বরে এয়ারবাস তাদের জিরো ই উড়োজাহাজ উন্মুক্ত করে। ইউরোপের এই বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ২০৩৫ সাল নাগাদ দূষণমুক্ত যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বাজারে আনার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
৮. অবশেষে চালু হলো বার্লিনের ‘অভিশপ্ত’ বিমানবন্দর
প্রায় এক দশকের টানাপোড়েন, অভিযোগ আর অদক্ষতার সমাপ্তি ঘটিয়ে গত অক্টোবরে চালু হয়েছে বার্লিন-ব্রানডেনবুর্গ ভিলি ব্রান্ডট্ বিমানবন্দর। জার্মানির ব্রানডেনবুর্গের এই বিমানবন্দরটি শুধু নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১০ বছর পিছিয়েই পড়েনি, এর নির্মাণ খরচ বেড়েছে ৪০০ কোটি ইউরো এবং করোনা মহামারির সময়ে এটি চালু হয়েছে। এতেও শেষ রক্ষা হয়নি, এক জন যাত্রীও ওঠানামা করার আগেই রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আরও ৩০ কোটি ইউরো সাহায্য নিতে হয়েছে।
৯. তীব্র গতির বিমান
গত শতাব্দীর আশি-নব্বইয়ের দশকে কনকর্ড উড়োজাহাজের কথা হয়তো অনেকেরই মনে আছে। সুপারসনিক যাত্রীবাহী বিমানের এক অনন্য প্রতীক ছিল সেটি। তবে নানা জটিলতায় বন্ধ হয়ে যায় কনকর্ডের উড়ান। তবে তীব্র গতির উড়োজাহাজের সম্ভাবনা মরে যায়নি।
গত ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ দ্রুততম সাবসনিক ফ্লাইটের রেকর্ড গড়ে নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডনগামী একটি ফ্লাইটে, যার সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ৮০০ মাইলের বেশি। এরপর সেপ্টেম্বরে একটি সংবাদ প্রচার হয় যে, ২০২৫ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে একটি সুপারসনিক এয়ার ফোর্স ওয়ান দেখা যেতে পারে। বলে রাখা ভালো, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যে উড়োজাহাজে ভ্রমণ করেন সেটাই এয়ার ফোর্স ওয়ান।
এ ছাড়া ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক স্টার্টআপ এক্সোসনিক একটি লো-বুম সুপারসনিক বিমান বানানোর চেষ্টা করছে। আটলান্টাভিত্তিক আরেকটি প্রতিষ্ঠান হারমেউস করপোরেশন ২০ আসনের একটি হাইপারসনিক উড়োজাহাজ তৈরির প্রচেষ্টায় যুক্ত হয়েছে, তাদের প্রতিশ্রুতি হচ্ছে যাত্রীদেরকে ৯০ মিনিটে নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডন পৌঁছে দেয়া। ডেনভারত্তিক স্টার্টআপ বুম অক্টোবরে তাদের এক্সবিওয়ান উড়োজাহাজের প্রতিরূপ উন্মোচন করে। এক্সবিওয়ান ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মিত প্রথম সুপারসনিক উড়োজাহাজ।
১০. বুদ্ধের রথে উল্টোপথে
যাওয়ার কথা ছিল দক্ষিণে কিন্তু বিমান থেকে নেমে দেখলেন পৌঁছে গেছেন উত্তরে! একদম বোকা বনে যাওয়ার কথা। ঘটনা ঘটেছেও তেমন। গত ১৮ ডিসেম্বর নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৬৯ জন যাত্রী নিয়ে বুদ্ধ এয়ারওয়েজের একটি বিমান দক্ষিণ-পূর্বে জনকপুর শহরের উদ্দেশে রওনা দেয়, কিন্তু নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার বদলে সেটি চলে যায় উত্তর-পশ্চিমের শহর পোখারায়। আর এই কাণ্ডে হতবাক যাত্রীরাও। তবে বড় ধরনের ঝামেলা হয়নি। পরের একটি বিমানে সবাই সঠিক গন্তব্য পৌঁছাতে পেরেছেন।
আরও পড়ুন:কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ আগস্ট থেকে এ শুল্ক কার্যকর হবে।
বৃহস্পতিবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এই কথা জানান।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, সোমবার থেকে এ পর্যন্ত ট্রাম্পের এমন ধরনের ২০টিরও বেশি চিঠি গেছে বিশ্বের নানা দেশের নেতার কাছে। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের অংশ হিসেবেই এসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি।
কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে একটি বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে। তবে ট্রাম্পের সর্বশেষ এই হুমকিতে আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
একইসঙ্গে কানাডা ও মেক্সিকো উভয়ই ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করতে চেষ্টা করছে, যাতে উত্তর আমেরিকার তিন দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (ইউএসএমসিএ) আবার সঠিক পথে ফিরে আসে।
২০২০ সালের জুলাইয়ে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে পুরোনো (নাফটা) বাতিল করে ইউএসএমসিএ চালু করা হয়। ২০২৬ সালের জুলাইয়ে এর পরবর্তী পর্যালোচনা হওয়ার কথা। তবে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প নানা দেশে শুল্ক আরোপ করে পর্যালোচনার প্রক্রিয়াই অস্থির করে তুলেছেন।
শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ২৫ শতাংশ শুল্ক বসায় কানাডা ও মেক্সিকোর বহু পণ্যের ওপর। কানাডার জ্বালানির ক্ষেত্রে অবশ্য কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়।
বাণিজ্যের পাশাপাশি অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার ঠেকাতে যথেষ্ট উদ্যোগ না নেওয়ার অভিযোগে প্রতিবেশী এ দুই দেশকে একাধিকবার সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প।
তবে পরবর্তীতে ইউএসএমসিএ চুক্তির আওতায় থাকা পণ্যের ক্ষেত্রে তিনি ছাড় দেন, যার ফলে বড় পরিসরের পণ্য শুল্কমুক্ত হয়।
বৃহস্পতিবারের চিঠিটি এমন এক সময় এলো, যখন ট্রাম্প ও কার্নির মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা উষ্ণ হচ্ছিল। এমনকি এর আগে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানো নিয়েও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।
গত ৬ মে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হোয়াইট হাউসে এসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পরের মাসে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনেও আবার দেখা হয় দুই নেতার। সম্মেলনে ট্রাম্পকে বাণিজ্যযুদ্ধ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান বিশ্বনেতারা।
এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর কানাডা যে কর আরোপ করেছিল, তা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে ট্রাম্প আলোচনার টেবিল ত্যাগ করলেও পরে আবার আলোচনা শুরুর পথ খুলে যায়।
অন্যদিকে, এনবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, যেসব দেশকে এখনো এ ধরনের চিঠি পাঠানো হয়নি, তাদের ওপরও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের বিষয়টি বিবেচনায় আছে। সেটিও কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকে।
তিনি জানান, ব্রাজিলের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে, যদি এর আগেই কোনো সমঝোতা না হয়।
এনবিসি’কে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ টি দেশের উদ্দেশে চিঠি পাঠানো হবে ‘আজ বা আগামীকাল (শুক্রবার)’।
এদিকে, ট্রাম্পের হুমকির পর বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। তবে দেশটি পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করছে।
ট্রাম্পের পাঠানো চিঠিতে ব্রাজিলের সাবেক ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর প্রতি আচরণ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাট, পাটজাত পণ্য, চিংড়ি, সবজি ও ফলমূল রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৫ হাজার ৯৭১ কোটি ৪০ লাখ টাকা।রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) দেওয়া তথ্যমতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে বিদেশে নতুন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হওয়ায় খুলনা থেকে পাট, পাটজাত পণ্য এবং চিংড়ি রপ্তানি বেড়েছে।
ইপিবি আরও জানায়, বিশ্ব অর্থনীতির উন্নতির কারণেও রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত খুলনা অঞ্চলের রপ্তানি আয় ছিল ৫ হাজার ৩৭৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আর চলতি অর্থবছরে একই সময়ে আয় দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯৭১ কোটি টাকায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ১৩ হাজার ১৯ দশমিক ৮০ টন হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১ হাজার ৯৯০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
এছাড়া কুচিয়া, কাঁকড়া, সবজি, কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানিও বেড়েছে।
মাসভিত্তিক রপ্তানি আয়ের হিসাবে দেখা যায়, খুলনা অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা জুলাইয়ে ৫১৭ কোটি ৬৮ লাখ, আগস্টে ৪৪৭ কোটি ৫৩ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৬০১ কোটি ৯৮ লাখ, অক্টোবরে ৫৬৬ কোটি ৯৬ লাখ, নভেম্বরে ৫২৩ কোটি ১৩ লাখ, ডিসেম্বরে ৪৫৭ কোটি ৩৭ লাখ, জানুয়ারিতে ৪২৩ কোটি ৬৫ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ৪০২ কোটি ৫২ লাখ, মার্চে ৪৩৮ কোটি ৯১ লাখ, এপ্রিলে ৫৫০ কোটি ৮৭ লাখ, মে মাসে ৬১১ কোটি ৬৯ লাখ এবং ২০২৫ সালের জুনে ৪২৯ কোটি ১১ লাখ টাকার পণ্য রপ্তানি করেছেন।
খুলনা ইপিবির পরিচালক জিনাত আরা জানান, বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নতি, বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিশীলতা এবং বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ফিরে আসায় রপ্তানি বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘পূর্ববর্তী সরকারের আমলে সরকারি পাটকল ও চিংড়ি কারখানা বন্ধসহ নানা কারণে খুলনা অঞ্চলের রপ্তানি কমে গিয়েছিল।’
পাট ও বস্ত্র উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সম্প্রতি খুলনা সফর করেছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, খুলনা অঞ্চল পাট, চিংড়ি ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানিতে তার আগের গৌরব ফিরে পাবে। সরকার বন্ধ থাকা পাটকলগুলো বেসরকারি খাতে ইজারা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে, যাতে সেগুলো পুনরায় চালু করা যায়।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএফইএ)’র সাবেক সহ-সভাপতি মো. আবদুল বাকী বাসসকে বলেন, ‘খুলনার ব্যবসায়ীরা মনে করছেন দেশে অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশের কারণে চিংড়ি, পাট, পাটজাত পণ্য ও অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, খুলনায় মোট ৬৩টি চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা থাকলেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উৎপাদন ও বৈদেশিক চাহিদা কমে যাওয়ায় ৩৩টি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে পাট ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ পাট অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএ)-এর সাবেক সহ-সভাপতি ও পাট ব্যবসায়ী শরীফ ফজলুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববাজারে কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। খুলনায় এর বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের নীতির তীব্র সমালোচনা করে তিনি অভিযোগ করেছেন, পতিত সরকার দেশের পাট খাত ধ্বংস করে দিয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরীক্ষক এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের আর্থিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষায় আরও স্বচ্ছতা ও সততা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা যখন একটি দেশের ব্যবসা পরিবেশ সম্পর্কে স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য তথ্য পান, তখন তারা সেই অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন।’
রাজধানীর একটি হোটেলে ‘অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড অডিটিং সামিট’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্বব্যাংক এবং ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) যৌথভাবে ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক শাসনে এফআরসি’র ভূমিকা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুর, ঢাকাস্থ বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর সৌলেমানে কুলিবালি এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
অর্থসচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) চেয়ারম্যান ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যারা এসব কাজে জড়িত তাদের স্বচ্ছতা ও সততা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।
ড. আহসান এইচ. মনসুর বলেন, দেশীয় ও বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারীর আস্থা অর্জনের জন্য ব্যাংকগুলোর নিরীক্ষা প্রতিবেদন স্বচ্ছভাবে এবং যথাযথ তথ্যসহ উপস্থাপন করা উচিত।
তিনি বলেন, একটি সুদৃঢ়, সহনশীল ও ভবিষ্যতমুখী আর্থিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দেশের সব ব্যাংকে রিস্ক-বেসড সুপারভিশন (আরবিএস) চালু করা হবে।
মূল প্রবন্ধে এফআরসি চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশ যখন একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন সুসংগঠিত প্রতিষ্ঠান ও সুশাসন কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল একটি সুস্পষ্ট ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করছে যা আর্থিক প্রতিবেদন, নিরীক্ষা, মূল্যায়ন এবং সঠিক মানদণ্ডে সততা, শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।’
তিনি আরও বলেন, এফআরসি চায় সব পক্ষ যেন পূর্ণ প্রকাশসহ সত্য আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করে, যাতে অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রকৃত ও কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব—আয়কর ও ভ্যাট—সংগ্রহ করতে পারে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘ভুয়া বা মিথ্যা আর্থিক প্রতিবেদনই কর ফাঁকি ও কর এড়ানোর প্রধান হাতিয়ার।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানি বৃদ্ধির কারণে ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে বিশ্ব বাণিজ্য প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জেনেভা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন (আঙ্কটাড) অর্থনীতিবিদ আলেসান্দ্রো নিকিতা এএফপিকে জানিয়েছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে শুরু হওয়া বাণিজ্য যুদ্ধ সত্ত্বেও ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধের তুলনায় বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রায় ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে ‘নীতিগত অনিশ্চয়তা, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হ্রাসের ইঙ্গিত, এইসব বিষয় ২০২৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধে বাণিজ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে ওই বিবৃতিতে জানিয়েছে আঙ্কটাড।
নিকিতা বলেন, মার্কিন কোম্পানিগুলো ৫ এপ্রিল শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে পণ্যের মজুত করে ফেলায় আমদানির বড় এই বৃদ্ধিটি ঘটেছে।
আঙ্কটাডর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সেবা বাণিজ্যই ছিল প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি।
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রায় ১.৫ শতাংশ বেড়েছে এবং দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা ২ শতাংশে পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে উন্নত অর্থনীতি উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় ভালো করেছে। যা সাম্প্রতিক সময়ে গ্লোবাল সাউথের পক্ষে থাকা প্রবণতাকে উল্টে দিয়েছে।’
এই পরিবর্তনের পেছনে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিতে ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানিতে ছয় শতাংশ প্রবৃদ্ধি ভূমিকা রেখেছে।’ তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আমদানি দুই শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্প তার ব্যাপক শুল্ক আরোপের কারণ হিসাবে যে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা উল্লেখ করেছেন, তা ‘গত চার প্রান্তিকে আরও গভীর হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৃহত্তর ঘাটতি রয়েছে এবং চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ক্রমবর্ধমান উদ্বৃত্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক বাণিজ্য বিভাজনের ঝুঁকি বাড়িয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তবে আঙ্কটাড জানিয়েছে এখনও স্থিতিস্থাপকতার লক্ষণ রয়ে গেছে। যদিও তা ‘নীতিগত স্পষ্টতা, ভূ-অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সরবরাহ লাইনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতার ওপর নির্ভর করবে।
হঠাৎ করে নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একগুচ্ছ ‘শুল্ক চিঠি’ প্রকাশ করে বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন করে আলোড়ন তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সোমবার (০৭ জুলাই) স্থানীয় সময় দুপুরে প্রকাশিত এসব চিঠিতে জানানো হয়, আগামী ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ওপর নতুন আমদানি শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে।
চিঠি প্রকাশের পরপরই এর প্রভাব পড়ে বিশ্ববাজারে। যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে দেখা দেয় বড় ধস। ডাও জোন্স সূচক পড়ে যায় ৪২২ পয়েন্ট, আর নাসডাক ও এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক যথাক্রমে ০.৯ শতাংশ ও ০.৮ শতাংশ কমে যায়।
বিশ্ববাজারেও এর প্রভাব পড়ে। টয়োটা, নিসান, হোন্ডা, এলজি ও এসকে টেলিকম-এর মতো কোম্পানির শেয়ারের দাম তাৎক্ষণিকভাবে কমে যায়। কিছু কিছু কোম্পানির শেয়ার ৭ শতাংশ পর্যন্ত দরপতনের মুখে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ কৌশলবিদ রস মেফিল্ড সিএনএনকে বলেন, প্রস্তাবিত শুল্কের হার বাজারের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে শেয়ার বিক্রি শুরু করেন।
শুল্ক ঘোষণার প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ডের বাজারেও চাপ পড়ে। ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার বেড়ে ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং ৩০ বছর মেয়াদি বন্ডের হার বেড়ে ৪ দশমিক ৯২ শতাংশে দাঁড়ায়।
ট্রাম্প আরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ব্রিকস জোটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা দেশগুলোর ওপরও অতিরিক্ত ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। তার দাবি, এসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতি অনুসরণ করছে এবং তার শুল্কনীতির অযৌক্তিক সমালোচনা করছে।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের ঘোষণার পর ইউএস ডলার ইনডেক্স বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। এর ফলে জাপানি ইয়েন, দক্ষিণ কোরীয় ওয়ান ও দক্ষিণ আফ্রিকান র্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি প্রধান মুদ্রা ডলারের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়ে।
তবে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল থেকে এশিয়ার কিছু শেয়ারবাজারে সাময়িক চাঙাভাব দেখা গেছে, এবং সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও কিছুটা উত্থান দেখা দিতে শুরু করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি শুধু বাণিজ্য সম্পর্কেই নয়, বৈশ্বিক অর্থনীতির ভারসাম্যেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা নিষ্পত্তিহীন পণ্য দ্রুত নিলাম, বিলিবন্দেজ বা ধ্বংসের মাধ্যমে সরানোর জন্য একটি ‘নিলাম কমিটি’ গঠন করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিশেষ আদেশে গঠিত এ কমিটি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত যানবাহন ব্যতীত ফেলে রাখা সব পণ্য নিষ্পত্তির মাধ্যমে সরিয়ে ইয়ার্ড খালি করবে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ শফিউদ্দিন এক অফিস আদেশে জানান, নিলাম কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ তফছির উদ্দিন ভূঁঞা। সদস্য হিসেবে রয়েছেন অতিরিক্ত কমিশনার মো. রুহুল আমিনসহ কাস্টম হাউসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন নিলাম শাখার উপ বা সহকারী কমিশনার।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, কাস্টমস আইন মেনে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকা অখালাসকৃত, বাজেয়াপ্ত অথবা অনিষ্পন্ন পণ্য দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে বন্দর কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়রোধই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। এই কমিটি দ্রুত নিলাম ও ধ্বংস কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে কন্টেইনার জট নিরসন, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং পণ্যের প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শেয়ারট্রিপ ও মনিটরের যৌথ উদ্যোগে এয়ারলাইন অব দ্য ইয়ার-২০২৪ শীর্ষক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে গোল্ড পদকসহ মোট ৫ টি পদক লাভ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। দীর্ঘ দূরত্বের আন্তর্জাতিক পথে ফ্লাইট পরিচালনা, ইকোনমি ক্লাসে শ্রেষ্ঠ ইনফ্লাইট খাবার, বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় এয়ারলাইন্স ব্র্যান্ডস ক্যাটাগরিতে গোল্ড পদক পেয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এছাড়াও বেস্ট ইম্প্রুভড এয়ারলাইন্স ও অভ্যন্তরীণ পথে ফ্লাইট পরিচালনায় যথাক্রমে সিলভার ও ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
মন্তব্য