নেত্রকোণায় হত্যা মামলার বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের মামলা করার পর তার কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠা পুলিশের তদন্ত সংস্থা পিবিআই কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সেই কর্মকর্তা হলেন ধনরাজ দাস। তিনি নেত্রকোণা পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর ছিলেন।
পিবিআই কেন্দ্রীয় দপ্তরে ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার এই তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন বলে জানিয়েছেন নেত্রকোণা পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শংকর কুমার দাশ। তিনি জানান, সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক সায়েদুর রহমানকে। কমিটির অপর দুজন সদস্য ময়মনসিংহ পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস ও ঢাকা পিবিআইয়ের সহকারী পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম।
শংকর কুমার জানান, পিবিআই কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে ইন্সপেক্টর ধনরাজকে কিশোরগঞ্জ পিবিআই কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়েছে।
ঘটনা যা ঘটেছিল
এই পিবিআই কর্মকর্তা যার সঙ্গে ফোনে টাকা নিয়ে কথা বলেছিলেন, তার নাম আবুল হোসাইন। তিনি বারবার ধনরাজের কাছ থেকে টাকা ফেরত চাইছিলেন। ধনরাজ তাকে এসে টাকা নিয়ে যেতে বলছিলেন আর আবুল বলছিলেন, এসে দিয়ে যেতে হবে টাকা।
আবুল হোসাইনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার সেকান্দরনগর গ্রামে। তিনি নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার ডাউকি গ্রামের সাবিজ মিয়ার মেয়ের জামাতা।
২০১৮ সালের ১৯ জুলাই রাত থেকে ২০ জুলাই সকালের মধ্যে কোনো এক সময়ে খুন হন কেন্দুয়ার ডাউকি গ্রামের সাবিজ মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া।
সকালে গ্রামের মসজিদের সামনে থেকে মরদেহ উদ্ধারের পর ওই দিন কেন্দুয়া থানায় নিহতের বাবা সাবিজ মিয়া অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন।
পরে এই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। আর নানা হাত ঘুরে তদন্তের ভার আসে ইন্সপেক্টর আবদুল্লাহ আল মামুনের কাছে। তিনি গত ৪ ডিসেম্বর সাতজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
১০ ডিসেম্বর আসামি জিয়াউল ও পলাশের বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনা হয়, এমন অভিযোগে তার ভাই জুলহাস মামলা করেন। এই মামলাটি হয় গত ২০ জানুয়ারি।
৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার মালামাল লুট ও ভাঙচুরের এই মামলায় খুন হওয়া জুয়েলের মা ললিতা আক্তার, ভগ্নিপতি আবুল হোসাইনসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়।
এই মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা কেন্দুয়া থানার এসআই নোমান সাদেকীন গত ২ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে ‘ঘটনা মিথ্যা’ উল্লেখ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন।
‘মিথ্যা মামলা’ করার জন্য বাদী জুলহাস মিয়ার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২১১ ধারা প্রয়োগের প্রস্তাবও দেন তদন্ত কর্মকর্তা নোমান সাদেকীন।
পরে এই মামলার বাদীপক্ষ আদালতে নারাজি দিলে মামলাটি আবার তদন্ত হয়। এবার দায়িত্ব পান ধনরাজ। তিনিও মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন। তবে বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ না এনে বলেন, ঘটনাটি রাতে ঘটেছে এবং কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সাক্ষী পাওয়া যায়নি।
এই মামলার তদন্ত চলাকালেই আবুল হোসাইনের স্বজনদের কাছ থেকে ধনরাজ টাকা নেন বলে অভিযোগ উঠছে। তবে পিবিআই কর্মকর্তা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপে কী কথা
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কল রেকর্ডে ভুক্তভোগীকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনার অফিসে গিয়া আমি টাকা দিয়া আসছি, আপনি এখন আমার বাড়িতে আইসা টাকাটা দিয়া যান। আমি অভিযোগ উঠাইয়া নিয়া আইয়াম।‘
জবাবে পিবিআইয়ের কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি আসেন। দিয়ে থাকলে নিয়ে যান।’
তখন ভুক্তভোগী বলছেন, ‘নিয়ে থাকলে মানে আপনি কি কিছু নিছেন না?’
ইন্সপেক্টর বলেন, ‘নিমু না কেরে। আপনি তো মোবাইলে...‘
এভাবেই ৯ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ডে উঠে আসে ঘুষের টাকার লেনদেনের বিষয়টি।
ইন্সপেক্টর ধনরাজ কী বলছেন?
নিউজবাংলাকে পিবিআইয়ের কর্মকর্তা বলেন, ‘আবুল হোসাইন নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছিলেন মামলার বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগ করতে। কিন্তু ঘটনার সত্যতা থাকায় তার আবদার রাখার সুযোগ ছিল না। এ কারণেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ তুলছেন। তার শাশুড়িকে দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দিচ্ছেন।’
১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার কথা তিনি অস্বীকার করার পর কল রেকর্ডের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেয়া হলে ধনরাজ বলেন, ‘প্রায় দুই মাস আগে আবুল হোসাইনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি কথা বলার সময় বারবার টাকা ফেরত চাচ্ছিলেন। বাজেভাবে কথা বলছিলেন। আমার বিকাশ নম্বরে এক হাজার টাকা পাঠানোর কথা আবুল হোসাইন আমাকে বলেছেন। আমি বলেছি প্রমাণ দিয়ে টাকা নিয়ে যেতে।’
আবুল হোসাইন কী বলছেন
পিবিআইয়ের কর্মকর্তাকে ঘুষ দেয়ার অভিযোগ আনা আবুল হোসাইন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামলায় আমাদের দায় দেখিয়ে আদালতে চার্জশিট দেয়ার ভয়ভীতি দেখান ধনরাজ। এমনকি একদিন আমাকে ডেকে নিয়ে তার অফিসে আটকে রাখেন টাকার জন্য।
‘পরে টাকা দেয়ার অঙ্গীকার করে সেদিন তার অফিস থেকে ছাড়া পাই। বাধ্য হয়ে প্রথম দফায় তাকে হাতে হাতে নগদ ১ লাখ টাকা, পরে ১৯ হাজার টাকা দিই। বাকি ১ হাজার টাকার জন্য বারবার তাগাদা করছিলেন ধনরাজ। শেষে ১ হাজার টাকা বিকাশে দিই। এখন আমি এই টাকা ফেরত চাই।’
টাকা দেয়ার বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে ফোনে বলা কথাবার্তার রেকর্ড আছে বলেও জানান আবুল।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বললেন, ঘটনা সত্য
ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডের কথাবার্তায় উঠে আসে কেন্দুয়া উপজেলার সান্ধিকোনা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল হাসেমের নামও।
তিনি বলেন, ‘টাকা তো নিছেন ধনরাজ দাস। ১ লাখ ২০ হাজার টাকাই নিছেন। এটা সত্য। আমি জানি। ধনরাজ দাস আমাকে ফোন করেছিলেন। ফোনে তিনি বলেছেন, আবুল হোসাইন যেন সমস্যার সৃষ্টি না করেন। টাকাটা দিয়ে দেবেন। আর যাতে কেউ না শোনে। কিন্তু ধনরাজ দাস পরে আর টাকাটা ফেরত দেননি।’
আরও পড়ুন:নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিজানুর রহমান রিপন (৪৮) নামের এক স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেছে। মিজানুর রহমান রিপন ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।
গত রবিবার সন্ধার দিকে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। মিজানুর রহমান রিপন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমর সংবাদ পত্রিকার দৌলতপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি নিউজ বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এঘটনায় ওই দিন রাতে ভূক্তভুগী নিজে বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
এযাহার সূত্রে জানাযায়, গত ৮ জুন উপজেলার তারাগুনিয়া থানার মোড় এলাকার তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রশুতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি সহ উপজেলার বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী সংবাদ প্রকাশ করে। তারি জের ধরে উপজেলা বাজারে থাকা সরকার নিষিদ্ধ ক্লিনিক বেবি নার্সিং হোম এর মালিক আহসান হাবিব কালুর ছোট ছেলে খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারে তাকে মারধর করে।
এবিষয়ে মিজানুর রহমান নামের ওই গণমাধ্যম কর্মী বলেন, গতকাল বিকেলে আমি উপজেলা বাজারে বাড়ির দৈনন্দিন বাজার করছিলাম এসময় খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারের বেবী ক্লিনিক মালিকের ছেলে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় সে আমাকে বলে আমার হাসপাতালে যে ডাক্তার আসে সেই ডাক্তারের নামে তুরা নিউজ করেছিস বলে আমার উপর হামলা চালিয়ে বেদড়ক মারধর করে। এঘটনার পর আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
গণমাধ্যম কর্মীকে মারধরের বিষয়ে, দৌলতপুর উপজেলার একজন প্রবীন গণমাধ্যম কর্মী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে এটি কখনই কাম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া উচিৎ।
এঘটনায় দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হুদা জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অভিযুক্ত খালিদ হাসান আর্জু
মন্তব্য