পারিবারিকভাবে এক বছর আগে বিয়ে হয় দিনমজুর হুমায়ুন কবির ও মোছা. সাবিকুন্নাহারের। তাদের ছেলে সন্তানের জন্ম গত জুলাইয়ে। ওই শিশুকে গত শুক্রবার গভীর রাতে পুকুরে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে সাবিকুন্নাহারের বিরুদ্ধে।
ময়মনসিংহের তারাকান্দার বিসকা ইউনিয়নের লালমা গ্রামে এ ঘটনায় শনিবার আটক হয়েছেন সাবিকুন্নাহার। স্বামী হুমায়ুনের মামলায় পুলিশ তাকে আদালতে তোলার পর সন্তান হত্যার কথা স্বীকারও করেছেন তিনি। এরপর তাকে পাঠানো হয় কারাগারে।
তবে সাবিকুন্নাহারের স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন এখন বলছেন, সন্তান জন্মের পর থেকে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। এ কারণেই হত্যার ঘটনাটি ঘটতে পারে।
সোমবার খবর পাওয়া যায়, স্ত্রীকে মুক্ত করতে আদালতপাড়ায় আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করতে গেছেন হুমায়ুন। এতে প্রশ্ন ওঠে, সন্তান হত্যার অভিযোগে স্ত্রীর নামে মামলা দিয়ে আবার তাকে ছাড়িয়ে নিতে তিনি কেন তৎপর হলেন!
এ বিষয়ে খোঁজ নিতে লালমা গ্রামে যান নিউজবাংলার প্রতিবেদক।
সাবিকুন্নাহারের শ্বশুরবাড়ি গিয়ে কথা হয় শ্বশুর আবুল কাশেমের সঙ্গে। তিনি নিউজবাংলাকে জানান, পরিবারের কারও সঙ্গে সাবিকুন্নাহারের কলহ বা মনোমালিন্য ছিল না। তবে বাচ্চার জন্মের পর থেকে বুকের দুধ না আসায় তিনি কিছুটা অস্থির ছিলেন। এ জন্য তাকে কবিরাজি ওষুধও খাওয়ানো হয়।
কাশেম বলেন, ‘বাচ্চার প্রতি তাকে বিরক্ত দেখা যায় নাই কখনও। হঠাৎ গত শুক্রবার রাত ৩টার দিকে বাচ্চাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে (সাবিকুন্নাহার) দুপুরে (শনিবার) আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
‘পুলিশ বলছে মামলা করতে হবে। তাই আমার ছেলে হুমায়ুন মামলা করছে। এর মধ্যে বিকেল ৫টার দিকে বাড়ির পিছনের পুকুরে বাচ্চার লাশ ভাসতে দেখে উদ্ধার করি।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনার তিন দিন আগে থেকেই সাবিকুন্নাহার বলছিল, তার শরীরটা ভালো লাগছে না। এর আগে কখনও এমন করে বলেনি। ও খালি বলত “আমার কিছু ভাল লাগে না”। চুপচাপ থাকতো। আমি বলছিলাম শনিবার ৫০০ টাকা ভিজিট দিয়ে তোমাকে ডাক্তার দেখাব। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগের দিনই এই ঘটনা ঘটল।’
আবুল কাশেম বলেন, ‘সংসারে কারও সঙ্গে তার সামান্যতম মনোমালিন্য নেই। সুখের সংসার ছিল। তবু যেহেতু নিজের সন্তানকে পুকুরে ফেলে দিয়েছে, সেহেতু তার মাথায় হঠাৎ কোনো সমস্যা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কারণ একজন সুস্থ মা তার কোলের শিশুকে কোনো কারণ ছাড়াই হত্যা করতে পারে না।’
প্রতিবেশী এমদাদুল হক ও তাসলিমা খাতুনও জানান, সবার সঙ্গে সাবিকুন্নাহারের ভালো সম্পর্ক ছিল। নিজের সন্তানকে তিনি মেরে ফেলেছেন, তা তাদের বিশ্বাস হচ্ছে না।
মামলার নথিতে সাবিকুন্নাহারের স্বামী উল্লেখ করেছেন, তিনি রাজধানীর একটি হোটেলে বাবুর্চির কাজ করেন। ঘটনার দিন ঢাকায় ছিলেন। বাচ্চা নিখোঁজের খবর পেয়ে বাড়ি গিয়ে স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন কীভাবে বাচ্চা হারাল।
এজাহারে বলা হয়েছে, সাবিকুন্নাহার স্বামীকে জানান, ভোররাতে সাদা শাড়ি পরা দুই নারী তার কোল থেকে বাচ্চা নিয়ে যায়। বাচ্চাকে পানি খাওয়াতে হবে বলে তারা নিয়ে যায়। পরদিন বাচ্চার মরদেহ পুকুরে ভাসতে দেখে পুলিশ সাবিকুন্নাহারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে বাচ্চাকে পুকুরে ছুড়ে ফেলার কথা স্বীকার করেন তিনি।
হুমায়ুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্ত্রীর সঙ্গে আমার কখনও ঝগড়া ছিল না। বাচ্চাকে হত্যা করার মতো কোনো কারণও আমি খুঁজে পাইনি। যেহেতু কয়েক দিন ধরে বলছে তার শরীরটা ভালো লাগছে না। সেহেতু ধারণা করছি হয়ত হঠাৎ মাথায় কোনো সমস্যা হয়েছে। পুলিশ মামলা করতে বলায় মামলা করেছি।’
এখন কেন স্ত্রীকে ছাড়িয়ে আনতে চান, এমন প্রশ্নে হুমায়ুন বলেন, ‘সাবিকুন্নাহারকে জামিনে মুক্তি দেয়া হলে তার চিকিৎসা করাতে চাই। নিশ্চিত হতে চাই সে আসলেই নিজের সন্তানকে ইচ্ছা করে হত্যা করেছে কিনা। নাকি মানসিক কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। মানসিক সমস্যার কারণে হলে আমাদের সন্তানকে সে হত্যা করলেও ক্ষমা করে দিব। কারণ সে হয়ত না বুঝে এমন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি মামলা না করলে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করত। তাই আমাকে দিয়েই মামলা করানো হয়েছে। ছেলেকে হত্যার বিষয়ে আমার স্ত্রী যে কথাগুলো বলেছে সবই অসংলগ্ন। একজন মানুষ নিজেকে বাঁচাতে অনেক মিথ্যা কথা বলে, কিন্তু সে ভালোভাবে মিথ্যা কথাও সাজাতে পারেনি। বলেছে, গভীর রাতে দুইজন নারী বাচ্চাকে চাইতেই তাদের হাতে তুলে দিয়েছে।
‘সুস্থ হলে সে নিজেকে বাঁচাতে কঠিন মিথ্যা কথার আশ্রয় নিতে পারত। তাই স্ত্রীকে ছাড়াতে আইনজীবীর পরামর্শ নিচ্ছি। আমি তাকে চিকিৎসা করাতে চাই৷ অথবা সরকারিভাবেই চিকিৎসা করানো হোক।’
ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি নজরুল ইসলাম চুন্নু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মা কিংবা বাবা যেই হোক, কেউ বাচ্চাকে হত্যা করতে পারে না। এটি আইনের দৃষ্টিতে গুরুতর অপরাধ। যদি কোনো স্বামী যদি বলেন, আমার স্ত্রীর মানসিক সমস্যা রয়েছে, তবুও আইনের দৃষ্টিতে তার জিম্মায় স্ত্রীকে দেয়ার সুযোগ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে এই বিষয়টি আমলে নিয়ে পুলিশ তদন্ত করে দেখবে আসলেই মূল ঘটনা কী? অথবা মানসিক সমস্যা রয়েছে কিনা। যদি মানসিক সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে কারা হাসপাতালে কিংবা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর বিধান আইনে আছে।
‘কিন্তু স্বামী বললেই স্ত্রীকে তার হাতে তুলে দেয়ার আবদারটি একেবারেই বেআইনি। সে আসলেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিল কিনা, পুলিশই সেটি তদন্ত করে বের করবে।’
তবে তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়েরের দাবি, ওই নারী বাচ্চাকে হত্যা করে কাল্পনিক গল্প বলেছেন। নিজেকে বাঁচাতে এমন বলেছেন।
ওসি বলেন, ‘তার স্বামী চাইলে জামিনের ব্যবস্থা করতেই পারেন। এরপর তার মানসিক রোগ আছে কিনা দেখতে পারে। আদালতের মাধ্যমেও তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা যেতে পারে। যেহেতু মামলা হয়ে গেছে, সেহেতু সবকিছুই এখন আইনি প্রক্রিয়ায় হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে টিউবওয়েল বসানোর জন্য স্থাপন করা পাইপে পানির পরিবর্তে উঠে আসছে এক ধরনের তরল। অনেকটা ডিজেলের মতো গন্ধযুক্ত এই তরল নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে কৌতূহল।
উপজেলার ভোলামোড় এলাকায় এক বাড়িতে ঘটেছে এই ঘটনা। বাড়ির মালিক আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘পানীয় জলের জন্য তিন বছর আগে এখানে মোটর বসানো হয়। এটি উপজেলা পরিষদ থেকেই বসানো হয়েছিল। কয়েক মাস থেকে মোটরটি দিয়ে পানি উঠছে না। কারণ জানার জন্য বুধবার সকালে মিস্ত্রি ডেকে আনা হয়।
‘মিস্ত্রি কাজ করার সময় মোটরের সঙ্গে যুক্ত পাইপ দিয়ে মাটির নিচ থেকে পানির পরিবর্তে তেলের মতো এক ধরনের তরল উঠে আসে। তা দেখে মনে হয়েছে ডিজেলের মতো। বিষয়টি আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি, যাতে তারা এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করেন।’
স্থানীয় সংবাদকর্মী মনিরুল ইসলাম জানান, ফেসবুকে ঘটনাটি দেখার পর তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। এ সময় পাইপ দিয়ে উঠে আসা তরলে তিনি কাগজ চুবিয়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করলে তাতে আগুন ধরে যায়। তার প্রশ্ন- পানি হলে তো ভেজা কাগজে আগুন ধরতো না। তাহলে এই তরল কি খনিজ তেল?
এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা সরকার জানান, তিনিও বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছেন। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর করবেন বলে জানান তিনি।
গাইবান্ধায় ভাঙারির দোকানে চুরি করা রেলপাত (রেললাইন) বিক্রির সময় এক অটোচালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এসময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ব্রিজ রোড এলাকার আশা ভাঙারি দোকানে সরকারি এসব রেলপাত বিক্রির সময় তাদের হাতেনাতে আটক করে গাইবান্ধার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)।
এ সময় চুরি করে বিক্রি করতে নিয়ে আসা রেলপাত এবং সেসব পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশাও জব্দ করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার পশ্চিম দুর্গাপুর এলাকার ৩০ বছর বয়সী সাগর মিয়া, ফুলছড়ি উপজেলার উত্তর কঞ্চিপাড়া এলাকার ৪০ বছর বয়সী ওয়াহেদ মিয়া ও আশা ভাঙারি দোকানের শ্রমিক সদর উপজেলার বালুয়া বাজারের পাকারখুটি এলাকার ৩৩ বছর বয়সী মোকলেছুর রহমান। এদের মধ্যে ওয়াহেদ মিয়ার অটোরিকশায় এসব মালামাল পরিবহন করা হয়েছিল।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশের ওসি খাইরুল ইসলাম তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের ব্রিজ রোডের একটি ভাঙারির দোকানে সরকারি রেলপাত অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয়কালে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এ সময় তাদের কাছ থেকে খণ্ড খণ্ড তিন ফুট দৈর্ঘ্যের ৯ টুকরা রেললাইনের পাত উদ্ধার করা হয়, যা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেয়া হবে।’
রেলপাতগুলো বালাসিঘাটের পরিত্যক্ত রেলপথ থেকে খুলে আনা হয়েছে বলে জানান রেলওয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এ সময় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আটককৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া এদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
নাটোরের সিংড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগে অপর প্রার্থী মো. লুৎফুল হাবিবকে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান বৃহস্পাতবার অভিযুক্তকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ৮ মে অনুষ্ঠেয় নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাইসহ তিনজনকে অপহরণের সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ ঘটনায় আপনি লুৎফুল হাবীবকে দায়ী করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে বর্ণিত বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এছাড়া সব জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচিত্র বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
উল্লেখিত প্রতিবেদন ও পত্রিকান্তে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণ হয়েছে। এরূপ ঘটনার জন্য কেন আপনার প্রার্থিতা বাতিল অথবা আপনার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে লিখিত জবাবসহ নির্বাচন কমিশনে ২২ এপ্রিল সোমবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর নাটোর জেলা নির্বাচন অফিসে গেলে দেলোয়ার হোসেনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে আহত অবস্থায় তাকে তার বাড়ির পাশে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগী প্রার্থীর পরিবার এ ঘটনার জন্য আরেক প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল ও তার সমর্থকদের দায়ী করেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হাবীব তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক। দেলোয়ার হোসেন মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে লুৎফুল হাবীব ছিলেন একক প্রার্থী।
আরও পড়ুন:অপহরণের ৬ ঘণ্টার মধ্যে সিরাজগঞ্জ থেকে তামিম হোসেন নামের ৭ বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় এ মামলার আসামি আল-আমিন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে বেলকুচি উপজেলার চন্দনগাতী গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে র্যাব ১২-এর একটি দল। বুধবার দুপুর তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার হানুরবাড়াদি গ্রাম থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃত তামিম হোসেন চুয়াডাঙ্গার হানুরবাড়াদি গ্রামের মো. সুন্নত আলীর ছেলে। অপরদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ২৯ বছর বয়সী আল-আমিন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানায় মেষতলী বাজারের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব ১২-এর অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মারুফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অপহরণের পর শিশুটির বাবা সুন্নত আলী চুয়াডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি র্যাবকে জানালে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির অবস্থান নির্ণয় করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, তামিমের বাবার সঙ্গে আল আমিনের দুই মাস আগে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়েই সুকৌশলে তামিমকে অপহরণ করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিপণের জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হস্তান্তর করার আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রুমা থানার দুটি মামলায় বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এক নারীকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদসহ মামলায় ৫৭জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বান্দরবান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে একাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীরা জানান, রুমা থানার জিআর মামলা নং- ৪ ও ৭ মামলায় পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর মধ্যে ৫২জনকে দু’দিন করে রিমান্ড এবং একজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়।
এর আগে বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ১৮জন নারী ও ৩৯জন পুরুষ বন্দিকে দুটি গাড়িতে করে আদালতে হাজির করা হয়। সম্প্রতি বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটের ঘটনায় তাদেরকে রুমা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বান্দরবানে চলমান যৌথ অভিযানে সন্দেহভাজন আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৬জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় গত দুই দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জেলায় বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এমন বাস্তবতায় হিট অ্যালার্ট জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
টানা দাবদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলাটির মানুষ। হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা।
তীব্র দাবদাহে হিট অ্যালার্ট জারি করে জেলা প্রশাসনের ভাষ্য, খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে।
জেলায় দিনের বেশির ভাগ সময় তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। এতে কম আয়ের শ্রমজীবী মানুষরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণশ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, ইজিবাইকচালক ও ভ্যান-রিকশাচালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। হতাশ হতে দেখা গেছে তাদের।
প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না অনেকে।
দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভ্যানচালক আবদুর রহিম বলেন, ‘যে তাপ পড়চি, তাতে বাইরি বের হওয়া যাচ্চি না। তাপে হাত-পা জ্বালাপুড়া করচি। ছায়ায় গিয়িও শান্তি নেই।’
আবহাওয়া অফিসের চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘তীব্র দাবদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে, তবে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য