নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের সজিব গ্রুপের কারখানা হাশেম ফুডসের ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের দেখে চেনার কোনো উপায় নেই। বেশির ভাগই পুড়ে একেবারে কয়লা হয়ে গেছে। ডিএনএ টেস্টের জন্যও টিস্যু নেয়ার উপায় নেই। ফলে তাদের দাঁত ও হাড় থেকে নেয়া হয়েছে নমুনা।
পুড়ে মারা যাওয়া শ্রমিকদের অবস্থা প্রসঙ্গে এসব তথ্য দেন সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আক্তার। তার নেতৃত্বেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বুথ বসিয়ে নেয়া হচ্ছে নিহত এবং তাদের স্বজনদের ডিএনএ নমুনা।
সাংবাদিকদের রুমানা আক্তার বলেন, ‘আগুনে দগ্ধ লাশগুলো এত বেশি বার্ন ছিল যে আমরা শুধু দাঁত ও হাড়ের নমুনা ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের জন্য নিতে পেরেছি। টিস্যুর নমুনা নিতে পারলে দ্রুত প্রোফাইলিং করা যেত। কিন্তু টিস্যু পুড়ে যাওয়ায় আমরা নিতে পারিনি। দাঁত ও হাড় থেকে ডিএনএ প্রোফাইলিং করতে ২১ থেকে ৩০ দিন সময় লাগতে পারে।’
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পুড়ে যাওয়া আরও দুটি মরদেহের বিপরীতে তিন স্বজনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, যা দিয়ে ডিএনএ প্রোফাইলিং করা হবে। নিহত ও তাদের স্বজনদের ডিএনএ নমুনা ম্যাচিং করে পুড়ে যাওয়া লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হবে।
পুড়ে যাওয়া ৪৮ লাশের মধ্যে এ পর্যন্ত ৪২ জনের বিপরীতে ৬০ জন স্বজনের নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি। এর মধ্যে শুক্রবার ও শনিবার ৪০ জন মৃতের বিপরীতে ৫৭ জনের নমুনা নেয় ফরেনসিক বিভাগ।
ভোলার চরফ্যাশনের ১১ বছরের হাসনাইন ও ১৮ বছরের নোমান মাতাব্বরের জন্য রোববার নমুনা দিয়ে যান স্বজনেরা। তারা চাকরি করত হাশেম ফুড কারখানার চারতলার সেমাই সেকশনে। অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই নিখোঁজ তারা।
ঢাকা মেডিক্যালে আনা ৪৮টি মরদেহের মধ্যে এখনও ৬ জনের স্বজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। স্বজনেরা না আসায় নমুনা সংগ্রহ বিলম্ব হচ্ছে।
সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আক্তার বললেন, ‘আমাদের নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। আজকেও সারা দিন নমুনা সংগ্রহের জন্য আমাদের টিম থাকবে।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে হাশেম ফুডের কারখানাটিতে আগুন লাগার পর শুরুতে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরের দিন উদ্ধার করা হয় ৪৯ জনের মরদেহ। মোট মৃত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ জনে। বেশির ভাগই পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় ডিএনএ নমুনা পরীক্ষাই এখন তাদের পরিচয় শনাক্তে একমাত্র উপায়।
এত বেশি মরদেহের জায়গা ধরছে না ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে। মরদেহগুলোর মধ্যে ১৫টি নিয়ে যাওয়া হয়েছে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে। ৮টি মরদেহ আছে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের মর্গে। ২৫টি আছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে।
এই অগ্নিকাণ্ডে হতাহত ব্যক্তিদের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে আহত প্রত্যেককে ৫০ হাজার করে টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। আর নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর প্রত্যেকের পরিবারকে দেয়া হবে ২ লাখ টাকা করে।
এই ঘটনায় সজিব গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় আট কর্মকর্তাকে শনিবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে তোলা হলে প্রত্যেককে চার দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
সজিব গ্রুপের গ্রেপ্তার আট কর্মকর্তা হলেন গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল হাশেম, তার ছেলে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হাসিব বিন হাশেম, অন্য তিন ছেলে তারেক ইব্রাহিম, তাওসিফ ইব্রাহিম, তানজিব ইব্রাহিম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাহান শাহ আজাদ, ডিজিএম মামুনুর রশীদ ও অ্যাডমিন প্রধান মো. সালাউদ্দিন।
আরও পড়ুন:দেশের অন্যতম ৬০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগ করছে। তাদেরকে এক ছাদের নিচে নিয়ে এসেছে সেনাবাহিনী। চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সেনা পরিবারের তরুণদের প্রাধান্য দিলেও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদেরও যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
ঢাকা সেনানিবাসের সেনা মালঞ্চে দুই দিনব্যাপী এই চাকরি মেলার আয়োজন করেছে সেনাবাহিনীর এজি শাখার কল্যাণ ও পুনর্বাসন পরিদপ্তর। মেলা চলবে বুধবার পর্যন্ত।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের জন্য প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার দুপুরে মেলায় বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা গেছে চাকরিপ্রার্থীর ভিড়। আগতরা স্টলগুলো ঘুরে পছন্দের চাকরি খুঁজছেন। অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যরাও এসেছেন।
সেনা মালঞ্চে দ্বিতীয় তলায় ইনসেপটা ফার্মাসিটিক্যালসের স্টলে দেখা গেল কয়েকজন চাকরির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। তাদের একজন রেহানুল আবরারের বাবা বর্তমানে সেনাবাহিনীতে কর্মরত। দেশের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২১ সালে লেখাপড়া শেষ করে চাকরির জন্য চেষ্টা করছেন।
আবরার বলেন, ‘আজকে এখানে এসে বেশকিছু সেক্টরে খোঁজ নিতে পারছি। পছন্দমতো বিষয়ে কাজ করার জন্য আবেদন করছি। এটা দারুণ সুযোগ।’
ইনসেপটার মানবসম্পদ বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অ্যাডমিন, ফার্মাসিসহ বেশকিছু সেক্টরে আমরা জনবল নিচ্ছি। ফ্রেসারদের প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। রিটায়ার্ড পার্সনদের জন্যও চাকরির সুযোগ রয়েছে।’
এসিআই লিমিটেড ৯টি সেক্টরে জনবল নিয়োগ দেবে। সেগুলো হলো- অ্যাডমিন, এইচআর, এক্সিকিউটিভ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, এক্সিকিউটিভ মার্কেট রিসার্চ, সিকিউরিটি, মার্কেটিং অফিসার, সেলস্ এক্সিকিউটিভ, এক্সিকিউটিভ কমার্শিয়াল ও প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ।
প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ বিভাগের নির্বাহী সাইফুল ইসলাম সিজার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখানে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ও সেনা পরিবারের সন্তানরা আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন। তাদের আবেদনগুলো সরাসরি এবং ই-মেইলের মাধ্যমে গ্রহণ করছি। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।’
জেমকন গ্রুপের সহকারী ম্যানেজার সাবরিনা আক্তার বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকটি পদে জনবল নিচ্ছি। আগ্রহীরা আবেদন করছেন। তাদের আবেদনগুলো জমা নিচ্ছি। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ দেয়া হবে।’
মঙ্গলবার দুপুরে মেলায় অংশ নেয়া বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
পরিদর্শন শেষে সেনাপ্রধান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা প্রথমবারের মতো এই জব ফেয়ার করছি। আমাদের উদ্দেশ্য হলো ওয়েলফেয়ারের দৃষ্টিতে এটি দেখা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা যখন অবসরে চলে যান তখন তাদের বয়স কিন্তু চাকরি করার মতো থাকে। এটা শুধু অফিসার নয়, সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
‘সেনা সদস্যরা অবসরের পর নিজস্ব স্কিল ও মেধা দিয়ে দেশের অনেক ক্ষেত্রে অবদান রাখতে সক্ষম। আমরা এই সুযোগটা দিচ্ছি যাতে তারা সহজে তাদের ক্ষেত্রগুলো খুঁজে নিতে পারেন। চাকরিদাতারাও তাদের কাজের জন্য এক জায়গায় অনেককে পেয়ে যান। আমি বলব, এটা দুই পক্ষের জন্যই উইন উইন সিচুয়েশন।’
ভবিষ্যতেও এ ধরনের মেলা আয়োজনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সেনাবাহিনী প্রধান।
আরও পড়ুন:হজ ফ্লাইট ৩১ মে উদ্বোধনের কথা থাকলেও তা থেকে সরে গিয়ে ৫ জুন প্রথম এবং সেদিন থেকেই নিয়মিত ফ্লাইটের কথা জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মঙ্গলবার তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আগামী ৫ জুন থেকে ফ্লাইট শুরু করতে আমরা বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পত্র দিয়েছি। ৩১ মের স্লট স্থানান্তর করে ৫ জুনে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
গতকাল সোমবারও তিনি বলেছিলেন, ৩১ মে থেকে তারা হজের ফ্লাইট শুরু করবেন। সেদিন উদ্বোধনী একটা ফ্লাইট যাবে, তারপর নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে ৫ জুন থেকে।
বিষয়টি সবিস্তারে তুলে ধরে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় ২০২২ সালের পবিত্র হজে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবগামী শতভাগ হজযাত্রীর সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। এ বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৩১ মে প্রথম হজ ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এ লক্ষ্যে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
‘কিন্তু গতকাল রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভ বাস্তবায়নকারী সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এসে জানান যে রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের জন্য ৪০ জনের সৌদি টিম আগামী ২ জুনের আগে ঢাকায় এসে পৌঁছাতে পারবে না। প্রি-এরাইভাল ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইস বা যন্ত্রপাতি এখনো ঢাকায় এসে পৌঁছেনি। এসব ডিভাইস বা যন্ত্রপাতি সৌদি টিমের সঙ্গে ঢাকায় আসবে। এগুলো শাহজালালে ইনস্টল করতে কিছু সময় লাগবে। আগের সিদ্ধান্ত অনুসারে ৩১ মের প্রথম হজ ফ্লাইট শুরু করা হলে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের প্রি-এরাইভাল ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।’
তিনি বলেন, ‘সৌদি বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় হজচুক্তি অনুসারে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে হজে গমনকারী বাংলাদেশের সব হজযাত্রী ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটে সৌদি আরব গমন করবেন এবং একই সঙ্গে ঢাকায় তাদের প্রি-এরাইভাল ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হবে।
‘এ অবস্থায় ৩১ তারিখের পরিবর্তে আগামী ৫ জুন থেকে হজ ফ্লাইট শুরু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে ইতোমধ্যে চিঠির মাধ্যমে অনুরোধ করা হয়েছে।’
প্রস্তুত বিমান
৫ জুন থেকে হজ ফ্লাইট শুরু করতে নিজেদের প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘৫ জুন হজ ফ্লাইট চালু হলেও আমরা প্রস্তুত। আমাদের প্রস্তুতি আছে। যদি ৫ তারিখ থেকে হয় করতে পারব। ৩১ মের জন্যও আমরা প্রস্তুত আছি। আমাদের এন্ড থেকে আমরা প্রস্তুত।’
স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর সারা বিশ্বের ২০ থেকে ২৫ লাখ মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর সৌদি আরবের বাইরের কেউ হজ করার সুযোগ পাননি। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সৌদি সরকার এবার সারা বিশ্বের ১০ লাখ মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দিচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর সাড়ে ৫৭ হাজার মুসল্লি হজব্রত পালনে সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৪ হাজার মুসল্লি। বাকিরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্যাকেজটি হলো ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। সর্বনিম্নটি ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকার।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে জনপ্রতি ন্যূনতম খরচ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা নির্ধারণ করেছে হজ এজেন্সিস অফ বাংলাদেশ (হাব)।
এবার হজ হতে পারে ৮ জুলাই (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে)। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৫৭ হাজার হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বাকি অর্ধেক করবে সৌদি রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস ও ফ্লাই নাস।
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান এ বছর ৭৫টি ডেডিকেটেড ফ্লাইটের মাধ্যমে ৩১ হাজার যাত্রী বহন করবে। যাত্রী পরিবহনে বিগত বছরগুলোর মতোই বহরে থাকা বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন:গত তিন দশকের মধ্যে ফ্রান্সে নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় এলিজাবেথ বর্নিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছেন তিনি।
ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে সোমবার পাঠানো বার্তায় এ কথা উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
অভিনন্দন বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাজনীতিবিদ ও প্রশাসক হিসেবে আপনার অভিজ্ঞতা আপনাকে আপনার দায়িত্ব কার্যকরভাবে পালন করতে সাহায্য করবে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাঁখোর দ্বিতীয় মেয়াদে আপনার অবদান গুরুত্বপূর্ণ হবে।’
অর্ধশতাব্দী আগে বাংলাদেশ-ফ্রান্স কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরির পর থেকে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পানি, উন্নয়ন, বিমান চলাচল, জলবায়ু কর্মকাণ্ড এবং জ্ঞান আদান-প্রদানে গতিশীল সহযোগিতার মাধ্যমে জোরদার হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘অংশীদারত্বের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আপনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও সাফল্য কামনার পাশাপাশি দেশটির জনগণের শান্তি, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি কামনা করেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন:উত্তাল পদ্মা নদীর বুকে গড়ে তোলা বহুল প্রতীক্ষিত সেতুর নাম থাকছে পদ্মা সেতুই।
গণভবন থেকে বের হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
সেতুর নাম পদ্মা সেতু থাকছে জানিয়য়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২৫ জুন শনিবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন করবেন। তিনি বলছেন, পদ্মা সেতু পদ্মা নদীর নামেই হবে। এখানে অন্য কারও নাম আমি দেব না। বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারও নাম এখানে সংযোজন করবেন না।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে এ সেতুর সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের।
সেতুর নাম পদ্মা সেতু হবে কি না তা নিয়ে আলোচনা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে সেতুর নামকরণ করা নিয়েও আলোচনা হয়।
তবে এবার সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সেতুর নাম নিয়ে স্পষ্ট তথ্য দিলেন।
পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক এই সেতু থেকে সরে যাওয়ার পর অর্থায়ন জটিলতায় সেতুটি আদৌ হবে কি না, এ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নেন নিজ অর্থে সেতু করার।
এক দশক ধরে দেশের দক্ষিণের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে এই সেতুর জন্য। এটি দেশের সবচেয়ে বড় সেতু- বিষয়টি কেবল এমন নয়, এর সঙ্গে জড়িয়েছে রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক বহু ঘটনাপ্রবাহ। যে কারণে সেতুটি নিয়ে আলোচনা আরও বেশি।
এর প্রতিটি স্প্যান বসানো সংবাদ হয়ে এসেছে। গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি, প্রতিটি বাধাবিঘ্ন গণমাধ্যমে সংবাদ শিরোনাম হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে তুলেছে তোলপাড়।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসানোর পরই জানানে হয় চলতি বছরের জুনে যান চলাচল শুরু করা হবে।
আরও পড়ুন:বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হবে আগামী ২৫ জুন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন এ সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।
মঙ্গলবার গণভবন থেকে বের হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২৫ জুন শনিবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন করবেন। তিনি বলছেন, পদ্মা সেতু পদ্মা নদীর নামেই হবে। এখানে অন্য কারও নাম আমি দেব না। বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারও নাম এখানে সংযোজন করবেন না।’
বিএনপিসহ সবাইকে উদ্বোধনীতে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমন্ত্রণ জানাব সবাইকে। যারা বেশি বিরুদ্ধে বলছে, তাদেরকেও আমন্ত্রণ জানাব। উদ্বোধনের দিনই পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হবে।’
এর আগে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদ্মা সেতুর সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের।
এক দশক ধরে দেশের দক্ষিণের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে এই সেতুর জন্য। এটি দেশের সবচেয়ে বড় সেতু- বিষয়টি কেবল এমন নয়, এর সঙ্গে জড়িয়েছে রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক বহু ঘটনাপ্রবাহ। যে কারণে সেতুটি নিয়ে আলোচনা আরও বেশি।
এর প্রতিটি স্প্যান বসানো সংবাদ হয়ে এসেছে। গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি, প্রতিটি বাধাবিঘ্ন গণমাধ্যমে সংবাদ শিরোনাম হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে তুলেছে তোলপাড়।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসানোর পরই জানানো হয় চলতি বছরের জুনে যান চলাচল শুরু করা হবে।
পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতিচেষ্টার অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক এই সেতু থেকে সরে যাওয়ার পর অর্থায়ন জটিলতায় সেতুটি আদৌ হবে কি না, এ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নেন নিজ অর্থে সেতু করার।
তার এই সিদ্ধান্তের পর দেশবরেণ্য অর্থনীতিবিদরা বলেছিলেন, এত বড় প্রকল্প নিজে নিজে করার মতো আর্থিক সামর্থ্য বাংলাদেশের হয়নি। এতে রিজার্ভ চাপে পড়বে, অন্য উন্নয়ন প্রকল্প বাধাগ্রস্ত হবে।
উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা পদ্মা সেতু চলাচলের ক্ষেত্রে কী হারে টোল দিতে হবে তা এরই মধ্যে নির্ধারণ করেছে সরকার। নদী পারাপারে যানবাহনভেদে টোল ঠিক করা হয়েছে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকার বেশি।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোনো মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্ত না হলেও ভাইরাসটি নিয়ে সর্তক রয়েছে সরকার। এরইমধ্যে আইসোলেশন প্রস্তুত করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।
মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন শেষে বিএসএমএমইউ ইন্ট্রান মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান সোহেল এম আরাফাত নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘বিএসএমএমইউ হাসপাতলে আইসোলেশন প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি শনাক্ত হয় বা আমরা শনাক্ত করতে পারি তাহলে তাকে ২১ দিনের আইসোলেশনে থাকতে হবে। তার সংস্পর্শে যারা আসছে তাদেরও আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। চারদিন জ্বর থাকলে ভাইরাসটি প্রতিরোধে টিকা প্রদান করতে হবে। সঠিক সময়ে মধ্যে টিকা দিলে এ রোগ ভালো হয়ে যাবে, কোন ধরনের জটিলতা তৈরি হবে না।’
তিনি বলেন, ‘মাঙ্কিপক্স নিয়ে গুজব বা আতঙ্ক নয়, বরং আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা সর্তক রয়েছি। ভাইরাসের যদিও কোনো ওষুধ নেই, তবে দুইটা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ রয়েছে এটা ব্যবহার করা যায়।’
করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিএসএমএমইউ হাসপাতাল যেভাবে রোগের চিকিৎসায় সহযোগিতা করে এসেছে, সেভাবেই মাঙ্কিপক্স রোগীদের শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করবে বলে জানায়।
সরকারিভাবে হবে কিনা জানতে চাইলে বিষয়টি পরিষ্কার করে কিছু জানাননি এই চিকিৎসক। তিনি বলছেন এ বিষয় নিয়ে সিন্ডিকেট সভায় আলোচনা হবে এবং প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্দেশনা দেবেন সেভাবেই বাস্তবায়ন করা হবে।
আফ্রিকা অঞ্চলের এই ভাইরাস গত কিছু দিনে আফ্রিকার বাইরে বিশ্বের ১২ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। শনাক্ত হয়েছে ৯২ জনের বেশি।
এদিকে এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গত শনিবার দেশের প্রত্যেক বন্দরে সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
যদিও বলা হচ্ছে, এই ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কম।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সাধারণত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, এই ভাইরাসে শনাক্ত বেশিরভাগ রোগীই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান।
আরও পড়ুন:সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ প্রয়োজনে ব্যক্তিগত ভ্রমণ জরুরি হলে ব্যাংক কর্মকর্তারা বিদেশে যেতে পারবেন বলে সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে।
সব তফসিলী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়, পবিত্র হজ পালন ও চিকিৎসার প্রয়োজনে ব্যাংক কর্মকর্তারা বিদেশে যেতে পারবেন। এ ছাড়া বাংলাদেশে অবস্থিত ব্যাংকে কর্মরত বিদেশি নাগরিকরা তার নিজ দেশে যেতে পারবেন। পাশাপাশি, বিদেশি ব্যাংকের বাংলাদেশের শাখায় কর্মরত কর্মকর্তারা প্রধান কার্যালয়ে যেতে পারবেন। এ ছাড়া বিদেশি আয়োজক সংস্থার সম্পূর্ণ অর্থায়নে পরিচালিত প্রশিক্ষণ, সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও স্টাডি ট্যুরেও ব্যাংক কর্মকর্তারা অংশ নিতে পারবেন।
এর আগে রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলারে জানায়, ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ভ্রমণসহ প্রশিক্ষণ, সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও স্টাডি ট্যুরে যাওয়া পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
ওই সার্কুলারে আরও বলা হয়, করোনার প্রভাব মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং বহির্বিশ্বে যুদ্ধাবস্থার কারণে বৈশ্বিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুত সুসংহত রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সরকারের অর্থ বিভাগ থেকে পরিপত্র জারি করে সরকারি কর্মকর্তাদের সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ স্থগিত করা হয়।
মন্তব্য