আট দিন নিখোঁজ হয়ে তুমুল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসা ধর্মীয় বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের বন্ধু সিয়াম ইবনে শরীফকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি বলে জানিয়েছে তার নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান।
সিয়ামকে চাকরি থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তুমুল সমালোচনা তৈরি হলে নতুন ব্যাখ্যা দেয় মোবাইল ফোন বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান অপো।
এখন তারা বলছে, সিয়ামকে হোম অফিস করতে বলা হয়েছে। অফিসে আসতে নিষেধ করা হয়েছে তার নিরাপত্তার কথা ভেবে।
সিয়াম রংপুর মুন্সিপাড়ায় অফিসের কো-অর্ডিনেটর (এইচআর) পদে চাকরি করতেন। রোববার তাকে সেই পদ থেকে অব্যাহতির কথা জানানো হয় বলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান।
ত্ব-হা আত্মগোপনে যাওয়ায় সিয়ামের চাকরি কেন যাবে- এই নিয়ে প্রশ্নের মুখে সোমবারই বক্তব্য পাল্টে যায় তাকে অব্যাহতির কথা জানানো অপো কর্মকর্তার।
সিয়ামকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়টি জানিয়েছিলেন অপোর রংপুর আঞ্চলিক প্রধান সাইফুল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমের কাছেও একই বক্তব্য দেন।
বক্তব্য পাল্টালেন অপো কর্মকর্তা
তবে পরদিন তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘না, ওর চাকরি যায়নি। এটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, এখানে জয়েন করাও যেমন সহজ না, তেমনি চাকরি থেকে বাদ দেয়াও সহজ না। বাদ দিলে তো তার একটা টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন আছে।
‘কারও যদি কোনো পারসোনাল ইস্যুতে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সমস্যা ইনস্ট্যান্ট দেখা দেয়, সেই ক্ষেত্রে তার সেইফটি এবং আমাদের সেইফটির জন্য আমরা তাকে আপাতত বলতে পারি, আপাতত তুমি হোম অফিস করো বা আপাতত কন্টিনিউ করার দরকার নাই, প্রবলেম সলভ করো, তারপর গিয়ে অফিসে যোগাযোগ করো।’
কিন্তু সিয়াম জানিয়েছেন, তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আপনিও আগের দিন তাই বলেছেন- এমন প্রশ্নে সাইফুল বলেন, ‘এটা আমার রিজিওনাল অফিস, আমার হেডকোয়ার্টার আছে। আমি বলেছি, তুমি আপাতত কন্টিনিউ করো না, তুমি সেইফ জোনে থাকো, আমরা আমি হাই অথরিটির সঙ্গে কথা বলে তারপর তোমাকে জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন ‘তাকে (সিয়াম) চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে মানে তাকে অফিশিয়ালি ডাকা হবে, জানানো হবে। তাই না? এটা তো একটা প্রসিডিউর আছে।’
‘সব সিয়ামের নিরাপত্তার জন্য’
নিজের আগের দিনের কথা আবার স্মরণ করালে সাইফুল বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় নিউজ হয়েছে, আমার খুব খারাপ লাগছে।… চাকরি নাই, এটা টোটালি একটা ফালতু কথা। তার সেইফটির জন্য আপাতত তাকে বারণ করা হয়েছে।
‘একটা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তার যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সে কারণে হোম অফিস করতে বলা হয়েছে।’
‘সে যদি দোষী না হয়, তাহলে তাকে কেন টার্মিনেট করা হবে, তার চাকরি কেন যাবে?’- পাল্টা প্রশ্নও করেন সাইফুল।’
দাবি, এসএমএস নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে
তাহলে সিয়ামকে কেন হোম অফিস করতে বলা আর অফিসের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে কেন বাদ দেয়া হয়েছে- এমন প্রশ্নে অপো কর্মকর্তা সরাসরি জবাব দেননি। বলেন, ‘সে আমাদের এখানে তিন মাস চাকরি করছে। সে খুবই ভালো ছেলে । আমি তাকে রিকোয়েস্ট করেছি। আমি তার রিক্রুটিং বস..। সে খুবই বিশ্বস্ত। বিষয়টি তার পারসোনাল ইস্যু। এটা সলভ করতে বলা হয়েছে। এতে আমার তার, কোম্পানির ইমেজের জন্য বেটার।’
কিন্তু আপনার এসএমএসও তো ছিল চাকরি থেকে বাদ দেয়ার- এমন মন্তব্যের পর সাইফুল বলেন, “কিছু সাংবাদিক এসে আমাকে বলছেন, ওই ঘটনার সঙ্গে সে জড়িত। তার বাসায় ত্ব-হা ছিল। ‘তখন আমি বলি, হাউ ইট পসিবল?’ তখন অনেক মিডিয়ার লোকজন আসা শুরু করল। তখন আমি বলি, আমার সঙ্গে আপাতত কন্টিনিউ করার দরকার নেই। মেসেজের এটাই অর্থ ছিল।
“বলেছি, ভাই তুমি আগে নিজে সেইফে থাকো। দ্যাট নট মিনস দ্যাট। তাকে বলা হয়নি ইউ আর ফায়ার্ড। তার মানে তার চাকরি থেকে টার্মিনেট করা হয়নি। তার পরিবারের সেইফটির জন্য তাকে বাসায় থাকতে বলা হয়েছে। অফিস থেকে বলা হচ্ছে তুমি বাসায় চলে যাও।”
বিষয়টি নিয়ে সিয়াম ভুল বুঝেছেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমার হায়ার অথরিটি বলছে যে, এটা তো তার পারসোনাল ইস্যু। যদি সে অপরাধী প্রমাণিত হয় তাহলে তাকে আমরা সাসপেন্ড করব। আর যদি প্রমাণিত না হয় তাহলে সে কন্টিনিউ করবে। হয়তো মিস আন্ডারস্টান্ডিং হয়েছে। কমিউনিকেশনে ভুল হচ্ছে। হয়তো কোথাও ভুল হচ্ছে।’
গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর এখন দায় দিচ্ছেন অপো কর্মকর্তা। বলেন, ‘সাংবাদিকরা আমার ওপর দোষ চাপাচ্ছে, আমাকে অপরাধী বানাচ্ছে। তার (সিয়াম) একটা ১০ মাসের বাচ্চা রয়েছে, বাড়িতে তার মা ছাড়া কেউ নেই। এই আসা-যাওয়ার ভেতরে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তার দায়ভার কে নেবে বলেন...।’
সিয়াম তাহলে কবে থেকে অফিস করতে পারবেন?- সাইফুল বলেন, ‘যেহেতু তার একটা পারসোনাল প্রবলেম হয়েছে, সেটি সলভ হয়ে গেলে অফিস কন্টিনিউ করতে পারবে। আমি সেটা বলেছি।’
সিয়াম জানতেন না কিছুই
গত ১০ জুন ঢাকা আসার পথে তিন সঙ্গীসহ উধাও হয়ে যাওয়া ত্ব-হা সাত দিন ছিলেন সিয়ামের গাইবান্ধার বাড়িতে। তবে সিয়াম সেটি জানতেন না।
গত শুক্রবার ত্ব-হা ফিরে আসার পর সিয়ামের মা গণমাধ্যমকে জানান, তিনি সাত দিন তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছিলেন।
ত্ব-হা ও সিয়াম ছোটবেলার বন্ধু। সিয়ামরা সে সময় রংপুরেই থাকতেন। আর কয়েক বছর আগে তারা গাইবান্ধায় ফিরে যান।
সেই বাসায় ত্ব-হার যাতায়াত ছিল। সিয়ামের উপস্থিতিতেও যেতেন, অনুপস্থিতিতেও যেতেন।
চাকরিচ্যুতি নিয়ে সিয়াম যা বলেছিলেন
সিয়াম রোববার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কিছু সাংবাদিক আমার অফিসে গিয়ে আমার খোঁজ করছিলেন এবং ত্ব-হার নিখোঁজের বিষয়ে আমার সম্পৃক্ততা আছে বলে দাবি করেন। এ কারণে আমার অফিস আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে।’
তবে এখনও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোনো অব্যাহতিপত্র দেয়া হয়নি বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কোনো অফিশিয়াল কাগজপত্র দেয়া হয়নি। কিন্তু মেসেজ দিয়েছে, ‘স্যরি ভাই, উই ক্যান নট কন্টিনিউ উইথ ইউ, বিকজ অফ কোম্পানি ইমেজ’। অফিসের সব গ্রুপ থেকেও আমাকে রিমুভ করা হয়েছে।”
এই সিদ্ধান্তের পেছনে কী যুক্তি থাকতে পারে, সেই প্রশ্ন সেদিনই তিনি তোলেন। বলেন, ‘আমি তো কোনো অপরাধ করিনি। আমার চাকরি যাবে কেন, তাও বুঝতেছি না।’
তবে সিয়াম আজ আর ফোন ধরেননি।
আরও পড়ুন:বেশ কয়েকদিন ধরে অতি তীব্র তাপপ্রবাহের পর গত দুদিন কিছুটা কমে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছিল চুয়াডাঙ্গা জেলায়। তবে আবারও তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহের রূপ নিয়েছে।
বুধবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এর মধ্যে জেলার কয়েকটি জায়গায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে বেশ কিছু সময় ধরে (৪০ মিনিট) গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়। আবহাওয়া অফিসের রেকর্ডে তা ১ দশমিক ৬ মিলিমিটার। বৃষ্টির কারণে বাতাসে জলীয় বাষ্প বাড়ায় ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি আরও বেড়েছে।
তাপদাহে স্বস্তি মিলছে না কোথাও। গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। তবে, ভ্যাপসা গরমে সেখানেও মিলছে না শান্তি।
চলমান দাবদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। নষ্ট হচ্ছে ধান, আম, লিচু ও কলাসহ মাঠের অন্যান্য ফসল। দাবদাহে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রমও।
দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা গ্রামের কৃষক আব্দুল আলিম বলেন, ‘এই তাপে ধানের খেত শুকিয়ে যাচ্চি, বেশি বেশি সেচ দিতি হচ্চি। দিনের বেলায় পাম্পে খুব একটা পানি উটচি না। রাতি পানি দিতি হচ্চি। তাছাড়া আম, লিচু, কলা সব নষ্ট হয়ি যাচ্চি। গরমে আমারও মাটে টিকতি পারচি নি।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবারের তুলনায় আজ (বুধবার) তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি বেড়েছে। এপ্রিল মাসজুড়ে এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।’
আরও পড়ুন:সিঙ্গাপুরে কাজ করার সময় রড চাপায় রাকিব হোসেন নামে এক বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
২২ বছর বয়সী রাকিব বেনাপোল পোর্ট থানার ২ নম্বর ঘিবা গ্রামের মমিনুর রহমানের ছেলে।
রাকিবের চাচা মিলন হোসেন জানান, চলতি মাসের ৩ এপ্রিল বুধবার নির্মাণকাজ করার সময় রডের বান্ডিলে চাপা পড়ে মারাত্মক আহত হয় রাকিব। দুর্ঘটনার পরপরই তাকে রডের নিচ থেকে উদ্ধার করে সিঙ্গাপুর সিভিল ডিফেন্স ফোর্সের উদ্ধারকারীরা হাসপাতালে ভর্তি করে। ১৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে তিনি মারা যান।
রাকিবের বাবা মমিনুর রহমান বলেন, ‘এক বছর হলো রাকিব সিঙ্গাপুর গিয়েছে। সে সিঙ্গাপুরে কনস্ট্রাকশনের কাজ করত। গত ৩ এপ্রিল প্রতিদিনের মতো সে কাজে যায়। এক পর্যায়ে ওইদিন বিকাল ৫টার দিকে উপরে তোলার সময় টোশন ছিঁড়ে (দড়ি) রডের নিচে পড়ে চ্যাপ্টা হয়ে যায় সে।’
বেনাপোল পোর্ট বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান (মফিজ) বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে নিহত রাকিব আমার ইউনিয়নের ঘিবা গ্রামের বাসিন্দা। তার পরিবারের মাধ্যমে জেনেছি সে সিঙ্গাপুরে কাজ করার সময় রড চাপায় মারা গেছে। এখন তার মরদেহ কীভাবে দেশে আনা যায়, তার সার্বিক সহযোগিতা আমার পক্ষ থেকে করে যাচ্ছি।’
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নতুন তিন বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। বৃহস্পতিবার তারা শপ্রথ গ্রহণ করবেন।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বুধবার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারককে তাদের শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করেছেন।
আপিল বিভাগে নবনিযুক্ত বিচারপতিগণ হলেন- বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ, বিচারপতি মো শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন।
বৃহস্পতিবার শপথ
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার বলা হয়, আপিল বিভাগে নবনিযুক্ত তিন বিচারপতি বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণ করবেন। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে প্রধান বিচারপতি তাদেরকে শপথ পাঠ করাবেন।
মিয়ানমারের কারাগারে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ শেষে ১৭৩ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। গভীর সাগরে অবস্থানরত মিয়ানমার প্রতিরক্ষা বাহিনীর জাহাজ ‘চিন ডুইন’ থেকে তাদের নিয়ে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর একটি জাহাজ বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ার ছড়া ঘাটে এসে পৌঁছায়।
এর আগে বুধবার বেলা ১১টার দিকে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজার এসে পৌঁছায়।
প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজার পৌঁছানোর পরপরই ঘাট থেকে গাড়িযোগে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উদ্দেশে রওনা হয়, যেখানে বিজিবির অধীনে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ২৮৫ সদস্য রয়েছেন। তাদের নিয়ে বৃহস্পতিবার মিয়ানমার ফেরত যাবে প্রতিনিধি দলটি।
এদিন বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও কক্সবাজার ৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল।
তিনি বলেন, ‘দুপুর ১টার দিকে ১৭৩ বাংলাদেশি ঘাটে এসে পৌঁছাতে পারেন। তারা মিয়ানমারের কারাগারে ভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করে সরকারের প্রচেষ্টায় ফিরছেন।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজার জেলার, ৩০ জন বান্দরবান জেলার, সাতজন রাঙ্গামাটি জেলার এবং একজন করে রয়েছেন খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার। ইতোমধ্যে ফেরত আসাদের অপেক্ষায় ঘাটে ভীড় করছেন তাদের স্বজনরা।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেশে ফেরত আসাদের গ্রহণ করে পুলিশে হস্তান্তর করবে বিজিবি। তারপর যাচাই-বাছাই শেষে স্ব স্ব থানার পুলিশের মাধ্যমে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
এদিকে ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হওয়া মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ সফররত মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘চিন ডুইন’ জাহাজটি ১৭৩ বাংলাদেশিকে বহন করে মঙ্গলবার যাত্রা শুরু করে। এর মধ্যে ১৪৪ জন কারাগারে পূর্ণ মেয়াদে সাজা ভোগ করেছেন। অপর ২৯ জন মিশনের প্রচেষ্টায় ক্ষমা পেয়ে বাংলাদেশে ফিরছেন।
মূলত বাংলাদেশিদের নিয়ে আসা মিয়ানমারের জাহাজটিই বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিজিপির ২৮৫ সদস্যকে নিয়ে ফেরত যাবে।
মিয়ানমারের ২৮৫ সদস্যকে ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি নাইক্ষ্যংছড়ি গেছে।
মিয়ানমারে ফেরত যাওয়াদের মধ্যে গত ১৯ এপ্রিল একদিনে নতুন ২৪ জন, ১৬ এপ্রিল ৬৪ জন, ১৪ এপ্রিল ১৪ জন, ৩০ মার্চ ৩ জন ও ১ মার্চ ১৭৭ জন বিজিপি ও সেনা সদস্য পালিয়ে আশ্রয় নেন। এরও আগে ফেব্রুয়ারির শুরুতে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন, যাদের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
প্রথম দফায় ফেরতের সময় ঘটনাস্থলে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ ও সংশ্লিষ্টরা কথা বললেও এবার তা হচ্ছে না। ফেরত আসা বাংলাদেশিদের গ্রহণ এবং ২৮৫ জনকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ করে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে। সেখানেও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ সংরক্ষিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে নির্বাচনি প্রচারণার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
হামলায় আহত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনকে প্রথমে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আহত আলী হোসেন বলেন, ‘কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনফর আলীর নির্দেশে সাইদুল, মুহিব, সোহেলদের নেতৃত্বে আমার ওপর এই হামলা হয়েছে। এ সময় আমাকে অপহরণেরও চেষ্টা করা হয়।’
ভাইরাল হওয়া অপর এক ভিডিওতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনকে জোর করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করার দৃশ্য দেখা যায়।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনসহ আরও তিনজন ঘোড়া প্রতীক চেয়েছিলেন। প্রতীক বরাদ্দের দিন বিষয়টি নিয়ে অনেক হট্টগোল হয়। একাধিক প্রার্থী হওয়ায় লটারির মাধ্যমে আলী হোসেন ঘোড়া প্রতীক পান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনফর আলীর নির্দেশে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, হামলার এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন:নাটোরের সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন পাশাকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সিংড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাসান ইমাম এবং সাধারণ সম্পাদক মোহন আলীকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ ডলার ও সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
একই বিজ্ঞপ্তিতে বিএমএম ওয়াহিদুজ্জামান পিন্টুকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সোহেল রানা মুন্নুকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপন জানান, সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবীব রুবেল এবং দেলোয়ার হোসেন পাশা মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। এরপর গত ১৫ এপ্রিল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের ভেতর থেকে লুৎফুল হাবীব রুবেলের পক্ষ থেকে দেলোয়ার হোসেন পাশাকে অপহরণ করে নির্যাতন করে তার সমর্থকরা। এই ঘটনায় দেশব্যাপি সমালোচনা শুরু হলে পলকের নির্দেশে তার শ্যালক রুবেল মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।
তিনি বলেন, ফলে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার পাশাকে মঙ্গলবার একমাত্র পার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন রির্টানিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ। এই ঘটনায় বিভিন্ন মিডিয়ার খবর ও পুলিশের তদন্তে সিংড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাসান ইমাম এবং সাধারণ সম্পাদক মোহন আলী সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ। ফলে তাদের দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
তদন্তে প্রমাণিত ৩৫ রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কক্সবাজারে কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে- তা জানতে চেয়েছে উচ্চ আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়। খবর বাসসের
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জানান, ২০১৬ সাল থেকে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কিছু ক্ষমতাধর কথিত জনপ্রতিনিধির যোগসাজশে অর্থের বিনিময়ে অসংখ্য রোহিঙ্গাদেরকে জাল ঠিকানা, ভুয়া বাবা-মা সাজিয়ে ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে জন্ম নিবন্ধন, ভোটার আইডিসহ দেশের নাগরিকত্ব দিতে সরাসরি সহায়তা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, ওই ইউনিয়নে অন্তত ৩৭০ জন রোহিঙ্গাকে জন্ম নিবন্ধন ও ভোটার আইডি দেয়া হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় স্থানীয় এক বাসিন্দা ৩৮ জন রোহিঙ্গার নাম উল্লেখ করে বিবাদীদের প্রতি অভিযোগ দাখিল করেন। ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। প্রতিবেদনে ৩৮ জনের মধ্যে ৩৫ জন রোহিঙ্গার বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়।
আইনজীবী আরও জানান, এতে ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের জড়িতদের প্রমাণ পাওয়া যায় এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছেন। কিন্তু এসব রোহিঙ্গাকে নাগরিকত্ব দেয়া সংক্রান্ত কাগজপত্র বাতিল করে তাদের নাম ভোটার তালিকে থেকে বাদ দেয়ার জন্য জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এসব রোহিঙ্গাদের ভোটার রেখেই ওই ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হয়। এ অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হামিদ হাইকোর্টে রিট করেন।
শুনানি শেষে বিবাদীদের প্রতি চার সপ্তাহের রুল জারি করে ভোটার তালিকা থেকে তদন্তে প্রমাণিত রোহিঙ্গাদের নাম বাদ এবং আগামী ৬ জুনের মধ্যে কক্সবাজার জেলায় কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে- তা তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে আজ উচ্চ আদালত।
রিটে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সংশ্লিষ্ট ১৭ জনকে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়।
মন্তব্য